খসড়া:আবদুল কাহার সিদ্দিকী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

ফুরফুরা দরবারের পীর মাওলানা আবুল আনসার মুহাম্মাদ আবদুল কাহহার সিদ্দিকী আল কুরাইশী (রহ.)

ফুরফুরা (https://bn.wikipedia.org/wiki/ফুরফুরা_(গ্রাম)) একটি গ্রামের নাম, ফুরফুরা একটি আধ্যাত্মিক দীনী ইসলামী সংগঠনের নাম। ফুরফুরা ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার শ্রীরামপুর মহকুমার জাঙ্গিপাড়া সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকে অবস্থিত। গ্রামটি ফুরফুরা দরবারের শরিয়াত-ত্বরিক্বতভিত্তিক ইশাআতে ইসলাম (ইসলাম প্রচার) এর প্রাণকেন্দ্ররূপে পুরো ভারত উপমহাদেশে বিখ্যাত হয়ে আছে।[সূত্রঃ "The Hindu e-Paper Today: ePaper replica of the print newspaper"epaper.thehindu.com] বাংলা-ভারতে ফুরফুরা দরবার প্রায় সাড়ে সাতশত বছর যাবৎ দ্বীনি খেদমতে রত আছে (সূত্রঃ ফুরফুরার ইতিহাস)।

উল্লেখ্য, ১৩৭৫ সালে জনৈক মুকলিশ খান কর্তৃক নির্মিত একটি মসজিদকে কেন্দ্র করে এই গ্রামের ইসলামী ইতিহাস শুরু হয়।[সূত্রঃ "West Bengal Tourism Policy, 2008"। Fairs and Festivals Tourism। Government of West Bengal, Department of Tourism]

কথিত আছে যে, সেইসময়ে এক ক্ষত্রিয় রাজা এখানে রাজত্ব করত। রাজত্বকালে শাহ কবির হালিবি ও করমুদ্দিন নামে দুই মুসলিম সৈন্য এই ক্ষত্রিয় রাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে বিজয় লাভ করে।অন্য বর্ণনায় ৪ মুসলিম ভ্রাতা যুদ্ধ করে শহীদ হন।তাঁদেরকে ফুরফুরার ইতিহাসে ‘গন্জে শুহাদা’ বলা হয়।বিজয়ের পর যে আনন্দোৎসব করা হয়েছিল সে উৎসবকে ফার্সি ভাষায় ‘ফররে ফরাহ’ বলা হয়।কালের পরিবর্তনের সাথে সাথে ‘ফররে ফরাহ’ শব্দ ফুরফুরা-তে পরিণত হয়।(সূত্রঃ ফুরফুরার ইতিহাসঃ ইশাআতে ইসলাম কুতুবখানা, মার্কাযে ইশাআতে ইসলাম, ফুরফুরা দরবার, ২/২, দারুস সালাম, মীরপুর ঢাকা, বাংলাদেশ)।

এই গ্রামে বার্ষিক ওয়াজ মাহফিল ও ইসালে সওয়াব উপলক্ষে প্রতি বছর ফাল্গুন মাসে দেশ-বিদেশ থেকে ফুরফুরা দরবারের খোলাফা, মুবাল্লিগীন, জাকেরিন, সাকেরিন, মুহেব্বীন, মুতাআল্লেকীন, মুতাআকেদীনসহ জাতি-ধর্ম বর্ণ,দলমত নির্বিশেষে আম জনতার ঢল নামে। করে।[তথ্যসূত্রঃ "Hoogly District"। Places of Interest, District administration]

ফুরফুরা নামক এই ঐতিহাসিক গ্রামের জাঙ্গিপাড়ায় ১৯৪০ সালে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন আগামী দিনের নায়েবে মুজাদ্দেদ, শেরে ফুরফুরা, আমির-উল-ইত্তেহাদ, যুগশ্রেষ্ঠ মাওয়াহিদ (তাওহীদবাদী), মহিউদ্দীন ওয়াল মহিউস্ সুন্নাহ হযরতুল আ’ল্লাম মাওলানা আবুল আনসার মুহাম্মাদ আবদুল ক্বাহহার সিদ্দিকী আল কুরাইশী রহিমাহুল্লাহ।

বংশ পরিচিতিঃ ফুরফুরা দরবারের প্রাণ প্রতিষ্ঠাতা মোজাদ্দেদে জামান খ্যাত মাওলানা আব্দুল্লাহ আল মারুফ আবুবকর সিদ্দিকী রহিমাহুল্লাহর (https://www.google.com/search?client=firefox-b-e&q=ফুরফুরা+দরবারের+পীর+আবু+বকর+সিদ্দিকী+উইকি ) জ্যেষ্ঠ পুত্র শাইখুল ইসলাম আব্দুল হাই সিদ্দিকী রহিমাহুল্লাহর (https://bn.wikipedia.org/wiki/=আবদুল+হাই+সিদ্দিকী+উইকি) বড় সাহেবজাদা মাওলানা আবুল আনসার মুহাম্মদ আব্দুল কাহহার সিদ্দিকী রহিমাহুল্লাহ পবিত্র দীন ইসলামের প্রথম খলিফা আমিরুল মুমিনিন আবুবকর সিদ্দিকের رضي الله عنه (https://bn.wikipedia.org/wiki/ আবু_বকর) ৪১ তম অধ্বস্তন পুরুষ।

ইঁনারা সবাই ইসলামের প্রথম খলিফা, মহানবী ﷺ এর প্রধান সাহাবী হযরত আবু বকর সিদ্দিক رضي الله عنه এর সুযোগ্য জিসমানী(রক্ত সম্পর্কিত) বংশধর। এই বংশ মুররাহ ইবনে কাব (৮ম) পর্যায়ে স্বয়ং রসূলুল্লাহ ﷺ এর সাথে মিলিত হয়ে ইবনে ফিহরে গিয়ে উভয় বংশ নিম্নরূপে আল কুরাইশে পরিণত হয়ঃ

১. হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা (ﷺ) ইবনে আবদুল্লাহ>২. আবদুল্লাহ ইবনে আবদে মুত্তালিব>৩. আবদে মুত্তালিব ইবনে হাসিম> ৪. হাসিম ইবনে আবদে মানাফ > ৫ মানাফ ইবনে কুসাই >৬.কুসাই ইবনে কিলাব > ৭.কিলাব ইবনে মুররাহ >৮.মুররাহ ইবনে কাব ৯. কাব ইবনে গালিব ১০ গালিব ইবনে ফাহর/ ১১.ফাহর/ফিহর (আল কুরাইশি) ইবনে মালিক।

আবু বকর رضي الله عنه এর বংশ ধারা ১.আবদুল্লাহ ইবনে উসমান> ২. উসমান ইবনে আমির>৩. আমির ইবনে আমর>৪.আমর ইবনে কাব>৫. কাব ইবনে সাদ>৬. সাদ ইবনে তায়িম>৭. তায়িম ইবনে মুররাহ>৮.মুররাহ ইবনে কাব> ৯.কাব ইবনে লুয়াই> ১০.লুয়াই ইবনে গালিব>১১. গালিব ইবনে ফিহর (আল কুরাইশি)ইবনে মালিক।

৫৭০ খ্রিষ্টাব্দ –হযরত মুহাম্মদﷺ

৫৪৫ খ্রিষ্টাব্দ – আবদুল্লাহ ৪৯৭ খ্রিষ্টাব্দ – আব্দ আল-মুত্তালিব

৪৬৪ খ্রিষ্টাব্দ – হাশিম

৪৩৯ খ্রিষ্টাব্দ – আব্দ মানাফ

৪০৬ খ্রিষ্টাব্দ – কুসাই

৩৭৩ খ্রিষ্টাব্দ – কিলাব

৩৪০ খ্রিষ্টাব্দ – মুররাহ

৩০৭ খ্রিষ্টাব্দ – কা'য়াব

২৭৪ খ্রিষ্টাব্দ – লু'আহ

২৪১ খ্রিষ্টাব্দ – গালিব

২০৮ খ্রিষ্টাব্দ – ফিহর

(সূত্রঃ https://bn.wikipedia.org/wiki/মুহাম্মাদের_বংশধারা)

উল্লেখ্য, মাওলানা আবদুল কাহার সিদ্দিকী রহিমাহুল্লাহ ছিলেন “নায়েবে মুজাদ্দেদ”। তিনি ছিলেন শাইখুল ইসলাম হযরত আবদুল হাই সিদ্দিকী রহিমাহুল্লাহর জ্যেষ্ঠ পুত্র এবং “মুজাদ্দেদে জামান”, ফুরফুরা দরবারের প্রতিষ্ঠাতা হযরত আবু বকর সিদ্দিকী রহিমাহুল্লাহর জ্যেষ্ঠ নাতি।

মুজাদ্দিদ (আরবি:مجدد‎) শব্দের অর্থ সংস্কারক[সূত্রঃ ১. Faruqi, Burhan Ahmad। The Mujaddid's Conception of Tawhid (ইংরেজি ভাষায়)। পৃষ্ঠা ৭। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৪। ২.Meri, Josef W. (সম্পাদক)। Medieval Islamic Civilization: An Encyclopedia (ইংরেজি ভাষায়)। Psychology Press। পৃষ্ঠা ৬৭৮। প্রতি হিজরী শতাব্দিতে মুসলিম সমাজ সংস্কার, মুসলমানদের মধ্যে অনুপ্রবেশকৃত অনৈসলামিক রীতির মূলোৎপাটন এবং ইসলামের প্রকৃত আদর্শ পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করার জন্য আবির্ভূত হন।হাদীসে বলা হয়েছে, "আল্লাহ তা'আলা এ উম্মাতের (কল্যাণের) জন্য প্রত্যেক শতাব্দীর শেষে এমন এক ব্যক্তিকে পাঠাবেন যিনি তাদের দ্বীনকে সংস্কার করবেন।" — মিশকাতুল মাসাবিহ ২৪৭[ টেমপ্লেট:Ihadis], আবু দাউদ ৪২৯১ (সহীহ)[টেমপ্লেট:Ihadis] ইমাম আয-যাহাবি এবং ইবনে হাজার আসক্বালানী ব্যাখ্যা করেছেন যে মুজাদ্দিদ শব্দটি বহুবচন হিসাবেও বোঝা যায়। মুজাদ্দিদদের মধ্যে বিশিষ্ট আলেম, ইসলামী শাসক এবং সামরিক সেনাপতিও অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। সাধারণত নিম্নোক্ত ব্যক্তিদেরকে অনেকে মুজাদ্দিদ মনে করেন। উমর ইবনে আবদুল আজিজ (৬০-১০১ হি.) আবু হানিফা (৮০-১৫০ হি.) ইমাম শাফি (১৫০-২০৪ হি.) আহমদ বিন হাম্বল (১৬৪-২৪১ হি.) আবুল হাসান আল আশআরী (২৭০-৩২৪ হি.) সালাহউদ্দীন আইয়ুবি (৩২৭-৪০২ হি.) ইমাম গাজ্জালি (৪৫০-৫০৫ হি.) ইবনে হাযম (৪৭০-৫৯৭ হি.) ফখরুদ্দীন আল রাযি (৫৪৩-৬০৬ হি.) তৈমুর লং (৮শত হি.) দ্বিতীয় মুহাম্মদ (উসমানীয় সুলতান) (৯শত হি.) ইবনে হাজার আসকালানী (৭৭৩-৮৫২ হি.) জালালুদ্দীন সুয়ুতী (৮৪৯-৯১১ হি.) আহমেদ সিরহিন্দি (৯৭১-১০৩৪ হি.) শাহ ওয়ালিউল্লাহ (১১১৪-৭৬) আওরঙ্গজেব আলমগীর (১১শত হি.) আহমদ রেজা খান বেরলভী (১২৭২-১৩৪০ হি.) আশরাফ আলী থানভী (১২৮০–১৩৬২ হি.) ফতেহ আলী ওয়াসি (১২৩৭-১৩০৩ হি.) [সূত্রঃ"তার প্রেম আলোয় সূচনা আমার কাব্যের"। Jugantor।] একটি তালিকায় প্রতি শতকে একজন করে ধারাবাহিক ১৪জনের নাম লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। হিজরী ১ম শতক যেহেতু প্রিয় নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও সাহবীদের যুগ তাই এই শতকে কোনো মুজাদ্দিদ নেই। ২য় শতকের মুজাদ্দিদ, ইমাম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি। ৩য় শতকের মুজাদ্দিদ, ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি। ৪র্থ শতকের মুজাদ্দিদ, আবুল মানসুর মাতুরিদী রহমতুল্লাহি আলাইহি। ৫ম শতকের মুজাদ্দিদ, মুহম্মদ আবূ হামিদ গাজ্জালী রহমতুল্লাহি আলাইহি। ৬ষ্ঠ শতকের মুজাদ্দিদ, সাইয়্যিদ আব্দুল ক্বাদির জিলানী রহমতুল্লাহি আলাইহি। ৭ম শতকের মুজাদ্দিদ, সাইয়্যিদ মুঈনুদ্দীন চিশতী আজমেরী রহমতুল্লাহি আলাইহি। ৮ম শতকের মুজাদ্দিদ, নিযামুদ্দীন আউলিয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি। ৯ম শতকের মুজাদ্দিদ, খাজা বাহাউদ্দিন নকশবন্দ বুখারী রহমতুল্লাহি আলাইহি। ১০ম শতকের মুজাদ্দিদ, ইমাম জালালুদ্দীন সূয়ূতী রহমতুল্লাহি আলাইহি। ১১ শতকের মুজাদ্দিদ, শায়খ আহমদ ফারুক্বী সিরহিন্দী রহমতুল্লাহি আলাইহি। ১২ শতকের মুজাদ্দিদ, শাহ ওয়ালীউল্লাহ মুহাদ্দিছ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি। ১৩ শতকের মুজাদ্দিদ, সাইয়্যিদ আহমদ শহীদ বেরেলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি। ১৪ শতকের মুজাদ্দিদ,আবু বকর ছিদ্দিক্বী ফুরফুরাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি। (সূত্রঃhttps://bn.wikipedia.org/wiki/মুজাদ্দিদ) ১৫ শতকের নায়েবে মুজাদ্দিদ হচ্ছেন “মুজাদ্দেদে জামান”, ফুরফুরা দরবারের প্রতিষ্ঠাতা হযরত আবু বকর সিদ্দিকী রহিমাহুল্লাহর জ্যেষ্ঠ নাতি শেরে ফুরফুরা, আমিরুল ইত্তেহাদ,যুগশ্রেষ্ঠ মাওয়াহিদ(তাওহীদবাদী) হযরত মাওলানা আবুল আনসার মুহাম্মাদ আবদুল কাহহার সিদ্দিকী আল কুরাইশী রহিমাহুল্লাহ। ২০০৬ সালের ২২ ডিসেম্বর, জুমাবার, ২/২,দারুস সালাম,মীরপুর,ঢাকায় অবস্থিত মার্কাযে ইশাআতে ইসলাম(ইসলাম প্রচার কেন্দ্র) হতে জানাযার পূর্বে আনুষ্ঠাইনকভাবে "নায়েবে মুজাদ্দেদ" ঘোষণা করা হয় ।(সূত্রঃ ফুরফুরার ইতিহাস,ইশাআতে ইসলাম কুতুবখানা,দারুস সালাম,ঢাকা)।

প্রত্যেক বিষয় মূলে পৌঁছে(ফারাবী আল আরাবী)।

“তাওহীদ” হচ্ছে দীন ইসলামের মূল আদর্শ।

তাওহিদ (আরবি: توحيد) বলতে ইসলাম ধর্মে এক আল্লাহর ধারণাকে বোঝায়।[তথ্য সূত্রঃ "From the article on Tawhid in Oxford Islamic Studies Online" (ইংরেজি ভাষায়)। Oxfordislamicstudies.com। ২০০৮-০৫-০৬। ২০১০-১১-২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০৮-২৪। ] তাওহিদ শব্দের অর্থ একত্ববাদ৷[সূত্রঃ {{বিশ্বকোষ উদ্ধৃতি|শিরোনাম=Allah|বিশ্বকোষ=Encyclopædia Britannica Online|সংগ্রহের-তারিখ=2008-05-28|অবস্থান=|প্রকাশক=|ইউআরএল=http://www.britannica.com/eb/article-9005770/Allah%7Cভাষা=ইংরেজি} ] এটি শিরকের বিপরীত। ইসলামি পরিভাষায় তাওহিদ হল সৃষ্টি ও পরিচালনায় আল্লাহকে এক ও অদ্বিতীয় হিসেবে বিশ্বাস করা, সকল ইবাদাত-উপাসনা কেবলমাত্র আল্লাহর জন্য করা, অন্য সবকিছুর উপাসনা ত্যাগ করা, আল্লাহর সুন্দর নামসমূহ ও সুউচ্চ গুণাবলীকে তার জন্য সাব্যস্ত করা এবং দোষ ত্রুটি থেকে আল্লাহকে পবিত্র ও মুক্ত ঘোষণা করা।[ ড. সালিহ বিন ফাওযান আল ফাওযান। আক্বীদাতুত তাওহীদ। শাইখ মুখলিসুর রহমান মানসুর কর্তৃক অনূদিত। মাকতাবাতুস সুন্নাহ। ][ "The Fundamentals of Tawhid (Islamic Monotheism)" (ইংরেজি ভাষায়)। ICRS (Indonesian Consortium of Religious Studies। ২০১০-১০-৩০। ২০১৫-০৬-২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-১০-২৮। ]

কুরআনে বলা হয়েছে,

   "কোনো কিছুই তার সদৃশ নয়।"[কুরআন ৪২:১১]

কুরআনের অন্য স্থানে বলা হয়েছে,

   "বল, তিনিই আল্লাহ, এক-অদ্বিতীয়। আল্লাহ কারো মুখাপেক্ষী নন, সকলেই তার মুখাপেক্ষী। তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং তাঁকেও জন্ম দেয়া হয়নি। আর তার কোনো সমকক্ষও নেই।"[কুরআন ১১২:১–৪]

যুগে যুগে নবী-রসূল আলাইহিমুস সালামবৃন্দ একটি মাত্র মিশন-ভিশন নিয়ে দীন প্রচার করেছিলেন তা হচ্ছে আল্লাহ জাল্লা জালালুহু ওয়াশানুহুর তাওহীদ অর্থাৎ একত্ববাদ- যা ছিল যুগশ্রেষ্ঠ মাওয়াহিদ অর্থাৎ তাওহীদবাদী শেরে ফুরফুরা হযরত মাওলানা আবুল আনসার মুহাম্মাদ আবদুল কাহহার সিদ্দিকী রহিমাহুল্লাহর স্বীয় ওয়ালেদ(পিতা)শাইখুল ইসলাম হযরত মাওলানা আবু নসর মুহাম্মাদ আবদুল হাই রহিমাহুল্লাহ কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত “বিশ্ব ইসলাম মিশন কুরআনী-সুন্নী জমিয়তুল মুসলিমিন হিযবুল্লাহ”র মূল ইসলাম মিশন।

প্রকাশ থাকে যে, মাওলানা আবদুল কাহহার সিদ্দিকী রহিমাহুল্লাহ নতুন হিজরী পনের শতক আগমনের মাত্র কয়েক বছর পূর্বে ১৯৭৭ সালে খেলাফত প্রাপ্ত হন।বছর দুইয়েক পরে ১৯৭৯ সালে নতুন হিজরী সন শুরু হয়।

উল্লেখ্য, হিজরী চৌদ্দশত শতকে মুজাদ্দেদে জামান রূপে আবির্ভূত হন স্বীয় দাদাজান ফুরফুরা দরবারের প্রাণ প্রতিষ্ঠাতা হযরত মাওলানা আবু বকর সিদ্দিকী রহিমাহুল্লাহ।উনার ইন্তেকালের পর চৌদ্দ শতকের পুন্জিভূত তাওহীদ বিরোধী শিরকবাদী আকিদা-বিশ্বাসের মূলোৎপাটন করে ইসলামের আদি আসল আকিদা-বিশ্বাস মুসলিম সমাজে পুনঃপ্রতিষ্ঠায় তাওহীদবাদী শেরে ফুরফুরা হযরত মাওলানা আবুল আনসার মুহাম্মাদ আবদুল কাহহার সিদ্দিকী রহিমাহুল্লাহ ২৯ বছর যাবৎ ভারত-বাংলাদেশ ছাড়াও যুক্তরাজ্য,অষ্টেলিয়া,সৌদী আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রভৃতি দেশে নিরবচ্ছিন্নভাবে ওয়াজ-নসীহ, খানকাহ-মসজিদ-মাদরাসা-লিল্লাহ বোর্ডিং, হেফজখানা, কুরআন-হাদীস রিসার্চ কেন্দ্রভিত্তিক প্রাণান্তকর রেয়াজত-মেহনত করে মৃত্যুর পর খেতাব লাভ করেন “নায়েবে মুজাদ্দেদ”।

সুদীর্ঘ প্রায় তিন দশকের নিরলস তাওহীদী ওয়াজ-নসিহতের প্রভাব মুসলিম সমাজকে কতটা আলোড়িত-উদ্বুদ্ধ করেছিল তার একটা লিখিত দলিল প্রমাণের জন্য পীর সাহেব স্বীয় এক সারগেদ-কে মৃত্যুর মাত্র কয়েক মাস পূর্বে চট্টগ্রামে তলব করলে সারগেদ আদিষ্ট হয়ে যে বর্ণনা লেখেন তা তার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা নিম্নরূপঃ

‘ الله (আল্লাহ) জাল্লা জালালুহু ওয়াশানুহু’র পবিত্র পরিচিতিঃ

‘‘আমিই আল্লাহ, আমি ব্যতিত আর কোন মাবুদ নেই, আমারই স¥রণে নামাজ আদায় কর’’ (সূরাহ:ত্বহা:আয়াত ১৪)

‘‘ الله (আল্লাহ) ’’ মহান ও বরকতময় পালনকর্তার নাম। তিনিই সত্য মাবূদ, তিনি ব্যতীত কেউ মাবূদ নয়। আল্লাহর নামসমূহের মধ্যে এটি( الله‎ আল্লাহ) তাঁর বিশেষ(খাস জাত) নাম। তিনি সুবহানাহ তা'য়ালা ব্যতীত এ নাম কারো জন্যে বৈধ নয়।’’(তাফসীরুল উশরিল আখীর মিনাল কুরআনিল কারীম: মুসলিম জীবনে গুরুত্বর্পূর্ণ বিধান) সূত্রঃ www.tafseer.info, ISBN: 978-9960-58-634-2, bng@tafseer-info পৃ: ৪, সূরাহ আল ফাতিহার তাফসীর। মক্কা আল মুয়াজ্জেমা)।

‘‘ইস্মি আল্লাহ আল্ আ’জিম হুয়া আল্লাহ’’। ‘‘আল্লাহর সবচাইতে বড় নাম, সে তো الله(আল্লাহ)ই’’। সূত্রঃ ১) ঈমান তত্ত¡ ও দর্শন, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ প্রথম প্রকাশ - ১৯৯৯, পৃষ্ঠা: ৬০)

‘‘ওলামায়ে কেরামবৃন্দ বিভিন্ন কেতাবে মহাপবিত্র الله (আল­াহ) শব্দটি সর্ম্পকে নিম্রূনপ বর্ণনা দিয়েছেন: ●‘‘ الله (আল্লাহ) তা’আলা এমন যে, সৃষ্টি জগতের কোন বস্তুই তাঁর সমতুল্য নয়’’ (সূরাহ আশ্ শুরাহ) ●‘‘সুতরাং তোমরা সৃষ্টি জগতের কোন কিছুকেই আল্লাহ তা’আলার দৃষ্টান্ত স্বরূপ পেশ করতে যেও না’’। (সূরাহ আন্ নাহ্ল)

●‘‘কল্পনাসমূহ আল্লাহর ধারে কাছেও পৌঁছেনা এবং বুদ্ধি, অনুভূতিসমূহ আল­াহকে উপলদ্ধি করতে পারে না’’। (আকিদাহঃ ইমাম আবু জাফর তাহাবী রহঃ) 
●‘‘এ কথা সন্দেহাতীত যে, এক মহান সত্তার অস্তিত্ব বিদ্যমান রয়েছে-আসমানী ধর্মগুলো যার নাম দিয়েছে الله‎(আল্লাহ)  (জনৈক বিজ্ঞানী  পৃ:৩৪)

শারহু আকাইদ আন নাসাফিয়া, আকীদাতুত্ তাহাভী ও আল-আকীদাতুল হাসানা ইত্যাদি গ্রন্থে الله‎ (আল্লাহ) পাকের পরিচয় এভাবে বর্ণনা করা হয়েছে যে, ‘‘এই মহবিশ্বের অবশ্যই এক সৃষ্টিকর্তা রয়েছেন। যিনি কাদীম-অনাদি ও অনন্ত। তিনি সব সময় ছিলেন এবং সব সময় থাকবেন। তাঁর অস্তিত্ব সন্দেহাতীত ও অবশ্যম্ভাবী। তাঁর না থাকা অসম্ভব’’ ।.

الله (আল্লাহ) মহাপবিত্র এই শব্দটি মহান সত্তার ইসমে ’জাত’। আল্লাহর এই সত্তামূলক নামটি পবিত্র কুরআনে ২৫৮৪ বার উল্লেখ রয়েছে। হাদিস শরিফেও এর কোন প্রতিশব্দ উল্লেখ করা হয়নি। الله (আল্লাহ) মহাপবিত্র এই শব্দটি তুলনা রহিত এমন এক অনুপম মহান সত্তার ইসমে ’জাত’, যার কোন লিঙ্গান্তর, ভাবান্তর ও বচনান্তর অকল্পনীয়। এ ’জাত’ নামটি হচ্ছে সর্বপ্রকার সম্বন্ধরহিত একক ও অনুপম।

الله(আল্লাহ) শব্দের তাহ্কীক:

(ক) ‘‘বস্তুত আল্লাহ তা’আলা এক ও অদ্বিতীয়। তাই আল্লাহর শব্দের কোন দ্বিবচন বা বহু বচন হয়না। অধিকাংশ ‘আলিমের মতে, এ শব্দটি কোন বিশেষ (শব্দমূল বা) ধাতু হতে উদ্ভূত নয়। আরবি ভাষায় এর হুবহু অর্থজ্ঞাপক কোন প্রতিশব্দ নেই। অন্য কোন ভাষায় আল্লাহ শব্দের কোন অনুবাদ সম্ভব নয়। সুতরাং খোদা, এড়ফ, ঈশ্বর ইত্যাদি শব্দগুলো আল্লাহ শব্দের সম্যক পরিচয় বহন করতে পারেনা। ”(ফাতাওয়ায়ে সিদ্দিকীন: আল্লাহ উপর ঈমান:, শাবান- ১৪২০ হিজরী, কুরআন হাদীস রিসার্চ সেন্টার, ইশা’আতে ইসলাম কুতুব খানা, দারুস সালাম, মীরপুর, ঢাকা-১২১৬, পৃ: ৩৩)

(খ) ‘‘বহু বিজ্ঞ আলেম মতে এটি ﺍﺴﻢ ﺠﺎﻤﺪ (Not deriveable) অর্থাৎ এটিই মৌলিক শব্দ। সেজন্য তা اﺸﺘﻘﺎﻖ বা derivation হতে পারে না। এর অর্থ প্রতিপালক, পরিচালক ও সংরক্ষক প্রভূ ইংরেজির এড়ফ বা বাংলায় ঈশ্বর শব্দ এই কারণে আল্লাহ শব্দের পরিবর্তে ব্যবহৃত হতে পারে না। ...... সেজন্য খাঁটি জ্ঞানী সাহেবানগণ ‘আল্লাহ’ শব্দের প্রতিশব্দ সকল ভাষায় আল্লাহ রেখেছেন।’’ ( সূরা ফাতেহার তফসীর: হযরত মাওলানা মীর মুহাম্মদ আখতর (রাহ:) নতুন সংস্করণ, পৃ; ১৭)

الله Allah (/ˈælə, ˈɑːlə, əlˈlɑː/;[1][2] Arabic: الله‎, translit. Allāh‎, pronounced [ɑɫ'ɫɑːh] ( listen)) is The word Allah has been used by Arabic people of different religions since pre-Islamic times.(Source: Wikipedia)

উল্লখ্যে, الله (আল্লাহ) সম্পর্কে ধারণা বিভিন্ন ধর্মে বিভিন্ন। এই কারণে বর্তমান-যুগের আরব-খ্রীস্টানেরা মুসলিমদের থেকে মহাপবিত্র الله (আল্লাহ) শব্দের পার্থক্য সৃষ্টি করতে “Allah al-Ab” (God the father/God-father)) শব্দ ব্যবহার করে থাকে।এমনিভাবে কুরআনে বর্ণিত الله (আল্লাহ) শব্দার্থ এবং হিব্রু-বাইবেলে বর্ণিত الله (আল্লাহ) শব্দের অর্থে মিল এবং অমিল দুটি আছে”। (Source: Wikipedia)

প্রসঙ্গতঃ উল্লখ্যে, বেশ কয়েক বছর আগে একবার মালয়েশিয়ান খ্রীষ্টানদেরও ইচ্ছা জেগেছিল যে, তারাও যেন তাদের পূর্ব পুরুষদের মতো তাদের সৃষ্টিকর্তা এড়ফÐকে الله (আল্লাহ) মহাপবিত্র এই নামে ডাকতে। যেমন ইচ্ছা, তেমন কাজ। সেমতে, الله (আল্লাহ) ডাকার আইনী অধিকার লাভের জন্য তারা মালয়েশিয়ার নিম্ন আদালতে মামলা দায়ের করে বসে। নিম্ন আদালতে অনুকূল রায় পেলেও রাষ্ট্রপক্ষ আপীল করলে মালয়েশিয়ার সর্বোচ্চ আদালত সে রায়কে বাস্তব কারণে বাতিল করে দেয়। কারণ, যেহেতু ইসলাম পূর্ব আরবে পৌত্তলিক আরবরা আল্লাহকে “এক, একক, অদ্বতিীয় মনে করতো না বরং তাঁর সাথে সঙ্গী-সাথী এবং পুত্র-কন্যার ধারণা সংযুক্ত করেছিলো-যা ইসলামী যুগে সমূলে উৎপাটন করা হয় এবং যহেতেু ইসলামে الله (আল্লাহ) শব্দটি দ্বারা এক, অদ্বিতীয় এবং অবিনশ্বর এক মহান সৃষ্টিকর্তার দিকে সুস্পষ্ট, প্রচ্ছন্ন এবং দ্ব্যথহীনভাবে নর্দিশেনা রয়ছেে এবং সমস্ত স্বর্গীয় দ্বীন-মধ্যে ‘‘অস্তত্বিবাচক’’ (ইসমি যা-ত) সেই একক সত¦ার নাম الله (আল্লাহ) বলেই সংজ্ঞায়িত করা হতো এবং যহেতেু ইসলামী ভাষ্যনুযায়ী, الله (আল্লাহ) এক, অদি¦তীয়, সমস্ত-জগতের-সৃষ্টিকর্তা, সর্বত্র বিরাজমান, একক নিরংকুশ স¦ার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী সহেতেু, সার্বিক দিক বিবেচনা করে মালয়েশিয়ার সর্বোচ্চ আদালত এই মর্মে ঐতিহাসিক রায় প্রদান করে যে, ‘‘ الله (আল্লাহ) ’’Ðকে الله (আল্লাহ) বলে ডাকার একমাত্র অধিকারী তাওহীদী ঈমানদার মুসলমান”।

‘‘ইসলাম-পূর্ব আরবেও নিম্নের বর্ণনামতে, الله (আল্লাহ) নামের ব্যবহার খুঁজে পাওয়া যায়। কিন্তু তা করতো শুধুমাত্র সৃষ্টিকারী দেবতা বুঝতেঃ

The Aramaic word for "God" in the language of Assyrian Christians is Ĕlāhā, or Alaha. Arabic-speakers of all Abrahamic faiths, including Christians and Jews, use the word "Allah" to mean "God". The Christian Arabs of today have no other word for "God" than "Allah". (Even the Arabic-descended Maltese language of Malta, whose population is almost entirely Roman Catholic, uses Allah for "God".) Arab Christians, for example, use the terms Allāh al-ab (الله الأب) for God the Father, Allāh al-ibn (الله الابن) for God the Son, and Allāh al-rū al-quds (الله الروح القدس) for God the Holy Spirit. (See God in Christianity for the Christian concept of God.)

বিভিন্ন ধর্মে স্রষ্টার ধারণা

“পৃথিবীর ধর্ম জগতে আহলি কিতাব ভিত্তিক ধর্মের মধ্যে ইয়াহুদী ধর্ম বা জুডাইজম অন্যতম প্রাচীন ধর্ম যা হযরত মূসা’ কালিমুল্লাহ্র মাধ্যমে প্রচারিত হয়েছিল। এ ধর্মের কালামুল্লাহ শরীফকে ইসলামী পরিভাষায় বলা হয় তাওরাত, পাশ্চাত্যে বলা হয় Old Testament. বনী ইসরাঈলের জুডিয়া নামক গোত্রের নামানুসারে এ জাতিকে বলা হয় জুডিস্ট (The Vivekananda Society, Bimla publishing House, Delhi- 1982, Article: Israelism by T.A. Isaac, p-49) ও ঈমান: তত্ত¡ ও দর্শন, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ঢাকা, পৃ: ১৩৩)

ইহুদী ধর্মে পরম সত্বা ¯স্রষ্টার ব্যক্তিগত নাম জিহুুবা (Zehuba) আর উপাস্য হিসাবে স্রষ্টার নাম হচ্ছে ইলোহিম (The convention of Religons in India, op. cit. Article: Judaesm by Roy, E.M. cohen, D. chap, The Jewish articles of Faith, pp 65-68, (২) ঈমান: তত্ত¡ ও দর্শন, ইফা: পৃ: ২৫৩) The Encyclopaedia of Religian and Ethics, Article: God (Jeish) p. 253, ঈমান: তত্ত¡ ও দর্শন পৃ: ২৫৩)। ইয়াহুদী ধর্মে ¯্রষ্টার অস্তিত্ব, একত্ব, শ্রেষ্টত্ব, মহত্ব ইত্যাদি ঐশী- গুণাবলী স্বীকৃত (সূত্র: The convention pp 65-68, ৬৫-৬৮, ঈমান: তত্ত¡ ও দর্শন ইফা পৃ: ২৫৩), জিহূবা আমাদের আল্লাহ, জিহূবা এক। The convention pp 65-68,

  • জিহূবা সর্বশক্তিমান (Gn 171 Ex 63 quoted in Ibid। সর্বোচ্চ, পবিত্র স্রষ্টা পালন কর্তা (এহ ১৪১৮ (Gn 1418 ps 718 quoted in Ibid, প্রাগুক্ত-পৃ: ২৫৩)।
  • তিনি একমাত্র উপাস্য (Is 4523, quoted in Ibid
  • লক্ষ্য কর যে, আমি, আমিই তিনি। আমার সঙ্গে অন্য কোন উপাস্য নেই (Dd xxxii, quoted in convention op. cit।
  • আমিই প্রথম আমিই শেষ। আমি ছাড়া আর কোন উপাস্য নেই (Isaiah XLIV. 6 quoted Ibid,।

কাজেই এটা স্পষ্ট যে, ইয়াহুদী ধর্ম একটি একত্ববাদী ধর্ম (ঈমান: তত্ত¡ ও দর্শন/ বিভিন্ন ধর্মে স্রষ্টার ধারণা, ইফা, পৃ:২৫৩)। তবে এদের কোন কোন সম্প্রদায় এজরা (উযায়ির)কে আল্লাহর পুত্র (ঝড়হ) বলে আখ্যায়িত করতো (আল কোরআন: ৯: ৩০) প্রাগুক্ত-২৫৩

নায়েবে মুজাদ্দিদ, যুগশ্রেষ্ঠ মাওয়াহিদ আবুল আনসার মুহাম্মাদ আবদুল ক্বাহ্হার সিদ্দিকী আল কুরাইশী (রাহিমাহুল্লাহ) এর মতেÐ মহাপবিত্র ‘‘ الله (আল্লাহ) ’’-কে কেবল শাব্দিক উচ্চারণে الله (আল্লাহ) বললে সহিহ হবে না; ক্বুরআন-হাদিস-ইজমা-কিয়াসের মাধ্যমে ডাকতে হবে।

‘‘ الله (আল্লাহ) শব্দটি এমন এক মহান সত্বার চিহ্নিত ও নির্ধারিত নাম, যিনি ‘ওয়াজেবুল ওজুদ’ তথা অবশ্যম্ভাবী অস্তিত্বের অধিকারী, যিনি যাবতীয় পবিত্রতা, শ্রেষ্ঠত্ব, পরিপূর্ণতা ও স্বয়ং সম্পূর্ণতার গুণাবলীতে ভূষিত এবং সকল প্রকার অসম্পূর্ণতা, অপবিত্রতা ও যাবতীয় দোষÐক্রটি হতে মুক্ত এবং যিনি এসব গুণাবলীর একমাত্র অধিকারী। অর্থাৎ যিনি ব্যতীত এসব গুণাবলীর অধিকারী অপর কেহ নেই।’’ (আল্লাহ তায়ালার উপর ঈমান: ফাতাওয়ায়ে সিদ্দিকীন পৃ: ৩২)

‘‘মহিমাময় الله (আল্লাহ)। তিনি সৃষ্টিকূলের ইবাদত ও দাসত্ব পাওয়ার একমাত্র অধিকারী। তিনিই একমাত্র মা’বুদ, উপাস্য, একমাত্র তাঁর কাছেই বিনীত হতে হয়, রুকু-সিজদাহসহ যাবতীয় ইবাদত-উপাসনা একমাত্র তাঁকেই নিবেদন করতে হয়।’’ (তাফসীরুল উশরিল আখীর মিনাল কুরআনিল কারীম, bng@tafsee.info: (আল্লাহ) নামের ব্যাখ্যা, পৃ: ৭০, মক্কা আল মুয়াজ্জিমা)।

আল্লাহ পাকের সর্বোত্তম পরিচয় হচ্ছে: লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহ

আল্লাহ পাকের সর্বোত্তম পরিচয় হচ্ছে: লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহ” অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া আর কোন দ্বিতীয় সত্য ইলাহ, হুকুমদাতা, বিধান দাতা আর কেহ নেই যার সংক্ষিপ্ত নাম: তাওহীদ।

স্বয়ং আল্লাহপাক ঘোষণা করনেঃ  
শাহদিাল্লাহু আন্নাহু- লা-ইলা-হা ইল্লাহুয়া ওয়াল মালা-য়কিাতু ওয়া 'উলুল্ 'ইলমি ক্ব-য়মিাম্ বিল কিসতি লা-ইলা-হা  
  ইল্লাহুয়াল্ আঝঝিুল হাকীম। (সূরাহ্ ., আয়াতঃ আলে ইমরানঃ আয়াতঃ ১৮)
 

আল্লাহু লা-ইলা-হা ইল্লাহুয়াল হাইয়ুল ক্বইউম। (সূরাহ্ ,বাক্বরাহ, আয়াতঃ ২৫৫)

হুল্লাহুল্লাজি লা-ইলা-হা ইল্লাহু- ((সূরাহ্ ,বাক্বরাহ, আয়াতঃ ২৫৫)  
ওয়া ইলাহুকুম ইলাহুই ওয়াহিদ্। লা-ইলা-হা ইল্লাহুয়ার রহমানুর রহীম।
  রহীম।  (সূরাহ্ বাক্বরাহঃ আয়াতঃ ১৬৩)

লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহ এর সংক্ষিপ্ত নাম তাওহীদ আর বিস্তৃত সংজ্ঞা রয়েছে নিম্নোক্ত কালিমা-ই-তাওহীদেঃ

‘‘লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহু ওয়াহ্দাহু লা-শারিকালাহু, লাহুল মুল্কু ওয়ালাহুল্ হাম্দু ওয়াহুয়া ‘আলা কুল্লি শাইয়্যিন ক্বদীর। আল্লাহুম্মা লা-মানিয়া আত্বতা, ওয়ালা- মুতিয়া লিমা মানাতা ওয়ালা ইয়ানফাউ, জাল জাদ্দু মিনকাল জাদ্দু।’’

অর্থ: ‘‘আল্লাহ ছাড়া কোন মা’বুদ নেই, তাঁর কোন শরীক নেই। রাজত্ব তাঁরই এবং প্রশংসা তাঁরই। তিনি সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান। হে আল্লাহ, আপনি যা দান করেন তা ঠেকানোর ক্ষমতা কারো নেই। আর আপনি যা দান করেন না তা দেওয়ার ক্ষমতাও কারো নেই। কোন পরিশ্রমকারীর পরিশ্রম আপনার ইচ্ছার বাইরে কোন উপকারে লাগে না ’’ ।

তাওহীদী ঈমানের সংজ্ঞাঃ

(ক) ‘‘তাওহীদ’’ (توحيد‎ ) আরবি শব্দ। তাওহীদ শব্দমূল ﻮﺡ ﺩ এর ক্রিয়া বাচক বিশেষ্য (ﻤﺻﺪﺭ)। ইহার আভিধানিক অর্থ ‘‘একত্ববাদ’’ অথবা একত্বের প্রমাণ’’ । এই জন্য ‘‘একত্ব’’ বুঝাইতে এই শব্দটি প্রয়োগ করা হয়।

ইহার দ্বারা এই অর্থ ও হয় যে, আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোন কিছু ইবাদতের যোগ্য হইতে পারেনা এবং আল্লাহর কোন অংশীদার নাই। ইহার অর্থ এমনও হইতে পারে যে, আল্লাহ তাঁহার সত্তায় এক, একক এবং ইহার এই অর্থও হইতে পারে যে, আল্লাহই একমাত্র অস্তিত্ববান ও প্রকৃত (সত্য), অবশিষ্ট সৃষ্টিকুলের প্রতিটি বস্তুর অস্তিত্ব ধারণা যোগ্য।

‘‘তাওহীদের সহজ সরল অর্থ এই হইতে পারে যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন মা’বুদ নাই’’। (বিস্তারিত ইসলাী বিশ্বকোষ, ১২তম খন্ড, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, পৃ®ঠা ৯৭)

পরিভাষায় তাওহীদের সংজ্ঞা নিম্নরূপ-

‘‘আল্লাহর জাত’কে শিরক ও তাশবীহ হতে সম্পূর্ণ পবিত্র বলে মনে করা এবং তাঁর জাতের পূর্ণ এককতায় ও অনন্যতায় বিশ্বাস করা এবং উলুহিয়্যাত তথা মাবুদ বা উপাস্য হওয়ার গুণটিকে একমাত্র তাঁর জন্যেই নির্ধারিত ও নির্দিষ্ট বলে আকিদাহ পোষণ করাকেই তাওহীদ বলে’’। (সূত্রঃ ফাতাওয়ায়ে সিদ্দিকীন (১-৪ খন্ড) কুরআন হাদীস রিসার্চ সেন্টার (ফুরফুরার গবেষণা প্রতিষ্ঠান) ইশা’আতে ইসলাম কুতুব খানা (ফুরফুরার প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান প্রকাশকাল শাবান ১৪২০ হিজরী; পৃ : ৭৫)

(খ) ‘তাওহীদ  (توحيد)  শব্দটি আরবী ‘‘ওয়াহাদা  (وحده)  ক্রিয়ার মূল থেকে নিষ্পন্ন যার অর্থ ‘এক হওয়া’, ‘একক হওয়া’ বা ‘অতুলনীয় হওয়া’ (to be along, unipue, singular, unmatched without epual, inccmparable) আর তাওহীদ অর্থ ‘এক করা, এক বানানো, ‘একত্রিত করা, ‘একত্বের ঘোষণা দেওয়া’ বা ‘একত্বে বিশ্বাস করা’। (সূত্রঃ 'আল্লামা ডঃ আ. ন. ম. আবদুল্লাহ জাহাঙ্গীর)। 

(গ) ‘তাওহীদ (توحيد) ইসলামের মৌলিক বিশ্বাসসমূহের সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এ শব্দের মূল ধাতু ‘‘ وحد(ওয়াহ্দুন) বা ‘একক’। দাখিল ; আত তাওহীদ ওয়াল ফিকাহ, মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড ঢাকা, বাংলাদেশ পৃ: ১২, :প্রথম পরিচ্ছেদ, প্রথম পাঠ: তাওহীদ পরিচিতি।

(ঘ) ‘‘তাওহীদ এর শাব্দিক অর্থ : এটা ‘‘ وحد’’ ওয়াহাদ (অর্থ : এক) শব্দ থেকে উদগত যার অর্থ ‘‘একক’’। (সূত্রঃ মূলঃ (১) শাইখ আব্দুর রহমান সা’দী (২) শাইখ আব্দুল আযীয বিন বায (৩) শাইখ মুহাম্মাদ সালেহ আল উসাইমীন (৪) শাইখ আবদুল্লাহ বিন আবদুর রহমান আল জিবরীন (৫) ডঃ নাছির আব্দুল কারীম আল আক্কল অনুবাদ: আবু রাশাদ আজমাল বিন আব্দুল নূর আবুল কালাম আযাদ। তাওহীদী দূর্গ : পৃ : ২৩,দারুল কাসিম ইলম চর্চ্চা কমিটি, সৌদী আরব।

আহাদ ও ওয়াহিদ শব্দের সংজ্ঞা

‘‘আরবী ভাষায় ‘‘ ﺍﻻﻮﺤﻴﺪ (ওয়াহিদ) শব্দটি এরূপ সমস্ত জিনিসের প্রতি প্রযুক্ত হয়-যার মধ্যে বহুত্ব বর্তমান থাকে। যথাঃ একটি মানুষ, একটি জাতি, একটি দেশ এ পৃথিবী - এসব বস্তুর প্রতি “ওয়াহেদ” শব্দ প্রযুক্ত হয়। অথচ এসবের মধ্যে অসংখ্য বহুত্ব বর্তমান আছে। কন্তিু ﺍﺤﺪ (আহাদ) শব্দটি মাত্র সেই জিনিসের প্রতি প্রযুক্ত হয় যা বিশুদ্ধ ‘এক’ সব দিক দিয়ে এক-যার মধ্যে কোন প্রকারের বহুত্ব বর্তমান নেই। এ কারণে আরবী ভাষায় এ শব্দটি ( ﺍﺤﺪ-আহাদ) বিশেষ ভাবে একমাত্র আল্লাহর জন্যই ব্যবহৃত হয়’’ । (সূত্র: দরসে কুরআন: সূরা ইখলাস, নেদায়ে ইসলাম, বর্ষ- ৬৬ সংখ্যা - ১১, পৃ: ৩, মে - ২০০৭, ঈসাব্দ, রবিউস সানি- জমাদউিল আউয়াল- ১৪২৮ হি:)।

‘‘তিনটি জিনিসের সমন্বিত বিশ্বাসের নাম তাওহীদ; অর্থাৎ আল্লাহর (একক) রবুবিয়্যাতের পরিচয় লাভ, তাঁর একত্বের স্বীকৃতি এবং তিনি লা-শরীক, তাঁর কোন শরীক নেই-একথা দ্ব্যর্থহীনভাবে ঘোষণা করার নাম তাওহীদী বিশ্বাস বা তাওহীদী আকীদা। পক্ষান্তরে এর বিপরীত চন্তিা ভাবনা পোষণ করার নাম শিরক.’’ (সূত্র: ১. কাওয়াইদুল ফিক্হ: পৃ: ২৪০, ২. তাওহীদী আকিদার স্বরূপ অধ্যায়: এক, পৃ: ১)

‘‘রাব্বুল মাশরিকি ওয়াল মাগরিবি লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহু ’’। (আল্ ক্বুরআান)

উল্লখ্যে, ইলাহ এবং রাব্ব- এর মধ্যে অর্থগত পার্থক্য থাকলেও ব্যবহারে দুইটি শব্দ একই সত্তার ক্ষেত্রে সাধারণতঃ ব্যবহৃত হয়। কারণ, যিনিই রাব্ব তিনিই ইলাহ হবেন। আর যিনি রাব্ব নন তার ইলাহ হওয়ার যোগ্যতা থাকতে পারে না। এ জন্য অনেক সময় ইলাহ অর্থে রাব্ব এবং রাব্ব অর্থে ইলাহ ব্যবহার করা হয়।

  • ‘‘আল্লাহ তায়ালা এক। ইহা সংখ্যার অর্থে নহে বরং ইহার অর্থ: ‘তাঁর কোন অংশীদার নেই’। ’’। (.পৃঃ ৯৪, ফতোয়ায়ে সিদ্দিকীন)

মাওয়াহদি কারা?

যাঁরা সর্বপ্রকার শিরকমুক্ত ও পরিপূর্ণভাবে আল্লাহপাকরে প্রতি ঈমানরে অধিকারী তাঁদেরকে ‘‘মাওয়াহিদ’’ তথা‘‘মুমিন’’, ‘‘মুসলিম’’ বলা হয়।

মুশরকি কারা ?

আর যারা শিরকযুক্ত আল্লাহপাকরে প্রতি ঈমান রাখে তাদেরকে ‘‘মুশরিক’’ বলা হয়।

তাওহীদ

‘‘পবিত্র কুরআন ও হাদীসের আলোকে আমরা দেখতে পাইযে, তাওহীদের বিভিন্ন পর্যায় রয়েছে এবং সকল পর্যায়ে তাওহীদে বিশ্বাস ¯হাপন করেই একজন মানুষ মুসলিমবলে গণ্য হতেপারেন। কুরআনে কারীমের বর্ণনার আলোকে তাওহীদের বিশ্বাসের দুইটি পর্যায় রয়েছে। প্রথমত, জ্ঞান পর্যায়ের তাওহীদ।এ পর্যায়ে মানুষ মহান আল্লাহকে তাঁরকর্মে এক ও অদ্বিতীয় বলে বিশ্বাস করে। দ্বিতীয় পর্যায় হলো কর্ম পর্যায়ের তাওহীদ। এ পর্যায়ে মানুষ নিজের কর্মে মহান আল¬াহকে এক ও অদ্বিতীয় বলে মানে।

১.জ্ঞান পর্যায়ের তাওহীদ (তাওহীদুল ইসবাস ওয়াল ম’ারিফাহ)

এ পর্যায়ে মহিমাময় আল্লাহকে আল¬াহর গুণাবলী ও কর্মে তাঁকে এক ও অদ্বিতীয় বলে বিশ্বাস করা হয়। জ্ঞান পর্যায়ের তাওহীদের দুইটি মূল বিষয় রয়েছে।

(১) সৃষ্টি ও প্রতিপালনের একত্ব ও (২) নাম ও গুণাবলীর একত্ব।

(১) সৃষ্টি ও প্রতিপালনের একত্বঃ আরবীতে একে তাওহীদর রুবুবিয়াত বলা হয়। এর অর্থ হলো, বিশ্বাস করাযে, আল্লাহ এই মহাবিশ্বের একমাত্র স্রষ্টা, প্রতিপালক, পরিচালক, সংহারক, রিযিকদাতা, পালনকর্তা।

“শুনে রাখো, তাঁরই কাজ সৃষ্টি করা ও আদেশ দান করা। আল্লাহ বরকতময় যিনি বিশ্ব জগতের প্রতিপালক”। (সূরাহ আরাফঃ ৫৪)

(২) নাম ও গুণাবলীর একত্বঃ তাওহীদুল আসমায়ি ওয়াস সিফাত বা নাম ও গুণাবলীর তাওহীদ হলো দৃঢ়ভাবে এই বিশ্বাস করাযে, মহান আল্লাহর সকল পূর্ণতার গুণে গুণানি¦ত।আল্লাহ পবিত্র কুরআনে কারিমে এবং রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিভিন্ন হাদীসে আল্লাহর বিভিন্ন নাম ও গুণাবলীর উলে¬খ করেছেন। এ সকল নাম ও গুণাবলীর উপর দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতে হবে।যেভাকে কুরআন ও হাদীসে বলা হয়েছে অবিকল সেইভাবে সকল প্রকার বিকৃতি,অপব্যাখ্যা থেকে মুক্ত থেকে এ সবের নাম ও গুণাবলীতে বিশ্বাস ¯হাপন করতে হবে।বিশ্বাস করতে হবে যে, আল্লাহর কোন গুণ বা বিশেষণকোন সৃষ্ট জীবের গুণ বা বিশেষণের মত নয়, তুলনীয় নয় বা সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

আর আল্লাহর জন্যে রয়েছে সব উত্তম নাম, কাজেই সে নাম ধরে তাঁকে ডাকো, আর তাদেরকে বর্জন কর, যারা তাঁর নামের ব্যাপারে বাঁকা পথে চলে। তারা নিজেদের কৃতকর্মের ফল শীঘ্রই পাবে। (সূরা আ’রাফ, আয়াতঃ ১৮০)

১. কর্ম পর্যায়ে তাওহীদ বা ইবাদতের একত্ব (তাওহীদুল উলুহিয়্যাহ)ঃ সকল প্রকার ইবাদত বা উপাসনা, আরাধনামূলক কর্ম,যেমন-প্রার্থনা, সিজদা, জবাই, উৎসর্গ, মানত, তাওয়াককুল-নির্ভরতা ইত্যাদি একমাত্র আল্লাহর জন্য করা ও আল্লাহই প্রাপ্য বলে বিশ্বাস করা হলো এই পর্যায়ের তাওহীদ।

(সূত্রঃ ইসলামী আকিদা শিক্ষা: (আল্মামা শাইখ) আবু বকর আব্দুল হাই মিশকাত সিদ্দিকী, ফুরফুরার গদ্দীনশীন পীর সাহেব সংকলিত, ৫ম মুদ্রন, পৃষ্ঠা ১৮, ইশাআতে ইসলাম কুতুবখানা, মার্কাজে ইশাআতে ইসলাম, ফুরফুরা দরবার, দারুস সালাম, মীরপুর, ঢাকা, বাংলাদেশ।)
তাওহীদের প্রকারভেদঃ

১। তাওহীদে উলুহয়িাহ (Tawheed Ul Uloohiyyah) ২। তাওহীদে রবুবয়িাহ (Tawheed Ur Ruboobyah) ৩। তাওহীদে আসমাউস্ সিফাত (Tawheed Asma Wa Sifaat)

‘‘তাওহীদ তিন প্রকার : প্রথম প্রকার : এটি হচ্ছে এই বিশ্বাসের নাম যে, আল্লাহ বান্দাহদের রিযিক দাতা, জীবন ও মরণ দাতা। একে এক কথায় বলা যায়, আল্লাহর কার্যক্রমে তাঁকে ‘‘এক’’ বলে গণ্য করা (প্রাগুক্ত : ২৫)।

অর্থাৎ আসমান জমিনসহ মহাবিশ্বের মহাসৃষ্টির মধ্যে ক্ষুদ্র বৃহৎ, জানা অজানা যা যা আছে সব কিছুরই একমাত্র সৃষ্টিকর্তা, একমাত্র জীবনদাতা এবং মরণদাতাও একমাত্র আল্লাহ-এটি হচ্ছে প্রথম প্রকারের তাওহীদী ঈমান।

‘‘এই প্রকার তাওহীদকে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগের মুশরিকরাও স্বীকার করত। যেমন: স্বীকার করত ইয়াহুদী, খ্রীস্টান ও অগ্নি পূজকেরা। একে (তাওহীদী এই ঈমানÐকে) অতীতে যুগবাদী (নাস্তিক) আর বর্তমান কমিউনিস্ট ছাড়া অন্য কেউ অস্বীকার করেনি। এই তাওহীদী ঈমান মানুষকে ইসলামে প্রবিষ্ট করতে সক্ষম নয় আর না এটা তার রক্ত সম্পদকে সংরক্ষণ করবে আর না পরকালে তাকে মুক্তি দিতে সক্ষম। যতক্ষণ না তার সাথে ইবাদাতগত তাওহীদ অবলম্বন করবে, ’’ (প্রাগুক্ত; পৃ:২৫)

‘‘তুমি বল! কে তোমাদেরকে আসমান যমীন থেকে রিযিক দান করেন?... অবশ্যই তাৎক্ষণিক তারা (মুশরিকরা) বলবেঃ আল্লাহ, (সূরাহ ইউনুছ : ৩১)

ইলাহ কি?

ﺍﻠﻪ (ইলাহ) আরবী শব্দ-যা থেকে নিম্নোক্ত শব্দের বুৎপত্তি:

ﺍﻠﻪ (আলিহা), اﻠاﮭﺔ (আলি(ইলাহ) স¤পর্কিত উপরোক্ত আরবী শব্দাবলী ব্যবহৃত হয়ে থাকে। যেমনঃ ﺍﻠﻪ ﺍﻠﺮﺟﻞ ﻴﺎﻟﻪ (আলিহার রজুলা ইয়া-লাহু-)অর্থঃ “লোকটি বিপদে পড়ে ভীত সন্তস্ত্র হয়েছে অতঃপর কোনো ব্যক্তি তাকে আশ্রয় দিয়েছে”, কিংবা “প্রবল আগ্রহে লোকটি অপর ব্যক্তির প্রতি মনোযোগ দিয়েছে”।

(এতে ﺍﻠﻪ ﺍﻠﺮﺟﻞ ﻴﺎﻟﻪ (আলিহার রজুলা ইয়া-লাহু এর “আলিহার” বলতে বিপদগ্রস্ত ব্যক্তি তার বিপদ থেকে কাউকে উদ্ধারকর্তা অর্থাৎ মুশকিল কোশারূপে বুঝানো হয়েছে)

ﺎﻟﻪ ﺎﻟﻔﺼﻴﻞ (আলিহাল ফাসীল)ঃ অর্থঃ “উটের হারানো বাচ্চা তার মাকে পেয়ে তার কোলে আশ্রয় নিয়েছে” এখানে ﺎﻟﻪ “আলিহাল” বলতে কেউ চরম বিপদাপন্ন অবস্থায় উপযুক্ত আশ্রয়স্থল খুঁজে পাওয়ার পর তাতে যে পরম নিরাপত্তাবোধ করে থাকে তা বুঝানো হয়েছে।)

ﺍﻟﮭﺖ ﺍﻠﻰ ﻔﻼﻦ আলিহাতু ইলা ফুলানীঃ অর্থঃ “তার আশ্রয়ে বা সান্নিধ্যে আমি তৃপ্তি ও শান্তি লাভ করেছি”।এখানে “আলিহাতু” বলতে কেউ চরম বিপদাপন্ন অব¯হায় উপযুক্ত আশ্রয়¯হল খুঁজে পাওয়ার পর যে পরম পরিতৃপ্তি ও শান্তি লাভ করে থাকে-তা বুঝানো হয়েছে।) এই হচ্ছে, ইলাহ্’র জাগতিক কর্মকান্ডের ভাবার্থ। এতে সুস্পষ্ট প্রতীয়মান যে, ‘ইলাহ’ শব্দ এবং এর ভাবার্থ ও মর্মার্থ সাধারণ আরবভাষাÐভাষীরা সবিশেষ জ্ঞাত। ফলে লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহ-কালিমায়ে তাইয়্যিবাহ্টির ভাব ও মর্মার্থ আবু লাহাব, আবুজাহল, ওতবা, শায়বা প্রমুখ কট্টর মুশরিকরা বুঝেই বিরোধিতা করেছিল এবং আবুবকর, আবুজর, আবুহুরায়রা,বেলাল রাদ্বয়িাল্লাহু আনহুরা লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহ’র প্রকৃত ভাব ও মর্মার্থ বুঝেই জানবাজি রেখে বদর, ওহুদ প্রভৃতি বিখ্যাত যুদ্ধে লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহ’র পক্ষে অব¯হান নিয়েছিলেন।

“লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহ’র” পরিবর্তে যদি “লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহ” হতো দাওয়াতুত্ তাওহীদ তথা দাওয়াতুল ইসলাম তাহলে আবু লাহাব, আবু জাহল, উতবা, শায়বা প্রমুখ কট্টর মুশরিকদের প্রতিক্রিয়া কি লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহ’রই মতো হতো?” কখনও এরূপ হওয়ার আশংকা ছিল না কারণ জজিরাতুল আরবের কুরাইশ বংশের লোকেরা না ছিল ইয়াহুদী, না ছিল নাসারা অর্থাৎ খ্রীষ্টান, বরং তাদের দাবী অনুসারে তারা তাওহীদের প্রাণ প্রতিষ্ঠাতা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালামের এর অনুসারী তথা দ্বীনে হানিফ (দ্বীনে ইসমাঈল) যাদের কালিমা ছিলঃ লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহ। তারা ইয়াহুদীদের দ্বিতত্ত¡বাদ আর খ্রীষ্টানদের ত্রিতত্ত¡বাদে বিশ্বাসী ছিল না। দ্বিতত্ত¡বাদ ও ত্রিতত্ত¡বাদীরা সরাসরি আল্লাহপাকের ইস্মি যাতের সাথে শরীক করতো আর আরববাসীরা সাধারণতঃ আল্লাহপাকের অস্তিত্বের অর্থাৎ ইস্মি যাতের সাথে শরীক করতো না বরং লাত, উয্যা, হুবল, মানত প্রমুখ দেবদেবীকে আল্লাহর সমতুল্য, সমকক্ষ ধারণা বিশ্বাস করতো। পক্ষান্তরে নিম্নোক্ত শব্দাবলী দ্বীনী ইসলামী ভাবার্থ প্রকাশেও ব্যবহৃত হয়ে থাকে। যেমনঃ “ইবাদাত করেছে” বা “উপাসনা করেছে”Ðএই অর্থেও উপরোক্ত শব্দাবলী ব্যবহৃত হয়ে থাকে। আরব কুরাইশ মুশরিকরা আল্লাহ তাআলাকে বা উপাস্যরূপে আকিদা বিশ্বাস রাখতো সত্য; কিন্তু তাদের আকিদাÐবিশ্বাসে আল্লাহই একমাত্র ইলাহ” নন; তাদের ঈমানে আকিদায় অšততঃ ৩৬০টি আলহিাতু রয়েছে যাদের অন্যতম হচ্ছেঃ লাত, উয্যা, হুবল, মানত, ইয়াগুস,ইত্যাদি (নাউ‘যুবিল্লাহি মিন যালিক)। পক্ষান্তরে,ইসলামী পরিভাষায়ঃ

ﺍﻠﻪ (আলিহা) اﻠاﮭﺔ (আলিহাতান) ﺍﻠﻮﻫﺔ (উলূহাতান)

ﺍﻠﻮﻫﻴﺔ (উলূহঢতান) বলতে আল্লাহতাআলাই একমাত্র ইলাহ যাঁর আশ্রয় সর্বোত্তম আশ্রয়, যাঁর নিরাপত্তা, সর্বোত্তম নিরাপত্তা, অর্থাৎ আল্লাহ তাআলাই অদ্বিতীয়, একমাত্র মহাসত্য ইলাহ, তাঁর আশ্রয়ে পরম নিরাপত্তা ও পরম শান্তি।

‘ইলাহ’ হওয়ার কিছু মৌলকি যৌক্তিক শর্তাবলীঃ

একঃ একাধিক ইলাহ হওয়া অসম্ভব। কেননা, আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন ইলাহ থাকলে কে তাদের পূজিত দেবদেবীর বাক শক্তি ছিনিয়ে নিয়েছে ? কেন তারা কথা বলতে পারে না অর্থাৎ নির্বাক? তারা নিজেদের কোন হুকুমই এ মহাবিশ্বে নাযিল করছে না কেন? তাদের ইলাহ’কে (তাওহীদী ঈমানওয়ালারা) অস্বীকার করা হচ্ছে, অথচ তারা কোন জবাব দিচ্ছেনা। এতে বুঝা যায় যে, আল্লাহ ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই, যত কল্পিত ইলাহ সাব্যস্ত করা হচ্ছে সবই রুগ্ন চিন্তার অস্থির কল্পনা মাত্র;

দুই: একাধিক আল্লাহর অস্তিত্ব অসম্ভব। কেননা আল্লাহ হওয়ার জন্য স্বয়ং সম্পূর্ণ এবং নিরংকুশ, একচ্ছ সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী হওয়া অপরিহার্য। এটা যৌক্তিক ও অনিবার্য যে, প্রত্যেক ইলাহ্ এর ইচ্ছা ভিন্ন ভিন্ন থাকাই স্বাভাবিক। একজন যদি কোন কিছু সৃষ্টি করার ইচ্ছা করে, তবে অন্য জন হয় তো তার বরিুদ্ধাচরণ করবে। যদি সে এতে সক্ষম হয়, তবে প্রথম জন হবে অক্ষম। আর যদি একাত্মতা পোষণ করতে বাধ্য হয়, তবে দ্বিতীয় ইলাহ হবে অক্ষম। অথচ ইলাহ হওয়ার জন্য স্বয়ং সম্পুর্ণ এবং সার্বভৌম ক্ষমতা সম্পন্ন হওয়া আবশ্যক।

তিন ঃ প্রতিটি বস্তুরই একটি সূচনা বিন্দু রয়েছে। যেমন লক্ষ বা কোটি সংখ্যার সূচনা হল এক। এমনি ভাবে ঠিক তদ্রুপ মহাবিশ্বেরও একটি সূচনা বিন্দু রয়েছে। তা হল মহান রাব্বুল আলামীনের মহান সত্তা। কাজেই একাধিক প্রভূর ধারণা অবান্তর এবং অবাস্তব।

চার ঃ যারা একাধিক ইলাহে বিশ্বাসী, তাদের নিকট আমাদের জিজ্ঞাসাঃ এ মহাবিশ্ব নিয়ন্ত্রণের জন্য এক ইলাহ কি যথেষ্ট নন? যদি যথেষ্ট হন তবে তো অন্য ইলাহ বেকার। তার কোন প্রয়োজন নেই। আমরা তার প্রতি মুখাপেক্ষীহীন।

পাঁচ ঃ যারা একাধিক ইলাহ’র অস্তিত্বে বিশ্বাসী, তাদের নিকট আমাদের জিজ্ঞাসাঃ যদি একাধিক ইলাহ থাকে, তাহলে তাদের প্রত্যেকেই পরস্পর একে অন্যের মুখাপেক্ষী হবে অথবা একজন মুখাপেক্ষীহীন হন আর অন্যরা সবাই হল মুখাপেক্ষী। আর যদি তারা সকলেই একে অপরের মুখাপেক্ষী হয়, তবে তারা কেউই আল্লাহ হওয়ার উপযুক্ত হবে না। আর যদি তাদের একজন মুখাপেক্ষীহীন হন, আর অন্য সবাই হয় তাঁর মুখাপেক্ষী, তবে এই একজনই ‘ইলাহ’ হতে পারবেন, বাকী কেউই ইলাহ হতে পারবে না। সুতরাং একাধিক ‘ইলাহ’ হওয়ার ধারণা অযৌক্তিক।

ছয় ঃ আল্লাহ তো এমন এক মহান সত্তা হবেন-যাঁর সত্তা সব ধরণের ত্র“টি (মুখাপেক্ষিতা,নির্ভরশীলতা) হতে সম্পূর্ণরূপে মুক্ত (পবিত্র-সুবহান)। অতএব, আল্লাহ তা‘আলা ‘‘লা-শরীক, তাঁর কোন শরীক নেই’’-এ কথাই বিশুদ্ধ এবং ভ্রান্তি মুক্ত, অথচ মূর্তি তার অস্তিত্ব লাভে মূর্তির কারিগরের উপর, মাটি, পানির ওপর নির্ভরশীল এবং তার পূজা অর্চনার জন্য পূজারীদের উপর মোহ্তাজ এবং একসময় তার কোন অস্তিত্বই ছিল না। এক সময় পুজারীরা তাকে ভেঙ্গে পানিতে ফেলে অস্তিত্ব বিলীন করে দেবে-কেন এমনতর করছে তারা-এই কৈফিয়তও পূজারী হতে চাওয়ার বাকশক্তি আদৌ তাদের থাকে না। তাই একটি মূর্তি তার অস্তিত্ব লাভের জন্য ব্যক্তি ইচ্ছা-অনিচ্ছা-বস্তুর গুণাবলীর উপর পুরোপুরি নির্ভরশীল। অর্থাৎ এসব দেব-দেবী অনেক বিষয়ের শরীকানার উপর নির্ভরশীল। এ ক্ষেত্রে আল্লাহই একমাত্র সুবহান, পবিত্র, মুক্ত, যিনি একমাত্র একক, অদ্বিতীয় মহান সত্বার অধিকারী।

সাত ঃ ইলাহ যদি একাধিক থাকে, তবে প্রত্যেক ইলাহ স্বীয় কর্মসূচী অন্য ইলাহ হতে গোপন রাখতে সক্ষম হবে অথবা হবে না। এরূপ সত্তা কখনো আল্লাহ হতে পারে না। কেননা, আল্লাহ তো এমন সত্তা যিনি সর্ব বিষয়ে শক্তিমান।

১. ওয়াজিবুল ওজুদ বা অপরিহার্য সত্ত¡া হবার গুণ একমাত্র আল­াহ তা’আলার। আল­াহ ব্যতীত কারো অস্তিত্বই স্থায়ীত্ব পারবে না; 

২. ‘আরশ, আকাশ, পৃথিবী ও সকল মৌলিক বস্তুর ¯্রষ্টা একমাত্র আল­াহ; মূলতঃ কোন দ্বীনী গ্রন্থেই উপরোক্ত ব্যাপারে দ্বিমত দেখায়নি। আরবের মুশরিকরাও উক্ত ব্যাপারে একমত। ইয়াহুদী নাসারাও তা অস্বীকার করেনা। (হুজ্জাতুল্লাহলি বালাগা, পৃ: ১৮৪- ১৮৫)

তাওহীদের প্রকৃত পরিচয়

হুজ্জাতুল ইসলাম ঈমাম গাযযালী (রাহমিাহুল্লাহ)প্রাচীনকালীন খ্যাতনামা এবং র্সবজনশ্রদ্ধয়ে বুর্যুগানে দ্বীনরে অন্যতম প্রধান। তনিি তাওহীদী ঈমানরে সত্যকিার ইলম হাসলি করছেলিনে, এক মুশরকি সম্প্রদায়রে পূজারীদরে নগন্যতর বষিাক্ত ক্ষুদ্র মৌমাছরি পূজার দৃশ্য অবলোকন কর।ে এতে তনিি তাওহীদী ঈমানরে যে সূক্ষ্ণাতি সূক্ষ্ণ ইলম (জ্ঞান) হাসলি করে ধন্য হয়ছেলিনে আল্লাহপাকরে অশষে রহমতে তাঁর লখিতি জ্ঞানর্গভ সুপ্রসদ্ধি গ্রন্থ “আল্লাহর একত্ববাদ” র্শীষক গ্রন্হে চমৎকারভাবে প্রকাশ পায়- যার একাংশ র্বতমান আলোচনায় এবং বাকীংশ ইনশাআল্লাহুল্ 'আজীজ পরর্বতী আলোচনায় মুহতারাম পাঠকবৃন্দরে সদয় খদেমতে পশে করা গলেঃ “আল্লাহর একত্ববাদ”: হুজ্জাতুল ইসলাম ঈমাম গাযযালী (রাহমিাহুল্লাহ)

অধ্যায়ঃ তাওহীদের প্রকৃত পরিচয়

“যে ব্যক্তি বিশ্বাস করে যে, এক আল্লাহ ছাড়া কোন উপাস্য নেই, তিনি অদ্বিতীয়, তাঁর কোন অংশীদার নেই, রাজত্ব তাঁরই, প্রশংসা তাঁরই, তিনি সকল বিষয়ের উপর শক্তিশালী তার ঈমান পূর্ণ। এটাই আল্লাহর প্রতি নির্ভরতার মূল অর্থাৎ এই কালামের অর্থ তার হৃদয়ের উপর প্রবল হয়ে সংযুক্ত হয়ে রয়েছে: সুতরাং তাওহীদই মূল, এর ব্যাখ্যা সুদীর্ঘ এবং তা’ আধ্যাত্মিক বিদ্যার অন্তর্গত। কিন্তু কোন কোন আধ্যত্মিক বিদ্যা অবস্থার মাধ্যমে কাজের সাথে সংশ্লষ্টি থাকে। তার সাহায্য ছাড়া ব্যবহারিক বিদ্যা সম্পূর্ণ হয় না; সুতরাং আমি তাওহীদের গভীর এতটুকু বিষয় বর্ণনা করব যা ব্যবহারিক জ্ঞানের সাথে সম্পৃক্ত। মূলত: তাওহীদ এক সমূদ্র যার কোন কুল-কিনারা নেই”। .

তাওহীদের চারটি স্তর ও তার দৃষ্টান্ত

তাওহীদকে চারটি স্তরে ভাগ করা যায়। এর প্রথম স্তর যনে অনকেটা নারকিলেরে ছোবড়া বা বাহ্যিক খোসার ন্যায়। দ্বিতীয় স্তর বাহ্যিক খোসার অভ্যন্তরস্থ স্তর শাঁসরে ন্যায়। তৃতীয় স্তর এটা হল আভ্যন্তরীণ মূল নারিকেলের মত। চতুর্থ স্তর শাঁসের অভ্যন্তরস্থ শাঁসরে।

যারা দুর্বল জ্ঞানের অধিকারী তাদেরকে বিষয়টি ভালভাবে বুঝাবার জন্য আমি একটি দৃষ্টান্তের উল্লখে করছি। তোমরা একটি নারিকেল বা আখরোটের বিষয় চিন্তা কর। নারিকেলের উপরিভাগে দুটো খোসা আছে। একটি বাইরের ছোবড়া এবং অপরটি ভেতরের বা আসল নারিকেলের উপরের খোসা। এর আবার দুটো শাঁস আছে। একটি মূল নারিকেল এবং অন্যটি নারিকেলের অভ্যন্তরস্থ তেল বা নির্যাস। একই ভাবে তাওহীদেরও চারটি স্তর আছে। দুটো স্তর খোসা এবং দুটো স্তর তাঁর শাঁস। .

      প্রথম স্তর ঃ এটা তাওহীদের ছোবড়া অর্থাৎ রসনার দ্বারা বলা “ লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহ”

অর্থাৎ এক আল্লাহ ছাড়া আর উপাস্য নেই। এভাবে রসনা যা উচ্চারণ করে উচ্চারণকারীর হৃদয় তাতে অমনোযোগী থাকতে পারে বা হৃদয় তা’ অস্বীকার করে। যেমন মুনাফিকদের কালেমা উচ্চারণ।

     দ্বিতীয় স্তর ঃ এটা নারিকেলের আভ্যন্তরীণ খুলীর মত। এটা হল উক্ত কালেমার অর্থ হৃদয়ের দ্বারা তাছদীক বা সমর্থন করা যেরূপ সর্বসাধারণ মুসলমানরো করে থাকে।
     তৃতীয় স্তর ঃ এটা হল আভ্যন্তরীণ মূল নারিকেলের মত। এটা কাশফের পন্থায় এবং সত্য নূরের মাধ্যমে প্রত্যক্ষভাবে দর্শন করা যায়। আল্লাহর নিকটবর্তীদের অবস্থা এটা। তারা অনেক বিষয়বস্তু দেখতে পান বটে; কিন্তু সব কিছুর মধ্যে এক আল্লাহকেই তারা কর্তা বলে বুঝতে পারেন। 
     চতুর্থ  স্তর ঃ এটা হল নারিকেলের মধ্যে তেলের মত। অর্থাৎ এক আল্লাহ ছাড়া আর কিছুই দেখতে না পাওয়া। ছিদ্দীক শ্রেণীর লোকদের এটাই প্রত্যক্ষ দর্শন। সুফিদের পারিভাষায় একে ফানা ফীত্  তাওহীদ বা একত্ববাদ জ্ঞানে নিমজ্জন বলা হয়ে থাকে। কেননাপ ছিদ্দীক ব্যক্তি এক অদ্বিতীয় আল্লাহ ছাড়া আর কিছুই দেখতে পান না। এমন কি তিনি নিজেকে পর্যন্ত বিস্মৃত হয়ে যান। যখন তাওহীদের মধ্যে নিমজ্জিত হওয়ায় তিনি নিজেকে পর্যন্ত ভুলে যান তখন তিনি তার তাওহীদের মধ্যে নিজকে লুপ্ত করে দেন অর্থাৎ তিনি নিজেকেও নিজে দেখতে পান না এবং কোন সৃষ্ট বস্তুকে দেখতে পান না। (আল্লাহর একত্ববাদ:পৃ®ঠা # ১১/১২)  

সুতরাং,তাওহীদের প্রথম স্তর শুধু রসনার দ্বারা কালেমা উচ্চারণ করা। যে ব্যক্তি এ কালেমা উচ্চারণ করে সে মুসলমানের তলোয়ার থেকে রক্ষা পায়। তাওহীদের দ্বিতীয় স্তর হল, একত্ববাদীদের স্তর অর্থাৎ একত¦বাদীরা তাদের হৃদয়ের দ্বারা তাওহীদমূলক কালেমাগুলোর মর্মার্থ বিশ্বাস করে এবং হৃদয় যা দৃঢ়ভাবে বিশা¦স করে তা’ মিথ্যা মনে করে না। এটা মনের উপর একটা বন্ধনের মত। এর মধ্যে কোনরূপ বিস্তৃতি বা সংকোচন নেই। এরূপ বিশ্বাস ঈমানদারকে পরকালের শাস্তি থেকে রক্ষা করে-যদি এ অবস্থার উপর তার মৃত্যু হয় এবং পাপের কারণে সেই ঈমানের বন্ধন দুর্বল না হয়। ঈমানের বন্ধনের জন্য কতকগুলো পন্থা রয়েছে যার দ্বারা তা’ দুর্বল এবং বন্ধনমুক্ত করা হয়। এ পন্থাগুলোকে ‘বেদআত’ বলা হয়। আবার এই দুর্বলতা ও বন্ধনমুক্তি কতকগুলো উপায় দ্বারা দূর করা যায়। হৃদয়ের উপর এই বন্ধনের কতকগুলো বিধান রয়েছে যাকে ‘কালাম’ বলে। যে ব্যক্তি এর পরিচয় জানে তাকে মুতাকাল্লাম বা কালামপন্থী বলা হয়। সে বেদআত-পন্থীর বিপরীত। বেদআতকে দূর করাই তার উদ্দেশ্য-যেন এই বন্ধন সাধারণ লোকের হৃদয় থেকে শিথিল করে দেয়া যায়। কালামপন্থীকে একত্ববাদী বলা যায়। কেননা, সে তার কালাম দ্বারা সাধারণের মনে তাওহীদ শব্দের অর্থ রক্ষা করে। তৃতীয় শ্রেণীর একত্ববাদী এক কারক বা কর্তা ছাড়া আর কাউকে দেখে না। কেননা, সত্য তার নিকট তার প্রকৃত রূপ নিয়ে প্রকাশ পায়। চতুর্থ শ্রেণীর তাওহীদ হল, একত্ববাদী একক সত¦া ছাড়া অন্য কাউকে দেখতে পায় না এবং সে এটাকেই তাওহীদের জ্ঞানের চরম সীমা বলে মনে করে।(সূত্রঃআল্লাহর একত্ববাদঃইমাম গাজ্জালী রহিমাহুল্লাহ)।

কথিত আছে, মাওলানা আবদুল কাহহার সিদ্দিকী আল কুরাইশীর উক্ত মুরীদ [ফুরফুরার চট্টগ্রাম আন্চলিক মুখপত্র নেদায়ে মদীনার সম্পাদক যা ঢাকা-কলিকাতা থেকে পৃথক সংস্করণে প্রকাশিত ফুরফুরার জাতীয় মুখপত্র নেদায়ে ইসলামের সহযোগী প্রকাশনা]উইকিমেডিয়ান একবার মুখ ফসকে জীবৎকালে পীর সাহেব মাওলানা আবদুল কাহহার সিদ্দিকীকে লক্ষ্য করেঃ "আপনি মুজাদ্দেদ" মন্তব্য করায় পীর সাহেব যারপর নাই মনোক্ষুন্ন হয়েছিলেন।

উল্লেখ্য, প্রসঙ্গক্রমে পীর সাহেবের জামাতা বিশিষ্ট আলেমে দীন ডক্টর আল্লামা আ.ন.ম.খন্দকার আবদুল্লাহ জাহাঙ্গীর ফুরফুরা দরবারের পাবনার ঈশ্বরদীস্থিত পাকশি বার্ষিক ইসালে সওয়াব মাহফিলে জানানঃ জীবিত অবস্থাকে শরীয়তে ইসলামে কাউকে আগাম মুজাদ্দেদ ঘোষণার বিধান নেই।


হযরত মাওলানা আবদুল কাহহার সিদ্দিকী রহ. এর প্রচলিত এবং আধ্যাত্মিক শিক্ষা জীবনঃ

ফুরফুরা দরবারের মাদরাসাতে হযরত মাওলানা আবদুল কাহহার সিদ্দিকী রহ. এর প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয়। তৎকালীন সিলেবাস অনুযায়ী মোমতাজুল মুহাদ্দেসীন পর্যন্ত বিভিন্ন কেতাব, যেমনঃ তাফসীরে জালালাইন, তাফসীরে কাশশাফ, তাফসীরে বায়জাভী, সিহাহ্ সিত্তাসহ সকল কিতাব তৎকালীন শীর্ষস্থানীয় আলেম ও মোহাদ্দেসদেরর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে শিক্ষা গ্রহণ করেন। কুরআন, হাদীস, ফিকহ, আকাইদ, মানতিক, ফালসাফা, ইতিহাস ও কাব্য সাহিত্যে তিনি বিশেষ বুৎপত্তি লাভ করেন।

দোঁক মাদ্রাসায় সালে আউয়াল, সালে দোম, শোম, চাহারাম,পাহ্চমসহ সালে শশম পর্যন্ত পড়ালেখা করেন। এ সময় তিনি বাকুরাতুল আদম, উর্দু পহেলি ও দুসরি, তাজবিদুল কুরআন, মিজান ও মুনশারি’ব, রওজাতুল আদব, আজীজুন নুহাত নাহু, উর্দু তেসরি, ফার্সি দুসরি, আরবি আদব, কিতাবুল মুনসেফ, উর্দু চৌথি, হেদায়াতুন নাহু, কায়লবী আদবের কেতাব, ফিকাহ মালাবুদ্দামিনহু, ফিকাহ নুরুল ইজাহ, গোলেস্তা, ফার্সি সাহিত্য, নাহুর কিতাব কাফিয়া, সরফের কিতাব সাফিয়া, ফিকাহ কুদুরী, উসুলে শাশি, তারিখে হাবীবে এলাহা ইত্যাদিসহ তাজবীদ, তার্জমাসহ কুরআন শরীফ অধ্যয়ন করেন।

(সূত্রঃ ফুরফুরার ইতিহাসঃ পৃষ্ঠাঃ ২৬৫, দ্বিতীয় সংস্করণ, ইশাআতে ইসলাম কুতুবখানা, ২/২, দারুস সালাম, মীরপুর, ঢাকা-১২১৬, বাংলাদেশ, www.furfura.com, e-mail: arifalmannan@gmail.com) ।

আলেমে আউয়াল, আলেমে দোম, ফাজেলে আউয়াল, ফাজেলে দোম ও মোমতাজুল মোহাদ্দেসীন ক্লাসের বিভিন্ন কিতাব, যেমন আরবি আদব, সাহিত্য আল মুকতারাত, আল মুনতাখাবাত, মাকামাতে হারিরি, আল কেতাব, তারিখে ইসলাম, ফিকাহ হেদায়া, শরহে বেকায়া, মানতেকের কেতাব, মাইবুজি, সুল্লামুল উলুম, উসুলে ফেকাহ, নুরুল আনোয়ার, মুসালিমুস সুবুত, হেকমাতের কেতাব হেদায়াতুল হেকমত, তাফসীরে জালালাইন, তাফসীরে কাসসাফ, মেশকাত শরীফ, বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, নাসায়ী শরীফ , ইবনে মাজাহ শরীফ, তিরমিজী শরীফ আবু দাউদ শরীফ ইত্যাদি বিষয়ে শিক্ষা গ্রহণ করেন। এছাড়া দীনী শিক্ষার পাশাপাশি বাংলা, ইংরেজি, গণিত, ভূগোল ইত্যাদি জেনারেল বিষয় শিক্ষার অন্তর্ভূক্ত ছিল। (সূত্রঃ ফুরফুরার ইতিহাসঃ পৃষ্ঠাঃ ২৬৫)

পীর সাহেবের মেঝ ভাই মুফতীয়ে আজম মাওলানা আবু ইবরাহীম ওবায়দুল্লাহ সিদ্দিকী আল কুরাইশী রহিমাহুমুল্লাহ লিখেছেনঃ “আমাদের আব্বা হুজুর পরতাপে কাইয়ুমুজ্জামান শায়খুল ইসলাম হযরত মাওলানা আবু নসর মো. আব্দুল হাই সিদ্দিকী (রহ.) ছোট বেলা থেকেই তাঁর যোগ্য উত্তরসূরী হিসেবে বড় ভাই সাহেবকে গড়ে তুলেছিলেন। নিজের সরাসরি তত্ত্বাবধানে যোগ্য শিক্ষকমন্ডলী ও ওলামায়ে কেরামের দরস-তালিমের মাধ্যমে তিনি বড় ভাই সাহেবকে যোগ্য আলেম হিসেবে গড়ে তোলেন। সবচেয়ে বড় জিনিস হচ্ছে, আল্লাহর ওলীদের সোহবত ও তাওয়াজ্জুহ হতে আমার বড় ভাই সাহেব ইলমে লাদুন্নির ফায়েজ পেয়েছিলেন। যেমনভাবে মুজাদ্দেদে জামান (রহ.) তাঁর বড় ছেলে শায়খুল ইসলাম বড় হুজুর (রহ.)কে, মেজ হুজুর (রহ.)কে আল্লামা রুহুল আমীন (রহ.)-কে ইলমে লাদুন্নীর ফায়েজ দিয়েছিলেন তেমনি আমার বড় ভাই সাহেবও ইলমে লাদুন্নীর ফায়েজ পেয়েছিলেন।” (সূত্রঃ ফুরফুরার ইতিহাসঃ পৃষ্ঠাঃ ২৬৫-৬৬, দ্বিতীয় সংস্করণ, ইশাআতে ইসলাম কুতুবখানা ২/২, দারুস সালাম, মীরপুর, ঢাকা-১২১৬, বাংলাদেশ, www.furfura.com, e-mail: arifalmannan@gmail.com) ।

أَنَا دَعْوَةُ أَبِيْ إِبْرَاهِيْمَ وَبُشْرَى عِيْسَى- ‘আমি আমার পিতা ইবরাহীমের দো‘আর ফসল ও ঈসার সুসংবাদ’ (আল হাদীস) ।

নায়েবে মুজাদ্দেদ, শেরে ফুরফুরা হযরত মাওলানা আবদুল কাহহার সিদ্দিকী রহ. প্রতি শ্রদ্ধেয় ওয়ালেদ সাহেব শাইখুল ইসলাম মাওলানা আবদুল হাই সিদ্দিকী আল কুরাইশি রহ. এর দুআ-মুনাজাত

ইলমে লাদুন্নীর সবকে বসিয়ে খাসভাবে দুআ

একবার হজ্বের সফরে মদীনা মুনওয়ারায় রিয়াজুল জান্নাহয় রসুলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরবারে শাইখুল ইসলাম, হাকিমুল ইনসান মাওলানা আব্দুল হাই সিদ্দিকী রহিমাহুমুল্লাহ স্বীয় জ্যেষ্ঠ সাহেবজাদা স্নেহের আবদুল কাহহার সিদ্দিক-কে ইলমে লাদুন্নীর সবকে বসিয়ে খাসভাবে দুআ করেছিলেন।(সূত্রঃ ফুরফুরার ইতিহাসঃ দ্বিতীয় সংস্করণ, ইশাআতে ইসলাম কুতুবখানা, ২/২, দারুস সালাম, মীরপুর, ঢাকা-১২১৬, বাংলাদেশ,।

আল্লাহ তোমাকে তোমার দাদা মুজাদ্দেদে জামান (রহ.)-এর মত ওলি করে দিন

হযরত বড় হুজুর (রহ) তাঁর জীবনের শেষ হজ্জে আরাফাতের ময়দানে জবলে রহমতের উপর দাঁড়িয়ে মাগরেববাদ বহু ভক্ত, মুরিদ এবং দেশ বিদেশের হাজিদের সামনে ফুরফুরার মরহুম হুজুর অর্থাৎ তাঁর বড় ছেলে মাওলানা আবুল আনসার মোঃ আবদুল কাহহার সিদ্দিকী সাহেবের বুকে হাত রেখে বলেছিলেন, “আমি দোওয়া করি, আল্লাহ তোমাকে তোমার দাদা মুজাদ্দেদে জামান (রহ.)-এর মত ওলি করে দিন”।

(সূত্রঃ ফুরফুরার ইতিহাসঃ দ্বিতীয় সংস্করণ, ইশাআতে ইসলাম কুতুবখানা, ২/২, দারুস সালাম, মীরপুর, ঢাকা-১২১৬, বাংলাদেশ,। ছেলের ওয়াজ শুনে চোখ দিয়ে টপ টপ করে পানি পড়তো

তিনি (আবদুল হাই সিদ্দিকী রহ.) যখন ছেলের (নায়েবে মুজাদ্দেদ রহ.) ওয়াজ শুনতেন তখন আবেগ আতিশষ্যে তাঁর চোখ দিয়ে টপ টপ করে পানি পড়তো।

আনসার মিয়ার দিলটা ভাল

তিনি (দাদা হুযুর) ছেলের (আবদুল কাহহার সিদ্দিকী রহ.) প্রশংসা করে বলতেন-আনসার মিয়ার দিলটা ভাল (সূত্রঃ ফুরফুরার ইতিহাসঃ পৃষ্ঠাঃ ৬৬, দ্বিতীয় সংস্করণ, ইশাআতে ইসলাম কুতুবখানা)।(সূত্রঃ ফুরফুরার ইতিহাসঃ ইশাআতে ইসলাম কুতুবখানা, ২/২, দারুস সালাম, মীরপুর, ঢাকা-১২১৬, বাংলাদেশ,।

আল্লাহ তার হায়াত কিসমত বড় করুন

হযরত পীর সাহেব হুজুর রহ. তাঁর আব্বা-আম্মার প্রাণ খোলা দুআ পেয়েছিলেন। তাঁর আব্বা হযরত মাও. আব্দুল হাই সিদ্দিকী রহ. প্রায়ই জলছাতেই ছেলের জন্য দুআ করতেন, মানুষের কাছে দুআ চাইতেন। তিনি কাঁদতেন আর বলতেনঃ আল্লাহ তার হায়াত কিসমত বড় করুন।(সূত্রঃ ফুরফুরার ইতিহাসঃ দ্বিতীয় সংস্করণ, ইশাআতে ইসলাম কুতুবখানা ।(সূত্রঃ ফুরফুরার ইতিহাসঃ দ্বিতীয় সংস্করণ, ২/২, দারুস সালাম, মীরপুর, ঢাকা-১২১৬, বাংলাদেশ,।

আমি তোমাকে আল্লাহর সোপর্দ করলাম

একবার পাকশীতে তিনি বললেন-আমি তোমাকে আল্লাহর সোপর্দ করলাম।(সূত্রঃ ফুরফুরার ইতিহাসঃ পৃষ্ঠাঃ ৬৬, দ্বিতীয় সংস্করণ, ইশাআতে ইসলাম কুতুবখানা)। পিতা আ’ল্লামা আবদুল হাই সিদ্দিকী আল কুরাইশী রহিমাহুমুল্লাহর মৃত্যুর পর ১৯৭৭ ঈসাব্দে বাংলা-ভারত উপমহাদেশের সুপ্রাচীন শারিয়াত-ত্বরিকাতপন্থী ঐতিহ্যবাহী ফুরফুরা দরবারের গদ্দীনশীন পীর হন হযরত মাওলানা আবুল আনসার মুহাম্মাদ আবদুল ক্বাহহার সিদ্দিকী আল কুরাইশী রহিমাহুমুল্লাহ সাহেব। বাংলা-ভারত ছাড়াও যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, সৌদী আরব, আবুধাবীসহ মুসলিম-অমুসলিম নির্বিশেষে অনেক দেশ-রাষ্ট্রে সুদীর্ঘ ২৯ বছরব্যাপী ইসলাম প্রচারের পর ২০০৬ সালের ডিসেম্বর মাসে ঢাকার দারুস সালামে নিজ বাসভবনে ইন্তেকাল করেন। (সূত্রঃ https://www.linkedin.com/pulse/ফরফরর-পর-মওলন-আবল-আনসর-মহমমদ-আবদল-কহহর-সদদক-আল-করইশর-রহমহললহ-hossain/)

বাংলাদেশে ফুরফুরা দরবারের কার্যক্রম

ফুরফুরার পীর মাওলানা আবদুল কাহহার সিদ্দিকী ১৯৮১ সালে বাংলাদেশের ঢাকার মীরপুরের ২/২ দারুস সালামে অবস্থিত ‘মার্কাযে ইশাআতে ইসলাম’ প্রতিষ্ঠা করেন,আল-জামেয়াতুস_সিদ্দিকীয়া_দারুল_উলুম_মাদ্রাসা, (সূত্রঃhttps://bn.wikipedia.org/wiki/ আল-জামেয়াতুস_সিদ্দিকীয়া_দারুল_উলুম_মাদ্রাসা),বিশ্ব ইসলাম মিশন কোরআনী-সূ্ন্নী জমিয়তুল মুসলিমীন হিযবুল্লাহ’ প্রভৃতি দীনী সংগঠনের পরিচালক হিসাবে আমৃত্যু বিশ্বব্যাপী ইসলামের দাওয়াতি কাজ সম্পন্ন করেন।

এছাড়া পীর সাহেবের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে পাবনার ঈশ্বরদীর পাকশিতে প্রায় ১০০ একর জমির উপর নির্মাণ করা হয়েছে বাংলাদেশের প্রথম পূর্ণাঙ্গ আরবী বিশ্ববিদ্যালয়। এখানেও ঢাকা দার-আস-সালামের ন্যায় বার্ষিক ওয়াজ মাহফিল ও ইসালে সওয়াব উপলক্ষ্যে দেশ-বিদেশ হতে লক্ষ লক্ষ মুরীদ-মুহেব্বীনের সমাগম ঘটায় এতদন্চলের মানুষ বিশাল এ ধর্মীয় সমাবেশকে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিশ্ব ইজতেমা মনে করেন। মৃত্যুর পূর্বে ২০০৫ সালে দারুস সালামে অনুষ্ঠিত জাতীয় মুবাল্লেগ সম্মেলনে উনার জ্যেষ্ঠ সাহেবজাদা আল্লামা শাইখ আবুবকর আবদুল হাই মিশকাত সিদ্দিকীকে গদ্দীনসীন পীর মনোনীত করে যান। সেমতে, বর্তমানে শাইখ আবুবকর আবদুল হাই মিশকাত সিদ্দিকী যুগপৎ বাংলা-ভারতে ফুরফুরার গদ্দীনসীন পীরের দায়িত্বে রয়েছেন।(সূত্রঃ ফুরফুরার ইতিহাসঃ দ্বিতীয় সংস্করণ,ইশাআতে ইসলাম কুতুবখানা, ২/২, দারুস সালাম, মীরপুর, ঢাকা-১২১৬, বাংলাদেশ,।

উল্লেখ্য,শাইখ আবুবকর আবদুল হাই মিশকাত সিদ্দিকী আল কুরাইশী হাফিজাহুল্লাহ ইসলামের প্রথম খলিফা আমিরুল মুমিনিন হযরত আবু বকর সিদ্দিক رضي الله عنه (রদ্বিয়াল্লাহু আনহর) ৪২ তম অধ্বস্তন পুরুষ। তাছাড়া, মৃত্যুর আগে ফুরফুরার পীর মাওলানা আবদুল কাহহার আল কুরাইশী (রহিমাহুমুল্লাহ)সিদ্দিকী বিশ্ব ইসলাম মিশন কোরআনী-সূ্ন্নী জমিয়তুল মুসলিমীন হিযবুল্লাহ সংগঠনের আওতায় ছাত্র-যুব সংগঠন ‘হিযবুল্লাহ হিলফুল ফুযুল’, মা-বোনদের জন্য ফাতেমা জামাত, কুরআন-হাদীস রিসার্চ সেন্টার পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন।পীর সাহেবের তত্ত্বাবধানে ইশাআতে ইসলাম সিদ্দিকীয়া কুতুবখানা থেকে শতাধিক দীনী কিতাব প্রকাশিত হয়।

ইশাআতে ইসলাম সিদ্দিকীয়া কুতুবখানা থেকে প্রকাশিত কিছু বই· . ইসলামী আকীদা শিক্ষা

· ফুরফুরার ইতিহাস

· ওযীফা ও নামাজ শিক্ষা

· আমপারা তাফসীর

· জাহান্নামের ছয় রমনী

· কেন মুসলমান হলাম?

· সুন্নত ও বিজ্ঞান

· ওপেন সিক্রেট

· কম্পিউটার ও আল কোরআন

· বান্দার হক

· সৃষ্টির সেবা ও সুন্দর আচরন

· আলামতে কিয়ামত

· নুরানী কোরআন শিক্ষা ও ওযিফা

· দি গাইড

· মুজাদ্দেদে জামান হযরত আবুবকর সিদ্দিকী আল কোরাইশী (রহ)এর জীবনী

· শাইখুল ইসলাম হযরত আব্দুল হাই সিদ্দিকী আল কোরাইশী (রহ) এর জীবনী

· নুরানী কোরআন শিক্ষা ও ওযিফা

· সংবাদ পত্রের পাতায় হযরত আব্দুল কাহহার সিদ্দিকী আল কোরাইশী (রহ)

· প্রাথমিক চিকিৎসা গাইড

· অল্প পুঁজি বেশী রুজি

· মরা মানুষের কান্না

· এই তো সেই ওলি

· মুসলমানি বিবাহ

· তালিমুন নিসা

· জাহান্নামের আগুনে ত্রিশ সেকেন্ড

· মাওলানা রুহুল আমিন (রহ)এর জীবন ও কর্ম

ফুরফুরা দরবারঃ জ্ঞানীর দরবার-বিজ্ঞানীর দরবার

আমির-উশ্-শারিয়াত ও ত্বরিকাত, শেরে ফুরফুরা মাওলানা আবদুল কাহহার সিদ্দিকী আল কুরাইশী রহিমাহুল্লাহ বাংলাদেশের ঢাকার মীরপুর দারুস সালামের মার্কাযে ইশাআতে ইসলাম,ফুরফুরা দরবারে জ্ঞান-বিজ্ঞান প্রসারের লক্ষ্যে গড়ে তুলেছিলেন কুরআন-হাদীস রিসার্চ সেন্টার। উক্ত সেন্টার হতে পীর সাহেবের পৃষ্ঠপোষকতায় বেশ কয়েকটি বিজ্ঞান বিষয়ক ইসলামী কিতাব প্রকাশিত হয়।তন্মধ্যে কম্পিউটার ও আল কুরঅআন গ্রন্থে ইসলামী সৃষ্টিতত্ত্বের আলোকে আধুনিক সৃষ্টিতত্ত্বের তুলনামূলক আলোকপাত করা হয় যার সংক্ষিপ্ত নিম্নরূপঃ

ইসলামী সৃষ্টিতত্ত্ব

“বিশ্ব বলিতে পূর্বে কিছুই ছিলনা”। (ফাতওয়ায়ে সিদ্দিকীন, ১ম খন্ড, পৃষ্ঠাঃ ৭৪, কুরআন হাদীস রিসার্চ সেন্টার (ফুরফুরা দরবারের গবেষণা প্রতিষ্ঠান), প্রকাশনায়ঃ ইশায়াতে ইসলাম, কুতুবখানা, মার্কাজে ইশায়াতে ইসলাম, ২/২, দারুস সালাম, মীরপুর, ঢাকা-১২১৬), প্রকাশকালঃ সাবান-১৪২০হিজরি, নভেম্বর ১৯৯৯ ঈসায়ী সাল)।

“গোটা সৃষ্টিকূলের মধ্যে আল্লাহ তাআলার কুন ফাইয়া কুনের তাজাল্লীই বিরাজমান” (ইশায়াতে ইসলাম, কুতুবখানা, মার্কাজে ইশায়াতে ইসলাম, ২/২, দারুস সালাম, মীরপুর পৃঃ ৩৮)।

সৃষ্টিতত্ত্ব সম্পর্কিত ইসলামী আকিদা-বিশ্বাসমতে, “আল্লাহ তায়ালা সমস্ত বস্তুকে পূর্ব উপাদান ব্যতীত সৃষ্টি করেছেন” (প্রাগুক্ত পৃঃ ১৬২ (আল্লাহপাক) “বিশেষ মুছলেহাতের কারণে প্রথমে বিনা উপাদানে উপকরণে সৃষ্টি করে, সেই সব উপাদানের মাধ্যমে বিভিন্ন বস্তু সৃষ্টি করার ব্যবস্থা চালু করেছেন”(সূত্রঃ ইশায়াতে ইসলাম, কুতুবখানা, মার্কাজে ইশায়াতে ইসলাম, ২/২, দারুস সালাম, মীরপুর ফাতাওয়ায়ে সিদ্দিকীন, ১-৪ খন্ড, পৃষ্ঠা ১৬৩) উল্লেখ্য যে, মহাবিস্ফোরণের পর আকাশমন্ডলীর এ অবস্থাকে সূরা হা-মিম-আস্- সিজদার ১১নং আয়াতে ‘দুখান’ নামে অভিহিত করে আল্লাহ পাক ফরমান: “অতঃপর তিনি আসমানের দিকে মনোনিবেশ করলেন, যা ছিল ধুম্রকুঞ্জ (দুখান)।” (পবিত্র কোরআনুল করীমঃ তফসীর মাআরেফুল ক্বোরআন, পৃষ্ঠাঃ ১২৯৪)। উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যা নিম্নরূপ :

(১) বয়ানুল কোরআনে হযরত মাওলানা আশরাফ আলী থানভী (রহঃ) বলেনঃ আমার মনে হয় যে, প্রথমে পৃথিবীর উপকরণ সৃজিত হয়েছে। এমতাবস্থায় ধুম্রকুঞ্জ এর আকারে আকাশের উপকরণ নির্মিত হয়েছে। এরপর পৃথিবীকে বর্তমান আকারে বিস্তৃত করা হয়েছে এবং এতে পর্বতমালা, বৃক্ষ ইত্যাদি সৃষ্টি করা হয়েছে। এরপর আকাশের তরল ধুম্রকুঞ্জ এর উপকরণকে সপ্ত আকাশে পরিণত করা হয়েছে। (পবিত্র কোরআনুল করীমঃ তফসীর মাআরেফুল ক্বোরআন, পৃষ্ঠাঃ ১১)।

(২) পবিত্র কুরআনের মতে, বিশ্ব জগৎ আদিতে ছিল একটি বিশালকার একক পিন্ডাকৃতির বস্তু-সুক্ষ্ণাতি সুক্ষ্ণ অণু-পরমাণু বিশিষ্ট গোলক-যাকে দুখান বলা হয়েছে। এই দুখান হলো স্তর বিশিষ্ট এমন এক গ্যাস জাতীয় পদার্থ যা স্থিরভাবে ঝুলানো এবং যার মধ্যে বস্তু-সুক্ষ্ণাতি সুক্ষ্ণ অণু কণা উচ্চতর বা নিম্নতর চাপের দরুণ কখনও কঠিন, এমনকি কখনও বা তরল অবস্থায় বিদ্যমান ছিল। মহাকালের বিভিন্ন পর্যায়ে সেই মহাপিন্ডটি খন্ড বিখন্ড হয়ে তৈরী হয়েছে এক একটি নীহারিকা বা ছায়াপথ এবং সেই সব ছায়াপথ সূর্যের মত কোটি কোটি নক্ষত্র নিয়ে একটা একটা পৃথক জগৎ রূপে মহাশূণ্যে সঞ্চারমান। আদি গ্যাসীয় পিন্ডের খন্ড বিখন্ড হয়ে পড়া বিশালকার টুকরাগুলি কালক্রমে আবার একীভুত হয়ে সূর্যের মত এক একটি নক্ষত্র সৃষ্টি করেছে। ...... বিজ্ঞানীরা বলছেন, বিশ্ব সৃষ্টির আদিতে ছিল ‘নীহারিকা’ বা ‘নেবুলা’ যা মূলতঃ গ্যাসীয় ধুম্রপিন্ড এর অনুরূপ। দেখা যাচ্ছে, বিশ্ব সৃষ্টি সম্পর্কে পবিত্র কুরআনের বক্তব্য আধুনিক বিজ্ঞানের আবিস্কৃত তথ্যের সাথে সম্পূর্ণ সামঞ্জস্যপূর্ণ।” {সূত্র: কম্পিউটার ও আল-কুরআন,প্রকাশনায়ঃ ইশায়াতে ইসলাম, কুতুবখানা, মার্কাজে ইশায়াতে ইসলাম, ২/২, দারুস সালাম, মীরপুর, ঢাকা-১২১৬)।


বাংলাদেশে ফুরফুরা দরবারের কার্যক্রম

ঢাকা, বাংলাদেশের স্থাপনাসমূহ

►দারুল আজকার খানকাহ, ফুরফুরা দরবার, দারুস সালাম, ঢাকা,

►দাওরাতুল হাদীস ভবন, ফুরফুরা দরবার, দারুস সালাম, ঢাকা।

►তারবিয়াতুল মিল্লাত একাডেমী, ফুরফুরা দরবার, দারুস সালাম, ঢাকা।

►উম্মুল মুমিনীন আয়েশা সিদ্দিকা (রদ্বিয়াল্লাহু আনহা)বালিকা মাদরাসা, মীরপুর দারুস সালাম, ঢাকা, ►দারুস সালাম কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, ফুরফুরা দরবার, দারুস সালাম, ঢাকা,

►কুতুবখানা গবেষণা কেন্দ্র, ফুরফুরা দরবার, দারুস সালাম, ঢাকা,

► মারেফাত হাউজ,ফুরফুরা দরবার, দারুস সালাম, ঢাকা,

►কেন্দ্রীয় কার্যালয় সিদ্দিকিয়া বিশ্ব ইসলাম মিশন, ফুরফুরা দরবার, দারুস সালাম, ঢাকা,

►ফুরফুরা দরবার, দারুস সালাম, ঢাকা,

►ফুরফুরা খানকাহ, বাংলাবাজার, ঢাকা।

পাবনার পাকশির ফুরফুরা দরবারের স্থাপনাসমূহ

►ওয়াজ মাহফিল স্টেজ, ফুরফুরা দরবার, পাকশী, পাবনা,

►দারুশ শরীয়ত রিয়াজুল জান্নাত মসজিদ কমপ্লেক্স, ফুরফুরা দরবার, পাকশী, পাবনা,

►দারুশ শরীয়ত ফুরফুরা দরবার, পাকশী, পাবনা,

►দারুশ শরীয়ত কুতুবখানা, পাকশী, পাবনা,

►মাদরাসা ভবন,ফুরফুরা দরবার, পাকশী, পাবনা,

►মেহমান খানা, পাকশী, পাবনা,

►দারুশ শরীয়ত গেইট, পাকশী, পাবনা।

ঠাকুরগাও ফুরফুরা দরবারের স্থাপনাসমূহ

►সিদ্দিকিয়া বিশ্ব ইসলাম মিশন মসজিদ, ফুরফুরা দরবার, ঠাকুরগাও, ►সিদ্দিকিয়া বিশ্ব ইসলাম মিশন ভবন, ফুরফুরা দরবার,ঠাকুরগাও,

►সিদ্দিকিয়া বিশ্ব ইসলাম মিশন মাদরাসা, ফুরফুরা দরবার, ঠাকুরগাও,►ফুরফুরা খানকাহ, ঠাকুরগাও। এছাড়া,

মেহেরপুর ফুরফুরা দরবারের স্থাপনাসমূহ

► দারুর রহমত খানকায়ে ফুরফুরা, মেহেরপুর

► গাংনী উপজেলা মারকাজ, ফুরফুরা খানকাহ, মেহেরপুর

এছাড়াও বিভিন্ন জেলার স্থাপনাসমূহ নিম্নরূপঃ

●ফুরফুরা খানকাহ ও হুজরাখানা, ফরিদপুর

● সিদ্দিকিয়া বিশ্ব ইসলাম মিশন ফুরফুরা খানকাহ, রাজবাড়

● খানকায়ে ফুরফুরা, লেমুয়া, ফেনী

● ফুরফুরা খানকাহ, চট্টগ্রাম,

● ইসলাম মিশন মসজিদ, কালিগন্জ, ঝিনাইদা

● সিদ্দিকিয়া বিশ্ব ইসলাম মিশন, ফুরফুরা খানকাহ, খুলনা,

● ফুরফুরা খানকাহ, ভালুকা, ময়মনসিংহ।

উল্লেখ্য, ১৯৪১ সালের জুলাই-তে কলকাতায় পরবর্তীতে ঢাকা থেকে পৃথক সংস্করণে প্রকাশিত ফুরফুরার মুখপত্রঃ ‘নেদায়ে ইসলাম এবং ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত সাময়িকী ‘নেদায়ে মদীনার প্রধান পৃ্ষ্ঠপোষকের দায়িত্ব পালন করেন নায়েবে মুজাদ্দেদ মাওলানা আবুল আনসার মুহাম্মদ আব্দুল কাহহার সিদ্দিকী (রহিমাহুমুল্লাহ) ।

ভারতে ফুরফুরা দরবারের স্থাপনাসমূহ

ভারতের অন্ততঃ ৫০ জেলায় ওয়াজ নসীহতসহ ফুরফুরা দরবারের বহুমুখী কার্যক্রম চলমান। তন্মধ্যে অন্যতম হচ্ছেঃ

►ফুরফুরা ফতেহিয়া সিনিয়র (টাইটেল) মাদ্রাসা, ভারত,

►ফুরফুরা ফতেহিয়া সিনিয়র (কারিগরি) মাদ্রাসা, ভারত,

►ফুরফুরা ফতেহিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা হোস্টেল, ভারত,

►দার-আস-সুন্নাহ মেহমানখানা, ভারত,

►নেদায়ে ইসলাম অফিস, কোলকাতা, ভারত, দারুল আনসার ভবন, ভারত,

►ফুরফুরা খানকাহ, দোক, ভারত, ►উজল খানকাহ, ভারত

►হযরত মোস্তফা মাদানী (রহিমাহুল্লাহ)জামে মসজিদ, ভারত।

উল্লেখ্য, সিদ্দিকী বংশোদ্ভূত হযরত মোস্তফা মাদানী (রহিমাহুল্লাহ) ছিলেন দিল্লীর মুঘল বাদশাহ আলমগীর আওরঙ্গজেবের পীর ভাই। সে সুবাদে হযরত মোস্তফা মাদানী (রহিমাহুমুল্লাহ)কে বাদশাহ যে ভূমি লাখেরাজ করে দেন সেটি আজ ভারতের ঐতিহ্যবাহী মেদেনীপুর। (প্রকৃত নাম মাদানীপুর) নামে খ্যাত। (সূত্রঃ https://www.linkedin.com/article/edit/7074946711525216257/)

ফখরে আউলিয়া ফুরফুরা দরবারের পীর মাওলানা আবুল আনসার মুহাম্মাদ আবদুল কাহহার সিদ্দিকী আল কুরাইশী (রহিমাহুমুল্লাহ):ফুরফুরা থেকে চট্টগ্রাম

নির্ভরযোগ্য প্রাচীন বাংলার ইতিহাসসূত্রে জানা যায় যে, পাক-বাংলা-ভারত উপমহাদেশে সাগর পথে ইসলামের প্রবেশ ঘটেছিল রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকটাত্মীয় মামা সম্পর্কের হযরত আবু ওয়াক্কাস রদ্বিয়াল্লাহ আনহু আরব সাগর পথে বঙ্গোপসাগর উপকূল অতিক্রম করে প্রশান্ত মহাসাগরীয় পথে চীনের ক্যান্টনে যাওয়ার পথে চট্টগ্রাম বন্দরে যাত্রাবিরতিকালে এদেশে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবৎকালেই এই উপমহাদেশে ইসলামের প্রবেশ ঘটে। এ কারণে চট্টগ্রামকে বলা হয় বাবল ইসলাম অর্থাৎ ইসলামের প্রবেশ উল্লেখ্য, রংপুর জেলার ইতিহাস গ্রন্থ থেকে জানা যায়, রাসুল (ﷺ)-এর মামাজান, মা আমেনার চাচাতো ভাই আবু ওয়াক্কাস (রদ্বিয়াল্লাহ আনহু) ৬২০ থেকে ৬২৬ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত বাংলাদেশে ইসলাম প্রচার করেন (পৃ. ১২৬)। অনেকে অনুমান করেন, রংপুরের পঞ্চগ্রামের মসজিদটিও তিনি নির্মাণ করেন যা ৬৯০ খ্রিষ্টাব্দে সংস্কার করা হয়।

দেশের প্রথম ও প্রাচীন এই মসজিদটি উত্তর-দক্ষিণে ২১ ফুট ও প্রস্থ ১০ ফুট। মসজিদের ভিতরে রয়েছে একটি কাতারের জন্য ৪ ফুট প্রস্থ জায়গা। মসজিদের চার কোণে রয়েছে অষ্টকোণ বিশিষ্ট স্তম্ভ। ধ্বংসাবশেষ থেকে মসজিদের চূড়া ও গম্বুজ পাওয়া গেছে।

মতিউর রহমান বসুনিয়া রচিত ‘রংপুরে দ্বীনি দাওয়াত’ গ্রন্থেও এই মসজিদের বিশদ বিবরণ আছে

বার আউলিয়ার ধন্যভুমি চট্টগ্রামে ফখরে আউলিয়া হযরত মাওলানা আবদুল কাহহার সিদ্দিকীর তরিকতী জিন্দেগীর ইতিকথা

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের অন্তর্গত হুগলি জেলায় অবস্থিত ফুরফুরা দরবারের সাথে বাংলাদেশের বিভাগীয় জেলা চট্টগ্রামের প্রখ্যাত পীর হযরত সূফী ফতেহ আলী ওয়ায়েসী রহিমাহুল্লাহর সূত্রে উপমহাদেশের প্রখ্যাত বুজুর্গানে দীন শাহ ওয়ালি উল্লাহ মুহাদ্দেস দেহলভী রহঃ পর্যন্ত সিলসিলাগত ঈমানী, রুহানী যে নেসবত তা আজও অটুট, বিদ্যমান।

নায়েবে মুজাদ্দেদ হযরত মাওলানা আবদুল কাহহার সিদ্দিকী রহিমাহুল্লাহ তরিকতের জিন্দেগীতে ধারাবাহিকভাবে যথাক্রমে স্বীয় পিতা শাইখুল ইসলাম হযরত মাওলানা আবদুল হাই সিদ্দিকী রহিমাহুল্লাহ ,তদীয় দাদাজান মোজাদ্দেদে জামান হযরত মাওলনা আবু বকর সিদ্দিকী রহিমাহুল্লাহ সূত্রে উপমহাদেশের প্রখ্যাত আউলিয়া কেরামদের সাথে সম্পর্কিত হন। সেমতে হযরত মাওলানা আবদুল কাহহার সিদ্দিকী অআল কুরাইশী রহিমাহুল্লাহ যথাক্রমে বাংলাদেশের চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলা নিবাসী সুফী ফতেহ আলী ওয়ায়েসী রহিমাহুল্লাহ, (https://bn.wikipedia.org/wiki/ফতেহ_আলী_ওয়াসি) মীরশ্বরাইয়ের নিজামপুরে অবস্থিত ‘মলিয়াশ’ নামক গ্রামে শায়িত গাজিয়ে বালাকোট সুফী নূর মোহাম্মাদ নিজামপুরী রহিমাহুল্লাহ(https://www.google.com/search?client=firefox-b-e&q=সুফী+নূর+মোহাম্মাদ+নিজামপুরী), সৈয়দ আহামাদ শহীদ বেরেলভী রহিমাহুল্লাহ (https://www.google.com/search?client=firefox-b-e&q=সৈয়দ+আহামাদ+শহীদ+বেরেলভী+)শাহ আবদুল আজিজ মুহাদ্দিস দেহলভী রহিমাহুল্লাহ, https://www.google.com/search?client=firefox-b-e&q=শাহ+আবদুল+আজিজ+মুহাদ্দিস+দেহলভী) এবং শাহ ওয়ালিউল্লাহ মুহাদ্দিস দেহলভী রহিমাহুল্লাহ https://bn.wikipedia.org/wiki/শাহ_ওয়ালিউল্লাহ_দেহলভী এর সাথে পর্যায়ক্রমিক আধ্যাত্মিক সম্পর্কে সম্পর্কিত।

"তিনি (আবুবকর সিদ্দিকী রহ.) ইলমে তাছাউফের শিক্ষার জন্য শাহ সুফি ফতেহ আলী ওয়াইসীর নিকট বাইয়াত গ্রহণ করেন। ইলমে তরিকত ও তাছাউফের চারধারার মাসয়ালা শিক্ষা করেন। তার সাহচর্যে থেকে কার্যকরিভাবে রিয়াজত মোজাহাদা করেন। পাশাপাশি তার সান্নিধ্যে চার তরিকার নিয়ম নীতি অনুযায়ী জিকিরের অনুশীলন পূর্বক খিলাফত লাভ করেন। এই পীর (ফতেহ আলী ওয়াইসী) ১৮৮৬ সালে আবু বকর সিদ্দিকীর কোলে মাথা রেখেই ইন্তেকাল করেন। [১]

কথিত আছে যে, মুর্শিদে বরহক সুফী ফতেহ আলী ওয়ায়েসী রহিমাহুল্লাহ মুজাদ্দেদে জামান রহিমাহুল্লাহকে "আমার খোলা বক্স", এবং শামসুল উলামা হযরত মাওলানা গোলাম সালমানী রহিমাহুল্লাহকে বলতেন "বন্ধ বক্স"।

চট্টগ্রামভিত্তিক বিভিন্ন তরিকতপন্থী সংগঠনের সাথে ফুরফুরা দরবারের নেসবতনামা

ফুরফুরা-চুনতি দরবারের নেসবতনামাঃ ফুরফুরা দরবারের প্রতিষ্ঠাতা পীর(মাওলানা আবদুল কাহহার সিদ্দিকী রহ. এর দাদাজান) মুজাদ্দেদে জামান হযরত মাওলানা আবু বকর সিদ্দিকী আল কুরাইশী রহিমাহুল্লাহ এর পীর ভাই শামসুল উলামা হযরত মাওলানা গোলাম সালমানী রহিমাহুল্লাহ (উভয়ের পীর সাহেব হচ্ছেন সূফী ফতেহ আলী ওয়ায়েসী রহিমাহুল্লাহ). এর খলিফা>হযরত মাওলানা-বারী শাহ এর খলিফা>-হযরত মাওলানা হামেদী আজমগড়ি এর খলিফা> হযরত মাওলানা নজির শাহ রহিমাহুল্লাহ, চুনতি দরবার, সাতকানিয়া, চট্টগ্রামের প্রতিষ্ঠাতা।

ফুরফুরা-গারাংগিয়ার নেসবতনামাঃ ফুরফুরা দরবারের পীর মুজাদ্দেদে জামান হযরত মাওলানা আবু বকর সিদ্দিকী আল কুরাইশী রহিমাহুল্লাহ এর পীর ভাই শামসুল উলামা হযরত মাওলানা গোলাম সালমানী রহিমাহুল্লাহ এর খলিফা>হযরত মাওলানা হামেদী জমগড়ি এর খলিফা শাহ মুহাম্মাদ আবদুল মাজিদ রহিমাহুল্লাহ, দরবারে আলীয়া গারাংগিয়া, সাতকানিয়া, চট্টগ্রামের প্রতিষ্ঠা এর খলিফা>হযরত মাওলানা মুহাম্মাদ কামাল উদ্দিন মজিদী,রশিদী রহিমাহুল্লাহ,দরবারে আলীয়া মুহাম্মদীয়া খানকা,পাঠানটুলী,চট্টগ্রাম।

ফুরফুরা-বায়তুশ শরফ নেসবতনামাঃ ফুরফুরা দরবারের পীর মুজাদ্দেদে জামান হযরত মাওলানা আবু বকর সিদ্দিকী আল কুরাইশী রহিমাহুল্লাহ>মীর মুহাম্মাদ মাসউদ রহিমাহুল্লাহ এর সাহেবজাদা>মীর মুহাম্মাদ আখতার রহিমাহুল্লাহ,বায়তুশ শরফ দরবার, চট্টগ্রাম,বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা।


মোজাদ্দেদে জামান আবু বকর সিদ্দিকী আল কুরাইশী রহিমাহুল্লাহর সাথে শামসুল উলামা গোলাম সালমানী রহিমাহুল্লাহর আধ্যাত্মিক নেসবতের ইতিকথা

১৯ শতকের শেষের দিকে ফরায়েজি ও তরিকায়ে মুহাম্মদিয়া আন্দোলনের তীব্রতা প্রশমিত হয়ে আসলে মুসলিমরাও কিছুটা দুর্বল ছিলো।[সূত্রঃ ডঃ ওয়াকিল আহমদ (১৯৮৩)। উনিশ শতকে বাঙালি মুসলমানের চিন্তা-চেতনার ধারা। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলা একাডেমি। পৃষ্ঠা ১–৫০।

মুসলিমদের মধ্যে নানা বিভক্তি ছিলো, বিভিন্ন স্থানে মুসলিমরা ভিন্ন ধর্ম গ্রহণ করলে আবু বকর চিন্তিত হয়ে পরেন।[ সূত্রঃ ডঃ অমলেন্দু দে (১৯৯১)। বাঙালি বুদ্ধিজীবী ও বিচ্ছিন্নতাবাদ। 8th Floor, 6-A, Raja Subodh Mullick Square Rd, Bowbazar, Kolkata, West Bengal 700013: পঃ বঙ্গ রাজ্য পুস্তক পর্ষদ। পৃষ্ঠা ১১৯]।
তিনি মুসলিম উম্মাহের ঐক্যতা নিয়ে কাজ করতে মনস্থ হন, এবং দুই বাংলার শিরকী, বিদিয়াতি, কুসংস্কার প্রভৃতি দূরীভূত করার চেষ্টা চালান।[ শাহ আবু বকর সিদ্দিকীঃ সৈয়দ মোঃ বাহাউদ্দিন ২০১৭, পৃ. ২৩।]

তার এই কাজে সহযোগিতা করেছিলো যেসব আলেম তাদের মধ্যে শামসুল উলামা গোলাম সালমানী (১৮৫৪ - ১৯১২) আল্লামা লুতফর রহমান বর্ধমানী (মৃঃ ১৯২০), আল্লামা এসহাক বর্ধমানী (মৃঃ ১৯২৮), বেলায়েত হােসেন বীরভূমী (১৮৮৭), আবদুল ওয়াহেদ চাটগামী (মৃঃ ১৯১০), মুহাম্মদ মঙ্গলকোটি বর্ধমানী (মৃঃ ১৯০৭) উল্লেখযোগ্য।[ সূত্রঃ মাওলানা নূর মোহাম্মদ আ'জামী (১৯৯৭)। হাদিসের তত্ব ও ইতিহাস। দিল্লি, ভারত: বাংলা ইসলামিক একাডেমী। পৃষ্ঠা ১–৫০। ওলামা সংগঠন (২০০১)। মুসলিম মনীষী (সংকলন)। ঢাকা, বাংলাদেশ: ইসলামিক ফাউন্ডেশন। পৃষ্ঠা ৩১৫–৩৪১।

সৈয়দ মোহঃ বাহাউদ্দিন (২০১৭)। আবু বকর সিদ্দিকী। আরামবাগ, হুগলি: সৈয়দ মোহাম্মদ হামযাহ। পৃষ্ঠা ২৪] এছাড়াও বিভিন্ন হাদিস ছড়িয়ে দেওয়ার ব্যপারে সাহায্য করেছেন আবদুল আউয়াল জৌনপুরী ও কারামত আলী জৌনপুরী। এরা উভয়ই প্রভাবশালী লেখক ছিলেন।]

শামসুল উলামা হযরত মাওলানা গোলাম সালমানী আব্বাসী রহিমাহুল্লাহর রূহানী জিন্দেগীর ইতিকথা

শাহ সুফি ফতেহ আলী ওয়াইসী রহিমাহুল্লাহর অন্যতম খলিফা শামসুল উলামা হযরত মাওলানা গোলাম সালমানী আব্বাসী রহিমাহুল্লাহ ১৮৫৪ সালের ১লা জুলাই ভারতের হুগলি জেলার ফুরফুরা গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। ১৯১২ সালের ১লা জুলাই ইন্তেকাল করেন।

শিক্ষা জীবনঃ কলিকাতার আলিয়া মাদরাসা হতে সর্বোচ্চ দীনী শিক্ষা হাসিল করেন।

কর্মজীবনঃ প্রথমে হুগলি গবর্ণমেন্ট মোহসেনিয়া মাদরাসায় পরে বদলি হয়ে কলিকাতা আলিয়া মাদরাসা অতঃপর তথা হতে হুগলি মাদরাসায় শিক্ষকতা করেন।

তরিকতের জীবনঃ শামসুল উলামা হযরত মাওলানা গোলাম সালমানী আব্বাসী রহিমাহুল্লাহ. সুফী ফতেহ আলী ওয়ায়েসী রহিমাহুল্লাহর সুযোগ্য খলিফা ছিলেন। একই গ্রামের বাসিন্দা ফুরফুরার মুজাদ্দেদে জামান হযরত মাওলানা আবু বকর সিদ্দিকী আল কুরাইশী রহিমাহুল্লাহর পীর ভাই ছিলেন ।

উল্লেখ্য, কলিকাতা মাদরাসায় শিক্ষকতাকালীন সময়ে মাওলানা গোলাম সালমানী আব্বাসী রহিমাহুল্লাহ মাদরাসার পূর্ব দিকে অবস্থিত বিবি সালেট মসজিদে তরিকতের তালিম দিতেন।

বিশিষ্ট খলিফাবৃন্দঃ শামসুল উলামা হযরত মাওলানা গোলাম সালমানী আব্বাসী রহিমাহুল্লাহর শীর্ষ স্থানীয় খলিফাবৃন্দের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেনঃ হযরত মাওলানা সৈয়দ আবদুল বারী শাহ রহিমাহুল্লাহ। শাহ সাহেব প্রথমে হযরত মাওলানা মিয়া করিম বক্স রহিমাহুল্লাহর মুরিদ ছিলেন পরে মাওলানা গোলাম সালমানী রহিমাহুল্লাহর নিকট মুজাদ্দেদিয়া তরিকার বায়েত এবং খেলাফাত প্রাপ্ত হন।

মুজাদ্দেদিয়া ত্বরিকতের উজ্জ্বল নক্ষত্র হযরত মাওলানা হাফেজ হামেদ হাসান আলভী আজমগড়ী (রহঃ) এর সাথে চট্টগ্রামের কতিপয় সিলসিলার আধ্যাত্মিক নেসবত প্রসঙ্গে

হযরত মাওলানা হাফেজ হামেদ হাসান আলভী আজমগড়ী (রহঃ) হলেন প্রখ্যাত আল্লাহর অলি গারাঙ্গিয়া দরবারের 👉 গারাঙ্গিয়া দরবারের হযরত শাহ মাওলানা আবদুল মজীদ বড় হুজুর (রহঃ) 👉হযরত শাহ মাওলানা আবদুর রশীদ হামেদী সিদ্দীকি প্রকাশ ছোট হুজুর (রহঃ)

হালিশহর দরবারের

👉হালিশহরের হাফেজ মুনির উদ্দীন আহমদ (রহঃ) চুনতি দরবারের

👉চুনতির মাওলানা নজির আহমদ (রাহমাতুল্লাহি আলাইহিম) সহ বিখ্যাত আরো অনেক আল্লাহর অলির আধ্যাত্মিক জগতের পথ প্রদর্শক ছিলেন।

হযরত মাওলানা হামেদ আজমগড়ি রহ.স্বীয় মুর্শেদ হযরত মাওলানা গোলাম সালমানীর রহ. এর নির্দেশনার সর্বপ্রথম যে জায়গায় তরিকত তথা দ্বীনী সফর করেছিলেন তা ছিল চট্টগ্রাম (https://sufibad24.com/post/17541/#সূফি_মাওলানা_গোলাম_সালমানী_আব্বাসী_রহর_নির্দেশক্রমে_তরীক্বতের_সফরঃ)।

আয়নায়ে মুনীরী গ্রন্থমতে হামেদ আজমগড়ি চট্টগ্রাম আসলে প্রথমে হালিশহর, ফেরার পথেও হালিশহর হয়ে ফিরতেন।হালিশহরের হাফেজ সৈয়দ মুনীর উদ্দীন নূরুল্লাহ রহ.-কে সাত তরিকার খেলাফত বখশিশ করেন।

উল্লেখ্য, চুনতির হযরত মাওলানা নজির আহমদ শাহ ছাহেব রহিমাহুল্লাহর দাদার প্রথম সন্তান হযরত শাহ মাওলানা ফয়েজ আহমদ (রহ.) পিতার জমিদারি এস্টেট দেখভাল করার জন্য ঘন ঘন আরাকান যাওয়া–আসা করতেন।আজমগড়ী হযরত চট্টগ্রাম শহরে তরিকতের সফরে আসলে হযরত শাহ ছাহেবের জেঠা জমিদারি এস্টেটের প্রধান হযরত মাওলানা ফয়েজ আহমদ উনার পীর আজমগড়ী হযরতকে চাকতাই থেকে বৃহদাকৃতির গদু নৌকা যোগে ঢলু নদীর গাটিয়াডাংগা ঘাটে পৌছান। তথা হতে ছোট নৌকায় আধুনগর নৌঘাটে নিয়ে যান। তথা হতে ঘোড়া/তাঞ্জান করে চুনতীর হযরত শাহ ছাহেব রহ. এর পৈতৃক বাড়িতে পৌছেন।সে সুবাদে এ সময় চুনতির শাহ সাহেব (রহ.) আরাকানে ভারতীয় উত্তর প্রদেশের মহান সূফী দরবেশ পীর হযরত আলহাজ্ব শাহ মাওলানা হামেদ হাসান আলভী (রহ.)’র মোলাকাত পান এবং আজমগড়ী হযরতের সুদৃষ্টি পেতে থাকেন। এক পর্যায়ে শাহ সাহেব উনার নিকট মুরিদ হন।

হযরত শাহ ছাহেব ছিলেন অসাধারণ স্মৃতিশক্তির অধিকারী। দেশ বিদেশের প্রখ্যাত আলেমগণ যখনই তার সান্নিধ্যে আসতেন ওনার কোরআন হাদীসের আলোচনা শুনে মুগ্ধ হয়ে যেতেন। হযরত শাহ ছাহেব কেবলা আরাকানে থাকা অবস্থায় শবে কদরের রাতে ফানাফির রাসূল হিসেবে নিজেকে নিজে হারিয়ে ফেলেন। দীর্ঘ প্রায় ৩৭ বছর পাহাড়ে পর্বতে লোকালয়ে বিচরণ করতে থাকেন রাত দিন এবং এই বলে নিম্নলিখিত পঙক্তি আউড়াতে থাকতেনঃ

হাম মাজারে মুহাম্মদ (ﷺ) পে মর জায়েঙ্গে, জিন্দেগি মে য়াহি কাম কর জায়েঙ্গে। (অর্থাৎ) হযরত মুহাম্মদ (স.)’র উদ্দেশ্যে আমার জীবন উৎসর্গীত, সারা জীবন তার ধ্যানেই আমি থাকব নিয়োজিত।https://www.chatgarsangbad.net/chunati-hazrat-shah-saheb-and-his-achievements/


উল্লেখ্য, বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী শর্ষিনা দরবারের বর্তমান গদ্দিনসীন পীর হযরত মাওলানা শাহ মোহাম্মদ মোহেব্বুল্লাহ সাহেব (https://bn.wikipedia.org/wiki/ছারছিনা_দরবার_শরীফ) জ্যেষ্ঠ এবং বিশিষ্ট আলেমে দীন এবং বহু গ্রন্থের খ্যাতনামা লেখক ডক্টর আ.ন.ম. খোন্দকার আবদুল্লাহ জাহাঙ্গীর রহ.(https://bn.wikipedia.org/wiki/খোন্দকার_আব্দুল্লাহ_জাহাঙ্গীর) সেজ জামাতা এবং ফুরফুরা দরবারের বর্তমান গদ্দিনসীন পীর হযরতুল আল্লাম শাইখ আবু বকর আবদুল হাই মিশকাত সিদ্দিকী আল কুরাইশী হাফিজাহুল্লাহ (www.furfura.com) পীর সাহেবের জ্যেষ্ঠ পুত্র হন।

ফুরফুরা দরবারঃ হুগলি, ভারত থেকে বাংলাদেশে বাবল ইসলাম (ইসলামের প্রবেশদ্বার) ইসলামাবাদ চট্টগ্রাম

ফুরফুরা দরবার বা সিলসিলা-ই-ফুরফুরা ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের হুগলি জেলায় অবস্থিত একটি ইসলাম ধর্মীয় দরবার ও আধ্যাত্মিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ১৯৬১ সালে হুগলি জেলার হ্যান্ড বুক (ইংরেজি: Hooghly district hand book) নামক গ্রন্থে ও ১৯৭২ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার থেকে প্রকাশিত পশ্চিমবঙ্গ জেলা গ্যাজেটে (ইংরেজি: West Bengal district gazetters; Hooghly) by অমিয় কুমার বাগচী মুসলিমদের ধর্মীয়স্থান নামে অভিহিত করেছেন।(সূত্রঃ সুধীর কুমার মিত্র (১৯৯১)। হুগলি জেলার ইতিহাস ও বঙ্গসমাজ। ৭৮/১, গান্ধী রোড, কোলকাতা: মন্ডল বুক হাউস। পৃষ্ঠা ১৩০১। ↑ সৈয়দ মোঃ বাহাউদ্দিন (২০১৭)। যুগ সংস্কারক শাহ আবু বকর সিদ্দিকী। আরামবাগ, হুগলি )।

জন শ্রুতি রয়েছে, এটি রাজস্থানের আজমির শরীফের পরেই দেশের দ্বিতীয় সবচেয়ে সন্মানিত ও উল্লেখযোগ্য স্থান।[সূত্রঃ ↑ hindu, the (১৭ জানুয়ারি ২০২১)। "The Hindu e-Paper Today: ePaper replica of the print newspaper"। epaper.thehindu.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০১-১৮।

ইসালে সওয়াব মাহফিলের সময়ে এটি প্রচুর সংখ্যক ধার্মিক মানুষদের আকৃষ্ট করে।[ সূত্রঃ "West Bengal Tourism Policy, 2008"। Fairs and Festivals Tourism। Government of West Bengal, Department of Tourism।]

ফুরফুরা দরবারের প্রতিষ্ঠাতা মুজাদ্দেদে জামান হযরত আবু বকর সিদ্দিকী রহিমাহুমুল্লাহ

ফুরফুরা গ্রামের অস্তিত্ব বহু পূর্ব থেকে থাকলেও এই দরবার প্রতিষ্ঠা করেন পীর আবু বকর সিদ্দিকী রহিমাহুমুল্লাহ, মূলত তিনি সিলসিলা-ই-ফুরফুরা দরবারের প্রতিষ্ঠাতা [↑ Choudhury, Dewan Nurul Anwar Hussain (২০১২)। "Siddiqi, Abdul Hai"। Islam, Sirajul; Jamal, Ahmed A.। Banglapedia: National Encyclopedia of Bangladesh (Second সংস্করণ)। Asiatic Society of Bangladesh।। তাঁকে হিজরী চতুর্দশ শতাব্দীর মুজাদ্দিদ বলা হয়।

আনুমানিক ১৯০০ সালের দিকে এই দরবার প্রতিষ্ঠা হয়। মুজাদ্দেদে জামান রহিমাহুমুল্লাহর অবর্তমানে এই দরবার শরীফের মূল ব্যক্তিত্ব ছিলেন পীর আবু বকর সিদ্দিকী রহঃ এর পাঁচ সাহেবজাদা যথাঃ

১. শাইখুল ইসলাম হযরত মাওলানা আবদুল হাই সিদ্দিকী আল কুরাইশী রহিমাহুল্লাহ

২. আল্লামা আবু জাফর সিদ্দিকী আল কুরাইশী রহিমাহুল্লাহ

৩. আল্লামা আবদুল কাদের সিদ্দিকী আল কুরাইশী রহিমাহুল্লাহ ৪. আল্লামা নাজমুস সায়াদাত সিদ্দিকী আল কুরাইশী রহিমাহুল্লাহ ও

৫. আল্লামা জুলফিকার আলী সিদ্দিকী আল কুরাইশী রহিমাহুল্লাহ।

ইনারা সবাই তদীয় বুজুর্গ পিতার-মুজাদ্দেদে জামান রপীর আবু বকর সিদ্দিকী রহিমাহুমুল্লাহ খেলাফত পেয়েছিল, এবং পীর ছিলেন। ইনারা দুই বাংলার বিভিন্ন স্থানে গমন করে ইসলাম প্রচার করেছেন এবং সাধারণ জনতাকে মুরিদ বানিয়ে ইসলামী শরাহ-শরীয়ত এবং ইলমে তাসাউফ শিক্ষা দিয়েছেন।

এমন জীবন তুমি করিবে গঠন মরণে হাসিবে তুমি, কাঁদিবে ভূবন

মুজাদ্দেদে জামান ফরফুরার পীর আবু বকর সিদ্দিকী রহিমাহুমুল্লাহর জ্যেষ্ঠপুত্র হচ্ছেন শাইখুল ইসলাম হযরত মাওলানা আবদুল হাই সিদ্দিকী আল কুরাইশী রহিমাহুল্লাহ। উনার বড় সাহেবজাদা হচ্ছেনঃ হযরত মাওলানা আবুল আনসার মুহাম্মাদ আবদুল কাহহার সিদ্দিকী আল কুরাইশী রহিমাহুল্লাহ-যিনি শতধা বিভক্ত জাতির মধ্যে বৃহত্তর ঐক্য ও সংহতি প্রতিষ্ঠায় এমন জীবন গঠন করে গেছেন মৃত্যুর পর অনেকে দেখেছেন হাস্যোজ্জ্ল্বল জ্যোতির্ময় নূরানী চেহারা আর কেঁদেছিলেন দলমত নির্বিশেষে সকল স্তরের মুরীদীন, মুহেব্বীন, মুতাআল্লেক্বীন, মুতাআকেদীন, জাকেরিন,সাকেরিনসহ জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বিশ্বের অগণিত ভক্ত-অনুরক্তবৃন্দ।

শোকার্ভ ভগ্ন হৃদয়ে আগত হযরত মাওলানা আবুল আনসার মুহাম্মাদ আবদুল কাহহার সিদ্দিকী আল কুরাইশী রহিমাহুল্লাহর নামাযে জানাযায় দলমত নির্বিশেষে সকল রাজনৈতিক,অরাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ,সাবেক প্রেসিডেন্ট, মন্ত্রী, সচিব, দেশ বরেণ্য ওলামায়ে কেরাম, পীর মাশায়েখ,সরকারী ও বেসরকারী উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ অংশ গ্রহণ করেন।

তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হচ্ছেনঃ জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতীব হযরত মাওলানা উবায়দুল হক, জমিয়তে ওলামায়ে ইসলামের নির্বাহী সভাপতি ও মদীনা সম্পাদক হযরত মাওলানা মুহিউদ্দিন খান, জামাআতে ইসলামীর আমীর ও সাবেক মন্ত্রী মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, জামাআতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক মন্ত্রী আলী আহসান মুজাহিদ, আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক মন্ত্রী খ.ম.জাহাঙ্গীর,বাংলাদেশ সরকারের সাবেক প্রেসিডেন্ট এল.ডি.পি. সভাপতি ডা.বদরুদ্দোজা চৌধুরী, ঢাকার মেয়র বি.এন.পি.নেতা জনাব সাদেক হোসেন খোকা, জামাআতে ইসলামীর উপদেষ্টা অধ্যাপক গোলাম আযম, জমিয়তুল মোদাররেসিনের মহাসচিব মাওলানা সাব্বির আহমাদ মোমতাজী, চরমোনাইর মুজাহিদ কমিটির নায়েবে আমীর মাওলানা মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী, খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব ও যুগ্ম মহাসচিব যথাক্রমে মাওলানা জাফরুল্লাহ খান ও হাবিবুল্লাহ মিয়াজী, জমিয়তে ওলামায়ে ইসলামের মহাসচিব ও সাবেক এম.পি. মুফতি মুহাম্মাদ ওয়াক্কাস, ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের মাওলানা ইসা শাহেদী, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের পক্ষে মাও. আবু জাফর ও অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন্দ, ছারছীনার পীর সাহেবের পক্ষে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাও. আমজাদ হোসেন, আওয়ামী লীগ নেতা, সাবেক এম.পি. মকবুল হোসেন, আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ, ইলিয়াস মোল্লা, বি.এন.পি. নেতা সাবেক এম.পি, এস.এ. খালেক, খেলাফত মজলিসের আমীর মাও. মোহাম্মাদ ইসহাক আলী, মহাসচিব আহাম্মদ আবদুল কাদের, ইসলামী ঐক্যজোটের (শায়খুল হাদীস মাও. আজিজুল হক) নেতা সাবেক এম.পি, শহিদুল ইসলাম, তাবলীগ জামাতের কেন্দ্রীয় মুরব্বী মাওলানা মোজাম্মেল হক, মিশনারী ওয়েল ফেয়ার ট্রাস্টের চেয়ারম্যান বিচারপতি আব্দুর রউফ, মিরপুরের বিভিন্ন ওয়ার্ডের কমিশনারবৃন্দ, মুসলিম লীগের নির্বাহী সভাপতি এডভোকেট নুরুল হক মজুমদার, মসজিদ মিশনের সভাপতি মাও. যয়নুল আবেদীন, সাবেক রাষ্ট্রদূত নজরুল ইসলাম খান, প্রখ্যাত ইসলামী চিন্তাবিদ মাও. আবুল কালাম আযাদ প্রমুখ। (সূত্রঃ ফুরফুরার ইতিহাস, পৃষ্ঠা ৩৬১-৩৬২)।

ফুরফুরা দরবারের গদ্দীনশীন পীর মাওলানা আবুল আনসার মুহাম্মাদ আবদুল কাহহার সিদ্দিকী আল কুরাইশীর জীবন-জিন্দেগীতে বাংলাদেশের শীর্ষ স্থানীয় পত্র-পত্রিকায় বহুমাত্রিক প্রভাব রয়েছে প্রসঙ্গে

ফুরফুরা দরবারের গদ্দীনশীন পীর আমিরুল ইত্তেহাদ, হযরত মাওলানা আবুল আনসার মুহাম্মাদ আবদুল কাহহার সিদ্দিকী আল কুরাইশী রহিমাহুল্লাহর জীবন-জিন্দেগীতে বাংলাদেশের শীর্ষ স্থানীয় পত্র-পত্রিকায় বহুমাত্রিক প্রভাব রয়েছে। যথাঃ ১) জীবৎকালে ২) ইন্তেকালের পর ৩) দাফন পূর্বে এবং ৩) দাফর পরবর্তী।

১) জীবৎকালেঃ জীবিত থাকাবস্থায় জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে ঈমান, ইসলাম সম্পর্কিত সমসাময়িক ঘটনাবলীর উপর জাতীয় পত্রপত্রিকায় মুসলিম উম্মাহ প্রতি হযরত মাওলানা আবুল আনসার মুহাম্মাদ আবদুল কাহহার সিদ্দিকী আল কুরাইশী রহিমাহুল্লাহর দিক-নির্দেশনামূলক প্রায়শঃ ইশতেহার, সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হতো।

২) ইন্তেকালের পরঃ ইন্তেকালের পর জাতীয় দৈনিক ইত্তেফাক, সমকাল, প্রথম আলো, দৈনিক ইনকিলাব, দৈনিক সংগ্রাম, দৈনিক সংবাদ, কালের কন্ঠ, যুগান্তর, বাংলা বাজার, আমার দেশ, মানব জীবন, নয়া দিগন্ত, খবরপত্র, জনকন্ঠ, দিনকাল, Bangladesh Observer, The Independent প্রভৃতি পত্রপত্রিকায় বৃহস্পতিবার ২১ ডিসেম্বর, ২০০৬ তারিখ ইন্তেকালের শোক সংবাদ, জুমাবার ২২ ডিসেম্বর, ২০০৬ তারিখ দাফন সংক্রান্ত সংবাদ এবং শনিবার ২৩ ডিসেম্বর, ২০০৬ তারিখ দৈনিক ইনকিলাবসহ কতিপয় পত্রিকায় দাফন পরবর্তী সংবাদ প্রকাশিত হয়।(সূত্রঃ সংবাদপত্রের পাতায় ফুরফুরার পীর হযরত আব্দুল কাহহার সিদ্দিকী (রহঃ): প্রকাশনায়: কুরআন হাদীস রিসার্চ সেন্টার, ইশা’আতে ইসলাম কুতুবখানা (ফুরফুরার প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান), মার্কাজে ইশা’আতে ইসলাম, ২/২, দারুস সালাম, মিরপুর, ঢাকা-১২১৬, বাংলাদেশ, পৃষ্ঠাঃ ৫২১-৫৬০)।