অতিস্থূলতা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
→কারণসমূহ: + |
|||
১৮৯ নং লাইন: | ১৮৯ নং লাইন: | ||
বিভিন্ন দেশ এবং বিভিন্ন অঞ্চলে মাথা পিছু খাদ্য গ্রহণ এবং খাদ্যবিধি সংক্রান্ত শক্তি সরবরাহ নির্দিষ্টভাবেই আলাদা হয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে উল্লেখযোগ্যভাবে এর পরিবর্তনও হয়েছে।<ref name=Earth09/> ১৯৭০’র গোড়ার দিক থেকে শুরু করে ১৯৯০’র শেষ দিক পর্যন্ত একমাত্র পূর্ব ইউরোপ ছাড়া বিশ্বের সব প্রান্তেই প্রতি দিন মাথা পিছু মানুষের ( যে পরিমাণ খাদ্য কেনা হয়) গড় ক্যালোরি পাওয়ার পরিমাণ বেড়েছে। এটা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই সর্বাধিক পাওয়া যায়। ১৯৯৬ সালে এর পরিমাণ ছিলো ৩৬৫৪ক্যালোরি।<ref name=Earth09/> ২০০৩ সালে আবার তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩,৭৫৪ক্যালোরিতে।<ref name=Earth09/> ১৯৯০’এর শেষ দিকে ইউরোপীয়দের মাথাপিছু ক্যালোরি গ্রহণের পরিমাণ ছিলো ৩৩৯৪, এশিয়ার উন্নয়নশীল এলাকাগুলিতে মাথাপিছু ক্যালোরি গ্রহণ ছিলো ২৬৪৮ এবং উপ-সাহারার আফ্রিকার দেশগুলিতে মাথা পিছু ক্যালোরি গ্রহণের পরিমাণ ছিলো ২১৭৬।<ref name=Earth09/><ref>{{cite web |url=http://www.scribd.com/doc/1470965/USDA-frsept99b |title=USDA: frsept99b |format= |work=[[United States Department of Agriculture]] |accessdate=January 10, 2009}}</ref> পূর্ণ ক্যালোরি গ্রহণের সঙ্গে অতি স্থূলতার যোগ রয়েছে।<ref>{{cite web |url=http://www.statcan.gc.ca/pub/82-003-x/2009004/article/10933-eng.htm |title=Diet composition and obesity among Canadian adults |work=Statistics Canada |accessdate=}}</ref> |
বিভিন্ন দেশ এবং বিভিন্ন অঞ্চলে মাথা পিছু খাদ্য গ্রহণ এবং খাদ্যবিধি সংক্রান্ত শক্তি সরবরাহ নির্দিষ্টভাবেই আলাদা হয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে উল্লেখযোগ্যভাবে এর পরিবর্তনও হয়েছে।<ref name=Earth09/> ১৯৭০’র গোড়ার দিক থেকে শুরু করে ১৯৯০’র শেষ দিক পর্যন্ত একমাত্র পূর্ব ইউরোপ ছাড়া বিশ্বের সব প্রান্তেই প্রতি দিন মাথা পিছু মানুষের ( যে পরিমাণ খাদ্য কেনা হয়) গড় ক্যালোরি পাওয়ার পরিমাণ বেড়েছে। এটা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই সর্বাধিক পাওয়া যায়। ১৯৯৬ সালে এর পরিমাণ ছিলো ৩৬৫৪ক্যালোরি।<ref name=Earth09/> ২০০৩ সালে আবার তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩,৭৫৪ক্যালোরিতে।<ref name=Earth09/> ১৯৯০’এর শেষ দিকে ইউরোপীয়দের মাথাপিছু ক্যালোরি গ্রহণের পরিমাণ ছিলো ৩৩৯৪, এশিয়ার উন্নয়নশীল এলাকাগুলিতে মাথাপিছু ক্যালোরি গ্রহণ ছিলো ২৬৪৮ এবং উপ-সাহারার আফ্রিকার দেশগুলিতে মাথা পিছু ক্যালোরি গ্রহণের পরিমাণ ছিলো ২১৭৬।<ref name=Earth09/><ref>{{cite web |url=http://www.scribd.com/doc/1470965/USDA-frsept99b |title=USDA: frsept99b |format= |work=[[United States Department of Agriculture]] |accessdate=January 10, 2009}}</ref> পূর্ণ ক্যালোরি গ্রহণের সঙ্গে অতি স্থূলতার যোগ রয়েছে।<ref>{{cite web |url=http://www.statcan.gc.ca/pub/82-003-x/2009004/article/10933-eng.htm |title=Diet composition and obesity among Canadian adults |work=Statistics Canada |accessdate=}}</ref> |
||
ব্যাপক মাত্রায় পুষ্টির |
ব্যাপক মাত্রায় পুষ্টির নির্দেশিক<ref>{{cite web | author=National Control for Health Statistics | title=Nutrition For Everyone | publisher=Centers for Disease Control and Prevention | url=http://www.cdc.gov/nccdphp/dnpa/nutrition/nutrition_for_everyone | accessdate=2008-07-09}}</ref> পাওয়া গেলেও সেটা অতিরিক্ত খাওয়া এবং অত্যন্ত খারাপ খাদ্যাভ্যাসের পছন্দের বিষয়টিকে খুব কমই সম্বোধন করতে পেরেছে।<ref>{{cite journal |author=Marantz PR, Bird ED, Alderman MH |title=A call for higher standards of evidence for dietary guidelines |journal=Am J Prev Med |volume=34 |issue=3 |pages=234–40 |year=2008 |month=March |pmid=18312812 |doi=10.1016/j.amepre.2007.11.017 |url=}}</ref> ১৯৭১ থেকে ২০০০সালের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অতি স্থূলতার হার ১৪.৫শতাংশ থেকে বেড়ে ৩০.৯শতাংশ হয়েছে।<ref name=Flegal2002>{{cite journal | author=Flegal KM, Carroll MD, Ogden CL, Johnson CL | title=Prevalence and trends in obesity among US adults, 1999–2000 | journal=JAMA | year=2002 | month=October | volume=288| pages=1723–1727 | url=http://jama.ama-assn.org/cgi/content/full/288/14/1723 | doi=10.1001/jama.288.14.1723 | pmid=12365955 | issue=14}}</ref> ঐ একই সময়ের মধ্যে, ক্যালোরি গ্রহণের গড় পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। মহিলাদের ক্ষেত্রে, প্রতি দিন গড় ক্যালোরি গ্রহণের পরিমাণ বেড়ে যায় ৩৩৫ (১৯৭১সালে ১৫৪২ এবং ২০০৪সালে তা বেড়ে হয় ১৮৭৭)। তবে পুরুষদের ক্ষেত্রে দৈনিক এই গড় বৃদ্ধির হার ছিলো ১৬৮ক্যালোরি (১৯৭১সালে ২৪৫০ এবং ২০০৪সালে ২৬১৮ক্যালোরি)। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অতিরিক্ত এই ক্যালোরি গ্রহণের প্রাথমিক উত্স ছিলো চর্বি জাতীয় খাদ্যের তুলনায় কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার বেশি খাওয়া।<ref>{{cite journal | author=Wright JD, Kennedy-Stephenson J, Wang CY, McDowell MA, Johnson CL | title=Trends in intake of energy and macronutrients—United States, 1971–2000 | journal=MMWR Morb Mortal Wkly Rep | year=2004 | month=February | volume=53 | issue=4 | pages=80–2 | url=http://www.cdc.gov/mmwr/preview/mmwrhtml/mm5304a3.htm | pmid=14762332}}</ref> এই অতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেটের প্রাথমিক উত্স ছিলো মিষ্টিযুক্ত পানীয়। এখন আমেরিকার সাবালক যুব সমাজের মধ্যে এই মিষ্টিযুক্ত পানীয়ের দৈনিক ক্যালোরি গ্রহণের পরিমাণ প্রায় ২৫শতাংশ বেড়ে গেছে।<ref name=Caballero>{{cite journal |author=Caballero B |title=The global epidemic of obesity: An overview |journal=Epidemiol Rev |volume=29 |issue= |pages=1–5 |year=2007 |pmid=17569676 |doi=10.1093/epirev/mxm012 |url=}}</ref> এখন অতি স্থূলতা বাড়ার কারণ হিসেবে মিষ্টিযুক্ত পানীয় খাওয়াকেই মনে করা হচ্ছে।<ref>{{cite journal |author=Malik VS, Schulze MB, Hu FB |title=Intake of sugar-sweetened beverages and weight gain: a systematic review |journal=Am. J. Clin. Nutr. |volume=84 |issue=2 |pages=274–88 |year=2006 |month=August |pmid=16895873 |doi= |url=http://www.ajcn.org/cgi/content/full/84/2/274}}</ref><ref>{{cite journal |author=Olsen NJ, Heitmann BL |title=Intake of calorically sweetened beverages and obesity |journal=Obes Rev |volume=10 |issue=1 |pages=68–75 |year=2009 |month=January |pmid=18764885 |doi=10.1111/j.1467-789X.2008.00523.x |url=}}</ref> |
||
যতো বেশি পরিমাণে শক্তি-ঘন, বেশি পরিমানে ফাস্ট-ফুডের দিকে সমাজের নির্ভরতা ক্রমেই বাড়তে লাগলো, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফাস্ট-ফুড গ্রহণ এবং অতি স্থূলতার মধ্যে সম্পর্ক অত্যন্ত বেশি উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়ালা। |
যতো বেশি পরিমাণে শক্তি-ঘন, বেশি পরিমানে ফাস্ট-ফুডের দিকে সমাজের নির্ভরতা ক্রমেই বাড়তে লাগলো, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফাস্ট-ফুড গ্রহণ এবং অতি স্থূলতার মধ্যে সম্পর্ক অত্যন্ত বেশি উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়ালা।<ref>{{cite journal |author=Rosenheck R |title=Fast food consumption and increased caloric intake: a systematic review of a trajectory towards weight gain and obesity risk |journal=Obes Rev |volume=9 |issue=6 |pages=535–47 |year=2008 |month=November |pmid=18346099 |doi=10.1111/j.1467-789X.2008.00477.x |url=}}</ref> মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফাস্ট-ফুড গ্রহণের পরিমাণ বেড়ে গেছে তিনগুণ এবং ১৯৭৭ থেকে ১৯৯৫ সালের মধ্যে এই সব খাবার থেকে ক্যালোরি গ্রহণের পরিমাণ বেড়ে যায় চারগুণ।<ref>{{cite book |author=Lin BH, Guthrie J and Frazao E |editor=Frazão E |title=Agriculture Information Bulletin No. 750: America's Eating Habits: Changes and Consequences | url=http://www.ers.usda.gov/publications/aib750/ |year=1999 |publisher=US Department of Agriculture, Economic Research Service |location=Washington, DC |pages=213–239 |chapter=Nutrient contribution of food away from home}}</ref> |
||
⚫ | |||
⚫ | |||
⚫ | কৃষিনীতি এবং প্রযুক্তির কারণেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপে খাদ্যের দাম খুব কম। মার্কিন খামার বিলের মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভুট্টা, সোয়া, গম এবং চালের উপর যে ভরতুকি রয়েছে সে কারণে ফল এবং সবজির তুলনায় প্রক্রিয়াজাত খাদ্যের মূল উত্সের দাম অনেক কম।.<ref>{{cite news|author=Pollan, Michael|title=You Are What You Grow|work=New York Times|url=http://www.nytimes.com/2007/04/22/magazine/22wwlnlede.t.html?ex=1186027200&en=bbe0f6a2c10e3b3c&ei=5070|date= 22 April 2007|accessdate= 2007-07-30}}</ref> |
||
⚫ | |||
[241] |
|||
⚫ | অতি স্থূল (মোটা) ব্যক্তিরা সব সময়ই তাদের খাদ্য গ্রহণের মাত্রাকে স্বাভাবিক ওজনের ব্যক্তিদের তুলনায় কমিয়ে দেখায়।<ref>Kopelman and Caterson 2005:324.</ref>একটি ক্যালোরিমিটার ঘরে<ref>{{cite web |url=http://www.medicalpost.com/therapeutics/nutrition/article.jsp?content=20080818_121920_25640 |title=Metabolism alone doesn't explain how thin people stay thin |publisher=The Medical Post|work=John Schieszer |format=registration required |accessdate=December 31, 2008}}</ref> মানুষের ওপর পরীক্ষা চালিয়ে এবং সরাসরি পর্যবেক্ষণ করে এই তথ্যের সমর্থন পাওয়া গেছে। |
||
⚫ | অতি স্থূলতার ক্ষেত্রে বসে কাজের জীবনশৈলী একটা বড় ভুমিকা পালন করে। |
||
⚫ | টেলিভিশন দেখার সময় এবং অতি স্থূলতার ঝুঁকির মধ্যে শিশু এবং বয়স্ক উভয়ের ক্ষেত্রেই একটা সম্পর্ক আছে। |
||
⚫ | |||
⚫ | |||
[267] |
|||
⚫ | অতি স্থূলতার ক্ষেত্রে বসে কাজের জীবনশৈলী একটা বড় ভুমিকা পালন করে।<ref>Seidell 2005 p.10</ref> গোটা বিশ্বই এখন কম শারীরিক পরিশ্রমের কাজের দিকে ঝুঁকছে।<ref name=WHO2009>{{cite web |url=http://www.who.int/dietphysicalactivity/publications/facts/obesity/en/ |title=WHO: Obesity and overweight |format= |work=[[World Health Organization]] |accessdate=January 10, 2009}}</ref><ref name=WHOExercise>{{cite web |url=http://www.who.int/dietphysicalactivity/factsheet_inactivity/en/index.html |title=WHO | Physical Inactivity: A Global Public Health Problem |work=[[World Health Organization]] |accessdate=February 22, 2009}}</ref><ref name=Ness2006>{{cite journal |author=Ness-Abramof R, Apovian CM |title=Diet modification for treatment and prevention of obesity |journal=Endocrine |volume=29 |issue=1 |pages=5–9 |year=2006 |month=February |pmid=16622287 |doi=10.1385/ENDO:29:1:135 |url=}}</ref> বিশ্বের জনসংখ্যার ৬০শতাংশই এখন অপর্যাপ্ত শারীরিক কসরত করতে পারে।<ref name=WHOExercise/> এর প্রাথমিক কারণ হলো কোনো বস্তু এক স্থান থেকে অন্যস্থানে বহন করে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে যন্ত্রের সাহায্য নেওয়া এবং বাড়িতে শ্রমশক্তি বাঁচানো প্রযুক্তির অধিক প্রচলন।<ref name=WHO2009/><ref name=WHOExercise/><ref name=Ness2006/> হাঁটা এবং শারীর শিক্ষা কমে যাওয়ার কারণে শিশুদের মধ্যেও দেখা যাচ্ছে শারীরিক কসরতের পরিমাণ কমে যাচ্ছে।<ref>{{cite journal |author=Salmon J, Timperio A |title=Prevalence, trends and environmental influences on child and youth physical activity |journal=Med Sport Sci |volume=50 |issue= |pages=183–99 |year=2007 |pmid=17387258 |doi=10.1159/000101391 }}</ref> সক্রিয় অবকাশের সময় শারীরিক ক্রিয়াকর্মের প্রতি ঝোঁক বিশ্বে কমে যাচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নির্দেশ করেছে যে সারা বিশ্বেই মানুষ এখন কম সক্রিয় আনন্দের দিকে ঝুঁকছে। আবার ফিনল্যাণ্ডের<ref>{{cite journal |author=Borodulin K, Laatikainen T, Juolevi A, Jousilahti P |title=Thirty-year trends of physical activity in relation to age, calendar time and birth cohort in Finnish adults |journal=Eur J Public Health |volume=18 |issue=3 |pages=339–44 |year=2008 |month=June |pmid=17875578 |doi=10.1093/eurpub/ckm092 |url=}}</ref> এক সমীক্ষায় পাওয়া গেছে, এই হার কিছুটা বেড়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে অবকাশকালীন শারীরিক ক্রিয়াকলাপ সেরকম উল্লেখযোগ্যভাবে কমেনি।<ref>{{cite journal |author=Brownson RC, Boehmer TK, Luke DA |title=Declining rates of physical activity in the United States: what are the contributors? |journal=Annu Rev Public Health |volume=26 |issue= |pages=421–43 |year=2005 |pmid=15760296 |doi=10.1146/annurev.publhealth.26.021304.144437 |url=}}</ref> |
||
⚫ | টেলিভিশন দেখার সময় এবং অতি স্থূলতার ঝুঁকির মধ্যে শিশু এবং বয়স্ক উভয়ের ক্ষেত্রেই একটা সম্পর্ক আছে।<ref>{{cite journal |author=Gortmaker SL, Must A, Sobol AM, Peterson K, Colditz GA, Dietz WH |title=Television viewing as a cause of increasing obesity among children in the United States, 1986–1990 |journal=Arch Pediatr Adolesc Med |volume=150 |issue=4 |pages=356–62 |year=1996 |month=April |pmid=8634729}}</ref><ref>{{cite journal |author=Vioque J, Torres A, Quiles J |title=Time spent watching television, sleep duration and obesity in adults living in Valencia, Spain |journal=Int. J. Obes. Relat. Metab. Disord. |volume=24 |issue=12 |pages=1683–8 |year=2000 |month=December |pmid=11126224 |doi= 10.1038/sj.ijo.0801434|url=}}</ref><ref>{{cite journal |author=Tucker LA, Bagwell M |title=Television viewing and obesity in adult females |journal=Am J Public Health |volume=81 |issue=7 |pages=908–11 |year=1991 |month=July |pmid=2053671 |pmc=1405200 |doi= 10.2105/AJPH.81.7.908|url=http://www.ajph.org/cgi/reprint/81/7/908 | format=PDF}}</ref> ২০০৮সালের এক মেটা-বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ৭৩টির মধ্যে ৬৩টিতেই (৮৬%) দেখানো হয়েছে, শিশুদের মধ্যে অতি স্থূলতা যে বাড়ছে তার কারণ হলো শিশুদের মিডিয়ায় প্রদর্শণের হার বেড়ে যাওয়া এবং সমানুপাতিক হারে টেলিভিশন দেখারও সময় বেড়ে যাওয়া।<ref>{{cite web |url=http://www.commonsensemedia.org/sites/default/files/CSM_media+health_v2c%20110708.pdf |title=Media + Child and Adolescent Health: A Systematic Review |publisher=Common Sense Media|year=2008|format=pdf |work=Ezekiel J. Emanuel |accessdate=April 6, 2009}}</ref> |
||
⚫ | |||
[[File:La monstrua desnuda (1680), de Juan Carreño de Miranda..jpg|thumb|alt=A painting of a dark haired pink cheeked obese nude young female leaning against a table. She is holding grapes and grape leaves in her left hand which cover her genitalia.|A 1680 painting by [[Juan Carreno de Miranda]] of a girl presumed to have [[Prader-Willi syndrome]]<ref>{{cite web |url=http://www.esst.org/newsletter2000.htm |title=Case Study: Cataplexy and SOREMPs Without Excessive Daytime Sleepiness in Prader Willi Syndrome. Is This the Beginning of Narcolepsy in a Five Year Old?|author=Mary Jones|publisher=European Society of Sleep Technologists|accessdate=April 6, 2009}}</ref>]] |
|||
অন্য অনেক চিকিত্সা সংক্রান্ত পরিস্থিতির মতোই, অতি স্থূলতা হলো বংশানুগতি এবং পরিবেশের কারণগুলির মধ্যে পারস্পরিক ক্রিয়ার ফলাফল। বিভিন্ন জিনে পলিমোরফিজমস নিয়ন্ত্রণ করে ক্ষুধা এবং বিপাকীয় ক্রিয়াকে। যার ফলে যথেষ্ট পরিমাণ ক্যালোরির উপস্থিতিতে অতি স্থূলতামুখী করে তোলে একে। ২০০৬সালের হিসেব অনুযায়ী, ৪১টি এমন ক্ষেত্র পাওয়া গেছে যেখানে অতি স্থূলতার সঙ্গে অনুকূল পরিবেশের উপস্থিতির যোগাযোগ পাওয়া গেছে।[270] কত সংখ্যক জনসংখ্যার উপর পরীক্ষা করা হচ্ছে তার ভিত্তিতে বংশানুগতির কারণেই অতি স্থূলতার শতকরা হার বিভিন্ন রকম। এই হার হলো ৬% থেকে ৮৫%।[272] |
অন্য অনেক চিকিত্সা সংক্রান্ত পরিস্থিতির মতোই, অতি স্থূলতা হলো বংশানুগতি এবং পরিবেশের কারণগুলির মধ্যে পারস্পরিক ক্রিয়ার ফলাফল। বিভিন্ন জিনে পলিমোরফিজমস নিয়ন্ত্রণ করে ক্ষুধা এবং বিপাকীয় ক্রিয়াকে। যার ফলে যথেষ্ট পরিমাণ ক্যালোরির উপস্থিতিতে অতি স্থূলতামুখী করে তোলে একে। ২০০৬সালের হিসেব অনুযায়ী, ৪১টি এমন ক্ষেত্র পাওয়া গেছে যেখানে অতি স্থূলতার সঙ্গে অনুকূল পরিবেশের উপস্থিতির যোগাযোগ পাওয়া গেছে।[270] কত সংখ্যক জনসংখ্যার উপর পরীক্ষা করা হচ্ছে তার ভিত্তিতে বংশানুগতির কারণেই অতি স্থূলতার শতকরা হার বিভিন্ন রকম। এই হার হলো ৬% থেকে ৮৫%।[272] |
||
বিভিন্ন রোগের লক্ষণে অতি স্থূলতা হলো একটা বিরাট কারণ। যেমন প্রাডের-উইলি রোগলক্ষণ, বারডেল-বিয়েডল্ রোগলক্ষণ, কোহেন রোগলক্ষণ এবং এম ও এম ও(MOMO) রোগলক্ষণ। (‘রোগলক্ষণহীন অতি স্থূলতা’ এই শব্দ বন্ধটি কখনো ব্যবহার করা হয় এই সমস্ত অবস্থাগুলিকে বাদ দিয়ে।) [274] যে সব মানুষের মধ্যে খুব তাড়াতাড়ি মারাত্মক অতি স্থূলতা লক্ষণ দেখা যায় (10বছর বয়সের আগে এবং স্বাভাবিকের তুলনায় বডি মাস ইণ্ডেক্স মাপকাঠির তিন স্তর নিচে থাকাকে এক্ষেত্রে সজ্ঞায়িত করা হয়েছে), 7% ক্ষেত্রেই মনে করা হয় ডি এন এ’র রূপান্তরই এর একমাত্র কারণ।[276] |
বিভিন্ন রোগের লক্ষণে অতি স্থূলতা হলো একটা বিরাট কারণ। যেমন প্রাডের-উইলি রোগলক্ষণ, বারডেল-বিয়েডল্ রোগলক্ষণ, কোহেন রোগলক্ষণ এবং এম ও এম ও(MOMO) রোগলক্ষণ। (‘রোগলক্ষণহীন অতি স্থূলতা’ এই শব্দ বন্ধটি কখনো ব্যবহার করা হয় এই সমস্ত অবস্থাগুলিকে বাদ দিয়ে।) [274] যে সব মানুষের মধ্যে খুব তাড়াতাড়ি মারাত্মক অতি স্থূলতা লক্ষণ দেখা যায় (10বছর বয়সের আগে এবং স্বাভাবিকের তুলনায় বডি মাস ইণ্ডেক্স মাপকাঠির তিন স্তর নিচে থাকাকে এক্ষেত্রে সজ্ঞায়িত করা হয়েছে), 7% ক্ষেত্রেই মনে করা হয় ডি এন এ’র রূপান্তরই এর একমাত্র কারণ।[276] |
০৭:৩৪, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১১ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
উইকিপিডিয়ার জন্য মানসম্মত অবস্থায় আনতে এই নিবন্ধ বা অনুচ্ছেদের উইকিকরণ প্রয়োজন। অনুগ্রহ করে সম্পর্কিত আন্তঃসংযোগ প্রয়োগের মাধ্যমে নিবন্ধের উন্নয়নে সহায়তা করুন। |
অতিস্থূলতা | |
---|---|
বিশেষত্ব | অন্তঃক্ষরা গ্রন্থিবিজ্ঞান |
অতিস্থূলতা (ইংরেজীঃ Obesity, ওবেসিটি) হলো শরীরের এক বিশেষ অবস্থা, এই অবস্থায় শরীরে অতিরিক্ত স্নেহ বা চর্বি জাতীয় পদার্থ জমা হয় এবং স্বাস্থ্যের ওপর এর ক্ষতিকারক প্রভাব পড়ে, ফলে আয়ু কমে যেতে পারে এবং একইসঙ্গে শারীরিক নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে।[১][২] বডি মাস ইনডেক্স (BMI) হলো শরীরের উচ্চতা ও ওজনের আনুপাতিক হার, যা দিয়ে বোঝা যায় যে কোনো ব্যক্তি মাত্রাধিক ওজন (pre-obese) বিশিষ্ট কিনা। যদি কারো বডি মাস ইনডেক্স (BMI) ২৫ kg/m2 থেকে ৩০ kg/m2মধ্যে থাকে তখন তাকে স্থূলকায় বা মোটা বলা যেতে পারে, আর যখন বডি মাস ইনডেক্স (BMI) ৩০ kg/m2 বেশি থাকে তখন তাকে অতি স্থূলকায় বা অতিরিক্ত মোটা বলা হয়।[৩]
স্থূলতা বৃদ্ধি পেলে স্বাভাবিকভাবেই বিভিন্ন রোগের সম্ভাবনা দেখা দেয়, বিশেষত হৃদরোগ, দ্বিতীয় পর্যায়ের ডায়াবেটিস বা মধুমেহ, শুয়ে থাকার সময় শ্বাসকষ্ট, কয়েক ধরণের ক্যান্সার এবং অস্টিওআর্থারাইটিস।[২] অতিরিক্ত ক্যালোরিযুক্ত খাদ্যগ্রহণ, কায়িক শ্রমের অভাব, বংশ পরম্পরায় জিনগত বৈশিষ্ট্য থেকে প্রাপ্ত গুণাবলী, কিছু ক্ষেত্রে জিনের চরিত্রের পরিবর্তন, হরমোন গ্রন্থির গন্ডগোল, ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া, মানসিক অসুস্থতা ইত্যাদিকেই স্থূল বা মোটা হয়ে যাওয়ার জন্য দায়ী করা যেতে পারে। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে, অনেকে খুব কম পরিমাণে খাচ্ছেন অথচ ক্রমশ ওজন বৃদ্ধি পাচ্ছে, এর জন্য ধীর বিপাক ক্রিয়া বা ধীরে হজম হওয়াকেই দায়ী করা যেতে পারে; শীর্ণ বা রোগা ব্যক্তিদের তুলনায় স্থূলকায় ব্যক্তিদের শরীরে বেশি শক্তি সঞ্চিত থাকায় তারা গড়ে বেশি পরিমাণ কর্মশক্তি ব্যয় করতে পারে।.[৪][৫]
মাপ মতো খাবার খাওয়া (dieting) এবং শারীরিক বা কায়িক পরিশ্রমই হলো এই স্থূলতা কমানোর প্রাথমিক চিকিৎসা। সীমিত খাদ্যগ্রহণ এবং শারীরিক পরিশ্রমে কাজ না হলে এর পাশাপাশি স্থূলতা হ্রাসের ওষুধ খাওয়া যেতে পারে, এই ধরণের ওষুধ খাওয়ার ফলে ক্ষুধা বা খিদের পরিমাণ অনেকটাই কমে আসে বা স্নেহ বা চর্বি জাতীয় পদার্থের বিপাকের হার বাধা পায়। তুলনামূলকভাবে যারা বেশি মোটা বা স্থূল, তাদের ক্ষেত্রে শল্য চিকিৎসার সাহায্য নেওয়া যেতে পারে বা পাক-ব্যবস্থায় বেলুন ব্যবহার করে পাকস্থলীর আয়তন বা অন্ত্রের আয়তন কমিয়ে আনা যেতে পারে, এর ফলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি স্বল্প খাবারেই তৃপ্ত হতে পারে ও খাদ্য থেকে খাদ্যগুণ গ্রহণের ক্ষমতাও কমে আসে।[৬][৭]
বর্তমানে গোটা বিশ্বে স্থূলতাই মৃত্যুর অন্যতম প্রতিষেধযোগ্য কারণ হিসাবে চিহ্নিত, প্রাপ্ত বয়স্ক ও শিশুদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা দিনের পর দিন বাড়ছে এবং একবিংশ শতাব্দীতে জনস্বাস্থ্য সংক্রান্ত এই সমস্যাক মারাত্মক আকার নিতে চলেছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।[৮] বর্তমান যুগে পশ্চিমী দুনিয়ায় স্থূলতাকে কলঙ্ক হিসাবেই বিবেচনা করা হয়, অবশ্য অতীতে সম্পদ ও উর্বরতার প্রতীক হিসাবেই দেখা হতো স্থূলকায়দের, এখনও আফ্রিকা মহাদেশের কিছু অংশে এই ধারণা রয়ে গেছে।[২][৯]
শ্রেণীভুক্তকরণ
অতিস্থূলতা বা ওবেসিটি হলো এক শারীরিক অবস্থা; এক্ষেত্রে শরীরে অতিরিক্ত স্নেহ জাতীয় পদার্থের সঞ্চয় হয় এবং স্বাস্থ্যের ওপর তার ক্ষতিকারক প্রভাব পড়ে।[১] বডি মাস ইনডেক্স (BMI)-ই এর সঠিক ব্যাখ্যা দিয়েছে এবং আরো মূল্যায়ন করতে গিয়ে দেখা গেছে, কোমর-নিতম্বের অনুপাত মেনেই এই চর্বি বা স্নেহ পদার্থ সারা শরীরে ছড়িয়ে থাকে এবং এর ফলে হৃদ-ধমনীর রোগ দেখা দিতে পারে।.[১০][১১] বডি মাস ইনডেক্স (BMI) শরীরের স্নেহ পদার্থের শতকরা হার ও শরীরের মোট স্নেহ পদার্থের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত।[১২]
শিশুর বয়স ও লিঙ্গ অনুযায়ী স্বাস্থ্যবান শিশুদের ওজনের তারতম্য ঘটে। শিশুকাল ও বয়ঃসন্ধিকালের স্থূলতা কখনোই প্রকৃত সংখ্যা্ দিয়ে বিশ্লেষণ করা যায় না, এর সঙ্গে ঐতিহাসিকভাবেই স্বাভাবিক গোষ্ঠীর সম্পর্ক রয়েছে, যেমন এক্ষেত্রে স্থূলতা মাপতে গেলে 95th percentile-এর তুলনায় বডি মাস ইনডেক্স (BMI)-র বেশি হতে পারে।[১৩] Percentile সংক্রান্ত ডেটা ধরা হয় ১৯৬৩ থকে ১৯৯৪সালে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এবং সম্প্রতি ওজন বাড়লেও ঐ ডেটার তেমন বদল হয়নি বলেই মনে করা হয়।[১৪]
বি এম আই (BMI) | শ্রেণীবিভাগ |
---|---|
< ১৮.৫ | আণ্ডারওয়েট বা কম ওজন |
১৮.৫—২৪.৯ | স্বাভাবিক ওজন |
২৫.০—২৯.৯ | অতিওজন বা ওভারওয়েট |
৩০.০—৩৪.৯ | শ্রেণী ১ স্থূলতা |
৩৫.০—৩৯.৯ | শ্রেণী ২ স্থূলতা |
≥ ৪০.০ | শ্রেণী ৩ স্থূলতা |
বি এম আই (BMI)গণনা করা হয় বস্তুর ভরকে তার উচ্চতার বর্গ দিয়ে ভাগ করে, সাধারণত এটি প্রকাশ করা হয় মেট্রিক অথবা মার্কিন কাস্টোমারি একক পদ্ধতিতে.
- মেট্রিক:
- মার্কিন কাস্টোমারি এবং রাজকীয় বা ইম্পিরিয়াল:
যেখানে বস্তুর ওজন পাউণ্ড-এ এবং in বস্তুর উচ্চতা মাপা হয় ইঞ্চি-তে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু WHO)-র প্রতিষ্ঠিত সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত সংজ্ঞাটি তৈরি হয় ১৯৯৭ সালে এবং তা প্রকাশিত হয় ২০০০সালে, ডানদিকের টেবিলে তা দেখানো হয়েছে।[৩] কিছু সংস্থা হু (WHO)-র সংজ্ঞায় বেশ কিছু বদল এনেছে। শল্য চিকিৎসা সংক্রান্ত কাগজপত্রে শ্রেণী ৩ স্থূলতাকে আরো কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে যার সঠিক মান অবশ্য এখনও উলটো পালটা।[১৫]
- যে কোনো বিএমআই (BMI) ≥ ৩৫ অথবা ৪০ হলে তা প্রবল স্থূলতা
- বিএমআই (BMI) ≥ ৩৫ অথবা ৪০—৪৪.৯ অথবা ৪৯.৯ তা ব্যাধিগ্রস্ত স্থূলতা
- বিএমআই (BMI) যদি ≥ ৪৫ অথবা ৫০ হয় তবে তা অতিরিক্ত স্থূলতা
কম বি এম আই (BMI)র কারণে ককেশীয় অঞ্চলের তুলনায় এশীয় জনসমষ্টির মধ্যে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বেশ কিছু নেতিবাচক পরিণতি হয়েছিল, কিছু দেশ স্থূলতাকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করেছে; ২৫-এর বেশি[১৬] বি এম আই (BMI)হলেই জাপানীরা তাকে স্থূলতা বলে, চীনারা আবার ২৮—এর বেশি[১৭] হলে তা বলে।
স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব
শরীরের ওজন অত্যধিক মাত্রায় বৃদ্ধি পেলে বিভিন্ন ধরনের রোগের সম্ভাবনাও বেড়ে যায়, বিশেষত কার্ডিওভাসকুলার সংক্রান্ত রোগ, দ্বিতীয় স্তরের মধুমেহ বা ডায়াবেটিস মেলাইটাস টাইপ টু, নিদ্রাহীনতা, কয়েক ধরনের ক্যান্সার এবং অস্টিওআর্থারাইটিস জাতীয় রোগের সম্ভাবনা দেখা দেয়।[২] শেষ পর্যন্ত দেখা যায় স্থূলতা আখেরে মানুষের আয়ু কমিয়ে দেয়।[২]
মৃত্যুহার
স্থূলতা এমন একটা রোগ, যাকে বিশ্বজুড়ে মৃত্যুর অন্যতম কারণ হিসাবে খাড়া করা যেতে পারে, তবে একে ঠেকানোও যেতে পারে।[৮][১৯][২০] আমেরিকা ও ইউরোপের অনেকেই সমীক্ষা করে দেখেছেন যে, বডি মাস ইনডেক্স (BMI) যাঁদের ২২.৫—২৫kg/m2 এবং ধূমপায়ী নন তাঁদের মৃত্যুর ঝুঁকি অনেকটাই কম এবং যে ধূমপায়ীদের বডি মাস ইনডেক্স (BMI) ২৪—২৭ kg/m2[২১][১৮] তাঁদের ধীরে ধীরে এই ঝুঁকির মাত্রা বাড়ে।[২২][২৩] বিশেষ করে ষোলো বছরের বেশি বয়স, ঋতুচক্র হয়ে গেছে এমন মেয়েদের BMI ৩২-র বেশি হলে, তাঁদের মৃত্যুহার অন্যান্যদের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যায়।[২৪] শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই বছরে[২][২০] স্থূলতাজনিত রোগের শিকার হয়ে মারা যান ১১১,৯০৯থেকে ৩৬৫,০০০জন। আর ইউরোপের দেশগুলিতে এই সংখ্যা ১০ লক্ষের (৭.৭%) কাছাকাছি।[২৫][২৬] স্থূলতার কারণে মানুষের গড়ে ৬-৭ বছর জীবনকাল কমে আসে;[২][২৭] যাঁদের BMI ৩০—৩৫-র মধ্যে তাঁদের জীবনকাল দুই থেকে চার বছর কমতে পারে বলে মনে করা করা হয়,[২১] যাঁরা অত্যধিক স্থূল বা মোটা (BMI > ৪০) তাঁদের আয়ু প্রায় দশ বছর হ্রাস পেতে পারে।[২১]
অসুস্থতা
স্থূলতার কারণে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যহানির সম্ভাবনা থাকে। মূল সমস্যার পাশাপাশি আরো বেশ কিছু সমস্যা দেখা দেয়, যেমন মেটাবলিক সিনড্রোম[২] বা কার্ডিওভাসকুলার রোগ ও মধুমেহ বা ডায়াবেটিস রোগ, উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে বেশি কোলেস্টরল ও উচ্চ ট্রাইগ্লিসারাইড-র মাত্রা বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।[২৮]
স্থূলতা হয় সরাসরি জটিলতা সৃষ্টি করে, না হয় সুষম পুষ্টির অভাব ও বসে বসে কাজ করার প্রবণতায় পরোক্ষে জটিলতা তৈরি করে। স্থূলতা ও নির্দিষ্ট কয়েকটি পরিস্থিতির মধ্যে যোগসূত্রের অদলবদল ঘটতে পারে। এক্ষেত্রে দ্বিতীয় পর্যায়ের ডায়াবেটিস হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা থাকে। অতিরিক্ত মেদের কারণে পুরুষদের ক্ষেত্রে ৬৪% এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে ৭৭%-র ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।[২৯]
শরীরে মেদের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে নানা সমস্যা দেখা দেয়, একে দু’ভাগে ভাগ করা যেতে পারে, প্রথমত একে রোগের উৎস বলে মনে করা হয় যেমন, অস্টিওআর্থারাইটিস, নিদ্রাহীনতা, সামাজিক কলঙ্ক এবং দ্বিতীয়ত রক্তে স্নেহজাতীয় পদার্থের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে ডায়াবেটিস, ক্যান্সার, কার্ডিওভাসকুলার রোগ, মাদক-হীন চর্বিযুক্ত যকৃতের রোগ দেখা দিতে পারে।[২][৩০] শরীরে চর্বির পরিমাণ বেড়ে গেলে ইনসুলিন সেভাবে সাড়া দেয় না, পরবর্তীকালে ইনসুলিন শর্করাকে নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতাই হারিয়ে ফেলে। চর্বির মাত্রা আরো বৃদ্ধি পেলে প্রদাহ[৩১][৩২] হতে পারে এবং রক্ত জমাট বাঁধতে পারে।[৩০][৩৩]
চিকিৎসা ক্ষেত্র | শর্ত | চিকিৎসা ক্ষেত্র | শর্ত |
---|---|---|---|
কার্ডিওলজি | ত্বক-বিজ্ঞান | ||
এন্ডক্রিনলোজি এবং রিপ্রোডাকটিভ মেডিসিন | গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল | ||
স্নায়ুবিদ্যা | অন্কলোজি[৪৬] |
| |
মনোরোগবিদ্যা | রেস্পিরলোজি | ||
বাতরোগসংক্রান্ত বিজ্ঞান এবং অস্থির চিকিত্সা-সংক্রান্ত বিজ্ঞান | মূত্রব্যবস্থা-বিজ্ঞান এবং নেফ্রোলজি |
ওবেসিটি সারভাইভাল প্যারাডক্স (স্থূলতার মধ্যেও বেঁচে থাকার স্ববিরোধিতা)
সাধারণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে স্থূলতার স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নেতিবাচক পরিণতি সম্পর্কে যদিও যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ রয়েছে, কিন্তু কিছু জনগোষ্ঠীর বর্ধিত বি এম আই (BMI)-র প্রভাব স্বাস্থ্যের ওপর ভালোই হয়, এই লক্ষ্মণকে বলা হয় ওবেসিটি সারভাইভাল প্যারাডক্স।[[৫৫] ১৯৯৯সালে এই স্ববিরোধী বিষয়টি প্রথম দেখা যায় অতিওজন ও ভীষণ মোটা মানুষের শরীরে হেমোডায়ালিসিস[৫৫] করার সময় এবং পরবর্তীকালে যাদের হৃদযন্ত্র বিকল ও পেরিফেরাল আর্টারি ডিসিস (PAD) হয়েছে তাদের মধ্যেও এটি দেখা গেছে।[৫৬]
হৃদযন্ত্র বিকল হয়েছে এমন মানুষের যাঁদের বি এম আই (BMI) ৩০.০থেকে ৩৪.৯ –এর মধ্যে তাদের মধ্যে স্বাভাবিক ওজনের মানুষের তুলনায় মৃত্যুহার কম।[৫৭] বাস্তবে দেখা যায় যে মানুষের ওজন হ্রাস পাচ্ছে তারা ক্রমবর্ধমানভাবেই অসুস্থ হয়ে পড়ছে। অন্য ধরনের হৃদরোগেও একই বিষয় লক্ষ্য করা যায়। স্বাভাবিক ওজন অথচ হৃদযন্ত্রের ব্যাধি আছে যাদের তাদের তুলনায় ক্লাস I স্থূলতা রয়েছে ও হৃদরোগও রয়েছে এমন মানুষের মধ্যে হৃদযন্ত্রের আরো সমস্যা ঘটার হার মোটেই বেশি নয়। বেশি মাত্রার স্থূলতায় আরো অনেক ঘটনার ঝুঁকি যদিও বেড়ে যায়।[৫৮][৫৯] এমনকি কার্ডিয়াক বাইপাস সার্জারির পরও অতিওজন ও ভীষণ মোটা মানুষের মধ্যে মৃত্যুহার বাড়ার কোনো লক্ষণ দেখা যায় না।[৬০] একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে টিকে থাকার এই উন্নতিকে কার্ডিয়াক কোনো ঘটনার পর মোটা মানুষের চিকিৎসায় আরো আক্রমণাত্মক কোনো চিকিৎসা পদ্ধতি নিতে পারে বলে ব্যাখ্যা দেওয়া যেতে পারে।[৬১] আরেকটি সমীক্ষায় দেখা গেছে পেরিফেরাল আর্টারি ডিসিস (PAD) আছে এমন মানুষের মধ্যে যদি কেউ ক্রনিক অবস্ট্রাক্টিভ পালমোনারি ডিসিস (COPD) হিসেব করে তবে স্থূলতার কোনো সুবিধাই ধরা পড়বে না।[৫৬]
কারণসমূহ
ব্যক্তিগত পর্যায়, অত্যধিক মাত্রায় ক্যালোরি গ্রহণ এবং যথাযথ শারীরিক কসরতের অভাবের যৌথ সংমিশ্রণকেই অতি স্থূলতার ক্ষেত্রে কারণ বলে মনে করা হয়।[৬২] সীমিত কিছু ক্ষেত্রে জেনেটিকস, চিকিত্সা সংক্রান্ত অথবা মানসিক অসুস্থতাই এর প্রাথমিক কারণ।[৬৩] বিপরীত ক্ষেত্রে, সামাজিক পর্যায়ে অতি স্থূলতার হার বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে সহজলভ্য এবং রুচিকর খাবার,[৬৪] গাড়ির উপর নির্ভরতা বেড়ে যাওয়া এবং উত্পাদন যন্ত্রের ব্যবহার বেড়ে যাওয়াকে।[৬৫][৬৬]
সাম্প্রতিক সময়ে অতি স্থূলতা বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে ২০০৬ সালের এক পর্যালোচনায় আরও দশটি সম্ভাব্য কারণ উল্লেখ করা হয়। (১) অপর্যাপ্ত ঘুম, (২) এণ্ডোক্রাইনে ব্যাঘাত সৃষ্টি (পরিবেশগত দুষণ যার সঙ্গে লিপিড মেটাবলিজম যুক্ত), (৩) পরিবেশে তাপমাত্রার তারতম্য কমে যাওয়া, (৪) ধূমপান খিদে কমিয়ে দেয় বলে ধূমপানের হার কমানো, (৫) ওষুধ ব্যবহারের হার বেড়ে যাওয়া যার থেকে ওজন বাড়তে পারে (যেমন, প্রতিনিধিত্ব করে না এমন মনোরোগবিরোধী), (৬) প্রাচীন এবং বয়স্কদের মধ্যে সমানুপাতিক হারে ভারি হয়ে যাওয়ার প্রবণতা, (৭) বেশি বয়সে গর্ভবতী হওয়া (যার কারণে শিশুদের মধ্যেও অতি স্থূল হওয়ার লক্ষণ দেখা যেতে পারে), (৮) যে এপিজেনেটিক ঝুঁকি থাকে সেটাও বংশপরম্পরায় বাহিত হয়, (৯) উচ্চ বি এম আই-য়ের জন্য স্বাভাবিক নির্বাচন এবং (১০) বিশেষ শ্রেণীভুক্ত মিলনের ফলে অতি স্থূলতার ঝুঁকির কারণগুলি এক জায়গায় কেন্দ্রীভূত হতে পারে (এর ফলে যদিও একান্তভাবে অতি স্থূল ব্যক্তির সংখ্যা বেড়ে যাবে না, কিন্তু জনসংখ্যার গড় ওজন বাড়িয়ে দেবে)।[৬৭] অতি স্থূলতা যেভাবে বেড়ে চলেছে তাতে এই সমস্ত কারণগুলির প্রভাবের সপক্ষে যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। যদিও এই প্রমাণগুলি এখনো পুরোপুরি চুড়ান্ত নয়। এমনকি গবেষকরাও বলছেন, আগের পরিচ্ছেদে যে কারণগুলি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে সেগুলির তুলনায় এই কারণগুলি কম প্রভাবশালী।
সাধারণ খাদ্য
বিভিন্ন দেশ এবং বিভিন্ন অঞ্চলে মাথা পিছু খাদ্য গ্রহণ এবং খাদ্যবিধি সংক্রান্ত শক্তি সরবরাহ নির্দিষ্টভাবেই আলাদা হয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে উল্লেখযোগ্যভাবে এর পরিবর্তনও হয়েছে।[৬৮] ১৯৭০’র গোড়ার দিক থেকে শুরু করে ১৯৯০’র শেষ দিক পর্যন্ত একমাত্র পূর্ব ইউরোপ ছাড়া বিশ্বের সব প্রান্তেই প্রতি দিন মাথা পিছু মানুষের ( যে পরিমাণ খাদ্য কেনা হয়) গড় ক্যালোরি পাওয়ার পরিমাণ বেড়েছে। এটা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই সর্বাধিক পাওয়া যায়। ১৯৯৬ সালে এর পরিমাণ ছিলো ৩৬৫৪ক্যালোরি।[৬৮] ২০০৩ সালে আবার তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩,৭৫৪ক্যালোরিতে।[৬৮] ১৯৯০’এর শেষ দিকে ইউরোপীয়দের মাথাপিছু ক্যালোরি গ্রহণের পরিমাণ ছিলো ৩৩৯৪, এশিয়ার উন্নয়নশীল এলাকাগুলিতে মাথাপিছু ক্যালোরি গ্রহণ ছিলো ২৬৪৮ এবং উপ-সাহারার আফ্রিকার দেশগুলিতে মাথা পিছু ক্যালোরি গ্রহণের পরিমাণ ছিলো ২১৭৬।[৬৮][৬৯] পূর্ণ ক্যালোরি গ্রহণের সঙ্গে অতি স্থূলতার যোগ রয়েছে।[৭০]
ব্যাপক মাত্রায় পুষ্টির নির্দেশিক[৭১] পাওয়া গেলেও সেটা অতিরিক্ত খাওয়া এবং অত্যন্ত খারাপ খাদ্যাভ্যাসের পছন্দের বিষয়টিকে খুব কমই সম্বোধন করতে পেরেছে।[৭২] ১৯৭১ থেকে ২০০০সালের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অতি স্থূলতার হার ১৪.৫শতাংশ থেকে বেড়ে ৩০.৯শতাংশ হয়েছে।[৭৩] ঐ একই সময়ের মধ্যে, ক্যালোরি গ্রহণের গড় পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। মহিলাদের ক্ষেত্রে, প্রতি দিন গড় ক্যালোরি গ্রহণের পরিমাণ বেড়ে যায় ৩৩৫ (১৯৭১সালে ১৫৪২ এবং ২০০৪সালে তা বেড়ে হয় ১৮৭৭)। তবে পুরুষদের ক্ষেত্রে দৈনিক এই গড় বৃদ্ধির হার ছিলো ১৬৮ক্যালোরি (১৯৭১সালে ২৪৫০ এবং ২০০৪সালে ২৬১৮ক্যালোরি)। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অতিরিক্ত এই ক্যালোরি গ্রহণের প্রাথমিক উত্স ছিলো চর্বি জাতীয় খাদ্যের তুলনায় কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার বেশি খাওয়া।[৭৪] এই অতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেটের প্রাথমিক উত্স ছিলো মিষ্টিযুক্ত পানীয়। এখন আমেরিকার সাবালক যুব সমাজের মধ্যে এই মিষ্টিযুক্ত পানীয়ের দৈনিক ক্যালোরি গ্রহণের পরিমাণ প্রায় ২৫শতাংশ বেড়ে গেছে।[৭৫] এখন অতি স্থূলতা বাড়ার কারণ হিসেবে মিষ্টিযুক্ত পানীয় খাওয়াকেই মনে করা হচ্ছে।[৭৬][৭৭]
যতো বেশি পরিমাণে শক্তি-ঘন, বেশি পরিমানে ফাস্ট-ফুডের দিকে সমাজের নির্ভরতা ক্রমেই বাড়তে লাগলো, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফাস্ট-ফুড গ্রহণ এবং অতি স্থূলতার মধ্যে সম্পর্ক অত্যন্ত বেশি উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়ালা।[৭৮] মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফাস্ট-ফুড গ্রহণের পরিমাণ বেড়ে গেছে তিনগুণ এবং ১৯৭৭ থেকে ১৯৯৫ সালের মধ্যে এই সব খাবার থেকে ক্যালোরি গ্রহণের পরিমাণ বেড়ে যায় চারগুণ।[৭৯]
কৃষিনীতি এবং প্রযুক্তির কারণেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপে খাদ্যের দাম খুব কম। মার্কিন খামার বিলের মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভুট্টা, সোয়া, গম এবং চালের উপর যে ভরতুকি রয়েছে সে কারণে ফল এবং সবজির তুলনায় প্রক্রিয়াজাত খাদ্যের মূল উত্সের দাম অনেক কম।.[৮০]
অতি স্থূল (মোটা) ব্যক্তিরা সব সময়ই তাদের খাদ্য গ্রহণের মাত্রাকে স্বাভাবিক ওজনের ব্যক্তিদের তুলনায় কমিয়ে দেখায়।[৮১]একটি ক্যালোরিমিটার ঘরে[৮২] মানুষের ওপর পরীক্ষা চালিয়ে এবং সরাসরি পর্যবেক্ষণ করে এই তথ্যের সমর্থন পাওয়া গেছে।
বসে কাজের জীবনশৈলী
অতি স্থূলতার ক্ষেত্রে বসে কাজের জীবনশৈলী একটা বড় ভুমিকা পালন করে।[৮৩] গোটা বিশ্বই এখন কম শারীরিক পরিশ্রমের কাজের দিকে ঝুঁকছে।[৮৪][৮৫][৮৬] বিশ্বের জনসংখ্যার ৬০শতাংশই এখন অপর্যাপ্ত শারীরিক কসরত করতে পারে।[৮৫] এর প্রাথমিক কারণ হলো কোনো বস্তু এক স্থান থেকে অন্যস্থানে বহন করে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে যন্ত্রের সাহায্য নেওয়া এবং বাড়িতে শ্রমশক্তি বাঁচানো প্রযুক্তির অধিক প্রচলন।[৮৪][৮৫][৮৬] হাঁটা এবং শারীর শিক্ষা কমে যাওয়ার কারণে শিশুদের মধ্যেও দেখা যাচ্ছে শারীরিক কসরতের পরিমাণ কমে যাচ্ছে।[৮৭] সক্রিয় অবকাশের সময় শারীরিক ক্রিয়াকর্মের প্রতি ঝোঁক বিশ্বে কমে যাচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নির্দেশ করেছে যে সারা বিশ্বেই মানুষ এখন কম সক্রিয় আনন্দের দিকে ঝুঁকছে। আবার ফিনল্যাণ্ডের[৮৮] এক সমীক্ষায় পাওয়া গেছে, এই হার কিছুটা বেড়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে অবকাশকালীন শারীরিক ক্রিয়াকলাপ সেরকম উল্লেখযোগ্যভাবে কমেনি।[৮৯]
টেলিভিশন দেখার সময় এবং অতি স্থূলতার ঝুঁকির মধ্যে শিশু এবং বয়স্ক উভয়ের ক্ষেত্রেই একটা সম্পর্ক আছে।[৯০][৯১][৯২] ২০০৮সালের এক মেটা-বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ৭৩টির মধ্যে ৬৩টিতেই (৮৬%) দেখানো হয়েছে, শিশুদের মধ্যে অতি স্থূলতা যে বাড়ছে তার কারণ হলো শিশুদের মিডিয়ায় প্রদর্শণের হার বেড়ে যাওয়া এবং সমানুপাতিক হারে টেলিভিশন দেখারও সময় বেড়ে যাওয়া।[৯৩]
জীনতত্ত্ব বা বংশানুগতি সম্বন্ধীয়
অন্য অনেক চিকিত্সা সংক্রান্ত পরিস্থিতির মতোই, অতি স্থূলতা হলো বংশানুগতি এবং পরিবেশের কারণগুলির মধ্যে পারস্পরিক ক্রিয়ার ফলাফল। বিভিন্ন জিনে পলিমোরফিজমস নিয়ন্ত্রণ করে ক্ষুধা এবং বিপাকীয় ক্রিয়াকে। যার ফলে যথেষ্ট পরিমাণ ক্যালোরির উপস্থিতিতে অতি স্থূলতামুখী করে তোলে একে। ২০০৬সালের হিসেব অনুযায়ী, ৪১টি এমন ক্ষেত্র পাওয়া গেছে যেখানে অতি স্থূলতার সঙ্গে অনুকূল পরিবেশের উপস্থিতির যোগাযোগ পাওয়া গেছে।[270] কত সংখ্যক জনসংখ্যার উপর পরীক্ষা করা হচ্ছে তার ভিত্তিতে বংশানুগতির কারণেই অতি স্থূলতার শতকরা হার বিভিন্ন রকম। এই হার হলো ৬% থেকে ৮৫%।[272] বিভিন্ন রোগের লক্ষণে অতি স্থূলতা হলো একটা বিরাট কারণ। যেমন প্রাডের-উইলি রোগলক্ষণ, বারডেল-বিয়েডল্ রোগলক্ষণ, কোহেন রোগলক্ষণ এবং এম ও এম ও(MOMO) রোগলক্ষণ। (‘রোগলক্ষণহীন অতি স্থূলতা’ এই শব্দ বন্ধটি কখনো ব্যবহার করা হয় এই সমস্ত অবস্থাগুলিকে বাদ দিয়ে।) [274] যে সব মানুষের মধ্যে খুব তাড়াতাড়ি মারাত্মক অতি স্থূলতা লক্ষণ দেখা যায় (10বছর বয়সের আগে এবং স্বাভাবিকের তুলনায় বডি মাস ইণ্ডেক্স মাপকাঠির তিন স্তর নিচে থাকাকে এক্ষেত্রে সজ্ঞায়িত করা হয়েছে), 7% ক্ষেত্রেই মনে করা হয় ডি এন এ’র রূপান্তরই এর একমাত্র কারণ।[276] যে সমস্ত সমীক্ষায় নির্দিষ্ট জিনের তুলনায় বংশপরম্পরার উপর বেশি নজর দেওয়া হয়েছে সেখানে পাওয়া গেছে যে ৮০%ক্ষেত্রেই দেখা গেছে দুজন অতি স্থূল মা-বাবার সন্তানরাও অতি স্থূলই হয়। উলটোদিকে ১০শতাংশেরও কম ক্ষেত্রে এও দেখা গেছে দুজন স্বাভাবিক ওজনের মা-বাবার সন্তান অতি স্থূল হয়।[278] থ্রিফ্টি জিন হাইপোথিসিস সিদ্ধ বলে স্বীকৃতি দিয়েছে সেই ধারণাকে যাতে বলা হয় নির্দিষ্ট জাতি গোষ্ঠী সমগোত্রীয় আবহাওয়ায় বেশি স্থূলতা প্রবণ। বিরল অতিপ্রাচুর্যের সময় শক্তি সঞ্চয় করার মতো তাদের ক্ষমতার ফলে চর্বি যখন খাদ্যের যোগান ওঠানামা করে তখন এই গুণ সুবিধার হয় এবং দুর্ভিক্ষের সময় ব্যক্তিগতভাবে সেই চর্বি থেকে তাকে বাঁচিয়ে রাখতে সাহায্য করে। চর্বি মজুত করার এই প্রবনতা যদিও সমাজে খাদ্য সরবরাহ সঠিক রাখতে সাহায্য করে। [280] এটা একটা অনুমিত কারণ যে পিমা ইণ্ডিয়ান যারা মরুভূমি বাস্তুতন্ত্রের উদ্ভাবন করেছে যখন তারা পশ্চিমী দুনিয়ায় এলো তাদের মধ্যে স্থূলতা অনেক বেশি দেখা যেতে শুরু করলো। চিকিত্সা সংক্রান্ত এবং মানসিক অসুস্থতা নির্দিষ্ট কয়েকটি শারীরিক এবং মানসিক অসুস্থতা এবং ওষুধপ্রস্তুতকারী বস্তু যা দিয়ে তাদের চিকিত্সা করা হয়, এগুলির ফলে এদের মধ্যে অতি স্থূলতার ঝুঁকি বেড়ে যায়। চিকিত্সা সংক্রান্ত যে অসুস্থতার জন্য অতি স্থূলতার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায় তারমধ্যে রয়েছে কয়েকটি অস্বাভাবিক লক্ষণ (উপরে তালিকাভুক্ত) এবং একইসঙ্গে জন্মগত এবং অর্জিত অবস্থা: হাইপোথাইরয়েডিজম, কুশিং-এর লক্ষণ, বৃদ্ধি সংক্রান্ত হরমোনের অভাব[284] এবং খাওয়ার গণ্ডগোল: প্রচুর মদ্যপানের ব্যাধি এবং রাতে খাওয়ার লক্ষণ।[285] যদিও অতি স্থূলতাকে মানসিক ব্যাধি বলে মনে করা হয় না এবং সেই কারণেই মানসিক অসুস্থতা হিসেবে ডি এস এম-আই ভি আর’এর তালিকাভুক্ত নয়। [287] নির্দিষ্ট কিছু ওষুধের কারণে ওজন বাড়তে পারে অথবা শারীরিক গঠনে পরিবর্তন আসতে পারে; এর মধ্যে রয়েছে ইনস্যুলিন, সালফোনাইল্যুরিয়াস, থিয়াজোলিডাইনেডিয়োনেস, মানসিকবিরোধিতার প্রতিনিধিত্ব করে না এমন, অবসাদনিরোধক স্টেরয়েড, নির্দিষ্ট কয়েকটি শারীরিক আলোড়নবিরোধী (ফেনাইটয়েন এবং ভালপ্রোয়েট), পাইজোটিফেন এবং হরমোনের একপ্রকার জন্মনিরোধক বড়ির কারণে এই পরিবর্তন আসতে পারে। [288] সামাজিক নির্ধারণকারী [289] অতি স্থূলতাকে বুঝতে যদিও বংশগত প্রভাবকে বোঝাও খুবই গুরত্বপূর্ণ। কিন্তু তারা নির্দিষ্ট কিছু দেশে বা বিশ্বে এর নাটকীয় যে বৃদ্ধি দেখা যাচ্ছে তাকে বিশ্লেষণ করতে পারেনি। [291] যদিও এটা স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে যে ব্যক্তিগত ক্ষেত্রে অত্যধিক মাত্রায় ক্যালোরি খরচের তুলনায় ক্যালোরি গ্রহণের কারণে অতি স্থূলতা দেখা দেয়। সামাজিক ক্ষেত্রে এই দুই উপাদানের পরিবর্তনের কারণ নিয়ে যথেষ্ট বিতর্ক আছে। এর কারণ সম্পর্কে নানা ধরণের তত্ত্ব আছে কিন্তু বহু মানুষের বিশ্বাস এর পিছনে রয়েছে বিভিন্ন কারণের সমাহার। গোটা বিশ্বেই সামাজিক শ্রেণী এবং বি এম আইয়ের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্কের পার্থক্য আছে। ১৯৮৯সালে এক পর্যালোচনায় দেখা গেছে যে উন্নত দেশগুলিতে উচ্চ সামাজিক শ্রেণীর মহিলাদের মধ্যে অতি স্থূলতা কম দেখা যায়। বিভিন্ন সামাজিক শ্রেণীর পুরুষের মধ্যে কোনো উল্লেখযোগ্য পার্থক্য দেখা যায় না। উন্নয়নশীল বিশ্বে উচ্চ সামাজিক শ্রেণীর মহিলা, পুরুষ, শিশুদের অতি স্থূলতার হার অনেক বেশি দেখা যায়।[293] ২০০৭ সালে এই পর্যালোচনার একটি সংশোধিত পর্যালোচনায় একই সম্পর্ক পাওয়া গিয়েছিলো, কিন্তু সেটা অনেক দুর্বল ছিলো। এই পারস্পরিক সম্পর্কের শক্তি কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে বিশ্বায়নের প্রভাবকেই মনে করা হচ্ছে।[295] উন্নত দেশগুলির মধ্যে, বয়স্কদের অতি স্থূলতার মাত্রা এবং কিশোরদের মধ্যে অতি ওজনের হারের মধ্যে যে সম্পর্ক আছে তার সঙ্গে আয়ের অসঙ্গতি জড়িত। একই ধরণের সম্পর্ক দেখা গেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজ্যগুলিতে: এমনকি উচ্চ সামাজিক শ্রেণীভুক্ত, অনেক সাবালকরাও আরও অনেক অসম রাজ্যগুলির মতো অতি স্থূল।[297] শারীরিক ভর সূচক বা বি এম আই এবং সামাজিক শ্রেণীর মধ্যে সম্পর্ক থাকার বিষয়টি অনেক রকমভাবে ব্যাখ্যা করে দেখানো হয়েছে। এটা মনে করা হোত, উন্নত দেশগুলিতে সম্পদশালীরা আরও অনেক বেশি পুষ্টিকর খাদ্য কেনার ব্যাপারে সক্ষম। কিন্তু ওজন কম রাখার ব্যাপারে তাদের উপর অনেক বেশি সামাজিক চাপ থাকে। একইসঙ্গে শারীরিকভাবে সুস্থ থাকার বিরাট প্রত্যাশার পাশাপাশি তাদের সামনে অনেক সুযোগও থাকে। অনুন্নত দেশগুলিতে একটি বিরাট আকৃতির শরীরের মাপে খাবার কেনার ক্ষমতা, শারীরিক পরিশ্রমসহ উচ্চ শক্তির ব্যয়ের পরিমাণ এবং সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ পর্যবেক্ষণের ধরনে অংশগ্রহণ করেছে। [298] কারোর জীবনে শরীরের ভরের দিকে মানুষের মনোভাবও অতি স্থূলতার ব্যাপারে ভূমিকা পালন করে। বন্ধু, ভাই-বোন এবং স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শরীরের ভর সূচক পরিবর্তন হওয়ার পারস্পরিক সম্পর্ক পাওয়া গেছে।[300] চাপ এবং সম্ভাব্য সামাজিক পদমর্যাদা অতি স্থূলতার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।[301][303][305] কোনো ব্যক্তির ওজনের উপর ধূমপানের উল্লেখযোগ্য প্রভাব রয়েছে। যারা ধূমপান ছেড়ে দেয় ১০বছর সময়ের ব্যবধানে তাদের মধ্যে পুরুষদের গড়ে ৪.৪কিলোগ্রাম (৯.৭পাউণ্ড) এবং মেয়েদের ক্ষেত্রে 5কিলোগ্রাম (১১পাউণ্ড) ওজন বাড়ে। [307] যদিও, ধূমপানের হার পরিবর্তনের সঙ্গে অতি স্থূলতার সম্পূর্ণ হারের উপর কমই প্রভাব ফেলেছে।[309] মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে লক্ষ্য করা গেছে একজন ব্যক্তির যতোগুলি সন্তান থাকে তারসঙ্গে ঐ ব্যক্তির অতি স্থূলতার ঝুঁকি বাড়ার সম্পর্ক রয়েছে। প্রতি সন্তান জন্ম পিছু একজন মহিলার ক্ষেত্রে এই ঝুঁকি বেড়ে যায় ৭%, যেখানে একজন পুরুষের ক্ষেত্রে সন্তান প্রতি এই ঝুঁকি বেড়ে যায় ৪%। [311] এটা আংশিকভাবে সত্য যে, পশ্চিমী বাবা-মায়ের ক্ষেত্রে নির্ভরশীল সন্তান থাকার অর্থ কম শারীরিক পরিশ্রম করা। [313] উন্নয়নশীল দেশে শহরে পরিণত হওয়াও অতি স্থূলতার হার বেড়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে একটা ভূমিকা পালন করছে। চীনে সামগ্রিকভাবে অতি স্থূলতার হার ৫%—এরও কম, আবার কিছু শহরে অতি স্থূলতার হার ২০শতাংশেরও বেশি।[315] উন্নয়নশীল দেশগুলিতে অতি স্থূলতার হার বৃদ্ধির কারণ হিসেবে গোড়ার দিকের জীবনে অপুষ্টির একটা বড় ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। [317] এণ্ডোক্রাইন অপুষ্টির সময়ে যে পরিবর্তন ঘটে তার থেকে সম্ভবত ক্যালোরি পাওয়া সহজ হয়ে গেলে তা চর্বি জমাকে বাড়িয়ে দেয়। [318] সংক্রামক প্রতিনিধিসমূহ [319] খাদ্য রূপান্তরের প্রক্রিয়ায় সংক্রামক প্রতিনিধির উপস্থিতি সংক্রান্ত সমীক্ষা এখনো তার প্রাথমিক স্তরেই রয়ে গেছে। রোগা এবং অতি স্থূল ব্যক্তির মধ্যে যে পার্থক্য থাকে তা অন্ত্র এলাকাতেই লক্ষ্য করা গেছে। অতি স্থূল এবং রোগা ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে অন্ত্র এলাকায় তার হজমের ক্ষমতাকে যে প্রভাবিত করে তার লক্ষণ নির্দেশ করা হয়েছে। হজমের ক্ষমতার এই স্পষ্ট পরিবর্তনের ফলে এটা মনে করা হচ্ছে যে অতি স্থূল ব্যক্তি অনেক বেশি শক্তি সঞ্চয় করতে পারে। এই পার্থক্যগুলি সরাসরি এই কারণেই নাকি অতি স্থূলতার ফলাফল তা অবশ্যই সুনিশ্চিত করতে হবে ।[321] মানুষ এবং কয়েকটি বিভিন্ন ধরণের পশু প্রজাতির মধ্যে সংক্রামক রোগ এবং অতি স্থূলতার মধ্যে একটা যোগসূত্র পাওয়া গেছে। তবে অতি স্থূলতার হার বৃদ্ধির ক্ষেত্রে কতোটা পরিমাণে এই যোগসূত্র কাজ করেছে তা এখনো সুনিশ্চিত করে বলা যায়নি।[323]
প্যাথোফিজিওলজি
স্থূলতা মোকাবিলার সম্ভাব্য বেস কিছু প্যাথোফিজিওলজিক্যাল প্রণালী সারসংক্ষেপ করেছে ফ্লায়ার। [325] ১৯৯৪-এ লেপটিন আবিষ্কারের আগে পর্যন্ত গবেষণার ক্ষেত্রে একেবারে কিছুই হয়নি। এই আবিষ্কারের পর থেকে আরো অনেক হরমোন সংক্রান্ত প্রণালী নিয়ে বিচার বিশ্লেষণ হয়েছে যাতে খিদে ও খাদ্য গ্রহণের নিয়মবিধি, অ্যাডিপোজ কোষের মজুতের ধরণ ও ইনস্যুলিন রেজিস্ট্যান্স বিকাশের বিষয়গুলিও রয়েছে। লেপটিন আবিষ্কারের পর থেকে ঘ্রেলিন, ইনসুলিন, ওরেক্সিন, পি ওয়াই ওয়াই (PYY) ৩—৩৬, কলেসিসটোকিনিন, অ্যাডিপোনেকটিন ছাড়াও আরো অনেক মেডিয়েটার নিয়ে গবেষণা হচ্ছে। অ্যাডিপোকিনস মেডিয়েটারটি তৈরি করে অ্যাডিপোস কলা; তার কার্যকারিতা স্থূলতা সংক্রান্ত বেশ কিছু রোগে রকমফের ঘটাতে পারে বলে মনে করা হয়। লেপটিন ও ঘ্রেলিনকে খিদের ওপর তাদের প্রভাবের বিচারে একে অপরের পরিপূরক বলে মনে করা হয়। কারণ ঘ্রেলিন তৈরি হয় স্টমাক মডিউলেটিং শর্ট টার্ম অ্যাপেটাইটিভ কন্ট্রোলের মাধ্যমে (অর্থাৎ পাকস্থলী খালি থাকলে খেতে হবে এবং যখন তা ভর্তি থাকবে খাওয়া বন্ধ থাকবে)। আর শরীরে চর্বির মজুত সঙ্কেত দিতে লেপটিনকে তৈরি করে অ্যাডিপোজ কোষ এবং এই লেপটিন দীর্ঘসময়ের জন্য খিদে নিয়ন্ত্রণে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করে (অর্থাৎ যখন চর্বির মজুত কম তখন বেশি খাও এবং যখন মজুত বেশি কম খাও)। যদিও ব্যাক্তিগতভাবে যেসব স্থূল মানুষের মধ্যে লেপটিনের ঘাটতি আছে তাদের সামান্য অংশের ওপর লেপটিনের ব্যবস্থাপনা বেশ কার্যকরী হতে পারে, বেশিরভাগ মোটা মানুষেকেই লেপটিন প্রতিরোধী বলে মনে করা হয় এবং এদের মধ্যে লেপটিনের উচ্চ স্তর লক্ষ্য করা যায়। [327] এই প্রতিরোধ ক্ষমতাকে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে কেন লেপটিন ব্যবস্থাপনা মোটা মানুষের খিদে কমিয়ে দিতে কার্যকরী ভূমিকা নিতে পারে না তার ব্যাখ্যায়। [328]
লেপটিন ও ঘ্রেলিন যেহেতু সীমান্তবর্তী অবস্থায় তৈরি হয় তাই তারা কেন্দ্রীয় স্নায়ু ব্যবস্থায় তাদের কাজ চালিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে খিদে নিয়ন্ত্রণ করে। বিশেষ করে, এরা এবং খিদে সংক্রান্ত অন্যান্য হরমোনগুলি মস্তিস্কের কেন্দ্রে হাইপোথ্যালামাস নামে অঞ্চলে কাজ করে সেকান থেকেই খাবার খাওয়া ও শক্তি খরচের বিষয়টি নিয়ন্ত্রিত হয়। হাইপোথ্যালামাসের মধ্যে বেশ কিছু প্রদক্ষিণ পথ রয়েছে খিদেকে সংহত করতে জাদের ভূমিকা রয়েছে, এগুলির মধ্যে সবচেয়ে ভালো বলে বিবেচনা করা হয় মেলানোকর্টিন পাথওয়ে।[329] আরকুয়েট নিউক্লিয়াস নামে হাইপোথ্যালামাসের একটি অঞ্চল থেকে প্রদক্ষিণ পথ শুরু হয় যার শেষাংশ থাকে ল্যাটারাল হাইপোথালামাস (LH) এবং ভেন্ট্রোমেডিয়াল হাইপোথ্যালামাস (VMH) -এ, এরা যথাক্রমে হলো মস্তিসকের খাবার খাওয়া ও পূর্ণ পরিতৃপ্তির কেন্দ্র।[331] আরকুয়েট নিউক্লিয়াস দুটি ভিন্ন ধরনের গোষ্ঠীরনিউরোন দিয়ে তৈরি।[332] প্রথম গোষ্ঠীটি একই সঙ্গে নিউরোপেপটাইড ওয়াই(NPY) ও অ্যাগুইটি-রিলেটেড পেপটাইড (AgRP) এবং উদ্দীপনা গ্রহণ হয় LH ও VMH -এর তালিকাসহ। দ্বিতীয় গোষ্ঠোটি হলো প্রো-ওপিওমেলানোকর্টিন (POMC) ও কোকেইন- ও অ্যাম্ফিটামিন-নিয়ন্ত্রিত ট্রান্সস্ক্রিপ্ট (CART) এবং উদ্দীপনা গ্রহণ হয় LH ও VMH -এর সংযমসহ। সর্বশেষে, NPY/AgRP নিউরোন খাবার খেতে উদ্কদীপনা যোগায় ও পূর্ণ পরিতৃপ্তির তালিকা বানায়, যেখানে POMC/CART নিউরোন পূর্ণ পরিতৃপ্তিকে উদ্দীপিত করে দেয় ও খাবার খেতে সংযত করে। লেপটিনের মাধ্যেমেই এই উভয় গোষ্টীর আরকুয়েট নিউক্লিবাস নিউরোন নিয়ন্ত্রিত হয়। লেপটিন যেমন NPY/AgRP গোষ্ঠীর সংযম করে আবার POMC/CART গোষ্ঠীকে উদ্দীপিত করে ফেলে। লেপটিন সঙ্কেতের এই ঘাটতিকে হয় লেপটিন ঘাটতি বা লেপটিন প্রতিরোধের মাধ্যমে বাড়তি খাওয়ার দিকে ঠেলে দিতে পারে, এর কিছু আবার জিনগত এবং এভাবেই স্তূলতার প্রকারভেদ পায়।[333]
পরিচালন
অতি স্থূলতা রোগের প্রধান চিকিত্সার মধ্যে রয়েছে খাদ্যাভ্যাস এবং শারীরিক কসরত। [334] খাদ্যাভ্যাস কর্মসূচীর ফলে অল্প সময়ের মধ্যে ওজন হারানো সম্ভব,[336] কিন্তু এই ওজনকে ওইভাবে কমিয়ে রাখা সমস্যার হতে পারে এবং মাঝে মাঝেই শারীরিক কসরতের প্রয়োজন পড়তে পারে। একইসঙ্গে কম ক্যালোরিযুক্ত খাবার ঐ ব্যক্তির জীবনশৈলীর চিরদিনের অংশ হয়ে যেতে পারে। [340][338] ওজন কমিয়ে তা দীর্ঘ সময়ের জন্য বজায় রাখার ক্ষেত্রে সাফল্যের হার খুবই কম. এই সাফল্যের হার হলো ২—২০শতাংশ। [342] যদিও আরও অনেক নির্দিষ্ট কাঠামোর প্রেক্ষাপটে ৬৭%মানুষ রয়েছেন যারা এক য়ছর ধরে তাদের শারীরিক ওজন ১০%রও বেশি কমিয়ে যেতে অথবা ওজন কমানোর ধারা বজায় রাখতে পারছেন।[344] 3কেজি (৬.৬ পাউণ্ড) বা তার বেশি ওজন অথবা সম্পূর্ণ শারীরিক ভরের ৩% কমানোর গড় বজায় রাখা যেতে পারে পাঁচ বছর পর্যন্ত।[346] ওজন কমানোয় সঙ্গে নির্দিষ্ট জনসংখ্যার মৃত্যুর হারে এক উল্লেখযোগ্য সুফল কয়েকটি সমীক্ষায় লক্ষ্য করা গেছে। অতি স্থূল মহিলা যাঁরা ওজন সংক্রান্ত অসুখে আক্রান্ত তাঁদের নিয়ে এক প্রত্যাশিত সমীক্ষায় দেখা গেছে, যে কোনো মাত্রায় আন্তর্জাতিক ওজন কমানোর সঙ্গে মৃত্যুহার ২০% কমার সম্পর্ক রয়েছে। স্থূলতা সংক্রান্ত অসুখ ছাড়া অতি স্থূল মহিলাদের ক্ষেত্রে ৯কেজি (২০পাউণ্ড) বা তার বেশি ওজন কমানোর সঙ্গে মৃত্যুহার ২৫% কমে যাওয়ার সম্পর্ক রয়েছে। [348] সাম্প্রতিক সমীক্ষায় দেখা গেছে, নির্দিষ্ট কিছু উপগোষ্ঠীর মধ্যে যাদের টাইপ ২ ডায়াবেটিস রয়েছে এবং তারা মহিলা, তাদের ক্ষেত্রে সবধরণের মৃত্যুহারে দীর্ঘমেয়াদী সুফল পাওয়া গেছে। অথচ পুরুষদের ক্ষেত্রে ওজন কমানোর সুফলে খুব একটা উন্নতি হয়নি। [350] পরবর্তী এক সমীক্ষায় পাওয়া গেছে, নির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে যাঁরা ওজন কমিয়েছেন তাঁদের মধ্যে যাঁরা মারাত্মক স্থূল ছিলেন সেই সব মানুষের ক্ষেত্রে মৃত্যুহার কমার এক সুফল লক্ষ্য করা গেছে।[352] স্থূলতার জন্য খুবই কার্যকরী চিকিত্সা হলো বারিয়াট্রিক অস্ত্রপোচার। যদিও এর খরচ এবং জটিলতার ঝুঁকির কারণে গবেষকরা কার্যকরী কিন্তু কম আক্রমণাত্মক অন্য উপায় খুঁজে দেখছেন। ডায়াটিং বা খাদ্যতালিকায় সীমাবদ্ধকরা [353] ওজন কমানোর জন্য যে সাধারণ খাদ্য তুলে ধরা হয় তা সাধারণত চারটি ভাগে বিভক্ত: কম চর্বি, কম কার্বোহাইড্রেট, কম ক্যালোরি এবং খুবই কম ক্যালোরি।[354] এলোমেলোভাবে নির্বাচিত ছ’টি নিয়ন্ত্রিত পরীক্ষা নীরিক্ষার মেটা-বিশ্লেষণে তিনটি মূল ধরণের খাদ্যের (কম ক্যালোরি, কম কার্বোহাইড্রেট, এবং কম চর্বি) মধ্যে কোনো পার্থক্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। [355] সব সমীক্ষায় দেখা গেছে, এতে মাত্র ২-৪কিলোগ্রাম (৪.৪-৮.৮পাউণ্ড) ওজন কমে। বৃহত্পুষ্টির উপর জোর না দিলেও দুবছরে এই তিনটি পদ্ধতির ফলে একইরকম ওজন কমে। [357] অত্যন্ত কম ক্যালোরির খাদ্য থেকে দৈনিক ২০০—৮০০ক্যালোরি পাওয়া যায়। চর্বি এবং কার্বোহাইড্রেট এই দুই থেকেই ক্যালোরি গ্রহণকে নিয়ন্ত্রণ করে প্রোটিন গ্রহণকে বজায় রাখে। তারা শরীরকে অনাহারে রেখে দেয় এবং গড়ে প্রত্যেক সপ্তাহে গড়ে ১.৫—২.৫কিলোগ্রাম (৩.৩—৫.৫পাউণ্ড) ওজন কমায়। সাধারণভাবে ব্যবহারের জন্য এই খাদ্য সুপারিশ করা হয় না। কারণ এর সঙ্গে অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া জড়িয়ে আছে। যেমন সরু মাংসপেশী হারানো, গাউটের ঝুঁকি বেড়ে যাওয়া এবং ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য কমে যাওয়া। যে সমস্ত মানুষ এই ধরণের খাদ্যভ্যাস করছেন তাদের অবশ্যই খুব ঘনিষ্ঠভাবে চিকিত্সকের তত্ত্বাবধানে থাকা উচিত যাতে যে কোনো রকম জটিলতা কমানো যায়।[358] শারীরিক কসরত বা ব্যায়াম [359] চর্বি এবং গ্লাইকোজেন থেকে পাওয়া শক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে গ্রহণ করে পেশী। পায়ের পেশী বড় হওয়ার কারণেই হাঁটা, দৌড়োনো এবং সাইকেল চালানো হলো শরীরের ওজন কমানোর ক্ষেরে সবচেয়ে কার্যকরী উপায়। [361] শারীরিক কসরত বৃহত্পুষ্টির ভারসাম্য বজায় রাখার ক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করে। দ্রুত হাঁটার মতো মাঝারি মাপের শারীরিক কসরতের সময় চর্বিকে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করার একটা ঝোঁক তৈরি হয়েছে। [363][365] স্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন সুপারিশ করেছে, সপ্তাহে অন্তত ৫দিন ৩০মিনিট সময় ধরে মাঝারি মাপের শারীরিক কসরত করা উচিত। [366] কোক্রেন কোলাবরেশনের মাধ্যমে এলোপাতাড়িভাবে ৪৩জনের উপর নিয়ন্ত্রিত সমীক্ষা চালিয়ে মেটা-বিশ্লেষণে দেখা গেছে যে শুধুমাত্র শারীরিক কসরত করলে ওজন কম কমে। এর সঙ্গে খাদ্যাভ্যাসের বিষয়টি যুক্ত করলে যদিও, শুধুমাত্র খাওয়া কমিয়েই ১কিলোগ্রাম পর্যন্ত ওজন কমানো যায়। বড় ধরণের শারীরিক কসরতে করে দেখা গেছে, ১.৫কিলোগ্রাম (৩.৩পাউণ্ড) ওজন কমেছে। [368] তাসত্ত্বেও সাধারণ জনসংখ্যার মধ্যে যেভাবে শারীরিক কসরত করা হয় তাতে মাঝারি মাপের প্রভাব পড়েছে। খাদ্য গ্রহণে নিয়ন্ত্রণ না রেখেই ২০ সপ্তাহের প্রাথমিক সামরিক প্রশিক্ষণে দেখা যায় নবনিযুক্ত স্থূলকায় ব্যক্তির কমপক্ষে ১২.৫ কিলোগ্রাম (২৭.৬ পাউণ্ড) ওজন হ্রাস পেয়েছে।[370] আপাত দৃষ্টিতে ওজন কমাতে হলে অতি শারীরিক কসরত অত্যন্ত জরুরী বলেই মনে করা হয়। [372] যে যন্ত্রের সাহায্যে হাঁটা পথ পরিমাপ ও কত পা হাঁটলো তা জানা যায় তা অর্থাত্ পিডোমিটার ব্যবহার করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি অনেক বেশি উদ্বুদ্ধ হতে পারবেন। কেউ যদি গড়ে ১৮ সপ্তাহ শারীরিক কসরত করে এবং কসরতের মাত্রাকে বাড়িয়ে ২৭% করতে পারে তাহলে BMI নিশ্চিতভাবেই ০.৩৮ অংশ কমাতে সমর্থ হবেন।[374] সিঁড়ি ভাঙায় উত্সাহিত করার পাশাপাশি সমবেত প্রচার চলতে থাকলে জনগণের মধ্যে কায়িক শ্রম করার মানসিকতা বৃদ্ধি পায়। [376] উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, কলম্বিয়ার বোগোটা শহরে প্রতি রবিবার ও ছুটির দিন শহরবাসী যাতে শারীরিক কসরত করতে পারে তারজন্য ১১৩কিলোমিটার (৭০ মাইল) দীর্ঘ রাস্তা কার্যত বন্ধ করে দেওয়া হয়। দীর্ঘস্থায়ী ও কঠিন রোগ, স্থূলতাকে মোকাবিলা করতেই পথচারীদের জন্য ঐ রাস্তা উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।[378] ওজন কমানোর কর্মসূচী ওজন কমানোর কর্মসূচী অনেক সময়ই জীবনশৈলীর পরিবর্তন এবং খাদ্যাভ্যাসের সংশোধনকেও তুলে ধরে। এরসঙ্গে অল্প পরিমাণে খাওয়া, নির্দিষ্ট কিছু ধরণের খাবার খাওয়া কমিয়ে দেওয়া এবং সচেতনভাবেই আরও বেশি করে শারীরিক কসরত করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া যুক্ত থাকতে পারে। ওজন কমানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন এমন একদল মানুষের সঙ্গেও অন্য মানুষের যোগাযোগ তৈরি সম্ভব করে তোলা যায় এই কর্মসূচীর মাধ্যমে। এই কর্মসূচীতে যোগদানকারীদের মধ্যে পারস্পরিক প্রেরণা এবং উত্সাহজনক সম্পর্ক গড়ে উঠবে এই আশা।[380] বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় কর্মসূচী প্রচলিত আছে। এর মধ্যে রয়েছে ওয়েট ওয়াচার্স, ওভারইটার্স অ্যানোনিমাস এবং জেনি ক্রেইগ। কেউ দুবছরের বেশি সময় ধরে নিজে থেকেই নির্দিষ্ট একটি খাদ্য তালিকায় সীমাবদ্ধ রাখলে এইগুলি মাঝারি মাপের ওজন কমাতে (২.৯কে জি, ৬.৪পাউণ্ড) সাহায্য করে বলে মনে করা হয়।[382] ইন্টারনেট ভিত্তিক কর্মসূচী অকার্যকর বলেই মনে করা হয়। [384] চীনের সরকার বেশ কিছু সংখ্যক ‘চর্বি খামার’এর প্রচলন করেছে, যেখানে অতি স্থূল শিশুরা বাধ্যতামূলক কিছু শারীরিক কসরত করতে যায়। তারা একটি আইনও পাস করেছে। এই আইনে বলা হয়েছে, প্রতিদিন স্কুলে ছাত্রছাত্রীদের অন্তত এক ঘন্টা শারীরিক কসরত বা খেলাধুলা করতে হবে (চীনে অতি স্থূলতা দেখুন)।[388][386] ওষুধের ব্যবস্থা [389]
মাত্র দুধরণের অতি স্থূলতা-রোধী ওষুধ দীর্ঘদিন ব্যবহারের জন্য এখন এফ ডি এ বা FDA অনুমোদন রয়েছে।[391] তার একটি হলো ওরলিস্ট্যাট (জেনিক্যাল), যেটা অগ্ন্যাশয়ের লিপাসকে বাধা দিয়ে অন্ত্রের চর্বি শুষে নেয়। অপরটি হলো সিবুট্রামাইন (মেরিডিয়া)। এটা মস্তিষ্কে কাজ করে। এটা নোরেপাইনফ্রাইন, সেরেটোনিন এবং ডোপামাইন (অবসাদ-বিরোধীর সঙ্গে অনেকটা সাদৃশ্য আছে)’এর স্নায়বিকপরিবহনের নিষ্ক্রিয়তায় বাধা দেয়। ফলে খাবারের ইচ্ছা কমে যায়। রিমোনাব্যান্ট (অ্যাকমপ্লিয়া) নামে একটি তৃতীয় ওষুধ এণ্ডোক্যানাবাইনয়েড সিস্টেমকে একটি নির্দিষ্ট বাধা দানের মধ্যে দিয়ে কাজ করে। এই ওষুধ তৈরি করা হয়েছে সেই জ্ঞান থেকে যেখানে যাঁরা গাজা খান তাঁদের মধ্যে অনেক সময় ক্ষুধার অনুভূতি কাজ করে যাকে মাঝে মাঝেই উল্লেখ করা হয় ‘চিবোনো’ হিসেবে। অতি স্থূলতার চিকিত্সায় এই পদ্ধতি ইউরোপে অনুমতি পেলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডায় নিরাপত্তাজনিত কারণে অনুমতি পায়নি। [393][395] যদিও ২০০৮সালের অক্টোবর মাসে ইওরোপীয়ান মেডিসিন এজেন্সি সুপারিশ করেছে ইউরোপে রিমোনাব্যান্টের বিক্রি বন্ধ করে দেওয়ার জন্য। কারণ মনে করা হচ্ছে এর থেকে যতোটা না সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে তার থেকে ঝুঁকির পরিমাণ বেশি হয়ে যাচ্ছে।[396] এই ওষুধগুলির সাহায্যে মাঝারি ওজন কমানো যায়। দীর্ঘ সময় ধরে ওরলিস্ট্যাটে ২.৯কেজি (৬.৪পাউণ্ড), সিবুট্রামাইনে ৪.২কেজি (৯.৩পাউণ্ড) এবং রিমোনাব্যান্টে ৪.৭কেজি (১০.৪পাউণ্ড) হলো ওজন কমানোর গড় হার। ওরলিস্ট্যাট এবং রিমোনাব্যান্ট ডায়াবেটিসের ঘটনা কমানোর দিকে নিয়ে যায় এবং তিনটি ওষুধই কোলেস্টেরলের উপর প্রভাব ফেলে। যদিও, এই ওষুধগুলি দীর্ঘ সময়ের জটিলতা এবং অতি স্থূলতার ফলাফলের উপর কতোটা প্রভাব ফেলে সে সম্পর্কে খুব কম তথ্যই পাওয়া গেছে।[398] সাধারণভাবে ব্যবহার হয় না এমন কিছু ওষুধও এখানে রয়েছে। এর মধ্যে কিছু আছে যেগুলি শুধুই অল্প সময়ের জন্য ব্যবহার করতে বলা হয়েছিলো, অন্যগুলি ব্যবহার করা হয় কোনোরকম লেবেল ছাড়া। এখনো অন্য কিছু ওষুধ ব্যবহার করা হয় বেআইনীভাবে। এরমধ্যে অধিকাংশই এক বা অধিক স্নায়ু পরিবহনের উপর কাজ করে খাবারের ইচ্ছাটাকেই দমিয়ে দেয়। [400] ফেণ্ড্রিমেট্রাজাইন (বোনট্রিল), ডাইথাইলপ্রোপিয়ন (টেনুয়েটে) এবং ফেন্টারমাইন (অ্যাডিপেক্স-পি) মতো কিছু ওষুধকে এফ ডি এ স্বল্প সময় ব্যবহারের জন্য অনুমতি দিয়েছিলো। কিন্তু বুপ্রোপিয়ন (ওয়েলবুট্রিন), টোপিরামেট (টোপাম্যাক্স) এবং জোনিসামাইড (জোনেগ্র্যান) মতো কিছু ওষুধ ব্যবহৃত হয় কোনো লেবেল ছাড়াই।[401] কোনো ওষুধের কার্যকারিতা নির্ভর করে তার মধ্যে কমোরবাইটিসের উপস্থিতির ওপর। অতি ওজন ডায়াবেটিকসের ক্ষেত্রে মেটফরমিন (গ্লুকোফেজ)কে পছন্দ করা হয়। কারণ এটা সালফোনিলুরিয়াস বা ইনসুলিনের থেকে হালকা ওজন কমানোর ক্ষেত্রে বেশি কার্যকরী। [403] অন্যদিকে থেথিয়াজোলিডাইনেডিয়েনেস-এর ফলে ওজন বাড়তে পারে। তবে এটা মধ্যস্থলের অতি স্থূলতা কম করে। [405] ফ্লুক্সেটাইন (প্রোজ্যাক), ওরলিস্ট্যাট এবং সিবুট্রামাইন ১২—৫৭সপ্তাহ ব্যবহার করে ডায়াবেটিক্সে মাঝারি মাপের ওজন কমানো সম্ভব। প্রাথমিক প্রমাণে যদিও দেখা গেছে, সিবুট্রামাইন বনাম নিয়ন্ত্রণ (১১.৪% বনাম ১০.০%) যারা নিচ্ছে তাদের মধ্যে অনেক বেশি পরিমাণে হৃদরোগের ঘটনা ঘটছে। [407] এই সমস্ত চিকিত্সার ফলে স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি কী কী সুবিধা পাওয়া গেছে তা এখনো স্পষ্ট নয়।[409] ১৯৯৭সালে বাজার থেকে ফেনফ্লুরামাইন এবং ডেক্সফেমফ্লুরামাইন প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। আবার ২০০৪সালে ইফেড্রাইন [410](চীনের ঐতিহ্যগত ভেষজ ওষুধ ইফেড্রা সিনিকা থেকে তৈরি মা হুয়াঙ্গ—এ পাওয়া যায়) বাজার থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়। [412] মাদক আশক্তির আশঙ্কায় অতি স্থূলতার[414] চিকিত্সার জন্য ডেক্সামফেটামাইনসকে এফ ডি এ বা FDA অনুমতি দেয়নি। [415] যথেষ্ট পরিমাণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে এই সমস্ত ওষুধ ব্যবহারের সুপারিশ করা হয়নি। [417] যদিও মানুষ মাঝে মাঝেই বেআইনীভাবে এই সমস্ত ওষুধ ব্যবহার করে। [419] অস্ত্রোপচার [420] বারিয়াট্রিক সার্জারি ("ওজন কমানোর অস্ত্রোপচার") হলো স্থূলতার চিকিৎসায় শল্য চিকিৎসার ব্যাবহার। যেহেতু প্রত্যেক অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রেই জটিলতা রয়েছে, তাই মারাত্মকভাবে স্থূল ব্যাক্তির ক্ষেত্রেই একমাত্র অস্ত্রোপচারের সুপারিশ করা হয় (BMI > ৪০) খাদ্যাভ্যাসে নিয়ন্ত্রণ এনে এবং পারমাকোলজিকাল চিকিৎসার মাধ্যমে যাদের ওজন কমানো সম্ভব হয় না কেবলমাত্র তাদের ক্ষেত্রেই এই পথ নেওয়া হয়। ওজন কমানোর অস্ত্রোপচার বিভিন্ন নীতির ওপর ভরসা করে রয়েছে : সবচেয়ে সাধারণ দুটি লক্ষ্য হলো পাকস্থলীর আয়তন কমানো (যথা অ্যাডজাস্টেবল গ্যাস্ট্রিক ব্যাণ্ড ও ভার্টিকাল ব্যাণ্ডেড গ্যাস্ট্রোপ্লাস্টি করে)। অরুচির প্রাথমিক ধারণা তৈরি করে এবং যা ভুড়ি কমিয়ে দেয় তাকে গ্যাস্ট্রিক বাইপাস সার্জারি বলা হয় যা সরাসরি শোষণ কমিয়ে দেয়। ব্যাণ্ড সার্জারি উলটোনোও সম্ভব, কিন্তু ভুঁড়ি কমানো বা বাওয়েল শর্টেনিং তা নয়। ল্যাপ্রোস্কোপির মাধ্যেমেও কিছু প্রক্রিয়া করা যায়। ওজন কমানোর অস্ত্রোপচারে প্রায়ই জটিলতা হয়।[422] প্রবল স্থূলতার জন্য অস্ত্রোপচারের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদী ওজন হ্রাস ও সামগ্রিকভাবে মৃত্যুহারের সম্পর্ক জুড়ে রয়েছে। একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে ১৪% থেকে ২৫% ওজন হ্রাস (কী ধরনের প্রণালী নেওয়া হয়েছে তার ওপর নির্ভর করে) হয়েছে ১০ বছরে, এবং ২৯% হ্রাস হয়েছে সামগ্রিক মৃত্যহারের ক্ষেত্রে সাধারণ ওজন কমানোর পদক্ষেপের তুলনায়।[424] বারিয়াট্রটক অস্ত্রোপচারের পর দেখা গেছে ডায়াবেটিস মেলিটাস, কারডিওভাস্কুলার রোগ ও ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি লক্ষ্যনীয় ভাবে কমে গেছে।[428][426] অস্ত্রোপচারের প্রথম কয়েক মাসের মধ্যে চিহ্নিত ওজন হ্রাস হয় এবং তার পর থেকে দীর্ঘমেয়াদীভাবে তা টিকে থাকে। একটি সমীক্ষায় দেখা গেলো দুর্ঘটনা ও আত্মহত্যায় ব্যাখ্যাতীতভাবে মৃত্যু বেড়েছে যদিও রোগ প্রতিরোধের নিরিখে এটি অধিকতর নয়।[429] যখন দুটি মূল প্রনালীর তুলনা করা হয় দেখা যায় ব্যান্ডিং প্রণালীর থেকে তুলনায় গ্যাস্ট্রিক বাইপাস পদ্ধতিতে অস্ত্রোপচারের এক বছর পর ৩০% বেশি ওজন হ্রাস হয়।[431] লিপোসাকশনর প্রভাব স্থূলতার ওপর খুবই কম। কিছু ছোটো সমীক্ষায় দেখা গেছে অন্যদের সুবিধাও [433]একেবারেই নেই।[435] গ্যাস্ট্রোস্কপির মাধ্যমে ইন্ট্রাগ্যাসট্রিক বেলুন প্রতিস্থাপন তবু প্রতিশ্রুতিসম্পন্ন। এক ধরনের বেলুন ৫.৭ BMI এককের ওপর ৬ মাসের ওপর অথবা ১৪.৭ কেজি (৩২.৪ পাউণ্ড)ওজন হ্রাস করতে পারে। বেলুন সরিয়ে নিলে হারানো ওজন ফিরে পাওয়া খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার, যদিও, ৪.২% মানুষই এই যন্ত্রটি সহ্য করতে পারে না।[437] ক্লিনিকাল নিয়ম বিধি স্থূলতার ক্রমবর্ধমান হার সামাল দিতে পশ্চিমী বিশ্বের বেশিরভাগটাই ক্লিনিকাল প্র্যাক্টিস গাইডলাইন তৈরি করেছে। ২০০৪-এর পর থেকে অস্ট্রেলিয়া,[439] কানাডা,[440] ইউরোপীয় ইউনিয়ন,[441] ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র[442] সকলেই এব্যাপারে বিবৃতি প্রকাশ করছে। আমেরিকান কলেজ অব ফিজিসিয়ান্স দ্বারা প্রকাশিত ক্লিনিকাল প্র্যাক্টিস গাইডলাইনে নিম্নলিখিত পাঁচটি সুপারিশ করা হয়েছে:[444] 1. 30-এর ওপর যাদের বি এম আই (BMI) তাদের অবশ্যই ডায়েট বা খাদ্যাভ্যাসের উপদেশ মেনে চলা উচিত, ওজন কমানোর জন্য শারীরিক কসরত ও অন্যান্য আচরণগত বিধিনিষেধ মেনে চলা উচিত। 2. এতে লক্ষ্যে পৌঁছানো না গেলে ফারমাকোথেরাপি করার প্রস্তাব দেওয়া যেতে পারে। তবে যার ওপর এটা প্রয়োগ হবে তাকে আগে থেকেই জানিয়ে দেওয়া উচিত যে এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে এবং সুদূর প্রসারী নিরাপত্তা বা সাফল্যের তথ্য নেই। 3. ওষুধ দিয়ে চিকিত্সার কথাও বলা যেতে পারে, যাতে থাকবে সাইবুট্রামিন, ওরলিস্ট্যাট, ফেন্টারমাইন, ডাইইথাইল প্রপিওন, ফ্লাক্সিটিন, ও বুপ্রোপিওন। আরো মারাত্মক স্থূলতার ক্ষেত্রে অ্যাম্ফিটামিন ও মিথাম্পিটামিন-এর মতো শক্তিশালী ওষুধ কিছু ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যেতে পারে। সারট্রালিন, টপিরামেট, অথবা জোনিসামিড-এর মতো ওষুধগুলি ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়ার মতো যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ নেই। 4. যাদের বি এম আই (BMI) 40-এর বেশি, যারা ওজন কমানোর লক্ষ্যে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়েছে (ওষুধ প্রয়োগ বা ওষুধ ছাড়া) এবং যাদের মধ্যে স্থূলতা সম্পর্কিত জটিলতা দানা বেঁধেছে তাদের বারিয়াট্রিক অস্ত্রোপচারের ইঙ্গিত দেওয়া যেতে পারে। এর সম্পর্কিত জটিলতা গুলি অবশ্য সেই মানুষটিকে জানানো প্রয়োজন। 5. যাদের বারিয়াট্রিক অস্ত্রোপচারের দরকার তাদের বড় মাপের সংস্থায় পাঠানো উচিত যেখানে এমন সার্জেনরা রয়েছেন যারা হামেসাই এমন অস্ত্রোপচার করে থাকেন। ইউ এস প্রিভেন্টিভ টাস্কফোর্স (USPSTF) প্রকাশিত একটি ক্লিনিকাল প্র্যাক্টিস গাইডলাইন-এ বলা হয়েছে যে নিয়মিত আচার ব্যবহার পরামর্শ দেওয়া বা তা না করার কথা বলার মতো যথাযথ তথ্যপ্রমাণ নেই, তবে স্বাস্থ্যসম্মত সাধারণ খাবার নেওয়ার কথা বলা যেতে পারে তবে যাদের হাইপারলিপিডেমিয়া আছে তাদের ব্যাপক স্বাস্থ্যসম্মত খাবার দেওয়ার কথা বলতে হবে এবং কার্ডিওভাস্কুলার ও ডায়েট সংক্রান্ত কঠিন ব্যাধির মতো অন্যান্য ঝুঁকির বিষয়গুলিও থাকবে। প্রাথমিক চিকিৎসক অথবা অন্য বিশেষজ্ঞ যেমন নিউট্রিশানিস্ট বা ডায়াটেশিয়ানরাই ব্যাপক পরামর্শ দিতে পারেন।[445][447] 2006- এ কানাডা তথ্যভিত্তিক প্র্যাকটিস গাইডলাইন তৈরি করে তা প্রকাশ করে। সেই নির্দেশিকায় শিশু ও প্রাপ্তবয়স্ক উভয়ের মধ্যেই ব্যাক্তিগত ও জনসমষ্টি স্তরে স্থূলতা রোধ ও ঠেকানোর প্রচেষ্টার কথা বলা হয়।[448] ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন 2008 —এ ইউরোপে ক্রমবর্ধমান স্থূলতার হারবৃদ্ধি ঠেকাতে ক্লিনিকাল প্র্যাক্টিস নির্দেশিকা প্রকাশ করে।[449] 2004 -এ অস্ট্রেলিয়াও এমন একটি নির্দেশিকা প্রকাশ করে।[450] রোগ বিস্তার বা মহামারী সংক্রান্ত বিদ্যা [451]
বিংশ শতাব্দীর আগে স্থূলতা খুবই বিরল ছিল;[483] ১৯৯৭-এ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু WHO) আনুষ্ঠানিকভাবে স্থূলতাকে বিশ্বজুড়ে মহামারী বা গ্লোবাল এপিডেমিক হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। [484] ২০০৫–এর হু (WHO)র হিসেব মতো কমপক্ষে ৪০কোটি প্রাপ্তবয়স্ক (৯.৮%) ভীষণ মোটা, এবং পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের মধ্যে এর হার বেশি। [486] ৫০অথবা ৬০বছর বয়সীদের[487] মধ্যে স্থূলতার হার বেড়েছে এবং সামগ্রিক স্থূলতার হারের তুলনায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া ও কানাডায় এর হার বেশি। [492][490][488] একটা সময়ে একে উচ্চ-আয়ের দেশের সমস্যা বলে বিবেচনা করা হতো, কিন্তু স্থূলতার হার এখন বিশ্বজুড়েই বাড়ছে এবং এর প্রভাব পড়ছে উন্নত ও উন্নয়নশীল উভয় বিশ্বেই। [494] নাটকীয়ভাবে এই বৃদ্ধি সমচেয়ে বেশি নগর জীবনে লক্ষ্য করা যায়। [495] সাব-সাহারান আফ্রিকাই বিশ্বের একমাত্র অবশিষ্ট এলাকা যেখানে স্থূলতা কোনো সাধারণ ব্যাপার নয়।[496] জনস্বাস্থ্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু WHO)-র অনুমান অতিওজন ও স্থূলতা খুব শীঘ্রই হয়তো কমপুষ্টি (আন্ডার নিউট্রিশন) ও সংক্রামক ব্যাধির (খারাপ স্বাস্থ্যের জন্য যা সবথেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ কারণ) মতো প্রথাগত জনস্বাস্থ্য সমস্যার জায়গা নেবে। তার বিস্তার, খরচ ও স্বাস্থ্যে তার প্রভাবের কারণেই স্থূলতা হলো একটা জনস্বাস্থ্য ও নীতি সম্পর্কিত সমস্যা। [500] জনসমষ্টির মধ্যে স্থূলতার ব্যাপক বিস্তারের জন্য দায়ী পরিবেশগত বিষয়গুলি বুঝে নিয়ে তা শোধরানোর প্রচেষ্টাই করছে জনস্বাস্থ্য। বাড়তি ক্যালোরি ভোগ ও শারীরিক কসরতের অনিচ্ছার কারণ যে বিষয়গুলি, তাও বদল করার সমাধান খোঁজা চলছে। চেষ্টা চলছে স্কুলগুলিতে রিইমবার্সড মিল প্রোগ্রাম চালু করার, শিশুদের কাছে সরাসরি জাঙ্ক ফুড বিপণনে রাশ টানার[502] ও একই সঙ্গে চেষ্টা চলছে স্কুলে মিষ্টি পাণীয়ের সহজলভ্যতা কমিয়ে ফেলার[504]। নাগরিক পরিবেশ গড়ে তোলার সময়েই চেষ্টা হচ্ছে পার্কের সুযোগ বাড়ানোর ও পায়ে চলার পথ বাড়ানোর।[506] বহু দেশ ও গোষ্ঠী স্থূলতা সংক্রান্ত রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। ১৯৯৮–এ প্রথম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রীয় নির্দেশিকা প্রকাশিত হয়, যার শিরোনাম ছিল ‘ক্লিনিকাল গাইডলাইনস অন দ্য আইডেন্টিফিকেশন ইভলিউশন অ্যাণ্ড ট্রিটমেন্ট অব ওভারওয়েট অ্যাণ্ড ওবেসিটি ইন অ্যাডাল্টস: দ্য এভিডেন্স রিপোর্ট’।[508] ২০০৬—এ কানাডিয়ান ওবেসিটি নেটওয়ার্ক ‘কানাডিয়ান ক্লিনিকাল প্র্যাক্টিস গাইডলাইনস (CPG) অন দ্য ম্যানেজমেন্ট অ্যাণ্ড প্রিভেনশন অব ওবেসিটি ইন অ্যাডাল্টস অ্যাণ্ড চিল্ডরেন’প্রকাশ করে। প্রাপ্তবয়স্ক ও শিশুদের মধ্যে অতিওজন ও স্থূলতা রুখতে এটি হলো একটি সুসংহত তথ্যপ্রমাণ ভিত্তিক নির্দেশিকা।[510] ২০০৪-এ ব্রিটেনের রয়াল কলেজ অব ফিজিসিয়ান্স, ফ্যাকাল্টি অব পাবলিক হেল্থ এবং রয়াল কলেজ অব পেডিয়াট্রিক্স অ্যাণ্ড চাইল্ড হেল্থ ‘স্টোরিং আপ প্রব্লেমস‘ নামে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে যাতে ব্রিটেনের ক্রমবর্ধমান স্থূলতার সমস্যার কথা তুলে ধরা হয়।[512] ঐ একই বছরে হাউস অব কমন্স -এর হেল্থ সিলেক্ট কমিটি প্রকাশ করে তাদের ‘মোস্ট কম্প্রিহেন্সিভ এনকোয়ারি [...] এভার আণ্ডারটেকেন" এতে গ্রেট ব্রিটেনের সমাজ ও স্বাস্থ্যের ওপর স্থূলতার প্রভাব ও সেই সমস্যার সম্ভাব্য প্রতিকারের কথা ছিল।[514] 2006 -এ ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর হেল্থ অ্যাণ্ড ক্লিনিকাল এক্সেলেন্স (NICE) স্থূলতা নির্ধারণ ও তার মোকাবিলার একটি নির্দেশিকা প্রকাশ করে, পাশাপাশি এতে স্থানীয় পরিষদের মতো স্বাস্থ্য বিষয়ক নয় এমন সংস্থাগুলির জন্য নীতি রূপায়ণের কথাও ছিল।[516] 2007 -এ স্যার ডেরেক ওয়ানলেস -এর প্রকাশিত একটি রিপোর্ট কিংস ফাণ্ড-এ হুঁশিয়ারি দেওয়া হয় এখনই কিছু ব্যবস্থা না নিলে জাতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবাকে অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু করে দিতে পারে।[518] স্থূলতার ক্রমবর্ধ্বমান হার রোধে সুসংহত উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। অবেসিটি পলিসি অ্যাকশন (ও পি এ OPA) কাঠামো বেশ কিছু পদ্ধতিতে ভাগ করেছে যেমন ‘আপস্ট্রিম’ নীতি, ‘মিডস্ট্রিম’ পলিসি, ‘ডাউনস্ট্রিম’ পলিসি। ‘আপস্ট্রিম’ নীতি সমাজ পরিবর্তনের ওপর নজর রাখে, স্থূলতা রুখতে ব্যক্তিগত আচরণ বদলের চেষ্টা করে ‘মিডস্ট্রিম’ পলিসি এবং বর্তমানে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের চিকিৎসার চেষ্টা করে ‘ডাউনস্ট্রিম’ পলিসি। [520] অর্থনৈতিক প্রভাব
স্বাস্থ্যগত প্রভাবের পাশাপাশি স্থূলতা আরো বেশ কিছু সমস্যার সৃষ্টি করে যেমন চাকরিতে অসুবিধা[522] ও ব্যবসার খরচ বেড়ে যাওয়া। ব্যক্তিগত, কর্পোরেশনগত, সরকারী সমাজের সব স্তরেই এর প্রভাব অনুভূত হয়। কেবলমাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই খাদ্যপণ্যের বার্ষিক অনুমিত খরচ ৪০বিলিয়ন থেকে ১০০বিলিয়ন ডলার। [524] ১৯৯৮–এ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে স্থূলতা খাতে চিকিৎসা খরচ ছিল ৭৮.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অথবা সমস্ত চিকিৎসা খরচের ৯.১%.[528][526] কানাডায় আবার স্থূলতার জন্য অনুমিত খরচ ছিল ২ বিলিয়ন ডলার (মোট চিকিৎসা খরচের ২.৪%)।[530] স্থূলতা সম্পর্কিত রোগের চিকিৎসা খরচ কমানোর জন্য স্থূলতা রোধ কর্মসূচীগুলিকে দেখা যায়। যদিও, বেশি আয়ের মানুষকে আরো চিকিৎসা খরচ বইতে হয়। গবেষকদের তাই মতামত হলো, স্থূলতা কমিয়ে জনস্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটানো যায়, তবে অন্যরকমভাবে এটা সামগ্রিক চিকিৎসা খরচ কমায়। [532] স্থূলতা সামাজিক কলঙ্ক ও চাকরিতে অসুবিধা তৈরি করতে পারে। [533] স্বাভাবিক ওজনের অন্য সহকর্মীদের তুলনায় ভীষণ মোটা কর্মীদের অনুপস্থিতির হার বেশি হয়, অসুস্থতার জন্য তারা বেশি ছুটি নেয়, ফলে নিয়োগকর্তার খরচ বেড়ে যায় এবং উৎপাদনশীলতা কমে যায়। [535] ডিউক বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীদের মধ্যে সমীক্ষা চালিয়ে দেখা গেছে যে সব কর্মী বডি মাস ইন্ডেক্স (BMI) ১৮.৫—২৪.৯,তাদের মধ্যে থেকে যতজন চিকিৎসা বা ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত দাবি জানিয়েছে তাদের দ্বিগুণ সংখ্যার কর্মী এই সুবিধার জন্য দাবি জানিয়েছে যাদের বি এম আই (BMI) ৪০–এর বেশি। কর্মদিবস নষ্টের হিসেবে তারা ১২ গুণেরও বেশি। পড়ে গিয়ে অথবা ওঠার সময় এদের চোট পাওয়া খুবই সাধারণ ব্যাপার, এভাবেই এরা চোট পায় শরীরের নিচের অংশে, হাতে বা কবজিতে অথবা পেছনে বা কোমরে। [537] ইউ এস স্টেট অব আলাবামা এমপ্লয়িজ ইনস্যুরেন্স বোর্ড একটি বিতর্কিত পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে, তাতে বলা হয়েছে ভীষণ মোটা কর্মীদের প্রতি মাসে ২৫ডলার করে কেটে নেওয়া হবে যদি না তারা ওজন কমিয়ে স্বাস্থ্য ভালো করে। ২০১০–এর জানুয়ারি থেকে এই পদক্ষেপ কার্যকরী হবার কথা এবং এটি বলবত্ হবে সেই সব কর্মীর ওপর যাদের বি এম আই (BMI) ৩৫ kg/m2 –এর বেশি এবং একবছর বাদে যারা তাদের স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে ব্যর্থ হবে। [539] বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, ভীষণ মোটাদের খুব কমই কোনো কাজের জন্য ভাড়া করা হয়েছে এবং খুবই কম এদের পদোন্নতি হয়েছে।[540] একই কাজের জন্য মোটা নয় এমন সহকর্মীর তুলনায় মোটাদের কম মজুরি দেওয়া হয়। গড়ে মোটা মহিলারা ৬% কম ও মোটা পুরুষরা ৩% কম কাজ করতে পারে।[541] এয়ারলাইন ও ফুড ইণ্ডাস্ট্রির মতো নির্দিষ্ট কিছু শিল্পের আবার বিশেষ কিছু চিন্তার কারণ আছে। স্থূলতার হার বেড়ে যাওয়ার কারণে এয়ারলাইনগুলির জ্বালানির খরচ বেড়ে যাচ্ছে, বসার জায়গা আরো চওড়া করার চাপ আসছে। [543] ২০০০–এ মোটা যাত্রীদের বাড়তি ওজনের জন্য এয়ারলাইনগুলির ২৭৫মিলিয়ন ডলার বাড়তি জ্বালানি খরচ হয়েছে। [545] আইনব্যবস্থায় অভিযোগ তোলা হচ্ছে যে তারা স্থূলতা বাড়াচ্ছে, তাই রেস্তোরার খরচ বাড়ছে।[547] স্থূলতার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ফুড ইণ্ডাস্ট্রির বিরুদ্ধে আইন নিয়ে ২০০৫–এ মার্কিন কংগ্রেসে আলোচনা হয়েছে ; যদিও সেটি এখনও আইন হয়নি।[548] ইতিহাস ও সংস্কৃতি
শব্দের বুত্পত্তি লাতিন ওবিসিটাস শব্দ থেকে ওবিসিটি শব্দটি এসেছে। লাতিনে ওবিসিটাস-এর মানে হলো ‘মজবুত, মোটা অথবা নধর’। Ēsus হলো edere-র পাস্ট পার্টিসিপল রূপ (খেতে), সঙ্গে ob (বেশি) এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে।[550] অক্সফোর্ড ডিকশনারি তে উল্লেখ করা হয়েছে যে ১৬১১ নাগাদ এর প্রথম ব্যবহার করেছিলেন র্যাণ্ডেল কটগ্রেভ, এটি ব্যাবহার করা হয়েছিল এ ডিকশনারি অব দ্য ফ্রেঞ্চ অ্যাণ্ড ইংলিশ টাঙস।[552] ঐতিহাসিক প্রবনতা
গ্রীকরাই প্রথম স্থূলতাকে চিকিৎসা সংক্রান্ত গোলমাল হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। [555] হিপোক্রেটিস বলে গেছেন যে ‘অত্যধিক স্থূলতা কেবলমাত্র একটা রোগই নয়, বরং অন্য রোগের অগ্রদূত’’।[556] যতদূর জানা যায় ভারতীয় শল্য চিকিৎসক সুশ্রুত (খ্রীষ্টপূর্ব ষষ্ঠ শতক)-ই ডায়াবেটিস ও হৃদযন্ত্রের গোলমালের সঙ্গে স্থূলতার যোগাযোগের কথা তুলে ধরেন। [557] এই রোগ ও এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার চিকিৎসায় শারীরিক কসরত সাহায্য করার কথা তিনিই সুপারিশ করেন।[559] মানব ইতিহাসের বেশিরভাগটা জুড়েই মানবজাতিকে খাদ্যের আকালের সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছে। [561] এভাবে স্থূলতাকে ঐতিহাসিকভাবেই সম্পদ ও সমৃদ্ধির প্রতীক হিসেবে দেখা হয়ে আসছে। মধ্যযুগ ও নবজাগরণের[562] সময় ইউরোপে উচ্চ পদস্থ আধিকারিকদের মধ্যে স্থূলতা খুবই সাধারণ বিষয় ছিল, পাশাপাশি প্রাচীন পূর্ব এশীয় সভ্যতাতেও তাই ছিল। [563] শিল্প বিপ্লবের প্রারম্ভিককালেও এটাই মনে করা হতো যে কোনো দেশের সামরিক ও অর্থনৈতিক শক্তি সেদেশের সৈন্য ও কর্মীদের আয়তন ও শক্তি উভয়ের ওপর নির্ভরশীল। গড় বডি মাস ইন্ডেক্স (BMI)কে বর্তমানে আণ্ডাওয়েট বলে বিবেচনা করা হয়, সেই গড় বি এম আই (BMI) বাড়িয়েই এখন তা একটা সাধারণ মাত্রায় পৌঁছে গেছে, যার একটা শিল্পোন্নত সমাজ বিকাশের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। ঊনবিংশ শতাব্দীজুড়ে উন্নত বিশ্বে এভাবেই উচ্চতা ও ওজন দুটোই বেড়েছে। বিংশ শতাব্দীতে জনসমষ্টি তার উচ্চতার জিনসম্বন্ধীয় সম্ভবনায় পৌঁছে যায়, কিন্তু ওজন আবার উচ্চতার তুলনায় বেশি গতিতে বাড়ে, তারই ফলাফল স্থূলতা।[564] ১৯৫০–এর দশকে সম্পদ বাড়ার সাথে শিশুমৃত্যুর হারও কমেছে, কিন্তু শরীরের ওজন বেড়ে হৃদযন্ত্র ও কিডনির অসুখও আরো সাধারণ বিষয় হয়ে উঠেছে। [567][565] এই সময় কালেই বীমা কোম্পানিগুলিও ওজন ও আয়ুর মধ্যে সম্পর্কের বিষয়টি ধরে ফেললো এবং ভীষণ মোটাদের প্রিমিয়ামও বাড়িয়ে দিলো্।[568]
ইতিহাসে বহু সংস্কৃতিতেই স্থূলতাকে চারিত্রিক দোষ হিসেবে দেখা হয়ে এসেছে। গ্রীক হাস্যরসে অবিসাস অথবা মোটা মানুষের চরিত্রকে একটা পেটুক ও ব্যঙ্গবিদ্রুপের বিষয় হিসেবে দেখানো হতো। খ্রীস্টাব্দে খাবারকে আলস্য ও লালসার পাপের প্রবেশদ্বার হিসেবে দেখা হতো। [569] আধুনিক পাশ্চাত্য সংস্কৃতিতে বাড়তি ওজনকে অনেক সময়েই অনাকর্ষী হিসেবে বিচার করা হয় এবং স্থূলতা সাধারণভাবেই বেশ কিছু নেতিবাচক একঘেয়েমির সঙ্গে জুড়ে আছে। সমস্ত বয়সের মানুষ এর জন্য সামাজিকভাবে কলঙ্কিত হিসেবে বিবেচিত হয়, এবং এরা টিটকিরির শিকার হতে পারে অথবা সতীর্থরা তাকে এড়িয়ে চলতে পারে। স্থূলতা আবার বৈষম্যেরও কারণ হয়।[571] পাশ্চাত্য সমাজে স্বাস্থ্যবান শরীরের ওজনের সম্পর্কে জনমানসের যে ধারণা ছিল, তা আদর্শ ওজন বলা যায় যাকে তা নিয়ে ধারণা একেবারেই আলাদা ছিল— এবং বিংশ শতাব্দীর শুরু থেকে উভয়েরই বদল হলো। 1920–র পর থেকেই যে ওজনকে আদর্শ বলা যায় তা কমতে থাকলো। দৃষ্টান্ত হিসেবে তুলে ধরা যেতে পারে মিস আমেরিকা প্যাজিয়েন্ট উইনারদের বিষয়টি, ১৯২২ থেকে ১৯৯৯সাল পর্যন্ত এই পুরস্কার বিজেতাদের গড় উচ্চতা ২% করে বেড়েছে, আবার উলটোদিকে এদের ওজন ১২%করে কমেছে। [573] অপরদিকে, জনমানসে সুস্থ ওজন নিয়ে চিন্তা উলটোদিকে বদলে গেছে। ব্রিটেনে যে ওজন হলে মানুষ নিজেকে ওভারওয়েট মনে করবে সেই মাপকাঠিটা 1999–এ যা ছিল 2007 –এ তার তুলনায় লক্ষ্যণীয়ভাবে বেশি। [575] মনে করা হয় এই পরিবর্তনের কারণ হলো অ্যাডিপোসিটি (মেদবহুলতা), অ্যাডিপোসিটির হার বেড়ে যাওয়ায় শরীরে অতিরিক্ত মেদকে স্বাভাবিক হিসেবে মেনে নেওয়ার বিষয়টিও বেড়ে গেছে।[576] আফ্রিকার কোনো কোনো অংশে এখনও অবশ্য স্থূলতাকে সমৃদ্ধির প্রতীক হিসেবে দেখা হয়। এইচ আই ভি (HIV) মহামারী শুরু হবার পর থেকে এটি বিশেষতই সাধারণ হয়ে গেছে।[577] চারুকলা মানব দেহের ভাস্কর্য বিষয়ক প্রথম রূপায়ণ হয়েছিল ২০,০০০—৩৫,০০০বছর আগে, যেখানে ভীষণ মোটা এক মহিলাকে তুলে ধরা হয়েছিল। কেউ কেউ ভেনাস মূর্তিকেই মেদের বাড়বাড়ন্তের প্রবনতার জন্য দায়ী করেন, কেউ কেউ আবার মনে করেন সময়ের সাথে সাথেই মানুষের মধ্যে মুটিয়ে যাওয়া বেড়ে গেছে।{1/ গ্রীক ও রোমান শিল্পকলায় যদিও অত্যাধিক স্থূলতা অনুপস্থিত, এবং তা সম্ভবত সংযম বা পরিমিতির আদর্শের কারণেই। খ্রীষ্ট ইউরোপীয় ইতিহাসের বেশিরভাগ সময়জুড়েই ধারবাহিকভাবে আর্থসামাজিক মর্যাদায় যারা নিচুতে তাদেরই কেমলমাত্র ভীষণ মোটা দেখানো হতো। নবজাগরণের সময় উচ্চতর শ্রেণীর কয়েকজন তাদের নিজেদের বিরাট আকার নিয়ে সগর্বে জাহির করতে শুরু করলো, অষ্টম হেনরি ও আলেকজান্দ্রো দেল বোরোর প্রতিকৃতিতে যেমন দেখা যায়।[580] রুবেনস (১৫৭৭–১৬৪০) নিয়মিতভাবেই তাঁর ছবিতে পূর্ণাঙ্গ নারীদেহ ফুটিয়ে তুলতেন, সেখান থেকেই রুবেনস্কু পরিভাষাটি এসেছে। তা সত্বেও সেই নারীদের যদিও তার উৎসের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ‘আওয়ারগ্লাস’ বা বালু ঘড়ির চেহারাই থাকতো। [582] ঊনবিংশ শতাব্দীতে পাশ্চাত্যে স্থূলতা নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গি বদলে যায়। স্থূলতাকেই সম্পদ ও সামাজিক মর্যাদার সমার্থক হিসেবে এক শতক বিবেচনা করার পর রোগা পাতলাকেই কাঙ্খিত মাপকাঠি হিসেবে দেখা শুরু হলো।[583] পরিমাপের গ্রহণযোগ্যতা ও স্থূলতা বিতর্ক [584] অতিরিক্ত ওজন ও অতি স্থূলকায়দের সম্পর্কে যে বৈষম্য রয়েছে তা কমাতে হলে চর্বি জাতীয় খাদ্য গ্রহণের পরিমাণ কমিয়ে আনতে হবে, সেটাই প্রাথমিক লক্ষ্য হওয়া উচিত। [586][588] যদিও এই প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়েই স্থূলতা ও স্বাস্থ্যের নেতিবাচক প্রভাবকে চ্যালেঞ্জ জানানো যেতে পারে।[590] এক গুচ্ছ সংগঠন রয়েছে যারা অতি স্থূলতাকে শুধু স্বীকারই করে না বরং তাদেরকে সংগঠিত করার উদ্যোগ নিয়ে থাকে। বিংশ শতাব্দীর শেষ অর্ধে এই সংগঠনের সংখ্যার উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি ঘটেছে। [592] ১৯৬৯ সালে মার্কিন সংস্থা ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন টু অ্যাডভান্স ফ্যাট অ্যাকসেপটেন্স (NAAFA) গঠিত হয় এবং তারা নিজেদের মানবাধিকার সংগঠন বলে দাবি করে শরীরের আয়তন বৈষম্য দূর করার লক্ষ্যে কাজ শুরু করে।[594] ইন্টারন্যাশনাল সাইজ অ্যাকসেপটেন্স অ্যাসোসিয়েশন (ISAA) ১৯৯৭ সালে তৈরি হয়, এটি একটি বেসরকারী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। এই সংগঠনের বিস্তার বিশ্বব্যাপী, এদের লক্ষ্য হলো মানব শরীরের যে কোনো আয়তনকে গ্রহণযোগ্য বলে স্বীকৃতি দেওয়া এবং সমাজে ওজন-ভিত্তিক যে বৈষম্য রয়েছে তা দূর করা।[596] মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আমেরিকার প্রতিবন্ধী নাগরিকদের জন্য গৃহীত আইন (ADA) এঁদের ক্ষেত্রেও যাতে প্রযোজ্য হয় সেই দাবিতেই লড়াই করছে এই সংগঠন। আমেরিকার আইন ব্যবস্থা এনিয়ে ইতোমধ্যেই চর্চা করেছে এবং তারা এই মর্মে সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, যদি শারীরিক বৈষম্য বিরোধী আইন অনুযায়ী স্থূলতাকে বৈধতা দেওয়া হয় তাহলে মানুষের স্বাস্থ্য খাতে যে পরিমাণ বরাদ্দ, তার সুফল সাধারণ মানুষ পাবেন না। [597] এনিয়ে অসংখ্য বই রয়েছে, যেমন পল ক্যাম্পোসের লেখা দ্য ডায়েট মিথ, এই বইয়ে লেখক স্থূলতার সঙ্গে স্বাস্থ্যের ঝুঁকির কোনো মিল খুঁজে পাননি, তিনি জোরের সঙ্গেই বলেছেন, স্থূলতা হলেই স্বাস্থ্যের ঝুঁকি দেখা দেবে এমন প্রামাণ্য তথ্য কেউ হাজির করতে পারেননি, তিনি সমস্যাকে সামাজিক কলঙ্ক হিসাবেই চিহ্নিত করতে চেয়েছেন। [599] একইভাবে মাইকেল গার্ড তাঁর ওবেসিটি এপিডেমিক বইয়ে স্থূলতাকে স্বাস্থ্যের অঙ্গ হিসাবে নয়, বরং একে নৈতিক ও মতাদর্শগত গঠন বলেই চিহ্নিত করেছেন। [601] স্বাস্থ্যের কারণে স্থূলতা বাড়ে এমন যুক্তিকে চ্যালেঞ্জ জানাতে আসরে রয়েছে আরো কয়েকটি সংগঠন। রেস্তোরাঁ ও খাদ্য-শিল্প সংস্থাগুলির পৃষ্ঠপোষকতায় গড়ে উঠেছে এমনই একটি সংগঠন সেন্টার ফর কনসিউমার ফ্রিডম, তারা বিজ্ঞাপনী ভাষায় প্রচার করে, স্থূলতা নিয়ে অযথা ‘উত্তেজনার পারদ’ চড়ানো হচ্ছে, এই সমস্যা কখনই মহামারীর আকার নেবে না।[603] একই রকম চেহারার বন্ধু বা বান্ধবী খোঁজাই সাধারণ মানুষের প্রবণতা। [605] স্থূলকায় মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধির ফলে এই অংশের মানুষের কাছে সঙ্গী খুঁজে পাওয়া অনেক সুবিধাজনক হয়ে গেছে। কিছু অধঃসংস্কৃতিও পরিলক্ষিত হয়, বিশেষত স্থূলকায়দের প্রতি আকর্ষণ তৈরি করার জন্য। চাবি কালচার [607]এবং ফ্যাট অ্যাডমায়ারার[609] হলো এর উদাহরণ। শিশুবয়সের স্থূলতা [610]
শিশুর বয়স ও লিঙ্গের সঙ্গে স্বুস্থ বডি মাস ইন্ডেক্স (বি এম আই BMI) ক্রমবিন্যাস ওঠানামা করে। বি এম আই (BMI)’র ৯৫তম পার্সেন্টাইলের শিশুদের ও বয়ঃসন্ধিকালের স্থূলতার সংজ্ঞা ঠিক করা হয়।[611] উল্লেখ্যনীয় তথ্য হলো, এই পার্সেন্টাইলগুলি ভিত্তি হলো ১৯৬৩ থেকে ১৯৯৪–এর মধ্যবর্তী সময় এবং স্থূলতার হারের সাম্প্রতিক বৃদ্ধির দ্বারা তা প্রভাবিত হয় না। একবিংশ শতাব্দীতে শিশুবয়সের স্থূলতা মহামারীর আকার নিয়েছে, উন্নত ও উন্নয়নশীল বিশ্ব উভয় জায়গাতেই এই হার বেড়েছে। কানাডার কিশোরদের মধ্যে স্থূলতার হার ১৯৮০–র দশকে ১১% থেকে ১৯৯০–র দশকে ৩০%–এর ওপর বেড়ে গেছে। এই একই সময়কালে ব্রাজিলের শিশুদের মধ্যে এই হার ৪ থেকে বেড়ে ১৪% হয়েছে।[613] প্রাপ্তবয়স্কদের স্থূলতার পাশাপাশি শিশুবয়সের স্থূলতার হার বাড়ার সঙ্গে বহু বিষয় জড়িয়ে আছে। সাধারণ খাদ্য বদল ও শারীরিক কসরত কমে যাওয়াকেই সাম্র্সতিককালে এই হার বেড়ে যাওয়ার পেছনে দুটি মূল কারণ বলে মনে করা হয়।[615] কারণ শিশুবয়সের স্থূলতা বড় বয়সেও প্রায়ই থেকে যায় অসংখ্য কঠিন ব্যাধিকে সঙ্গী করে, যে সব শিশু ভীষণ মোটা প্রায়ই তাদের পরীক্ষা করে দেখা গেছে এদের হাইপারটেনশন (উচ্চ রক্তচাপ), ডায়াবেটিস (মধুমেহ), হাইপারলিপিডেমিয়া ও চর্বিযুক্ত লিভার।[616] এই সব শিশুদের চিকিৎসা হলো প্রাথমিকভাবে লাইফস্টাইল বা জীবনধারণের ধরনে হস্তক্ষেপ ও আচার আচরণ প্রণালী। এই বয়সের ক্ষেত্রে ওষুধ প্রয়োগ মোটেই এফ ডি এ (FDA) অনুমোদিত নয়।[618] অন্যান্য পশুর মধ্যে স্থূলতা [619] বহু দেশেই পোষা প্রাণীর মধ্যে স্থূলতা খুবই সাধারণ বিষয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কুকুরদের মধ্যে অত্যধিক ওজন ও অতিশয় স্থূলতার হার ২৩শতাংশ থেকে ৪১%, এর মধ্যে প্রায় ৫.১% ভীষণ মোটা।[621] বিড়ালদের মধ্যে স্থূলতার হার ৬.৪%’এর থেকে সামান্য বেশি।[622] পশুরোগ বিষয়ক তথ্যের নিরিখে অস্রেহালিয়ায় কুকুরদের মধ্যে স্থূলতার হার দেখা যায় ৭.৬%। [624] তাদের মালিক ভীষণ মোটা কি না তার ওপর কুকুরদের স্থূলতার ঝুঁকি থাকলেও বিড়ালদের স্থূলতার কোনো সম্পর্ক নেই।[626]
টীকা
- ↑ ক খ WHO 2000 p.6
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ ঝ ঞ ট ঠ ড ঢ ণ ত থ দ ধ ন প ফ ব ভ ম য র ল শ Haslam DW, James WP (২০০৫)। "Obesity"। Lancet। 366 (9492): 1197–209। ডিওআই:10.1016/S0140-6736(05)67483-1। পিএমআইডি 16198769।
- ↑ ক খ WHO 2000 p.9
- ↑ Kushner, Robert (২০০৭)। Treatment of the Obese Patient (Contemporary Endocrinology)। Totowa, NJ: Humana Press। পৃষ্ঠা 158। আইএসবিএন 1-59745-400-1। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ৫, ২০০৯।
- ↑ ক খ Adams JP, Murphy PG (২০০০)। "Obesity in anaesthesia and intensive care"। Br J Anaesth। 85 (1): 91–108। ডিওআই:10.1093/bja/85.1.91। পিএমআইডি 10927998। অজানা প্যারামিটার
|month=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - ↑ NICE 2006 p.10–11
- ↑ Imaz I, Martínez-Cervell C, García-Alvarez EE, Sendra-Gutiérrez JM, González-Enríquez J (২০০৮)। "Safety and effectiveness of the intragastric balloon for obesity. A meta-analysis"। Obes Surg। 18 (7): 841–6। ডিওআই:10.1007/s11695-007-9331-8। পিএমআইডি 18459025। অজানা প্যারামিটার
|month=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - ↑ ক খ Barness LA, Opitz JM, Gilbert-Barness E (২০০৭)। "Obesity: genetic, molecular, and environmental aspects"। Am. J. Med. Genet. A। 143A (24): 3016–34। ডিওআই:10.1002/ajmg.a.32035। পিএমআইডি 18000969। অজানা প্যারামিটার
|month=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;Woodhouse
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ Sweeting HN (২০০৭)। "Measurement and definitions of obesity in childhood and adolescence: A field guide for the uninitiated"। Nutr J। 6: 32। ডিওআই:10.1186/1475-2891-6-32। পিএমআইডি 17963490। পিএমসি 2164947 ।
- ↑ NHLBI p.xiv
- ↑ Gray DS, Fujioka K (১৯৯১)। "Use of relative weight and Body Mass Index for the determination of adiposity"। J Clin Epidemiol। 44 (6): 545–50। ডিওআই:10.1016/0895-4356(91)90218-X। পিএমআইডি 2037859।
- ↑ "Healthy Weight: Assessing Your Weight: BMI: About BMI for Children and Teens"। Center for disease control and prevention। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ৬, ২০০৯।
- ↑ Flegal KM, Ogden CL, Wei R, Kuczmarski RL, Johnson CL (২০০১)। "Prevalence of overweight in US children: comparison of US growth charts from the Centers for Disease Control and Prevention with other reference values for body mass index"। Am. J. Clin. Nutr.। 73 (6): 1086–93। পিএমআইডি 11382664। অজানা প্যারামিটার
|month=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - ↑ Sturm R (২০০৭)। "Increases in morbid obesity in the USA: 2000–2005"। Public Health। 121 (7): 492–6। ডিওআই:10.1016/j.puhe.2007.01.006। পিএমআইডি 17399752। পিএমসি 2864630 । অজানা প্যারামিটার
|month=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - ↑ Kanazawa M, Yoshiike N, Osaka T, Numba Y, Zimmet P, Inoue S (২০০২)। "Criteria and classification of obesity in Japan and Asia-Oceania"। Asia Pac J Clin Nutr। 11 Suppl 8: S732–S737। ডিওআই:10.1046/j.1440-6047.11.s8.19.x। পিএমআইডি 12534701। অজানা প্যারামিটার
|month=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - ↑ Bei-Fan Z; Cooperative Meta-Analysis Group of Working Group on Obesity in China (২০০২)। "Predictive values of body mass index and waist circumference for risk factors of certain related diseases in Chinese adults: study on optimal cut-off points of body mass index and waist circumference in Chinese adults"। Asia Pac J Clin Nutr। 11 Suppl 8: S685–93। ডিওআই:10.1046/j.1440-6047.11.s8.9.x। পিএমআইডি 12534691। অজানা প্যারামিটার
|month=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - ↑ ক খ Berrington de Gonzalez A, Hartge P, Cerhan JR; ও অন্যান্য (২০১০)। "Body-mass index and mortality among 1.46 million white adults"। N. Engl. J. Med.। 363 (23): 2211–9। ডিওআই:10.1056/NEJMoa1000367। পিএমআইডি 21121834। অজানা প্যারামিটার
|month=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - ↑ Mokdad AH, Marks JS, Stroup DF, Gerberding JL (২০০৪)। "Actual causes of death in the United States, 2000" (PDF)। JAMA। 291 (10): 1238–45। ডিওআই:10.1001/jama.291.10.1238। পিএমআইডি 15010446। অজানা প্যারামিটার
|month=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - ↑ ক খ Allison DB, Fontaine KR, Manson JE, Stevens J, VanItallie TB (১৯৯৯)। "Annual deaths attributable to obesity in the United States"। JAMA। 282 (16): 1530–8। ডিওআই:10.1001/jama.282.16.1530। পিএমআইডি 10546692। অজানা প্যারামিটার
|month=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - ↑ ক খ গ Whitlock G, Lewington S, Sherliker P; ও অন্যান্য (২০০৯)। "Body-mass index and cause-specific mortality in 900 000 adults: collaborative analyses of 57 prospective studies"। Lancet। 373 (9669): 1083–96। ডিওআই:10.1016/S0140-6736(09)60318-4। পিএমআইডি 19299006। পিএমসি 2662372 । অজানা প্যারামিটার
|month=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - ↑ Calle EE, Thun MJ, Petrelli JM, Rodriguez C, Heath CW (১৯৯৯)। "Body-mass index and mortality in a prospective cohort of U.S. adults"। N. Engl. J. Med.। 341 (15): 1097–105। ডিওআই:10.1056/NEJM199910073411501। পিএমআইডি 10511607। অজানা প্যারামিটার
|month=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - ↑ Pischon T, Boeing H, Hoffmann K; ও অন্যান্য (২০০৮)। "General and abdominal adiposity and risk of death in Europe"। N. Engl. J. Med.। 359 (20): 2105–20। ডিওআই:10.1056/NEJMoa0801891। পিএমআইডি 19005195। অজানা প্যারামিটার
|month=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - ↑ Manson JE, Willett WC, Stampfer MJ; ও অন্যান্য (১৯৯৫)। "Body weight and mortality among women"। N. Engl. J. Med.। 333 (11): 677–85। ডিওআই:10.1056/NEJM199509143331101। পিএমআইডি 7637744।
- ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;EuroG2008
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ Fried M, Hainer V, Basdevant A; ও অন্যান্য (২০০৭)। "Inter-disciplinary European guidelines on surgery of severe obesity"। Int J Obes (Lond)। 31 (4): 569–77। ডিওআই:10.1038/sj.ijo.0803560। পিএমআইডি 17325689। অজানা প্যারামিটার
|month=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - ↑ Peeters A, Barendregt JJ, Willekens F, Mackenbach JP, Al Mamun A, Bonneux L (২০০৩)। "Obesity in adulthood and its consequences for life expectancy: A life-table analysis" (PDF)। Ann. Intern. Med.। 138 (1): 24–32। পিএমআইডি 12513041। অজানা প্যারামিটার
|month=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - ↑ Grundy SM (২০০৪)। "Obesity, metabolic syndrome, and cardiovascular disease"। J. Clin. Endocrinol. Metab.। 89 (6): 2595–600। ডিওআই:10.1210/jc.2004-0372। পিএমআইডি 15181029।
- ↑ Seidell 2005 p.9
- ↑ ক খ Bray GA (২০০৪)। "Medical consequences of obesity"। J. Clin. Endocrinol. Metab.। 89 (6): 2583–9। ডিওআই:10.1210/jc.2004-0535। পিএমআইডি 15181027।
- ↑ Shoelson SE, Herrero L, Naaz A (২০০৭)। "Obesity, inflammation, and insulin resistance"। Gastroenterology। 132 (6): 2169–80। ডিওআই:10.1053/j.gastro.2007.03.059। পিএমআইডি 17498510। অজানা প্যারামিটার
|month=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - ↑ Shoelson SE, Lee J, Goldfine AB (২০০৬)। "Inflammation and insulin resistance"। J. Clin. Invest.। 116 (7): 1793–801। ডিওআই:10.1172/JCI29069। পিএমআইডি 16823477। পিএমসি 1483173 । অজানা প্যারামিটার
|month=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - ↑ Dentali F, Squizzato A, Ageno W (২০০৯)। "The metabolic syndrome as a risk factor for venous and arterial thrombosis"। Semin. Thromb. Hemost.। 35 (5): 451–7। ডিওআই:10.1055/s-0029-1234140। পিএমআইডি 19739035। অজানা প্যারামিটার
|month=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - ↑ Yusuf S, Hawken S, Ounpuu S, Dans T, Avezum A, Lanas F, McQueen M, Budaj A, Pais P, Varigos J, Lisheng L, INTERHEART Study Investigators. (২০০৪)। "Effect of potentially modifiable risk factors associated with myocardial infarction in 52 countries (the INTERHEART study): Case-control study"। Lancet। 364 (9438): 937–52। ডিওআই:10.1016/S0140-6736(04)17018-9। পিএমআইডি 15364185।
- ↑ Darvall KA, Sam RC, Silverman SH, Bradbury AW, Adam DJ (২০০৭)। "Obesity and thrombosis"। Eur J Vasc Endovasc Surg। 33 (2): 223–33। ডিওআই:10.1016/j.ejvs.2006.10.006। পিএমআইডি 17185009। অজানা প্যারামিটার
|month=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - ↑ ক খ গ ঘ ঙ Yosipovitch G, DeVore A, Dawn A (২০০৭)। "Obesity and the skin: skin physiology and skin manifestations of obesity"। J. Am. Acad. Dermatol.। 56 (6): 901–16; quiz 917–20। ডিওআই:10.1016/j.jaad.2006.12.004। পিএমআইডি 17504714। অজানা প্যারামিটার
|month=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - ↑ Hahler B (২০০৬)। "An overview of dermatological conditions commonly associated with the obese patient"। Ostomy Wound Manage। 52 (6): 34–6, 38, 40 passim। পিএমআইডি 16799182। অজানা প্যারামিটার
|month=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - ↑ ক খ গ Arendas K, Qiu Q, Gruslin A (২০০৮)। "Obesity in pregnancy: pre-conceptional to postpartum consequences"। J Obstet Gynaecol Can। 30 (6): 477–88। পিএমআইডি 18611299। অজানা প্যারামিটার
|month=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - ↑ Anand G, Katz PO (২০০৮)। "Gastroesophageal reflux disease and obesity"। Rev Gastroenterol Disord। 8 (4): 233–9। পিএমআইডি 19107097।
- ↑ Harney D, Patijn J (২০০৭)। "Meralgia paresthetica: diagnosis and management strategies"। Pain Med। 8 (8): 669–77। ডিওআই:10.1111/j.1526-4637.2006.00227.x। পিএমআইডি 18028045।
- ↑ Bigal ME, Lipton RB (২০০৮)। "Obesity and chronic daily headache"। Curr Pain Headache Rep। 12 (1): 56–61। ডিওআই:10.1007/s11916-008-0011-8। পিএমআইডি 18417025। অজানা প্যারামিটার
|month=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - ↑ Sharifi-Mollayousefi A, Yazdchi-Marandi M, Ayramlou H; ও অন্যান্য (২০০৮)। "Assessment of body mass index and hand anthropometric measurements as independent risk factors for carpal tunnel syndrome"। Folia Morphol. (Warsz)। 67 (1): 36–42। পিএমআইডি 18335412। অজানা প্যারামিটার
|month=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - ↑ Beydoun MA, Beydoun HA, Wang Y (২০০৮)। "Obesity and central obesity as risk factors for incident dementia and its subtypes: A systematic review and meta-analysis"। Obes Rev। 9 (3): 204–18। ডিওআই:10.1111/j.1467-789X.2008.00473.x। পিএমআইডি 18331422। অজানা প্যারামিটার
|month=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - ↑ Wall M (২০০৮)। "Idiopathic intracranial hypertension (pseudotumor cerebri)"। Curr Neurol Neurosci Rep। 8 (2): 87–93। ডিওআই:10.1007/s11910-008-0015-0। পিএমআইডি 18460275। অজানা প্যারামিটার
|month=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - ↑ Munger, KL; Chitnis, T; Ascherio, A. (২০০৯)। "Body size and risk of MS in two cohorts of US women"। Neurology। 73 (19): 1543–50। ডিওআই:10.1212/WNL.0b013e3181c0d6e0। পিএমআইডি 19901245। পিএমসি 2777074 । অজানা প্যারামিটার
|author-separator=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - ↑ Calle EE, Rodriguez C, Walker-Thurmond K, Thun MJ (২০০৩)। "Overweight, obesity, and mortality from cancer in a prospectively studied cohort of U.S. adults"। N. Engl. J. Med.। 348 (17): 1625–38। ডিওআই:10.1056/NEJMoa021423। পিএমআইডি 12711737। অজানা প্যারামিটার
|month=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - ↑ ক খ গ Poulain M, Doucet M, Major GC; ও অন্যান্য (২০০৬)। "The effect of obesity on chronic respiratory diseases: pathophysiology and therapeutic strategies"। CMAJ। 174 (9): 1293–9। ডিওআই:10.1503/cmaj.051299। পিএমআইডি 16636330। পিএমসি 1435949 । অজানা প্যারামিটার
|month=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - ↑ Choi HK, Atkinson K, Karlson EW, Curhan G (২০০৫)। "Obesity, weight change, hypertension, diuretic use, and risk of gout in men: the health professionals follow-up study"। Arch. Intern. Med.। 165 (7): 742–8। ডিওআই:10.1001/archinte.165.7.742। পিএমআইডি 15824292। অজানা প্যারামিটার
|month=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - ↑ Tukker A, Visscher T, Picavet H (২০০৮)। "Overweight and health problems of the lower extremities: osteoarthritis, pain and disability"। Public Health Nutr। 12 (3): 1–10। ডিওআই:10.1017/S1368980008002103। পিএমআইডি 18426630। অজানা প্যারামিটার
|month=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - ↑ Molenaar EA, Numans ME, van Ameijden EJ, Grobbee DE (২০০৮)। "[Considerable comorbidity in overweight adults: results from the Utrecht Health Project]"। Ned Tijdschr Geneeskd (Dutch; Flemish ভাষায়)। 152 (45): 2457–63। পিএমআইডি 19051798। অজানা প্যারামিটার
|month=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - ↑ Esposito K, Giugliano F, Di Palo C, Giugliano G, Marfella R, D'Andrea F, D'Armiento M, Giugliano D (২০০৪)। "Effect of lifestyle changes on erectile dysfunction in obese men: A randomized controlled trial"। JAMA। 291 (24): 2978–84। ডিওআই:10.1001/jama.291.24.2978। পিএমআইডি 15213209।
- ↑ Hunskaar S (২০০৮)। "A systematic review of overweight and obesity as risk factors and targets for clinical intervention for urinary incontinence in women"। Neurourol. Urodyn.। 27 (8): 749–57। ডিওআই:10.1002/nau.20635। পিএমআইডি 18951445।
- ↑ Ejerblad E, Fored CM, Lindblad P, Fryzek J, McLaughlin JK, Nyrén O (২০০৬)। "Obesity and risk for chronic renal failure"। J. Am. Soc. Nephrol.। 17 (6): 1695–702। ডিওআই:10.1681/ASN.2005060638। পিএমআইডি 16641153।
- ↑ Makhsida N, Shah J, Yan G, Fisch H, Shabsigh R (২০০৫)। "Hypogonadism and metabolic syndrome: Implications for testosterone therapy"। J. Urol.। 174 (3): 827–34। ডিওআই:10.1097/01.ju.0000169490.78443.59। পিএমআইডি 16093964। অজানা প্যারামিটার
|month=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - ↑ ক খ Schmidt DS, Salahudeen AK (২০০৭)। "Obesity-survival paradox-still a controversy?"। Semin Dial। 20 (6): 486–92। ডিওআই:10.1111/j.1525-139X.2007.00349.x। পিএমআইডি 17991192।
- ↑ ক খ U.S. Preventive Services Task Force (২০০৩)। "Behavioral counseling in primary care to promote a healthy diet: recommendations and rationale"। Am Fam Physician। 67 (12): 2573–6। পিএমআইডি 12825847। অজানা প্যারামিটার
|month=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) [অকার্যকর সংযোগ] - ↑ Habbu A, Lakkis NM, Dokainish H (২০০৬)। "The obesity paradox: Fact or fiction?"। Am. J. Cardiol.। 98 (7): 944–8। ডিওআই:10.1016/j.amjcard.2006.04.039। পিএমআইডি 16996880। অজানা প্যারামিটার
|month=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - ↑ Romero-Corral A, Montori VM, Somers VK; ও অন্যান্য (২০০৬)। "Association of bodyweight with total mortality and with cardiovascular events in coronary artery disease: A systematic review of cohort studies"। Lancet। 368 (9536): 666–78। ডিওআই:10.1016/S0140-6736(06)69251-9। পিএমআইডি 16920472।
- ↑ Oreopoulos A, Padwal R, Kalantar-Zadeh K, Fonarow GC, Norris CM, McAlister FA (২০০৮)। "Body mass index and mortality in heart failure: A meta-analysis"। Am. Heart J.। 156 (1): 13–22। ডিওআই:10.1016/j.ahj.2008.02.014। পিএমআইডি 18585492। অজানা প্যারামিটার
|month=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - ↑ Oreopoulos A, Padwal R, Norris CM, Mullen JC, Pretorius V, Kalantar-Zadeh K (২০০৮)। "Effect of obesity on short- and long-term mortality postcoronary revascularization: A meta-analysis"। Obesity (Silver Spring)। 16 (2): 442–50। ডিওআই:10.1038/oby.2007.36। পিএমআইডি 18239657। অজানা প্যারামিটার
|month=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - ↑ Diercks DB, Roe MT, Mulgund J; ও অন্যান্য (২০০৬)। "The obesity paradox in non-ST-segment elevation acute coronary syndromes: Results from the Can Rapid risk stratification of Unstable angina patients Suppress ADverse outcomes with Early implementation of the American College of Cardiology/American Heart Association Guidelines Quality Improvement Initiative"। Am Heart J। 152 (1): 140–8। ডিওআই:10.1016/j.ahj.2005.09.024। পিএমআইডি 16824844। অজানা প্যারামিটার
|month=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;CADG2006
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ Bleich S, Cutler D, Murray C, Adams A (২০০৮)। "Why is the developed world obese?"। Annu Rev Public Health। 29: 273–95। ডিওআই:10.1146/annurev.publhealth.29.020907.090954। পিএমআইডি 18173389।
- ↑ Drewnowski A, Specter SE (২০০৪)। "Poverty and obesity: the role of energy density and energy costs"। Am. J. Clin. Nutr.। 79 (1): 6–16। পিএমআইডি 14684391। অজানা প্যারামিটার
|month=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - ↑ Nestle M, Jacobson MF (২০০০)। "Halting the obesity epidemic: A public health policy approach"। Public Health Rep। 115 (1): 12–24। ডিওআই:10.1093/phr/115.1.12। পিএমআইডি 10968581। পিএমসি 1308552 ।
- ↑ James WP (২০০৮)। "The fundamental drivers of the obesity epidemic"। Obes Rev। 9 Suppl 1: 6–13। ডিওআই:10.1111/j.1467-789X.2007.00432.x। পিএমআইডি 18307693। অজানা প্যারামিটার
|month=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - ↑ Keith SW, Redden DT, Katzmarzyk PT; ও অন্যান্য (২০০৬)। "Putative contributors to the secular increase in obesity: Exploring the roads less traveled"। Int J Obes (Lond)। 30 (11): 1585–94। ডিওআই:10.1038/sj.ijo.0803326। পিএমআইডি 16801930।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ "EarthTrends: Nutrition: Calorie supply per capita"। World Resources Institute। সংগ্রহের তারিখ Oct. 18, 2009। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|সংগ্রহের-তারিখ=
(সাহায্য) - ↑ "USDA: frsept99b"। United States Department of Agriculture। সংগ্রহের তারিখ জানুয়ারি ১০, ২০০৯।
- ↑ "Diet composition and obesity among Canadian adults"। Statistics Canada।
- ↑ National Control for Health Statistics। "Nutrition For Everyone"। Centers for Disease Control and Prevention। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৭-০৯।
- ↑ Marantz PR, Bird ED, Alderman MH (২০০৮)। "A call for higher standards of evidence for dietary guidelines"। Am J Prev Med। 34 (3): 234–40। ডিওআই:10.1016/j.amepre.2007.11.017। পিএমআইডি 18312812। অজানা প্যারামিটার
|month=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - ↑ Flegal KM, Carroll MD, Ogden CL, Johnson CL (২০০২)। "Prevalence and trends in obesity among US adults, 1999–2000"। JAMA। 288 (14): 1723–1727। ডিওআই:10.1001/jama.288.14.1723। পিএমআইডি 12365955। অজানা প্যারামিটার
|month=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - ↑ Wright JD, Kennedy-Stephenson J, Wang CY, McDowell MA, Johnson CL (২০০৪)। "Trends in intake of energy and macronutrients—United States, 1971–2000"। MMWR Morb Mortal Wkly Rep। 53 (4): 80–2। পিএমআইডি 14762332। অজানা প্যারামিটার
|month=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - ↑ Caballero B (২০০৭)। "The global epidemic of obesity: An overview"। Epidemiol Rev। 29: 1–5। ডিওআই:10.1093/epirev/mxm012। পিএমআইডি 17569676।
- ↑ Malik VS, Schulze MB, Hu FB (২০০৬)। "Intake of sugar-sweetened beverages and weight gain: a systematic review"। Am. J. Clin. Nutr.। 84 (2): 274–88। পিএমআইডি 16895873। অজানা প্যারামিটার
|month=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - ↑ Olsen NJ, Heitmann BL (২০০৯)। "Intake of calorically sweetened beverages and obesity"। Obes Rev। 10 (1): 68–75। ডিওআই:10.1111/j.1467-789X.2008.00523.x। পিএমআইডি 18764885। অজানা প্যারামিটার
|month=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - ↑ Rosenheck R (২০০৮)। "Fast food consumption and increased caloric intake: a systematic review of a trajectory towards weight gain and obesity risk"। Obes Rev। 9 (6): 535–47। ডিওআই:10.1111/j.1467-789X.2008.00477.x। পিএমআইডি 18346099। অজানা প্যারামিটার
|month=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - ↑ Lin BH, Guthrie J and Frazao E (১৯৯৯)। "Nutrient contribution of food away from home"। Frazão E। Agriculture Information Bulletin No. 750: America's Eating Habits: Changes and Consequences। Washington, DC: US Department of Agriculture, Economic Research Service। পৃষ্ঠা 213–239।
- ↑ Pollan, Michael (২২ এপ্রিল ২০০৭)। "You Are What You Grow"। New York Times। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৭-৩০।
- ↑ Kopelman and Caterson 2005:324.
- ↑ "Metabolism alone doesn't explain how thin people stay thin" (registration required)। John Schieszer। The Medical Post। সংগ্রহের তারিখ ডিসেম্বর ৩১, ২০০৮।
- ↑ Seidell 2005 p.10
- ↑ ক খ "WHO: Obesity and overweight"। World Health Organization। সংগ্রহের তারিখ জানুয়ারি ১০, ২০০৯।
- ↑ ক খ গ "WHO | Physical Inactivity: A Global Public Health Problem"। World Health Organization। সংগ্রহের তারিখ ফেব্রুয়ারি ২২, ২০০৯।
- ↑ ক খ Ness-Abramof R, Apovian CM (২০০৬)। "Diet modification for treatment and prevention of obesity"। Endocrine। 29 (1): 5–9। ডিওআই:10.1385/ENDO:29:1:135। পিএমআইডি 16622287। অজানা প্যারামিটার
|month=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - ↑ Salmon J, Timperio A (২০০৭)। "Prevalence, trends and environmental influences on child and youth physical activity"। Med Sport Sci। 50: 183–99। ডিওআই:10.1159/000101391। পিএমআইডি 17387258।
- ↑ Borodulin K, Laatikainen T, Juolevi A, Jousilahti P (২০০৮)। "Thirty-year trends of physical activity in relation to age, calendar time and birth cohort in Finnish adults"। Eur J Public Health। 18 (3): 339–44। ডিওআই:10.1093/eurpub/ckm092। পিএমআইডি 17875578। অজানা প্যারামিটার
|month=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - ↑ Brownson RC, Boehmer TK, Luke DA (২০০৫)। "Declining rates of physical activity in the United States: what are the contributors?"। Annu Rev Public Health। 26: 421–43। ডিওআই:10.1146/annurev.publhealth.26.021304.144437। পিএমআইডি 15760296।
- ↑ Gortmaker SL, Must A, Sobol AM, Peterson K, Colditz GA, Dietz WH (১৯৯৬)। "Television viewing as a cause of increasing obesity among children in the United States, 1986–1990"। Arch Pediatr Adolesc Med। 150 (4): 356–62। পিএমআইডি 8634729। অজানা প্যারামিটার
|month=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - ↑ Vioque J, Torres A, Quiles J (২০০০)। "Time spent watching television, sleep duration and obesity in adults living in Valencia, Spain"। Int. J. Obes. Relat. Metab. Disord.। 24 (12): 1683–8। ডিওআই:10.1038/sj.ijo.0801434। পিএমআইডি 11126224। অজানা প্যারামিটার
|month=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - ↑ Tucker LA, Bagwell M (১৯৯১)। "Television viewing and obesity in adult females" (PDF)। Am J Public Health। 81 (7): 908–11। ডিওআই:10.2105/AJPH.81.7.908। পিএমআইডি 2053671। পিএমসি 1405200 । অজানা প্যারামিটার
|month=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - ↑ "Media + Child and Adolescent Health: A Systematic Review" (pdf)। Ezekiel J. Emanuel। Common Sense Media। ২০০৮। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ৬, ২০০৯।
- ↑ Mary Jones। "Case Study: Cataplexy and SOREMPs Without Excessive Daytime Sleepiness in Prader Willi Syndrome. Is This the Beginning of Narcolepsy in a Five Year Old?"। European Society of Sleep Technologists। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ৬, ২০০৯।
তথ্যসূত্র
- Bhargava, Alok; Guthrie, J. (২০০২)। "Unhealthy eating habits, physical exercise and macronutrient intakes are predictors of anthropometric indicators in the Women's Health Trial: Feasibility Study in Minority Populations"। British Journal of Nutrition। 88 (6): 719–728। ডিওআই:10.1079/BJN2002739। পিএমআইডি 12493094।
- Bhargava, Alok (২০০৬)। "Fiber intakes and anthropometric measures are predictors of circulating hormone, triglyceride, and cholesterol concentration in the Women's Health Trial"। Journal of Nutrition। 136 (8): 2249–2254। পিএমআইডি 16857849।
- Jebb S. and Wells J. Measuring body composition in adults and children In:Peter G. Kopelman, Ian D. Caterson, Michael J. Stock, William H. Dietz (২০০৫)। Clinical obesity in adults and children: In Adults and Children। Blackwell Publishing। পৃষ্ঠা 12–28। আইএসবিএন 140-511672-2।
- Kopelman P., Caterson I. An overview of obesity management In:Peter G. Kopelman, Ian D. Caterson, Michael J. Stock, William H. Dietz (২০০৫)। Clinical obesity in adults and children: In Adults and Children। Blackwell Publishing। পৃষ্ঠা 319–326। আইএসবিএন 140-511672-2।
- National Heart, Lung, and Blood Institute (NHLBI) (১৯৯৮)। Clinical Guidelines on the Identification, Evaluation, and Treatment of Overweight and Obesity in Adults (PDF)। International Medical Publishing, Inc। আইএসবিএন 1-58808-002-1।
- "Obesity: guidance on the prevention, identification, assessment and management of overweight and obesity in adults and children" (pdf)। National Institute for Health and Clinical Excellence(NICE)। National Health Services (NHS)। ২০০৬। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ৮, ২০০৯।
- Puhl R., Henderson K., and Brownell K. Social consequences of obesity In:Peter G. Kopelman, Ian D. Caterson, Michael J. Stock, William H. Dietz (২০০৫)। Clinical obesity in adults and children: In Adults and Children। Blackwell Publishing। পৃষ্ঠা 29–45। আইএসবিএন 140-511672-2।
- Seidell JC. Epidemiology — definition and classification of obesity In:Peter G. Kopelman, Ian D. Caterson, Michael J. Stock, William H. Dietz (২০০৫)। Clinical obesity in adults and children: In Adults and Children। Blackwell Publishing। পৃষ্ঠা 3–11। আইএসবিএন 140-511672-2।
- World Health Organization (WHO) (২০০০)। Technical report series 894: Obesity: Preventing and managing the global epidemic. (PDF)। Geneva: World Health Organization। আইএসবিএন 92-4-120894-5।
আরও পড়ুন
- Fumento, Michael (১৯৯৭)। The Fat of the Land: Our Health Crises and How Overweight Americans can Help Themselves। New York: Penguin Books। আইএসবিএন 0-140261443।
- Keller, Kathleen (২০০৮)। Encyclopedia of Obesity। Thousand Oaks, Calif: Sage Publications, Inc। আইএসবিএন 1-4129-5238-7।
- Kolata, Gina (২০০৭)। Rethinking Thin: The new science of weight loss – and the myths and realities of dieting। Picador। আইএসবিএন 0-312-42785-9।
- Kopelman, Peter G. (২০০৫)। Clinical obesity in adults and children: In Adults and Children। Blackwell Publishing। পৃষ্ঠা 493। আইএসবিএন 140-511672-2।
- Levy-Navarro, Elena (২০০৮)। The Culture of Obesity in Early and Late Modernity। Palgrave Macmillan। আইএসবিএন 0230601235।
- Pool, Robert (২০০১)। Fat: Fighting the Obesity Epidemic। Oxford, UK: Oxford University Press। আইএসবিএন 0-19-511853-7।
বহিঃসংযোগ
- World Health Organization – Obesity pages
- Diet, Nutrition and the prevention of chronic diseases (including obesity) by a Joint WHO/FAO Expert consultation (2003).
- Obesity at Endotext.org
- International Task Force on Obesity
- Obesity at the Centers for Disease Control (USA)
- The Obesity Society (USA)
- National Obesity Forum (UK)
- Australasian Society for the Study of Obesity
উল্লেখপঞ্জি [627] [628] গ্রন্থপঞ্জি
[629]
• জেব এস. অ্যান্ড ওয়েলস জে. মেজারিং বডি কম্পজিসন ইন অ্যাডালটস অ্যান্ড চিলড্রেন ইন:[630] • কপেল্ম্যান পি., ক্যাটারসন আই. অ্যান ওভারভিউ অফ ওবেসিটি ম্যানেজমেন্ট ইন:[631] • [632] • [633] • ফুল আর., হেন্ডারসন কে., অ্যান্ড ব্রুনিল কে. সোসাল কোন্সিকুএন্স অফ ওবেসিটি ইন:[634] • সেইডেল জেসি. এপিডেমোলোজি — ডেফিনেসন অ্যান্ড ক্লাসিফিকেসন অফ ওবেসিটি ইন:[635] • [636] [637] আরও পড়ার জন্য
• [638] • [639] • [640] • [641] • [642] • [643]
বহিঃসূত্রাবলী [644]
• ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানায়জেশন – ওবেসিটি পেজেস • খাদ্যসংযম, পুষ্টিকর খাদ্য এবং দুরারোগ্য রোগ প্রতিরোধ (অতিস্থূলতা অন্তর্ভুক্ত)WHO/FAO এর যৌথ দক্ষ পরামর্শ (2003). • Endotext.org এ অতিস্থূলতা • অতিস্থূলতার ওপর আন্তর্জাতিক টাস্ক ফোর্স • সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল (USA)অতিস্থূলতা • দ্য ওবেসিটি সোসাইটি (USA) • ন্যাশনাল ওবেসিটি ফোরাম (UK) • অস্ত্রালাসিয়ান সোসাইটি ফর দ্য স্টাডি অফ ওবেসিটি [645] অতিস্থূলতা
বিপাকীয় বিশৃঙ্খলা
পুষ্টি
বারিয়াট্রিকস
দৈহিক আকৃতি
HIDDEN TEXT This section contains tooltips, titles and other text that are usually hidden in the body of the HTML page. This text should be translated to bring the entire page into your language. HTML ATTRIBUTES 46 kg/m2 সহ একটি স্থুলকায় ব্যক্তির দৈহিক আকৃতির সূচী : ওজন 146 কেজি (322 এলবি), উচ্চতা 177 সেমি (5 এফটি 10 আই ন) BMI দ্বারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পুরুষদের মৃত্যুর আপেক্ষিক ঝুকি.[১] BMI দ্বারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মহিলাদের মৃত্যুর আপেক্ষিক ঝুকি.[১] 1961 তে প্রতি ব্যক্তির প্রতি দিনে খাদ্যাভ্যাসগত শক্তির প্রাপ্যতার মানচিত্র (kcal/person/day)[২][177][178][179][180][181][182][183][184][185][186][187][188][189][190][191][192] 2001–2003 প্রতি ব্যক্তির প্রতি দিনে খাদ্যাভ্যাস শক্তির প্রাপ্যতা মানচিত্র(kcal/person/day)[৩][194][195][196][197][198][199][200][201][202][203][204][205][206][207][208][209] 1961 থেকে 2002 বিশ্বর গড় মাথাপিছু শক্তির ব্যবহার [২] 1680 জুয়ান কারেন দে মিরান্ডার দ্বারা অঙ্কিত প্রাডের-উইলি রোগে আক্রান্ত একটি বালিকার চিত্র [৪] লেপটিন তৈরি করতে অক্ষমতা জনিত মেদবাহুল্ই আক্রান্ত একটি ইদুর (বাঁদিক) এর সহিত একটি সাধারণ ইদুরের (ডানদিক) একটি তুলনা লেপটিন মলেকিউল এর একটি গ্রাফিক চিত্রণ মেদবাহুল্য চিকিত্সার জন্য দুটো সবচেয়ে ব্যবহৃত ঔসধ: ওরলিস্ট্যাট (জেনিকাল) এবং সিবুটরামাইন (মেরিডিয়া) বিশ্বঅতিস্থূলতা প্রবলতা পুরুষদের মধ্যে[৫] [453][454][455][456][457][458][459][460][461][462][463][464][465][466][467] বিশ্বঅতিস্থূলতা প্রবলতা মহিলাদের মধ্যে [৫][468][469][470][471][472][473][474][475][476][477][478][479][480][481][482] স্থুলকায় ব্যক্তির জন্য সুবিধার বিশেষ সরঞ্জাম যেমন যতটা সম্ভব বড় চেয়ার এর উপলব্ধতা আবশ্যকীয়.[৬] 24,000–22,000 বিসি তে উইলেনড্রফ এর ভেনাস সৃষ্টি হযেছিল মধ্য যুগ এবং রেনেসাঁসের সময়অতিস্থূলতা প্রায়শই সম্পদের চিহ্ন রূপে দেখা যেত এবং তুলনামূলকভাবে আধিরিকারিকদের ক্ষেত্রে সাধারণ ধরে নেওয়া হত : দ্য টাসকান জেনারেল অ্যালেক্স্জেনড্র দেল বোরো, এই নামটি চার্লস মেলিন এর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, 1645[৭] মাত্রাতিরিক্ত ওজনের মানুষ উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় রাষ্ট্রপতি উইলিয়াম হওয়ার্ড টাফট যিনি অতীতে বহুবার বিদ্রুপের স্বীকার হয়েছেন.