জলবায়ু পরিবর্তনের রাজনীতি: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
সম্পাদনা সারাংশ নেই
ট্যাগ: দৃশ্যমান সম্পাদনা মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা উচ্চতর মোবাইল সম্পাদনা
সম্পাদনা সারাংশ নেই
ট্যাগ: দৃশ্যমান সম্পাদনা মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা উচ্চতর মোবাইল সম্পাদনা
১৩৩ নং লাইন: ১৩৩ নং লাইন:


==== সবুজ পুনরুদ্ধার ====
==== সবুজ পুনরুদ্ধার ====
সবুজ পুনরুদ্ধার পরিকল্পনা বলতে এমন কিছু পরিবেশগত, নিয়ন্ত্রক ও আর্থিক সংস্কারের কথা বোঝায় যা কোনো অর্থনৈতিক সংকটের পরবর্তীতে (যেমন কোভিড-১৯ মহামারী বা বৈশ্বিক আর্থিক সংকট- GFC) দেশের সমৃদ্ধি পুনরুদ্ধারের কাজে ব্যবহৃত হয়। একইসাথে এই সংস্কারগুলো যেন পরিবেশের উপরও ইতিবাচক প্রভাব ফেলে সেটা নিশ্চিত করা হয়। এর অন্তর্ভুক্ত বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে নবায়নযোগ্য জ্বালানি, জ্বালানির কার্যকর ব্যবহার, প্রকৃতি-ভিত্তিক সমাধান, টেকসই পরিবহন, সবুজ উদ্ভাবন এবং সবুজ কর্মসংস্থান ইত্যাদি।
সবুজ পুনরুদ্ধার পরিকল্পনা বলতে এমন কিছু পরিবেশগত, নিয়ন্ত্রক ও আর্থিক সংস্কারের কথা বোঝায় যা কোনো অর্থনৈতিক সংকটের পরবর্তীতে (যেমন কোভিড-১৯ মহামারী বা বৈশ্বিক আর্থিক সংকট- GFC) দেশের সমৃদ্ধি পুনরুদ্ধারের কাজে ব্যবহৃত হয়। একইসাথে এই সংস্কারগুলো যেন পরিবেশের উপরও ইতিবাচক প্রভাব ফেলে সেটা নিশ্চিত করা হয়। এর অন্তর্ভুক্ত বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে নবায়নযোগ্য জ্বালানি, জ্বালানির কার্যকর ব্যবহার, প্রকৃতি-ভিত্তিক সমাধান, টেকসই পরিবহন, সবুজ উদ্ভাবন এবং সবুজ কর্মসংস্থান ইত্যাদি।<ref name="auto">{{cite journal|last2=Murdock|first2=Em|date=10 March 2020|title=Are We Building Back Better? Evidence from 2020 and pathways to green inclusive spending|url=https://wedocs.unep.org/bitstream/handle/20.500.11822/35281/AWBBB.pdf|last1=O'Callaghan|first1=Brian|journal=United Nations Environment Programme}}</ref><ref>{{cite journal|last2=O'Callaghan|first2=Brian|year=2020|title=Will COVID-19 fiscal recovery packages accelerate or retard progress on climate change?|page=S359–S381|doi=10.1093/oxrep/graa015|doi-access=free|last1=Hepburn|first1=Cameron|last3=Stern|first3=Nicholas|last4=Stiglitz|first4=Joseph|last5=Zenghelis|first5=Dimitri|journal=Oxford Review of Economic Policy|volume=36|issue=Supplement_1}}</ref><ref>{{cite journal|last2=Yau|first2=Nigel|year=2022|title=How Stimulating Is a Green Stimulus? The Economic Attributes of Green Fiscal Spending|url=https://www.annualreviews.org/doi/10.1146/annurev-environ-112420-020640|pages=697–723|doi=10.1146/annurev-environ-112420-020640|last1=O'Callaghan|first1=Brian|last3=Hepburn|first3=Cameron|journal=Annual Review of Environment and Resources|volume=47|s2cid=249833907}}</ref><ref>{{Cite news|url=https://www.reuters.com/business/us-economy-contracted-192-during-covid-19-pandemic-recession-2021-07-29/|title=U.S. economy contracted 19.2% during COVID-19 pandemic recession|last=Mutikani|first=Lucia|date=29 July 2021|work=Reuters|access-date=8 November 2021|language=en}}</ref>


কোভিড-১৯ মহামারীর প্রতিক্রিয়ায় সবুজ পুনরুদ্ধারকে সমর্থন এসেছে বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সরকার, কর্মী এবং শিক্ষা জগত থেকে। বৈশ্বিক আর্থিক সংকটের সময় যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল, এই প্যাকেজগুলোর লক্ষ্যও অনুরূপ- যেন মন্দার বিরুদ্ধে নেওয়া ব্যবস্থাগুলো জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলাতেও সাহায্য করে। এইসব কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে কয়লা, তেল এবং গ্যাসের ব্যবহার হ্রাস করা, পরিচ্ছন্ন পরিবহন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, পরিবেশবান্ধব ভবন নির্মাণ এবং টেকসই কর্পোরেট বা আর্থিক অনুশীলন প্রচলন। সবুজ পুনরুদ্ধার উদ্যোগগুলো জাতিসংঘ (UN) এবং অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (OECD) দ্বারা সমর্থিত।
কোভিড-১৯ মহামারীর প্রতিক্রিয়ায় সবুজ পুনরুদ্ধারকে সমর্থন এসেছে বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সরকার, কর্মী এবং শিক্ষা জগত থেকে।<ref>{{Cite web|language=en|title=Boosting the EU's green recovery: Commission invests €1 billion in innovative clean technology projects|url=https://ec.europa.eu/commission/presscorner/home/en|access-date=2023-10-30|website=European Commission - European Commission}}</ref><ref>e.g. Tom Steyer, '[https://www.tomsteyer.com/california-economic-recovery/ A fair, green recovery for all Californians]'; New York City, [https://www1.nyc.gov/site/cpp/our-programs/covid19-green-recovery.page COVID-19 Green Recovery].</ref> বৈশ্বিক আর্থিক সংকটের সময় যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল,<ref>{{cite journal|year=2010|title=Green Stimulus, Green Recovery and Global Imbalances|url=https://econpapers.repec.org/article/wejwldecn/420.htm|pages=149–177|last1=Barbier|first1=Ed|journal=World Economics|volume=11|issue=2}}</ref> এই প্যাকেজগুলোর লক্ষ্যও অনুরূপ- যেন মন্দার বিরুদ্ধে নেওয়া ব্যবস্থাগুলো জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলাতেও সাহায্য করে। এইসব কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে কয়লা, তেল এবং গ্যাসের ব্যবহার হ্রাস করা, পরিচ্ছন্ন পরিবহন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, পরিবেশবান্ধব ভবন নির্মাণ এবং টেকসই কর্পোরেট বা আর্থিক অনুশীলন প্রচলন। সবুজ পুনরুদ্ধার উদ্যোগগুলো জাতিসংঘ (UN) এবং অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (OECD) দ্বারা সমর্থিত।<ref>{{Cite news|url=https://www.businessgreen.com/news/4016111/oecd-institutions-demand-green-economic-recovery-covid-19|title=OECD and UN institutions demand green economic recovery from Covid-19|last=Holder|first=Michael|date=2020-06-05|access-date=2023-07-19|archive-url=https://web.archive.org/web/20200619142429/https://www.businessgreen.com/news/4016111/oecd-institutions-demand-green-economic-recovery-covid-19|archive-date=19 June 2020|url-status=live|language=en|website=Business Green|url-access=subscription}}</ref> জাতীয় আর্থিক প্রতিক্রিয়াগুলো লাইভ ট্র্যাক করার জন্য অনেকগুলো বৈশ্বিক উদ্যোগ রয়েছে। এরমধ্যে আছে গ্লোবাল রিকভারি অবজারভেটরি (অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল- IMF এর একটি উদ্যোগ),<ref>{{cite web|publisher=University of Oxford, UNEP, and UNDP|title=Global Recovery Observatory|url=https://recovery.smithschool.ox.ac.uk/tracking/|website=Oxford University Economic Recovery Project}}</ref> এনার্জি পলিসি ট্র্যাকার<ref>{{cite web|title=Track public money for energy in recovery packages|url=https://www.energypolicytracker.org/|website=Energy Policy Tracker}}</ref> এবং OECD-এর গ্রিন রিকভারি ট্র্যাকার।<ref>{{cite web|date=22 December 2020|title=Focus on green recovery|url=https://www.oecd.org/coronavirus/en/themes/green-recovery|website=Organisation for Economic Co-operation and Development}}</ref>


২০২১ সালের মার্চের দিকে গ্লোবাল রিকভারি অবজারভেটরি তাদের বিশ্লেষণে দেখায় যে উদ্ধার তহবিলে মাত্র ১৮% বিনিয়োগ এবং মোট খরচের ২.৫% টেকসই উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছিল।<ref name="auto2">{{cite journal|last2=Murdock|first2=Em|date=10 March 2020|title=Are We Building Back Better? Evidence from 2020 and pathways to green inclusive spending|url=https://wedocs.unep.org/bitstream/handle/20.500.11822/35281/AWBBB.pdf|last1=O'Callaghan|first1=Brian|journal=United Nations Environment Programme}}</ref> ২০২১ সালের জুলাই মাসে, ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি এই বিশ্লেষণকে সমর্থন করে উল্লেখ করে যে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক উদ্ধার তহবিলের মাত্র ২% পরিচ্ছন্ন জ্বালানিতে খরচ করা হয়েছে।<ref>{{cite web|date=July 2021|title=Key findings – Sustainable Recovery Tracker – Analysis|url=https://www.iea.org/reports/sustainable-recovery-tracker/key-findings|url-status=dead|archive-url=https://web.archive.org/web/20210724144648/https://www.iea.org/reports/sustainable-recovery-tracker/key-findings|archive-date=24 July 2021|access-date=23 July 2021|website=IEA}}</ref> G20 দেশগুলো যে ১৪ ট্রিলিয়ন ডলার অর্থনৈতিক উদ্দীপনা হিসেবে ব্যয় করেছে, তার মাত্র ৬% এমন খাতে বরাদ্দ করা হয়েছে যা গ্রীনহাউস গ্যাস নির্গমন কমাতে সাহায্য করবে। এর মধ্যে রয়েছে বৈদ্যুতিক যান চালু করা, ভবনগুলোর জ্বালানি-দক্ষতা বাড়ানো এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবস্থা স্থাপন করা ইত্যাদি।<ref>{{Cite journal|last2=Miller|first2=Scot M.|date=2 March 2022|title=G20's US$14-trillion economic stimulus reneges on emissions pledges|pages=28–31|language=en|doi=10.1038/d41586-022-00540-6|pmid=35236968|doi-access=free|last1=Nahm|first1=Jonas M.|last3=Urpelainen|first3=Johannes|journal=Nature|volume=603|issue=7899|bibcode=2022Natur.603...28N|s2cid=247221463}}</ref>
জাতীয় আর্থিক প্রতিক্রিয়াগুলো লাইভ ট্র্যাক করার জন্য অনেকগুলো বৈশ্বিক উদ্যোগ রয়েছে। এরমধ্যে আছে গ্লোবাল রিকভারি অবজারভেটরি (অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল- IMF এর একটি উদ্যোগ), এনার্জি পলিসি ট্র্যাকার এবং OECD-এর গ্রিন রিকভারি ট্র্যাকার।

২০২১ সালের মার্চের দিকে গ্লোবাল রিকভারি অবজারভেটরি তাদের বিশ্লেষণে দেখায় যে উদ্ধার তহবিলে মাত্র ১৮% বিনিয়োগ এবং মোট খরচের ২.৫% টেকসই উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছিল। ২০২১ সালের জুলাই মাসে, ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি এই বিশ্লেষণকে সমর্থন করে উল্লেখ করে যে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক উদ্ধার তহবিলের মাত্র ২% পরিচ্ছন্ন জ্বালানিতে খরচ করা হয়েছে। G20 দেশগুলো যে ১৪ ট্রিলিয়ন ডলার অর্থনৈতিক উদ্দীপনা হিসেবে ব্যয় করেছে, তার মাত্র ৬% এমন খাতে বরাদ্দ করা হয়েছে যা গ্রীনহাউস গ্যাস নির্গমন কমাতে সাহায্য করবে। এর মধ্যে রয়েছে বৈদ্যুতিক যান চালু করা, ভবনগুলোর জ্বালানি-দক্ষতা বাড়ানো এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবস্থা স্থাপন করা ইত্যাদি।


=== প্রতিকূলতা ===
=== প্রতিকূলতা ===

১২:৩৬, ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

২০১৫ সালের নভেম্বর-ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের প্যারিস জলবায়ু সম্মেলনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদলের প্রধানগণ অংশগ্রহণ করেছিলেন।

জলবায়ু পরিবর্তনের রাজনীতি কীভাবে জলবায়ু পরিবর্তন এর সাথে প্রতিক্রিয়া করা উচিত সে সম্পর্কে বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির পরিণাম। বিশ্ব উষ্ণায়ন মূলত মানুষের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের ফলে সৃষ্ট গ্রিনহাউস গ্যাসের নির্গমনের কারণে ঘটে। বিশেষ করে জীবাশ্ম জ্বালানী পোড়ানো, সিমেন্ট ও ইস্পাত উৎপাদনের মতো কিছু শিল্প এবং কৃষি ও বনায়নের জন্য ভূমি ব্যবহার ইত্যাদির মাধ্যমে গ্রিনহাউস গ্যাস সৃষ্টি হয়। শিল্প বিপ্লবের পর থেকে, জীবাশ্ম জ্বালানী অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নের জন্য শক্তির প্রধান উৎস হয়ে উঠেছে। জীবাশ্ম জ্বালানী ও অন্যান্য কার্বন-নিবিড় শিল্পের কেন্দ্রীয়তার ফলে জলবায়ু-বান্ধব নীতির প্রতি ব্যাপক প্রতিরোধ গড়ে উঠেছে, যদিও এই ধরনের নীতি প্রয়োজনীয় সে বিষয়ে ব্যাপক বৈজ্ঞানিক ঐক্যমত রয়েছে।

জলবায়ু পরিবর্তন প্রথম রাজনৈতিক ইস্যু হিসেবে ১৯৭০-এর দশকে আবির্ভূত হয়। জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমনের প্রচেষ্টা ১৯৯০-এর দশক থেকে আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক এজেন্ডায় গুরুত্ব পেয়ে আসছে এবং জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়েও এটির সমাধানে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তন একটি জটিল বৈশ্বিক সমস্যা। নির্গমনের উৎপত্তিস্থল নির্বিশেষে গ্রিনহাউস গ্যাস (জিএইচজি) নির্গমন বিশ্বজুড়ে বিশ্ব উষ্ণায়নে অবদান রাখে। তবে বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাব কতটা মারাত্মক তা নির্ভর করে কোনো এলাকা বা অর্থনীতি কতটা এর প্রভাবের কাছে সংবেদনশীল তার উপর। সামগ্রিকভাবে, বিশ্ব উষ্ণায়নের নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে, যা বৃদ্ধি পেতে থাকলে আরও ভয়াবহ হবে বলে মনে করা হচ্ছে। জীবাশ্ম জ্বালানী এবং নবায়নযোগ্য শক্তি উভয় উৎস থেকে উপকৃত হওয়ার ক্ষমতা জাতি থেকে জাতিতে যথেষ্ট পরিবর্তিত হয়।

জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্যা সমাধানে বিভিন্ন দেশের ভিন্ন ভিন্ন দায়িত্ব, সুবিধা এবং জলবায়ু-সম্পর্কিত হুমকির কারণে প্রাথমিক জলবায়ু সম্মেলনগুলোতে খুব অল্প অগ্রগতি হয়েছিল। সেখানে সাধারণ উদ্দেশ্য বিবৃতি এবং উন্নত দেশগুলোর অবাধ্যতামূলক নির্গমন হ্রাসের প্রতিশ্রুতি ছাড়া খুব একটা কিছুই অর্জন করা সম্ভব হয়নি। তবে, একবিংশ শতাব্দীতে দুর্বল দেশগুলোর যেন জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে সক্ষম হয় সেজন্য 'জলবায়ু অর্থায়ন' (climate finance) এর মতো ব্যবস্থার উপর জোর দেয়া হয়েছে। কিছু দেশ ও স্থানীয় এলাকায় জলবায়ু-বান্ধব নীতি গ্রহণ করা হয়েছে যা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রতিশ্রুতির চেয়েও অনেক দূর এগিয়ে। তবে, স্থানীয়ভাবে গ্রিনহাউস গ্যাস (GHG) নির্গমন হ্রাসে যতই সাফল্য আসুক না কেন, সারা বিশ্বে GHG নির্গমনের মোট পরিমাণ না কমা পর্যন্ত বৈশ্বিক উষ্ণায়নকে ধীর করা সম্ভব নয়।

২০২০-এর দশকে প্রবেশের পর থেকে, জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে প্রাপ্ত শক্তিকে নবায়নযোগ্য শক্তি দ্বারা প্রতিস্থাপনের সম্ভাবনা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। কিছু দেশ বর্তমানে তাদের প্রায় সমস্ত বিদ্যুৎ নবায়নযোগ্য উৎস থেকে উৎপাদন করছে। জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকি সম্পর্কে জনসচেতনতা বেড়েছে, যার বড় অংশের কারণ যুব-নেতৃত্বাধীন সামাজিক আন্দোলন এবং চরম আবহাওয়া এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতার কারণে ঘটা বন্যা সহ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব স্পষ্ট হয়ে ওঠা। অনেক জরিপ দেখায় যে ভোটারদের একটি ক্রমবর্ধমান অংশ জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবেলাকে একটি উচ্চ অগ্রাধিকার হিসাবে সমর্থন করে, যা রাজনীতিবিদদের জলবায়ুমুখীনীতি গ্রহণের জন্য আরও সহজ করে তোলে। কোভিড-১৯ মহামারী এবং অর্থনৈতিক মন্দার কারণে "সবুজ পুনরুদ্ধার" (green recovery) এর ব্যাপক আহ্বান জানানো হয়েছে, এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো কিছু রাজনৈতিক শক্তি নীতি পরিবর্তনে জলবায়ু কর্মকাণ্ডকে সফলভাবে অন্তর্ভুক্ত করেছে। খোলাখুলি জলবায়ু পরিবর্তন অস্বীকার করা ২০১৯ সালের মধ্যে অনেক কম প্রভাবশালী একটি শক্তিতে পরিণত হয়েছিল, এবং বিরোধিতা এখন বিলম্বকে উৎসাহিতকরণ বা নিষ্ক্রিয়তার দিকে মনোযোগী হয়েছে।

নীতি বিতর্ক

অন্যান্য নীতি-নির্ধারণী বিতর্কের মতোই, জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে রাজনৈতিক আলোচনা মূলত কর্মপন্থাকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে।[১] জলবায়ু পরিবর্তনজনিত হুমকি কত জরুরি, বিভিন্ন সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়াগুলির বাস্তবায়নযোগ্যতা, সুবিধা এবং অসুবিধা — এই নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন মতামত রাজনৈতিক অঙ্গনকে উত্তাল রাখে। মূলত, এসব মতামতই জলবায়ু পরিবর্তনের সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়ার দিকগুলিকে নির্দেশ করে।[২]

রাজনৈতিক বক্তব্যকে দুইভাগে ভাগ করা যায়: ইতিবাচক এবং আদর্শগত বক্তব্য। সতর্কভাবে শব্দগুলির সংজ্ঞা এবং বৈজ্ঞানিক প্রমাণের মাধ্যমে সাধারণত ইতিবাচক বক্তব্যগুলি স্পষ্ট করা বা খণ্ডন করা যেতে পারে। কিন্তু "কী করা উচিত" সে সম্পর্কে আদর্শগত বক্তব্যগুলি প্রায়শই নৈতিকতার সাথে সম্পর্কিত এবং মূলত এসব বিচার-বিবেচনার বিষয়। অভিজ্ঞতা বলে, বিতর্কে অংশগ্রহণকারীরা যদি তাদের যুক্তির ইতিবাচক ও আদর্শগত অংশগুলিকে আলাদা করার চেষ্টা করেন এবং প্রথমে ইতিবাচক বিষয়গুলির ওপর ঐক্যমত্যে পৌঁছাতে পারেন, তবে তা বিতর্ককে এগিয়ে নিতে সাহায্য করে। বিতর্কের প্রাথমিক পর্যায়ে, অংশগ্রহণকারীরা যাদের প্রতিনিধিত্ব করেন তাদের স্বার্থের দিকে নজর রেখেই তাদের আদর্শগত অবস্থান নির্ধারণ করতে পারেন। ২০১৫ সালের প্যারিস সম্মেলনে ব্যতিক্রমী সাফল্য অর্জনে ক্রিশ্চিয়ানা ফিগারেস এবং অন্যান্য নেতৃবৃন্দ লক্ষ্য করেছিলেন যে অংশগ্রহণকারীরা যখন প্রতিযোগিতামূলক মানসিকতা থেকে বেরিয়ে, প্রাচুর্যভিত্তিক সহযোগিতামূলক মানসিকতার আদর্শগত অবস্থানে পৌঁছাতে পেরেছিলেন তখনই বিতর্ক অর্থবহভাবে এগিয়ে যায়।[৩][note ১]

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিক্রিয়াগুলি তিনটি শ্রেণিতে বিভক্ত করা যেতে পারে:[৪]

  • প্রশমন (Mitigation): গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন হ্রাস এবং কার্বন সিঙ্ক বাড়ানোর পদক্ষেপ।
  • অভিযোজন (Adaptation): বৈশ্বিক উষ্ণায়নের নেতিবাচক ফলাফল থেকে মানুষকে রক্ষা করার জন্য পদক্ষেপ।
  • সৌর ভূ-প্রকৌশল (Solar Geoengineering): যে প্রযুক্তি ব্যবহার করে সূর্যালোককে মহাকাশে ফেরৎ পাঠানো হবে।

বিংশ শতাব্দীতে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে বেশিরভাগ আন্তর্জাতিক বিতর্ক প্রায় পুরোপুরি প্রশমনের ওপর নিবদ্ধ ছিল। অভিযোজনে মনোযোগ দেওয়া একধরনের পরাজয়বাদী আচরণ হিসেবে বিবেচিত হতো। প্রশমনের তুলনায়, অভিযোজন বেশি স্থানীয় পর্যায়ের বিষয়, কারণ জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকি এবং সুযোগ পৃথিবীর বিভিন্ন অংশে ব্যাপকভাবে ভিন্ন। একবিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে, রাজনৈতিক বিতর্কে মনোযোগ এখনো প্রশমনের ওপর বেশি থাকলেও, এটিই আর একমাত্র লক্ষ্য নয়। অভিযোজনকে এখন ব্যাপকভাবে অপরিহার্য বলে মনে করা হয়। যদিও প্রধানত উচ্চ পর্যায়ে, বিষয়টি আন্তর্জাতিক আলোচনার অংশ। ২০০৯ সালের কোপেনহেগেন সম্মেলনে উন্নয়নশীল দেশগুলিকে প্রতি বছর ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের তহবিল সরবরাহ করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। প্যারিস সম্মেলনে এটা স্পষ্ট করা হয়েছিল যে এই অর্থ বরাদ্দে অভিযোজন ও প্রশমনের মধ্যে ভারসাম্য রাখা উচিত। তবে ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সম্পূর্ণ তহবিল সরবরাহ করা হয়নি, এবং যেটুকু দেওয়া হয়েছে তা প্রধানত প্রশমন প্রকল্পে ব্যয় করা হয়েছে।[৫][৬] ২০১৯ সালের মধ্যে, সৌর ভূ-প্রকৌশলের সম্ভাবনাগুলিও ক্রমবর্ধমানভাবে আলোচিত হচ্ছিল এবং ভবিষ্যতে বিতর্কে এর গুরুত্ব বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।[৭][৮]

জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমনের উপায় নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক শাসন কাঠামোর ওপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয়। আন্তর্জাতিক পর্যায়ের আলোচনার ক্ষেত্রে জাতীয় বা পৌর স্তরের আলোচনার বিষয়বস্তু ভিন্ন হবে। ১৯৯০-এর দশকে যখন জলবায়ু পরিবর্তন প্রথম রাজনৈতিক মঞ্চে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে, তখন একধরনের আশাবাদ ছিল যে সমস্যাটি সফলভাবে মোকাবিলা করা যাবে। ওজোন স্তর রক্ষার জন্য ১৯৮৭ সালের মন্ট্রিল প্রোটোকল স্বাক্ষর বিশ্বকে একত্রিত হয়ে কোনো বৈজ্ঞানিক হুমকি মোকাবেলায় সক্ষম বলে প্রমাণ করেছিল, যদিও তখনো পর্যন্ত তা মানুষের জন্য উল্লেখযোগ্য ক্ষতির কারণ হয়ে ওঠেনি। কিন্তু ২০০০-এর দশকের গোড়ার দিকে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন বাড়তে থাকে এবং নির্গমনকারীদের শাস্তি দেওয়ার বা জলবায়ু-বান্ধব আচরণকে পুরস্কৃত করার কোনো চুক্তিতে পৌঁছানোর লক্ষণ তেমন দেখা যায়নি। বৈশ্বিক উষ্ণায়ন সীমিত করার জন্য কার্যকর পদক্ষেপের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক চুক্তি অর্জন অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং হবে বলে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল।[note ২][৯][১০] আর্নল্ড শোয়ার্জনেগারের "পলিউশন টারমিনেট" স্লোগানের মতো কিছু রাজনীতিবিদ বলেন, জলবায়ু সংক্রান্ত পদক্ষেপের স্বাস্থ্যগত সহ-সুবিধাগুলিতে মনোনিবেশ করে আশাবাদ তৈরি করা উচিত।[১১]

বহুপাক্ষিকতা

বিশ্বব্যাপী কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমন (২০১৫ সালের হিসাব অনুযায়ী)
COP15-এর পর পরিবেশ মন্ত্রীরা জলবায়ু নীতি নিয়ে আলোচনা করতে BASIC দেশগুলোতে মিলিত হন।

১৯৯০ দশকের শুরুর দিকে জলবায়ু পরিবর্তন বৈশ্বিক রাজনৈতিক এজেন্ডার শীর্ষস্থান লাভ করে। এই লক্ষ্যে প্রতিবছর জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সম্মেলন আয়োজন করা হয়। এই বার্ষিক সম্মেলনগুলিকে কনফারেন্স অব দ্য পার্টিস (সিওপি) নামেও অভিহিত করা হয়। ১৯৯৭ এর কিয়োটো প্রোটোকল, ২০০৯ এর কোপেনহেগেন সামিট এবং ২০১৫ এর প্যারিস সম্মেলন উল্লেখযোগ্য গুরুত্ব বহন করে। প্রাথমিকভাবে কিয়োটো প্রোটোকলকে আশাপ্রদ বিবেচনা করা হলেও, ২০০০ সালের দিকে এর ফলাফলে হতাশা দেখা দেয়। কোপেনহেগেন সম্মেলনে কিয়োটো প্রোটোকল অতিক্রম করে আরও কঠোর প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে এগোনোর চেষ্টা করা হলেও তা ব্যর্থ হয়। প্যারিস সম্মেলন সফল বলে বিবেচিত হয়, তবে এটি কতটা কার্যকরীভাবে দীর্ঘমেয়াদী বৈশ্বিক উষ্ণতা কমাতে সক্ষম হবে তা এখনো দেখার বিষয়।[১২]

আন্তর্জাতিক পর্যায়ে, দেশসমূহ যে তিনটি পন্থায় কার্বন নিঃসরণ হ্রাসের চেষ্টা করে তা হলো – কার্বন নিঃসরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ, কার্বন মূল্য নির্ধারণ এবং কার্বন নিঃসরণ কমানোর জন্য স্বেচ্ছাসেবী পদ্ধতি তৈরি করা যেখানে তথ্য বিনিময় ও অগ্রগতির পর্যালোচনা অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এই পন্থাগুলো মূলত একে অপরের পরিপূরক হলেও বিভিন্ন সম্মেলনের বেশিরভাগ ফোকাস থেকে যায় একটি মাত্র পদ্ধতির উপর। ২০১০ সাল পর্যন্ত আন্তর্জাতিক আলোচনাগুলো বেশিরভাগই নিঃসরণ লক্ষ্যমাত্রার উপর নিবদ্ধ ছিল। ওজোন স্তরে ক্ষতিকারক নিঃসরণ হ্রাসে মন্ট্রিল চুক্তির সাফল্য এ ধারণা দেয় যে, নিঃসরণ লক্ষ্যমাত্রা কার্যকর হতে পারে। তবে গ্রিনহাউস গ্যাস হ্রাসের ক্ষেত্রে, লক্ষ্যমাত্রা সাধারণত নিঃসরণে উল্লেখযোগ্য হ্রাস আনতে পারেনি। উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যমাত্রাগুলো সাধারণত পূরণ করা হয়নি। কঠোর শাস্তি আরোপ করে চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্যমাত্রা পূরণে উৎসাহিত করার প্রচেষ্টা সবসময় এক বা দুটি দেশ কর্তৃক অবরুদ্ধ হয়েছে।[১৩]

একবিংশ শতাব্দীতে, এই বিষয়ে ব্যাপক ঐকমত্য রয়েছে যে কার্বন মূল্য নির্ধারণ হলো নিঃসরণ হ্রাসের সবচেয়ে কার্যকর উপায়, অন্তত তত্ত্বগতভাবে।[১৪] তবে সাধারণত, দেশগুলি একটি উচ্চ কার্বন মূল্য বা অধিকাংশ ক্ষেত্রে কোনো মূল্যই গ্রহণ করতে অনিচ্ছুক। এই অনীহার অন্যতম প্রধান কারণ হ'ল কার্বন লিকেজের সমস্যা – যেখানে জিএইচজি (GHG) নিঃসরণকারী কার্যক্রমগুলিকে সেই এখতিয়ারের বাইরে সরিয়ে নেওয়া হয় যে একটি কার্বন মূল্য আরোপ করে, ফলে চাকরি ও রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি কোনো সুফল পাওয়া যায় না এবং অন্য জায়গায় সেই নিঃসরণ ঘটতে থাকে। তা সত্ত্বেও, ২০০৫ সালে বিশ্বের যে ৫% নিঃসরণের উপর কার্বন মূল্য ছিল, তা ২০১৯ সালের মধ্যে ১৫% এ উন্নীত হয়। চীনের কার্বন মূল্য পুরোপুরি কার্যকর হলে এই হার ৪০% ছাড়িয়ে যাওয়ার কথা। বিদ্যমান কার্বন মূল্য ব্যবস্থা বেশিরভাগই ইউরোপীয় ইউনিয়ন, বিভিন্ন জাতি এবং উপ-জাতীয় আধিকারিকদের দ্বারা স্বায়ত্তশাসিতভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে।[১৫]

স্বেচ্ছাসেবী শপথ ও পর্যালোচনা ব্যবস্থা, যেখানে রাষ্ট্রগুলি কার্বন নিঃসরণ হ্রাসের জন্য তাদের নিজস্ব পরিকল্পনা তৈরি করে, ১৯৯১ সালে চালু হয়েছিল। কিন্তু 'টপ ডাউন' নির্ধারিত নিঃসরণ লক্ষ্যমাত্রা পূরণের জন্য ১৯৯৭ এর কিয়োটো চুক্তির আগে তা পরিত্যক্ত হয়। এই পদ্ধতি কোপেনহেগেনে পুনরুজ্জীবিত হয় এবং ২০১৫ সালের প্যারিস চুক্তির সাথে আরও গুরুত্ব পায়। যদিও এই শপথগুলিকে জাতীয়ভাবে নির্ধারিত অবদান (NDCs) বলা হয়। আগামী ৫ বছর পরপর এগুলোর উন্নত রূপ জমা দেওয়ার কথা। এই পদ্ধতি কতটা কার্যকর তা সময়ের সাথে প্রতীক্ষা।[১৬] কিছু দেশ ২০২১ সালে গ্লাসগো সম্মেলনের সময় উন্নত NDCs জমা দেয়। এছাড়া কার্বন ট্রেডিং এর হিসাববিজ্ঞান বিষয়ক বিধিমালা ২০২১ এর গ্লাসগো সিওপি (COP) সম্মেলনে অনুমোদিত হয়।[১৭]

আঞ্চলিক, জাতীয় এবং উপ-জাতীয় পর্যায়ে নীতিমালা

জলবায়ু পরিবর্তন কর্মক্ষমতা সূচক দেশগুলিকে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন (স্কোরের ৪০%), নবায়নযোগ্য শক্তি (২০%), শক্তি ব্যবহার (২০%), এবং জলবায়ু নীতি (২০%) এর ভিত্তিতে র‍্যাঙ্ক করে।
  উচ্চ
  মধ্যম
  নিম্ন
  অতি নিম্ন

গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন হ্রাসের নীতিমালা নির্ধারিত হতে পারে জাতীয় বা উপ-জাতীয় সরকার কর্তৃক, অথবা ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো আঞ্চলিক সংস্থা কর্তৃক। নির্গমন হ্রাসের লক্ষ্যে যে নীতিমালাগুলো প্রণীত হয়েছে, তাদের অনেক কিছুই আন্তর্জাতিক চুক্তির বাধ্যবাধকতা কাটিয়ে আরও ব্যাপক পরিসরে প্রয়োগ করা হয়েছে। এর উদাহরণগুলোর মধ্যে রয়েছে কয়েকটি মার্কিন রাজ্যে কার্বন মূল্য নির্ধারণ, কিংবা কোস্টারিকাতে ২০১০-এর দশকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ৯৯% নবায়নযোগ্য উৎসে পৌঁছানো।

নির্গমন হ্রাস বা পরিচ্ছন্ন প্রযুক্তি বাস্তবায়নের সিদ্ধান্তগুলো অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সরকার নিজে থেকে নেয় না। এই ধরনের কাজের সাথে সাধারণত ব্যক্তি, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, এবং অন্যান্য সংস্থাগুলোই অধিকতর জড়িত। তবে, জাতীয় ও স্থানীয় সরকারগুলোই জলবায়ুবান্ধব কর্মকাণ্ডকে উৎসাহিত করার জন্য বিভিন্ন নীতিমালা প্রণয়ন করে। ব্যাপকভাবে এই নীতিমালাগুলোকে চারটি ভাগে ভাগ করা যায়: প্রথমত, কার্বন মূল্য ব্যবস্থা এবং অন্যান্য আর্থিক উৎসাহ প্রদান করা; দ্বিতীয়ত, বাধ্যতামূলক বিধিবিধান, যেমন বিদ্যুৎ উৎপাদনের একটি নির্দিষ্ট শতাংশ নবায়নযোগ্য উৎস থেকে আসার আদেশ; তৃতীয়ত, সরাসরি সরকারি বিনিয়োগ জলবায়ুবান্ধব কর্মকাণ্ড বা গবেষণায়; এবং চতুর্থত, তথ্য বিনিময়, শিক্ষা এবং স্বেচ্ছায় জলবায়ুবান্ধব আচরণকে উৎসাহিত করার পন্থাগুলো।[১৮] স্থানীয় রাজনীতিতে কখনও-কখনও বায়ুদূষণের মত বিষয়গুলোকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়, উদাহরণস্বরূপ বলা যায় শহরগুলিতে নিম্ন-নির্গমন অঞ্চল তৈরির রাজনীতির লক্ষ্য সড়ক পরিবহন থেকে কার্বন নির্গমন হ্রাস করাও হতে পারে।[১৯]

বেসরকারি সংগঠনের ভূমিকা

ব্যক্তি, ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান এবং বেসরকারি সংস্থা বা এনজিও সরাসরি এবং পরোক্ষভাবে জলবায়ু পরিবর্তনের রাজনীতিতে প্রভাব রাখতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে জনগণের মতামত প্রকাশ, গণ-আন্দোলন এবং বিক্ষোভ প্রদর্শন। ঐতিহাসিকভাবে লক্ষ্য করা যায় যে, জলবায়ুবান্ধব নীতির বিরুদ্ধে এ জাতীয় বিক্ষোভ প্রায়শই সংঘটিত হয়েছে। যেমন, ২০০০ সালে যুক্তরাজ্যে জ্বালানি নিয়ে বিক্ষোভের পর থেকে বিশ্বব্যাপী জ্বালানি করের বিরুদ্ধে বা জ্বালানি ভর্তুকি বন্ধ করার বিরুদ্ধে বেশ কয়েক ডজন বিক্ষোভ হয়েছে। তবে, ২০১৯ সাল থেকে স্কুল ছাত্র-ছাত্রীদের জলবায়ু ধর্মঘট এবং 'এক্সটিংশন রিবেলিয়ন' এর মত আন্দোলনের ফলে, জলবায়ু-সমর্থক বিক্ষোভগুলি আরও বেশি গুরুত্ব পেয়েছে। এছাড়া, রাজনীতির বাইরে থেকেও জলবায়ু পরিবর্তনের রাজনীতিকে প্রভাবিত করতে পারে কেউ - যেমন, 'সবুজ' প্রযুক্তির উদ্ভাবন, অর্থায়ন ও বিকাশে জোর দেওয়ার মাধ্যমে, বা জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার বন্ধের আন্দোলনে জড়িয়ে পড়ার মাধ্যমে।[২০]

বিশেষ স্বার্থ ও রাষ্ট্র-বহির্ভূত সংস্থা কর্তৃক তদবির

বৈশ্বিক উষ্ণায়নের বিষয়টি বামপন্থী গোষ্ঠীগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে, যেমন এখানে আমরা ডেমোক্র্যাটিক সোশ্যালিস্টস অফ আমেরিকার ক্ষেত্রে দেখতে পাই।

জলবায়ু পরিবর্তনের বহুমুখী বিষয়টি নিয়ে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে অসংখ্য বিশেষ স্বার্থ গোষ্ঠী, সংস্থা এবং কর্পোরেশনের নিজস্ব অবস্থান রয়েছে। নিম্নে বিশ্ব উষ্ণায়নের রাজনীতিতে আগ্রহ প্রদর্শনকারী কয়েকটি বিশেষ স্বার্থ গোষ্ঠীর আংশিক তালিকা দেওয়া হলো:

  • জীবাশ্ম জ্বালানি কোম্পানিগুলি: কঠোর জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত নীতিমালা থেকে ঐতিহ্যবাহী জীবাশ্ম জ্বালানি কর্পোরেশনগুলির ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যদিও কিছু ব্যতিক্রমও আছে। জীবাশ্ম জ্বালানি কোম্পানিগুলি যেহেতু জ্বালানি বাণিজ্যে জড়িত, ট্রেডিং পরিকল্পনা এবং অন্যান্য প্রক্রিয়ায় তাদের অংশগ্রহণ তাদেরকে একটি অনন্য সুবিধা দিতে পারে। ফলে, প্রতিটি ঐতিহ্যবাহী জীবাশ্ম জ্বালানি সংস্থা কঠোর জলবায়ু নীতির বিরুদ্ধে থাকবে কিনা তা পরিষ্কার নয়।[২১] উদাহরণস্বরূপ, একটি বৃহৎ ট্রেডিং ডেস্কসহ ঐতিহ্যবাহী গ্যাস পাইপলাইন সংস্থা এনরন, CO2 নিয়ন্ত্রণের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে ব্যাপকভাবে তদবির করেছিল। তারা মনে করেছিল যে, যদি তারা জ্বালানি বাণিজ্যের কেন্দ্রে থাকতে পারে তবে তারা বিশ্বের জ্বালানি শিল্পকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে।[২২][২৩][২৪]
  • কৃষক এবং কৃষিজীবী ব্যবসায়ীরা জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি লবি; তবে কৃষির উপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব,[২৫] কৃষিকাজ থেকে নির্গত গ্রিনহাউস গ্যাস[২৬] এবং ইইউ'র সাধারণ কৃষি নীতির ভূমিকা সম্পর্কে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি ভিন্ন ভিন্ন।[২৭]
  • আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলি: সাধারণত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলি বিশ্ব উষ্ণায়নের বিরুদ্ধে নীতিমালা, বিশেষ করে কার্বন ট্রেডিং স্কিম বাস্তবায়ন এবং কার্বনের সাথে একটি মূল্য যুক্ত করে এমন বাজার ব্যবস্থা তৈরিকে সমর্থন করে। এই নতুন বাজারগুলিকে ট্রেডিং পরিকাঠামোর প্রয়োজন হয়, যা ব্যাঙ্কিং প্রতিষ্ঠানগুলি সরবরাহ করতে পারে। কার্বন মূল্যের উপর অনুমানমূলক অবস্থানের মাধ্যমে, ব্রোকারেজ এবং অন্যান্য আর্থিক কার্যাদি যেমন বীমা ও ডেরিভেটিভ স্ট্রুমেন্টস ব্যবহারের মাধ্যমে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলি বিনিয়োগ, বাণিজ্য এবং বিভিন্ন আর্থিক স্ট্রুমেন্টস তৈরি করতে সক্ষম যা থেকে তারা লাভ করতে পারে।[২৮]
  • পরিবেশবাদী গোষ্ঠীগুলি: পরিবেশবাদী আইনজীবী গোষ্ঠীগুলি সাধারণত CO2 নির্গমনের উপর কঠোর বিধিনিষেধের পক্ষে থাকে। কর্মী হিসাবে, পরিবেশবাদী গোষ্ঠীগুলি সচেতনতা বাড়ানোর কাজ করে।[২৯]
  • নবায়নযোগ্য জ্বালানি এবং জ্বালানি সাশ্রয়ী কোম্পানিগুলি: বায়ু, সৌর এবং জ্বালানি সাশ্রয়ী ক্ষেত্রের সংস্থাগুলি সাধারণত কঠোরতর বিশ্ব উষ্ণায়ন নীতিগুলিকে সমর্থন করে। ট্রেডিং স্কিম বা করের মাধ্যমে জীবাশ্ম জ্বালানিকে আরও ব্যয়বহুল করে তোলার সাথে সাথে তারা আশা করে জ্বালানি বাজারে তাদের অংশীদারিত্ব বাড়বে।[৩০]
  • পারমাণবিক শক্তি কোম্পানিগুলি: কার্বন মূল্য নির্ধারণ বা কম কার্বন শক্তি উৎপাদনের ভর্তুকিকে সমর্থন করে এবং এ থেকে উপকৃত হয় কারণ পারমাণবিক শক্তি ন্যূনতম গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন করে।[৩১]
  • বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থাগুলি: সৌর প্যানেল থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে তবে বৈদ্যুতিক যানবাহন থেকে উপকৃত হয়।[৩২]
  • ঐতিহ্যবাহী খুচরা বিক্রেতা এবং বিপণনকারীরা: ঐতিহ্যবাহী খুচরা বিক্রেতা, বিপণনকারীরা এবং সাধারণ কর্পোরেশনগুলি তাদের গ্রাহকদের মধ্যে সাড়া জাগানো এমন নীতিগুলি গ্রহণ করে সাড়া দেয়। "সবুজ হওয়া" যদি গ্রাহকদের আবেদন জানাতে পারে, তবে তারা তাদের গ্রাহকদের সন্তুষ্ট এবং আরও ভালভাবে সামঞ্জস্য করার জন্য কিছু বিনয়ী কর্মসূচি গ্রহণ করতে পারে। তবে, যেহেতু সাধারণ কর্পোরেশন তাদের নির্দিষ্ট অবস্থান থেকে মুনাফা অর্জন করে না, তাই এটি অসম্ভাব্য যে তারা কঠোরতর বিশ্ব উষ্ণায়ন নীতির অবস্থানের পক্ষে বা বিপক্ষে দৃঢ়ভাবে তদবির করবে।[৩৩]
  • চিকিৎসকরা: প্রায়শই বলেন যে জলবায়ু পরিবর্তন এবং বায়ুদূষণ একসাথে মোকাবেলা করা যেতে পারে এবং এভাবে লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন বাঁচানো যেতে পারে।[৩৪]
  • তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কোম্পানি: তাদের পণ্যগুলি অন্যদের জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে বলে, ভ্রমণ হ্রাসের উপকার পায় এবং অনেকেই 'সবুজ বিদ্যুৎ' ক্রয় করে।[৩৫]

বিভিন্ন আগ্রহী পক্ষ কখনও কখনও তাদের বার্তা জোরদার করার জন্য একে অপরের সাথে সহযোগিতা করে। উদাহরণস্বরূপ, বিদ্যুৎ সংস্থাগুলি ইলেকট্রিক স্কুল বাস কেনার জন্য অর্থায়ন করে, যা একই সাথে দুটি লক্ষ্য পূরণ করে:[৩৬][৩৭]

  • স্বাস্থ্য কর্মীদের উপকার: বায়ু দূষণ কমিয়ে, ইলেকট্রিক বাস শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।
  • বিদ্যুৎ বিক্রি বৃদ্ধি: ইলেকট্রিক বাসগুলি চার্জ করার জন্য আরও বিদ্যুতের প্রয়োজন হয়, যা বিদ্যুৎ সংস্থাগুলির জন্য বাজার সম্প্রসারণ করে।

অন্য সময়, শিল্পগুলি বিশেষ অলাভজনক প্রতিষ্ঠানগুলিকে তহবিল সরবরাহ করে যাতে তারা সচেতনতা বৃদ্ধি করতে এবং তাদের পক্ষে তদবির করতে পারে।

সামূহিক পদক্ষেপ

বর্তমান জলবায়ু রাজনীতি বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক আন্দোলনের দ্বারা প্রভাবিত, যারা জলবায়ু নীতির জন্য রাজনৈতিক ইচ্ছাশক্তি তৈরির বিভিন্ন দিকগুলিতে মনোনিবেশ করে। এর মধ্যে রয়েছে জলবায়ু ন্যায়বিচার আন্দোলন: এই আন্দোলন জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় সামাজিক ন্যায়বিচার এবং সমতা নিশ্চিত করার উপর জোর দেয়; যুব জলবায়ু আন্দোলন: এই আন্দোলনে তরুণরা জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে তীব্র পদক্ষেপের দাবি জানাতে রাস্তায় নেমেছে; জীবাশ্ম জ্বালানি শিল্প থেকে বিনিয়োগ প্রত্যাহারের আন্দোলন: এই আন্দোলন জীবাশ্ম জ্বালানিতে বিনিয়োগ বন্ধ করার এবং পরিবেশগতভাবে টেকসই বিকল্পগুলিতে বিনিয়োগ করার জন্য চাপ সৃষ্টি করে।

জীবাশ্ম জ্বালানী বিনিয়োগ প্রত্যাহার আন্দোলন

২০২১ সালের হিসাবে, ১,৩০০টি প্রতিষ্ঠান ১৪.৬ ট্রিলিয়ন ডলার সম্পদের সাথে জীবাশ্ম জ্বালানি শিল্প থেকে তাদের বিনিয়োগ প্রত্যাহার করেছে।[৩৮]

জীবাশ্ম জ্বালানী বিনিয়োগ প্রত্যাহার আন্দোলনের লক্ষ্য হল জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবেলায় সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক চাপ প্রয়োগ করা। এই আন্দোলনের মাধ্যমে জীবাশ্ম জ্বালানী (যেমন - কয়লা, তেল, গ্যাস) উত্তোলনে সম্পৃক্ত কোম্পানিগুলোর শেয়ার, বন্ড এবং অন্যান্য আর্থিক উপকরণ থেকে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ প্রত্যাহার করা হয়।

এই আন্দোলনের সূচনা হয় ২০১১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে। শিক্ষার্থীরা তখন তাদের প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগ নীতিতে পরিবর্তনের দাবি করে; তারা চেয়েছিল জীবাশ্ম জ্বালানীতে বিনিয়োগ কমিয়ে তা যেন পরিচ্ছন্ন জ্বালানীর উন্নয়ন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর কল্যাণে ব্যবহার করা হয়।[৩৯] ২০১২ সালে, মেইনের ইউনিটি কলেজ জীবাশ্ম জ্বালানী থেকে তাদের বিনিয়োগ সরিয়ে নেওয়া প্রথম উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান[৪০] হিসেবে নিজেদের নাম লেখায়।

২০১৫ সালের মধ্যে জীবাশ্ম জ্বালানী বিনিয়োগ প্রত্যাহার আন্দোলন ইতিহাসের দ্রুততম বর্ধনশীল বিনিয়োগ প্রত্যাহার আন্দোলন হিসেবে চিহ্নিত হয়। ২০২৩ সালের জুলাই পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী ১৫৯৩ টিরও বেশি প্রতিষ্ঠান, যাদের মোট সম্পদের পরিমাণ $৪০.৫ ট্রিলিয়নের বেশি, জীবাশ্ম জ্বালানী থেকে বিভিন্ন মাত্রায় বিনিয়োগ প্রত্যাহার শুরু করেছে বা এরকম পদক্ষেপ নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছে ।[৪১]

যুব আন্দোলন

বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে 'স্কুল স্ট্রাইক ফর ক্লাইমেট' (সুইডিশ: Skolstrejk för klimatet) একটি আন্তর্জাতিক আন্দোলন। এ আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী স্কুল পড়ুয়ারা প্রতি শুক্রবার ক্লাস বর্জন করে জলবায়ু পরিবর্তন রোধে রাজনৈতিক নেতাদের কাছ থেকে জরুরি পদক্ষেপের দাবি জানাতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এছাড়া, জীবাশ্ম জ্বালানি শিল্পকে নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎসে রূপান্তরিত করার দাবিও জানানো হয়।

২০১৮ সালের আগস্ট মাসে সুইডিশ ছাত্রী গ্রেটা থুনবার্গ সুইডেনের সংসদ ভবন রিক্সডাগের সামনে 'স্কুল স্ট্রাইক ফর ক্লাইমেট' লেখা একটি প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিক্ষোভ করার মাধ্যমে এ আন্দোলনের সূচনা হয়। এরপরই বিশ্বব্যাপী ব্যাপক প্রচারণা ও আয়োজন শুরু হয়ে যায়।[৪২][৪৩]

২০১৯ সালের ১৫ই মার্চ অনুষ্ঠিত একটি বৈশ্বিক ধর্মঘটে ১২৫টি দেশের ২,২০০টি বিক্ষোভে দশ লক্ষেরও বেশি মানুষ অংশগ্রহণ করে।[৪৪][৪৫][৪৬][৪৭] ২০১৯ সালের ২৪শে মে দ্বিতীয় বৈশ্বিক ধর্মঘটে ১৫০টি দেশের ১,৬০০টি বিক্ষোভে লক্ষ লক্ষ মানুষ সমবেত হয়। মে মাসের এই বিক্ষোভগুলো ২০১৯ সালের ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচনের সময়ের সাথে মিল রেখে করা হয়।[৪৮][৪৯][৫০][৫১]

২০১৯ সালের 'গ্লোবাল উইক ফর ফিউচার' আয়োজনটিতে ১৫০টিরও বেশি দেশে ৪,৫০০টি ধর্মঘট অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে মূল ফোকাস ছিল ২০শে সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) ও ২৭শে সেপ্টেম্বর (শুক্রবার)। বিশ্ব ইতিহাসের সম্ভবত বৃহত্তম জলবায়ু ধর্মঘটে, ২০শে সেপ্টেম্বর, সারা বিশ্বে প্রায় ৪০ লক্ষ বিক্ষোভকারী অংশ নেয়, যাদের অধিকাংশই ছিল স্কুলের শিক্ষার্থী। এর মধ্যে শুধু জার্মানিতে ১৪ লক্ষ মানুষ অংশ নিয়েছিল।[৫২] ২৭শে সেপ্টেম্বরে বিশ্বব্যাপী অনুষ্ঠিত বিক্ষোভে প্রায় ২০ লক্ষ মানুষ অংশ নেন, যাদের মধ্যে ইতালিতে ১০ লক্ষেরও বেশি এবং কানাডায় কয়েক লক্ষ মানুষ ছিল।[৫৩][৫৪][৫৫]

বর্তমান দৃষ্টিভঙ্গি

Greta Thunberg's Fridays for Future movement, begun in August 2018, has been influential in raising public awareness of the threat from global warming.

জলবায়ু পরিবর্তন সীমাবদ্ধ করার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক প্রচেষ্টা এ পর্যন্ত ব্যাপকভাবে ব্যর্থ হয়েছে।[৫৬][৫৭] তবে, সমালোচকরা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন যে সাম্প্রতিক বিভিন্ন ঘটনাবলী এবং সুযোগের কারণে ২০২০-এর দশক আরও বেশি সফল হতে পারে। অন্যদিকে, সমালোচকরা সতর্কবার্তা দিয়েছেন যে ১.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াসের নিচে উষ্ণায়ন ধরে রাখার জন্য এখন খুব অল্প সময়ের ব্যবধান রয়েছে। এমনকি ২ ডিগ্রী সেলসিয়াসের নিচে তাপমাত্রা বৃদ্ধি বজায় রাখার যুক্তিসঙ্গত সম্ভাবনা অর্জনের সময়ও প্রায় ফুরিয়ে এসেছে।[৫৮][৫৯][৬০][৬১]

সুযোগসমূহ

২০১০ সালের শেষের দিকে, জলবায়ু-বান্ধব রাজনীতির জন্য বিভিন্ন কারণ উদ্ভূত হয়েছে। এই কারণগুলির দরুন সমালোচকরা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন যে ২০২০-এর দশকে বিশ্ব উষ্ণায়নের হুমকি মোকাবেলায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হতে পারে।[৬২][৬৩][৬৪]

জনমতের মোড়

গুগল ট্রেন্ডসের তথ্য অনুযায়ী, 'ক্লাইমেট ক্রাইসিস' (জলবায়ু সংকট) এবং 'ক্লাইমেট ইমার্জেন্সি' (জলবায়ু জরুরি অবস্থা) এই শব্দগুলোর জন্য অনলাইনে অনুসন্ধান ২০১৯ সালে ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছিল। ২০০৬ সালে আল গোরের তথ্যচিত্র 'অ্যান ইনকনভেনিয়েন্ট ট্রুথ' মুক্তির পরও অনুরূপ বৃদ্ধি লক্ষ্য করা গিয়েছিল।
২০২২ সালের পিউ জরিপে অধিকাংশ মানুষ জানিয়েছেন যে, জলবায়ু পরিবর্তন তাদের দেশের জন্য একটি বড় হুমকি। প্রায় অর্ধেক দেশের অংশগ্রহণকারীরা তালিকাভুক্ত পাঁচটি হুমকির মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তনকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন।[৬৫]

২০১৯ সালকে "জলবায়ু পরিবর্তনের দিকে বিশ্ব যে বছর জেগে ওঠে" বলে বর্ণনা করা হয়েছে। সাম্প্রতিক চরম আবহাওয়া ঘটনার ফলে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের হুমকি সম্পর্কে ক্রমবর্ধমান স্বীকৃতি, গ্রেটা থুনবার্গের প্রভাব এবং আইপিসিসি ১.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস প্রতিবেদন এই পরিবর্তনের মূল কারণ।[৬৬][৬৭]

২০১৯ সালে, ওপেক-এর মহাসচিব 'স্কুল স্ট্রাইক' আন্দোলনকে জীবাশ্ম জ্বালানি শিল্পের সবচেয়ে বড় হুমকি হিসেবে স্বীকার করেছেন।[৬৮] ক্রিশ্চিয়ানা ফিগুয়েরেসের মতে, একবার যদি জনসংখ্যার ৩.৫% অহিংস প্রতিবাদে অংশগ্রহণ শুরু করে, তবে তারা রাজনৈতিক পরিবর্তন আনতে সবসময়ই সফল হয়। গ্রেটা থুনবার্গের 'ফ্রাইডেজ ফর ফিউচার' আন্দোলনের সাফল্য ইঙ্গিত করে যে এই দরজায় পৌঁছনো অর্জনযোগ্য হতে পারে।[৬৯]

২০২৩ সালের 'ওয়ান আর্থ' জার্নালে প্রকাশিত একটি পর্যালোচনা গবেষণায় বলা হয়েছে যে মতামত জরিপগুলি দেখায় যে বেশিরভাগ লোক জলবায়ু পরিবর্তনকে এখন এবং কাছাকাছি ঘটতে দেখছে।[৭০] গবেষণায় উপসংহারে বলা হয়েছে যে, জলবায়ু পরিবর্তনকে দূরবর্তী হিসেবে দেখার ফলে কম জলবায়ু পদক্ষেপ নেওয়া হয় না এবং মানসিক দূরত্ব কমানো অগত্যা জলবায়ু পদক্ষেপ বৃদ্ধি করে না।[৭১]

জলবায়ু পরিবর্তন অস্বীকৃতির প্রভাব হ্রাস

২০১৯ সালের মধ্যে, সরাসরি জলবায়ু পরিবর্তন অস্বীকার আগের বছরগুলির তুলনায় অনেক কম প্রভাবশালী হয়ে উঠেছে। চরম আবহাওয়া ঘটনার বর্ধিত হার, জলবায়ু বিজ্ঞানীদের যোগাযোগ আরও কার্যকর হয়ে ওঠা এবং গ্রেটা থুনবার্গের প্রভাব এর কারণগুলির মধ্যে অন্যতম। একটি উদাহরণ হিসেবে, ২০১৯ সালে ক্যাটো ইনস্টিটিউট তাদের জলবায়ু বিষয়ক শাখা বন্ধ করে দেয়।[৭২][৭৩][৭৪][৭৫][৭৬]

নবায়নযোগ্য জ্বালানীর বৃদ্ধি

নবায়নযোগ্য জ্বালানী শক্তির একটি অফুরন্ত উৎস যা স্বাভাবিকভাবে পুনরায় পূরণযোগ্য। মূল নবায়নযোগ্য জ্বালানী উৎসগুলো হল বায়ু, জলবিদ্যুৎ, সৌর, ভূ-তাপীয় এবং বায়োমাস। ২০২০ সালে, নবায়নযোগ্য জ্বালানী বিশ্বের ২৯% বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছিল।[৭৭]

প্যারিস চুক্তির পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৬ টি দেশ এই চুক্তি গ্রহণ করেছে এবং নভেম্বর ২০২১ পর্যন্ত, এই দলের ১৯৪ টি দেশ জাতীয়ভাবে নির্ধারিত অবদান (এনডিসি), অর্থাৎ জলবায়ু সংক্রান্ত অঙ্গীকারগুলি জমা দিয়েছে।[৭৮][৭৯] নবায়নযোগ্য জ্বালানী বিনিয়োগ প্রসারে এই দেশগুলি বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করছে - এর মধ্যে ১০২টি দেশ ট্যাক্স ক্রেডিট প্রয়োগ করেছে, ১০১টি দেশ কোনও না কোনওভাবে সরকারি বিনিয়োগের ব্যবস্থা প্রয়োগ করেছে এবং ১০০টি দেশ বর্তমানে কর হ্রাস ব্যবহার করছে। বৃহত্তম CO2 নির্গমনকারী দেশগুলি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন, যুক্তরাজ্য এবং ভারতের মতো শিল্পোন্নত দেশ। এই দেশগুলিতে স্থাপনামূলক নীতির (মাত্র ১৮৮টি) তুলনায় শিল্প নীতিগুলি (১,০০০ এরও বেশি) যথেষ্ট পরিমাণে বাস্তবায়িত হচ্ছে না।[৮০]

গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিত COP26-এ মহিলা বিশ্ব নেতারা।

২০২১ সালের নভেম্বরে, ২৬তম জাতিসংঘ জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলন (COP26) স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। প্রায় ২০০টি দেশ জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই ত্বরান্বিত করতে এবং আরও কার্যকর জলবায়ু প্রতিশ্রুতির জন্য একমত হয়েছে। কিছু নতুন অঙ্গীকারের মধ্যে মিথেন গ্যাস দূষণ, বন উজাড় এবং কয়লা অর্থায়নে সংস্কার অন্তর্ভুক্ত ছিল। আশ্চর্যজনকভাবে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চীন (দুটি বৃহত্তম কার্বন নির্গমনকারী দেশ) উভয়ই বিশ্ব উষ্ণায়নকে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যাওয়া রোধ করার প্রচেষ্টায় একসাথে কাজ করতে সম্মত হয়েছে।[৮১] কিছু বিজ্ঞানী, রাজনীতিবিদ এবং কর্মী বলছেন যে এই সম্মেলনে আমাদের প্রয়োজন অনুযায়ী যথেষ্ট পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি এবং আমরা এখনও ১.৫ ডিগ্রি টিপিং পয়েন্টে পৌঁছে যাব। ক্লাইমেট অ্যাকশন ট্র্যাকারের একটি স্বাধীন রিপোর্টে বলা হয়েছে যে এই অঙ্গীকারগুলি শুধু "বুলি" এবং "২০৩০ সালে কার্বন নির্গমনের পরিমাণ ১.৫ ডিগ্রি সীমা অতিক্রম করার প্রয়োজনের প্রায় দ্বিগুণ হবে। "[৮২]

২০২০ সাল পর্যন্ত, পারমাণবিক এবং বিশেষ করে নবায়নযোগ্য জ্বালানী দিয়ে জীবাশ্ম জ্বালানী থেকে উৎপাদিত শক্তি প্রতিস্থাপনের সম্ভাবনা অনেক বেড়েছে। শত শত দেশ এখন তাদের বিদ্যুৎয়ের অর্ধেকেরও বেশি অংশ নবায়নযোগ্য উৎস থেকে উৎপন্ন করছে।[৮৩][৮৪]

সবুজ পুনরুদ্ধার

সবুজ পুনরুদ্ধার পরিকল্পনা বলতে এমন কিছু পরিবেশগত, নিয়ন্ত্রক ও আর্থিক সংস্কারের কথা বোঝায় যা কোনো অর্থনৈতিক সংকটের পরবর্তীতে (যেমন কোভিড-১৯ মহামারী বা বৈশ্বিক আর্থিক সংকট- GFC) দেশের সমৃদ্ধি পুনরুদ্ধারের কাজে ব্যবহৃত হয়। একইসাথে এই সংস্কারগুলো যেন পরিবেশের উপরও ইতিবাচক প্রভাব ফেলে সেটা নিশ্চিত করা হয়। এর অন্তর্ভুক্ত বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে নবায়নযোগ্য জ্বালানি, জ্বালানির কার্যকর ব্যবহার, প্রকৃতি-ভিত্তিক সমাধান, টেকসই পরিবহন, সবুজ উদ্ভাবন এবং সবুজ কর্মসংস্থান ইত্যাদি।[৮৫][৮৬][৮৭][৮৮]

কোভিড-১৯ মহামারীর প্রতিক্রিয়ায় সবুজ পুনরুদ্ধারকে সমর্থন এসেছে বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সরকার, কর্মী এবং শিক্ষা জগত থেকে।[৮৯][৯০] বৈশ্বিক আর্থিক সংকটের সময় যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল,[৯১] এই প্যাকেজগুলোর লক্ষ্যও অনুরূপ- যেন মন্দার বিরুদ্ধে নেওয়া ব্যবস্থাগুলো জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলাতেও সাহায্য করে। এইসব কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে কয়লা, তেল এবং গ্যাসের ব্যবহার হ্রাস করা, পরিচ্ছন্ন পরিবহন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, পরিবেশবান্ধব ভবন নির্মাণ এবং টেকসই কর্পোরেট বা আর্থিক অনুশীলন প্রচলন। সবুজ পুনরুদ্ধার উদ্যোগগুলো জাতিসংঘ (UN) এবং অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (OECD) দ্বারা সমর্থিত।[৯২] জাতীয় আর্থিক প্রতিক্রিয়াগুলো লাইভ ট্র্যাক করার জন্য অনেকগুলো বৈশ্বিক উদ্যোগ রয়েছে। এরমধ্যে আছে গ্লোবাল রিকভারি অবজারভেটরি (অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল- IMF এর একটি উদ্যোগ),[৯৩] এনার্জি পলিসি ট্র্যাকার[৯৪] এবং OECD-এর গ্রিন রিকভারি ট্র্যাকার।[৯৫]

২০২১ সালের মার্চের দিকে গ্লোবাল রিকভারি অবজারভেটরি তাদের বিশ্লেষণে দেখায় যে উদ্ধার তহবিলে মাত্র ১৮% বিনিয়োগ এবং মোট খরচের ২.৫% টেকসই উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছিল।[৯৬] ২০২১ সালের জুলাই মাসে, ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি এই বিশ্লেষণকে সমর্থন করে উল্লেখ করে যে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক উদ্ধার তহবিলের মাত্র ২% পরিচ্ছন্ন জ্বালানিতে খরচ করা হয়েছে।[৯৭] G20 দেশগুলো যে ১৪ ট্রিলিয়ন ডলার অর্থনৈতিক উদ্দীপনা হিসেবে ব্যয় করেছে, তার মাত্র ৬% এমন খাতে বরাদ্দ করা হয়েছে যা গ্রীনহাউস গ্যাস নির্গমন কমাতে সাহায্য করবে। এর মধ্যে রয়েছে বৈদ্যুতিক যান চালু করা, ভবনগুলোর জ্বালানি-দক্ষতা বাড়ানো এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবস্থা স্থাপন করা ইত্যাদি।[৯৮]

প্রতিকূলতা

রাজনৈতিক মতামত ও সামাজিক প্রতিবন্ধকতার কারণে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা করার ক্ষেত্রে বেশ কিছু কঠিন চ্যালেঞ্জ রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, মাংসের ওপর কর বাড়ানো রাজনৈতিকভাবে জন-অপ্রিয় হতে পারে।

জরুরি অবস্থা

২০২১ সালের হিসাবে, শিল্প-পূর্ব যুগের তুলনায় CO2 মাত্রা প্রায় ৫০% বেড়ে গেছে। প্রতি বছর আরও বিলিয়ন টন কার্বন নির্গত হওয়ার ফলে পরিবেশের উপর ব্যাপক বিপর্যয়কর প্রভাব পড়ছে। এই কারণে জলবায়ু পরিবর্তনের দ্রুত প্রভাব এড়াতে হলে অতি শীঘ্রই বড় ধরনের নীতি পরিবর্তন বাস্তবায়ন করতে হবে।

জীবাশ্ম জ্বালানির কেন্দ্রীয়তা

বিশ্বের অর্থনীতি এখনও জীবাশ্ম জ্বালানি-নির্ভর, যেহেতু ২০১৯ সালের হিসাবে প্রায় ৮০% শক্তি এসব উৎস থেকে উৎপন্ন হচ্ছিল। ভোক্তাদের কাছ থেকে জীবাশ্ম জ্বালানির ভর্তুকি হঠাৎ করে প্রত্যাহার করলে সমাজে অস্থিরতা ও দাঙ্গার সৃষ্টি হতে পারে। যদিও নবায়নযোগ্য শক্তি মাঝে মাঝে সস্তা, স্বল্প সময়ের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে নবায়নযোগ্য শক্তির উৎস তৈরি করা বেশ চ্যালেঞ্জিং। আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থার (International Energy Agency) একটি ২০২৩ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী, কয়লা নির্গমন ২৪৩ মিলিয়ন টন বেড়ে ১৫.৫ গিগাটনের বেশি হয়েছে, যা সর্বকালের সর্বোচ্চ পরিমাণ।

নিষ্ক্রিয়তা

২০২০-এর দশকে যদিও জলবায়ু পরিবর্তন সরাসরি অস্বীকার করার ঘটনা কম, তবে গ্রীনহাউজ গ্যাস নির্গমন সীমিত করার ব্যাপারে পদক্ষেপ না নেওয়ার পক্ষে বেশ কিছু যুক্তি এখনো দেখা যায়। এর মধ্যে রয়েছে: এই খাতের অর্থ জলবায়ু-অভিযোজনের (adaptation) মত কাজে খরচ করা উচিত, নতুন প্রযুক্তি বের না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা ভাল কারণ তা এই প্রক্রিয়া সস্তা করবে, অথবা ভবিষ্যতের জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবকে এখনকার চাহিদার তুলনায় নগণ্য মনে করা।

জীবাশ্ম জ্বালানি লবি ও রাজনৈতিক অর্থায়ন

'বিগ অয়েল' নামে পরিচিত বৃহত্তর তেল ও গ্যাস কর্পোরেশনগুলো এবং তাদের শিল্প লবিস্ট গ্রুপ, আমেরিকান পেট্রোলিয়াম ইনস্টিটিউট (API), জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় সরকারী পদক্ষেপগুলোকে বাধাগ্রস্ত করতে এবং বিলম্বিত করতে ব্যাপক পরিমাণে অর্থ লবিং ও রাজনৈতিক প্রচারাভিযানে খরচ করে। ওয়াশিংটন ডিসি সহ ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাজ্যের মতো রাজনৈতিক কেন্দ্রগুলোতে জীবাশ্ম জ্বালানি লবির যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে।

শক্তির ক্ষমতার অন্দরমহলে নিজেদের অ্যাজেন্ডা এগিয়ে নিতে, সাধারণ নাগরিক এবং পরিবেশবাদী কর্মীদের চেয়ে জীবাশ্ম জ্বালানি শিল্প কয়েকগুণ বেশি অর্থ ব্যয় করে। ২০০০ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত লবিং করতে তারা ২ বিলিয়ন ডলার খরচ করেছে। ব্রাসেলসে নিজস্ব লক্ষ্য অর্জনে শুধু পাঁচটি বৃহত্তম বিগ অয়েল কর্পোরেশনই লবিস্টদের পেছনে শত শত মিলিয়ন ইউরো ব্যয় করেছে।

বিগ অয়েল কোম্পানিগুলি প্রায়শই "টেকসই নীতি" গ্রহণ করে, যে নীতিগুলো প্রায়ই তাদের লবিস্টদের অ্যাডভোকেট করা নীতি-অ্যাজেন্ডার সাথে সাংঘর্ষিক। এই নীতির পেছনে উদ্দেশ্য হলো জনগণের মনে সন্দেহের বীজ রোপণ করা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বাস্তবতা ও প্রভাব নিয়ে সংশয় তৈরি করা। একইসাথে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় সরকারী প্রচেষ্টাগুলোকে ভোঁতা করা। "জলবায়ু পরিবর্তনকে অ-সমস্যায় পরিণত করা"র লক্ষ্যে API একটি পাবলিক রিলেশন ভিত্তিক কুপ্রচার অভিযানও চালু করেছিল।

এই শিল্পটি আমেরিকান রাজনৈতিক প্রচারণাতেও মুক্তহস্তে অর্থ ব্যয় করে। বিগত কয়েক দশক ধরে তাদের রাজনৈতিক অনুদানের প্রায় ২/৩ অংশ রিপাবলিকান পার্টির রাজনীতিবিদদের পক্ষে ব্যবহৃত হয়। একইসাথে নবায়নযোগ্য জ্বালানি সমর্থকদের রাজনৈতিক অবদানকেও বহুগুণে ছাড়িয়ে যায় তাদের অনুদানের পরিমাণ।

জীবাশ্ম জ্বালানি শিল্পের রাজনৈতিক অবদানগুলো প্রধানত পরিবেশ সুরক্ষার বিরুদ্ধে ভোট দেওয়া রাজনীতিবিদদের পুরস্কৃত করে। প্রসিডিংস অফ দ্য ন্যাশনাল একাডেমি অফ সায়েন্সেস অফ দ্য ইউনাইটেড স্টেটস অফ আমেরিকা কর্তৃক প্রকাশিত একটি গবেষণা অনুসারে, লিগ অফ কনজারভেশন ভোটার্স (LCV) দ্বারা পরিমাপকৃত রেকর্ড অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের একজন সদস্যের ভোট যত পরিবেশ-বিরোধী হয়ে ওঠে, সেই কংগ্রেস সদস্যের প্রাপ্ত জীবাশ্ম জ্বালানি শিল্পের অনুদানের পরিমাণ তত বৃদ্ধি পায়। গড়ে, LCV স্কোরে ১০% হ্রাসের সাথে কংগ্রেসের মেয়াদ অনুসরণকারী প্রচারাণার জন্য জীবাশ্ম জ্বালানি শিল্প থেকে প্রাপ্ত প্রচারণা অনুদান $১,৭০০ বৃদ্ধি পেয়েছে।

জলবায়ু বিজ্ঞানের অবদমন

১৯৭০-এর দশক থেকেই বড় বড় তেল কোম্পানি জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানোর কারণে জলবায়ুতে যে বড় ধরনের প্রভাব পড়ছে, সেই বিষয়ক তাদের নিজস্ব বিজ্ঞানীদের রিপোর্টগুলো গোপন করে রেখেছে। বিশেষ করে এক্সনমোবিল (ExxonMobil) জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টিকে নিয়ে জনমনে ভুল তথ্য ছড়ানোর একটি কর্পোরেট প্রচারণা চালায়। এই কৌশলটির তুলনা করা হয়েছে বিগ টোব্যাকোর (ধূমপানের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে মানুষকে বিভ্রান্ত করার লক্ষ্যে তামাক সংস্থাগুলোর) জনসংযোগ প্রচারণার সাথে। জীবাশ্ম জ্বালানি শিল্পের অর্থায়নে পরিচালিত থিংক ট্যাংকগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহ হুমকি সম্পর্কে খোলাখুলি আলোচনাকারী জলবায়ু বিজ্ঞানীদের হয়রানি করেছে।

১৯৮০-এর দশকের শুরুতে, যখন আমেরিকার জনগণের বৃহত্তর অংশ জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি সম্পর্কে সচেতন হতে শুরু করে, তখন থেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কিছু রাষ্ট্রপতি প্রশাসন জীবাশ্ম জ্বালানির কারণে জলবায়ুতে যে হুমকি তৈরি হচ্ছে সে সম্পর্কে প্রকাশ্যে কথা বলা বিজ্ঞানীদের তাচ্ছিল্য করেছে। এমনকি অন্যান্য মার্কিন প্রশাসনগুলো জলবায়ু বিজ্ঞানীদের কখনো কখনো চুপ করিয়ে দিয়েছে, আবার সরকারি তথ্য গোপন করার অভিযোগও উঠেছে। বেশ কয়েকটি ফেডারেল সংস্থায় রাজনৈতিকভাবে নিযুক্ত কর্মকর্তারা বিজ্ঞানীদের জলবায়ু সংকটের বিভিন্ন দিক সম্পর্কিত তাদের গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করতে বাধা দেয়। এমনকি ডেটা মডেলিং পরিবর্তন করে এমন সব সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর ঘটনাও ঘটেছে যেগুলো পূর্ব থেকেই স্থির করা ছিল। উপরন্তু, সংস্থাগুলোর নিবেদিতপ্রাণ বিজ্ঞানীদের পরামর্শও তারা গ্রহণ করেনি।

জলবায়ু কর্মীদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা

জলবায়ু ও পরিবেশ কর্মীদের হত্যার ঘটনা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ঘটছে। এইসব কর্মীদের মধ্যে রয়েছেন যারা বনভূমি রক্ষায় লগিং শিল্পের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন। কলম্বিয়া, ব্রাজিল এবং ফিলিপাইনের মতো দেশগুলিতে এই ধরনের বেশিরভাগ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, কিন্তু হত্যাকারীদের অধিকাংশই শাস্তির আওতায় আসেনি। ২০১৯ সালে এই ধরনের হত্যাকাণ্ডের রেকর্ড সংখ্যক ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে। আদিবাসী পরিবেশ কর্মীদের ওপর বিশেষভাবে নজর রাখা হচ্ছে, বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর সংখ্যার প্রায় ৪০% তারাই।

যুক্তরাষ্ট্র সরকারের মতো বেশ কিছু দেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলি পরিবেশ কর্মী এবং জলবায়ু পরিবর্তন সংস্থাগুলিকে "অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাসী" হিসাবে চিহ্নিত করেছে। কর্মীদের নজরদারি করা, তাদের তদন্ত করা, জেরা করা এবং তাদেরকে জাতীয় "ওয়াচলিস্টে" রাখা - যা বিমানে চলাচলকে কঠিন করে তোলে এবং স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তাদের নজরদারিতে রাখতে উস্কে দেয়। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে আমেরিকান নাগরিকদের সমাবেশ এবং বিক্ষোভের মিডিয়া কভারেজ বন্ধ করা, এবং কর্মীদের নজর রাখতে বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থাগুলির সাথে অংশীদারিত্ব করা - এগুলোও যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অন্যান্য কৌশলের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত।

ডুমইজম (Doomism)

জলবায়ু পরিবর্তনের রাজনীতিতে, 'ডুমইজম' হতাশাবাদী দৃষ্টিভঙ্গিকে বোঝায় যেখানে দাবি করা হয় জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য সময় ফুরিয়ে এসেছে। ডুমইজমের অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে ধারাবাহিক জলবায়ু ভাঙন বিন্দুর সম্ভাবনার অতিরঞ্জন। মনে করা হতে পারে যে, জীবাশ্ম জ্বালানী পোড়ানো অবিলম্বে বন্ধ করতে পারলেও তা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়া উল্লেখযোগ্য বিশ্বব্যাপী উষ্ণতাকে রুখতে পারবে না। যুক্তরাষ্ট্রে পরিচালিত মতামত জরিপ থেকে জানা যায়, বিশ্ব উষ্ণায়ন সীমাবদ্ধ করার জন্য আরও পদক্ষেপ নিতে অনিচ্ছুকদের মধ্যে, জলবায়ু পরিবর্তন সন্দেহের চেয়ে 'এখন অনেক দেরি হয়ে গেছে' বিশ্বাসই ছিল মূল কারণ।

তথ্যসূত্র

  1. Dessler 2020, Chpt. 2, p.35
  2. Dessler 2020, Chpt. 2, p.35
  3. Figueres 2020, Chpt 6, p73.74
  4. Dessler 2020, Chpt. 1, 4,5
  5. "António Guterres on the climate crisis: 'We are coming to a point of no return'"The Guardian। ১১ জুন ২০২১। 
  6. "DELIVERING ON THE $100 BILLIONCLIMATE FINANCE COMMITMENTAND TRANSFORMING CLIMATE FINANCE" (পিডিএফ)www.UN.org (ইংরেজি ভাষায়)। ডিসেম্বর ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জুন ২০২১ 
  7. Dessler 2020, Chpt. 1, 4,5
  8. "Why tackling global warming is a challenge without precedent"The Economist। এপ্রিল ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ৫ এপ্রিল ২০২১ 
  9. Dessler 2020, Chpt. 1, 4,5
  10. Elaine Kamarck (সেপ্টেম্বর ২০১৯)। "The challenging politics of climate change"Brookings Institution। সংগ্রহের তারিখ ৭ এপ্রিল ২০২১ 
  11. "Schwarzenegger: climate activists should focus on pollution"The Independent (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২১-০৭-০১। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৫-০৪ 
  12. Dessler 2020, Chpt. 1, 4,5
  13. Dessler 2020, Chp1, Chpt4, section 4.2.5
  14. Mann 2021, Chpt 5, p111
  15. Dessler 2020, Chpt4, p141
  16. Dessler 2020, Chpt4, p148-149
  17. "COP26: Article 6 rulebook updated, but remains work in progress"IHS Markit। ২০২১-১১-১৫। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০১-১৯ 
  18. Dessler 2020, Chpt. 1, 4,5
  19. Roberts, Gareth। "ULEZ expansion and higher charges considered to cut congestion"www.fleetnews.co.uk 
  20. Dessler 2020, Chpt. 1, 4,5
  21. Coren, Michael J. (৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯)। "Oil companies and utilities are buying up all the electric car charging startups"Quartz (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২৪ নভেম্বর ২০১৯ 
  22. "Enron Sought Global Warming Regulation, Not Free Markets"। Competitive Enterprise Institute। ২১ সেপ্টেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ ডিসেম্বর ২০১২ 
  23. David Michaels (2008) Doubt is Their Product: How Industry's Assault on Science Threatens Your Health.
  24. Hoggan, James; Littlemore, Richard (২০০৯)। Climate Cover-Up: The Crusade to Deny Global Warming। Vancouver: Greystone Books। আইএসবিএন 978-1-55365-485-8। সংগ্রহের তারিখ ১৯ মার্চ ২০১০  See, e.g., p31 ff, describing industry-based advocacy strategies in the context of climate change denial, and p73 ff, describing involvement of free-market think tanks in climate-change denial.
  25. "How Climate Change in Iowa is Changing U.S. Politics"Time। সংগ্রহের তারিখ ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ 
  26. "Political will is the most important driver of climate-neutral agriculture"D+C (ইংরেজি ভাষায়)। ৮ নভেম্বর ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ 
  27. "The CAP and climate change"European Commission - European Commission (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ 
  28. "Banking on carbon trading: Can banks stop climate change?"। CNN। ২০ জুলাই ২০০৮। সংগ্রহের তারিখ ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ 
  29. "The climate lobby from soup to nuts"। Center for Public Integrity। ২৭ ডিসেম্বর ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ 
  30. "Under Obama, Spain's Solar, Wind Energy Companies Invest Big In US"। Huffington Post। ১৮ জানুয়ারি ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ 
  31. "The inclusive route to low-carbon electricity: Energy & Environment - World Nuclear News"www.world-nuclear-news.org। সংগ্রহের তারিখ ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ 
  32. Nhede, Nicholas (১০ এপ্রিল ২০১৯)। "DSOs as key actors in e-mobility"Smart Energy International (ইংরেজি ভাষায়)। ৬ আগস্ট ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ নভেম্বর ২০১৯ 
  33. "25 Big Companies That Are Going Green"। Business Pundit। ২৯ জুলাই ২০০৮। সংগ্রহের তারিখ ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ 
  34. Shindell D, Faluvegi G, Seltzer K, Shindell C (২০১৮)। "Quantified, Localized Health Benefits of Accelerated Carbon Dioxide Emissions Reductions."Nat Clim Change8 (4): 291–295। ডিওআই:10.1038/s41558-018-0108-yপিএমআইডি 29623109পিএমসি 5880221অবাধে প্রবেশযোগ্যবিবকোড:2018NatCC...8..291S 
  35. "How ICTs can tackle the climate crisis"www.telecomreview.com। ১২ মার্চ ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ 
  36. "Climate change lobbying dominated by 10 firms"। Politico। ২০ মে ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ 
  37. "Greenpeace informal alliance with Wind and Solar"। সংগ্রহের তারিখ ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ 
  38. "Divestment Commitments"Gofossilfree.org। সংগ্রহের তারিখ ১১ এপ্রিল ২০২০ 
  39. Gibson, Dylan; Duram, Leslie (২০২০)। "Shifting Discourse on Climate and Sustainability: Key Characteristics of the Higher Education Fossil Fuel Divestment Movement"। Sustainability12 (23): 10069। ডিওআই:10.3390/su122310069অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  40. "Divestment from Fossil Fuels"Unity College (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১২-২৯ 
  41. "The database of fossil fuel divestment commitments made by institutions worldwide"Global Fossil Fuel Divestment Database managed by Stand.earth (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২৩-০৭-২৬। 
  42. Crouch, David (১ সেপ্টেম্বর ২০১৮)। "The Swedish 15-year-old who's cutting class to fight the climate crisis"The Guardian। London, United Kingdom। ২০১৯-০১-০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ 
  43. Weyler, Rex (৪ জানুয়ারি ২০১৯)। "The youth have seen enough"Greenpeace International। ২০২০-০১-২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ জানুয়ারি ২০১৯ 
  44. Carrington, Damian (১৯ মার্চ ২০১৯)। "School climate strikes: 1.4 million people took part, say campaigners"। ২০২০-০৩-০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ মার্চ ২০১৯ 
  45. Glenza, Jessica; Evans, Alan; Ellis-Petersen, Hannah; Zhou, Naaman (১৫ মার্চ ২০১৯)। "Climate strikes held around the world – as it happened"The Guardianআইএসএসএন 0261-3077। ১৬ মার্চ ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ মার্চ ২০১৯ 
  46. "Students walk out in global climate strike"BBC। ২৪ মে ২০১৯। ২৪ মে ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ মে ২০১৯ 
  47. Barclay, Eliza (১৫ মার্চ ২০১৯)। "Photos: kids in 123 countries went on strike to protect the climate"। ২০২০-০৩-২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ মার্চ ২০১৯ 
  48. "Students walk out in global climate strike"BBC। ২৪ মে ২০১৯। ২৪ মে ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ মে ২০১৯ 
  49. "'We're one, we're back': Pupils renew world climate action strike"Al Jazeera। ২৪ মে ২০১৯। ২৪ মে ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ মে ২০১৯ 
  50. Gerretsen, Isabelle (২৪ মে ২০১৯)। "Global Climate Strike: Record number of students walk out"CNN। ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ 
  51. Haynes, Suyin (২৪ মে ২০১৯)। "Students From 1,600 Cities Just Walked Out of School to Protest Climate Change. It Could Be Greta Thunberg's Biggest Strike Yet"Time। ২৬ মে ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ মে ২০১৯ 
  52. Largest climate strike:
    • Laville, Sandra; Watts, Jonathan (২১ সেপ্টেম্বর ২০১৯)। "Across the globe, millions join biggest climate protest ever"The Guardian। ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ 4 million protesters overall:
    • Barclay, Eliza; Resnick, Brian (২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯)। "How big was the global climate strike? 4 million people, activists estimate."Vox। ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ 1.4 million protesters in Germany:
  53. Taylor, Matthew; Watts, Jonathan; Bartlett, John (২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯)। "Climate crisis: 6 million people join latest wave of global protests"The Guardian। ২০১৯-১২-০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ 
  54. "Fridays for future, al via i cortei in 180 città italiane: 'Siamo più di un milione'" [Fridays for future, kids in the streets in 180 Italian cities: 'We're more than a million']। la Repubblica। ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯। ২০২০-০২-২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ 
  55. Murphy, Jessica (২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯)। "Hundreds of thousands join Canada climate strikes"BBC। ২০১৯-১০-১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ 
  56. "Failures of Kyoto will Repeat with the Paris Climate Agreement"U.S. Senate Committee on Environment and Public Works (ইংরেজি ভাষায়)। এপ্রিল ২১, ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০১-০৮ 
  57. Pierre, Jeffrey; Neuman, Scott (অক্টোবর ২৭, ২০২১)। "How decades of disinformation about fossil fuels halted U.S. climate policy"NPR। সংগ্রহের তারিখ জানুয়ারি ৮, ২০২৪ 
  58. Dessler 2020, Chpt. 1, 4,5
  59. Mann 2021, Chpt 9.
  60. Figueres 2020, Chpt 1, Chpt 5
  61. Simon Lewis (৩ মার্চ ২০২১)। "The climate crisis can't be solved by carbon accounting tricks"The Guardian। সংগ্রহের তারিখ ৬ এপ্রিল ২০২১ 
  62. Dessler 2020, Chpt. 1, 4,5
  63. Mann 2021, Chpt 9.
  64. Figueres 2020, Chpt 1, Chpt 5
  65. Poushter, Jacob; Fagan, Moira; Gubbala, Sneha (৩১ আগস্ট ২০২২)। "Climate Change Remains Top Global Threat Across 19-Country Survey"pewresearch.org। Pew Research Center। ৩১ আগস্ট ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।  — Other threats in the survey were: spread of false information online, cyberattacks from other countries, condition of the global economy, and spread of infectious diseases.
  66. Vaughan, Adam (১৮ ডিসেম্বর ২০১৯)। "The Year the World Woke up to Climate Change"New Scientist244 (3261/62)। পৃষ্ঠা 20–21। ২২ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ জানুয়ারি ২০২০ 
  67. Mann 2021, Chpt 9, p230-238
  68. McGinn, Miyo (২০১৯-০৭-০৫)। "OPEC head: Climate activists are the 'greatest threat' to oil industry"Grist (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০১-০৮ 
  69. Figueres 2020, Chpt 8, p158, p253
  70. van Valkengoed, Anne M.; Steg, Linda; Perlaviciute, Goda (২১ এপ্রিল ২০২৩)। "The psychological distance of climate change is overestimated"One Earth6 (4): 362–391। এসটুসিআইডি 258281951 Check |s2cid= value (সাহায্য)ডিওআই:10.1016/j.oneear.2023.03.006বিবকোড:2023OEart...6..362V 
  71. van Valkengoed, Anne M.; Steg, Linda; Perlaviciute, Goda (২১ এপ্রিল ২০২৩)। "The psychological distance of climate change is overestimated"One Earth6 (4): 362–391। এসটুসিআইডি 258281951 Check |s2cid= value (সাহায্য)ডিওআই:10.1016/j.oneear.2023.03.006বিবকোড:2023OEart...6..362V 
  72. Mann 2021, Chpt 9, p226-230
  73. Waldman, Scott (২৯ মে ২০২০)। "Cato closes its climate shop; Pat Michaels is out"E&E News (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২৮ জুলাই ২০২০ 
  74. Pilta Clark (২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১)। "The new politics of climate change"Financial Times। Archived from the original on ২৩ এপ্রিল ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ৬ এপ্রিল ২০২১ 
  75. Peter Franklin (ফেব্রুয়ারি ২০২০)। "Bigger than Brexit: the new politics of climate change"unHerd। সংগ্রহের তারিখ ১০ এপ্রিল ২০২১ 
  76. Michael J. I. Brown (জুন ২০১৯)। "Why old-school climate denial has had its day"The Conversation। সংগ্রহের তারিখ ১০ এপ্রিল ২০২১ 
  77. "Renewables – Global Energy Review 2021 – Analysis"IEA (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১২-১৭ 
  78. "NDCs and Renewable Energy Targets in 2021"www.irena.org (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২২-০১-১১। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০১-০৮ 
  79. "The Paris Agreement"unfccc.int। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০১-০৮ 
  80. Lewis, Joanna I. (নভেম্বর ২০২১)। "Green Industrial Policy After Paris: Renewable Energy Policy Measures and Climate Goals"। Global Environmental Politics21 (4): 42–63। আইএসএসএন 1526-3800এসটুসিআইডি 240142129 Check |s2cid= value (সাহায্য)ডিওআই:10.1162/glep_a_00636 
  81. Newburger, Emma (২০২১-১১-১৬)। "What the COP26 climate conference really accomplished"CNBC (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১২-১৭ 
  82. "What Just Happened in Glasgow at the U.N. Climate Summit?"Audubon (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২১-১১-১৯। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১২-১৭ 
  83. Mann 2021, Chpt. 9. p238
  84. Dessler 2020, Chpt. 4, p131
  85. O'Callaghan, Brian; Murdock, Em (১০ মার্চ ২০২০)। "Are We Building Back Better? Evidence from 2020 and pathways to green inclusive spending" (পিডিএফ)United Nations Environment Programme 
  86. Hepburn, Cameron; O'Callaghan, Brian; Stern, Nicholas; Stiglitz, Joseph; Zenghelis, Dimitri (২০২০)। "Will COVID-19 fiscal recovery packages accelerate or retard progress on climate change?"। Oxford Review of Economic Policy36 (Supplement_1): S359–S381। ডিওআই:10.1093/oxrep/graa015অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  87. O'Callaghan, Brian; Yau, Nigel; Hepburn, Cameron (২০২২)। "How Stimulating Is a Green Stimulus? The Economic Attributes of Green Fiscal Spending"Annual Review of Environment and Resources47: 697–723। এসটুসিআইডি 249833907 Check |s2cid= value (সাহায্য)ডিওআই:10.1146/annurev-environ-112420-020640 
  88. Mutikani, Lucia (২৯ জুলাই ২০২১)। "U.S. economy contracted 19.2% during COVID-19 pandemic recession"Reuters (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৮ নভেম্বর ২০২১ 
  89. "Boosting the EU's green recovery: Commission invests €1 billion in innovative clean technology projects"European Commission - European Commission (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-৩০ 
  90. e.g. Tom Steyer, 'A fair, green recovery for all Californians'; New York City, COVID-19 Green Recovery.
  91. Barbier, Ed (২০১০)। "Green Stimulus, Green Recovery and Global Imbalances"World Economics11 (2): 149–177। 
  92. Holder, Michael (২০২০-০৬-০৫)। "OECD and UN institutions demand green economic recovery from Covid-19"Business Green (ইংরেজি ভাষায়)। ১৯ জুন ২০২০ তারিখে মূলঅর্থের বিনিময়ে সদস্যতা প্রয়োজন থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৭-১৯ 
  93. "Global Recovery Observatory"Oxford University Economic Recovery Project। University of Oxford, UNEP, and UNDP। 
  94. "Track public money for energy in recovery packages"Energy Policy Tracker 
  95. "Focus on green recovery"Organisation for Economic Co-operation and Development। ২২ ডিসেম্বর ২০২০। 
  96. O'Callaghan, Brian; Murdock, Em (১০ মার্চ ২০২০)। "Are We Building Back Better? Evidence from 2020 and pathways to green inclusive spending" (পিডিএফ)United Nations Environment Programme 
  97. "Key findings – Sustainable Recovery Tracker – Analysis"IEA। জুলাই ২০২১। ২৪ জুলাই ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জুলাই ২০২১ 
  98. Nahm, Jonas M.; Miller, Scot M.; Urpelainen, Johannes (২ মার্চ ২০২২)। "G20's US$14-trillion economic stimulus reneges on emissions pledges"। Nature (ইংরেজি ভাষায়)। 603 (7899): 28–31। এসটুসিআইডি 247221463 Check |s2cid= value (সাহায্য)ডিওআই:10.1038/d41586-022-00540-6অবাধে প্রবেশযোগ্যপিএমআইডি 35236968 |pmid= এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)বিবকোড:2022Natur.603...28N 


উদ্ধৃতি ত্রুটি: "note" নামক গ্রুপের জন্য <ref> ট্যাগ রয়েছে, কিন্তু এর জন্য কোন সঙ্গতিপূর্ণ <references group="note"/> ট্যাগ পাওয়া যায়নি