পারিবারিক সহিংসতা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Naznin S. Niti (আলোচনা | অবদান)
তথ্যসূত্র যোগ/সংশোধন
Naznin S. Niti (আলোচনা | অবদান)
তথ্যসূত্র যোগ/সংশোধন
২৩ নং লাইন: ২৩ নং লাইন:


= ইতিহাস =
= ইতিহাস =
এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা থেকে জানা যায়, ১৮০০র গোড়ার দিকে, বেশিরভাগ আইনী ব্যবস্থাগুলো স্পষ্টতই স্ত্রীকে মারধর করাকে স্ত্রীর উপর স্বামীর অধিকার হিসেবে গ্রহণ করেছিল।<ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://dx.doi.org/10.2307/1328947|শিরোনাম=Husband and Wife. Rights of Wife against Husband and His Property. Wife's Right to Sue Her Husband for Torts. Assault|তারিখ=1921-04|সাময়িকী=Harvard Law Review|খণ্ড=34|সংখ্যা নং=6|পাতাসমূহ=676|doi=10.2307/1328947|issn=0017-811X}}</ref><ref>{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://www.worldcat.org/oclc/37368711|শিরোনাম=Feminists negotiate the state : the politics of domestic violence|তারিখ=1997|প্রকাশক=University Press of America|অবস্থান=Lanham|অন্যান্য=Cynthia R. Daniels, Rachelle Brooks|আইএসবিএন=0-7618-0883-3|oclc=37368711}}</ref> ষোড়শ শতাব্দীতে ইংল্যান্ডের প্রচলিত আইনে পারিবারিক সহিংসতাকে কোন নারীর বিরুদ্ধে অপরাধের বদলে সামাজিক অপরাধ হিসাবে গণ্য করা হতো যা দ্বারা শান্তি ভঙ্গ হয়। স্ত্রীদের স্থানীয় শান্তি বিধায়কের কাছে পুনরায় শান্তি প্রতিষ্ঠার আবেদন করবার অধিকার ছিল।
এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা থেকে জানা যায়, ১৮০০র গোড়ার দিকে, বেশিরভাগ আইনী ব্যবস্থাগুলো স্পষ্টতই স্ত্রীকে মারধর করাকে স্ত্রীর উপর স্বামীর অধিকার হিসেবে গ্রহণ করেছিল।<ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://dx.doi.org/10.2307/1328947|শিরোনাম=Husband and Wife. Rights of Wife against Husband and His Property. Wife's Right to Sue Her Husband for Torts. Assault|তারিখ=1921-04|সাময়িকী=Harvard Law Review|খণ্ড=34|সংখ্যা নং=6|পাতাসমূহ=676|doi=10.2307/1328947|issn=0017-811X}}</ref><ref name=":10">{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://www.worldcat.org/oclc/37368711|শিরোনাম=Feminists negotiate the state : the politics of domestic violence|তারিখ=1997|প্রকাশক=University Press of America|অবস্থান=Lanham|অন্যান্য=Cynthia R. Daniels, Rachelle Brooks|আইএসবিএন=0-7618-0883-3|oclc=37368711}}</ref> ষোড়শ শতাব্দীতে ইংল্যান্ডের প্রচলিত আইনে পারিবারিক সহিংসতাকে কোন নারীর বিরুদ্ধে অপরাধের বদলে সামাজিক অপরাধ হিসাবে গণ্য করা হতো যা দ্বারা শান্তি ভঙ্গ হয়। স্ত্রীদের স্থানীয় শান্তি বিধায়কের কাছে পুনরায় শান্তি প্রতিষ্ঠার আবেদন করবার অধিকার ছিল।


পদ্ধতিগুলো অনানুষ্ঠানিক এবং রেকর্ডের বাইরে ছিল, এবং কোনও আইনি নির্দেশিকায় সহিংসতার কতটুকু প্রমাণ বা কতটুকু মাত্রা হলে তা বিচারের আওতায় আনা যাবে সে উল্লেখ ছিল না । দুটি সাধারণ বাক্য ছিল, স্বামীকে বন্ড পোস্ট করতে বাধ্য করা, বা ভবিষ্যতে ভাল আচরণের গ্যারান্টি দিয়ে সহযোগীদের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হওয়া। মারধরের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে শারীরিক আক্রমণের অভিযোগ আনা যেতে পারত, যদিও এই জাতীয় মামলাগুলি বিরল ছিল এবং গুরুতর আঘাত বা মৃত্যুর ক্ষেত্র ছাড়া সাধারণত ছোটখাটো জরিমানা দিয়েই শাস্তি সম্পন্ন করা হতো।
পদ্ধতিগুলো অনানুষ্ঠানিক এবং অসংরক্ষিত ছিল, এবং কোনও আইনি নির্দেশিকায় সহিংসতার কতটুকু প্রমাণ বা কতটুকু মাত্রা হলে তা বিচারের আওতায় আনা যাবে সে উল্লেখ ছিল না । দুটি সাধারণ শাস্তি স্বামীকে শান্তি স্থাপনে বাধ্য করত, বা ভবিষ্যতে ভাল আচরণের গ্যারান্টি দিয়ে সহযোগীদের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ করত। মারধরের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে শারীরিক আক্রমণের অভিযোগ আনা যেত, যদিও এই জাতীয় মামলাগুলি বিরল ছিল এবং গুরুতর আঘাত বা মৃত্যুর ক্ষেত্র ছাড়া সাধারণত ছোটখাটো জরিমানা দিয়েই শাস্তি সম্পন্ন করা হতো।<ref name=":9">{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://dx.doi.org/10.1353/eam.2007.0008|শিরোনাম=The American Revolution, Wife Beating, and the Emergent Value of Privacy|শেষাংশ=Bloch|প্রথমাংশ=Ruth H.|তারিখ=2007|সাময়িকী=Early American Studies: An Interdisciplinary Journal|খণ্ড=5|সংখ্যা নং=2|পাতাসমূহ=223–251|doi=10.1353/eam.2007.0008|issn=1559-0895}}</ref>


একই ভাবে, এই কাঠামোটি আমেরিকান উপনিবেশগুলিতে গৃহীত হয়েছিল। ১৬৪১ সালে ম্যাসাচুসেটস বে উপনিবেশীকদের বডি অফ লিবার্টিজ ঘোষণা করেছিল যে, একজন বিবাহিত নারীর "তার স্বামীর দ্বারা শারীরিক সংশোধন বা আচড় থেকে মুক্ত থাকা উচিত।" নিউ হ্যাম্পশায়ার এবং রোড আইল্যান্ডও তাদের ফৌজদারী কোডগুলিতে স্ত্রীকে মারধর করার বিষয়টি স্পষ্টভাবে নিষিদ্ধ করেছিল।
একই ভাবে, এই কাঠামোটি আমেরিকান উপনিবেশগুলিতে গৃহীত হয়েছিল। ১৬৪১ সালে ম্যাসাচুসেটস বে উপনিবেশীকদের বডি অফ লিবার্টিজ ঘোষণা করেছিল যে, একজন বিবাহিত নারীর "তার স্বামীর দ্বারা শারীরিক সংশোধন বা আচড় থেকে মুক্ত থাকা উচিত।"<ref>{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://worldcat.org/oclc/5922118|শিরোনাম=The body of liberties : the liberties of the Massachusetts colonie in New England, 1641.|শেষাংশ=1578-1652.|প্রথমাংশ=Ward, Nathaniel,|oclc=5922118}}</ref> নিউ হ্যাম্পশায়ার এবং রোড আইল্যান্ডও তাদের ফৌজদারী বিধিমালায় স্ত্রীকে মারধর করার বিষয়টি স্পষ্টভাবে নিষিদ্ধ করেছিল।<ref name=":9" />


আমেরিকান বিপ্লবের পর, আইনী ব্যবস্থায় পরিবর্তন স্থানীয় বিচারপতিদের চেয়ে রাজ্য আদালতের হাতে বেশি ক্ষমতা অর্পণ করেছিল। অনেক রাজ্যই তাদের আইনসভা থেকে বিবাহবিচ্ছেদের মামলার এখতিয়ারকে তাদের বিচার বিভাগে স্থানান্তরিত করে, এবং নিষ্ঠুরতা ও প্রহারের শিকার নারীদের আইনসম্মতভাবে বিবাহবিচ্ছেদ বা আইনী সহায়তা নেয়ার হার বাড়তে থাকে।
আমেরিকান বিপ্লবের পর, আইনী ব্যবস্থায় পরিবর্তন স্থানীয় বিচারপতিদের চেয়ে রাজ্য আদালতের হাতে বেশি ক্ষমতা অর্পণ করেছিল। অনেক রাজ্যই তাদের আইনসভা থেকে বিবাহবিচ্ছেদের মামলার এখতিয়ারকে তাদের বিচার বিভাগে স্থানান্তরিত করে, এবং তাতে নিষ্ঠুরতা ও প্রহারের শিকার নারীদের আইনসম্মতভাবে বিবাহবিচ্ছেদ বা আইনী সহায়তা নেয়ার হার বাড়তে থাকে।


এতে নারীদের উপর প্রমাণ উপস্থাপন করার একটি বড় দায়ও ছিল, কারণ আদালতে তার জীবন ঝুঁকির মধ্যে ছিল সেটি প্রত্যক্ষভাবে প্রমাণ করতে হতো। ১৮২৪ সালে, মিসিসিপি সুপ্রিম কোর্ট, অঙ্গুলির নিয়মের বরাত দিয়ে স্টেট বনাম ব্র্যাডলে মামলাতে স্ত্রী মারধরের প্রতি একটি ইতিবাচক অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছিল, যে নজিরটি পরবর্তী কয়েক দশক ধরে সাধারণ আইনকে প্রভাবিত করেছিল।
এতে প্রমাণ উপস্থাপন করার একটি বড় দায়ও নারীদের উপর তৈরি হয়েছিল, কারণ আদালতে তার জীবন ঝুঁকির মধ্যে ছিল সেটি প্রত্যক্ষভাবে প্রমাণ করতে হতো। ১৮২৪ সালে, মিসিসিপি সুপ্রিম কোর্ট, অঙ্গুলির নিয়মের বরাত দিয়ে স্টেট বনাম ব্র্যাডলি মামলাটি স্ত্রী মারধরের প্রতি ইতিবাচক অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছিল, যে নজির পরবর্তী কয়েক দশক ধরে সাধারণ আইনকে প্রভাবিত করেছিল।<ref name=":9" />


উনিশ শতকে রাজনৈতিক আন্দোলন এবং প্রথম-তরঙ্গের নারীবাদী আন্দোলনের ফলে যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য দেশের পারিবারিকসহিংসতা সম্পর্কিত জনপ্রিয় মতামত এবং আইন উভয়ই পরিবর্তিত হয়েছিল। ১৮৫০ সালে, টেনেসি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম অঙ্গরাজ্য ছিল যারা স্পষ্টভাবে স্ত্রীকে প্রহার করা নিষিদ্ধ করে দেয়। শীঘ্রই অন্যান্য রাজ্যগুলি এর অনুসরণ করে। ১৮৭১ সালে ম্যাসাচুসেটস এবং আলাবামার আদালত ব্র্যাডলির নজিরটিকে উল্টো করে দেওয়ার কারণে আইনী মতামতের জোয়ার স্ত্রী-প্রহারের অধিকারের ধারণার বিরুদ্ধে যেতে শুরু করে। ১৮৭৮ সালে, যুক্তরাজ্যে বৈবাহিক কারণ সংক্রান্ত আইনের মাধ্যমে যুক্তরাজ্যের নারীদের অত্যাচারী স্বামীর কাছ থেকে আইনী বিচ্ছেদ দাবি চাওয়ার সুযোগ করে দেয়। ১৮৭০ এর দশকের শেষ দিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বেশিরভাগ আদালত স্ত্রীদের শারীরিকভাবে শাসন করার অধিকার দাবী করা স্বামীদের আবেদন প্রত্যাখ্যান করে। বিশ শতকের গোড়ার দিক থেকে পুলিশ পারিবারিকসহিংতার ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করা সাধারণ বিষয় হয়ে দাঁড়ায় যদিও গ্রেফ্তারের ঘটনা বিরলই ছিল।
উনিশ শতকে রাজনৈতিক আন্দোলন এবং প্রথম-তরঙ্গের নারীবাদী আন্দোলনের ফলে যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য দেশের পারিবারিক সহিংসতা সম্পর্কিত জনপ্রিয় মতামত এবং আইন উভয়ই পরিবর্তিত হয়েছিল।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://dx.doi.org/10.1163/9789004337862__com_050367|শিরোনাম=Encyclopaedia Britannica|তারিখ=from the original on June 27, 2015. Retrieved October 31, 2011. Feminist agitation in the 1800s produced a sea change in public opinion..|ওয়েবসাইট=Lexikon des gesamten Buchwesens Online|সংগ্রহের-তারিখ=2021-04-11}}</ref><ref>{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://www.worldcat.org/oclc/48857609|শিরোনাম=Heroes of their own lives : the politics and history of family violence : Boston, 1880-1960|শেষাংশ=Gordon|প্রথমাংশ=Linda|তারিখ=2002|প্রকাশক=University of Illinois Press|অবস্থান=Urbana|আইএসবিএন=0-252-07079-8|oclc=48857609}}</ref> ১৮৫০ সালে, টেনেসি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম অঙ্গরাজ্য ছিল যারা স্পষ্টভাবে স্ত্রীকে প্রহার করা নিষিদ্ধ করে।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://dx.doi.org/10.1007/978-1-349-27698-1_7|শিরোনাম=Women in the United States, 1830–1945|শেষাংশ=Kleinberg|প্রথমাংশ=S. J.|তারিখ=1999|প্রকাশক=Macmillan Education UK|অবস্থান=London|পাতাসমূহ=128–151|আইএসবিএন=978-0-333-61098-5}}</ref><ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://dx.doi.org/10.1086/449151|শিরোনাম=Criminal Approaches to Family Violence, 1640-1980|শেষাংশ=Pleck|প্রথমাংশ=Elizabeth|তারিখ=1989-01-XX|সাময়িকী=Crime and Justice|খণ্ড=11|পাতাসমূহ=19–57|doi=10.1086/449151|issn=0192-3234}}</ref><ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://dx.doi.org/10.4135/9781473961548|শিরোনাম=Domestic Violence: Coercive Control|তারিখ=2017|doi=10.4135/9781473961548}}</ref> শীঘ্রই অন্যান্য রাজ্যগুলি এর অনুসরণ করেছিল।<ref name=":10" /><ref>{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://dx.doi.org/10.1515/9783110970197.189|শিরোনাম=Household Constitution and Family Relationships|শেষাংশ=PLECK|প্রথমাংশ=ELIZABETH|তারিখ=1992-12-31|প্রকাশক=DE GRUYTER SAUR|পাতাসমূহ=189–203|আইএসবিএন=978-3-598-41456-5}}</ref> ১৮৭১ সালে ম্যাসাচুসেটস এবং আলাবামার আদালত ব্র্যাডলি মামলার রুল বাতিল করে দিলে আইনী মতামতের জোয়ার স্ত্রী-প্রহারের অধিকারের ধারণার বিরুদ্ধে যেতে শুরু করে।<ref name=":9" /> ১৮৭৮ সালে, যুক্তরাজ্যে বৈবাহিক কারণ সংক্রান্ত আইনের মাধ্যমে যুক্তরাজ্যের নারীদের অত্যাচারী স্বামীর কাছ থেকে আইনী বিচ্ছেদ দাবি চাওয়ার সুযোগ করে দেয়া হয়।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://dx.doi.org/10.4324/9780203016992-9|শিরোনাম=Gender And Crime In Modern Europe|তারিখ=2002-01-04|প্রকাশক=Routledge|পাতাসমূহ=134–152|আইএসবিএন=978-0-203-01699-2}}</ref> ১৮৭০ এর দশকের শেষ দিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বেশিরভাগ আদালত স্ত্রীদের শারীরিকভাবে শাসন করার স্বামীদের চিরায়ত অধিকারকে প্রত্যাখ্যান করে।<ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://dx.doi.org/10.2307/1101323|শিরোনাম=Intoxicating Liquors. "Retailing" Intoxicating Liquors Criminal Law Reports: Being Reports of Cases Determined in the Federal and State Courts of the United States, and in the Courts of England, Ireland, Canada, Etc. with Notes, Volume 2, New York: Hurd and Houghton, 1874–1875, OCLC 22125148, The cases in the American courts are uniform against the right of the husband to use any [physical] chastisement, moderate or otherwise, toward the wife, for any purpose.|তারিখ=1905-06|সাময়িকী=The Virginia Law Register|খণ্ড=11|সংখ্যা নং=2|পাতাসমূহ=148|doi=10.2307/1101323|issn=1547-1357|সংগ্রহের-তারিখ=}}</ref> বিশ শতকের গোড়ার দিক থেকে পুলিশের পারিবারিক সহিংতার ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করা সাধারণ বিষয় হয়ে দাঁড়ায় যদিও তখনও গ্রেফতারের ঘটনা বিরলই ছিল।<ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://dx.doi.org/10.1300/j012v10n02_02|শিরোনাম=Revisiting the Rule of Thumb|শেষাংশ=Lentz|প্রথমাংশ=Susan A.|তারিখ=1999-03-05|সাময়িকী=Women & Criminal Justice|খণ্ড=10|সংখ্যা নং=2|পাতাসমূহ=9–27|doi=10.1300/j012v10n02_02|issn=0897-4454}}</ref>


বিশ্বজুড়ে বেশিরভাগ আইনী ব্যবস্থায়, ১৯৯০ এর দশক থেকেই কেবল পারিবারিকসহিংসতার বিষয়টি সম্বোধন করা শুরু হয়েছে; প্রকৃতপক্ষে, বিংশ শতাব্দীর শেষের দিক ছাড়া, বেশিরভাগ দেশগুলিতে এ ধরনের সহিংসতার বিরুদ্ধে আইন বা আইনী অনুশীলনে সুরক্ষা ছিল না বললেই চলে। ১৯৯৩ সালে, জাতিসংঘ পারিবারিকসহিংসতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কৌশল প্রকাশ করেছে। এই প্রকাশনায় বিশ্বজুড়ে দেশগুলিকে পারিবারিকসহিংসতাকে কে অপরাধমূলক আচরণ হিসাবে গণ্য করার আহ্বান জানানো হয় এবং বলা হয় যে একটি ব্যক্তিগত পারিবারিক জীবনের অধিকার মানে পরিবারের সদস্যদের নির্যাতনের অধিকার নয়। পাশাপাশি এও স্বীকার করে নেয়া হয় যে, প্রকাশনাটি লেখার সময় বেশিরভাগ আইনী ব্যবস্থা পারিবারিকসহিংসতাকে আইনের আওতার বাইরে হিসেবে বিবেচনা করে। তাদের যুক্তিগুলো এভাবে ব্যাখ্যা করা যায়: "বাচ্চাদের শারীরিক আঘাতের মধ্য দিয়ে শৃঙ্খলা শেখানোর চেষ্টা অনুমোদিত এবং অনেক আইনী ব্যবস্থায় উত্সাহিত করা হয়েছে এবং প্রচুর সংখ্যক দেশ স্ত্রীকে হালকা শারীরিক শাস্তি দেওয়ার অনুমতি দেয় বা, যদি তারা এখন তা নাও করে থাকে তবে গত ১০০ বছরের মধ্যে তারা এটি করেছে। আবার বেশিরভাগ আইনী ব্যবস্থা অপরাধমূলক পরিস্থিতিও চিহ্নিত করতে ব্যর্থ হয় যেখানে কোনও স্ত্রী তার স্বামীর সাথে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতে বাধ্য হয়। প্রকৃতপক্ষে স্ত্রীদের বিরুদ্ধে সহিংসতার ক্ষেত্রে, একটি ব্যাপক বিশ্বাস রয়েছে যে নারীরা তাদের স্বামীর কাছ থেকে নির্দিষ্ট স্তরের সহিংসতা সহ্য করতে বা উপভোগ করতে পারে "।
বিশ্বজুড়ে বেশিরভাগ আইনী ব্যবস্থায়, ১৯৯০ এর দশক থেকেই কেবল পারিবারিক সহিংসতার বিষয়টি সম্বোধন করা শুরু হয়েছে; প্রকৃতপক্ষে, বিংশ শতাব্দীর শেষের দিক ছাড়া, বেশিরভাগ দেশগুলিতে এ ধরনের সহিংসতার বিরুদ্ধে আইন বা আইনী অনুশীলনে সুরক্ষা ছিল না বললেই চলে।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://dx.doi.org/10.4324/9781351022989-5|শিরোনাম=Women’s studies|শেষাংশ=Smith|প্রথমাংশ=Bonnie G.|তারিখ=2019-03-06|প্রকাশক=Routledge|অবস্থান=2 Edition. {{!}} New York : Routledge, 2019. {{!}} Revised edition of the author’s Women’s studies, 2013.|পাতাসমূহ=83–100|আইএসবিএন=978-1-351-02298-9}}</ref> ১৯৯৩ সালে, জাতিসংঘ পারিবারিক সহিংসতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কৌশল প্রকাশ করেছে।<ref name=":11">{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://dx.doi.org/10.1097/00002800-199703000-00023|শিরোনাম=Domestic Violence Resource Manual|তারিখ=1997-03-XX|সাময়িকী=Clinical Nurse Specialist|খণ্ড=11|সংখ্যা নং=2|পাতাসমূহ=1|doi=10.1097/00002800-199703000-00023|issn=0887-6274}}</ref> এই প্রকাশনায় বিশ্বজুড়ে দেশগুলোতে পারিবারিক সহিংসতাকে কে অপরাধমূলক আচরণ হিসাবে গণ্য করার আহ্বান জানানো হয় এবং বলা হয় যে একটি ব্যক্তিগত পারিবারিক জীবনের অধিকার মানে পরিবারের সদস্যদের নির্যাতনের অধিকার নয়। পাশাপাশি এও স্বীকার করে নেয়া হয় যে, প্রকাশনাটি লেখার সময় বেশিরভাগ আইনী ব্যবস্থা পারিবারিক সহিংসতাকে আইনের আওতার বাইরে হিসেবে বিবেচনা করে। তাদের যুক্তিগুলো এভাবে ব্যাখ্যা করা যায়: "বাচ্চাদের শারীরিক আঘাতের মধ্য দিয়ে শৃঙ্খলা শেখানোর চেষ্টা অনুমোদিত এবং অনেক আইনী ব্যবস্থায় উত্সাহিত করা হয়েছে এবং প্রচুর সংখ্যক দেশ স্ত্রীকে হালকা শারীরিক শাস্তি দেওয়ার অনুমতি দেয় বা, যদি তারা এখন তা নাও করে থাকে তবে গত ১০০ বছরের মধ্যে তারা এমনটি করেছে। আবার বেশিরভাগ আইনী ব্যবস্থা অপরাধমূলক পরিস্থিতিও চিহ্নিত করতে ব্যর্থ হয় যেখানে কোনও স্ত্রী তার স্বামীর সাথে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতে বাধ্য হয়। প্রকৃতপক্ষে স্ত্রীদের বিরুদ্ধে সহিংসতার ক্ষেত্রে, একটি ব্যাপক বিশ্বাস রয়েছে যে নারীরা তাদের স্বামীর কাছ থেকে নির্দিষ্ট স্তরের সহিংসতা সহ্য করতে বা এমনকি উপভোগও করতে পারে "।<ref name=":11" />


সাম্প্রতিক দশকগুলিতে, পারিবারিকসহিংসতার জন্য আইনী দায়মুক্তি বন্ধের আহ্বান জানানো হয়েছে, প্রায়শই এই জাতীয় কার্যকলাপকে ব্যক্তিগত মনে করে এই ধারণার ভিত্তিতে দায়মুক্তি দেয়া হয়। ইস্তাম্বুল কনভেনশন হ'ল পারিবারিকসহিংসতা ও নারীর প্রতি সহিংসতা মোকাবেলা করার জন্য ইউরোপের প্রথম আইনত বাধ্যবাধকতাভিত্তিক বিধি। কনভেনশনটি আইন ও আইন প্রয়োগের জায়গায় নারীর প্রতি সহিংসতাকে এবং পারিবারিকসহিংসতা মেনে নেয়ার প্রবণতার অবসান ঘটাতে চায়। কনভেনশনটির ব্যাখ্যামূলক প্রতিবেদনে ইউরোপীয় দেশগুলোতে সহিংসতার প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ধরনগুলোকে অবহেলায় দেখার দীর্ঘ রীতি স্বীকার করে নেয়া হয়। এর ২১৯ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে: "কাউন্সিল অফ ইউরোপের সদস্য রাষ্ট্রগুলিতে অতীত অনুশীলনের অনেক উদাহরণ রয়েছে যা দেখায় যে, যদি ভুক্তভোগী এবং অপরাধী পরস্পর বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ থাকেন বা এ ধরনের সম্পর্কের মধ্যে থেকে থাকেন তাহলে ঐ সম্পর্কের কারণেই বিবাহিত সম্পর্কের মধ্যে ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটলে তাকে স্বীকৃতি দেয়া হতো না। আর এটি দীর্ঘদিন ধরেই এ অবস্থায় ছিল।
সাম্প্রতিক দশকগুলিতে, পারিবারিক সহিংসতার জন্য আইনী দায়মুক্তি বন্ধের আহ্বান জানানো হয়েছে, প্রায়শই এই জাতীয় কার্যকলাপকে ব্যক্তিগত মনে করে এই ধারণার ভিত্তিতে দায়মুক্তি দেয়া হয়।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://dx.doi.org/10.4324/9781315458458-11|শিরোনাম=Women of Asia|শেষাংশ=Mahmood|প্রথমাংশ=Shahirah|তারিখ=2018-07-11|প্রকাশক=Routledge|অবস্থান=New York, NY: Routledge, 2018.|পাতাসমূহ=154–169|আইএসবিএন=978-1-315-45845-8}}</ref><ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://dx.doi.org/10.1163/1570-6664_iyb_sim_org_2052|শিরোনাম=Office of the United Nations High Commissioner for Human Rights (OHCHR)|ওয়েবসাইট=International Year Book and Statesmen's Who's Who|সংগ্রহের-তারিখ=2021-04-11}}</ref> ইস্তাম্বুল কনভেনশন হল পারিবারিক সহিংসতা ও নারীর প্রতি সহিংসতা মোকাবেলা করার জন্য ইউরোপের প্রথম আইনত বাধ্যবাধকতাভিত্তিক বিধি।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://dx.doi.org/10.4324/9781315185002-6|শিরোনাম=The Legal Protection of Women from Violence|শেষাংশ=Jones|প্রথমাংশ=Jackie|তারিখ=2018-03-22|প্রকাশক=Routledge|অবস্থান=Title: The legal protection of women and girls from violence : normative gaps in international law / Jackie Jones and Rashida Manjoo. Description: Abingdon, Oxon [UK] ; New York : Routledge, 2018. {{!}}|পাতাসমূহ=139–165|আইএসবিএন=978-1-315-18500-2}}</ref> কনভেনশনটি আইন ও আইন প্রয়োগের জায়গায় নারীর প্রতি সহিংসতাকে এবং পারিবারিক সহিংসতা মেনে নেয়ার প্রবণতার অবসান ঘটাতে চায়। কনভেনশনটির ব্যাখ্যামূলক প্রতিবেদনে ইউরোপীয় দেশগুলোতে সহিংসতার প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ধরনগুলোকে অবহেলায় দেখার দীর্ঘ রীতি স্বীকার করে নেয়া হয়।<ref name=":12">{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://dx.doi.org/10.1163/2210-7975_hrd-9953-2014005|শিরোনাম=COUNCIL OF EUROPE CONVENTION ON PREVENTING AND COMBATING VIOLENCE AGAINST WOMEN AND DOMESTIC VIOLENCE|ওয়েবসাইট=Human Rights Documents online|সংগ্রহের-তারিখ=2021-04-11}}</ref> এর ২১৯ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে: "কাউন্সিল অফ ইউরোপের সদস্য রাষ্ট্রগুলিতে অতীত অনুশীলনের অনেক উদাহরণ রয়েছে যা দেখায় যে, যদি ভুক্তভোগী এবং অপরাধী পরস্পর বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ থাকেন বা এ ধরনের সম্পর্কের মধ্যে থেকে থাকেন তাহলে ঐ সম্পর্কের কারণেই বিবাহিত সম্পর্কের মধ্যে ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটলে তাকে স্বীকৃতি দেয়া হতো না। আর এটি দীর্ঘদিন ধরেই এ অবস্থায় ছিল।<ref name=":12" />


সম্মান রক্ষার্থে হত্যাকাণ্ড, যৌতুকের মৃত্যু এবং জোরপূর্বক বিবাহের মতো নির্দিষ্ট ধরণের পারিবারিকসহিংসতার দিকে মনোযোগ বাড়ানো হয়েছে। ভারত, সাম্প্রতিক দশকগুলিতে যৌতুকের সহিংসতা রোধে প্রচেষ্টা চালিয়েছে: মহিলা সংস্থাগুলির বহু বছরের ওকালতি ও সক্রিয়তার পরে, ২০০৫ সালে পারিবারিকসহিংসতা থেকে নারী সুরক্ষা আইন (পিডাব্লুডিভিএ) আইন প্রণীত হয়েছিল। লাতিন আমেরিকাতে আবেগের বশে অপরাধের ঘটনা দীর্ঘদিন ধরে এতটাই প্রশ্রয়ের সাথে হয়ে আসছে যে সেটিও আন্তর্জাতিক মনোযোগ আকষর্ণ করছে। ২০০২ সালে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-এর আইনজীবী পরিচালক উইডনি ব্রাউন যুক্তি দিয়েছিলেন যে আবেগের বশে অপরাধ আর সম্মান রক্ষার্থে হত্যার অপরাধের মধ্যে যথেষ্ট সাদৃশ্য রয়েছে। তাঁর মতে: "আবেগের বশে অপরাধের ক্ষেত্রে একই রকম চালিকাশক্তি কাজ করে [সম্মান রক্ষার্থে হত্যার জন্য যেমন] যেখানে নারী পরিবারে পুরুষ সদস্যদের দ্বারা হত্যার শিকার হন আর এই ধরনের অপরাধকেও যুক্তিসাপেক্ষ বা বোধগম্য হিসাবে বিবেচনা করা হয় "।
সম্মান রক্ষার্থে হত্যাকাণ্ড, যৌতুকের মৃত্যু এবং জোরপূর্বক বিবাহের মতো নির্দিষ্ট ধরণের পারিবারিক সহিংসতার দিকে মনোযোগ বাড়ানো হয়েছে। সাম্প্রতিক দশকগুলোতে ভারত যৌতুকের সহিংসতা রোধে উদ্যোগ নিয়েছে: মহিলা সংস্থাগুলোর বহু বছরের প্রচার ও সক্রিয়তার পরে, ২০০৫ সালে পারিবারিক সহিংসতা থেকে নারী সুরক্ষা আইন (পিডাব্লুডিভিএ) আইন প্রণীত হয়েছিল।<ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://dx.doi.org/10.1177/10778010022183532|শিরোনাম=“Dowry Deaths” in Andhra Pradesh, India|শেষাংশ=VINDHYA|প্রথমাংশ=U.|তারিখ=2000-10|সাময়িকী=Violence Against Women|খণ্ড=6|সংখ্যা নং=10|পাতাসমূহ=1085–1108|doi=10.1177/10778010022183532|issn=1077-8012}}</ref> লাতিন আমেরিকাতে আবেগের বশে অপরাধের ঘটনা দীর্ঘদিন ধরে এতটাই প্রশ্রয়ের সাথে হয়ে আসছে যে সেটিও এখন আন্তর্জাতিক মনোযোগ আকষর্ণ করেছে। ২০০২ সালে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-এর আইনজীবী পরিচালক উইডনি ব্রাউন যুক্তি দেন যে, আবেগের বশে অপরাধ আর সম্মান রক্ষার্থে হত্যার অপরাধের মধ্যে যথেষ্ট সাদৃশ্য রয়েছে। তাঁর মতে: "আবেগের বশে অপরাধের ক্ষেত্রেও একই রকম চালিকাশক্তি কাজ করে [সম্মান রক্ষার্থে হত্যার জন্য যেমন] যেখানে নারী পরিবারে পুরুষ সদস্যদের দ্বারা হত্যার শিকার হন আর এই ধরনের অপরাধকেও যুক্তিযুক্ত ক্ষমাযোগ্য হিসাবে বিবেচনা করা হয় "।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=Staff writer (October 28, 2010). "Thousands of women killed for family "honor"". National Geographic News.|শেষাংশ=|প্রথমাংশ="Thousands of women killed for family "honor"|বছর=Archived from the original on October 19, 2015. Retrieved August 22, 201|প্রকাশক=National Geographic Society.}}</ref>


ঐতিহাসিকভাবে, শিশুদের তাদের পিতামাতার দ্বারা সহিংসতা থেকে খুব কম সুরক্ষা ছিল, এবং বিশ্বের অনেক জায়গায় এখনও এটি বিদ্যমান। উদাহরণস্বরূপ, প্রাচীন রোমে একজন বাবা আইনত তার সন্তানদের হত্যা করতে পারেন। অনেক সংস্কৃতি পিতাদের তাদের সন্তানকে দাসত্বের বিক্রি করার অনুমতি দিয়েছে। শিশু ত্যাগ করাও একটি সাধারণ অনুশীলন ছিল। পেডিয়াট্রিক সাইকিয়াট্রিস্ট সি হেনরি কেম্পের "দ্য ব্যাটার্ড চাইল্ড সিন্ড্রোম" প্রকাশের মাধ্যমে শিশু নির্যাতনের বিষয়টি মূলধারার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে শুরু করে। এর আগে, শিশুদের আঘাত - এমনকি বারবার হাড় ভেঙে দেয়া — ইচ্ছাকৃত আঘাত হিসেবে সাধারণত স্বীকৃত ছিল না। পরিবর্তে, চিকিৎসকরা প্রায়শই হাড়ের অসুস্থতা নিয়ে পিতামাতার বর্ণনাকে গ্রহণ করেন; যেমন ভুলবশত পড়ে যাওয়া বা প্রতিবেশি দ্বারা আঘাত ইত্যাদি।
ঐতিহাসিকভাবেই, শিশুরা তাদের পিতামাতার দ্বারা সহিংসতা থেকে খুব কম সুরক্ষিত, এবং বিশ্বের অনেক জায়গায় এখনও এটি বিদ্যমান। উদাহরণস্বরূপ, প্রাচীন রোমে একজন বাবা আইনত তার সন্তানদের হত্যা করতে পারতেন। অনেক সংস্কৃতি পিতাদের তাদের সন্তানকে দাসত্বের জন্য বিক্রি করার অনুমতি দিয়েছে। শিশু ত্যাগ করাও একটি সাধারণ অনুশীলন ছিল।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://www.worldcat.org/oclc/38016521|শিরোনাম=Cruel compassion : psychiatric control of society's unwanted|শেষাংশ=Szasz|প্রথমাংশ=Thomas|তারিখ=1998|প্রকাশক=Syracuse University Press|অবস্থান=Syracuse, N.Y.|আইএসবিএন=0-8156-0510-2|oclc=38016521|সংস্করণ=1st Syracuse University Press ed}}</ref> পেডিয়াট্রিক সাইকিয়াট্রিস্ট সি হেনরি কেম্প কর্তৃক "দ্য ব্যাটার্ড চাইল্ড সিন্ড্রোম" প্রকাশনার মাধ্যমে শিশু নির্যাতনের বিষয়টি মূলধারার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে শুরু করে। এর আগে, শিশুদের আঘাত - এমনকি বারবার হাড় ভেঙে দেয়া — ইচ্ছাকৃত আঘাত হিসেবে সাধারণত স্বীকৃত ছিল না। পরিবর্তে, চিকিৎসকরা প্রায়শই হাড়ের অসুস্থতা নিয়ে পিতামাতার বর্ণনাকে গ্রহণ করতেন; যেমন ভুলবশত পড়ে যাওয়া বা দুষ্ট প্রতিবেশির আঘাত ইত্যাদি।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://www.worldcat.org/oclc/774395316|শিরোনাম=Childism : Confronting Prejudice Against Children|শেষাংশ=Young-Bruehl|প্রথমাংশ=Elisabeth|তারিখ=2012|প্রকাশক=Yale University Press|অবস্থান=New Haven|আইএসবিএন=978-0-300-17850-0|oclc=774395316}}</ref>


== ধরন ==
== ধরন ==
সব পারিবারিকসহিংসতা একই রকম নয়। মাত্রার ভিন্নতা, তীব্রতা, উদ্দেশ্য এবং ফলাফলের পার্থক্যগুলি সবকিছুই উল্লেখযোগ্য। পারিবারিকসহিংসতা শারীরিক আগ্রাসন বা আক্রমণ (আঘাত করা, লাথি মারা, কামড় দেওয়া, চেঁচামেচি করা, বাধা দেয়া, চড় মারা, কোন কিছু ছুঁড়ে মারা, মারধর করা ইত্যাদি) বিভিন্ন হুমকি; যৌন নির্যাতন; নিয়ন্ত্রণ বা কর্তৃত্ব; ভয় দেখানো; লাঞ্ছিত করা; প্যাসিভ / পরোক্ষ নির্যাতন (উদাঃ, অবহেলা); এবং অর্থনৈতিক বঞ্চনা সহ অনেকগুলো রূপ নিতে পারে। আবার বিপদ, অপরাধমূলক জবরদস্তি, অপহরণ, বেআইনী কারাদণ্ড, অপরাধহীনতা এবং হয়রানিও এর আওতায় পড়তে পারে।
সব পারিবারিক সহিংসতা একই রকম নয়। মাত্রার ভিন্নতা, তীব্রতা, উদ্দেশ্য এবং ফলাফলের পার্থক্য সবকিছুই উল্লেখযোগ্য। পারিবারিক সহিংসতা শারীরিক আগ্রাসন বা আক্রমণ (আঘাত করা, লাথি মারা, কামড় দেওয়া, চেঁচামেচি করা, বাধা দেয়া, চড় মারা, কোন কিছু ছুঁড়ে মারা, মারধর করা ইত্যাদি) বিভিন্ন হুমকি; যৌন নির্যাতন; নিয়ন্ত্রণ বা কর্তৃত্ব; ভয় দেখানো; লাঞ্ছিত করা; প্যাসিভ / পরোক্ষ নির্যাতন (উদাঃ, অবহেলা); এবং অর্থনৈতিক বঞ্চনা সহ অনেকগুলো রূপ নিতে পারে।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://www.worldcat.org/oclc/55137277|শিরোনাম=Domestic violence : a handbook for health professionals|শেষাংশ=Shipway|প্রথমাংশ=Lyn|তারিখ=2004|প্রকাশক=Routledge|অবস্থান=London|আইএসবিএন=0-203-48709-5|oclc=55137277}}</ref><ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://dx.doi.org/10.1089/apc.2010.0235|শিরোনাম=Domestic Violence Screening: Prevalence and Outcomes in a Canadian HIV Population|শেষাংশ=Siemieniuk|প্রথমাংশ=Reed A.C.|শেষাংশ২=Krentz|প্রথমাংশ২=Hartmut B.|শেষাংশ৩=Gish|প্রথমাংশ৩=Jessica A.|শেষাংশ৪=Gill|প্রথমাংশ৪=M. John|তারিখ=2010-12|সাময়িকী=AIDS Patient Care and STDs|খণ্ড=24|সংখ্যা নং=12|পাতাসমূহ=763–770|doi=10.1089/apc.2010.0235|issn=1087-2914}}</ref> আবার বিপদ, অপরাধমূলক জবরদস্তি, অপহরণ, বেআইনী কারাদণ্ড, অপরাধহীনতা এবং হয়রানিও এর আওতায় পড়তে পারে।<ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://dx.doi.org/10.4135/9781412963923.n317|শিরোনাম=National Network to End Domestic Violence|শেষাংশ=Else|প্রথমাংশ=Sue|শেষাংশ২=Randall|প্রথমাংশ২=Allison|সাময়িকী=Encyclopedia of Interpersonal Violence|প্রকাশক=SAGE Publications, Inc.|অবস্থান=2455 Teller Road,  Thousand Oaks  California  91320  United States|আইএসবিএন=978-1-4129-1800-8}}</ref>


==== শারীরিক ====
==== শারীরিক ====
শারীরিক নির্যাতন হ'ল ভয়, বেদনা, আঘাত, অন্যান্য শারীরিক যন্ত্রণা বা শারীরিক ক্ষতি হওয়ার উদ্দেশ্যে সংঘটিত বিভিন্ন ক্রিয়া। দমনমূলক নিয়ন্ত্রণের প্রেক্ষাপটে বলা যায়, শারীরিক নির্যাতন করা হয় ভুক্তভোগীকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য। সম্পর্কের ক্ষেত্রে শারীরিক নির্যাতনের গতিপ্রকৃতি প্রায়শই জটিল। শারীরিক সহিংসতা হুমকি, ভয় দেখানো এবং বিচ্ছিন্নতার মাধ্যমে ভুক্তভোগীর আত্মপ্রত্যয়ের ওপর বাধা এবং ব্যক্তিগত স্বাধীনতার অন্যান্য সীমাবদ্ধতা আরোপের সমন্বয়েও হতে পারে। চিকিত্সা করাতে অনিচ্ছা, ঘুম থেকে বঞ্চিত করা এবং জোর করে মাদক বা অ্যালকোহল ব্যবহার করানোও শারীরিক নির্যাতনেরও একধরনের রূপ। এমনকি ভুক্তভোগীর মানসিক ক্ষতি করার জন্য অন্যান্যদের যেমন শিশু বা পোষা প্রাণীকে শারীরিক আঘাত করাও এর অন্তর্ভুক্ত করতে পারে।
শারীরিক নির্যাতন ভয়, বেদনা, আঘাত, অন্যান্য শারীরিক যন্ত্রণা বা শারীরিক ক্ষতি হওয়ার উদ্দেশ্যে সংঘটিত বিভিন্ন ক্রিয়া।<ref name=":13">{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://dx.doi.org/10.1037/e478702006-001|শিরোনাম=Justice Department to spearhead President's Family Justice Center Initiative to better serve domestic violence victims|তারিখ=2003|ওয়েবসাইট=PsycEXTRA Dataset|সংগ্রহের-তারিখ=2021-04-11}}</ref><ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://dx.doi.org/10.1037/e478702006-001|শিরোনাম=Justice Department to spearhead President's Family Justice Center Initiative to better serve domestic violence victims|তারিখ=2003|ওয়েবসাইট=PsycEXTRA Dataset|সংগ্রহের-তারিখ=2021-04-11}}</ref> দমনমূলক নিয়ন্ত্রণের প্রেক্ষাপটে বলা যায়, শারীরিক নির্যাতন করা হয় ভুক্তভোগীকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য।<ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://dx.doi.org/10.1007/s11199-007-9378-y|শিরোনাম=Evan Stark, Coercive Control—Revitalizing a Movement|শেষাংশ=Cattaneo|প্রথমাংশ=Lauren Bennett|তারিখ=2008-01-15|সাময়িকী=Sex Roles|খণ্ড=58|সংখ্যা নং=7-8|পাতাসমূহ=592–594|doi=10.1007/s11199-007-9378-y|issn=0360-0025}}</ref> সম্পর্কের ক্ষেত্রে শারীরিক নির্যাতনের গতিপ্রকৃতি প্রায়শই জটিল। শারীরিক সহিংসতা হুমকি, ভয় দেখানো এবং বিচ্ছিন্নতার মাধ্যমে ভুক্তভোগীর আত্মপ্রত্যয়ের ওপর বাধা এবং ব্যক্তিগত স্বাধীনতার অন্যান্য সীমাবদ্ধতা আরোপের সমন্বয়েও হতে পারে।<ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://dx.doi.org/10.4095/295413|শিরোনাম=Council of Europe (CoE)|তারিখ=2007}}</ref> চিকিত্সা করাতে অনিচ্ছা, ঘুম থেকে বঞ্চিত করা এবং জোর করে মাদক বা অ্যালকোহল ব্যবহার করানোও শারীরিক নির্যাতনেরও নানারূপ।<ref name=":13" /> এমনকি ভুক্তভোগীর মানসিক ক্ষতি করার জন্য অন্যান্য লক্ষ্যবস্তু যেমন শিশু বা পোষা প্রাণীকে শারীরিক আঘাত করাও এর অন্তর্ভুক্ত করতে পারে।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://dx.doi.org/10.1037/e508202011-001|শিরোনাম=Criminal justice response to domestic violence in later life|ওয়েবসাইট=PsycEXTRA Dataset|সংগ্রহের-তারিখ=2021-04-11}}</ref>


পারিবারিকসহিংসতার প্রসঙ্গে শ্বাসরোধের বিষয়টি উল্লেখযোগ্য মনোযোগ পেয়েছে। এটি এখন পারিবারিক সহিংসতার অন্যতম মারাত্মক রূপ হিসাবে স্বীকৃত; তবুও, বাহ্যিক আঘাতের অভাব, এবং এটি সম্পর্কে সামাজিক সচেতনতা এবং চিকিত্সা প্রশিক্ষণের অভাবের কারণে শ্বাসরোধ করা প্রায়শই একটি গোপন সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলস্বরূপ, সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অনেকগুলি রাজ্য শ্বাসরোধের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট আইন কার্যকর করেছে।
পারিবারিক সহিংসতার প্রসঙ্গে শ্বাসরোধের বিষয়টি উল্লেখযোগ্য গুরুত্ব পেয়েছে।<ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://dx.doi.org/10.2105/ajph.2014.302191|শিরোনাম=A Systematic Review of the Epidemiology of Nonfatal Strangulation, a Human Rights and Health Concern|শেষাংশ=Sorenson|প্রথমাংশ=Susan B.|শেষাংশ২=Joshi|প্রথমাংশ২=Manisha|শেষাংশ৩=Sivitz|প্রথমাংশ৩=Elizabeth|তারিখ=2014-11|সাময়িকী=American Journal of Public Health|খণ্ড=104|সংখ্যা নং=11|পাতাসমূহ=e54–e61|doi=10.2105/ajph.2014.302191|issn=0090-0036}}</ref> এটি এখন পারিবারিক সহিংসতার অন্যতম মারাত্মক রূপ হিসাবে স্বীকৃত; তবুও, বাহ্যিক আঘাতের অভাব, এবং এটি সম্পর্কে সামাজিক সচেতনতা সেই সাথে চিকিত্সা প্রশিক্ষণের অভাব থাকায় শ্বাসরোধ করা প্রায়শই একটি গোপন সমস্যায় রূপ নেয়।<ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://dx.doi.org/10.32388/jsiz5t|শিরোনাম=Strangulation|তারিখ=2020-02-07|সাময়িকী=Definitions|প্রকাশক=Qeios}}</ref> ফলস্বরূপ, সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অনেকগুলি রাজ্য শ্বাসরোধের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট আইন কার্যকর করেছে।<ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://dx.doi.org/10.26616/nioshheta890692036|শিরোনাম=Health hazard evaluation report: HETA-89-069-2036, USA Today/Gannett Co., Inc., Rosslyn, Virginia.|তারিখ=1990-04-01}}</ref>


পারিবারিক সহিংসতার ফলে পুরুষ হত্যাকাণ্ডের তুলনায় নারী হত্যাকাণ্ডের আনুপাতিক হারে বেশী লক্ষ্যণীয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৫০ ভাগের এর বেশি নারী হত্যাকাণ্ড প্রাক্তন বা বর্তমান ঘনিষ্ঠ সঙ্গীর দ্বারা সংঘটিত হয়ে থাকে। যুক্তরাজ্যে, খুন হওয়া নারীদের ৩৮ শতাংশ নারী ঘনিষ্ঠ সঙ্গী কর্তৃক নিহত হয়েছে, পুরুষদের ক্ষেত্রে এ হার ৬ শতাংশ। কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, ইস্রায়েল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিহত নারীদের ৪০ থেকে ৭০ শতাংশ নিহত হয়েছেন তাদের ঘনিষ্ঠ সঙ্গীর দ্বারা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, পৃথিবীর প্রায় ৩৮% নারী হত্যাকাণ্ড ঘনিষ্ঠ সঙ্গীর দ্বারা সংঘটিত হয়।
পারিবারিক সহিংসতার ফলে পুরুষ হত্যাকাণ্ডের তুলনায় নারী হত্যাকাণ্ডের আনুপাতিক হার বেশী লক্ষ্যণীয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৫০ ভাগের এর বেশি নারী হত্যাকাণ্ড প্রাক্তন বা বর্তমান ঘনিষ্ঠ সঙ্গীর দ্বারা সংঘটিত হয়ে থাকে।<ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://dx.doi.org/10.15585/mmwr.mm6628a1|শিরোনাম=Racial and Ethnic Differences in Homicides of Adult Women and the Role of Intimate Partner Violence — United States, 2003–2014|শেষাংশ=Petrosky|প্রথমাংশ=Emiko|শেষাংশ২=Blair|প্রথমাংশ২=Janet M.|শেষাংশ৩=Betz|প্রথমাংশ৩=Carter J.|শেষাংশ৪=Fowler|প্রথমাংশ৪=Katherine A.|শেষাংশ৫=Jack|প্রথমাংশ৫=Shane P.D.|শেষাংশ৬=Lyons|প্রথমাংশ৬=Bridget H.|তারিখ=2017-07-21|সাময়িকী=MMWR. Morbidity and Mortality Weekly Report|খণ্ড=66|সংখ্যা নং=28|পাতাসমূহ=741–746|doi=10.15585/mmwr.mm6628a1|issn=0149-2195}}</ref> যুক্তরাজ্যে, খুন হওয়া নারীদের ৩৮ শতাংশ নারী ঘনিষ্ঠ সঙ্গী কর্তৃক নিহত হয়েছে, পুরুষদের ক্ষেত্রে এ হার ৬ শতাংশ। কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, ইস্রায়েল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিহত নারীদের ৪০ থেকে ৭০ শতাংশ নিহত হয়েছেন তাদের ঘনিষ্ঠ সঙ্গীর দ্বারা।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://www.worldcat.org/oclc/233543972|শিরোনাম=Death by domestic violence : preventing the murders and murder-suicides|শেষাংশ=Van Wormer|প্রথমাংশ=Katherine S.|তারিখ=2009|প্রকাশক=Praeger|অবস্থান=Westport, Conn.|অন্যান্য=Albert R. Roberts|আইএসবিএন=978-0-313-35489-2|oclc=233543972}}</ref> বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, পৃথিবীর প্রায় ৩৮% নারী হত্যাকাণ্ড ঘনিষ্ঠ সঙ্গীর দ্বারা সংঘটিত হয়।<ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://dx.doi.org/10.1093/ww/9780199540884.013.u44226|শিরোনাম=Lee, Jong-Wook, (12 April 1945–22 May 2006), Director-General, World Health Organization, since 2003|তারিখ=2007-12-01|সাময়িকী=Who Was Who|প্রকাশক=Oxford University Press}}</ref>


গর্ভাবস্থায়, কোনও নারীর নির্যাতনের বা দীর্ঘস্থায়ী নির্যাতন তীব্রতর রূপ নেয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। যার ফলে মা এবং ভ্রূণের স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। গর্ভাবস্থা পারিবারিকসহিংসতার এক বিরাম ব্যবস্থা বলা যেতে পারে যখন নির্যাতনকারী অনাগত সন্তানের ক্ষতি করতে চায় না। প্রসবের পর নারীদের প্রতি পারিবারিকসহিংসতার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি থাকে।
গর্ভাবস্থায়, একজন নারীর নির্যাতিত হওয়ার বা দীর্ঘস্থায়ী নির্যাতন তীব্রতর রূপ নেয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে যা মা এবং ভ্রূণের স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে<ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://dx.doi.org/10.1046/j.1471-0528.2003.02216.x|শিরোনাম=The prevalence of domestic violence in pregnant women|শেষাংশ=Johnson|প্রথমাংশ=J.K.|শেষাংশ২=Haider|প্রথমাংশ২=F.|শেষাংশ৩=Ellis|প্রথমাংশ৩=K.|শেষাংশ৪=Hay|প্রথমাংশ৪=D.M.|শেষাংশ৫=Lindow|প্রথমাংশ৫=S.W.|তারিখ=2003-03|সাময়িকী=BJOG: An International Journal of Obstetrics and Gynaecology|খণ্ড=110|সংখ্যা নং=3|পাতাসমূহ=272–275|doi=10.1046/j.1471-0528.2003.02216.x|issn=1470-0328}}</ref>। গর্ভাবস্থা পারিবারিক সহিংসতার একটি বিরাম ব্যবস্থা বলা যেতে পারে যখন নির্যাতনকারী অনাগত সন্তানের ক্ষতি করতে চায় না। আর প্রসবের পর নারীদের প্রতি পারিবারিক সহিংসতার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি থাকে।<ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://dx.doi.org/10.1136/bmj.314.7090.1295|শিরোনাম=Domestic violence and pregnancy|শেষাংশ=Mezey|প্রথমাংশ=G. C|শেষাংশ২=Bewley|প্রথমাংশ২=S.|তারিখ=1997-05-03|সাময়িকী=BMJ|খণ্ড=314|সংখ্যা নং=7090|পাতাসমূহ=1295–1295|doi=10.1136/bmj.314.7090.1295|issn=0959-8138}}</ref>


অ্যাসিড আক্রমণ সহিংসতার একটি চরম রূপ, যেখানে সাধারণত ভুক্তভোগীদের মুখের দিকে এসিড নিক্ষেপ করা হয়, ফলে দীর্ঘমেয়াদী অন্ধত্ব এবং স্থায়ী দাগ পড়া সহ ব্যাপক ক্ষতিসাধন হয়।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://dx.doi.org/10.1093/actrade/9780199668526.003.0002|শিরোনাম=Family Law|শেষাংশ=Herring|প্রথমাংশ=Jonathan|তারিখ=2014-02-27|প্রকাশক=Oxford University Press|পাতাসমূহ=2–26|আইএসবিএন=978-0-19-966852-6}}</ref><ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://dx.doi.org/10.1163/2210-7975_hrd-3601-0138|শিরোনাম=stop-violence-against-women-cambodia-drafts-new-law-to-curb-acid-attacks-apr-30-2010|ওয়েবসাইট=Human Rights Documents online|সংগ্রহের-তারিখ=2021-04-11}}</ref><ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://dx.doi.org/10.4324/9781315029634|শিরোনাম=Violence Against Women in Asian Societies|তারিখ=2013-09-13|সম্পাদক-শেষাংশ=Bennett|সম্পাদক-প্রথমাংশ=Linda Rae|সম্পাদক-শেষাংশ২=Manderson|সম্পাদক-প্রথমাংশ২=Lenore|doi=10.4324/9781315029634}}</ref><ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://dx.doi.org/10.1177/1077801207302046|শিরোনাম=Negotiating State and NGO Politics in Bangladesh|শেষাংশ=Halim Chowdhury|প্রথমাংশ=Elora|তারিখ=2007-08|সাময়িকী=Violence Against Women|খণ্ড=13|সংখ্যা নং=8|পাতাসমূহ=857–873|doi=10.1177/1077801207302046|issn=1077-8012}}</ref><ref>{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://worldcat.org/oclc/55492660|শিরোনাম=Encyclopaedia of Muslim world|শেষাংশ=H.|প্রথমাংশ=Bahl, Taru. Syed, M.|তারিখ=2003|প্রকাশক=Anmol Publications|আইএসবিএন=81-261-1419-3|oclc=55492660}}</ref> এগুলো সাধারণত কোনও বিয়ের প্রস্তাব বা যৌন সম্পর্ক স্থাপন প্রত্যাখ্যান করার জন্য কোনও নারীর বিরুদ্ধে প্রতিশোধ গ্রহণের একটি ধরন।<ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://dx.doi.org/10.1016/j.burns.2005.08.027|শিরোনাম=Psychosocial outcomes derived from an acid burned population in Bangladesh, and comparison with Western norms|শেষাংশ=Mannan|প্রথমাংশ=A.|শেষাংশ২=Ghani|প্রথমাংশ২=S.|শেষাংশ৩=Clarke|প্রথমাংশ৩=A.|শেষাংশ৪=White|প্রথমাংশ৪=P.|শেষাংশ৫=Salmanta|প্রথমাংশ৫=S.|শেষাংশ৬=Butler|প্রথমাংশ৬=P.E.M.|তারিখ=2006-03|সাময়িকী=Burns|খণ্ড=32|সংখ্যা নং=2|পাতাসমূহ=235–241|doi=10.1016/j.burns.2005.08.027|issn=0305-4179}}</ref><ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://dx.doi.org/10.2139/ssrn.1861218|শিরোনাম=Combating Acid Violence in Bangladesh, India and Cambodia|শেষাংশ=Kalantry|প্রথমাংশ=Sital|শেষাংশ২=Getgen|প্রথমাংশ২=Jocelyn E.|তারিখ=2011|সাময়িকী=SSRN Electronic Journal|doi=10.2139/ssrn.1861218|issn=1556-5068}}</ref>
কম্বোডিয়ায় অ্যাসিড আক্রান্তের শিকার অ্যাসিড আক্রমণগুলি হিংস্রতার একটি চরম রূপ, যেখানে সাধারণত ভুক্তভোগীদের মুখের দিকে এসিড নিক্ষেপ করা হয়, ফলে দীর্ঘমেয়াদী অন্ধত্ব এবং স্থায়ী দাগ পড়া সহ ব্যাপক ক্ষতিসাধন হয়। এগুলো সাধারণত কোনও বিয়ের প্রস্তাব বা যৌন সম্পর্ক স্থাপন প্রত্যাখ্যান করার জন্য কোনও নারীর বিরুদ্ধে প্রতিশোধ গ্রহণের একটি ধরন।


মধ্য প্রাচ্য এবং বিশ্বের অন্যান্য অংশে, ভুক্তভোগী পরিবার বা সম্প্রদায়ের জন্য অসম্মান বয়ে এনেছে বলে অভিযোগকারীদের বিশ্বাসের কারণে পরিকল্পিত পারিবারিকহত্যাকাণ্ড বা সম্মান রক্ষার্থে হত্যাকাণ্ড পরিচালিত হয়। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতে, নারীদের বিরুদ্ধে "পারিবারিকভাবে আয়োজিত বিয়ে করতে অস্বীকার, যৌন নিপীড়নের শিকার হওয়া, বিবাহবিচ্ছেদ চাওয়া বা ব্যভিচারের অভিযোগে অভিযুক্ত নারীদের সাধারণত সম্মান রক্ষার্থে হত্যাকান্ডের বা অনার কিলিং এর শিকার হতে হয়। বিশ্বের কিছু কিছু অংশে বিয়ের আগে একজন নারীর কুমারিত্ব থাকাটা সামাজিকভাবে খুবই প্রত্যাশিত এবং সেখানে কোনও বধূ বিয়ের রাতে কুমারিত্ব প্রমাণ করতে না পারলে তাকে অনার কিলিং এর শিকার হতে হয়।
মধ্য প্রাচ্য এবং বিশ্বের অন্যান্য অংশে, ভুক্তভোগী ব্যক্তি পরিবার বা সম্প্রদায়ের জন্য অসম্মান বয়ে এনেছে বলে অভিযোগকারীদের বিশ্বাসের কারণে পরিকল্পিত পারিবারিক হত্যাকাণ্ড বা সম্মান রক্ষার্থে হত্যাকাণ্ড পরিচালিত হয়।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://dx.doi.org/10.1037/e319232004-001|শিরোনাম=PAHO treats violence as a public health hazard|তারিখ=2003|ওয়েবসাইট=PsycEXTRA Dataset|সংগ্রহের-তারিখ=2021-04-11}}</ref><ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://dx.doi.org/10.1037/h0090139|শিরোনাম=Research reports: Domestic violence in primary care.|শেষাংশ=Campbell|প্রথমাংশ=Thomas L.|তারিখ=1997|সাময়িকী=Families, Systems, & Health|খণ্ড=15|সংখ্যা নং=3|পাতাসমূহ=345–350|doi=10.1037/h0090139|issn=1939-0602}}</ref> হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতে, নারীদের বিরুদ্ধে "পারিবারিকভাবে আয়োজিত বিয়েতে অস্বীকৃতি, যৌন নিপীড়নের শিকার হওয়া, বিবাহবিচ্ছেদ চাওয়া বা ব্যাভিচারের অভিযোগে অভিযুক্ত নারীদের সাধারণত সম্মান রক্ষার্থে হত্যাকান্ডের বা অনার কিলিং এর শিকার হতে হয়।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://dx.doi.org/10.1163/2210-7975_hrd-2156-0249|শিরোনাম=news-from-human-rights-watch-no5-g-september-11-attacks-crimes-against-humanity-the-aftermath-volume-1-october-15-2001-october-2001|ওয়েবসাইট=Human Rights Documents online|সংগ্রহের-তারিখ=2021-04-11}}</ref> বিশ্বের কিছু কিছু অংশে বিয়ের আগে একজন নারীর কুমারিত্ব থাকাটা সামাজিকভাবে খুবই প্রত্যাশিত এবং সেখানে কোনও বধূ বিয়ের রাতে কুমারিত্ব প্রমাণ করতে না পারলে তাকে অনার কিলিং এর শিকার হতে হয়।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://www.worldcat.org/oclc/778698434|শিরোনাম=Honor killings in the twenty-first century|শেষাংশ=Pope|প্রথমাংশ=Nicole|তারিখ=2012|প্রকাশক=Palgrave Macmillan|অবস্থান=New York|আইএসবিএন=978-1-137-01266-1|oclc=778698434|সংস্করণ=1st ed}}</ref><ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://dx.doi.org/10.7748/ns.12.41.28.s35|শিরোনাম=NHS now|তারিখ=1998-07-XX|সাময়িকী=Nursing Standard|খণ্ড=12|সংখ্যা নং=41|পাতাসমূহ=28–29 Note that it is possible for a woman to not bleed the first time she has sex.[85] Sex outside marriage is illegal in many countries, including Saudi Arabia, Pakistan,[86] Afghanistan,[87][88][89] Iran,[89] Kuwait,[90] Maldives,[91] Morocco,[92] Oman,[93] Mauritania,[94] United Arab Emirates,[95][96] Qatar,[97] Sudan,[98] Yemen.[99]|doi=10.7748/ns.12.41.28.s35|issn=0029-6570}}</ref>


নববধূকে পুড়িয়ে মারা বা যৌতুকজনিত হত্যা বলতে পারিবারিকসহিংসতার এমন একটি ধারা বোঝায় যেখানে সদ্য বিবাহিত মহিলাকে তার পরিবার কর্তৃক প্রদত্ত যৌতুকের প্রতি অসন্তুষ্টির কারণে স্বামী বা স্বামীর পরিবার তাকে বাড়িতে হত্যা করে। এ ঘটনা প্রায়শই বিয়ের পরে বেশি বা দীর্ঘস্থায়ী যৌতুকের দাবির প্রেক্ষিতে হয়ে থাকে। যৌতুক সহিংসতা দক্ষিণ এশিয়া, বিশেষত ভারতে সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। ২০১১ সালে, ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো ভারতে ৮৬১৮টী যৌতুকজনিত মৃত্যুর খবর দিয়েছে, তবে আনুষ্ঠানিকভাবে পরিসংখ্যানগুলো এই পরিমাণের কমপক্ষে তিনগুণ হবে বলে অনুমান করা হয়।
নববধূকে পুড়িয়ে মারা বা যৌতুকজনিত হত্যা বলতে পারিবারিক সহিংসতার এমন একটি ধারাকে বোঝায় যেখানে সদ্য বিবাহিত নারীকে তার পরিবার কর্তৃক প্রদত্ত যৌতুকের প্রতি অসন্তুষ্টির কারণে স্বামী বা স্বামীর পরিবার বাড়িতে হত্যা করে। এ ঘটনা প্রায়শই বিয়ের পরে বেশি হয় বা দীর্ঘমেয়াদী যৌতুকের দাবির প্রেক্ষিতে হয়ে থাকে।<ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://dx.doi.org/10.1080/02646811.2014.11435358|শিরোনাম=Book Review|শেষাংশ=Lakhani|প্রথমাংশ=Avnita|তারিখ=2014-05|সাময়িকী=Journal of Energy & Natural Resources Law|খণ্ড=32|সংখ্যা নং=2|পাতাসমূহ=203–224|doi=10.1080/02646811.2014.11435358|issn=0264-6811}}</ref> যৌতুক সহিংসতা দক্ষিণ এশিয়া, বিশেষত ভারতে সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। ২০১১ সালে, ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো ভারতে ৮৬১৮টি যৌতুকজনিত মৃত্যুর খবর দিয়েছে, তবে আনুষ্ঠানিকভাবে পরিসংখ্যানগুলো এই পরিমাণের কমপক্ষে তিনগুণ হবে বলে অনুমান করা হয়।<ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://dx.doi.org/10.18356/e9cb9eae-en|শিরোনাম=Confronting violence against women|শেষাংশ=Manuh|প্রথমাংশ=Takyiwaa|শেষাংশ২=Bekoe|প্রথমাংশ২=Adolf Awuku|তারিখ=2012-04-17|সাময়িকী=UN Chronicle|খণ্ড=47|সংখ্যা নং=1|পাতাসমূহ=12–15|doi=10.18356/e9cb9eae-en|issn=1564-3913}}</ref>


==== যৌন ====
==== যৌন ====

১১:৫৬, ১১ এপ্রিল ২০২১ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

পারিবারিক সহিংসতা (গৃহ নির্যাতন বা পরিবারে সংঘটিত সহিংসতা নামেও পরিচিত) হ'ল বিবাহ বা একসাথে বসবাসের মতো পারিবারিক পরিবেশে সংঘটিত সহিংসতা বা অন্যান্য নির্যাতন। সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে সহিংসতার প্রতিশব্দ হিসাবে পারিবারিক সহিংসতা প্রায়শই ব্যবহৃত হয়, যা ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে থাকা একজন ব্যক্তি অপর ব্যক্তির প্রতি করে থাকে এবং বিপরীত লিঙ্গের সম্পর্কগুলোতে বা একই লিঙ্গ ভিত্তিক সম্পর্ক কিংবা প্রাক্তন স্বামী-স্ত্রী বা সঙ্গীদের মধ্যে হতে পারে। বিস্তৃত অর্থে, শিশু, কিশোর, বাবা-মা বা বয়োজ্যোষ্ঠদর প্রতি সহিংসতাও পারিবারিক সহিংসতা হিসেবে বিবেচিত। এটি শারীরিক, মৌখিক, মানসিক, অর্থনৈতিক, ধর্মীয়, প্রজননমূলক এবং যৌন নির্যাতন সহ একাধিক রূপ পরিগ্রহ করে, যেখানে সূক্ষ্ম, জবরদস্তিপূর্ণ রূপ থেকে শুরু করে বৈবাহিক ধর্ষণ, দমবন্ধ, মারধর, নারী জননাঙ্গের বিকৃতি এবং এসিড নিক্ষেপের মতো সহিংস শারীরিক নির্যাতন পর্যন্ত হতে পারে যা অবশেষে পঙ্গুত্ব বা মৃত্যু ডেকে আনে। পারিবারিক হত্যাকাণ্ডের মধ্যে রয়েছে পাথর মেরে হত্যা করা, গৃহবধূকে অগ্নিদগ্ধ করা, অনার কিলিং বা সম্মান রক্ষার্থে হত্যা এবং যৌতুকের কারণে মৃত্যু (যা কখনও কখনও পরিবারের সদস্যদের যোগসাজসে হয়ে থাকে)।

বিশ্বব্যাপী, পারিবারিক সহিংসতার শিকার ব্যক্তিরা অধিকাংশই নারী, এবং নারীরাই সহিংসতার সবচেয়ে ভয়াবহ ধরনের মুখোমুখি হন।[১][২] আবার তারা পুরুষের তুলনায় ঘনিষ্ঠ সঙ্গীর সহিংসতাকে আত্মরক্ষার ঢাল হিসেবেও বেশি ব্যবহার করেন।[৩] কিছু কিছু দেশে পারিবারিক সহিংসতাকে ন্যায়সঙ্গত বা আইনত অনুমোদিত হিসেবেও দেখা যায়, বিশেষত যদি নারী প্রকৃতই বিশ্বাসঘাতকতার কাজ করেন বা সন্দেহভাজন হন। গবেষণায় দেখা গেছে, একটি দেশের লিঙ্গ সমতার স্তর এবং পারিবারিক সহিংসতার হারের মধ্যে একটি প্রত্যক্ষ এবং তাৎপর্যপূর্ণ পারস্পরিক সম্পর্ক রয়েছে, লিঙ্গ সমতা কম থাকা দেশগুলিতে পারিবারিক সহিংসতার অনেক হার বেশি।[৪] নারী ও পুরুষ উভয়ের জন্যই বিশ্বব্যাপী পারিবারিক সহিংসতা সর্বাধিক অবহেলিত অপরাধগুলির মধ্যে একটি ।[৫][৬] পুরুষ নির্যাতনের বিষয়টি সামাজিকভাবে লজ্জার বিষয় হিসেবে দেখা হয় বলে, পারিবারিক সহিংসতার শিকার পুরুষরা স্বাস্থ্যসেবা সরবরাহকারীদের দ্বারা অবহেলিত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।[৭][৮][৯][১০]

পারিবারিক সহিংসতা প্রায়শই ঘটে থাকে যখন নির্যাতক ব্যক্তি মনে করে যে, নির্যাতন করা এক প্রকার অধিকার, গ্রহণযোগ্য, ন্যায়সঙ্গত বিষয় বা এ বিষয়ে রিপোর্ট হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। এটি আন্তপ্রজন্মভিত্তিক সহিংসতার একটি চক্র তৈরি করতে পারে, যাদের মনে হয় এই ধরনের সহিংসতা গ্রহণযোগ্য বা ক্ষমাযোগ্য। অনেক লোক নিজেকে নির্যাতনকারী বা ভুক্তভোগী হিসাবে স্বীকৃতি দেয় না কারণ তারা তাদের অভিজ্ঞতাগুলো অনিয়ন্ত্রিত পারিবারিক দ্বন্দ্বের প্রকাশ হিসাবে বিবেচনা করে।[১১] পারিবারিক সহিংসতা বিষয়ে সচেতনতা, এর উপলব্ধি, সংজ্ঞা এবং দলিলিকরণের বিষয়টি দেশ দেশে ব্যাপকভাবে ভিন্ন। পারিবারিক সহিংসতা প্রায়শই জোরপূর্বক বিয়ে বা বাল্যবিবাহের প্রেক্ষাপটে ঘটে থাকে।[১২]

নির্যাতনকেন্দ্রিক সম্পর্কগুলোতে, নির্যাতনের একটি চক্র থাকতে পারে; প্রথমে উত্তেজনা বাড়তে থাকে এবং সহিংসতার ঘটনা ঘটে থাকে, তার পরে মিলন এবং শান্তির সময় হয়। ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তিরা বিচ্ছিন্নতা, শক্তি ও নিয়ন্ত্রণ, নির্যাতকের সঙ্গে যন্ত্রণাদায়ক বন্ধন,[১৩] সাংস্কৃতিক গ্রহণযোগ্যতা, আর্থিক সংস্থান, ভয়, লজ্জা এবং বাচ্চাদের সুরক্ষার জন্য পারিবারিক সহিংস পরিস্থিতিতে আটকা পড়তে পারে। নির্যাতনের ফলস্বরূপ, ভুক্তভোগীরা শারীরিক অক্ষমতা, অনিয়ন্ত্রিত আগ্রাসন, দীর্ঘস্থায়ী স্বাস্থ্য সমস্যা, মানসিক অসুস্থতা, সীমাবদ্ধ অর্থসংস্থান এবং সুস্থ সম্পর্ক তৈরির ক্ষেত্রে দুর্বলতার পরিচয় ইত্যাদি নানা সমস্যার মুখোমুখি হতে পারেন। ভুক্তভোগীরা মারাত্মক মানসিক ব্যাধি যেমন পোস্টট্রোম্যাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার (আঘাত পরবর্তী মানসিক চাপ) অনুভব করতে পারেন। যে শিশুরা সহিংসতাপূর্ণ পরিবারে বসবাস করে তারা প্রায়শই ছোট বেলা থেকে বিভিন্ন মানসিক সমস্যায় ভোগে, যেমন এড়িয়ে চলা, অযাচিত অতিরিক্ত ভীতি এবং অনিয়ন্ত্রিত আগ্রাসন, যা পরিণতিতে পরোক্ষ মানসিক আঘাত তৈরিতে অবদান রাখতে পারে।[১৪]

ব্যুৎপত্তি এবং সংজ্ঞা

আধুনিক প্রেক্ষাপটে গৃহের ভেতরে সহিংসতা অর্থে পারিবারিক সহিংসতা শব্দটির প্রথম জ্ঞাত ব্যবহার হয়েছিল, ১৯৭৩ সালে জ্যাক অ্যাশলের যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে দেওয়া ভাষণে।[১৫][১৬] এই শব্দটি দিয়ে সাধারণত বিদেশি কোন দেশ কর্তৃক সহিংসতার স্থলে কোন দেশের অভ্যন্তরে তৈরি হওয়া অস্থিরতা ও সহিংসতাকে বোঝানো হয়।[১৭][১৮][১৯]

ঐতিহ্যগতভাবে, পারিবারিক সহিংসতা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শারীরিক সহিংসতার সাথে জড়িত। স্ত্রীকে অত্যাচার, স্ত্রীকে মারধর, স্ত্রীকে আঘাত এবং মার খাওয়া নারী ইত্যাদি শব্দ সাধারণত ব্যবহার করা হলেও অবিবাহিত সঙ্গী, শারীরিক ছাড়াও অন্যন্য ধরনের নির্যাতন, নারী অপরাধী এবং সমকামী সম্পর্কের[২০][২১] অন্তর্ভুক্তির কারণে এদের উপযোগীতা হ্রাস পেয়েছে। "শারীরিক, যৌন, মানসিক বা অর্থনৈতিক সহিংসতার[২২] সমস্ত ক্রিয়াকলাপ" অন্তর্ভুক্ত করার জন্য সহিংসতাকে এখন বিস্তৃতভাবে সংজ্ঞায়িত হয় যা পরিবারের কোন সদস্য অথবা ঘনিষ্ঠ সঙ্গী দ্বারা সংঘটিত হতে পারে।[২২][২৩][২৪]

ঘনিষ্ঠ সঙ্গীর সহিংসতা শব্দটি প্রায়শই পারিবারিক নির্যাতন[২৫] বা পারিবারিক সহিংসতার[২৬] সমার্থক শব্দ হিসাবে ব্যবহৃত হয়, তবে এটি বিশেষত দাম্পত্য সম্পর্কের (যেমন, বিবাহিত দম্পতি, একই সাথে বসবাসরত কিংবা আলাদা বসবাসরত অন্তরঙ্গ সঙ্গী) মধ্যে সংঘটিত সহিংসতাকে বোঝায়।[২৭] এগুলোর সাথে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিও এইচ ও) নির্যাতনের ধরন বোঝাতে নিয়ন্ত্রণমূলক আচরণও সংযুক্ত করেছে।[২৮] ঘনিষ্ঠ সঙ্গীর সহিংসতা বিপরীত ও সমলিঙ্গের সম্পর্কের[২৯] মধ্যেও দেখা গিয়েছে এবং নারীর বিরুদ্ধে পুরুষ ও পুরুষের বিরুদ্ধে নারী[৩০] উভয় ধরনের সহিংসতার উদাহরণ দেখা গিয়েছে। আর ফ্যামিলি ভায়োলেন্সও পারিবারিক সহিংসতা যা একটি বিস্তৃত শব্দ এবং প্রায়শই শিশু নির্যাতন, বয়স্ক নির্যাতন ও পরিবারের সদস্যদের মধ্যে অন্যান্য হিংসাত্মক আচরণগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করে।[৩১][৩২][৩৩]

১৯৯৩ সালে, জাতিসংঘের নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা দূরীকরণের ঘোষণাপত্রে পারিবারিক সহিংসতাকে সংজ্ঞায়িত করেছিল এভাবে:

পরিবারে মেয়ে শিশুদের যৌন নির্যাতন, যৌতুক-সম্পর্কিত সহিংসতা, বৈবাহিক ধর্ষণ, নারী যৌনাঙ্গের বিচ্ছেদ এবং নারীদের জন্য ক্ষতিকারক অন্যান্য চিরাচরিত অনুশীলন, বৈবাহিক সম্পর্ক ছাড়া সহিংসতা এবং শোষণমূলক সহিংসতার প্রকাশ দেখা যায়, যখন পরিবারে শারীরিক, যৌন ও মানসিক সহিংসতা সংঘটিত হয়।[৩৪]

ইতিহাস

এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা থেকে জানা যায়, ১৮০০র গোড়ার দিকে, বেশিরভাগ আইনী ব্যবস্থাগুলো স্পষ্টতই স্ত্রীকে মারধর করাকে স্ত্রীর উপর স্বামীর অধিকার হিসেবে গ্রহণ করেছিল।[৩৫][৩৬] ষোড়শ শতাব্দীতে ইংল্যান্ডের প্রচলিত আইনে পারিবারিক সহিংসতাকে কোন নারীর বিরুদ্ধে অপরাধের বদলে সামাজিক অপরাধ হিসাবে গণ্য করা হতো যা দ্বারা শান্তি ভঙ্গ হয়। স্ত্রীদের স্থানীয় শান্তি বিধায়কের কাছে পুনরায় শান্তি প্রতিষ্ঠার আবেদন করবার অধিকার ছিল।

পদ্ধতিগুলো অনানুষ্ঠানিক এবং অসংরক্ষিত ছিল, এবং কোনও আইনি নির্দেশিকায় সহিংসতার কতটুকু প্রমাণ বা কতটুকু মাত্রা হলে তা বিচারের আওতায় আনা যাবে সে উল্লেখ ছিল না । দুটি সাধারণ শাস্তি স্বামীকে শান্তি স্থাপনে বাধ্য করত, বা ভবিষ্যতে ভাল আচরণের গ্যারান্টি দিয়ে সহযোগীদের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ করত। মারধরের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে শারীরিক আক্রমণের অভিযোগ আনা যেত, যদিও এই জাতীয় মামলাগুলি বিরল ছিল এবং গুরুতর আঘাত বা মৃত্যুর ক্ষেত্র ছাড়া সাধারণত ছোটখাটো জরিমানা দিয়েই শাস্তি সম্পন্ন করা হতো।[৩৭]

একই ভাবে, এই কাঠামোটি আমেরিকান উপনিবেশগুলিতে গৃহীত হয়েছিল। ১৬৪১ সালে ম্যাসাচুসেটস বে উপনিবেশীকদের বডি অফ লিবার্টিজ ঘোষণা করেছিল যে, একজন বিবাহিত নারীর "তার স্বামীর দ্বারা শারীরিক সংশোধন বা আচড় থেকে মুক্ত থাকা উচিত।"[৩৮] নিউ হ্যাম্পশায়ার এবং রোড আইল্যান্ডও তাদের ফৌজদারী বিধিমালায় স্ত্রীকে মারধর করার বিষয়টি স্পষ্টভাবে নিষিদ্ধ করেছিল।[৩৭]

আমেরিকান বিপ্লবের পর, আইনী ব্যবস্থায় পরিবর্তন স্থানীয় বিচারপতিদের চেয়ে রাজ্য আদালতের হাতে বেশি ক্ষমতা অর্পণ করেছিল। অনেক রাজ্যই তাদের আইনসভা থেকে বিবাহবিচ্ছেদের মামলার এখতিয়ারকে তাদের বিচার বিভাগে স্থানান্তরিত করে, এবং তাতে নিষ্ঠুরতা ও প্রহারের শিকার নারীদের আইনসম্মতভাবে বিবাহবিচ্ছেদ বা আইনী সহায়তা নেয়ার হার বাড়তে থাকে।

এতে প্রমাণ উপস্থাপন করার একটি বড় দায়ও নারীদের উপর তৈরি হয়েছিল, কারণ আদালতে তার জীবন ঝুঁকির মধ্যে ছিল সেটি প্রত্যক্ষভাবে প্রমাণ করতে হতো। ১৮২৪ সালে, মিসিসিপি সুপ্রিম কোর্ট, অঙ্গুলির নিয়মের বরাত দিয়ে স্টেট বনাম ব্র্যাডলি মামলাটি স্ত্রী মারধরের প্রতি ইতিবাচক অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছিল, যে নজির পরবর্তী কয়েক দশক ধরে সাধারণ আইনকে প্রভাবিত করেছিল।[৩৭]

উনিশ শতকে রাজনৈতিক আন্দোলন এবং প্রথম-তরঙ্গের নারীবাদী আন্দোলনের ফলে যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য দেশের পারিবারিক সহিংসতা সম্পর্কিত জনপ্রিয় মতামত এবং আইন উভয়ই পরিবর্তিত হয়েছিল।[৩৯][৪০] ১৮৫০ সালে, টেনেসি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম অঙ্গরাজ্য ছিল যারা স্পষ্টভাবে স্ত্রীকে প্রহার করা নিষিদ্ধ করে।[৪১][৪২][৪৩] শীঘ্রই অন্যান্য রাজ্যগুলি এর অনুসরণ করেছিল।[৩৬][৪৪] ১৮৭১ সালে ম্যাসাচুসেটস এবং আলাবামার আদালত ব্র্যাডলি মামলার রুল বাতিল করে দিলে আইনী মতামতের জোয়ার স্ত্রী-প্রহারের অধিকারের ধারণার বিরুদ্ধে যেতে শুরু করে।[৩৭] ১৮৭৮ সালে, যুক্তরাজ্যে বৈবাহিক কারণ সংক্রান্ত আইনের মাধ্যমে যুক্তরাজ্যের নারীদের অত্যাচারী স্বামীর কাছ থেকে আইনী বিচ্ছেদ দাবি চাওয়ার সুযোগ করে দেয়া হয়।[৪৫] ১৮৭০ এর দশকের শেষ দিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বেশিরভাগ আদালত স্ত্রীদের শারীরিকভাবে শাসন করার স্বামীদের চিরায়ত অধিকারকে প্রত্যাখ্যান করে।[৪৬] বিশ শতকের গোড়ার দিক থেকে পুলিশের পারিবারিক সহিংতার ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করা সাধারণ বিষয় হয়ে দাঁড়ায় যদিও তখনও গ্রেফতারের ঘটনা বিরলই ছিল।[৪৭]

বিশ্বজুড়ে বেশিরভাগ আইনী ব্যবস্থায়, ১৯৯০ এর দশক থেকেই কেবল পারিবারিক সহিংসতার বিষয়টি সম্বোধন করা শুরু হয়েছে; প্রকৃতপক্ষে, বিংশ শতাব্দীর শেষের দিক ছাড়া, বেশিরভাগ দেশগুলিতে এ ধরনের সহিংসতার বিরুদ্ধে আইন বা আইনী অনুশীলনে সুরক্ষা ছিল না বললেই চলে।[৪৮] ১৯৯৩ সালে, জাতিসংঘ পারিবারিক সহিংসতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কৌশল প্রকাশ করেছে।[৪৯] এই প্রকাশনায় বিশ্বজুড়ে দেশগুলোতে পারিবারিক সহিংসতাকে কে অপরাধমূলক আচরণ হিসাবে গণ্য করার আহ্বান জানানো হয় এবং বলা হয় যে একটি ব্যক্তিগত পারিবারিক জীবনের অধিকার মানে পরিবারের সদস্যদের নির্যাতনের অধিকার নয়। পাশাপাশি এও স্বীকার করে নেয়া হয় যে, প্রকাশনাটি লেখার সময় বেশিরভাগ আইনী ব্যবস্থা পারিবারিক সহিংসতাকে আইনের আওতার বাইরে হিসেবে বিবেচনা করে। তাদের যুক্তিগুলো এভাবে ব্যাখ্যা করা যায়: "বাচ্চাদের শারীরিক আঘাতের মধ্য দিয়ে শৃঙ্খলা শেখানোর চেষ্টা অনুমোদিত এবং অনেক আইনী ব্যবস্থায় উত্সাহিত করা হয়েছে এবং প্রচুর সংখ্যক দেশ স্ত্রীকে হালকা শারীরিক শাস্তি দেওয়ার অনুমতি দেয় বা, যদি তারা এখন তা নাও করে থাকে তবে গত ১০০ বছরের মধ্যে তারা এমনটি করেছে। আবার বেশিরভাগ আইনী ব্যবস্থা অপরাধমূলক পরিস্থিতিও চিহ্নিত করতে ব্যর্থ হয় যেখানে কোনও স্ত্রী তার স্বামীর সাথে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতে বাধ্য হয়। প্রকৃতপক্ষে স্ত্রীদের বিরুদ্ধে সহিংসতার ক্ষেত্রে, একটি ব্যাপক বিশ্বাস রয়েছে যে নারীরা তাদের স্বামীর কাছ থেকে নির্দিষ্ট স্তরের সহিংসতা সহ্য করতে বা এমনকি উপভোগও করতে পারে "।[৪৯]

সাম্প্রতিক দশকগুলিতে, পারিবারিক সহিংসতার জন্য আইনী দায়মুক্তি বন্ধের আহ্বান জানানো হয়েছে, প্রায়শই এই জাতীয় কার্যকলাপকে ব্যক্তিগত মনে করে এই ধারণার ভিত্তিতে দায়মুক্তি দেয়া হয়।[৫০][৫১] ইস্তাম্বুল কনভেনশন হল পারিবারিক সহিংসতা ও নারীর প্রতি সহিংসতা মোকাবেলা করার জন্য ইউরোপের প্রথম আইনত বাধ্যবাধকতাভিত্তিক বিধি।[৫২] কনভেনশনটি আইন ও আইন প্রয়োগের জায়গায় নারীর প্রতি সহিংসতাকে এবং পারিবারিক সহিংসতা মেনে নেয়ার প্রবণতার অবসান ঘটাতে চায়। কনভেনশনটির ব্যাখ্যামূলক প্রতিবেদনে ইউরোপীয় দেশগুলোতে সহিংসতার প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ধরনগুলোকে অবহেলায় দেখার দীর্ঘ রীতি স্বীকার করে নেয়া হয়।[৫৩] এর ২১৯ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে: "কাউন্সিল অফ ইউরোপের সদস্য রাষ্ট্রগুলিতে অতীত অনুশীলনের অনেক উদাহরণ রয়েছে যা দেখায় যে, যদি ভুক্তভোগী এবং অপরাধী পরস্পর বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ থাকেন বা এ ধরনের সম্পর্কের মধ্যে থেকে থাকেন তাহলে ঐ সম্পর্কের কারণেই বিবাহিত সম্পর্কের মধ্যে ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটলে তাকে স্বীকৃতি দেয়া হতো না। আর এটি দীর্ঘদিন ধরেই এ অবস্থায় ছিল।[৫৩]

সম্মান রক্ষার্থে হত্যাকাণ্ড, যৌতুকের মৃত্যু এবং জোরপূর্বক বিবাহের মতো নির্দিষ্ট ধরণের পারিবারিক সহিংসতার দিকে মনোযোগ বাড়ানো হয়েছে। সাম্প্রতিক দশকগুলোতে ভারত যৌতুকের সহিংসতা রোধে উদ্যোগ নিয়েছে: মহিলা সংস্থাগুলোর বহু বছরের প্রচার ও সক্রিয়তার পরে, ২০০৫ সালে পারিবারিক সহিংসতা থেকে নারী সুরক্ষা আইন (পিডাব্লুডিভিএ) আইন প্রণীত হয়েছিল।[৫৪] লাতিন আমেরিকাতে আবেগের বশে অপরাধের ঘটনা দীর্ঘদিন ধরে এতটাই প্রশ্রয়ের সাথে হয়ে আসছে যে সেটিও এখন আন্তর্জাতিক মনোযোগ আকষর্ণ করেছে। ২০০২ সালে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-এর আইনজীবী পরিচালক উইডনি ব্রাউন যুক্তি দেন যে, আবেগের বশে অপরাধ আর সম্মান রক্ষার্থে হত্যার অপরাধের মধ্যে যথেষ্ট সাদৃশ্য রয়েছে। তাঁর মতে: "আবেগের বশে অপরাধের ক্ষেত্রেও একই রকম চালিকাশক্তি কাজ করে [সম্মান রক্ষার্থে হত্যার জন্য যেমন] যেখানে নারী পরিবারে পুরুষ সদস্যদের দ্বারা হত্যার শিকার হন আর এই ধরনের অপরাধকেও যুক্তিযুক্ত ও ক্ষমাযোগ্য হিসাবে বিবেচনা করা হয় "।[৫৫]

ঐতিহাসিকভাবেই, শিশুরা তাদের পিতামাতার দ্বারা সহিংসতা থেকে খুব কম সুরক্ষিত, এবং বিশ্বের অনেক জায়গায় এখনও এটি বিদ্যমান। উদাহরণস্বরূপ, প্রাচীন রোমে একজন বাবা আইনত তার সন্তানদের হত্যা করতে পারতেন। অনেক সংস্কৃতি পিতাদের তাদের সন্তানকে দাসত্বের জন্য বিক্রি করার অনুমতি দিয়েছে। শিশু ত্যাগ করাও একটি সাধারণ অনুশীলন ছিল।[৫৬] পেডিয়াট্রিক সাইকিয়াট্রিস্ট সি হেনরি কেম্প কর্তৃক "দ্য ব্যাটার্ড চাইল্ড সিন্ড্রোম" প্রকাশনার মাধ্যমে শিশু নির্যাতনের বিষয়টি মূলধারার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে শুরু করে। এর আগে, শিশুদের আঘাত - এমনকি বারবার হাড় ভেঙে দেয়া — ইচ্ছাকৃত আঘাত হিসেবে সাধারণত স্বীকৃত ছিল না। পরিবর্তে, চিকিৎসকরা প্রায়শই হাড়ের অসুস্থতা নিয়ে পিতামাতার বর্ণনাকে গ্রহণ করতেন; যেমন ভুলবশত পড়ে যাওয়া বা দুষ্ট প্রতিবেশির আঘাত ইত্যাদি।[৫৭]

ধরন

সব পারিবারিক সহিংসতা একই রকম নয়। মাত্রার ভিন্নতা, তীব্রতা, উদ্দেশ্য এবং ফলাফলের পার্থক্য সবকিছুই উল্লেখযোগ্য। পারিবারিক সহিংসতা শারীরিক আগ্রাসন বা আক্রমণ (আঘাত করা, লাথি মারা, কামড় দেওয়া, চেঁচামেচি করা, বাধা দেয়া, চড় মারা, কোন কিছু ছুঁড়ে মারা, মারধর করা ইত্যাদি) বিভিন্ন হুমকি; যৌন নির্যাতন; নিয়ন্ত্রণ বা কর্তৃত্ব; ভয় দেখানো; লাঞ্ছিত করা; প্যাসিভ / পরোক্ষ নির্যাতন (উদাঃ, অবহেলা); এবং অর্থনৈতিক বঞ্চনা সহ অনেকগুলো রূপ নিতে পারে।[৫৮][৫৯] আবার বিপদ, অপরাধমূলক জবরদস্তি, অপহরণ, বেআইনী কারাদণ্ড, অপরাধহীনতা এবং হয়রানিও এর আওতায় পড়তে পারে।[৬০]

শারীরিক

শারীরিক নির্যাতন ভয়, বেদনা, আঘাত, অন্যান্য শারীরিক যন্ত্রণা বা শারীরিক ক্ষতি হওয়ার উদ্দেশ্যে সংঘটিত বিভিন্ন ক্রিয়া।[৬১][৬২] দমনমূলক নিয়ন্ত্রণের প্রেক্ষাপটে বলা যায়, শারীরিক নির্যাতন করা হয় ভুক্তভোগীকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য।[৬৩] সম্পর্কের ক্ষেত্রে শারীরিক নির্যাতনের গতিপ্রকৃতি প্রায়শই জটিল। শারীরিক সহিংসতা হুমকি, ভয় দেখানো এবং বিচ্ছিন্নতার মাধ্যমে ভুক্তভোগীর আত্মপ্রত্যয়ের ওপর বাধা এবং ব্যক্তিগত স্বাধীনতার অন্যান্য সীমাবদ্ধতা আরোপের সমন্বয়েও হতে পারে।[৬৪] চিকিত্সা করাতে অনিচ্ছা, ঘুম থেকে বঞ্চিত করা এবং জোর করে মাদক বা অ্যালকোহল ব্যবহার করানোও শারীরিক নির্যাতনেরও নানারূপ।[৬১] এমনকি ভুক্তভোগীর মানসিক ক্ষতি করার জন্য অন্যান্য লক্ষ্যবস্তু যেমন শিশু বা পোষা প্রাণীকে শারীরিক আঘাত করাও এর অন্তর্ভুক্ত করতে পারে।[৬৫]

পারিবারিক সহিংসতার প্রসঙ্গে শ্বাসরোধের বিষয়টি উল্লেখযোগ্য গুরুত্ব পেয়েছে।[৬৬] এটি এখন পারিবারিক সহিংসতার অন্যতম মারাত্মক রূপ হিসাবে স্বীকৃত; তবুও, বাহ্যিক আঘাতের অভাব, এবং এটি সম্পর্কে সামাজিক সচেতনতা সেই সাথে চিকিত্সা প্রশিক্ষণের অভাব থাকায় শ্বাসরোধ করা প্রায়শই একটি গোপন সমস্যায় রূপ নেয়।[৬৭] ফলস্বরূপ, সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অনেকগুলি রাজ্য শ্বাসরোধের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট আইন কার্যকর করেছে।[৬৮]

পারিবারিক সহিংসতার ফলে পুরুষ হত্যাকাণ্ডের তুলনায় নারী হত্যাকাণ্ডের আনুপাতিক হার বেশী লক্ষ্যণীয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৫০ ভাগের এর বেশি নারী হত্যাকাণ্ড প্রাক্তন বা বর্তমান ঘনিষ্ঠ সঙ্গীর দ্বারা সংঘটিত হয়ে থাকে।[৬৯] যুক্তরাজ্যে, খুন হওয়া নারীদের ৩৮ শতাংশ নারী ঘনিষ্ঠ সঙ্গী কর্তৃক নিহত হয়েছে, পুরুষদের ক্ষেত্রে এ হার ৬ শতাংশ। কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, ইস্রায়েল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিহত নারীদের ৪০ থেকে ৭০ শতাংশ নিহত হয়েছেন তাদের ঘনিষ্ঠ সঙ্গীর দ্বারা।[৭০] বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, পৃথিবীর প্রায় ৩৮% নারী হত্যাকাণ্ড ঘনিষ্ঠ সঙ্গীর দ্বারা সংঘটিত হয়।[৭১]

গর্ভাবস্থায়, একজন নারীর নির্যাতিত হওয়ার বা দীর্ঘস্থায়ী নির্যাতন তীব্রতর রূপ নেয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে যা মা এবং ভ্রূণের স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে[৭২]। গর্ভাবস্থা পারিবারিক সহিংসতার একটি বিরাম ব্যবস্থা বলা যেতে পারে যখন নির্যাতনকারী অনাগত সন্তানের ক্ষতি করতে চায় না। আর প্রসবের পর নারীদের প্রতি পারিবারিক সহিংসতার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি থাকে।[৭৩]

অ্যাসিড আক্রমণ সহিংসতার একটি চরম রূপ, যেখানে সাধারণত ভুক্তভোগীদের মুখের দিকে এসিড নিক্ষেপ করা হয়, ফলে দীর্ঘমেয়াদী অন্ধত্ব এবং স্থায়ী দাগ পড়া সহ ব্যাপক ক্ষতিসাধন হয়।[৭৪][৭৫][৭৬][৭৭][৭৮] এগুলো সাধারণত কোনও বিয়ের প্রস্তাব বা যৌন সম্পর্ক স্থাপন প্রত্যাখ্যান করার জন্য কোনও নারীর বিরুদ্ধে প্রতিশোধ গ্রহণের একটি ধরন।[৭৯][৮০]

মধ্য প্রাচ্য এবং বিশ্বের অন্যান্য অংশে, ভুক্তভোগী ব্যক্তি পরিবার বা সম্প্রদায়ের জন্য অসম্মান বয়ে এনেছে বলে অভিযোগকারীদের বিশ্বাসের কারণে পরিকল্পিত পারিবারিক হত্যাকাণ্ড বা সম্মান রক্ষার্থে হত্যাকাণ্ড পরিচালিত হয়।[৮১][৮২] হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতে, নারীদের বিরুদ্ধে "পারিবারিকভাবে আয়োজিত বিয়েতে অস্বীকৃতি, যৌন নিপীড়নের শিকার হওয়া, বিবাহবিচ্ছেদ চাওয়া বা ব্যাভিচারের অভিযোগে অভিযুক্ত নারীদের সাধারণত সম্মান রক্ষার্থে হত্যাকান্ডের বা অনার কিলিং এর শিকার হতে হয়।[৮৩] বিশ্বের কিছু কিছু অংশে বিয়ের আগে একজন নারীর কুমারিত্ব থাকাটা সামাজিকভাবে খুবই প্রত্যাশিত এবং সেখানে কোনও বধূ বিয়ের রাতে কুমারিত্ব প্রমাণ করতে না পারলে তাকে অনার কিলিং এর শিকার হতে হয়।[৮৪][৮৫]

নববধূকে পুড়িয়ে মারা বা যৌতুকজনিত হত্যা বলতে পারিবারিক সহিংসতার এমন একটি ধারাকে বোঝায় যেখানে সদ্য বিবাহিত নারীকে তার পরিবার কর্তৃক প্রদত্ত যৌতুকের প্রতি অসন্তুষ্টির কারণে স্বামী বা স্বামীর পরিবার বাড়িতে হত্যা করে। এ ঘটনা প্রায়শই বিয়ের পরে বেশি হয় বা দীর্ঘমেয়াদী যৌতুকের দাবির প্রেক্ষিতে হয়ে থাকে।[৮৬] যৌতুক সহিংসতা দক্ষিণ এশিয়া, বিশেষত ভারতে সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। ২০১১ সালে, ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো ভারতে ৮৬১৮টি যৌতুকজনিত মৃত্যুর খবর দিয়েছে, তবে আনুষ্ঠানিকভাবে পরিসংখ্যানগুলো এই পরিমাণের কমপক্ষে তিনগুণ হবে বলে অনুমান করা হয়।[৮৭]

যৌন

কোন ব্যক্তি যৌন ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর পূর্বক যেকোন যৌন ক্রিয়া, যৌন ক্রিয়া লাভের প্রচেষ্টা, অযাচিত যৌন মন্তব্য বা আচরণ পাচারের উদ্দেশ্যে বা অন্য কোন উদ্দেশ্য করা হলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সংজ্ঞায়ন অনুসারে তাকে যৌন নির্যাতন বলা হয়। এর মধ্যে বাধ্যতামূলক কুমারীত্ব প্রদর্শন এবং নারী জননাঙ্গ বিচ্ছেদ করাও অন্তর্ভুক্ত। শারীরিক বলের মাধ্যমে যৌন ক্রিয়াকলাপের সূচনা ছাড়াও যদি কোনও ব্যক্তিকে মৌখিকভাবে এ বিষয়ে সম্মতি প্রদানের জন্য চাপ দেয়া হয় সেটিও যৌন নির্যাতন যেখানে ব্যক্তি ক্রিয়ার প্রকৃতি বুঝতে অক্ষম, অংশগ্রহণে না করতে অক্ষম বা যৌনক্রিয়ায় অনিচ্ছা বা অনাগ্রহ প্রকাশেও অক্ষম। অপ্রাপ্ত বয়স্কতা, অপরিপক্কতা, অসুস্থতা, অক্ষমতা, বা অ্যালকোহল বা অন্যান্য ড্রাগের প্রভাব বা ভয় দেখানো বা চাপের কারণে এ ধরনের বিষয়গুলো হতে পারে।

অনেক সংস্কৃতিতে ধর্ষণের শিকার ব্যক্তিরা তাদের পরিবারে অসম্মান বা লাঞ্ছনা নিয়ে এসেছে বলে বিবেচনা করা হয় এবং তারা সম্মান রক্ষার্থে হত্যাসহ কঠোর পারিবারিক সহিংসতার মুখোমুখি হয়েছে। এ ধরনের ঘটনা ভুক্তভোগী গর্ভবতী হয়ে গেলে সাধারণত ঘটে থাকে।

নারী জননাঙ্গ বিচ্ছেদকে ডব্লিউ এইচ ও দ্বারা সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে "নারীর বাহ্যিক জননাঙ্গের আংশিক বা সম্পূর্ণ অপসারণ বা চিকিৎসাজনিত কারণ ছাড়া নারী জননাঙ্গের অন্যান্য আঘাতের সাথে জড়িত সমস্ত প্রক্রিয়া"। এই প্রক্রিয়া আফ্রিকা এবং মধ্য প্রাচ্যের ২৯ টি দেশে বর্তমানে জীবিত ১২৫ মিলিয়নেরও বেশি নারীর উপর সম্পাদিত হয়েছে।

অজাচার, বা একজন প্রাপ্তবয়স্ক ও একটি শিশুর মধ্যে যৌন যোগাযোগ, পারিবারিক যৌন সহিংসতার অন্যতম রূপ। কিছু সংস্কৃতিতে, পরিবারের জ্ঞান এবং সম্মতিতে শিশু যৌন নিপীড়নের রীতিনীতিগুলি রয়েছে, যেখানে সম্ভবত অর্থ বা মালামালের বিনিময়ে শিশুরা প্রাপ্তবয়স্কদের সাথে যৌন ক্রিয়ায় লিপ্ত হয়। উদাহরণস্বরূপ, মালাউইতে কিছু বাবা-মা প্রস্তুত করেন তাদের কন্যাদের যৌন দীক্ষা দেয়ার জন্য একজন বয়স্ক ব্যক্তির সাথে যৌনক্রিয়া করানোর ব্যবস্থা করে থাকেন। বয়স্ক ব্যক্তিটি সাধারণত "হায়না" বলা হয়। যৌন শোষণ এবং যৌন নিগ্রহের বিরুদ্ধে শিশুদের সুরক্ষা সম্পর্কিত কাউন্সিল অফ ইউরোপ কনভেনশনটি বাসা বা পরিবারের মধ্যে ঘটে যাওয়া শিশুদের প্রতি যৌন নির্যাতনের সমাধানের জন্য প্রথম আন্তর্জাতিক চুক্তি ছিল।

প্রজনন জবরদস্তি (যাকে "জোরপূর্বক প্রজনন" নামেও ডাকা হয়) এক ধরনের হুমকি বা সঙ্গীর প্রজনন অধিকার, স্বাস্থ্য এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের বিরুদ্ধে সহিংসতা; এবং তাকে গর্ভবতী বা গর্ভাবস্থার অবসান ঘটাতে চাপ বা চাপিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে করা বিভিন্ন আচরণের সমন্বয়কে বোঝায়। প্রজনন জবরদস্তির সঙ্গে জোরপূর্বক যৌনক্রিয়া, গর্ভনিরোধক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভয় বা অক্ষমতা, যৌনতা প্রত্যাখ্যান করার পরে সহিংসতার ভয় এবং স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ নেয়ার ক্ষেত্রে নির্যাতনকারী সঙ্গীর হস্তক্ষেপের বিষয়গুলোও জড়িত।

কিছু সংস্কৃতিতে বিয়ের মাধ্যমে নারীকে প্রজননে বাধ্য করার সামাজিক বাধ্যবাধকতা দেখা যায়। উদাহরণস্বরূপ, উত্তরের ঘানাতে নববধূকে যে অর্থ দেয়া হয় তা মূলত সন্তান জন্মদানের জন্য সে নারীর প্রয়োজনীতাকে তাৎপর্যবহ করে তোলে এবং জন্ম নিয়ন্ত্রণ ব্যবহার করা নারীরা সহিংসতা ও প্রতিশোধের হুমকির মুখোমুখি হন। ডব্লিউএইচও জোরপূর্বক বিবাহ, সহবাস এবং গর্ভাবস্থা, উত্তরাধিকার সূত্রে স্ত্রী গ্রহণকে যৌন সহিংসতার সংজ্ঞার অন্তর্ভুক্ত করেছে। উত্তরাধিকার সূত্রে স্ত্রী গ্রহণ, বা লেভিরেট বিবাহ এমন এক ধরণের বিবাহ যেখানে মৃত ব্যক্তির ভাই তার বিধবার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় এবং বিধবা তার মৃত স্বামীর ভাইকে বিয়ে করতে বাধ্য হয়।

বৈবাহিক ধর্ষণ হচ্ছে স্ত্রী অসম্মতিতে তার সঙ্গে যৌন সম্পর্কে অনুপ্রবেশ করা। এটি বহু দেশে এ নিয়ে কোন রিপোট বিহীন, তদন্ত-বিহীন এবং আইনসম্মত, কেননা মনে করা হয়, বিয়ের মাধ্যমে কোনও নারী তার স্বামীর যখন ইচ্ছা তখন তার সাথে যৌনমিলনের জন্য অবিচ্ছেদ্য সম্মতি দেয়। উদাহরণস্বরূপ, লেবাননে বৈবাহিক ধর্ষণকে অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করার প্রস্তাবিত আইন নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে সুন্নি ধর্মীয় আদালতের বিচারক শাইখ আহমদ আল-কুরদী বলেন যে, আইনটি "আসলে এমন একজন ব্যক্তিকে কারাবাসের দিকে নিয়ে যেতে পারে যেখানে তিনি বাস্তবে তার বৈবাহিক নূন্যতম অধিকারটুকুই ব্যবহার করছেন।" নারীবাদীরা ১৯৬০ এর দশক থেকে আন্তর্জাতিকভাবে বৈবাহিক ধর্ষণকে অপরাধ গণ্য করার জন্য পদ্ধতিগতভাবে কাজ করেছেন। ২০০৬ সালে, জাতিসংঘের একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে কমপক্ষে ১০৪ টি দেশে বৈবাহিক ধর্ষণ একটি মামলাযোগ্য অপরাধ ছিল। একসময় আইন ও সমাজ কর্তৃক ব্যাপকভাবে অবহেলা ও উপেক্ষার শিকার হয়ে থাকা বৈবাহিক ধর্ষণ এখন আন্তর্জাতিক সম্মেলনগুলো দ্বারা প্রত্যাখ্যাত এবং অপরাধ হিসেবে বিবেচিত। যে দেশগুলি নারী ও গৃহস্থালি সহিংসতা প্রতিরোধ ও লড়াইয়ের বিরুদ্ধে ইউরোপের প্রথম আইনী বাধ্যতা স্থাপমূলক বিধি কাউন্সিল অফ ইউরোপ কনভেনশনকে অনুমোদন দিয়েছে, তারা সম্মতিহীন যৌনতা স্থাপনের অবৈধতা নিশ্চিত করতে আইনত বাধ্য। সম্মেলনটি আগস্ট ২০১৪ থেকে কার্যকর হয়েছিল।

মানসিক

মানসিক নির্যাতন আচরণের এমন একটি ধারা যার মাধ্যমে হুমকী, ভয় দেখানো, অমানবিক করে দেয়া বা ধীরে ধীরে নিজের মূল্যকে হ্রাস করে। ইস্তাম্বুল কনভেনশন অনুযায়ী মানসিক সহিংসতা হল "জবরদস্তি বা হুমকির মাধ্যমে একজন ব্যক্তির মানসিক স্বাতন্ত্র্যকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করার ইচ্ছাকৃত আচরণ"।

মানসিক নির্যাতনের মধ্যে হ্রাস, হুমকি, বিচ্ছিন্নতা, সবার সামনে লাঞ্ছনা, নিরলস সমালোচনা, অনবরত ব্যক্তিগত অবমূল্যায়ন, জোরপূর্বক নিয়ন্ত্রণ, যোগাযোগ বা সহযোগীতা করতে অস্বীকার এবং ব্যক্তির নিজের সম্পর্কে সন্দেহ প্রবেশ করানো অন্তর্ভুক্ত। নজরদারি বা স্টকিং মানসিক ভয় দেখানোর একটি সাধারণ রূপ এবং প্রায়শই প্রাক্তন বা বর্তমান ঘনিষ্ঠ সঙ্গীর দ্বারা এটি হয়ে থাকে। এ সময় ভুক্তভোগী মনে করে, যে তাদের অংশীদাররা তাদের উপরে প্রায় সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রেখেছে, এটি সম্পর্কের ক্ষেত্রে শক্তি গতিশীলকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করে, অপরাধীকে ক্ষমতায়িত করে এবং ক্ষতিগ্রস্থকে অক্ষমতায়িত করে। ভুক্তভোগীরা প্রায়শই হতাশায় ভোগেন ফলে খাদ্যভ্যাস প্রভবিত হওয়ায় সে সংক্রান্ত নানা সমস্যা, আত্মহত্যা এবং মাদক ও অ্যালকোহল গ্রহণের বাড়ন্ত ঝুঁকির মুখোমুখি হন।

জোরপূর্বক নিয়ন্ত্রণ এক ধরনের নিয়ন্ত্রণকারী আচরণ যা কোনও ব্যক্তির সাথে অসহযোগীতা করে, তার স্বাধীনতার হরণ করে, তার দৈনন্দিন আচরণের ওপর হস্তক্ষেপের মধ্য দিয়ে তাকে পরনির্ভরশীল করে তোলে। এতে মৌখিক আক্রমণ, শাস্তি, অপমান, হুমকি বা ভয় দেখানোর বিষয়গুলো জড়িত। তবে, জোরপূর্বক নিয়ন্ত্রণ শারীরিকভাবেও প্রয়োগ করা যেতে পারে; শারীরিক নির্যাতন, ক্ষতিসাধন বা ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে। পারিবারিকসহিংসতার প্রসঙ্গে বলা যায়, জোরপূর্বক নিয়ন্ত্রণের ফলে ভুক্তভোগীদের মানবাধিকার প্রতিদিনই সীমিত হতে পারে যা তাদের স্বাধীনতা অধিকার থেকে বঞ্চিত করে এবং তাদের কর্মের ক্ষমতা হ্রাস করে দেয়। নির্যাতক ব্যক্তি গুপ্তচরবৃত্তির মাধ্যমে ভুক্তভোগীর দৈনিক সময়সূচী পর্যবেক্ষণ করে, তার সাথে অমানবিক ব্যবহার করে, হুমকি দেয়, মৌলিক চাহিদা এবং ব্যক্তিগত সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে এবং একা করে দেয়ার চেষ্টা করে। ভুক্তভোগীরা সাধারণত উদ্বেগ এবং আশঙ্কা অনুভব করে যা তাদের ব্যক্তিগত জীবনকে আর্থিক, শারীরিক ও মানসিকভাবে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করে।

অর্থনৈতিক

অর্থনৈতিক নির্যাতন এমন এক ধরনের নির্যাতন যখন কোনও ঘনিষ্ঠ সঙ্গীর তার অন্য সঙ্গীর অর্থনৈতিক সংস্থানগুলোতে প্রবেশের অধিকার নিয়ন্ত্রণ করে [ বৈবাহিক সম্পদগুলি নিয়ন্ত্রণের মাধ্যম হিসাবে ব্যবহৃত হয়। অর্থনৈতিক অপব্যবহারের মধ্যে একজন স্ত্রীকে সম্পদ অধিগ্রহণ থেকে বিরত রাখা, ভুক্তভোগী কী ব্যবহার করতে পারে তা সীমাবদ্ধ করা বা অন্যথায় ভুক্তভোগীর অর্থনৈতিক সম্পদ ভোগের বিষয়টি জড়িত থাকতে পারে। অর্থনৈতিক নির্যাতন ভুক্তভোগীর নিজের অর্থনৈতিক ক্ষমতা হ্রাস করে, শিক্ষা, কর্মসংস্থান, ক্যারিয়ারের অগ্রগতি এবং সম্পদ অধিগ্রহণের সুযোগ কমিয়ে দিয়ে অপরাধীর উপর নির্ভরতা বাড়িয়ে তোলে। পরিবারের কোন সদস্যকে নথিপত্র স্বাক্ষর করতে, জিনিস বিক্রি করতে বা উইল পরিবর্তন করতে বাধ্য করা বা চাপ দেওয়াও অর্থনৈতিক নির্যাতনের অন্তর্ভুক্ত।

একজন ভুক্তভোগীকে ভাতা দেওয়া হতে পারে, সে অর্থ কতটা কোথায় ব্যয় করা হয় তার নিবিড় পর্যবেক্ষণের সুযোগ নেয়ার মাধ্যমে। অপরাধীর সম্মতি ব্যতীত ব্যয় রোধ করা, ঋণ জমা হওয়া বা ক্ষতিগ্রস্থের সঞ্চয় হ্রাস করার দিকে পরিচালিত করে। অর্থ ব্যয় সম্পর্কে মতবিরোধ অতিরিক্ত শারীরিক, যৌন বা মানসিক নির্যাতনের সাথে প্রতিশোধ গ্রহণের পর্যায়ে উন্নীত হতে পারে। বিশ্বের বিভিন্ন অংশে যেখানে নারীরা বেঁচে থাকার জন্য স্বামীর আয়ের উপর নির্ভরশীল (নারী কর্মসংস্থানের অভাব এবং রাষ্ট্রকল্যাণের অভাবের কারণে) তাদের জন্য অর্থনৈতিক নির্যাতন খুব মারাত্মক পরিণতি বয়ে আনতে পারে। নির্যাতনকেন্দ্রিক সম্পর্কগুলোতে মা এবং শিশু উভয়েই অপুষ্টিতে ভোগে। যেমন ভারতে, খাদ্য গ্রহণে বাধা প্রদান করা পারিবারিক নির্যাতনের একটি প্রতিষ্ঠিত ধরন।

জনমিতি

পারিবারিকসহিংসতা বিশ্বজুড়ে, বিভিন্ন সংস্কৃতিতে দেখা যায় এবং সব ধরনের অর্থনৈতিক অবস্থার মানুষকে প্রভাবিত করে; তবে বেশ কয়েকটি গবেষণায় নিম্ন আর্থ-সামাজিক অবস্থানের সূচকগুলোকে (যেমন বেকারত্ব এবং স্বল্প আয়ের) পারিবারিকসহিংসতার উচ্চ স্তরের ঝুঁকির কারণ হিসাবে দেখানো হয়েছে। বিশ্বব্যাপী, কেন্দ্রীয় সাব-সাহারান আফ্রিকা, পশ্চিমের সাব-সাহারান আফ্রিকা, অ্যান্ডিয়ান লাতিন আমেরিকা, দক্ষিণ এশিয়া, পূর্ব সাব-সাহারান আফ্রিকা, উত্তর আফ্রিকা এবং মধ্য প্রাচ্যে নারীদের বিরুদ্ধে ঘরোয়া সহিংসতা সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। পশ্চিম ইউরোপ, পূর্ব এশিয়া এবং উত্তর আমেরিকাতে নারীদের বিরুদ্ধে পারিবারিকসহিংসতার সবচেয়ে কম প্রবণতা দেখা যায়।

লিঙ্গ পার্থক্য

পারিবারিকসহিংসতার সাথে লিঙ্গভেদ এর সম্পর্ক নিয়ে কিছু বিতর্ক এখনও চলছে। পদ্ধতির সীমাবদ্ধতা যেমন সংঘাতের কৌশল সংক্রান্ত স্কেল, যা আঘাত, হত্যা এবং যৌন সহিংসতার হার ধারন করতে ব্যর্থ হয়, প্রসঙ্গ (যেমন, অনুপ্রেরণা, ভয়), বিভিন্ন ধরনের নমুনা পদ্ধতির , স্বেচ্ছায় রিপোর্ট প্রদানে অনিচ্ছা, এবং পরিচালন ব্যবস্থায় পার্থক্য সমস্ত বিদ্যমান গবেষণার জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করে।

দীর্ঘমেয়াদে যাদের গোপনে নির্যাতিত হওয়ার অভিজ্ঞতা হয়েছে বা একাধিক সঙ্গীদের দ্বারা নির্যাতিত হয় তাদের মধ্যে পারিবারিক সহিংসতাকে স্বীকৃত করার প্রবণতা হ্রাস পায়, একে সাধারণীকরণ করতে দেখা যায় এবং পারিবারিকসহিংসতার প্রতিবেদন করাও আর হয় না। অনেক সংগঠন নির্যাতনের কথা উল্লেখ করতে গিয়ে লিঙ্গ-নিরপেক্ষ পদ ব্যবহার করার চেষ্টা করে থাকে। যেমন, নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতার চেয়ে পারিবারিক সহিংসতার মতো বিহৎ পরিসরের শব্দ ব্যবহার করা।

বিভিন্ন অনুসন্ধান প্রায়শই নির্দেশ করে যে পুরুষ ঘনিষ্ঠ সঙ্গীর প্রতি নারীর সহিংসতার (আইপিভি বা ইন্টিমেট পার্টনার ভায়োলেন্স) প্রধান বা প্রাথমিক উদ্দেশ্য (আত্মরক্ষা বা আত্ম সুরক্ষা (যেমন মানসিক স্বাস্থ্য)। ২০১০ সালের পদ্ধতিগত পর্যালোচনায় আইপিভি তে নারীর অপরাধ সংঘটিত হওয়ার পেছনে সাধারণ উদ্দেশ্যগুলি ছিল ক্রোধ, মনোযোগ দেওয়ার প্রয়োজন বা তাদের সঙ্গীর সহিংসতার প্রতিক্রিয়া হিসেবে। এতে আরও বলা হয়েছে যে আত্ম-প্রতিরক্ষা এবং প্রতিশোধ নেওয়া সাধারণ উদ্দেশ্য ছিল, আত্ম-প্রতিরক্ষা এবং প্রতিশোধের মধ্যে পার্থক্য করা কঠিন ছিল। ম্যুরে এ স্ট্রসের পারিবারিক সহিংসতা গবেষণায় এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে, পুরুষদের বিরুদ্ধে মহিলাদের দ্বারা সংঘটিত বেশিরভাগ আইপিভি আত্মরক্ষার দ্বারা পরিচালিত হয় না।অন্যান্য গবেষণাগুলি নারী অপরাধকেন্দ্রিক আইপিভি সম্পর্কে স্ট্রসের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে তবে এর সঙ্গে যোগ করেছেন যে, পুরুষদের আঘাত পাওয়ার পর প্রতিশোধ নেওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তবে আত্ম প্রতিরক্ষার সংকীর্ণ সংজ্ঞা ব্যবহার করার জন্য স্ট্রসের গবেষণা সমালোচনা করেছিলেন লোসেকেসহ বেশ কিছু গবেষক।

শেরি হামবি বলেছেন যে যৌন সহিংসতা প্রায়শই আইপিভির মাপদন্ডের থেকে যায়। যৌন সহিংসতার বিষয় আসলে সেখানে নারীদর অপরাধ ১০ শতাংশেরও কম। তিনি এও বলেন, নির্যাতনের বিষয়ে পুরুষদের স্ব-প্রতিবেদনগুলি বিশ্বাস উপযোগী নয় কারণ তারা ধারাবাহিকভাবে তাদের নিজেদের সহিংসতার চেষ্টাগুলো প্রকাশ করেনা এবং এছাড়াও পুরুষ এবং নারী উভয়েরই জোর করে নিয়ন্ত্রণ খাটানোর জন্য আইপিভি ব্যবহার করেন অর্থাৎ ঘনিষ্ঠ সঙ্গী হিসেবে জোর খাটানোর চেষ্টা করেন। জোরপূর্বক নিয়ন্ত্রণ হ'ল যখন একজন ব্যক্তি অন্যকে নিয়ন্ত্রণ ও আধিপত্য বজায় রাখতে বিভিন্ন আইপিভি কৌশল ব্যবহার করে; ভুক্তভোগীরা প্রায়শই শারীরিক সহিংসতা প্রতিরোধ করে। এটি সাধারণত পুরুষদের দ্বারা নারীদের বিরুদ্ধেই সংঘটিত হয় এবং আঘাতভিত্তিক বা ট্রমার বন্ধন সৃষ্টি করার পেছনে অন্যতম প্রধান কারণ এবং এ ধরনের সম্পর্কে চিকিৎসা পরিষেবা প্রয়োজন হয়। হংকং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গবেষক চ্যান কো লিংয়ের ২০১১ সালের পর্যালোচনাতে দেখা গেছে যে অপ্রাপ্তবয়স্ক সঙ্গীর সাথে সহিংসতার ঘটনায় পুরুষ ও নারী উভয়ের দায় সমান ছিল তবে পুরুষদের দ্বারা সংঘটিত সহিংসতা অনেক বেশি গুরুতর ছিল। তাঁর বিশ্লেষণে দেখা গেছে যে, পুরুষরা তাদের সঙ্গীদের মারধর, শ্বাসরোধ বা গলা টিপে মারার চেষ্টা করেছে যেখানে নারীর সহিংসতা কোনও বস্তু নিক্ষেপ, লাথি, চপেটাঘাত, কামড়, ঘুষি মারা বা কোনও জিনিস দিয়ে আঘাত করার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে।

ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি কর্তৃক সহিংসতার প্রতিক্রিয়া হিসাবে গবেষকরা পুরুষ ও নারী উভয় ক্ষেত্রেই উল্লেখযোগ্যভাবে পৃথক ফলাফলও পেয়েছেন। সাইকোলজি অফ ভায়োলেন্স জার্নাল থেকে ২০১২ সালের পর্যালোচনাতে দেখা গেছে যে ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি কর্তৃক সহিংসতার ফলে নারীরা বিশেষত আহত, ভয় এবং আঘাত পরবর্তী মানসিক সমস্যায় পড়ে আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। পর্যালোচনায় আরও দেখা গেছে, নারী নির্যাতনকারীরা তাদের ঘনিষ্ঠ সঙ্গীর সহিংসতার প্রতিক্রিয়াতে "খুব ভীতু" ছিলেন, কিন্তু ৮৫% পুরুষ ভুক্তভোগী "কোনও ভয় নেই" বলে রিপোর্ট করেছেন এবং আইপিভি মহিলাদের ক্ষেত্রে সম্পর্কের সন্তুষ্টিকে মধ্যস্থতা করেছে তবে পুরুষদের জন্য নয় এবং ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি কর্তৃক সহিংসতা বা আইপিভি নারীর জন্য সম্পর্কের তৃপ্তিবোধ তৈরি করেছে তবে পুরুষের জন্য নয়। হামবার্গারের (২০০৫) পর্যালোচনাতে দেখা গেছে যে, পুরুষরা নারী ঘনিষ্ঠ সঙ্গীর সহিংসতার প্রেক্ষিতে হাসি এবং চিত্তবিনোদনমূলক প্রতিক্রিয়া দেখায়। গবেষকরা রিপোর্ট করেছেন, পুরুষের সহিংসতা দুর্দান্ত ভয় সৃষ্টি করে, "ভয় সেই অনুঘটক যা মারধরের শক্তি সরবরাহ করে" এবং "আঘাতগুলো ভয়কে বজায় রাখতে সহায়তা করে।" একটি দেশের লিঙ্গ সমতা এবং পারিবারিক সহিংসতার হার এ দুয়ের সম্পর্ক খুঁজে বের করতে পাঁচটি মহাদেশের গবেষণা পরীক্ষা করে ২০১৩ সালের একটি পর্যালোচনা হয়েছিল। যেখানে লেখকরা খুঁজে পেলেন যে, সঙ্গী নির্যাতনকে যখন মানসিক নির্যাতন, যেকোন ধরনের আঘাতকে অন্তর্ভুক্ত করে বিস্তৃত পরিসরে সংজ্ঞায়ন করা হয় জন্য তখন যেই আগে আঘাত করুক নাকেন, সঙ্গী নির্যাতন তুলনামূক একই থাকে। তারা আরও বলেন, শারীরিকভাবে আঘাতপ্রাপ্তরা অনেক বেশী ভয় প্রকাশ করে এবং পরবর্তীতে মানসিক সমস্যা অনুভব করে। পারিবারিক সহিংসতা উল্লেখযোগ্যভাবে নারীদের প্রতি সহিংসতাকেই নির্দেশ করে।

পারিবারিক সহিংসতা সম্পর্কিত আইন দেশ অনুযায়ী পৃথক হয়। যদিও এটি পশ্চিমা বিশ্বে সাধারণত নিষিদ্ধ, অনেক উন্নয়নশীল দেশে এটি হয় নি। উদাহরণস্বরূপ, ২০১০ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছে, কোনও ব্যক্তির তার স্ত্রী এবং সন্তানদের শারীরিকভাবে শাসন করার অধিকার রয়েছে যদি তাতে শরীরে কোন দাগ না পড়ে যায়। পারিবারিক সহিংসতার সামাজিক গ্রহণযোগ্যতাও দেশ অনুযায়ী পৃথক হয়। যদিও বেশিরভাগ উন্নত দেশগুলিতে পারিবারিক সহিংসতা বেশিরভাগ লোকের কাছে অগ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হয়, তবে বিশ্বের অনেক অঞ্চলে ভিন্ন মতও দেখা যায়। ইউনিসেফের সমীক্ষায় ১৫-৪৯ বছর বয়সী নারী যারা মনে করেন যে বিশেষ পরিস্থিতিতে একজন স্বামীর আঘাত করা বা মারধর করা ন্যায়সঙ্গত তেমন নারীদের হার নিম্নরূপ-

আফগানিস্তান ও জর্ডানে ৯০%, মালিতে ৮৭%, গিনি এবং তিমুর-লেস্টে ৮৬%, লাওসে ৮১%, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে ৮০%। উন্নয়নশীল দেশগুলিতে স্বামীর ইচ্ছার প্রতি সম্মতি জানাতে অস্বীকার করা সহিংসতার বৈধতা প্রদানের একটি সাধারণ কারণ: উদাহরণস্বরূপ, তাজিকিস্তানের .৪২.৪% নারী স্বামীকে না বলে বাইরে গেলে স্ত্রীকে মারধরের ন্যায্যতা দেয়; ৬৮% দেয় যদি সে তার সাথে তর্ক করে; যদি সে তার সাথে সহবাস করতে অস্বীকার করে তবে ৪৭.৯% স্ত্রী প্রহারকে ন্যয্য বলে মনে করে।

নারী এবং মেয়ে

জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিল বিশ্বব্যাপী নারী ও শিশুদের বিরুদ্ধে সহিংসতার মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা পেয়েছে। তারা বলছে, "প্রতি তিনজন নারীর মধ্যে একজন তার জীবদ্দশায় শারীরিক বা যৌন নির্যাতনের শিকার হয়।" নারীর প্রতি সহিংসতা পশ্চিমের উন্নত দেশগুলিতে কম লক্ষ্যণীয় এবং উন্নয়নশীল বিশ্বে এটি খুবই সাধারণ ব্যাপার।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১৯২০ সালে স্ত্রীকে মারধর করা জাতীয়ভাবে অবৈধভাবে ঘোষণা করা হয়েছিল। যদিও যথাযথ হার নিয়ে বিতর্কিত হয়েছে, তবুও প্রচুর আন্তঃ-সাংস্কৃতিক প্রমাণ রয়েছে যেখানে পুরুষদের তুলনায় নারীরা পারিবারিকসহিংসতার বেশি শিকার হন। তদুপরি, এ বিষয়ে বিস্তৃত ঐকমত্য রয়েছে যে নারীরা প্রায়শই মারাত্মক ধরণের নির্যাতনের শিকার হন এবং তাদের নির্যাতক সঙ্গীটি দ্বারা আহত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে এবং এটি অর্থনৈতিক বা সামাজিক নির্ভরতা কারণে আরও বেড়ে যায়।

মহিলাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা দূরীকরণ সম্পর্কিত জাতিসংঘের ঘোষণাপত্রে (১৯৯৩) বলা হয়েছে যে "নারীর প্রতি সহিংসতা" ঐতিহাসিকভাবে নারী-পুরুষের মধ্যে অসম শক্তি সম্পর্কের বহিঃপ্রকাশ, নারীদের পূর্ণ অগ্রগতিকে রুখে দিতে যা পুরুষদের দ্বারা নারীর প্রতি আধিপত্য ও বৈষম্য সৃষ্টি করেছে এবং নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক প্রক্রিয়া যার দ্বারা নারী পুরুষদের তুলনায় অধীনস্থ অবস্থানে থাকতে বাধ্য হয় "। নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা দূরীকরণের ঘোষণাপত্রে নারীর প্রতি সহিংসতাকে তিনটি ভাগে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়েছে: পরিবারে ঘটা সহিংসতা (ডিভি), সাধারণ সম্প্রদায়ের মধ্যে তৈরি সহিংসতা এবং রাষ্ট্রের দ্বারা উপেক্ষিত বা সংঘটিত হওয়া সহিংসতা।

মহিলাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ, শাস্তি, এবং সহিংসতা নিরসন সম্পর্কিত আন্ত-আমেরিকান কনভেনশন নারীর প্রতি সহিংসতার সংজ্ঞা দেয় "লিঙ্গের উপর ভিত্তি করে যে কোনও কাজ বা আচরণ, যা নারীমৃত্যুর বা তার শারীরিক, যৌন বা মানসিক ক্ষতি করতে পারে, হোক তা সর্বজনীন বা ব্যক্তিগত ক্ষেত্রে "। একইভাবে নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা দূরীকরণের ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে, এটি নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতাকে তিনটি বিভাগে শ্রেণীবদ্ধ করেছে; যার মধ্যে একটি হল পরিবারে ভেতরে সংঘটিত সহিংসতা বা ডমেস্টিক ভায়োলেন্স (ডিভি) যা ঘরোয়া ইউনিটে বা অন্য কোনও আন্তঃব্যক্তিক সম্পর্কের মধ্যেও হতে পারে এবং সেখানে অপরাধী ব্যক্তির সঙ্গে একই বাসগৃহে থাকতেও পারে নাও পারে"।

ম্যাপুটো প্রোটোকল নারীর প্রতি সহিংসতার সংজ্ঞায়ন করতে গিয়ে একটি ব্যাপকতর সংজ্ঞা গ্রহণ করেছে: "নারীর বিরুদ্ধে সংঘটিত যেকোন কাজ যা তাদের শারীরিক, যৌন, মানসিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষতির কারণ হতে পারে বা এ জাতীয় ক্ষতির যাবতীয় হুমকি; বা শান্তিকালীন এবং সশস্ত্র সংঘাত বা যুদ্ধের পরিস্থিতিতে নারীর ব্যক্তিগত বা সামাজিক জীবনে মৌলিক স্বাধীনতার উপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা বা তা থেকে বঞ্চিতকরণ "।

ইস্তাম্বুল কনভেনশনের ৩ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে: "নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা নারীদের বিরুদ্ধে একধরণের বৈষম্যরূপে "মানবাধিকার লঙ্ঘন" হিসেবে বিবেচিত। ওপুজ বনাম তুর্কির যুগান্তকারী মামলায়, প্রথমবারের মতো মানবাধিকারের ইউরোপীয় আদালত লিঙ্গ-ভিত্তিক পারিবারিকসহিংসতাকে ইউরোপীয় কনভেনশনের আওতায় বৈষম্য হিসেবে বিবেচনা করে।

একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, ঘনিষ্ঠ সঙ্গী দ্বারা শারীরিকভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন এমন নারীদের শতকরা হার দেশ অনুযায়ী ৬৯% থেকে ১০% হয়ে থাকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সংঘটিত সহিংসতার মধ্যে ১৫ শতাংশই ঘনিষ্ঠ সঙ্গী দ্বারা সংঘটিত। সিডিসি (সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশন)র সর্বশেষ গবেষণা (২০১৭) থেকে দেখা গেছে, সব ধরনের নারী হত্যাকাণ্ডের অর্ধেকেরও বেশি সংঘটিত হয়েছে ঘনিষ্ঠ সঙ্গী দ্বারা, যাদের মধ্যে ৯৮ শতাংশই পুরুষ।

ফেমিসাইড বা নারী হত্যা সাধারণত পুরুষদের দ্বারা নারী বা মেয়েদের লিঙ্গ-ভিত্তিক হত্যা হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়, যদিও সঠিক সংজ্ঞাটি ভিন্ন। ফেমিসাইডগুলো প্রায়শই ডিভি বা পারিবারিকসহিংসতার প্রসঙ্গে দেখা যায়, যেমন অনার কিলিং বা যৌতুক হত্যার মতো ঘটনা। পরিসংখ্যানগত উদ্দেশ্যে, ফেমিসাইড দিয়ে প্রায়শই কোনও নারীকে হত্যা করা বোঝায়। ফেমাইসাইডের হার অনুসারে শীর্ষ দেশগুলি হ'ল এল সালভাদর, জামাইকা, গুয়াতেমালা, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং রাশিয়া (২০০৪ থেকে ২০০৯ সালের তথ্য অনুযায়ী)। তবে এল সালভাদর এবং কলম্বিয়াতে, যেখানে ফেমিসাইডের হার খুব বেশি, সেখানে সব নারীহত্যার মধ্যে কেবলমাত্র তিন শতাংশই বর্তমান বা প্রাক্তন ঘনিষ্ঠ সঙ্গী দ্বারা সংঘটিত হয়, যেখানে সাইপ্রাস, ফ্রান্স এবং পর্তুগালে প্রাক্তন এবং বর্তমান ঘনিষ্ঠ সঙ্গী দ্বারা ফেমিসাইডের ঘটনা ৮০ শতাংশেরও বেশি।

পুরুষ

পুরুষ ও পারিবারিকসহিংসতার গবেষণা সহিংসতার জন্য দায়ী এবং শিকার উভয় ক্ষেত্রেই পুরুষের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে এবং পাশাপাশি সহিংসতা বিরোধী কাজে পুরুষ ও ছেলেদের কীভাবে যুক্ত করা যায় সে সম্পর্কেও আলোকপাত করে। পুরুষদের বিরুদ্ধে পারিবারিকসহিংসতার মধ্যে পারস্পরিক সহিংসতা সহ শারীরিক, মানসিক এবং যৌন নির্যাতন অন্তর্ভুক্ত। সহিংসতার শিকার পুরুষ বিভিন্ন কারণে সহায়তা পেতে অনিচ্ছুক হতে পারেন। একটি গবেষণা তদন্তে এসেছে, যেসব নারী পুরুষদের শারীরিক আক্রমণ করে তারা পুলিশের গ্রেফ্তার এড়ানোর চেষ্টা করে, এমনকি পুরুষরা পুলিশের সাথে যোগাযোগ করার পরও পুলিশরা ঐ সমস্ত নারীদের সাধারণত গ্রেফতার করে না যারা তাদের পুরুষ সঙ্গীদের অত্যাচার করে। এবং এমনটি করার কারণ হচ্ছে এটা মনে করা যে, যে পুরুষ তার নারী সঙ্গী থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারে এবং নিজের পুরুষ সঙ্গী ব্যতীত অন্য কাউকে আক্রমণ না করলে নারীর সহিংসতা তেমন বিপজ্জনক কিছু নয়"। অন্য একটি সমীক্ষায় এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে "গুণগত গবেষণার জন্য কিছু সমর্থন রয়েছে যা দেখায় যে, আদালত ঘনিষ্ঠ সঙ্গী দ্বারা সহিংসতার ক্ষেত্রে লিঙ্গ অসমতার প্রতি প্রতিক্রিয়াশীল এবং অপরাধী নারী ঘনিষ্ঠ সঙ্গীকে আক্রমণকারী হিসেবে নয় ভুক্তভোগী হিসেবেই বেশি বিবেচনা করে।

বয়স গোষ্ঠী

কৈশোর ও তরুণ প্রাপ্তবয়স্ক

কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে গবেষকরা মূলত ভিন্ন ভিন্ন লিঙ্গের ককেশীয় জনগোষ্ঠীর দিকে মনোনিবেশ করেছেন। l লিখিত সূত্রগুলো ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, বিপরীত লিঙ্গভিত্তিক সম্পর্কে থাকা ছেলে এবং মেয়েউভয় দিক থেকেই ঘনিষ্ঠ সঙ্গী দ্বারা সহিংসতার শিকার হয়ে প্রতিবেদন দাখিল করার হার একই দেখা যায় বা এ ধরনের সম্পর্কে থাকা মেয়েদের ছেলেদের তুলনায় সহিংসতার শিকার হয়ে রিপোর্ত করার প্রবণতা বেশি। এলি এট আল বলছেন যে, সাধারণভাবে কৈশোর অবস্থায় ঘনিষ্ঠ সঙ্গী দ্বারা ঘটা সহিংসতাগুলোতে একই হার দেখার বিষয়টি পারিবারিকসহিংসতায় দেখা যায় না, আর এটি সম্ভবত হয়ে থাকে, যেহেতু কৈশোরকাল একটি বিশেষ উন্নয়নশীল অবস্থা এবং এর যৌন বৈশিষ্ট্যগুলো প্রাপ্তবয়স্কদের বৈশিষ্ট্যগুলো থেকে সম্পূর্ণ পৃথক। "ওয়েকারলে এবং ওল্ফ থিয়োরিজ তত্ত্ব দেন যে "কৈশোরে কালে পারস্পরিক জবরদস্তি এবং হিংসাত্মক গতিশীলতা তৈরি হতে পারে, এটি এমন একটি সময় যখন পুরুষ এবং নারী শারীরিক স্তরে প্রায় সমান হয় "এবং এই "শারীরিক সাম্যতা মেয়েদেরকে শারীরিক সহিংসতার সময় অধিক শক্তি প্রদর্শনের মঞ্জুরি দেয় যা পুরোপুরি শারীরিকভাবে পরিপক্ক একজন ব্যক্তির সঙ্গে আক্রান্ত প্রাপ্ত বয়স্ক মহিলার পক্ষে সম্ভব হয় না"। শেরি হ্যাম্বি বলেন যে, কিশোর-কিশোরী এবং অল্প বয়স্কদের মধ্যে ঘোড়া খেলা এবং মজা করা সাধারণ বিষয় এবং" একটি উঠতি গবেষণা ইঙ্গিত দিচ্ছে যে পুরুষদের তুলনায় নারী তাদের ঘনিষ্ঠ সঙ্গীর সাথে এ ধরনের হাস্যরস করে থাকে"।

যদিও সাধারণ সাহিত্যে ইঙ্গিত দিচ্ছে যে কৈশোর বয়সী ছেলে-মেয়েরা প্রায় সমান হারে আইপিভিতে জড়িত, নারীরা শারীরিক সহিংসতার কম বিপজ্জনক রূপ ব্যবহার করে (যেমন ধাক্কা দেয়া, চিমটি কাটা, চড় মারা, আচড় দেয়া, লাথি মারা), অন্যদিকে পুরুষদের মধ্যে ঘুষি মারা, শ্বাসরোধ, মারধর, পোড়ানো বা অস্ত্র দিয়ে হুমকি প্রদর্শনের প্রবণতা থাকে। পুরুষদের যৌন আগ্রাসনের প্রবণতাও বেশি, যদিও উভয় লিঙ্গই সমানভাবে তাদের সঙ্গীকে যৌন ক্রিয়াকলাপে চাপ দিতে পারে। তদুপরি, নারীদের মধ্যে ধর্ষণের অভিজ্ঞতার শিকার হওয়ার আশঙ্কা চারগুণ বেশি এবং তাদের সঙ্গীর দ্বারা মারাত্মক আঘাতের শিকার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে, বা অপব্যবহারের ফলে মানসিক সাহায্যের প্রয়োজন হয়। নারীরা আইপিভিকে তাদের পুরুষ সহযোগীদের তুলনায় মারাত্মক সমস্যা হিসাবে বিবেচনা করার সম্ভাবনা বেশি বেশি বলে মনে করেন, পুরুষরা নারী-নির্যাতক আইপিভিকে গণ্যই করেনা। ধরনের পাশাপাশি সহিংসতার প্রেরণাও লিঙ্গ অনুসারে পরিবর্তিত হয়: নারী সাধারণত আত্মরক্ষা করতে গিয়ে সহিংসতা ঘটায়, অন্যদিকে পুরুষরা শক্তি বা নিয়ন্ত্রণের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে সহিংসতা করে। গবেষণায় সমর্থিত যে, পুরুষদের তুলনায় আত্মরক্ষার বিষয়ে নারীদের মধ্যে পূর্বে ভুক্তভোগী হওয়ার বিষয়টি অপরাধ প্রবণতার পেছনে বেশি কাজ করে। অন্যান্য গবেষণা ইঙ্গিত দেয় যে, যেসব ছেলে পরিবারের সদস্য দ্বারা শৈশবে নির্যাতনের শিকার হয়েছিল তাদের দ্বারা আইপিভি অপরাধ সংঘটিত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। অন্যদিকে পরিবারের সদস্যদের দ্বারা শৈশবকালে যেসব মেয়ে নির্যাতিত হয়েছে তাদের মধ্যে মানবিকতা ও সক্রিয়তার অভাব লক্ষ্যণীয়। তবে কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে আইপিভি সংঘটিত হওয়ার সম্ভাবনা এবং শিকার হওয়ার সম্ভাবনা আলাদা হয় এবং এটি ভালভাবে বোঝাও যায় না। ২০১৮ সালে হ্যাম্বীর ৩৩টি সমীক্ষার পর্যালোচনায় এমন একটি মানদন্ড ব্যবহার করা হয় যেখানে হর্সপ্লে এবং রসিকতার বিষয়টিকে বাতিল করা হয় , বলা হয় যে পুরুষরা নারীর তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি সহিংসতার ঘটনা ঘটায়।

শিশু

পারিবারিকসহিংসতা এবং শিশু নির্যাতনের মধ্যে একটি শক্তিশালী যোগসূত্র রয়েছে। যেহেতু পারিবারিকসহিংসতা এমন ধরনের আচরণ, যেখানে ঘটনার তীব্রতা এবং মাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে,সেখানে শিশুদের শিকার হওয়ার সম্ভাবনা স্বভাবতই বেশি থাকতে পারে। পারিবারিকসহিংসতা এবং শিশু নির্যাতনের মধ্যে পরিসংখ্যান চাপা পড়ে যাওয়ার আনুমানিক হার ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ।

আজও, বেশিরভাগ দেশে তাদের পিতামাতাদের দ্বারা শিশুদের শারীরিক শাস্তি বৈধ বলে বিবেচিত, তবে পশ্চিমা দেশগুলিতে এখনও এটি অনুমোদিত তবে কতটুকু অনুমোদিত হবে সে বিষয়ে কঠোর সীমারেখা রয়েছে। পিতামাতাদের শারীরিক শাস্তি নিষিদ্ধ করার প্রথম দেশটি ছিল সুইডেন (১৯৬৬ সালে সন্তানের পশ্চাতদেশে পিতামাতার আঘাত করার অধিকার প্রথম বাতিল করা হয়) এবং এটি জুলাই ১৯৭৯ থেকে আইন দ্বারা স্পষ্টভাবে নিষিদ্ধ হয়। ২০১৬ সাল পর্যন্ত পিতামাতার শারীরিক শাস্তি ৫১ টি দেশে নিষিদ্ধ করা হয়।

সমলিঙ্গের সম্পর্ক

চিরায়তভাবে, পারিবারিকসহিংসতাকে বিপরীত লিঙ্গ ভিত্তিক পারিবারিক সমস্যা হিসাবে দেখা হয়েছে এবং সমলিঙ্গের সম্পর্কের ক্ষেত্রে সহিংসতার দিকে খুব কম আগ্রহ দেখানো হয়েছে, তবে সমকামী সম্পর্কের ক্ষেত্রেও পারিবারিক সহিংসতা দেখা দিতে পারে। এনসাইক্লোপিডিয়া অফ ভিক্টিমোলজি এন্ড ক্রাইম প্রিভেনশন স্টেটস বলছে, "বেশ কয়েকটি পদ্ধতিগত কারণে - যেমন প্রথাগত নমুনাকরণ পদ্ধতি, স্ব-নির্বাচনের অনুঘটক ইত্যাদি কারণে - সমকামী সম্পর্কের সহিংসতার মাত্রা নির্ধারণ করা সম্ভব হয় না।

উনিশটি গবেষণা নিয়ে ১৯৯৯ সালের এক বিশ্লেষণে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে "গবেষণা বলছে দিয়েছে যে লেসবিয়ানরা এবং সমকামী পুরুষরা ঠিক তাদের সঙ্গীর প্রতি সেভাবেই নির্যাতনমূলক আচরণ করে থাকে যেভাবে বিপরীত লিঙ্গভিত্তিক সম্পর্কে হয়ে থাকে। ২০১১ সালে আমেরিকার রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রগুলি তাদের ২০১০ সালের জাতীয় ঘনিষ্ঠ সঙ্গী এবং যৌন সহিংসতা বিষয়ক জরিপের ফলাফল প্রকাশ করে যাতে দেখা যায়, ৪৪% লেসবিয়ান মহিলা, ৬১% উভকামী মহিলা, এবং ৩৫% বিপরীতলিঙ্গকামী নারী তাদের জীবদ্দশায় গৃহকর্মী সহিংসতার শিকার হয়েছেন। একই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সমকামী পুরুষদের ২৬%, উভকামী পুরুষের ৩৭%, এবং ২৯% বিপরীতলিঙ্গকামী পুরুষরা তাদের জীবদ্দশায় ঘরোয়া সহিংসতার শিকার হয়েছেন। ২০১৩ সালের একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে ৪০.৪% স্ব-স্বীকৃত লেসবিয়ান এবং ৫৬.৯% উভকামী নিজের সঙ্গী দ্বারা সহিংসতার শিকার হয়েছেন বলে জানিয়েছেন। ২০১৪ সালে, জাতীয় সমীক্ষা ইঙ্গিত দিয়েছে সমকামী এবং উভকামী পুরুষদের মধ্যে ২৫ থেকে ৫০% পর্যন্ত কোথাও কোনও সঙ্গীর কাছ থেকে শারীরিক সহিংসতার মুখোমুখি হয়েছে। কিছু উৎস বলছে যে সমকামী এবং লেসবিয়ান দম্পতিরা বিপরীতলিঙ্গভিত্তিক দম্পতিদের মতো একই মাত্রায় পারিবারিকসহিংসতার মুখোমুখি হয়েছে। যেখানে অন্যান্য উৎসমতে, সমকামী, সমকামী স্ত্রীলোক এবং উভকামী ব্যক্তির মধ্যে পারিবারিকসহিংসতার হার বিপরীতলিঙ্গভিত্তিক সম্পর্কের তুলনায় বেশী কিন্তু বিপরীতলিঙ্গভিত্তিক সম্পর্কের তুলনায় তাদের ঘনিষ্ঠ সঙ্গীদের দ্বারা সহিংসতায় শিকার হয়ে প্রতিবেদন দাখিলের প্রবণতা কম। হিস্পানিক পুরুষদের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে এক সমীক্ষায় ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে সেখানে সমকামী পুরুষদের বিপরীতলিঙ্গকামী পুরুষদের তুলনায় অপরাধ করা বা পারিবারিকসহিংসতার শিকার হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে তবে উভকামী পুরুষদের ক্ষেত্রে উভয়ই ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। বিপরীতভাবে, কিছু গবেষক সাধারণত ধরে নিয়েছেন যে, সমকামী দম্পতিরা বিপরীতলিঙ্গভিত্তিক দম্পতির মতোই সমান হারে পারিবারিকসহিংসতা অনুভব করে এবং সমকামী পুরুষ দম্পতিরা পারিবারিকসহিংসতার রিপোর্ট করার ক্ষেত্রেও সতর্ক থাকে।

সমকামী এবং সমকামী নারী সম্পর্কগুলোকে কিছু জনগোষ্ঠীতে নির্যাতনের ঝুঁকি তৈরির কারণ হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে। বিশ্বের কিছু অংশের এলজিবিটি ব্যক্তিদের জন্য ডিভি থেকে খুব সামান্যই আইনী সুরক্ষা আছে, কারণ সমকামী আচরণে লিপ্ত হওয়াই "সোডমির আইন" দ্বারা নিষিদ্ধ (২০১৪ পর্যন্ত, সমকামী যৌন ক্রিয়াকলাপ ৭০ টি দেশে কারাদন্ডে দন্ডনীয় এবং আরও ৫ টি দেশে মৃত্যুর মাধ্যমে দন্ডনীয় আপরাধ) এবং এই আইনী নিষেধাজ্ঞাগুলি ডিভি দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ এলজিবিটি ভুক্তভোগীদের কর্তৃপক্ষের কাছে নির্যাতনের প্রতিবেদন করা থেকে বিরত রাখে। ২০০৩ সালের সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তের মুখোমুখি হয়ে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১৩ টি রাষ্ট্র ২০১৩ সালের সোডমি আইনকে আইনী ব্যবস্থা থেকে অপসারণ করতে অস্বীকার করেছে।

কিছু গবেষক সমকামী সম্পর্কের ব্যক্তিদের "ডাবল ক্লজেট" হিসেবে চিহ্নিত করায় বিষয়গুলি মোকাবেলায় তারা বিশেষ প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হন। মার্ক ডাব্লু লেহম্যানের ১৯৯৯ সালের কানাডার গবেষণায় বোঝা যায়, প্রতি চার দম্পতির মধ্যে প্রায় একটি দম্পতির মধ্যে মাত্রাগত সাদৃশ্য লক্ষ্যণীয়); প্রকাশ (সংবেদনশীল, শারীরিক, আর্থিক, ইত্যাদি); সহ-বিদ্যমান পরিস্থিতি (বেকারত্ব, পদার্থের অপব্যবহার, স্ব-সম্মান কম); ভুক্তভোগীদের প্রতিক্রিয়া (ভয়, অসহায়ত্বের অনুভূতি, অতি সতর্কতা); এবং থাকার কারণগুলি (প্রেম, সামলে নেয়া, সবকিছু পরিবর্তিত হবে, অস্বীকার)। ২০১৪ সালে ইমোরি বিশ্ববিদ্যালয় ওয়েবভিত্তিক জনমত জরিপের মাধ্যমে ওষুধ এবং অ্যালকোহল থেকে শুরু করে নিরাপদ-যৌনতা বিষয়ে আলোচনার মধ্য দিয়ে সঙ্গী কর্তৃক সহিংসতার ২৪ টি অনুঘটক সনাক্ত করেছে। শক্তি এবং নিয়ন্ত্রণের একটি সাধারণ বিষয় মনে হয় যে বিপরীতলিঙ্গধর্মী এবং সমকামী সম্পর্ক উভয় ক্ষেত্রেই নির্যাতনের ক্ষেত্রে কাজ করে।

একই সময়ে, উল্লেখযোগ্য পার্থক্য, স্বতন্ত্র বিষয়াদি এবং প্রতারণামূলক মিথগুলি সাধারণত উপস্থিত থাকে।লেহম্যান তার ১৯৯৭ সালের জরিপে সমকামী পুরুষ ও সমকামী নারীদের যে বৈষম্য ও আতঙ্কের মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে সেদিকে ইঙ্গিত করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে পুলিশী সেবা এবং কিছু সামাজিক পরিষেবাদি থেকে বঞ্চিত হওয়া, সমবয়সীদের সহযোগিতার অভাব, সমকামী সম্প্রদায়ের প্রতি কলঙ্ক আকর্ষণ করার ভয়, সঙ্গীদের একসাথে রাখার ক্ষেত্রে এইচআইভি / এইডস স্ট্যাটাসের প্রভাব (স্বাস্থ্যসেবা বীমা / অ্যাক্সেস বা অপরাধবোধের কারণে) ), বের করে দেয়ার হুমকি, এবং বিপরীতলিঙ্গকামী নারীদের প্রয়োজনের জন্য উপযুক্ত বা তৈরি পরিষেবাগুলির মুখোমুখি হওয়া যা সমকামী পুরুষ বা সমকামী নারীদের চাহিদা পূরণ করতে পারে না। এই পরিষেবা কাঠামোটি এলজিবিটিকিউয়ের ভুক্তভোগীতা আরো বেশি একঘরে এবং ভুল বোঝাবুঝির শিকার হবে যতটা না তারা তাদের সংখ্যালঘু মর্যাদার কারণে হয়। লেহম্যান অবশ্য বলেছিলেন যে "সীমিত সংখ্যক প্রত্যাশিত প্রতিক্রিয়া এবং প্রথাগত নমুনাকরণ পদ্ধতির কারণে ৩০ জন প্রাথমিক উত্তরদাতা এবং চূড়ান্ত ১০ জনের গভীর জরিপে পাওয়া নমুনার বাইরে তার এই কাজের সাধারণীকরণ করা সম্ভব নয়। বিশেষত, যৌন-চাপ এবং এইচআইভি / এইডস-এর স্থিতিটি সম-লিঙ্গের সহিংসতায় উল্লেখযোগ্য পার্থক্য হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে।

আন্ডারপোর্টিং বা প্রতিবেদন না করার প্রবণতা

পুরুষ এবং মহিলা উভয়ের জন্য ডিভি বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে কম প্রতিবেদনকৃত একটি অপরাধ। ২০১১ সালে ঘনিষ্ঠ সঙ্গীর সহিংসতা বিষয়ক গবেষক কো লিং চ্যানের একটি পর্যালোচনা থেকে দেখা গেছে যে, পুরুষরা পারিবারিকসহিংসতায় তাদের অপরাধ কম দেখানোর চেষ্টা করেন, আর নারীরা তাদের ভুক্তভোগী হওয়ার বিষয়টি কম উপস্থাপন করতে চান এবং সহিংসতায় নিজের অপরাধকে বাড়িয়ে বলেন। আর্থিক বা পারিবারিক নির্ভরতা, সহিংসতার স্বাভাবিকীকরণ এবং আত্ম-দোষারোপ করার প্রবণতা ভুক্তভোগী নারীদের স্বতপ্রণোদিত হয়ে প্রতিবেদন দাখিল করতে আসার সম্ভাবনাকে হ্রাস করে দেয়। বিপরীতে, পুরুষদের মধ্যে আইনি পরিণতির ভয় এবং এড়িয়ে যাবার মানসিকতা, সঙ্গীকে দোষ দেওয়ার প্রবণতা এবং তাদের নিজস্ব চাহিদা এবং আবেগের উপর অধিক গুরুত্ব দেখানোর ফলে তাদেরও স্বতপ্রণোদিত হয়ে নিজের অপরাধ স্বীকারের সম্ভাবনা হ্রাস পায়।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৮ টি সদস্য দেশ জুড়ে পরিচালিত একটি ২০১৪ সমীক্ষায় দেখা গেছে যে কেবল ১৪% মহিলা তাদের ঘনিষ্ঠ সঙ্গী দ্বারা সহিংসতার গুরুতর ঘটনার খবর পুলিশকে জানিয়েছেন। ২০০৯ সালের উত্তর আয়ারল্যান্ডে ডিভি-র একটি প্রতিবেদনে দেখা গেছে যে "প্রতিবেদন না করার প্রবণতা একটি উদ্বেগজনক বিষয় এবং সব ধরনের সহিংস অপরাধের মধ্যে গৃহ নির্যাতন সম্পর্কেই সবচেয়ে কম প্রতিবেদন করা হয়।

পুরুষ নির্যাতনের বিষয়ে সামাজিক লজ্জা থাকার কারণে, এবং স্বাস্থ্যসেবা সরবরাহকারীদের দ্বারা উপেক্ষা করার সম্ভাবনার কারণে পুরুষরা প্রতিবেদনের সময় লিঙ্গ সম্পর্কিত অতিরিক্ত বাধার মুখোমুখি হন। কোভিড ১৯-এ লকডাউনের সময়, কিছু মহিলা তাদের নির্যাতকদের সাথে তাদের বাড়ির ভিতরে ছিলেন। এসময় তাদের যাবারও কোন সুযোগ ছিল না ফলে প্রতিবেদনও কম হয়েছে। চীনে লকডাওনের সময় ৯০% পারিবারিকসহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করা বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশের পরিস্থিতিও একই রকম।

সামাজিক প্রভাব

সাংস্কৃতিক দৃষ্টিভঙ্গি

পারিবারিক সহিংসতা সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গি ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে ভিন্ন ‌এবং বিভিন্ন সংস্কৃতিতে বিভিন্ন রকম , তবে পশ্চিমের বাইরের অনেক জায়গায় ধারণাটি নিয়ে যথেষ্ট ভুল বোঝাবুঝি আছে।। কারণ এই দেশগুলোতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে স্বামী এবং স্ত্রীর সম্পর্ককে সমান হিসাবে বিবেচনা করা হয় না, বরং এমন একটি সম্পর্ক হিসেবে বিবেচিত হয় যেখানে স্ত্রীকে স্বামীর কাছে নিজেকে সমর্পণ করতে হবে। এটি কয়েকটি দেশের আইনে অনুমোদিত হয়েছে - উদাহরণস্বরূপ, ইয়েমেনে বিবাহ বিধি অনুসারে একজন স্ত্রীকে অবশ্যই তার স্বামীর আনুগত্য করতে হবে এবং তার অনুমতি ব্যতীত বাড়ি ছেড়ে যেতে পারবে না।

ভায়োলেন্স এগেইনস্ট উইমেন ইন ফ্যামিলিস এন্ড রিলেশনশিপস অনুসারে, "বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন দেশে বেশিরভাগ জনগণের মধ্যে স্ত্রীর মারধরকে ন্যায্য হিসাবে দেখা যায়, সাধারণত স্ত্রীদের যদি প্রকৃত বা সন্দেহভাজন বিশ্বাস ভঙ্গকারী হয়ে থাকে বা স্বামীর প্রতি অবাধ্য হয়ে থাকে। স্ত্রীর বিরুদ্ধে এই হিংসাত্মক কাজগুলি প্রায়শই সমাজে (পুরুষ এবং মহিলা উভয়ই) নির্যাতন হিসেবে বিবেচিত হয় না বরং স্ত্রীর উস্কানিমূলক আচরণে এমনটি ঘটে বলে মনে করা হয় এবং তাকেই দোষী হিসেবে দেখা হয়। যেখানে স্ত্রীকে মারধর করা প্রায়শই "অনুচিত" আচরণের প্রতিক্রিয়া, সেখানে অনেক স্থানে সম্মান রক্ষার্থে হত্যার মতো চরম আচরণও সমাজের উচ্চতর শ্রেণী দ্বারা অনুমোদিত হয়। এক সমীক্ষায় জর্দানের রাজধানী আম্মানের ৩৩.৪% কিশোর সম্মান রক্ষার্থে হত্যার অনুমোদন দিয়েছে। এই জরিপটি জর্ডানের রাজধানীতে পরিচালিত হয়েছিল, যা দেশের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় অনেক বেশি উদার; গবেষকরা বলেন যে "আমরা আশা করতেই পারি যে জর্ডানের আরও গ্রামীণ ও ঐতিহ্যবাহী অংশগুলিতে সম্মান রক্ষার্থে হত্যার পক্ষে সমর্থন আরও বেশি হবে"।

২০১২ সালের একটি নিউজ স্টোরিতে দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, "রয়টার্স ট্রাস্ট ল গ্রুপটি ভারতকে এই বছর নারীদের জন্য বিশ্বের অন্যতম খারাপ দেশ হিসাবে অভিহিত করেছে, অংশত যেহেতু পারিবারিকসহিংসতা সেখানে প্রায়শই লক্ষ্যণীয়। ইউনিসেফের একটি ২০১২ সালের প্রতিবেদনে দেখা গেছে যে ১৫ এবং ১৯ বছর বয়সী ৫৭ শতাংশ থেকে ভারতীয় ছেলে এবং ৫৩ শতাংশ মেয়েরা মধ্যে স্ত্রী-মারধরকে ন্যায্য বলে মনে করে"।

রক্ষণশীল সংস্কৃতিতে, অপ্রতুলভাবে পরিমিত পোশাকে পোশাক পরা একজন স্ত্রী তার স্বামী বা আত্মীয়দের হাতে মারাত্মক সহিংসতার শিকার হতে পারেন, সমাজের বেশিরভাগ এই হিংসাত্মক প্রতিক্রিয়াকে যথাযথ মনে করে: এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, আফগানিস্তানের ৬২.৮% মহিলা বলেছেন, স্বামী যদি তার স্ত্রী যদি অনুপযুক্ত জামাকাপড় পরে তবে স্বামীর তাকে প্রহার করা ন্যায়সঙ্গত।

অ্যান্টোনিয়া পারভানোভার মতে, ডিভির ইস্যু নিয়ে আইনত মোকাবেলা করার অন্যতম অসুবিধা হল বহু পুরুষশাসিত সমাজের পুরুষরা বুঝতে পারে না যে তাদের স্ত্রীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা চালানো আইন বিরোধী। বুলগেরিয়ায় ঘটে যাওয়া একটি মামলার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, "একজন স্বামীক তার স্ত্রীকে মারাত্মকভাবে মারধর করার চেষ্টা করা হয়েছিল এবং বিচারক যখন তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন তিনি কি করেছেন তা তিনি বুঝতে পেরেছেন কিনা এবং তিনি দুঃখিত কিনা তখন স্বামীটি জবাবে বলেছিলেন" কিন্তু সে তো আমার স্ত্রী "। ঐ ব্যক্তি এটুকুও বুঝতেও পারছেন না যে স্ত্রীকে মারধরের কোনও অধিকার তার নেই। " ইউএনএফপিএ বলছে: "কিছু উন্নয়নশীল দেশে নারীদের বশীভূত করে এবং ক্ষতি করে - যেমন স্ত্রীকে মারধর, সম্মানের নামে হত্যা করা, নারীর জননাঙ্গ বিয়োগ / কাটা এবং যৌতুকের মৃত্যু - ইত্যাদিকে স্বাভাবিক বিষয় হিসেবেই উপেক্ষা করা হয়।

কিছু সমাজের জনগণের মধ্যে দৃঢ় মত আছে যে পারিবারিকসহিংসতার ক্ষেত্রে শাস্তির চেয়ে পুনর্মিলন আরও বেশি উপযুক্ত এবং আইনী দায়মুক্তিরও মাধ্যম; একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে কলম্বিয়ার ৬৪% সরকারী কর্মকর্তা বলেছেন যে, ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি দ্বারা সহিংসতার একটি মামলা সমাধান করা যদি তাদের হাতে থাকত তবে তারা যে পদক্ষেপ নেবে তা হবে সংশ্লিষ্ট পক্ষকে পুনর্মিলন করতে উত্সাহিত করা।

পশ্চিমা দেশগুলি সহ অনেক সমাজে ভুক্তভোগীকে দোষারোপ করা প্রচলিত: ২০১০ সালের ইউরোব্যারোমিটার জরিপে দেখা গেছে যে ৫২% উত্তরদাতা "নারীদের উস্কানিমূলক আচরণ" কে নারীর প্রতি সহিংসতার কারণ হিসাবে দায়ী বলে একমত হয়েছেন; সাইপ্রাস, ডেনমার্ক, এস্তোনিয়া, ফিনল্যান্ড, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া, মাল্টা এবং স্লোভেনিয়ার উত্তরদাতারাই এই দাবির সাথে বেশি একমত। (এই দেশগুলির প্রত্যেকটিতে ৭০ ভাগ এর বেশি মানুষ এমন মনে করে)।

ধর্ম

পারিবারিকসহিংসতায় ধর্মের প্রভাব নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। ইহুদী, খ্রিস্টান ও ইসলাম চিরায়তভাবেই পুরুষ-শাসিত পরিবার সমর্থন করেছে এবং "নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতাকে প্রাচীন কাল থেকে সামাজিক অনুমোদন দিয়েছে।" [৮৮]

ক্যাথলিক চার্চ বিবাহ বিচ্ছেদের বিরোধিতা করার জন্য সমালোচিত হয়েছিল কেননা তা অবমাননাকর বিবাহে সহিংসতার শিকারদের ব্যক্তিকে আটকে ফেলে।[৮৯]

পারিবারিকসহিংসতার উপর ধর্মের প্রভাব সম্পর্কিত মতামতে ভিন্নতা লক্ষ্যণীয়। ফিলিস চেসলারের মতো কিছু লেখক যুক্তি দেখিয়েছেন যে ইসলাম নারীর প্রতি সহিংসতার সাথে যুক্ত, বিশেষত সম্মান রক্ষার্থে হত্যার প্রক্রিয়ায়।[৯০] অন্যান্যরা, যেমন- পাকিস্তানের আগা খান বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী সংক্রান্ত বিষয়ে বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক তাহিরা শহিদ খান যুক্তি দেন যে,ধর্মের দ্বারা নয়, বরং মূলত পুরুষের আধিপত্যবাদ এবং সমাজে নারীর হীন অবস্থান এ ধরনের সহিংসতাকে পরিচালিত করে।[৯১][৯২] অনেক পশ্চিমা দেশেই এবং ইসলাম, অভিবাসন এবং মহিলাদের বিরুদ্ধে সহিংসতার মধ্যে সম্পর্কের বিষয়ে উন্মুক্ত (যেমন মিডিয়ার মাধ্যমে) এবং রাজনৈতিক বক্তৃতা অত্যন্ত বিতর্কিতভাবে দেখা হয়।[৯৩]

প্রথা ও ঐতিহ্য

স্থানীয় রীতিনীতি এবং ঐতিহ্যগুলো প্রায়শই ডিভির নির্দিষ্ট ধরনগুলো বজায় রাখার জন্য দায়ী। এ জাতীয় রীতিনীতি ও ঐতিহ্যের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত - ছেলেকে অগ্রাধিকার দেয়া (এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলের পরিবারগুলোতে মেয়ে সন্তানের চাইতে ছেলে সন্তানের অগ্রধিকার ব্যাপকভাবে লক্ষ্যণীয়) যা হতাশাগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের দ্বারা মেয়েদের নির্যাতন ও অবহেলার সুযোগ তৈরি করতে পারে; বাল্য ও জোরপূর্বক বিবাহ; যৌতুক; "নিম্ন বর্ণ" এবং "অস্পৃশ্য" কলঙ্কের জন্ম দেয়া সামাজিক শ্রেণীবিভাজনমূলক বর্ণপ্রথা যা নারীর প্রতি বৈষম্য এবং সীমিত সুযোগের দিকে পরিচালিত করে এবং এভাবে তাদের নির্যাতনের ঝুঁকির সম্মুখীন করে তোলে; নারীদের জন্য কঠোর পোশাক কোড পরিবারের সদস্যরা সহিংসতার মাধ্যমে প্রয়োগ করা; বিবাহের আগে নারী কুমারিত্ব থাকার বাধ্যবাধকতা এবং নারী ও মেয়েদের অবাধ্যতার সাথে সম্পর্কিত সহিংসতা; ঋতুস্রাব সম্পর্কে ট্যাবু থাকার কারণে নারীরা এ সময় বিচ্ছিন্ন এবং একঘরে থাকতে বাধ্য হওয়া; নারী প্রজননতন্ত্র বিকৃতি (এফজিএম); যৌন সম্পর্কের ক্ষেত্রে বৈবাহিক যৌন অধিকারের মতাদর্শ বৈবাহিক ধর্ষণকে ন্যায়সঙ্গত করে; এবং 'পারিবারিক সম্মানে'র প্রতি গুরুত্ব দেয়া।[৯৪]

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ২০০৩-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, 'নবনধূ মূল্য' দিয়ে কেনার মতো রীতিগুলোর (যেমন কোনও পুরুষ পছন্দের নারীকে নিয়ে করার জন্য তার পরিবারকে যে অর্থ প্রদান করে), মাধ্যমে একজন পুরুষ মূলত তার স্ত্রীর যৌন অনুগ্রহ এবং প্রজনন ক্ষমতা ক্রয় করেন যা যৌনতার শর্তাদি আদেশ করার জন্য পুরুষের সামাজিকভাবে অনুমোদিত আধিপত্যকে বলীয়ান করে এবং এটি করার জন্য শক্তি প্রয়োগ করে "।[৯৫]

সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, বেশ কয়েকটি দেশে আইন প্রণীত হওয়ার সাথে সাথে নারীদের বিপন্ন করার প্রচলিত রীতিগুলি মোকাবিলার ক্ষেত্রে অগ্রগতি হয়েছে। মহিলা ও শিশুদের স্বাস্থ্যের উপর প্রভাবিত চিরায়ত অনুশীলন সম্পর্কিত আন্ত-আফ্রিকান কমিটি নামে একটি এনজিও সামাজিক মূল্যবোধ পরিবর্তনে, সচেতনতা বাড়াতে এবং আফ্রিকার নারী ও শিশুদের স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে এমন ক্ষতিকারক প্রথার বিরুদ্ধে আইন প্রণয়নের জন্য কাজ করে। কিছু দেশে আইনও প্রণীত হয়েছিল; উদাহরণস্বরূপ, ২০০৪ সালের ইথিওপিয়ার ফৌজদারী কোডে তৃতীয় অধ্যায়ে ক্ষতিকারক রীতিনীতি অনুশীলনের উলএলখ রয়েছে ক্রাইমস কমিটেড এগেইনস্ট লাইফ, পার্সন এন্ড হেল্থ থ্রু ট্র্যাডিশনাল প্র্যাকটিসেস - নামে।[৯৬] এছাড়াও, কাউন্সিল অফ ইউরোপ পারিবারিকসহিংসতা ও নারীর প্রতি সহিংসতার বিষয়টি সম্বোধন করে একটি প্রস্তাব গ্রহণ করে এবং সম্মান ও অগ্রহণযোগ্য আচরণ সংশোধনের নামে সকল সহিংসতার জন্য দায়ী সনাতন সংস্কৃতি, রীতিনীতির বিরুদ্ধে আইন গঠনের এবং তা সম্পূর্ণ প্রয়োগের জন্য রাষ্ট্রগুলোকে এ প্রস্তাব অনুমোদনের আহ্বান জানায়।[৯৭] জাতিসঙ্ঘ সহিংসতাকে উপেক্ষা করা সামাজিক রীতিনীতিগুলোকে বিলুপ্ত করার জন্য, অপধাধ হিসেবে গণ্য করার জন্য এবং সহিংসতার শিকার ব্যক্তিদের সহযোগীতে প্রদানকারী ব্যবস্থায় ইতিবাচক প্রভাব তৈরির জন্য আইন, আইন প্রয়োগকারী নীতি ও চর্চা এবং সম্প্রদায়গত কর্মকাণ্ড তৈরির মাধ্যমে সহিংসতা মোকাবেলা ও দমনের দিকনির্দেশনা সরবরাহ করতে নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতার প্রতি কার্যকর পুলিশ প্রতিক্রিয়া নিয়ে একটি হ্যান্ডবুক তৈরি করেছে।[৯৮]

যে সংস্কৃতিগুলিতে পুলিশ এবং আইনী কর্তৃপক্ষের দুর্নীতি এবং অবমাননাকর আচরণ করার খ্যাতি রয়েছে, সেখানে ডিভির ক্ষতিগ্রস্থরা প্রায়শই সাধারণ সাহায্য চাইতে অনাগ্রহী হয়।

জোরপূর্ব ও বাল্যবিবাহের সাথে সম্পর্ক

জোরপূর্বক বিবাহ এমন একটি বিবাহ যেখানে এক বা উভয় অংশগ্রহীতা তাদের নিজস্ব সম্মতি ছাড়াই বিবাহিত হয়।[৯৯] বিশ্বের অনেক জায়গায়, 'বাধ্য' এবং 'সম্মতিযুক্ত' বিবাহের মধ্যে একটি পাথক্য দাঁড় করানো প্রায়শই কঠিন: অনেক সংস্কৃতিতে (বিশেষত দক্ষিণ এশিয়া, মধ্য প্রাচ্য এবং আফ্রিকার কিছু অংশে), বিবাহগুলি পূর্বনির্ধারিত হয়, প্রায়শই কন্য সন্তান জন্মের পরপরই এমনটা ঘটে; কোনও মেয়ে তার পরিবারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে নিজের ভবিষ্যত স্বামী বেছে নেবে-এ ধারণাটি সামাজিকভাবে অগ্রহণযোগ্য - এ ধরনের বিবাহে বাধ্য করার জন্য হুমকি বা সহিংসতার প্রয়োজন হয় না, হবু বধূ স্বাভাবিকভাবেই সবকিছূ মেনে নেন কারণ তার এছাড়া তার অন্য কোন গত্যন্তরও নেই । বাল্য বিবাহের ক্ষেত্রে, যৌতুক এবং কনের মূল্য প্রদানের রীতিনীতিও এ ধরনের ঘটনায় অবদান রাখে।[১০০] বাল্য বিবাহ এমন একটি বিবাহ যেখানে একটি বা উভয় পক্ষের বয়স ১৮ বছরের কম হয় বছরের কম হয়।

জোরপূর্বক এবং বাল্য বিবাহ উচ্চ হারে পারিবারিক সহিংসতার সাথে জড়িত।[১০১][১০২] এই ধরণের বিবাহ বিবাহিত অবস্থায় সংঘবদ্ধ দাম্পত্য-সহিংসতা এবং এই বিয়ের রীতিনীতি ও ঐতিহ্যের সাথে সম্পৃক্ত সহিংসতা; উভয় ধরনের সহিংসতার সাথে সম্পর্কিত: যৌতুক ও কনে মূল্য পরিশোধ সংক্রান্ত সহিংসতা ও পাচার, বিবাহ প্রত্যাখ্যান করার জন্য সম্মান রক্ষার্থে হত্যা। । [260] [261] [262] [263]

ইউএনএফপিএ জানিয়েছে, "বাল্য বিবাহ বন্ধের নিকট সর্বজনীন প্রতিশ্রুতি থাকা সত্ত্বেও, উন্নয়নশীল দেশগুলিতে (চীন বাদে) তিনজনের মধ্যে একজনের সম্ভবত ১৮ বছর বয়স হওয়ার আগেই তাদের বিয়ে হয়ে যায়। নয়জনের মধ্যে একজন মেয়ে তাদের ১৫ তম জন্মদিনের আগেই বিবাহিত হয়।" [২4৪ ] ইউএনএফপিএর অনুমান, "২০১০ সালে ২০-২৪ বছর বয়সী ৬৭ মিলিয়নেরও বেশি মেয়ে বিবাহিত হয়েছিল, যার অর্ধেক ছিল এশিয়ায়, এবং এক-পঞ্চমাংশ আফ্রিকায়।" [২4৪] ইউএনএফপিএ বলে যে, "পরবর্তী দশকে ১৪.২ মিলিয়ন ১৮ বছরের কম বয়সী মেয়েদের প্রতি বছর বিয়ে হয়; এতে প্রতিদিন ৩৯,০০০ মেয়ে বিবাহিত হয় এবং এই প্রবণতা অব্যাহত থাকলে এটি ২০২১ সাল থেকে শুরু করে ২০৩০ সাল পর্যন্ত বছরে গড়ে ১৫,১ মিলিয়ন মেয়ের বিয়ে হবে"।[২4৪]

আইন

পারিবারিক সহিংসতাকে অপরাধ বিবেচনা করে এমন পর্যাপ্ত আইন অভাব, বা, বিকল্প আইন, যা সম্মতিজনক আচরণ নিষিদ্ধ করে, ডিভির ঘটনা হ্রাস করার ক্ষেত্রে অগ্রগতিতে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সেক্রেটারি জেনারেল বলেছেন: "এটি অবিশ্বাস্য যে একবিংশ শতাব্দীতে এসেও কয়েকটি দেশ বাল্য বিবাহ ও বৈবাহিক ধর্ষণকে উপেক্ষা জানাচ্ছে এবং অন্যরা গর্ভপাতকে অবৈধ করেছে, বিবাহের বাইরে যৌনতা এবং সমকামী যৌন ক্রিয়াকলাপকে - এমনকি মৃত্যুদণ্ডনীয় অপরাধ বলে ঘোষণা করছে।" [২5৫] ডাব্লুএইচএও-র মতে, "নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতার অন্যতম সাধারণ ধরনটি স্বামী বা পুরুষ সঙ্গী দ্বারা সম্পাদিত"। ডাব্লুএইচও উল্লেখ করে যে এই ধরনের সহিংসতা প্রায়শই উপেক্ষা করা হয় কারণ প্রায়ই "আইনী ব্যবস্থা এবং সাংস্কৃতিক নিয়মে এটি অপরাধ হিসাবে গণ্য হয় না, বরং একটি 'ব্যক্তিগত' পারিবারিক বিষয় বা জীবনের একটি সাধারণ অংশ হিসাবে বিবেচিত হয়।" [৫০] ব্যভিচারের অপরাধকে নারীদের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক সহিংসতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, কারণ এই নিষেধাজ্ঞাগুলি প্রায়শই আইন হিসেবে বা বাস্তবে, পুরুষদের আচরণ নয় বরং নারীদের নিয়ন্ত্রণ করার জন্য করা হয় এবং নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতার কর্মকাণ্ডকে যুক্তিযুক্ত করতে ব্যবহৃত হয়। [২ 266] [২77] হিউম্যান রাইটস হাই কমিশনার নাভি পিল্রলাইয়ের মতে: "কেউ কেউ যুক্তি দেখিয়েছেন এবং তর্ক করে চলেছেন যে, পারিবারিক সহিংসতাকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের ধারণাগত কাঠামোর বাইরে রাখা হয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক আইন ও মানদণ্ডের অধীনে, নারীদের অধিকার সমুন্নত রাখতে এবং বৈষম্য থেকে মুক্তি নিশ্চিত করতে লিঙ্গ নির্বিশেষে এবং পরিবারে কোনও ব্যক্তির অবস্থান নির্বিশেষে প্রতিরোধ, সুরক্ষা এবং প্রতিকার প্রদানের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের সুস্পষ্ট দায়িত্ব রয়েছে। [৫১]

পরিত্যাগের সক্ষমতা

পারিবারিক সহিংসতার শিকারদের সম্পর্ক ছেড়ে চলে যাওয়ার ক্ষমতা আরো বেশী নির্যাতন রোধের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রক্ষণশীল সম্প্রদায়গুলোতে তালাকপ্রাপ্ত নারী প্রায়শই প্রত্যাখ্যাত এবং একঘরে বোধ করেন। এই কলঙ্ক এড়াতে, অনেক নারী বিবাহবন্ধনে থাকতে এবং নির্যাতন সহ্য করাকে মেনে নেন। [[২8৮]

বৈষম্যমূলক বিবাহ এবং বিবাহবিচ্ছেদের আইনও এ ধরনের অনুশীলনের প্রসারে ভূমিকা নিতে পারে। জাতিসংঘের বিশেষ দূত রাশিদা মঞ্জুর মতে,

অনেক দেশে সম্পত্তিতে একজন নারীর প্রবেশাধিকার পুরুষের সাথে তার সম্পর্কের উপর জড়িত। যখন সে তার স্বামীর কাছ থেকে পৃথক হয় বা স্বামী মারা যায়, তখন সে তার বাড়ি, জমি, বাড়ির জিনিসপত্র এবং অন্যান্য সম্পত্তি হারাতে পারে। বিচ্ছেদ বা বিবাহবিচ্ছেদের পর সম্পত্তির সমানাধিকার নিশ্চিত করতে ব্যর্থতা নারীদের সহিংস বিবাহ ত্যাগে নিরুৎসাহিত করে, যেহেতু নারীর সামনে তখন দুটোই পথ থাকে; হয় ঘরে বসে সহিংসতা সহ্য করা নয়তো রাস্তায় ভিক্ষাবৃত্তি করা। [২1১]

বিবাহবিচ্ছেদ পেতে আইনি অক্ষমতাও পারিবারিক সহিংসতা বৃদ্ধির একটি কারণ। [২2২] কিছু সংস্কৃতিতে যেখানে পারিবারিকভাবে বিবাহের ব্যবস্থা করা হয় সেখানে একজন নারী তার স্বামীর বা পরিবার বা আত্মীয়স্বজনের সম্মতি ছাড়াই বিচ্ছিন্নতা বা বিবাহ বিচ্ছেদের চেষ্টা করলে "সম্মান" ভিত্তিক সহিংসতার শিকার হতে পারে। [২3৩] [২4৪]

কনে মূল্যের রীতিনীতি বিবাহকে আরও কঠিন করে তোলে: সেখানে যদি স্ত্রী চলে যেতে চায় তাহলে হয়ত স্বামী তার পরিবারকে দেয়া কনে মূল্য ফেরত চাইতে পারে। [[২5৫] [২ 276] [২ 277]

যুক্তরাজ্যের মতো উন্নত দেশগুলিতে পারিবারিক সহিংসতার শিকারদের বিকল্প আবাসন পেতে অসুবিধা হতে পারে যা তাদের অবমাননাকর সম্পর্কের মধ্যে থাকতে বাধ্য করতে পারে [[২ 27৮]

অনেক গৃহপালিত সহিংসতার শিকার ব্যক্তি নির্যাতক ব্যক্তিকে ছেড়ে চলে যেতে বিলম্ব করে কারণ তাদের পোষা প্রাণী রয়েছে এবং চলে গেলে পোষা প্রাণীদের কী হবে তা নিয়ে তারা চিন্তিত থাকেন। সেফ হাউসগুলিতে পোষা প্রাণীকে আরও গ্রহণযোগ্যতা দেওয়া দরকার কেননা অনেকে পোষা প্রাণী গ্রহণ করতে অস্বীকার করেন [[২9৯]

ব্যক্তি বনাম পারিবারিক এককের অধিকার

একক হিসাবে পরিবারের অধিকারের বিপরীতে পরিবারের সদস্যের স্বতন্ত্র অধিকারগুলি বিভিন্ন সমাজে উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তিত হয়। এটি এমন এক মাত্রায় প্রভাব ফেলতে পারে যেখানে সরকারও কোন পারিবারিক ঘটনা তদন্ত করতে ইচ্ছুক হতে পারে [[২৮০] কিছু সংস্কৃতিতে পরিবারের পৃথক সদস্যরা সামগ্রিকভাবে পরিবারের স্বার্থের পক্ষে প্রায় সম্পূর্ণভাবে নিজস্ব স্বার্থ ত্যাগ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। ব্যক্তিগত স্বায়ত্তশাসন বা স্বাধিকারের অযৌক্তিক দাবি সেখানে অগ্রহণযোগ্য হিসেবে নিন্দিত হয়। এই সংস্কৃতিগুলোতে পরিবার ব্যক্তির ওপর প্রাধান্য করে এবং এটি সম্মানের সংস্কৃতির সাথে যুক্ত হয়, ব্যক্তিক বা স্বতন্ত্র পছন্দ এখানে সম্প্রদায়ের ভেতরে পারিবারিক সুনাম ক্ষুন্ন করতে পারে যা পরিণতিতে চূড়ান্ত শাস্তি যেমন সম্মান রক্ষার্থে হত্যার কারণ হতে পারে। [২4৪]

অভিবাসন নীতি

কিছু দেশের অভিবাসন নীতি নাগরিকত্ব পেতে আগ্রহী ব্যক্তি তার স্পনসরের সাথে বিবাহিত কিনা তা নিয়েই জড়িত। এর ফলে ব্যক্তি সহিংস সম্পর্কের মধ্যে আটকে থাকতে পারে - এই ধরনের ব্যক্তিরা বিচ্ছিন্ন হওয়ার চেষ্টা করলে তাদের নির্বাসিত হওয়ার ঝুঁকির তৈরি হতে পারে (তাদের বিরুদ্ধে প্রতারণামূলক বিয়ে করার অভিযোগ উঠতে পারে)। [২৮১] [২৮২] [২৮৩] [২৮৪] প্রায়শই যেসব সংস্কৃতিতে নারী নিজ বিবাহ পরিত্যাগ করে ঘরে ফিরে গেলে তাদের পরিবার থেকে অসম্মানিত হয়, সেখানে তারা বিবাহিত থাকতেই পছন্দ করে আর তাই নির্যাতনের চক্রের মধ্যে আবদ্ধ থাকে [[২৮৫]

অভিবাসী সম্প্রদায়

অভিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘটিত সহিংসতার ক্ষেত্রে প্রায়শই এই সম্প্রদায়গুলিতে নিয়ন্ত্রক দেশের আইন ও নীতি সম্পর্কে খুব কম সচেতনতা থাকে। যুক্তরাজ্যের প্রথম প্রজন্মের দক্ষিণ এশীয়দের মধ্যে করা একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে ইংরেজ আইনের অধীনে অপরাধমূলক আচরণ বলতে কী বোঝায় তা সম্পর্কে তাদের খুব কম জ্ঞান ছিল। গবেষকরা আবিষ্কার করেছেন, "কোনও বিবাহের মধ্যেই যে ধর্ষণ হতে পারে এমন কোনও রকমের সচেতনতা তাদের ছিল না"। [২৮6] [২77] অস্ট্রেলিয়ায় করা একটি গবেষণায় অভিবাসী নারীদের মধ্যে যারা ঘনিষ্ঠ সঙ্গী দ্বারা নির্যাতন করা হয়েছিল এবং কোন প্রতিবেদন করেনি এমন নারীদের নমুনা নেয়া হয়েছিল; সেখানে দেখা গেছে , ১৬.৭% জানেন না ডিভি অবৈধ, এবং ১৮.৮% জানেন না যে তারা সুরক্ষা পেতে পারেন। [২৮৮]

কারণসমূহ

পারিবারিক সহিংসতার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণগুলির মধ্যে একটি হল শারীরিক বা মৌখিক নির্যাতনকে গ্রহণযোগ্য হিসেবে বিশ্বাস করা। অন্যান্য কারণগুলির মধ্যে মাদকের অপব্যবহার, বেকারত্ব, মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা, মোকাবিলার দক্ষতার অভাব, বিচ্ছিন্নতা এবং নির্যাতক উপর অতিরিক্ত নির্ভরতা অন্তর্ভুক্ত।

একটি সম্পর্কে পারিবারিক এবং আন্তঃব্যক্তিক সহিংসতার ঘটনা ঘটানোর একটি বৃহত্তর উদ্দেশ্য হ'ল ক্ষতিগ্রস্থদের উপর ক্ষমতা এবং নিয়ন্ত্রণের ভিত্তিতে সম্পর্ক স্থাপন এবং বজায় রাখা [[২৯০] [২৯১] [২৯২] [২৯৩]

মারধরকারী ব্যক্তির নৈতিকতা আইন এবং সমাজের মানদন্ডের উর্ধ্বে থাকে। [২৯৪] গবেষণা দেখায় যে নির্যাতনকারীর জন্য মূল বিষয় হল তাদের আত্ম-সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য সচেতন এবং ইচ্ছাকৃতভাবে অপরাধের সিদ্ধান্ত। [২৯৫]

যে সকল পুরুষ সহিংসতা চালায় তাদের নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য থাকে: তারা আত্মপ্রিয়, তারা ইচ্ছাকৃতভাবে সহানুভূতিশীল হয় না এবং তারা তাদের প্রয়োজনকে অন্যের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করে। [296] অপরাধী ব্যক্তি তাদের নির্যাতন ও নির্যাতনকে গ্রহণযোগ্য করার জন্য নিজেদের ক্ষমতা প্রদর্শন ও নিয়ন্ত্রণের স্বার্থপর বাসনাগুলির পরিবর্তে ভুক্তভোগীকে মনস্তাত্ত্বিকভাবে নির্যাতন করে এই বলে যে, (স্ত্রী, প্রেমিকা বা একটি মানুষ হিসাবে) তাদের ঘাটতির কারণেই সহিংসতা হচ্ছে।

সহিংসতার চক্র

নির্যাতন চক্র

লেনোর ই. ওয়াকার চার ধাপের সমন্বয়ে একটি নির্যাতন চক্রের মডেল উপস্থাপন করেছিলেন। প্রথমত, কোনও সহিংসতার ঘটনা সংঘটিত না হওয়া অবধি উত্তেজনা বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে তখন নির্যাতনমূলক পরিস্থিতি তৈরি হতে থাকে। পুনর্মিলনের পর্যায়ে, নির্যাতক দয়াশীল এবং প্রেমময় হতে পারে এবং তারপরে শান্তি বিরাজ করে। পরিস্থিতি যখন শান্ত থাকে তখন নির্যাতিত ব্যক্তি এই ভেবে আশাবাদী হয় যে, পরিস্থিতি বদলে যাবে। তারপর আবারও উত্তেজনা তৈরি হতে থাকে এবং চক্রটি আবার শুরু হয়। [[২৯৮]


আন্তঃপ্রজন্মভিত্তিক সহিংসতা

নির্যাতনকারীদের মধ্যে একটি সাধারণ দিক হল শৈশবকালে তারাও নির্যাতন প্রত্যক্ষ করেছিল, অন্য কথায়, তারা পারিবারিকসহিংসতার আন্তঃপ্রজন্ম চক্রের অংশ ছিল। [২৯৯] বিপরীতভাবে এর অর্থ এই নয় যে কোনও শিশু সহিংসতা দেখলে বা সহিংসতার শিকার হলে তারাও নির্যাতক হয়ে উঠবে [[২৮৯] নির্যাতন থামানোর জন্য আন্তঃপ্রজন্মমূলক নির্যাতনের ধারাগুলো বোঝা এবং এগুলোকে ভাঙার মধ্য দিয়ে অন্যান্য প্রতিকারের তুলনায় কার্যকরীভাবে পারিবারিকসহিংসতা হ্রাস করা সম্ভব। ২৯ 9]

শিশুদের প্রতি দৃষ্টি নিবদ্ধ করা প্রতিবেদনগুলো বলছে, জীবনের বিভিন্ন অভিজ্ঞতা পারিবারিক সহিংসতায় জড়িত হওয়ার জন্য একজন ব্যক্তির প্রবণতাকে প্রভাবিত করে (হয় শিকার হিসাবে নয়তো অপরাধী হিসেবে)। এই তত্ত্বকে সমর্থনকারী গবেষকরা পরামর্শ দিয়েছেন যে, ঘরোয়া সহিংসতার তিনটি উৎস সম্পর্কে চিন্তা করা প্রয়োজন: শৈশবের সামাজিকীকরণ, কৈশোরে যুগল সম্পর্ক সংক্রান্ত পূর্ব অভিজ্ঞতা, এবং একজন ব্যক্তির বর্তমান জীবনে চাপের মাত্রা। যে ব্যক্তিরা তাদের পিতা-মাতাকে একে অপরকে নির্যাতন করতে দেখে বা নিজেরা নির্যাতিত হয়, তারা প্রাপ্তবয়স্ককালে তাদের প্রতিষ্ঠিত সম্পর্কের মধ্যে নির্যাতনমূলক আচরণ অন্তর্ভুক্ত করতে পারে। [[300] [301] [302]

গবেষণায় দেখা যায়, যত বেশি শিশু শারীরিক শাস্তির শিকার হয়, ততই তাদের প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে ঘনিষ্ঠ সঙ্গীসহ পরিবারের সদস্যদের প্রতি হিংসাত্মক আচরণ করার সম্ভাবনা বেশি থাকে। [[303] যে সমস্ত ব্যক্তি শিশু হিসেবে শারীরিক আঘাতের শিকার হয়েছে, প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় সঙ্গীকে প্রহার করা তাদের কাছে অনুমোদনীয় এবং তাদের রাগ বেশি থাকে সেই সাথে বৈবাহিক দ্বন্দ্বের মুখোমুখিও বেশি হয়। অনেকগুলি গবেষণায় শারীরিক শাস্তিকে "বাবা-মা, ভাইবোন, সহকর্মী এবং স্বামী / স্ত্রীদের বিরুদ্ধে উচ্চ স্তরের আগ্রাসনের সাথে" সংশ্লিষ্ট পাওয়া গেছে। 05] যদিও এই সংশ্লিষ্টতা একটি কার্যকারণভিত্তিক সম্পর্ক প্রমাণ করে না, বেশ কয়েকটি অনুদৈর্ঘ্য অধ্যয়ন থেকে বোঝা যায় যে শারীরিক শাস্তির অভিজ্ঞতা পরবর্তী আক্রমণাত্মক আচরণের উপর সরাসরি কার্যকারণগত প্রভাব ফেলে। এই জাতীয় গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, শিশুদের শারীরিক শাস্তি (যেমন: সশব্দে আঘাত করা, চড় মারা বা পশ্চাতদেশে আঘাত করা) সহানুভূতি, পরার্থপরতা এবং আকাঙ্খা সংযমের মতো মূল্যবোধগুলির দুর্বল অভ্যন্তরীণকরণের সাথে ডেটিং সহিংসতা সহ আরও অসামাজিক আচরণের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়। [[306]

বিশ্বব্যাপী কয়েকটি পিতৃতান্ত্রিক সমাজে, একজন নববধূ তার স্বামীর পরিবার নিয়ে থাকেন। বাড়ীতে নতুন মেয়ে হিসাবে, তিনি পরিবারে সবচেয়ে হীন (বা সবচেয়ে নীচে অবস্থিত) অবস্থানে থাকেন, প্রায়শই সহিংসতা এবং নির্যাতনের শিকার হন এবং বিশেষত শ্বশুর-শ্বাশুড়ি দ্বারা দৃঢ়ভাবে নিয়ন্ত্রিত হন: পরিবারে পুত্রবধূদের আগমনে, শাশুড়ির মর্যাদা উন্নীত হয় এবং এখন তিনি (নিজের জীবনে প্রথমবারের মতো) অন্য কারও উপরে যথেষ্ট ক্ষমতা অর্জন করেন এবং "এই পরিবারব্যবস্থা নিজেই সহিংসতার একটি চক্র তৈরির দিকে ঝুঁক পড়ে যেখানে দীর্ঘদিন ধরে নির্যাতিইত গৃহবধূ তার নতুন পুত্রবধূর নির্যাতক শ্বাশুড়ীতে পরিণত হন "। [৩০ [] অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানাচ্ছে, তাজিকিস্তানে "শ্বাশুড়ির তরুণী স্ত্রী হিসেবে যে নির্যাতন সহ্য করেছেন নিজের পুত্রবধূর প্রতি সেই একই রকম নির্যাতন করাটা একটি প্রারম্ভিক রীতি"। ।" [৩০৮]

মাদকের অপব্যবহার

পারিবারিকসহিংসতা সাধারণত মদের অপব্যবহারের সাথে পুনরাবির্ভুত হয়। অ্যালকোহল ব্যবহার দুর্বল পারিবারিকনির্যাতিতদের দুই-তৃতীয়াংশ মদের ব্যবহারকে সহিংসতার অনুঘটক হিসেবে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে। মাঝারি মদ্যপায়ী ব্যক্তি হালকা মদ্যপায়ী এবং অমদ্যপায়ীদের চেয়ে ঘন ঘন সহিংসতায় জড়িত হয়; তবে, সাধারণত অতিরিক্ত বা অত্যধিক মদ্যপায়ী ব্যক্তি সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী এবং গুরুতর আগ্রাসনের সাথে জড়িত থাকে। শারীরিক আক্রমণগুলোর আকস্মিকতা, মাত্রা এবং তীব্রতা সবই মদ ব্যবহারের সাথে ইতিবাচকভাবে সম্পর্কিত। এক পর্যায়ে, আচরণগত বৈবাহিক মদ্যপানের চিকিত্সার পরে সহিংসতা হ্রাস পায় [[309]

জৈবিক এবং মনস্তাত্ত্বিক

এই কারণগুলির মধ্যে জেনেটিক্স এবং মস্তিষ্কের কর্মহীনতা অন্তর্ভুক্ত এবং এদের নিউরোসায়েন্স দ্বারা অধ্যয়ন করা হয়। মনস্তাত্ত্বিক তত্ত্বগুলি ব্যক্তির বৈশিষ্ট্য এবং অপরাধীর মানসিক বৈশিষ্ট্যগুলোতে মনোনিবেশ করে। ব্যক্তিত্বের বৈশিষ্ট্যগুলির মধ্যে হঠাৎ রাগে ফেটে পড়া, আবেগ নিয়ন্ত্রণে দুর্বলতা এবং নিচু আত্ম-সম্মানবোধ অন্তর্ভুক্ত থাকে। বিভিন্ন তত্ত্বে জানা যায় যে, সাইকোপ্যাথোলজি একটি উপাদান যা শিশু হিসাবে নির্যাতনের শিকার কিছু লোককে প্রাপ্তবয়স্ক হিসাবে আরও বেশি সহিংস করে তোলে। কিশোর অপরাধ এবং প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় পারিবারিকসহিংসতার মধ্যে সংযোগ পাওয়া গেছে। [৩১১]

গবেষণাগুলো পারিবারিকনির্যাতনকারীদের মধ্যে সাইকোপ্যাথোলজির স্পষ্ট উদাহরণ খুঁজে পেয়েছে [[৩১২] [৩১৩] [৩১৪] যেমন; কিছু গবেষণা বলছে যে, এই পারিবারিকসহিংসতা অধ্যায়নে অংশ নেয়া প্রায় ৮০% আদালত-রেফারড এবং স্ব-রেফার্ড পুরুষ নিরাময়যোগ্য সাইকোপ্যাথোলজি তথা সাধারণ ব্যক্তিত্বের ব্যাধি প্রদর্শন করেছেন। "সাধারণ জনগণের ব্যক্তিত্বজনিত অসুস্থতার অনুমান ১৫-২০% এর মধ্যেই বেশি হবে[...] সম্পর্কের ক্ষেত্রে সহিংসতা আরও মারাত্মক ও দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার সাথে সাথে এই পুরুষদের মধ্যে সাইকোপ্যাথোলজির সম্ভাবনা ১০০% এর কাছাকাছি পৌঁছেছে।" [৩১৫] ]

ডাটন স্ত্রীদের সাথে দুর্ব্যবহারকারী পুরুষদের একটি মনস্তাত্ত্বিক প্রোফাইল দিয়েছেন এবং যুক্তি দিয়েছেন যে, এই সমস্ত পুরুষদের বর্ডারলাইন পারর্সনালিটি রয়েছে যা জীবনের প্রথম দিকে বিকশিত হয়েছে। [৩১6] [৩১7] যদিও, এই মনস্তাত্ত্বিক তত্ত্বগুলি বিতর্কিত: গেলেস বলছেন যে, মনস্তাত্ত্বিক তত্ত্বগুলি সীমিত, এবং অন্য গবেষকরা প্রমাণ করেছেন যে কেবলমাত্র ১০% (বা তারও কম) এই মনস্তাত্ত্বিক প্রোফাইলের সাথে খাপ খায়। তিনি যুক্তি দিয়েছেন যে, ব্যক্তিত্বের বৈশিষ্ট্য, মানসিক অসুস্থতা বা সাইকোপ্যাথির চেয়ে সামাজিক কারণগুলি গুরুত্বপূর্ণ। [৩১৮] [৩১১] [20২০]

পারিবারিক সহিংসতার একটি বিবর্তনমূলক মনস্তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা হল, এটি নারীর প্রজনন নিয়ন্ত্রণ এবং যৌনসীমা নিশ্চিত করার জন্য পুরুষের উদ্যোগকে উপস্থাপন করে। বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের সাথে সম্পর্কিত সহিংসতা বিশ্বের কয়েকটি অংশে ন্যায়সঙ্গত হিসাবে দেখা হয়। উদাহরণস্বরূপ, তুরস্কের দিয়ারবাকিরের একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, ব্যভিচার করেছে এমন মহিলার জন্য উপযুক্ত শাস্তি জিজ্ঞাসা করলে, ৩৭% উত্তরদাতা বলেছিল, তাকে হত্যা করা উচিত এবং ২১% বলেছে যে, তার নাক বা কান কেটে ফেলা উচিত। একজন সঙ্গী আর্থিকভাবে বেশী সফল হলেও এ ধরনের অনুভূতি তৈরি হতে পারে। [[৩২১]

সামাজিক তত্ত্ব

সাধারণ

সামাজিক তত্ত্বগুলো অপরাধীর পরিবেশের বাহ্যিক বিষয়গুলি যেমন পারিবারিক কাঠামো, চাপ, সামাজিক শিক্ষার দিকে নজর দেয় এবং যুক্তিযুক্ত পছন্দের তত্ত্বগুলি অন্তর্ভুক্ত করে। [[৩২৩]

সামাজিক শিক্ষণ তত্ত্ব বলে যে, মানুষ অন্যের আচরণ পর্যবেক্ষণ এবং অনুকরণ থেকে শিখতে পারে। ইতিবাচক শক্তিবৃদ্ধি মধ্য দিয়ে আচরণ অব্যাহত থাকে। যদি কেউ হিংসাত্মক আচরণ পর্যবেক্ষণ করে তবে তাই অনুসৃত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। যদি কোনও নেতিবাচক পরিণতি না হয় (উদাঃ ভুক্তভোগীর আত্মসমর্পণ বা সহিংসতা স্বীকার করে নেয়া), তবে ইতিবাচক আচরণটি অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা থাকবে। [[324] [325] [326]

রিসোর্স তত্ত্বটি উইলিয়াম গুড (১৯৭১) উপস্থাপন করেছন। [৩২7] যে নারীরা অর্থনৈতিক ব্যবস্থার জন্য স্বামীর উপর সবচেয়ে নির্ভরশীল (যেমন- গৃহিণী, প্রতিবন্ধী মহিলা, বেকার) এবং তাদের বাচ্চাদের যত্ন নেবার দায়িত্বে আছেন, তারা বিবাহ ছেড়ে দিলে বাড়তি আর্থিক বোঝার ভয় পান। নির্ভরতার অর্থ হল, তাদের স্বামীর আচরণকে সামলাতে বা তার সাথে মানিয়ে নিতে তাদের খুব কম বিকল্প বা সংস্থান রয়েছে। [[328]

যে দম্পতির মধ্যে শক্তির সমান অংশীদারিত্ব থাকে সেখানে সংঘাতের ঘটনা কম হয় এবং যখন বিরোধ দেখা দেয় তখন সহিংসতার সম্ভাবনাও কম থাকে। দাম্পত্য সম্পর্কে একজন যদি নিয়ন্ত্রণ এবং ক্ষমতা আরোপ করতে চায় তখন তিনি নির্যাতনমূলক আচরণ করতে পারেন। [[329] এর মধ্যে জবরদস্তি ও হুমকি, ভয় দেখানো, মানসিক নির্যাতন, অর্থনৈতিক নির্যাতন, বিচ্ছিন্নতা, পরিস্থিতি হালকা করা এবং স্বামী / স্ত্রীকে দোষ দেওয়া, বাচ্চাদের ব্যবহার করা (তাদের হরণ করার হুমকি) এবং "অধিকর্তা" হিসাবে আচরণ করা অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।


সামাজিক চাপ

কোনও ব্যক্তির পারিবারিক পরিস্থিতিতে অতিরিক্ত চাপ থাকে তখন তাতে মানসিক চাপ বাড়তে পারে। সামাজিক চাপ, অপ্রতুল অর্থায়নের কারণে বা কোনও পরিবারে এই জাতীয় সমস্যার কারণে আরও উত্তেজনা বাড়তে পারে। [[৩১৮] সহিংসতা সবসময় মানসিক চাপের কারণে হয় না, তবে কিছু লোকের মানসিক চাপের প্রতিক্রিয়া হিসেবে এমন হতে পারে। আর্থিক ও অন্যান্য দিকগুলি সম্পর্কে বাড়তি চাপ এবং দ্বন্দ্বের কারণে দরিদ্র্য পরিবার এবং দম্পতিরা পারিবারিক সহিংসতার মুখোমুখি হতে পারে। [[৩৩৪] কেউ কেউ অনুমান করেন যে দারিদ্র্য একজন পুরুষের "সফল পুরুষত্ব" সম্পর্কে ধারণা টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করতে পারে ফলে তিনি সম্মান ও মর্যাদা হারাতে ভয় পান। একটি তত্ত্ব বলছে যে, যখন তিনি তার স্ত্রীকে অর্থনৈতিকভাবে সহায়তা করতে এবং নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে অক্ষম হন, তখন তিনি পৌরুষকে প্রকাশ করার উপায় হিসাবে নারীর প্রতি ঘৃণার প্রকাশ, মাদকের অপব্যবহার এবং অপরাধের দিকে ঝুঁকতে পারেন। [৩৩৪]

সমকামী সম্পর্ক একই ধরণের সামাজিক চাপ অনুভব করতে পারে। অধিকন্তু, সমকামী সম্পর্কের ক্ষেত্রে সহিংসতা অভ্যন্তরীণ হোমোফোবিয়া (সমকামীতার প্রতি ভয়) সাথে যুক্ত হয়েছে, যা অপরাধী এবং ভুক্তভোগী উভয়েরই ক্ষীণ আত্মসম্মানবোধ ও ক্রোধ সৃষ্টিতে অবদান করে [[৩৩৫] অভ্যন্তরীণ হোমোফোবিয়া ভুক্তভোগীদের সহায়তা চাইতে বাধা হিসাবে দেখা দেয়। একইভাবে, এলজিবিটি সম্প্রদায়ের পারিবারিকসহিংসতার ক্ষেত্রে বিপরীতলৈঙ্গিক বিষয় মূল ভূমিকা নিতে পারে। একটি সামাজিক মতাদর্শ হিসেবে এটি বলছে," বিপরীতলৈঙ্গিকতা আদর্শগত, নৈতিকভাবে উচ্চতর এবং [সমকামিতা] থেকে উত্তম", বিপরীতলৈঙ্গিকতা সংখ্যালঘুদের সেবা বাধাগ্রস্ত করতে পারে এবং যৌন সংখ্যালঘুদের মাঝে অস্বাস্থ্যকর প্রতিচিত্র তৈরি করতে পারে। আইনী ও চিকিত্সা সংস্থাগুলিতে বিপরীতলৈঙ্গিকতা বৈষম্য, পক্ষপাতিত্ব এবং যৌন দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি সংবেদনশীলতার উদাহরণগুলোতে লক্ষ্যণীয়। উদাহরণস্বরূপ, ২০০৬ সাল পর্যন্ত, সাতটি রাজ্য এলজিবিটি ব্যক্তিকে সুরক্ষামূলক আদেশের জন্য আবেদন করার ক্ষমতাটিকে স্পষ্টভাবে অস্বীকার করেছিল, যা এলজিবিটি পরাধীনতার ধারণাকে সম্প্রসারিত করে এবং ক্রোধ ও ক্ষমতাহীনতার অনুভূতির সাথে জড়িত।


শক্তি এবং নিয়ন্ত্রণ

নির্যাতনমূলক সম্পর্কগুলোতে ক্ষমতা এবং নিয়ন্ত্রণ হল নির্যাতকের জন্য শারীরিক, যৌন এবং অন্যান্য ধরণের নির্যাতন ব্যবহার করার মধ্য দিয়ে সম্পর্কের ওপর নিয়ন্ত্রণ অর্জনের মাধ্যম।। [[৩66]

পারিবারিক সহিংসতার একটি কার্যকারণগত দৃষ্টিভঙ্গি হ'ল এটি আক্রান্তের উপর ক্ষমতা ও নিয়ন্ত্রণ অর্জন বা বজায় রাখার একটি কৌশল। এই দৃষ্টিভঙ্গি ব্যানক্রফ্টের "কস্ট-বেনিফিট" তত্ত্বের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ যেখানে নির্যাতন অপরাধীকে শুধুমাত্র তার লক্ষ্যের উপর ক্ষমতা প্রয়োগের পাশাপাশি অন্যান্য উপায়েও পুরষ্কৃত করে। তিনি তার এই যুক্তির সমর্থনে প্রমাণ দিয়েছিলেন যে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নির্যাতক নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ প্রয়োগ করতে যথেষ্ট সক্ষম, কিন্তু বিভিন্ন কারণে তারা সেটি করা থেকে বিরত থাকেন। [৩৩ 33]

কখনও কখনও, একজন ব্যক্তি তাদের সঙ্গীর উপর সম্পূর্ণ ক্ষমতা এবং নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন এবং এটি অর্জনের জন্য শারীরিক সহিংসতার আশ্রয় সহ বিভিন্ন উপায় ব্যবহার করেন। অপরাধী ভুক্জীতভোগীর জীবনের সমস্ত দিক যেমন তাদের সামাজিক, ব্যক্তিগত, পেশাদার এবং আর্থিক সিদ্ধান্তগুলি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে [[]২]

শক্তি এবং নিয়ন্ত্রণের প্রশ্নগুলি বহুল ব্যবহৃত ডুলুথ ঘরোয়া আপত্তি হস্তক্ষেপ প্রকল্পের সাথে অবিচ্ছেদ্য। এটি চিত্রিত করার জন্য তারা একটি "শক্তি এবং নিয়ন্ত্রণ চক্র" তৈরি করেছে: এর কেন্দ্রে শক্তি এবং নিয়ন্ত্রণ রয়েছে, এর চারপাশে চাকার অফ (ব্যবহৃত কৌশলগুলি) রয়েছে, যার শিরোনামগুলির মধ্যে রয়েছে: জবরদস্তি এবং হুমকি, ভয় দেখানো, মানসিক নির্যাতন, বিচ্ছিন্নতা, হ্রাস করা, অস্বীকার করা এবং দোষারোপ করা, শিশুদের ব্যবহার করা, অর্থনৈতিক নির্যাতন এবং সুযোগ সুবিধা। [[338]

এই মডেলটির সমালোচকদের যুক্তি হচ্ছে যে, এটি পারিবারিক সহিংসতার সাথে মাদকের অপব্যবহার এবং মানসিক সমস্যার সাথে যুক্ত গবেষণাটিকে উপেক্ষা করে। ডিভির ধারাগুলো সম্পর্কে কিছু আধুনিক গবেষণার ফলে দেখা যায়, নারীরা সম্পর্কের ক্ষেত্রে তাদের সঙ্গীর প্রতি শারীরিকভাবে নির্যাতকে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি, যেখানে কেবলমাত্র একজন সঙ্গী হিংসাত্মক, [340] [341] যা পারিবারিক সহিংসতায় পুরুষের সুবিধাজনক অবস্থানমূলক ধারণার কার্যকারীতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। পারিবারিক সহিংসতা থেকে আঘাতের পূর্বাভাসকারীদের সম্পর্কে কিছু আধুনিক গবেষণা সূচিত করে যে, পারিবারিক সহিংসতায় আঘাতের সবচেয়ে শক্তিশালী পূবাভাস হচ্ছে, পারস্পরিকভাবে পারিবারিকসহিংসতায় অংশ নেওয়া। [৩৪০]

ননসবার্ডিনেশন বা অঅধীনস্ততা তত্ত্ব

ননসবার্ডিনেশন তত্ত্ব, যাকে কখনও কখনও আধিপত্য তত্ত্ব বলা হয়, এটি নারীবাদী আইন তত্ত্বের একটি ক্ষেত্র যা নারী ও পুরুষের মধ্যে ক্ষমতার পার্থক্যের ওপর গুরুত্ব দেয়। ননসবর্ডিনেশন তত্ত্ব এই অবস্থান গ্রহণ করে যে সমাজ এবং বিশেষ করে পুরুষরা এই শক্তির ভারসাম্যহীনতা ধরে রাখতে পুরুষ এবং নারীদের মধ্যে যৌন পার্থক্যকে ব্যবহার করে। নারীবাদী আইন তত্ত্বের অন্যান্য বিষয়ের মত নয় বরং ননসবর্ডিনেশন তত্ত্বটি নির্দিষ্টভাবে যৌন আচরণের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে, যার মধ্যে রয়েছে নারীর যৌনতা নিয়ন্ত্রণ, যৌন হয়রানি, পর্নোগ্রাফি এবং সাধারণত নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা। ক্যাথরিন ম্যাককিনন যুক্তি দিয়েছেন যে ননসবর্ডিনেশন তত্ত্ব এই বিশেষ সমস্যাগুলিকে সর্বোত্তমভাবে সম্বোধন করে কারণ তারা "প্রায় একচেটিয়াভাবে" নারীদের প্রভাবিত করে। ম্যাককিনন অন্যান্য তত্ত্বগুলির উপর যেমন অনানুষ্ঠানিক তাত্পর্য যেমন আনুষ্ঠানিক সাম্যতা, সার্বিক সাম্যতা এবং পার্থক্য তত্ত্বের পক্ষে সমর্থন করেন, কারণ যৌন সহিংসতা এবং নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতার অন্যান্য রূপগুলি "সমতা এবং পার্থক্যের" প্রশ্ন নয়, বরং "নারীদের জন্য আরও কেন্দ্রীয় অসাম্য হিসেবে বিবেচিত হয়"। যদিও নারীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরণের যৌন সহিংসতার মূল্যায়ন করার জন্য ননসোবর্ডিনেশন তত্ত্বটি ব্যাপক দৈর্ঘ্যে আলোচনা করা হয়েছে, তবে এটি পারিবারিক সহিংসতা বোঝার এবং এটি কেন ঘটে তা বোঝার একটি ভিত্তি হিসাবে কাজ করে। ননসবর্ডিনেশন তত্ত্ব পারিবারিক সহিংসতাকে নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতাকে বিস্তৃত সমস্যার উপসেট হিসাবে মোকাবেলা করেছে কারণ পারিবারিক সহিংসতার শিকার ব্যক্তিরা অতিমাত্রায় নারী। [৩৪৫]

ননসবর্ডিনেশন তত্ত্বের সমর্থকরা পারিবারিক সহিংসতার ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য এই তত্ত্বই সর্বোত্তম কাজ করার কারণ হিসেবে একাধিক প্রস্তাব দিয়েছে। প্রথমত, পারিবারিক সহিংসতার কয়েকটি পুনরাবৃত্তি হওয়া ধারা রয়েছে যা ইঙ্গিত করে যে এটি তীব্র ক্রোধ বা যুক্তিগুলোর ফল নয়, বরং এটি পরাধীনতার একটি রূপ। [৩66] এর একটি অংশে প্রমাণিত হয় যে পারিবারিক সহিংসতার শিকার ব্যক্তিদের সাধারণত বিভিন্ন পরিস্থিতিতে এবং বিভিন্ন উপায়ে নির্যাতন করা হয় [[৩66] উদাহরণস্বরূপ, ভুক্তভোগীরা মাঝে মাঝেই ঘুমানোর পর বা প্রহারকারী থেকে আলাদা হওয়ার পরে মারধরের শিকার হয় এবং প্রায়শই নির্যাতন শারীরিক নির্যাতনের পাশাপাশি আর্থিক বা মানসিক রূপ নেয়। ননসবার্ডিনেশন তত্ত্বের সমর্থকরা এই উদাহরণগুলি এই ধারণাটি দূর করতে ব্যবহার করেন যে ক্রোধ বা তীব্র তর্কের সূত্রপাতের পরিণতিতে প্রহারের ঘটনা ঘটে। এছাড়াও, প্রহারকারীরা প্রায়শই তাদের ভুক্তভোগীদের ক্ষেত্রে আপত্তিজনক এবং ইচ্ছাকৃত কৌশল ব্যবহার করে, যা "তার তার শরীরের এমন কোনও স্থানে ক্ষত করতে বা ধ্বংস করতে পারে যা তার শরীরের এমন জায়গায় আঘাত করতে পারে যা (উদাহরণস্বরূপ তার মাথার ত্বক) সে দেখায় না বা অন্যকে তার আঘাত দেখাতে বিব্রত বোধ করবে। "[৩66] প্রহারকারী এবং ভুক্তভোগী যখন শিশুদের ভাগ করে নেয় তখন এই আচরণগুলি তার পক্ষে আরও বেশি কার্যকর হতে পারে কারণ প্রহারক প্রায়শই পরিবারের আর্থিক সম্পদ নিয়ন্ত্রণ করে যা ভুক্তভোগীকে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা হ্রাস করে কেননা এটি তার সন্তানদের ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে পারে । [৩77]

ইউনিভার্সিটি অফ মিয়ামি স্কুল অফ ল এর অধ্যাপক মার্থা ম‍্যাহনি "বিচ্ছেদ অভিযান" - এ এমন একটি ঘটনাকেও ইঙ্গিত করেছেন যেখানে একজন প্রহারক ভুক্তভোগীর ওপর নির্যাতন চালিয়েছেন সে নির্যাতনমূলক সম্পর্ক থেকে বেরোনোর চেষ্টা করার কারণে - এটি একটি অতিরিক্ত প্রমাণ যে, পারিবারিকসহিংসতাকে ভুক্তভোগীকে প্রহারক ব্যক্তির কাছে অধীনস্ত করে তুলতে ব্যবহার করা হয়।[১০৩] একজন প্রহারকের ভুক্তভোগীকে সেই সম্পর্ক ছেড়ে যেতে দেয়ার অনিচ্ছা এই ধারণাটি প্রমাণ করে যে এখানে সহিংসতার মধ্য দিয়ে প্রহারক ভুক্তভোগীকে তার ইচ্ছে অনুসারে চলা অব্যাহত রাখতে বাধ্য করতে চাচ্ছে।[১০৪] ননসাবর্ডিনেশন তাত্ত্বিকরা যুক্তি দেখান যে এই সমস্ত ক্রিয়াকলাপগুলো- বিভিন্ন ধরনের অবমাননাকর আচরণ এবং ব্যবস্থা, ভুক্তভোগী শিশুদের শোষণ করা এবং বিচ্ছিন্ন হওয়াকে কেন্দ্র করে আক্রমণ ইত্যাদি শুধুমাত্র ক্রোধকে সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণের অক্ষমতাই প্রকাশ করে না বরং আরও বড় সমস্যাকে বোঝায়, যদিও রাগ এই আচরণগুলির একটি উপজাত হতে পারে।[১০৫] ননসাবর্ডিনেশন তত্ত্ব অনুসারে এই পদক্ষেপগুলোর উদ্দেশ্য হ'ল ক্ষতিগ্রস্থকে এবং কখনও কখনও পুরো পরিবারকে প্রহারক ব্যক্তির কাছে অধীনস্থ করে রাখা।[১০৬]

নির্যাতকদের দ্বারা বিভিন্ন ধরণের কৌশল অবলম্বন করে পারিবারিক সহিংসতার ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য ননসবর্ডিনেশন তত্ত্ব ব্যবহারের দ্বিতীয় যুক্তিটি হল, যে মাত্রায় পারিবারিকসহিংসতা সংঘটিত হয় তা এই ধারণাটিকে বাতিল করে যে, এটি শুধুমাত্র একজন প্রহারকের ক্রোধের ফলাফল। অধ্যাপক মাহুনি ব্যাখ্যা করেছেন যে "বড়" বা বিশেষত ভয়াবহ পারিবারিক সহিংসতা মিডিয়ায় প্রচারের ক্ষেত্রে সংবেদনশীলতার কারণে, সমাজে ঘন ঘন পারিবারিকসহিংসতা কীভাবে ঘটে তা মানুষের ধারণা করা কঠিন।[১০৭] তবে, পারিবারিক সহিংসতা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় অর্ধেক মানুষের জন্য নিয়মিত ঘটনা এবং বিস্ময়করভাবে অধিকাংশ ভুক্তভোগীই নারী।[১০৭]

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পারিবারিক সহিংসতার শিকার ব্যক্তিদের সংখ্যা বলছে যে, পারিবারিক সহিংসতা কেবল ঘনিষ্ঠ সঙ্গীদের অনিয়ন্ত্রিত ক্রোধের পরিণতি নয়। ননসবার্ডিনেশন তত্ত্বটি দাবি করছে, এটি অনিয়ন্ত্রিত রাগ নয় বরং প্রহারক দ্বারা ভুক্তভোগীকে পরাধীন করার ইচ্ছা, যা পারিবারিক সহিংসতার মাত্রা ব্যাখ্যা করে।[১০৮] ননসাবর্ডিনেশন তাত্ত্বিকরা যুক্তি দেখান যে, নারীবাদী আইন তত্ত্বের অন্যান্য রূপগুলি ঘরোয়া সহিংসতার সাধারণ বা যে মাত্রায় এটি সংঘটিত হয় তা নিয়ে কোনও ব্যাখ্যা দেয় না।

ননসাবর্ডিনেশন তত্ত্বের সমালোচকরা অভিযোগ করেছেন, এটি যে সমস্যাগুলি দেখিয়েছে তার কোনও সমাধান দেয় নি। উদাহরণস্বরূপ, ননসাবর্ডিনেশন তত্ত্বের সমর্থকরা আইনী ব্যবস্থায় পারিবারিক সহিংসতা সমাধানের জন্য নেওয়া এমন কিছু পদ্ধতির সমালোচনা করেছেন যেমন বাধ্যতামূলক গ্রেপ্তার বা মামলা নীতিমালা।[১০৯] এই নীতিগুলি পুলিশ কর্মকর্তাদের এই মামলাগুলির বিচারের জন্য সন্দেহভাজন পারিবারিকসহিংসতা অপরাধীদের গ্রেপ্তার করতে বাধ্য করে এবং বিচারকদের মামলাগুলো বিচারে বাধ্য করে ফলে আইন প্রয়োগের বিবেচনাটি সেখানে বিচ্যুত হয়।[১১০] বাধ্যতামূলক গ্রেপ্তারকে ঘিরে প্রচুর বক্তব্য রয়েছে। বিরোধীরা যুক্তি দেখায় যে এটি একটি ভুক্তভোগীর স্বাধিকারকে ক্ষুন্ন করে, অন্যান্য সংস্থানগুলোকে বাদ দিয়ে নারীর ক্ষমতায়নকে নিরুৎসাহিত করে এবং ভুক্তভোগীকে পারিবারিক নির্যাতনের আরও ঝুঁকির মুখে ফেলে। বাধ্যতামূলক গ্রেপ্তারের আইন কার্যকর করেছে এমন রাষ্ট্রগুলিতে ৬০% বেশি হত্যাকাণ্ড হয়েছে যা প্রতিবেদন দাখিলের হার হ্রাসের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ বলে প্রমাণিত হয়েছে।[১১১] এই নীতির প্রবক্তারা তর্ক করেন যে, কখনও কখনও অপধাধ বিচার ব্যবস্থা পারিবারিক সহিংসতার শিকারদের কাছে পৌঁছানোর একমাত্র উপায় এবং যদি কোনও অপরাধী জেনে যায় যে তাকে গ্রেপ্তার করা হবে, তবে এটি ভবিষ্যতে পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধ করবে।[১১২] যে ব্যক্তিরা ননসাবর্ডিনেশন তত্ত্বকে সমর্থন করেন তাদের যুক্তি হল, এই নীতিগুলি কেবলমাত্র নারীদের একটি নির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করে তাদের অধীনস্থ করার কাজ করে, এইভাবে তারা নির্যাতনের সময় যে আঘাত পেয়েছিল তাকে আরও জটিল করে তোলে।[১১৩] যাইহোক, ননসাবর্ডিনেশন তত্ত্ব নিজে এর চেয়ে ভাল বা আরও উপযুক্ত সমাধানের প্রস্তাব দেয় না, এজন্যই কিছু পণ্ডিতদের ধারণা ছিল যে নারীবাদী আইন তত্ত্বের অন্যান্য রূপগুলো পারিবারিক এবং যৌন সহিংসতার সমস্যাগুলি সমাধান করার জন্য আরও বেশি উপযুক্ত।

প্রভাব

শিশুদের উপর

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর ৩.৩ মিলিয়ন শিশু পারিবারিক সহিংসতা প্রত্যক্ষ করে। এই বিষয়টি ক্রমশই স্বীকৃত হচ্ছে যে, একটি শিশু বড় হওয়ার সময় পারিবারিক নির্যাতনের মুখোমুখি হলে তার বিকাশ ও মনস্তাত্ত্বিক ক্ষতি হয়।[১১৪] ১৯৯০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে, ক্ষতিকারক শৈশব অভিজ্ঞতা অধ্যয়ন (এসিই) প্রমাণ করেছে, যেসব শিশুরা পারিবারিক সহিংসতা এবং অন্য ধরণের নির্যাতনের শিকার হয়েছিল তাদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি বেশি ছিল।[১১৫] আবার শিশুদের যে পারিবারিকসহিংসতার মুখোমুখি হতে হয় সে সম্পর্কে সচেতনতার কারণে এটি শিশুর আবেগগত, সামাজিক, আচরণগত এবং বুদ্ধিগত বিকাশকেও প্রভাবিত করে।[১১৬]

পারিবারিক সহিংসতা যেসব আবরগজনিত এবং আচরণগত সমস্যার কারণ হতে পারে তার মধ্যে বর্ধিত আগ্রাসন, উদ্বেগ এবং একটি শিশু কীভাবে বন্ধুবান্ধব, পরিবার এবং কর্তৃপক্ষের সাথে সামাজিক হচ্ছে তার পরিবর্তন অন্তর্ভুক্ত।[১১৭] মানসিক চাপ, মানসিক নিরাপত্তাহীনতা এবং মানসিক স্বাস্থ্যের ব্যাধিগুলো ট্রমাজনিত অভিজ্ঞতার কারণে দেখা দিতে পারে।[১১৮] সমস্যা সমাধানের মতো দক্ষতার অভাবের সাথে সাথে স্কুলে আচরণগত এবং বুদ্ধিগত সমস্যা তৈরি হতে পারে।[১১৯] শৈশবকালে অপব্যবহার এবং অবহেলার অভিজ্ঞতার সাথে প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় পারিবারিকসহিংসতা ও যৌন নির্যাতনের ঘটনাগুলোর সম্পর্ক পাওয়া গেছে।[১২০]

অধিকন্তু, কিছু কিছু ক্ষেত্রে নির্যাতক শিশুর সামনে মা বা বাবাকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে নির্যাতন বা দুর্ব্যবহার করে[১২১] যা এক সাথে দু'জন ভুক্তভোগীকে ধারাবাহিকভাবে আহত করে।[১২১] শিশুরা অনেক সময় তার পিতাবা মাতার বিরুদ্ধে তীব্র সহিংসতার দেখতে পেয়ে সেখানে হস্তক্ষেপ করতে পারে, যা কোনও শিশুকে আঘাত বা মৃত্যুর মতো ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় নিয়ে যেতে পারে।[১২২] এটা দেখা গিয়েছে যে,যেসব শিশুরা তাদের মাকে নির্যাতিত হতে দেখে তাদের পোস্টট্রোম্যাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার (পিটিএসডি) এর লক্ষণগুলোতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। এই শিশুদের পরিণতি আরও মারাত্মক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে যদি তাদের নির্যাতিত মায়ের মধ্যে পোস্টট্রোম্যাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার (পিটিএসডি) দেখা দেয় এবং সন্তানের সচক্ষে সহিংসতা দেখার অভিজ্ঞতা পরবর্তী মানসিক অবস্থায় সহযোগীতা করার জটিলতার জন্য তিনি কোন ধরনের চিকিৎসাও গ্রহণ করেন না ।[১২৩]

শারীরিক

আঁচড়, ভাঙ্গা হাড়, মাথায় আঘাত, ক্ষত এবং অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ হল পারিবারিক সহিংসতাজনিত ঘটনার তীব্র প্রভাব যেগুলোর জন্য চিকিৎসকের যত্ন এবং হাসপাতালে ভর্তি প্রয়োজন।[১২৪] কিছু দীর্ঘস্থায়ী স্বাস্থ্য অবস্থার সাথে পারিবারিকসহিংসতার ভুক্তভোগীদের সম্পৃক্ততা রয়েছে যেমন- বাত, তীব্র তলপেট বেদনা, দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা, শ্রোণী ব্যথা, আলসার এবং মাইগ্রেন সমস্যা।[১২৫] পারিবারিকসহিংসতার সম্পর্কের সময় যারা গর্ভবতী থাকে তাদের গর্ভপাত, সময়ের আগে প্রসব বেদনা, ভ্রূণের আঘাত বা মৃত্যু ইত্যাদি ঝুঁকির সম্ভাবনা বেশী থাকে।[১২৬]

নতুন গবেষণায় বলা হয়, পারিবারিক সহিংসতা ও সব ধরনের নির্যাতনের সম্মুখীন হওয়ার সাথে দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতার শক্তিশালী যোগাযোগ রয়েছে।[১২৭] এ সংক্রান্ত সবচেয়ে শক্তিশালী প্রমাণ পাওয়া যায় অ্যাডভার্স চাইল্ডহুড এক্সপেরিয়েন্স স্টাডি থেকে যা নির্যাতন ও অবহেলা মাঝে থাকার সঙ্গে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে উচ্চ হারে দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতা, বেশি ঝুঁকিপূর্ণ স্বাস্থ্য আচরণ এবং সংক্ষিপ্ত জীবনকালের পারস্পরিক সম্পর্ক রয়েছে।[১২৮] ১৯৯০ এর দশকের প্রথম থেকেই শারীরিক স্বাস্থ্য এবং নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতার মধ্যকার যোগসূত্রের প্রমাণ জমে আসছে।[১২৯]

এইচআইভি / এইডস

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে যে, অবমাননাকর সম্পর্কে থাকে নারীদের মধ্যে এইচআইভি / এইডস-এর ঝুঁকিতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেশি। ডাব্লুএইচও বলছে, সহিংস সম্পর্কে থাকা নারীদের জন্য তাদের সঙ্গীর সাথে নিরাপদ যৌন ব্যবস্থা তৈরিতে সমস্যা হয়, প্রায়শই যৌনতা করতে তারা বাধ্য হয় এবং যখন তারা এইচআইভি সংক্রামিত হতে পারে বলে মনে করে তখন উপযুক্ত পরীক্ষার ব্যবস্থা চাইতেও সমস্যা হয়।[১৩০] রুয়ান্ডা, তানজানিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ভারত থেকে এক দশকের ক্রস-সেকশনাল গবেষণায় ধারাবাহিকভাবে সঙ্গী কর্তৃক সহিংসতার শিকার হওয়া নারীদের এইচআইভিতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি পাওয়া গেছে।[১৩১] ডব্লিওএইচও বলছে:[১৩০]

ঘনিষ্ঠ সঙ্গী কর্তৃক সহিংসতা বন্ধ এবং নারী ও মেয়েদের মধ্যে এইচআইভি / এইডসের ঝুঁকি কমানো উভয়েরই বাধ্যবাধকতা তৈরি হয়েছে। নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা এবং এইচআইভি / এইডস-এর মধ্যে সংযোগের প্রমাণগুলি হাইলাইট করে যে এখানে দুটো বিষয়েরই প্রত্যক্ষ এবং অপ্রত্যক্ষভাবে যোগাযোগের ব্যবস্থা রয়েছে।

পারিবারিক সহিংসতার ক্ষেত্রে এইচআইভি / এইডস দ্বারা সমকামী সম্পর্কগুলি একইভাবে প্রভাবিত হয়। হেইন্টজ এবং মেলান্দেজের গবেষণায় দেখা গেছে যে "লিঙ্গের উপর নিয়ন্ত্রণের অনুভূতি হ্রাস, সহিংসতার ভয়, এবং অসম শক্তি বিতরণ ..." এর কারণগুলির কারণে সমকামী ব্যক্তিদের নিরাপদ লিঙ্গের বিষয়টি লঙ্ঘন করতে অসুবিধা হতে পারে।[১৩২] যারা এই গবেষণায় সহিংসতার কথা জানিয়েছেন তাদের প্রায় ৫০% জোরপূর্বক যৌন অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন, যার মধ্যে কেবল অর্ধেকই নিরাপদ যৌন ব্যবস্থা ব্যবহারের কথা জানিয়েছেন। সুরক্ষিত যৌনতার প্রতিবন্ধকতাগুলির মধ্যে নির্যাতনের ভয় এবং নিরাপদ-যৌন অনুশীলনের ক্ষেত্রে প্রতারণা অন্তর্ভুক্ত। হেইন্টজ এবং মেলান্দেজের গবেষণা শেষ পর্যন্ত এই সিদ্ধান্তে পৌঁছে যে, সম-লিঙ্গের সম্পর্কের ক্ষেত্রে যৌন-নির্যাতন এইচআইভি / এইডস সংক্রমণের জন্য একটি বড় উদ্বেগ কারণ হয়ে দাঁড়ায় কেননা যা নিরাপদ যৌনতার সম্ভাবনা হ্রাস করে। তদুপরি, এই ঘটনাগুলি নিরাপদ-যৌন আলোচনা ঘিরে এবং কারো যৌনবাহিত রোগ আছে বা এসটিডি স্ট্যাটাস জেনে এ সংক্রান্ত অতিরিক্ত ভয় ও কলঙ্ক সৃষ্টি করে।[১৩৩]

মানসিক

ভুক্তভোগীদের মধ্যে যারা এখনও তাদের নির্যাতক ব্যক্তির সাথে আছেন তারা সাধারণত উচ্চ পরিমাণে চাপ, ভয় এবং উদ্বেগের সাথে বেঁচে থাকেন। তাদের হতাশাগুলোও সাধারণ, কারণ ভুক্তভোগীদের 'উস্কানিমূলক' আচরণের জন্য দোষী মনে করা হয় এবং প্রায়শই তীব্র সমালোচনার শিকার হতে হয়। জানা গেছে যে, ভুক্তভোগীদের ৬০ ভাগ সম্পর্কের অবসানের সময় বা পরে সনাক্তযোগ্য হতাশায় ভোগেন এবং তাদের মধ্যে আত্মহত্যার ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে। যারা মানসিকভাবে বা শারীরিকভাবে প্রায় আঘাতপ্রাপ্ত হন তারাও অযোগ্যতার বোধের কারণে হতাশাগ্রস্ত হন। এই অনুভূতিগুলি প্রায়শই দীর্ঘমেয়াদে অব্যাহত থাকে এবং আত্মহত্যা এবং অন্যান্য আঘাতজনিত লক্ষণগুলির উচ্চ ঝুঁকির কারণে অনেকেই থেরাপি গ্রহণ করেন বলে জানা যায়।

হতাশা ছাড়াও, ঘরোয়া সহিংসতার শিকাররা সাধারণত দীর্ঘমেয়াদী উদ্বেগ এবং আতঙ্কেরও সম্মুখীন হন এবং অত্যধিক উদ্বেগজনিত ব্যাধি এবং আতঙ্কজনিত ব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। পারিবারিক সহিংসতার সর্বাধিক উল্লেখিত মানসিক প্রভাবটি হ'ল পোস্টট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার (পিটিএসডি)। পিটিএসডি (ভুক্তভোগীদের অভিজ্ঞতা অনুসারে) ফ্ল্যাশব্যাক, অনধিকারের চিত্র, অতিরঞ্জিত আকস্মিক প্রতিক্রিয়া, দুঃস্বপ্ন এবং নির্যাতনের সাথে সম্পর্কিত যে কারণগুলো এড়ানোর দ্বারা চিহ্নিত করা হয়। [১৩৪]গবেষণায় ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে, শিশু এবং অল্প বয়স্ক শিশুদের মা'দের উপর পারিবারিক সহিংসতার প্রভাব এবং এ সংক্রান্ত মনঃশারিরীক অসুস্থতাকে বিবেচনা করা গুরুত্বপূর্ণ। বেশ কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে যে মাতৃকেন্দ্রিক আন্তঃব্যক্তিক সহিংসতা সম্পর্কিত পোস্টট্রোম্যাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার (পিটিএসডি), একজন মানসিক আঘাতপ্রাপ্ত মায়ের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা সত্ত্বেও, পারিবারিক সহিংসতা এবং অন্যান্য ট্রমাজনিত ঘটনাগুলির প্রতি তাদের সন্তানের প্রতিক্রিয়াতে হস্তক্ষেপ করতে পারে। [১৩৫][১৩৬]

অর্থনৈতিক

ভুক্তভোগীরা তাদের নির্যাতক সঙ্গীকে ছেড়ে চলে যাবার পর, তারা নির্যাতনের শিকার হতে হতে কতটা স্বাধীনতা হারিয়ে ফেলেছে এই বাস্তবতার মুখোমুখি হয়ে হতবাক হয়ে যেতে পারে। অর্থনৈতিক নির্যাতন এবং বিচ্ছিন্নতার কারণে, ভুক্তভোগীর কাছে সাধারণত খুব কম অর্থ থাকে আবার সাহায্যের জন্য নির্ভরযোগ্য মানুষও খুব কম থাকে। এটি ডিভি'র শিকারদের সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা হিসাবে দেখা গেছে এবং সবচেয়ে শক্তিশালী কারণ যা তাদের নির্যাতক সঙ্গীকে ছেড়ে যাওয়া থেকে নিরুৎসাহিত করতে পারে।[১৩৭]

আর্থিক সংস্থানগুলির অভাব ছাড়াও, ডিভির ক্ষতিগ্রস্থদের প্রায়শই বিশেষ দক্ষতা, শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণের অভাব হয় যা লাভজনক চাকুরি খুঁজে বের করার জন্য প্রয়োজনীয় এবং হয়ত প্রতিপালনের জন্য তার একাধিক শিশুও থাকতে পারে। ২০০৩ সালে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৩৬টি বড় বড় শহরে ডিভিকে তাদের অঞ্চলে গৃহহীনতার অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছে।[১৩৮] আরও জানা গেছে যে ডিভি সম্পর্ক ত্যাগের কারণে প্রতি তিনজন নারীর মধ্যে একজন গৃহহীন। যদি কোনও ভুক্তভোগী ভাড়া দিয়ে আবাসন সুরক্ষিত করতে সক্ষমও হন তবে সম্ভবত তার অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সে অপরাধের জন্য "শূন্য সহনশীলতা" নীতি থাকবে আর এই নীতিগুলো তাদের ভুক্তভোগী (অপরাধী নয়) হওয়া সত্ত্বেও সহিংসতার শিকার হয়ে ওঠার কারণ হতে পারে।[১৩৮] যদিও ডিভি ভুক্তভোগীদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র এবং সম্প্রদায়গত ব্যবস্থার সংখ্যা অনেক বেড়েছে কিন্তু এই সংস্থাগুলিতে প্রায়শই গুটি কয়েক কর্মচারী থাকে আর সাহায্যের সন্ধানে ভুক্তভোগী থাকে শত শত ফলে অনেক ক্ষতিগ্রস্থই প্রয়োজনীয় সহায়তা পান না।

পারিবারিক সহিংসতায় ভোগা নারী ও শিশুরা পেশাগত বর্ণবৈষম্যের শিকার হয়; তারা সাধারণত কাঙ্ক্ষিত পেশায় প্রবেশাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়।[১৩৯] নির্যাতক সঙ্গী পেশার সুযোগ সীমাবদ্ধ করে দিতে পারে এবং একটি পেশাগত অকার্যকর পরিবেশ তৈরি করতে পারে যা সন্তোষজনকভাবে প্রতিদিনের কার্য সম্পাদন করার ক্ষেত্রে কম আত্ম-মূল্য এবং দুর্বল আত্মক্ষমতার অনুভূতিগুলিকে শক্তিশালী করে তোলে।[১৩৯] তাছাড়া, কার্যকরী লোকসান, প্রয়োজনীয় কর্ম দক্ষতা বজায় রাখতে অক্ষমতা এবং কাজের জায়গার মধ্যে কাজ করতে অক্ষমতা দ্বারা কাজে প্রভাব পড়ে। প্রায়শই ভুক্তভোগীরা অন্যান্য সম্পর্কগুলি থেকে খুব দূরে বিচ্ছিন্ন থাকে যেমন খুব কম বা একেবারে বন্ধু না থাকা। এটিও নির্যাতক ব্যক্তির নিয়ন্ত্রণ আরোপের অন্যতম একটি পদ্ধতি।[১৪০]

সাড়াপ্রদানকারীদের উপর প্রভাব

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে করা একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, ১৯৯৬ থেকে ২০০৯ সালের মধ্যে ৭৭১ জন অফিসার হত্যার মধ্যে ১০৬ টি হত্যাকান্ড পারিবারিক সহিংসতায় হস্তক্ষেপের সময় ঘটেছিল।[১৪১] এর মধ্যে, ৫১% ঘটনা, অপ্ররোচিতভাবে বা হঠাৎ সংঘটিত হয়েছিল অর্থাৎ সন্দেহভাজনদের সাথে অফিসারের যোগাযোগ হওয়ার আগে ঘটেছিল। যোগাযোগের পরে আরও ৪০% ঘটেছিল এবং অন্যান্যগুলো কৌশলগত পরিস্থিতিতে ঘটেছিল (কাউকে জিম্মি করে এবং বাধা পার হওয়ার চেষ্টা করার সময় ঘটেছিল)।[১৪২] এফবিআইয়ের লাইওকা সিস্টেম পারিবারিক সহিংসতার প্রতিক্রিয়াজনিত অফিসারদের মৃত্যুকে বিভিন্ন বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি অনুসারে শ্রেণীবদ্ধ করেছে যার মধ্যে "সরাইখানায় মারামারি, গ্যাং বা দলগত বিশৃঙ্খলা এবং ব্যক্তির অস্ত্রের আস্ফালন", ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত যা এতে জড়িত ঝুঁকি সম্মন্ধে ভুল ধারণা জাগিয়ে তুলেছে।[১৪৩][১৪৪]

নির্যাতনের শিকারদের গল্প শোনার গুরুতরতা ও তীব্রতার কারণে, পেশাদার ব্যক্তিগণ (সমাজকর্মী, পুলিশ, পরামর্শদাতা, চিকিত্সক, অ্যাডভোকেটস, চিকিৎসক পেশাজীবীগণ) গৌন বা ভিকারিয়াস ট্রমার ঝুঁকির সম্মুখীন হন, যার ফলে সাড়া প্রদানকারী ব্যক্তি নির্যাতনের ভুক্তভোগীর অভিজ্ঞতা শোনার পর একই রকম মানসিক আঘাতজনিত লক্ষণের মুখোমুখি হন। গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, পেশাজীবীদের মধ্যে যারা ভিকারিয়াস ট্রমার শিকার হন তারাও অতিরঞ্জিত আকস্মিক প্রতিক্রিয়া, অতিরিক্ত উদ্বিগ্নতা, দুঃস্বপ্ন এবং বিভ্রান্তিকর চিন্তার লক্ষণ দেখান যদিও তারা ব্যক্তিগতভাবে কোনও ট্রমা অনুভব করেনি এবং পিটিএসডি'র চিকিৎসাযোগ্য অবস্থায়ও তারা পৌঁছান না।

ব্যবস্থাপনা

পারিবারিক সহিংসতা নিরসনের প্রক্রিয়াটি চিকিৎসা পরিষেবা, আইন প্রয়োগ[১৪৫][১৪৬], পরামর্শ প্রদান, এবং অন্যান্য প্রতিরোধ ও হস্তক্ষেপের মাধ্যমে হতে পারে। পারিবারিক সহিংসতায় অংশগ্রহণকারীদের চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে; যেমন-পারিবারিক চিকিৎসক বা অন্যান্য প্রাথমিক যত্ন প্রদানকারী[১৪৭] বা জরুরী কক্ষের চিকিৎসক দ্বারা পরীক্ষা করা।[১৪৮]

কাউন্সেলিং পারিবারিক সহিংসতার প্রভাব নিরসনের আরেকটি উপায়। নির্যাতনের শিকার ব্যক্তির জন্য, কাউন্সেলিংয়ে উপস্থিতির মূল্যায়ন,[১৪৯] নির্যাতনের মাত্রা ও ধরণগুলো অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।[১৪৯] প্রাণঘাতী মূল্যায়ন এমন একটি সরঞ্জাম যা কোনও ক্লায়েন্টের চিকিত্সার সর্বোত্তম কোর্স নির্ধারণে সহায়তা করার পাশাপাশি ক্লায়েন্টকে তাদের সম্পর্কের ক্ষেত্রে বিপজ্জনক আচরণ এবং আরও সূক্ষ্ম নির্যাতন সনাক্ত করতে সহায়তা করে।[১৫০] পারিবারিকসহিংসতায় হত্যাচেষ্টা শিকার ভুক্তভোগীদের উপর একটি গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে মাত্র দেড় ভাগ তাদের নির্যাতক সঙ্গী তাদের হত্যা করতে সক্ষম বুঝতে পেরেছিল, কারণ অনেক পারিবারিক সহিংসতার শিকাররা তাদের পরিস্থিতির প্রকৃত গুরুত্বকে হ্রাস করে দেখে।[১৫১] আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হ'ল সুরক্ষা পরিকল্পনা, যা ক্ষতিগ্রস্থদের আসন্ন বিপজ্জনক পরিস্থিতির জন্য পরিকল্পনা করার সুযোগ দেয় এবং তারা অপরাধীর সাথে থাকুন বা না থাকুন, তা কার্যকরী হয়।

অপরাধী ব্যক্তিও ভবিষ্যতের পারিবারিক সহিংসতার ঝুঁকি হ্রাস করতে,[১৫২][১৫৩] অথবা সহিংসতা বন্ধ করতে বা এর ফলে হওয়া ক্ষতি থেকে পুনরুদ্ধার করতে কাউন্সিলিং এর ব্যবহার করতে পারে।[১৫৪] সাধারণত, দণ্ডিত বা স্ব-উল্লেখকারী অপরাধীরা ঘনিষ্ঠ সঙ্গীর প্রতি সহিংসতায় নিজেদের জন্য কর্মসূচি গ্রহণ করে। এগুলি একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রতি সপ্তাহে এক বা দুটি ঘন্টা একটি গ্রুপ বিন্যাসে বিতরণ করা হয়। প্রোগ্রামের প্রচারকরা প্রাপ্তবয়স্কদের শিক্ষা-স্টাইলের মডিউলগুলির একটি পাঠ্যক্রমের মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীদের গাইড করে, যা বিভিন্ন থেরাপিউটিক পদ্ধতির উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে তবে মূলত জ্ঞানীয় আচরণগত থেরাপি এবং মানসিক শিক্ষা প্রদান করা হয়। এই প্রোগ্রামগুলির কার্যকারিতা নিয়ে বিতর্ক আছে। যদিও অপরাধীদের কিছু (প্রাক্তন) অংশীদাররা তাদের অবস্থার উন্নতি দেখতে পেয়েছে আবার, অন্যরা তা পায়নি এবং সেখানেও কিন্তু ক্ষতি করার ঝুঁকি তৈরি হয়।[১৫৫]

যূথবদ্ধ কাজের ব্যবহারের পাশাপাশি, এমন অন্যান্য পন্থাও রয়েছে যা সহিংসতা বন্ধ করতে এবং ক্ষতিগ্রস্থদের সুরক্ষা এবং সম্মান ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করার জন্য স্বতন্ত্র এবং সম্মিলিত কথোপকথনকে সমন্বিত করে।[১৫৬]

পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধের উপায় হিসেবে প্রতিরোধ এবং হস্তক্ষেপের মধ্যে নিরাপদ আশ্রয়, সঙ্কট হস্তক্ষেপ, উকিল এবং শিক্ষা এবং প্রতিরোধের কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। পারিবারিক সহিংসতার ক্ষেত্রে সম্প্রদায়গত স্ক্রিনিং বা আশ্রয়ের ব্যবস্থা পশু নির্যাতন, স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা, জরুরী বিভাগ, আচরণগত স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এবং আদালত ব্যবস্থার সম্পর্কিত বিষয়গুলোতে আরও নিয়মতান্ত্রিক হতে পারে। পারিবারিক সহিংসতার স্ক্রিনিংয়ের সুবিধার্থে মোবাইল অ্যাপ্লিকেশানের মতো সরঞ্জামের বিকাশ করা হচ্ছে।[১৫৭][১৫৮] ডুলুথ মডেল বা গৃহ নির্যাতন হস্তক্ষেপ প্রকল্পটি নারীদের বিরুদ্ধে পারিবারিক সহিংসতা হ্রাস করার জন্য তৈরি একটি কর্মসূচি,[১৫৯] যা ঘরোয়া সহিংসতার সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে গৃহীত বিভিন্ন সংস্থার ক্রিয়াকলাপকে সমন্বয় করে ডিজাইন করা প্রথম বহুমুখী একটি কর্মসূচি।[১৬০]

পারিবারিক সহিংসতার হটলাইনগুলো অবমাননাকর সম্পর্কের ক্ষেত্রে পরামর্শ, সহায়তা এবং তথ্য পরিষেবা সরবরাহ করে।

প্রতিরোধ

ডিভি প্রতিরোধ বা হ্রাস করার চেষ্টা করার জন্য বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার করা হচ্ছে। যে কৌশলটি কার্যকর করা হচ্ছে তার কার্যকারিতা মূল্যায়ন করা গুরুত্বপূর্ণ।[১৬১]

পারিবারিক সহিংসতা যাতে আইনের আওতায় আসে তা নিশ্চিত করার জন্য আইনের সংস্কার করা জরুরি। এটি বিদ্যমান আইন যা নারীদের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক আচরণ করছে তাকে বাতিল করে দিতে পারে: ডাব্লুএইচএও-র মতে, "যখন আইন স্বামীদের স্ত্রীদের শারীরিকভাবে শৃঙ্খলাবদ্ধ করার অনুমতি দেয়, তখন ঘনিষ্ঠ সঙ্গী কর্তৃক সহিংসতা রোধে একটি কর্মসূচী প্রয়োগ করা খুব কম প্রভাব ফেলতে পারে"।[১৬২] বিবাহের আইনগুলোও গুরুত্বপূর্ণ, "তাদের [নারীদের] স্বাধীনভাবে একটি বিবাহের ক্ষেত্রে প্রবেশ করতে বা এটি ত্যাগ করতে, আর্থিকভাবে লাভবান হতে এবং সম্পত্তি মালিকানাধীন ও পরিচালনা করতে সক্ষম হওয়া উচিত"।[১৬২] যৌতুক ও কনে মূল্যের আদান-প্রদান বাতিলকরণ বা সীমাবদ্ধকরণ এবং ডিভি সম্পর্কিত আইনী সিদ্ধান্তের উপর এই লেনদেনগুলির প্রভাবের তদন্ত করাও গুরুত্বপূর্ণ। ইউএন উইমেন বলেছে, আইনে এটি নিশ্চিত করা উচিত যে "বৈবাহিক ধর্ষণ সহ পারিবারিকসহিংসতার একজন অপরাধী এই সত্যটি ব্যবহার করতে পারবেন না যে তিনি পারিবারিক সহিংসতার পক্ষে নিজের আত্মরক্ষার জন্য এ কথা বলতে পারবেন না যে তিনি কনে মূল্য দিয়েছিলেন"।[১৬৩]

লৈঙ্গিক শিষ্টতা যেভাবে নারীকে হীন হিসেবে প্রকাশ করে তাও ঘনিষ্ঠ সঙ্গী কর্তৃক নির্যাতনের দিকে পরিচালিত করতে পারে। ডাব্লুএইচও বলছে, " পুরুষতন্ত্র এবং নারীত্বের মধ্যে নির্মিত ভেদরেখাকে বাতিল করা এবং বৈষম্যকে সমর্থন করে এমন কাঠামোগত কারণগুলোকে নির্মূল করা ঘনিষ্ঠ সঙ্গী কর্তৃক এবং যৌন সহিংসতা রোধে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে।"[১৬৪]

রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রগুলির মতে, "ঘরোয়া সহিংসতা রোধে একটি মূল কৌশল হল ব্যক্তি, সম্প্রদায় এবং সামাজিক স্তরে পরিবর্তনের মাধ্যমে সম্মানজনক, অহিংস সম্পর্কের প্রসার ঘটানো।"[১৬৫]স্কুল-ভিত্তিক প্রোগ্রামগুলোর মতো প্রাথমিক হস্তক্ষেপ কর্মসূচি ডেটিং সহিংসতা প্রতিরোধ করার জন্য কার্যকর।[১৬২] হিংসাত্মক বাড়িতে বেড়ে ওঠা শিশুদের মনে হতে পারে যে, এই ধরনের আচরণ জীবনের একটি সাধারণ অঙ্গ, তাই এই শিশুদের মধ্যে উপস্থিত থাকার সময় এই ধরনের মনোভাবগুলিকে চ্যালেঞ্জ করা গুরুত্বপূর্ণ।[১৬৬]

জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ১৬ বিশ্বব্যাপী প্রচার এবং কার্যকর প্রতিষ্ঠানের দাবির মাধ্যমে ঘরোয়া সহিংসতাসহ সকল প্রকার সহিংসতার অবসান ঘটানোর লক্ষ্য গ্রহণ করেছে।[১৬৭] উন্নয়নশীল দেশ ও অঞ্চলগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে বিশ্বব্যাপী এই এসডিজি লক্ষ্যকে এগিয়ে নিতে ২০১৬ সালে ইউএন-ইইউ স্পটলাইটের যৌথ উদ্যোগটি চালু করা হয়েছিল।[১৬৮] স্পটলাইট উদ্যোগটি সকল বাস্তবায়নকারি অংশীদারদের দ্বারা গৃহীত হয়েছে যেখানে বাস্তবায়নকারী এবং লক্ষ্যযুক্ত উভয় সমাজে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অগ্রগতির পক্ষে বিষয়টি জটিল - জাতিসংঘ, ইইউ এবং কাজাখস্তান এবং আফগানিস্তান এক্ষেত্রে প্রভাব ফেলতে পেরেছিল।[১৬৮]

তথ্যসূত্র

  1. McQuigg, Ronagh J.A. (২০১১-০৪-০৬)। International Human Rights Law and Domestic Violence। Routledge। পৃষ্ঠা rom the original on May 15, 2016, This is an issue that affects vast numbers of women throughout all nations of the world. [...] Although there are cases in which men are the victims of domestic violence, nevertheless 'the available research suggests that domestic violence is overwhelmingly directed by men against women [...] In addition, violence used by men against female partners tends to be much more severe than that used by women against men. Mullender and Morley state that 'Domestic violence against women is the most common form of family violence worldwide.'। আইএসবিএন 978-1-136-74208-8 
  2. García-Moreno, Claudia; Stöckl, Heidi (২০০৯-০৬-২৭)। "Protection of sexual and reproductive health rights: Addressing violence against women"International Journal of Gynecology & Obstetrics106 (2): 144–147 from the original on May 6, 2016, Intimate male partners are most often the main perpetrators of violence against women, a form of violence known as intimate partner violence, 'domestic' violence or 'spousal (or wife) abuse.' Intimate partner violence and sexual violence, whether by partners, acquaintances or strangers, are common worldwide and disproportionately affect women, although are not exclusive to them। আইএসএসএন 0020-7292ডিওআই:10.1016/j.ijgo.2009.03.053 
  3. Swan, Suzanne C.; Gambone, Laura J.; Caldwell, Jennifer E.; Sullivan, Tami P.; Snow, David L. (2008-06)। "A Review of Research on Women's Use of Violence With Male Intimate Partners"Violence and Victims23 (3): 301–314। আইএসএসএন 0886-6708ডিওআই:10.1891/0886-6708.23.3.301  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  4. Esquivel-Santoveña, Esteban Eugenio; Lambert, Teri L.; Hamel, John (২০১৩)। "Partner Abuse Worldwide"Partner Abuse4 (1): 6–75। আইএসএসএন 1946-6560ডিওআই:10.1891/1946-6560.4.1.6 
  5. Strong, Bryan (২০১৪)। The marriage and family experience : intimate relationships in a changing society। Theodore F. Cohen (Twelfth edition, Student edition সংস্করণ)। Belmont, CA, USA। আইএসবিএন 978-1-133-59746-9ওসিএলসি 854848032 
  6. Kidnapping : an investigator's guide to profiling। Diana M. Concannon। Amsterdam: Elsevier/Academic Press। ২০০৮। আইএসবিএন 978-0-12-374031-1ওসিএলসি 272389525 
  7. Manual of forensic emergency medicine : a guide for clinicians। Ralph J. Riviello। Sudbury, Mass.: Jones and Bartlett Publishers। ২০১০। আইএসবিএন 978-0-7637-4462-5ওসিএলসি 245507378 
  8. Encyclopedia of domestic violence and abuse। Laura L. Finley। Santa Barbara, California। ২০১৩। আইএসবিএন 978-1-61069-001-0ওসিএলসি 816512991 
  9. Hess, Kären M. (২০১০)। Criminal investigation। Christine M. H. Orthmann (9th ed সংস্করণ)। Clifton Park, NY: Delmar, Cengage Learning। আইএসবিএন 978-1-4354-6993-8ওসিএলসি 319637731 
  10. Lupri, Eugen (২০০৪)। Intimate partner abuse against men.। National Clearinghouse on Family Violence। [Ottawa]: National Clearinghouse on Family Violence। আইএসবিএন 0-662-37975-6ওসিএলসি 237110800 
  11. Halket, Megan McPherson; Gormley, Katelyn; Mello, Nicole; Rosenthal, Lori; Mirkin, Marsha Pravder (2014-01-XX)। "Stay With or Leave the Abuser? The Effects of Domestic Violence Victim's Decision on Attributions Made by Young Adults"Journal of Family Violence (ইংরেজি ভাষায়)। 29 (1): 35–49। আইএসএসএন 0885-7482ডিওআই:10.1007/s10896-013-9555-4  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  12. Yves, Beigbeder (2013-07)। "World Health Organization (WHO)"Max Planck Encyclopedia of Public International Law। Oxford University Press। আইএসবিএন 978-0-19-923169-0  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  13. Dutton, Donald G.; Painter, Susan (1993-01-XX)। "Emotional Attachments in Abusive Relationships: A Test of Traumatic Bonding Theory"Violence and Victims8 (2): 105–120। আইএসএসএন 0886-6708ডিওআই:10.1891/0886-6708.8.2.105  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  14. Schechter, Daniel S.; Zygmunt, Annette; Coates, Susan W.; Davies, Mark; Trabka, Kimberly A.; McCaw, Jaime; Kolodji, Ann; Robinson, Joann L. (2007-09)। "Caregiver traumatization adversely impacts young children's mental representations on the MacArthur Story Stem Battery"Attachment & Human Development9 (3): 187–205। আইএসএসএন 1461-6734ডিওআই:10.1080/14616730701453762  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  15. Federation., National Women's Aid (১৯৭৮)। Battered women, refugees & women's aid : a report from the National Women's Aid Federation.। [The Federation]। ওসিএলসি 16443919 
  16. Campbell, Rosie; Childs, Sarah; Hunt, Elizabeth (২০১৮-০২-০৮)। Exploring Parliament। Oxford University Press। আইএসবিএন 978-0-19-878843-0 
  17. "New York Times New York City Poll, September 2003"ICPSR Data Holdings। ২০০৪-০৪-২১। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-১০ 
  18. Hua Chua, Hui (2005-09)। "The Avalon Project at Yale Law School: Documents in Law, History and Diplomacy2005291The Avalon Project at Yale Law School: Documents in Law, History and Diplomacy. Yale University Law School, 1996‐. Gratis Last visited February 2005 URL: http://www.yale.edu/lawweb/avalon/avalon.htm"Reference Reviews19 (6): 18–19। আইএসএসএন 0950-4125ডিওআই:10.1108/09504120510613094  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য); |title= এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য)
  19. 1842-1883., McCabe, James D., (১৯৭১)। The history of the great riots : the strikes and riots on the various railroads of the United States and in the mining regions, together with a full history of the Mollie Maguires। A.M. Kelley। পৃষ্ঠা ১৫। ওসিএলসি 8624172 
  20. Shipway, Lyn (২০০৪-০৩-০১)। "Domestic Violence"p. 3ডিওআই:10.4324/9780203487099 
  21. Mayhew, Pat; Maung, Natalie Aye; Mirrlees-Black, Catriona (১৯৯৩)। "The 1992 British Crime Survey: Home Office research study 132"PsycEXTRA Dataset। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-১০ 
  22. "COUNCIL OF EUROPE CONVENTION ON PREVENTING AND COMBATING VIOLENCE AGAINST WOMEN AND DOMESTIC VIOLENCE"Human Rights Documents online। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-১০ 
  23. "explanatory-working-paper-related-to-the-implementation-of-directive-201229eu-establishing-minimum-standards-on-the-rights-support-and-protection-of-victims-of-crime;hr"Human Rights Documents online। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-১০ 
  24. "Criminal attorney San Diego"SciVee। ২০১১-০৮-২৪। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-১০ 
  25. editor., Ellis, Jane (Social scientist), editor. Thiara, Ravi K.,। Preventing violence against women and girls : educational work with children and young peopleআইএসবিএন 978-1-4473-0732-7ওসিএলসি 894792076 
  26. Wallace, Harvey (২০০৫)। Family violence : legal, medical, and social perspectives (4th ed সংস্করণ)। Boston, MA: Pearson/A and B। আইএসবিএন 0-205-41822-8ওসিএলসি 54029242 
  27. World report on violence and health। Etienne G. Krug, World Health Organization। Geneva: World Health Organization। ২০০২। আইএসবিএন 0-585-46807-9ওসিএলসি 53032850 
  28. "Child mental health and psychosocial development."PsycEXTRA Dataset। ১৯৭৭। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-১০ 
  29. Violence in gay and lesbian domestic partnerships। Claire M. Renzetti, Charles Harvey Miley। New York। ১৯৯৬। আইএসবিএন 1-56024-753-3ওসিএলসি 33947252 
  30. Johnson, Michael P.; Ferraro, Kathleen J. (2000-11)। "Research on Domestic Violence in the 1990s: Making Distinctions"Journal of Marriage and Family62 (4): 948–963। আইএসএসএন 0022-2445ডিওআই:10.1111/j.1741-3737.2000.00948.x  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  31. Wallace, Harvey; Roberson, Cliff; Globokar, Julie; Wallace, Paul Harvey; Roberson, Cliff (২০১৫-০৮-২৭)। "Family Violence"ডিওআই:10.4324/9781315664187 
  32. "Child mental health and psychosocial development."PsycEXTRA Dataset। ১৯৭৭। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-১০ 
  33. aînés., Québec (Province). Ministère de la famille et des (2011))। Government action plan to counter elder abuse : 2010-2015। Ministère de la Famille et des Aînés। আইএসবিএন 978-2-550-59124-5ওসিএলসি 1059179028  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  34. International Law & World Order। Martinus Nijhoff Publishers। পৃষ্ঠা 1–4। আইএসবিএন 978-90-04-20870-4 
  35. "Husband and Wife. Rights of Wife against Husband and His Property. Wife's Right to Sue Her Husband for Torts. Assault"Harvard Law Review34 (6): 676। 1921-04। আইএসএসএন 0017-811Xডিওআই:10.2307/1328947  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  36. Feminists negotiate the state : the politics of domestic violence। Cynthia R. Daniels, Rachelle Brooks। Lanham: University Press of America। ১৯৯৭। আইএসবিএন 0-7618-0883-3ওসিএলসি 37368711 
  37. Bloch, Ruth H. (২০০৭)। "The American Revolution, Wife Beating, and the Emergent Value of Privacy"Early American Studies: An Interdisciplinary Journal5 (2): 223–251। আইএসএসএন 1559-0895ডিওআই:10.1353/eam.2007.0008 
  38. 1578-1652., Ward, Nathaniel,। The body of liberties : the liberties of the Massachusetts colonie in New England, 1641.ওসিএলসি 5922118 
  39. "Encyclopaedia Britannica"Lexikon des gesamten Buchwesens Online। from the original on June 27, 2015. Retrieved October 31, 2011. Feminist agitation in the 1800s produced a sea change in public opinion..। সংগ্রহের তারিখ 2021-04-11  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  40. Gordon, Linda (২০০২)। Heroes of their own lives : the politics and history of family violence : Boston, 1880-1960। Urbana: University of Illinois Press। আইএসবিএন 0-252-07079-8ওসিএলসি 48857609 
  41. Kleinberg, S. J. (১৯৯৯)। Women in the United States, 1830–1945। London: Macmillan Education UK। পৃষ্ঠা 128–151। আইএসবিএন 978-0-333-61098-5 
  42. Pleck, Elizabeth (1989-01-XX)। "Criminal Approaches to Family Violence, 1640-1980"Crime and Justice11: 19–57। আইএসএসএন 0192-3234ডিওআই:10.1086/449151  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  43. "Domestic Violence: Coercive Control"। ২০১৭। ডিওআই:10.4135/9781473961548 
  44. PLECK, ELIZABETH (১৯৯২-১২-৩১)। Household Constitution and Family Relationships। DE GRUYTER SAUR। পৃষ্ঠা 189–203। আইএসবিএন 978-3-598-41456-5 
  45. Gender And Crime In Modern Europe। Routledge। ২০০২-০১-০৪। পৃষ্ঠা 134–152। আইএসবিএন 978-0-203-01699-2 
  46. "Intoxicating Liquors. "Retailing" Intoxicating Liquors Criminal Law Reports: Being Reports of Cases Determined in the Federal and State Courts of the United States, and in the Courts of England, Ireland, Canada, Etc. with Notes, Volume 2, New York: Hurd and Houghton, 1874–1875, OCLC 22125148, The cases in the American courts are uniform against the right of the husband to use any [physical] chastisement, moderate or otherwise, toward the wife, for any purpose."The Virginia Law Register11 (2): 148। 1905-06। আইএসএসএন 1547-1357ডিওআই:10.2307/1101323  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  47. Lentz, Susan A. (১৯৯৯-০৩-০৫)। "Revisiting the Rule of Thumb"Women & Criminal Justice10 (2): 9–27। আইএসএসএন 0897-4454ডিওআই:10.1300/j012v10n02_02 
  48. Smith, Bonnie G. (২০১৯-০৩-০৬)। Women’s studies। 2 Edition. | New York : Routledge, 2019. | Revised edition of the author’s Women’s studies, 2013.: Routledge। পৃষ্ঠা 83–100। আইএসবিএন 978-1-351-02298-9 
  49. "Domestic Violence Resource Manual"Clinical Nurse Specialist11 (2): 1। 1997-03-XX। আইএসএসএন 0887-6274ডিওআই:10.1097/00002800-199703000-00023  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  50. Mahmood, Shahirah (২০১৮-০৭-১১)। Women of Asia। New York, NY: Routledge, 2018.: Routledge। পৃষ্ঠা 154–169। আইএসবিএন 978-1-315-45845-8 
  51. "Office of the United Nations High Commissioner for Human Rights (OHCHR)"International Year Book and Statesmen's Who's Who। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-১১ 
  52. Jones, Jackie (২০১৮-০৩-২২)। The Legal Protection of Women from Violence। Title: The legal protection of women and girls from violence : normative gaps in international law / Jackie Jones and Rashida Manjoo. Description: Abingdon, Oxon [UK] ; New York : Routledge, 2018. |: Routledge। পৃষ্ঠা 139–165। আইএসবিএন 978-1-315-18500-2 
  53. "COUNCIL OF EUROPE CONVENTION ON PREVENTING AND COMBATING VIOLENCE AGAINST WOMEN AND DOMESTIC VIOLENCE"Human Rights Documents online। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-১১ 
  54. VINDHYA, U. (2000-10)। ""Dowry Deaths" in Andhra Pradesh, India"Violence Against Women6 (10): 1085–1108। আইএসএসএন 1077-8012ডিওআই:10.1177/10778010022183532  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  55. Staff writer (October 28, 2010). "Thousands of women killed for family "honor"". National Geographic News.। National Geographic Society.। Archived from the original on October 19, 2015. Retrieved August 22, 201।  Authors list-এ |প্রথমাংশ1= এর |শেষাংশ1= নেই (সাহায্য); এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  56. Szasz, Thomas (১৯৯৮)। Cruel compassion : psychiatric control of society's unwanted (1st Syracuse University Press ed সংস্করণ)। Syracuse, N.Y.: Syracuse University Press। আইএসবিএন 0-8156-0510-2ওসিএলসি 38016521 
  57. Young-Bruehl, Elisabeth (২০১২)। Childism : Confronting Prejudice Against Children। New Haven: Yale University Press। আইএসবিএন 978-0-300-17850-0ওসিএলসি 774395316 
  58. Shipway, Lyn (২০০৪)। Domestic violence : a handbook for health professionals। London: Routledge। আইএসবিএন 0-203-48709-5ওসিএলসি 55137277 
  59. Siemieniuk, Reed A.C.; Krentz, Hartmut B.; Gish, Jessica A.; Gill, M. John (2010-12)। "Domestic Violence Screening: Prevalence and Outcomes in a Canadian HIV Population"AIDS Patient Care and STDs24 (12): 763–770। আইএসএসএন 1087-2914ডিওআই:10.1089/apc.2010.0235  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  60. Else, Sue; Randall, Allison। "National Network to End Domestic Violence"Encyclopedia of Interpersonal Violence। 2455 Teller Road,  Thousand Oaks  California  91320  United States: SAGE Publications, Inc.। আইএসবিএন 978-1-4129-1800-8 
  61. "Justice Department to spearhead President's Family Justice Center Initiative to better serve domestic violence victims"PsycEXTRA Dataset। ২০০৩। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-১১ 
  62. "Justice Department to spearhead President's Family Justice Center Initiative to better serve domestic violence victims"PsycEXTRA Dataset। ২০০৩। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-১১ 
  63. Cattaneo, Lauren Bennett (২০০৮-০১-১৫)। "Evan Stark, Coercive Control—Revitalizing a Movement"Sex Roles58 (7-8): 592–594। আইএসএসএন 0360-0025ডিওআই:10.1007/s11199-007-9378-y 
  64. "Council of Europe (CoE)"। ২০০৭। 
  65. "Criminal justice response to domestic violence in later life"PsycEXTRA Dataset। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-১১ 
  66. Sorenson, Susan B.; Joshi, Manisha; Sivitz, Elizabeth (2014-11)। "A Systematic Review of the Epidemiology of Nonfatal Strangulation, a Human Rights and Health Concern"American Journal of Public Health104 (11): e54–e61। আইএসএসএন 0090-0036ডিওআই:10.2105/ajph.2014.302191  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  67. "Strangulation"Definitions। Qeios। ২০২০-০২-০৭। 
  68. "Health hazard evaluation report: HETA-89-069-2036, USA Today/Gannett Co., Inc., Rosslyn, Virginia."। ১৯৯০-০৪-০১। 
  69. Petrosky, Emiko; Blair, Janet M.; Betz, Carter J.; Fowler, Katherine A.; Jack, Shane P.D.; Lyons, Bridget H. (২০১৭-০৭-২১)। "Racial and Ethnic Differences in Homicides of Adult Women and the Role of Intimate Partner Violence — United States, 2003–2014"MMWR. Morbidity and Mortality Weekly Report66 (28): 741–746। আইএসএসএন 0149-2195ডিওআই:10.15585/mmwr.mm6628a1 
  70. Van Wormer, Katherine S. (২০০৯)। Death by domestic violence : preventing the murders and murder-suicides। Albert R. Roberts। Westport, Conn.: Praeger। আইএসবিএন 978-0-313-35489-2ওসিএলসি 233543972 
  71. "Lee, Jong-Wook, (12 April 1945–22 May 2006), Director-General, World Health Organization, since 2003"Who Was Who। Oxford University Press। ২০০৭-১২-০১। 
  72. Johnson, J.K.; Haider, F.; Ellis, K.; Hay, D.M.; Lindow, S.W. (2003-03)। "The prevalence of domestic violence in pregnant women"BJOG: An International Journal of Obstetrics and Gynaecology110 (3): 272–275। আইএসএসএন 1470-0328ডিওআই:10.1046/j.1471-0528.2003.02216.x  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  73. Mezey, G. C; Bewley, S. (১৯৯৭-০৫-০৩)। "Domestic violence and pregnancy"BMJ314 (7090): 1295–1295। আইএসএসএন 0959-8138ডিওআই:10.1136/bmj.314.7090.1295 
  74. Herring, Jonathan (২০১৪-০২-২৭)। Family Law। Oxford University Press। পৃষ্ঠা 2–26। আইএসবিএন 978-0-19-966852-6 
  75. "stop-violence-against-women-cambodia-drafts-new-law-to-curb-acid-attacks-apr-30-2010"Human Rights Documents online। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-১১ 
  76. Bennett, Linda Rae; Manderson, Lenore, সম্পাদকগণ (২০১৩-০৯-১৩)। "Violence Against Women in Asian Societies"ডিওআই:10.4324/9781315029634 
  77. Halim Chowdhury, Elora (2007-08)। "Negotiating State and NGO Politics in Bangladesh"Violence Against Women13 (8): 857–873। আইএসএসএন 1077-8012ডিওআই:10.1177/1077801207302046  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  78. H., Bahl, Taru. Syed, M. (২০০৩)। Encyclopaedia of Muslim world। Anmol Publications। আইএসবিএন 81-261-1419-3ওসিএলসি 55492660 
  79. Mannan, A.; Ghani, S.; Clarke, A.; White, P.; Salmanta, S.; Butler, P.E.M. (2006-03)। "Psychosocial outcomes derived from an acid burned population in Bangladesh, and comparison with Western norms"Burns32 (2): 235–241। আইএসএসএন 0305-4179ডিওআই:10.1016/j.burns.2005.08.027  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  80. Kalantry, Sital; Getgen, Jocelyn E. (২০১১)। "Combating Acid Violence in Bangladesh, India and Cambodia"SSRN Electronic Journalআইএসএসএন 1556-5068ডিওআই:10.2139/ssrn.1861218 
  81. "PAHO treats violence as a public health hazard"PsycEXTRA Dataset। ২০০৩। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-১১ 
  82. Campbell, Thomas L. (১৯৯৭)। "Research reports: Domestic violence in primary care."Families, Systems, & Health15 (3): 345–350। আইএসএসএন 1939-0602ডিওআই:10.1037/h0090139 
  83. "news-from-human-rights-watch-no5-g-september-11-attacks-crimes-against-humanity-the-aftermath-volume-1-october-15-2001-october-2001"Human Rights Documents online। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-১১ 
  84. Pope, Nicole (২০১২)। Honor killings in the twenty-first century (1st ed সংস্করণ)। New York: Palgrave Macmillan। আইএসবিএন 978-1-137-01266-1ওসিএলসি 778698434 
  85. "NHS now"Nursing Standard12 (41): 28–29 Note that it is possible for a woman to not bleed the first time she has sex.[85] Sex outside marriage is illegal in many countries, including Saudi Arabia, Pakistan,[86] Afghanistan,[87][88][89] Iran,[89] Kuwait,[90] Maldives,[91] Morocco,[92] Oman,[93] Mauritania,[94] United Arab Emirates,[95][96] Qatar,[97] Sudan,[98] Yemen.[99]। 1998-07-XX। আইএসএসএন 0029-6570ডিওআই:10.7748/ns.12.41.28.s35  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  86. Lakhani, Avnita (2014-05)। "Book Review"Journal of Energy & Natural Resources Law32 (2): 203–224। আইএসএসএন 0264-6811ডিওআই:10.1080/02646811.2014.11435358  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  87. Manuh, Takyiwaa; Bekoe, Adolf Awuku (২০১২-০৪-১৭)। "Confronting violence against women"UN Chronicle47 (1): 12–15। আইএসএসএন 1564-3913ডিওআই:10.18356/e9cb9eae-en 
  88. Buzawa, Eva Schlesinger (২০১২)। Responding to domestic violence : the integration of criminal justice and human services। Carl G. Buzawa, Evan Stark, Eva Schlesinger Buzawa (4th ed সংস্করণ)। Thousand Oaks, Calif: Sage Publications। আইএসবিএন 978-1-4129-5639-0ওসিএলসি 648922072 
  89. Jenks, Richard J. (২০১৮-১০-২৪)। Divorce, Annulments, and the Catholic Church। Routledge। পৃষ্ঠা 27–43। আইএসবিএন 978-1-315-86500-3 
  90. Sigal, Janet I. (২০১৪)। "Domestic violence and honor killings"PsycEXTRA Dataset। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-০৭ 
  91. Brügger, Niels; Laursen, Ditte; Nielsen, Janne (২০১৬-০৬-১৩)। "Methodological reflections about establishing a corpus of the archived web: the case of the Danish web from 2005 to 2015"Researchers, practitioners and their use of the archived web। School of Advanced Study, University of London। ডিওআই:10.14296/resaw.0009 
  92. Bristol, Matt (২০০৩)। "Sanctuary in a Time of Need: Patients, families find comfort and support at VA Fisher Houses"PsycEXTRA Dataset। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-০৭ 
  93. Korteweg, Anna C.; Yurdakul, Gökçe (২০১৪-০১-০১)। The Headscarf Debates। Stanford University Press। আইএসবিএন 978-0-8047-9116-8 
  94. "Outlook for sustainable development in South Asia"dx.doi.org। ২০১৭-০৫-৩০। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-০৭ 
  95. "human-rights-watch-crossfire-continued-human-rights-abuses-by-bangladeshsrapid-action-battalion"Human Rights Documents online। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-০৭ 
  96. Shelemay, Kay Kaufman; Kimberlin, Cynthia Tse (২০০১)। Ethiopia, Federal Democratic Republic of। Oxford Music Online। Oxford University Press। 
  97. "COUNCIL OF EUROPE CONVENTION ON PREVENTING AND COMBATING VIOLENCE AGAINST WOMEN AND DOMESTIC VIOLENCE"Human Rights Documents online। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-০৭ 
  98. Handbook on effective police responses to violence against women। United Nations Office on Drugs and Crime। New York: United Nations। ২০১০। আইএসবিএন 978-92-1-055581-4ওসিএলসি 794270423 
  99. "Morgan, Christine Lesley, (born 4 May 1958), Head of Radio, BBC Religion and Ethics, since 2009"Who's Who। Oxford University Press। ২০০৭-১২-০১। 
  100. "Oral Statement on Interactive Dialogue with the Special Rapporteur on contemporary forms of slavery, including its causes and consequences"Human Rights Documents Online। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-০৮ 
  101. "Every, Sir John (Simon), (24 April 1914–3 Nov. 1988)"Who Was Who। Oxford University Press। ২০০৭-১২-০১। 
  102. "human-rights-watch-how-come-you-allow-little-girls-to-get-married-child-marriage-in-yemen"Human Rights Documents online। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-০৮ 
  103. Mahoney, Martha R. (1991-10-XX)। "Legal Images of Battered Women: Redefining the Issue of Separation"Michigan Law Review90 (1): 1। আইএসএসএন 0026-2234ডিওআই:10.2307/1289533  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  104. Mahoney, Martha R. (1991-10-XX)। "Legal Images of Battered Women: Redefining the Issue of Separation"Michigan Law Review90 (1): 1। আইএসএসএন 0026-2234ডিওআই:10.2307/1289533  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  105. Erez, Edna (২০১৭-১০-০৫)। Migration, Culture Conflict and Crime। Routledge। পৃষ্ঠা 145–157। আইএসবিএন 978-1-315-20235-8 
  106. Mahoney, Martha R. (1991-10-XX)। "Legal Images of Battered Women: Redefining the Issue of Separation"Michigan Law Review90 (1): 1। আইএসএসএন 0026-2234ডিওআই:10.2307/1289533  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  107. Mahoney, Martha R. (1991-10-XX)। "Legal Images of Battered Women: Redefining the Issue of Separation"Michigan Law Review90 (1): 1। আইএসএসএন 0026-2234ডিওআই:10.2307/1289533  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  108. Mahoney, Martha R. (1991-10-XX)। "Legal Images of Battered Women: Redefining the Issue of Separation"Michigan Law Review90 (1): 1। আইএসএসএন 0026-2234ডিওআই:10.2307/1289533  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  109. Bartlett et al., p. 405
  110. Bartlett et al., p. 405
  111. Pavlidakis, Alexandra (January 1, 2009). "Mandatory Arrest: Past Its Prime". Santa Clara Law Review. Archived from the original on June 4, 2016.
  112. Bartlett et al., p. 405
  113. Bartlett et al., p. 405
  114. Dodd, Lynda Warren (2009-03)। "Therapeutic groupwork with young children and mothers who have experienced domestic abuse"Educational Psychology in Practice25 (1): 21–36। আইএসএসএন 0266-7363ডিওআই:10.1080/02667360802697571  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  115. Bell, Carl C.; Richardson, Jerome; Blount, Morris A. (২০০৬)। Preventing violence: Research and evidence-based intervention strategies.। Washington: American Psychological Association। পৃষ্ঠা 217–237। আইএসবিএন 1-59147-342-X 
  116. Fantuzzo, John W.; Mohr, Wanda K. (24/1999)। "Prevalence and Effects of Child Exposure to Domestic Violence"The Future of Children9 (3): 21। ডিওআই:10.2307/1602779  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  117. Dodd, Lynda Warren (2009-03)। "Therapeutic groupwork with young children and mothers who have experienced domestic abuse"Educational Psychology in Practice25 (1): 21–36। আইএসএসএন 0266-7363ডিওআই:10.1080/02667360802697571  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  118. Kshirsagar, Abhijit V.; Freburger, Janet K.; Ellis, Alan R.; Wang, Lily; Winkelmayer, Wolfgang C.; Brookhart, M. Alan (2013-06)। "The Comparative Short-term Effectiveness of Iron Dosing and Formulations in US Hemodialysis Patients"The American Journal of Medicine126 (6): 541.e1–541.e14। আইএসএসএন 0002-9343ডিওআই:10.1016/j.amjmed.2012.11.030  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  119. Dodd, Lynda Warren (2009-03)। "Therapeutic groupwork with young children and mothers who have experienced domestic abuse"Educational Psychology in Practice25 (1): 21–36। আইএসএসএন 0266-7363ডিওআই:10.1080/02667360802697571  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  120. Psychology., Wilfrid Laurier University. Faculty of Graduate Studies. Dept. of (১৯৯৪)। Ounce of prevention : the life stories and perceptions of men who sexually offended against children.ওসিএলসি 612949807 
  121. Damant, Dominique; Lapierre, Simon; Lebossé, Catherine; Thibault, Sylvie; Lessard, Geneviève; Hamelin-Brabant, Louise; Lavergne, Chantal; Fortin, Andrée (২০০৯-০৯-১৬)। "Women's abuse of their children in the context on domestic violence: reflection from women's accounts"Child & Family Social Work15 (1): 12–21। আইএসএসএন 1356-7500ডিওআই:10.1111/j.1365-2206.2009.00632.x 
  122. "Safe Horizon Launches National Child Abuse and Domestic Violence Awareness Initiative"PsycEXTRA Dataset। ২০০৮। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-০৯ 
  123. Schechter, Daniel S.; Willheim, Erica; McCaw, Jaime; Turner, J. Blake; Myers, Michael M.; Zeanah, Charles H. (2011-12)। "The Relationship of Violent Fathers, Posttraumatically Stressed Mothers and Symptomatic Children in a Preschool-Age Inner-City Pediatrics Clinic Sample"Journal of Interpersonal Violence26 (18): 3699–3719। আইএসএসএন 0886-2605ডিওআই:10.1177/0886260511403747  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  124. Jones, R.F.; Horan, D.L. (1997-07-XX)। "The American College of Obstetricians and Gynecologists: a decade of responding to violence against women"International Journal of Gynecology & Obstetrics58 (1): 43–50। আইএসএসএন 0020-7292ডিওআই:10.1016/s0020-7292(97)02863-4  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  125. Edwards, Susan (১৯৯১)। Gender, Power and Sexuality। London: Palgrave Macmillan UK। পৃষ্ঠা 133–156। আইএসবিএন 978-0-333-54278-1 
  126. Jones, R.F.; Horan, D.L. (1997-07-XX)। "The American College of Obstetricians and Gynecologists: a decade of responding to violence against women"International Journal of Gynecology & Obstetrics58 (1): 43–50। আইএসএসএন 0020-7292ডিওআই:10.1016/s0020-7292(97)02863-4  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  127. "Intimate Partner Violence"PsycEXTRA Dataset। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-০৯ 
  128. Middlebrooks, Jennifer S.; Audage, Natalie C. (২০০৭)। "The Effects of Childhood Stress on Health Across the Lifespan"PsycEXTRA Dataset। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-০৯ 
  129. Koss, M. P. (১৯৯২-০৯-০১)। "Somatic consequences of violence against women"Archives of Family Medicine1 (1): 53–59। আইএসএসএন 1063-3987ডিওআই:10.1001/archfami.1.1.53 
  130. Gracia, Enrique (২০১৪-০২-০৫)। "Intimate partner violence against women and victim-blaming attitudes among Europeans"Bulletin of the World Health Organization92 (5): 380–381। আইএসএসএন 0042-9686ডিওআই:10.2471/blt.13.131391 
  131. "COVID-19 and Ending Violence Against Women and Girls"UN Women Ending Violence Against Women (EVAW) COVID-19 Briefs। ২০২০-০৬-২৩। আইএসএসএন 2708-4191ডিওআই:10.18356/2fd3ecfb-en 
  132. Heintz, Adam Jackson; Melendez, Rita M. (2006-02)। "Intimate Partner Violence and HIV/STD Risk Among Lesbian, Gay, Bisexual, and Transgender Individuals"Journal of Interpersonal Violence21 (2): 193–208। আইএসএসএন 0886-2605ডিওআই:10.1177/0886260505282104  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  133. Heintz, Adam Jackson; Melendez, Rita M. (2006-02)। "Intimate Partner Violence and HIV/STD Risk Among Lesbian, Gay, Bisexual, and Transgender Individuals"Journal of Interpersonal Violence21 (2): 193–208। আইএসএসএন 0886-2605ডিওআই:10.1177/0886260505282104  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  134. Vitanza, Stephanie; Vogel, Laura C. M.; Marshall, Linda L. (1995-01-XX)। "Distress and Symptoms of Posttraumatic Stress Disorder in Abused Women"Violence and Victims10 (1): 23–34। আইএসএসএন 0886-6708ডিওআই:10.1891/0886-6708.10.1.23  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  135. Schechter, Daniel S.; Zygmunt, Annette; Coates, Susan W.; Davies, Mark; Trabka, Kimberly A.; McCaw, Jaime; Kolodji, Ann; Robinson, Joann L. (2007-09)। "Caregiver traumatization adversely impacts young children's mental representations on the MacArthur Story Stem Battery"Attachment & Human Development9 (3): 187–205। আইএসএসএন 1461-6734ডিওআই:10.1080/14616730701453762  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  136. Schechter, Daniel S.; Coates, Susan W.; Kaminer, Tammy; Coots, Tammy; Zeanah, Charles H.; Davies, Mark; Schonfeld, Irvin S.; Marshall, Randall D.; Liebowitz, Michael R. (২০০৮-০৬-০২)। "Distorted Maternal Mental Representations and Atypical Behavior in a Clinical Sample of Violence-Exposed Mothers and Their Toddlers"Journal of Trauma & Dissociation9 (2): 123–147। আইএসএসএন 1529-9732ডিওআই:10.1080/15299730802045666 
  137. "stop-violence-against-women-effects-of-domestic-violence-on-children-apr-2010"Human Rights Documents online। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-০৯ 
  138. Cooley, Amanda Harmon। "American Civil Liberties Union (ACLU)"Encyclopedia of Social Networks। 2455 Teller Road,  Thousand Oaks  California  91320  United States: SAGE Publications, Inc.। আইএসবিএন 978-1-4129-7911-5 
  139. Cage, Anthea (2007-05)। "Occupational Therapy with Women and Children Survivors of Domestic Violence: Are We Fulfilling Our Activist Heritage? A Review of the Literature"British Journal of Occupational Therapy70 (5): 192–198। আইএসএসএন 0308-0226ডিওআই:10.1177/030802260707000503  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  140. Helfrich, Christine A.; Rivera, Yesenia (২০০৬-০৪-১৩)। "Employment Skills and Domestic Violence Survivors"Occupational Therapy in Mental Health22 (1): 33–48। আইএসএসএন 0164-212Xডিওআই:10.1300/j004v22n01_03 
  141. Domestic Violence Treatment for Abusive Women। Routledge। ২০১১-০২-১৪। পৃষ্ঠা 14–24। আইএসবিএন 978-0-203-83696-5 
  142. Fulambarker, Anjali (২০২০-০৪-০১)। ""Everybody Loses": Understanding Police Roles and Perceptions of Domestic Violence Calls"Journal of Qualitative Criminal Justice & Criminologyডিওআই:10.21428/88de04a1.040c2096 
  143. Domestic Violence Treatment for Abusive Women। Routledge। ২০১১-০২-১৪। পৃষ্ঠা 14–24। আইএসবিএন 978-0-203-83696-5 
  144. Buzawa, Eva Schlesinger (২০০৩)। Domestic violence : the criminal justice response। Carl G. Buzawa (3rd ed সংস্করণ)। Thousand Oaks, Calif.: Sage Publications। আইএসবিএন 0-7619-2447-7ওসিএলসি 50243358 
  145. Worden, Robert E.; Pollitz, Alissa A. (১৯৮৪)। "Police Arrests in Domestic Disturbances: A Further Look"Law & Society Review18 (1): 105। আইএসএসএন 0023-9216ডিওআই:10.2307/3053482 
  146. "Comings & Goings"Science249 (4966): 244–244। ১৯৯০-০৭-২০। আইএসএসএন 0036-8075ডিওআই:10.1126/science.249.4966.244-a 
  147. Gerbert, Barbara; Caspers, Nona; Bronstone, Amy; Moe, James; Abercrombie, Priscilla (১৯৯৯-১০-১৯)। "A Qualitative Analysis of How Physicians with Expertise in Domestic Violence Approach the Identification of Victims"Annals of Internal Medicine131 (8): 578। আইএসএসএন 0003-4819ডিওআই:10.7326/0003-4819-131-8-199910190-00005 
  148. Gerbert, Barbara; Caspers, Nona; Bronstone, Amy; Moe, James; Abercrombie, Priscilla (১৯৯৯-১০-১৯)। "A Qualitative Analysis of How Physicians with Expertise in Domestic Violence Approach the Identification of Victims"Annals of Internal Medicine131 (8): 578। আইএসএসএন 0003-4819ডিওআই:10.7326/0003-4819-131-8-199910190-00005 
  149. Lawson, David M. (2003-01)। "Incidence, Explanations, and Treatment of Partner Violence"Journal of Counseling & Development81 (1): 19–32। আইএসএসএন 0748-9633ডিওআই:10.1002/j.1556-6678.2003.tb00221.x  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  150. Campbell, Jacquelyn C. (2005-09)। "Commentary on Websdale"Violence Against Women11 (9): 1206–1213। আইএসএসএন 1077-8012ডিওআই:10.1177/1077801205278860  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  151. Campbell, Jacquelyn C. (2001-09)। "Safety Planning Based on Lethality Assessment for Partners of Batterers in Intervention Programs"Journal of Aggression, Maltreatment & Trauma5 (2): 129–143। আইএসএসএন 1092-6771ডিওআই:10.1300/j146v05n02_08  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  152. Andrews, D. A. (১৯৯৪)। The psychology of criminal conduct। James Bonta। Cincinnati, OH: Anderson Pub। আইএসবিএন 0-87084-711-2ওসিএলসি 29561317 
  153. Tharp, Andra Teten; Schumacher, Julie A.; Samper, Rita E.; McLeish, Alison C.; Coffey, Scott F. (2012-10)। "Relative Importance of Emotional Dysregulation, Hostility, and Impulsiveness in Predicting Intimate Partner Violence Perpetrated by Men in Alcohol Treatment"Psychology of Women Quarterly37 (1): 51–60। আইএসএসএন 0361-6843ডিওআই:10.1177/0361684312461138  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  154. Augusta-Scott, Tod; Scott, Katreena; Tutty, Leslie M., সম্পাদকগণ (২০১৭-০৪-২১)। "Innovations in Interventions to Address Intimate Partner Violence"ডিওআই:10.4324/9781315532776 
  155. McGinn, Tony; Taylor, Brian; McColgan, Mary; Lagdon, Susan (২০১৫-০৫-১১)। "Survivor Perspectives on IPV Perpetrator Interventions"Trauma, Violence, & Abuse17 (3): 239–255। আইএসএসএন 1524-8380ডিওআই:10.1177/1524838015584358 
  156. McGinn, Tony; Taylor, Brian; McColgan, Mary; Lagdon, Susan (২০১৫-০৫-১১)। "Survivor Perspectives on IPV Perpetrator Interventions"Trauma, Violence, & Abuse17 (3): 239–255। আইএসএসএন 1524-8380ডিওআই:10.1177/1524838015584358 
  157. Levin, Aaron (২০১৬-১০-০৭)। "Surgeon General Calls on Physicians to Help End Opioid Abuse"Psychiatric News51 (19): 1–1। আইএসএসএন 0033-2704ডিওআই:10.1176/appi.pn.2016.10a6 
  158. Jacobsen, N. (২০১৬-০৯-০১)। Das Apple-Imperium 2.0। Wiesbaden: Springer Fachmedien Wiesbaden। পৃষ্ঠা 21–23। আইএসবিএন 978-3-658-09547-5 
  159. "University of Minnesota (UMN) Map Server"SpringerReference। Berlin/Heidelberg: Springer-Verlag। 
  160. Shepard, Melanie। Education Groups for Men Who Batter। New York, NY: Springer Publishing Company। আইএসবিএন 978-0-8261-7990-6 
  161. Mikton, C. (২০১০-১০-০১)। "Preventing intimate partner and sexual violence against women: taking action and generating evidence"Injury Prevention16 (5): 359–360। আইএসএসএন 1353-8047ডিওআই:10.1136/ip.2010.029629 
  162. Mikton, C. (২০১০-১০-০১)। "Preventing intimate partner and sexual violence against women: taking action and generating evidence"Injury Prevention16 (5): 359–360। আইএসএসএন 1353-8047ডিওআই:10.1136/ip.2010.029629 
  163. Marsha A, Freeman; Christine, Chinkin; Beate, Rudolf (২০১২-০১-০১)। "Violence Against Women"The UN Convention on the Elimination of All Forms of Discrimination Against Womenডিওআই:10.5422/fso/9780199565061.003.0019 
  164. Mikton, C. (২০১০-১০-০১)। "Preventing intimate partner and sexual violence against women: taking action and generating evidence"Injury Prevention16 (5): 359–360। আইএসএসএন 1353-8047ডিওআই:10.1136/ip.2010.029629 
  165. Baker, Meghan; Yokoe, Deborah S.; Stelling, John; Kaganov, Rebecca E.; Letourneau, Alyssa R.; O'Brien, Thomas; Kulldorff, Martin; Babalola, Damilola; Barrett, Craig (২০১৫)। "Automated Outbreak Detection of Hospital-Associated Infections"Open Forum Infectious Diseases2 (suppl_1)। আইএসএসএন 2328-8957ডিওআই:10.1093/ofid/ofv131.60 
  166. Hadwin, Peter (২০০৬-০২-০৮)। "Intimate Partner Abuse and Health Professionals - New Approaches to Domestic ViolenceIntimate Partner Abuse and Health Professionals - New Approaches to Domestic Violence"Nursing Standard20 (22): 37–37। আইএসএসএন 0029-6570ডিওআই:10.7748/ns2006.02.20.22.37.b427 
  167. The Marine Environment and United Nations Sustainable Development Goal 14। Brill | Nijhoff। ২০১৮-১০-০৮। পৃষ্ঠা 16–22। আইএসবিএন 978-90-04-36661-9 
  168. "Spirit Possession: Caucasus, Central Asia, Iran, and Afghanistan"Encyclopedia of Women & Islamic Cultures। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-০৯ 

বহি:সংযোগ