রুম্পা বিদ্রোহ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

বিদ্রোহের কারণ[সম্পাদনা]

উনবিংশ শতকের সপ্তম দশকে মাদ্রাজ প্রদেশ জুড়ে প্রবল দুর্ভিক্ষে ৫০ লক্ষ মানুষ প্রাণ হারান। ১৮৭৬ এর ২৩ শে নভেম্বর অমৃত বাজার পত্রিকা এই দুর্ভিক্ষের কারণ হিসেবে ব্রিটিশ শাসকের শোষণ, উদাসীনতাকে দায়ী করেছিল। জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর কলকাতাবাসীর কাছে দুর্ভিক্ষপীড়িত মানুষদের সাহায্যার্থে অর্থদানের আবেদন করলেও বিশেষ সাড়া পাওয়া যায়নি। এই ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের ভেতরেই উপুর্যপরি শোষণ, বনাঞ্চল সংক্রান্ত বাধানিষেধ ও করের বোঝা দক্ষিণ ভারতে পর্বত-অরণ‍্যচারী রুম্পা আদিবাসীদের ভেতর তীব্র ক্ষোভের জন্ম দেয়।[১]

বিদ্রোহের বর্ণনা[সম্পাদনা]

রুম্পা সম্প্রদায় ছিল গোষ্ঠীমূলক। সমাজে সব কাজই একত্রিত সিদ্ধান্তে হতো। সুতরাং সকলেই মিলিতভাবে বিদ্রোহের সিদ্ধান্ত নেয়। এদের প্রধান নেতা ছিলেন চান্দ্রিয়া। লিংগম রেড্ডি, থুমন ধোরা প্রমুখ অন্যান্য নেতারাও বিদ্রোহ পরিচালনা করেন। তারা থানা আক্রমণ, অগ্নিসংযোগ, সরকারী কর্মচারীদের হত্যা ও ভদ্রাচলম, বিশাখাপত্তনম তথা পূর্ব গোদাবরী অঞ্চলে নিজেদের অধিকার কায়েম করলে সশস্ত্র পুলিশবাহিনীর সাথে খণ্ডযুদ্ধ হয়, উন্নত আগ্নেয়াস্ত্র ও সুশিক্ষিত সেনার সাথে সাধারণ তীর ধনুক নিয়ে পাহাড়-জংগলে লুকিয়ে থেকে বিদ্রোহীরা লড়াই চালান।

দমননীতি[সম্পাদনা]

বিদ্রোহ দমনে গোদাবরী জেলার ম্যাজিস্ট্রেট রুম্পাদের গ্রামগুলো আগুনে পুড়িয়ে দেন। বহু নিরীহ গ্রামবাসী ও বিদ্রোহী নিহত হয়। ১৮৮৯ এর জানুয়ারি মাসে এক খণ্ডযুদ্ধে নেতা চান্দ্রিয়ার মৃত্যু হয়। অমৃতবাজার পত্রিকার মাদ্রাজ সংবাদদাতা জানান চান্দ্রিয়ার ছিন্নমুণ্ড ব্রিটিশ পুলিশ রাজমুন্দ্রি জেলে নিয়ে আসে শনাক্তকরনের জন্যে। শেষে যোগ্য পরিচালনার অভাবে রুম্পা বিদ্রোহ স্তিমিত হয়ে পড়ে।[১] বহু বিদ্রোহীর দ্বীপান্তর হয়েছিল।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. ভারতের বৈপ্লবিক সংগ্রামের ইতিহাস, সুপ্রকাশ রায় (১৯৭০)। মহাবিদ্রোহের পরবর্তী কৃষক বিদ্রোহ। কলকাতা: ডিএনবিএ ব্রাদার্স। পৃষ্ঠা ৭৭–৮০।