রাজবাড়ী জেলা
রাজবাড়ী | |
---|---|
জেলা | |
ডাকনাম: পদ্মাকন্যা | |
বাংলাদেশে রাজবাড়ী জেলার অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক: ২৩°৪২′ উত্তর ৮৯°৩০′ পূর্ব / ২৩.৭০০° উত্তর ৮৯.৫০০° পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | ঢাকা বিভাগ |
প্রতিষ্ঠা | ১৯৮৪ সালের ১লা মার্চ |
সংসদীয় আসন | ২টি |
সরকার | |
• সংসদ সদস্য |
|
আয়তন | |
• মোট | ১,১১৮.৮০ বর্গকিমি (৪৩১.৯৭ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১)[১] | |
• মোট | ১০,১৫,৫১৯ |
• জনঘনত্ব | ৯১০/বর্গকিমি (২,৪০০/বর্গমাইল) |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | ৫৬ % |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
পোস্ট কোড | ৭৭০০ |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ৩০ ৮২ |
ওয়েবসাইট | দাপ্তরিক ওয়েবসাইট |
রাজবাড়ী জেলা বাংলাদেশের মধ্য অঞ্চলে অবস্থিত ঢাকা বিভাগের (প্রস্তাবিত পদ্মা বিভাগের) অন্তর্গত একটি জেলা। ১৯৮৪ সালের ১লা মার্চ তৎকালীন ফরিদপুর জেলার গোয়ালন্দ মহকুমা ফরিদপুর থেকে পৃথক হয়ে রাজবাড়ী জেলা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। ১৮৭০ সালে গড়াই সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হলে ১৮৭১ সালে ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির পূর্ববঙ্গ অংশে রেলপথ কলকাতা হতে গোয়ালন্দ ঘাট (অপর নাম: গ্যাঞ্জেস বন্দর) পর্যন্ত সম্প্রসারিত হয়। ঢাকাসহ বর্তমান বাংলাদেশের পূর্ব অংশে সহজে যাতায়াতের অবধারিত একটি স্থান হওয়ায় একে বাংলার দ্বারপথ বা 'দ্য গেটওয়ে অব বেঙ্গল' নামে অভিহিত করা হত। রাজবাড়ী জেলার উত্তরে পদ্মানদীর ওপারে পাবনা জেলা, পূর্বে পদ্মা নদীর ওপারে মানিকগঞ্জ জেলা, দক্ষিণে ফরিদপুর, মাগুরা ও ঝিনাইদহ জেলা এবং পশ্চিমে কুষ্টিয়া জেলা অবস্থিত।
রাজবাড়ী জেলার বৃহত্তম শহর রাজবাড়ী। রেলপথকে কেন্দ্র করে এ শহর বিকাশ লাভ করে বলে একে রেলের শহর নাম অভিধা দেওয়া হয়। প্রমত্তা পদ্মার গা ঘেঁষে অবস্থিত বলে জেলা প্রশাসন কর্তৃক প্রদত্ত রাজবাড়ী জেলার ব্র্যান্ডিং নাম "পদ্মাকন্যা রাজবাড়ী"। রাজবাড়ী জেলা মূলত কৃষিপ্রধান জেলা। পাট, পেঁয়াজ, আখ, পান, খাদ্যশস্য ইত্যাদি উৎপাদনে রাজবাড়ী জেলা বাংলাদেশে বিশেষ অবদান রাখে।
ইতিহাস[সম্পাদনা]
বর্তমান রাজবাড়ী জেলা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জেলার অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৭৬৫ সালে ইংরেজরা বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার দেওয়ানী লাভের পর উত্তর পশ্চিম ফরিদপুর (বর্তমান রাজবাড়ী জেলার কিয়দংশ) অঞ্চল রাজশাহীর জমিদারীর অন্তর্ভুক্ত ছিল। নাটোর রাজার জমিদারী চিহ্ন হিসেবে রাজবাড়ী জেলার বেলগাছিতে রয়েছে স্নানমঞ্চ, দোলমঞ্চ। পরবর্তীতে এ জেলা এক সময় যশোর জেলার অংশ ছিল। ১৮১১ সালে ফরিদপুর জেলা সৃষ্টি হলে রাজবাড়ীকে এর অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
এছাড়াও রাজবাড়ী জেলার বর্তমান উপজেলাগুলো অতীতে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জেলার অন্তর্ভুক্ত ছিল। পাংশা থানা এক সময় পাবনাজেলার অংশ ছিল। ১৮৫৯ সালে পাংশা ও বালিয়াকান্দিকে নবগঠিত কুমারখালী মহকুমার অধীনে নেয়া হয়। ১৮৭১ সালে গোয়ালন্দ মহকুমা গঠিত হলে পাংশা ও রাজবাড়ী এ নতুন মহকুমার সঙ্গে যুক্ত হয় এবং রাজবাড়ীতে মহকুমা সদর দফতর স্থাপিত হয়। ১৮০৭ সালে ঢাকা জালালপুরের হেড কোয়ার্টার ফরিদপুরে স্থানান্তর করা হয় এবং পাংশা থানা ফরিদপুরের অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৮৫০ সালে লর্ড ডালহৌসির সময় ঢাকা জালালপুর ভেঙ্গে ফরিদপুর জেলা গঠিত হলে গোয়ালন্দ তখন ফরিদপুরের অধীনে চলে যায়। তখন পাংশা, বালিয়াকান্দি পাবনা জেলাধীন ছিল। ১৯৮৩ সালে সরকার প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে প্রতিটি থানাকে মান উন্নীত থানায় রূপান্তরিত করলে রাজবাড়ীকে মান উন্নীত থানা ঘোষণা করা হয়। ১৯৮৩ সালের ১৮ই জুলাই থেকে সরকার অধ্যাদেশ জারী করে সকল মান উন্নীত থানাকে উপজেলায় রূপান্তরিত করার ফলে রাজবাড়ী উপজেলা হয়। গোয়ালন্দ মহকুমার প্রশাসনিক দপ্তর রাজবাড়ীতে থাকায় অবশেষে ১৯৮৪ সালের ১ মার্চ সকল মহকুমাকে জেলা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। সে থেকে রাজবাড়ী জেলায় রূপান্তরিত হয়।
নামকরণের ইতিহাস[সম্পাদনা]
রাজবাড়ী রাজা সূর্য্য কুমারের নামানুসারে নামকরণ করা হয়েছে এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। রাজার নামে রাজবাড়ী। রাজবাড়ীর সেই রাজা নেই। কিন্তু রাজবাড়ী জেলা রাজার সেই ঐতিহ্য ধারণ করে আছে আজো। পদ্মা, হড়াই, গড়াই, চন্দনা, কুমার আর চত্রা পলিবাহিত এক কালের 'বাংলার প্রবেশদ্বার' বলে পরিচিত গোয়ালন্দ মহকুমা আজকের রাজবাড়ী জেলা । ১৯৮৪ সালের ১ লা মার্চ গোয়ালন্দ মহকুমা রাজবাড়ী জেলায় রুপান্তরিত হয় । তবে কখন থেকে ও কোন রাজার নামানুসারে রাজবাড়ী নামটি এসেছে তার সুনির্দিষ্ট ঐতিহাসিক কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। বাংলার রেল ভ্রমণ পুস্তকের (এল.এন. মিশ্র প্রকাশিত ইস্ট বেঙ্গল রেলওয়ে ক্যালকাটা ১৯৩৫) একশ নয় পৃষ্ঠায় রাজবাড়ী সম্বন্ধে যে তথ্য পাওয়া যায় তাতে দেখা যায় যে, ১৬৬৬ খ্রিষ্টাব্দে নবাব শায়েস্তা খান ঢাকায় সুবাদার নিযুক্ত হয়ে আসেন। এ সময় এ অঞ্চলে পর্তুগীজ জলদস্যুদের দমনের জন্যে তিনি সংগ্রাম শাহকে নাওয়ারা প্রধান করে পাঠান। তিনি বানিবহতে স্থায়ীভাবে বসবাস করতেন এবং লালগোলা নামক স্থানে দুর্গ নির্মাণ করেন। এ লালগোলা দুর্গই রাজবাড়ী শহরের কয়েক কিলোমিটার উত্তরে বর্তমানে লালগোলা গ্রাম নামে পরিচিত। সংগ্রাম শাহ্ ও তার পরিবার পরবর্তীকালে বানিবহের নাওয়ারা চৌধুরী হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠেন।
এল.এন. মিশ্র উক্ত পুস্তকে উল্লেখ করেন যে, রাজা সংগ্রাম শাহের রাজদরবার বা রাজকাচারী ও প্রধান নিয়ন্ত্রণকারী অফিস বর্তমান রাজবাড়ী এলাকাকে কাগজে কলমে রাজবাড়ী লিখতেন (লোকমুখে প্রচলিত)। ঐ পুস্তকের শেষের পাতায় রেলওয়ে স্টেশন হিসেবে রাজবাড়ী নামটি লিখিত পাওয়া যায়
উল্লেখ্য যে, রাজবাড়ী রেল স্টেশনটি ১৮৯০ সালে স্থাপিত হয়। ঐতিহাসিক আনন্দনাথ রায় ফরিদপুরের ইতিহাস পুস্তকে বানিবহের বর্ণনায় লিখেছেন - নাওয়ারা চৌধুরীগণ পাঁচথুপি থেকে প্রায় ৩০০ বছর পূর্বে বানিবহে এসে বসবাস শুরু করেন। বানিবহ তখন ছিল জনাকীর্ণ স্থান। বিদ্যাবাগিশ পাড়া, আচার্য পাড়া, ভট্টাচার্য পাড়া, শেনহাটিপাড়া, বসুপাড়া, বেনেপাড়া, নুনেপাড়া নিয়ে ছিল বানিবহ এলাকা। নাওয়ারা চৌধুরীগণের বাড়ি স্বদেশীগণের নিকট রাজবাড়ী নামে অভিহিত ছিল। মতান্তরে রাজা সূর্য কুমারের নামানুসারে রাজবাড়ীর নামকরণ হয়। রাজা সূর্য কুমারের পিতামহ প্রভুরাম নবাব সিরাজ-উদ-দৌলার রাজকর্মচারী থাকাকালীন কোন কারণে ইংরেজদের বিরাগভাজন হলে পলাশীর যুদ্ধের পর লক্ষীকোলে এসে আত্মগোপন করেন। পরে তার পুত্র দ্বিগেন্দ্র প্রসাদ এ অঞ্চলে জমিদারী গড়ে তোলেন। তারই পুত্র রাজা সুর্য কুমার ১৮৮৫ সালে জনহিতকর কাজের জন্য রাজা উপাধি প্রাপ্ত হন। রাজবাড়ী রেল স্টেশন এর নামকরণ করা হয় ১৮৯০ সালে। বিভিন্ন তথ্য হতে জানা যায় যে, রাজবাড়ী রেল স্টেশন এর নামকরণ রাজা সূর্য কুমারের নামানুসারে করার দাবি তোলা হলে বানিবহের জমিদারগণ প্রবল আপত্তি তোলেন। উল্লেখ্য, বর্তমানে যে স্থানটিতে রাজবাড়ী রেল স্টেশন অবস্থিত উক্ত জমির মালিকানা ছিল বানিবহের জমিদারগণের। তাদের প্রতিবাদের কারণেই স্টেশনের নাম রাজবাড়ীই থেকে যায়। এ সকল বিশ্লেষণ থেকে ধারণা করা হয় যে, রাজবাড়ী নামটি বহু পূর্ব থেকেই প্রচলিত ছিল। এলাকার নাওয়ারা প্রধান, জমিদার, প্রতিপত্তিশালী ব্যক্তিগণ রাজা বলে অভিহিত হতেন। তবে রাজা সূর্য কুমার ও তার পূর্ব পুরুষগণের লক্ষীকোলের বাড়ীটি লোকমুখে রাজার বাড়ি বলে সমধিক পরিচিত ছিল। এভাবেই আজকের রাজবাড়ী।
অবস্থান ও আয়তন[সম্পাদনা]
২৩.৪৫° উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯.০৯° পূর্ব দ্রাঘিমাংশে পূর্ব-পশ্চিমে দীর্ঘ এবং উত্তর-দক্ষিণে প্রশস্ত এ জেলার মোট আয়তন ১,০৯২.২৮ বর্গ কিলোমিটার। রাজবাড়ী জেলার উত্তরে পাবনা জেলা, দক্ষিণে ফরিদপুর জেলা ও মাগুরা জেলা, পূর্বে মানিকগঞ্জ জেলা, পশ্চিমে কুষ্টিয়া জেলা এবং ঝিনাইদহ জেলা। রাজবাড়ীকে ঘিরে পদ্মা, চন্দনা, গড়াই নদী ও হড়াই নদী[স্পষ্টকরণ প্রয়োজন], কুমার নদী ও চিত্রা নদী
প্রশাসনিক এলাকাসমূহ[সম্পাদনা]
রাজবাড়ী জেলায় সর্বমোট ৪২টি ইউনিয়ন, ৩ টি পৌরসভা ও ৫টি উপজেলা রয়েছে।[২]
উপজেলা | আয়তন
(একর) |
জনসংখ্যা | পৌরসভার
সংখ্যা |
ইউনিয়নের
সংখ্যা |
সংসদীয় আসন |
---|---|---|---|---|---|
রাজবাড়ী সদর | ৭৮,১৩৫ | ৩,৩১,৬৩১ | ১ টি | ১৪ | রাজবাড়ী-১ |
গোয়ালন্দ | ৩৫,৫৫৭ | ১,১২,৭৩২ | ১ টি | ৪ | রাজবাড়ী-১ |
পাংশা | ৫৭,৮৬৩ | ২,৪০,০৬১ | ১ টি | ১০ | রাজবাড়ী-২ |
কালুখালি | ৩৯,৯৪০ | ১,৫৫,০৪৪ | ০ টি | ৭ | রাজবাড়ী-২ |
বালিয়াকান্দি | ৫৯,১১২ | ২,০৭,০৮৬ | ০ টি | ৭ | রাজবাড়ী-২ |
মোট | ২,৭০,৬০৭ | ১০,৪৬,৫৫৪ | ৩ টি | ৪২ টি |
জনসংখ্যার উপাত্ত[সম্পাদনা]
২০২২ সালের পপুলেশন সেন্সাস প্রিলিমিনারি রিপোর্ট অনুসারে জেলার লিঙ্গানুপাত ৯৭.৭৯
- পুরুষ - ৫,৮১,৯০৭ জন
- নারী - ৬,০৭,৪৯৯ জন
- হিজড়া - ৯৫ জন
ধর্ম[সম্পাদনা]
রাজবাড়ী জেলার ৯০.৬% জনগোষ্ঠী মুসলিম। হিন্দু ধর্মাবলম্বীর সংখ্যা প্রায় ৯.২৯%। খ্রিস্টান রয়েছে প্রায় ০.০১% এবং অন্যন্য মতাবলম্বী রয়েছে প্রায় ০.০৬ %। জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলায় হিন্দু জনসংখ্যা তুলনামূলকভাবে বেশি পরিলক্ষিত হয়। রাজবাড়ী পৌরসভা ও শহিদ ওহাবপুর ইউনিয়নে অল্প সংখ্যন খিস্টান মতাবলম্বীর বাস রয়েছে।
রাজবাড়ী জেলার মসজিদসমূহের মধ্যে শহরের প্রধান সড়কে অবস্থিত বড়ো মসজিদের নাম প্রথমত উল্লেখযোগ্য। এর বাইরে রেলওয়ে স্টেশন রোড জামে মসজিদ, মারোয়াড়ীপট্টি মসজিদ, কাজীকান্দা মসজিদের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। শহরের বাইরে বিশেষত পাংশা ও গোয়ালন্দ অঞ্চলে বেশ কিছু পুরনো ঐতিহ্যবাহী মসজিদ রয়েছে। রাজবাড়ী জেলার বৃহত্তম ইদের জামাত অনুষ্ঠিত হয় শহিদ খুশি রেলওয়ে ময়দান ঈদগাহ মাঠ প্রাঙ্গনে যা স্থানীয়ভাবে রেলের মাঠ নামে পরিচিত।
শহরের হিন্দু মন্দিরসমূহের মধ্যে রাজবাড়ী কেন্দ্রীয় মন্দির (স্থানীয়ভাবে পাটবাজার মন্দির), পুরাতন হরিসভা মন্দির, নতুন হরিসভা মন্দির, হরিতলা মন্দির, স্টেশন রোড কালীবাড়ী ইত্যাদির নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। শহরের বাইরে বালিয়াকান্দি উপজেলার উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মন্দির রয়েছে।
জেলার প্রাচীনতম গির্জা রাজবাড়ী সাইলাস মিড মেমোরিয়াল ব্যাপ্টিস্ট চার্চ ১৯১১ সালে স্থাপিত হয়। এছাড়াও জেলার শহিদ ওহাবপুরে একটি মিশনারি গির্জা রয়েছে।
-
রাজবাড়ী বড় মসজিদ
-
রাজবাড়ীতে শারদীয় দুর্গোৎসব
-
রাজবাড়ী ব্যাপ্টিস্ট চার্চে বড়োদিন উৎসব
অর্থনীতি[সম্পাদনা]
বৃহৎ শিল্পের মধ্যে গোয়ালন্দ টেক্সটাইল মিল নামে একটি সুতাকল, রাজবাড়ী জুট মিল, মোস্তফা প্লাস্টিক লিমিটেড , সুনিপূন অর্গানিক্স নামে একটি রেক্টিফাইড স্পিরিট প্রস্তুতকারী কারখানা অন্যতম । এ ছাড়া শিল্পনগরী বিসিক এর অধীনে বেশ কিছু ক্ষুদ্র শিল্প কারখানা রয়েছে । মূলতঃ কৃষি নির্ভর হলেও চাকরি, ব্যবসা,করা এ জেলার মানুষের অন্যতম পেশা । কামার, কুমার, তাতী, জেলে ও হরিজন প্রভৃতি পেশার লোকজনও এ জেলায় বসবাস করে । কিছুসংখ্যক অবাঙ্গালী পরিবারও এ জেলায় বসবাস করে ।
রাজবাড়ি জেলার অর্থনীতি কৃষিনির্ভর। জেলাটিতে ধান, পাট, আখ, গম, বাদাম, তিল, যব, ভুট্টা, ইক্ষু, পিঁয়াজ, তামাক এবং ডাল জাতীয় কৃষিজাত পণ্য উৎপাদিত হয় তাছাড়া কলা এবং মাছ চাষ করা হয়।তাছাড়া রাজবাড়ী জেলা চমচমের জন্য বিশেষ ভাবে পরিচিত। জেলাটি শিল্পে সমৃদ্ধ না হলেও অর্থনীতিতে অবদান রয়েছে।
শিক্ষা[সম্পাদনা]
উল্লেখযোগ্য কলেজ ও বিদ্যালয় সমূহ হলোঃ
- সুরাজ মোহিনী ইনস্টিটিউট স্কুল এন্ড কলেজ, খানখানাপুর
- রাজবাড়ী সরকারি কলেজ
- রাজবাড়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়
- রাজবাড়ী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়
- শেরে বাংলা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়।
- টাউন মক্তব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
- সরকারী টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ রাজবাড়ী
- সরকারী মহিলা কলেজ, রাজবাড়ী
- ডক্টর আবুল হোসেন কলেজ
- ডক্টর কাজী মোতাহার হোসেন ডিগ্রি কলেজ হাবাসপুর,পাংশা
- পাংশা সরকারি কলেজ
- ইয়াকুব আলী চৌধুরী বিদ্যাপীঠ পাংশা
- পাংশা জর্জ পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়
- পাংশা পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়
- কলিমহর জহুরুন্নেছা ডিগ্রি কলেজ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় পাংশা
- মীর মশাররফ হোসেন ডিগ্রি কলেজ
- মাঝবাড়ী জাহানারা বেগম কলেজ
- কালুখালি সরকারি কলেজ
- বালিয়াকান্দি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়
- রাজধরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়
- বহরপুর উচ্চ বিদ্যালয়
- যশাই উচ্চ বিদ্যালয়,যশাই,পাংশা
চিত্তাকর্ষক স্থান[সম্পাদনা]
- রাজবাড়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের লাল ভবন - ১৮৭৮ সালে বাণিবহের জমিদার গিরিজা শংকর মজুমদার ও তার ভাই অভয় শংকর মজুমদার প্রতিষ্ঠা করেন; যা ইতোমধ্যে প্রত্নতত্ত অধিদপ্তর এই স্থাপনাকে সংরক্ষণের প্রক্রিয়া শুরু করেছে;[৩]
- বিশই সাওরাইল জমিদার বাড়ি- রাজবাড়ী জেলার অন্যতম পুরাতন এবং সমৃদ্ধ জমিদার বাড়ি। এই জমিদারদের তৈরি ১৮১৯ সালের বিশই সাওরাইল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় দেশের অন্যতম প্রাচীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
- মেইন স্ট্রিট
- রাজবাড়ি সরকারি কলেজ
- ধুঞ্চি গোদার বাজার (পদ্মানদী)
- শাহ পাহলোয়ানের মাজার;
- দাদ্শী মাজার শরীফ - রাজবাড়ী শহর থেকে ১ কি.মি. পূর্বে;
- জামাই পাগলের মাজার - রাজবাড়ী শহরের ৬ কি.মি. দক্ষিণ-পূর্বে আহলাদিপুর মোড়;
- নলিয়া জোড় বাংলা মন্দির - বালিয়াকান্দি থানার নলিয়া গ্রাম;
- আবু হেনা পার্ক বাহাদুরপুর, পাংশা, রাজবাড়ী
- সমাধিনগর মঠ - বালিয়াকান্দি উপজেলার জঙ্গল ইউনিয়ন;
- রথখোলা সানমঞ্চ - বেলগাছি;
- নীলকুঠি;
- মীর মশাররফ হোসেন স্মৃতি কেন্দ্র - পদমদী;
- দৌলতদিয়া ঘাট;
- চাঁদ সওদাগরের ঢিবি;
- কল্যাণদিঘি;
- গোয়ালন্দ ঘাট
- মুকুন্দিয়া জমিদার বাড়ি
- মাজবাড়ী গ্রাম, সোনাপুর বাজার
- আবাসন, বহরপুর
- বিল পুঠিয়া,কোলারহাট
- বারেক গ্রাম
- মাশালিয়া ব্রিজ
- রতনদিয়া সুইচ গেট
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব[সম্পাদনা]
- কাজী মোতাহার হোসেন বাংলাদেশি পরিসংখ্যানবিদ, অনুবাদক, সাহিত্যিক, দাবাড়ু, সিতারা-ই-ইমতিয়াজ, জাতীয় অধ্যাপক
- কাজী আনোয়ার হোসেন লেখক
- রাজা সূর্য কুমার
- খবিরুজ্জামান (বীর বিক্রম)
- কাজী আবদুল ওদুদ কৃতী অধ্যাপক, চিন্তাশীল বাঙালি প্রাবন্ধিক, ঔপন্যাসিক, বিশিষ্ট সমালোচক, নাট্যকার ও জীবনীকার
- মৌলভি তমিজউদ্দিন খান রাজনীতিবিদ ও পাকিস্তান গণপরিষদ ও জাতীয় পরিষদের সাবেক স্পিকার
- মীর মোশাররফ হোসেন ঔপন্যাসিক, নাট্যকার ও প্রাবন্ধিক,
- রশিদ চৌধুরী চিত্রশিল্পী এবং অধ্যাপক,
- যতীন্দ্রমোহন রায় ব্রিটিশ বিরোধী বাঙালি বিপ্লবী
- সন্তোষকুমার ঘোষ একজন বিখ্যাত সাহিত্যিক এবং সাংবাদিক
- নূর ইমরান মিঠু , চলচ্চিত্র নির্মাতা
- রোকনুজ্জামান খান লেখক ও সংগঠক ছিলেন
- রাজিয়া খান বাংলাদেশী সাহিত্যিক
- রোজিনা (অভিনেত্রী)
- কাঙ্গালিনী সুফিয়া বাংলাদেশের লোকসঙ্গীত শিল্পী
- শ্রীরিশ চন্দ্র দেব দাস, রাজবাড়ী জেলার বিখ্যাত জমিদার। পুরান ঢাকার বিখ্যাত শ্রীশ দাস লেন তাঁর নামেই নামকরণ করা হয়। তাঁর জমিদারি পরিচালিত হতো বিশই সাওরাইল জমিদার বাড়ি থেকে।
- মোহাম্মদ এয়াকুব আলী চৌধুরী বাংলাভাষার একজন লেখক এবং সাংবাদিক ।[৪]
- সোহেলী আক্তার একজন বাংলাদেশী মহিলা ক্রিকেটার [৫]
- মোঃ জিল্লুল হাকিম রেলপথ মন্ত্রী
- মনসুর উল করিম, একুশে পদক প্রাপ্ত চিত্রশিল্পী, শিক্ষক
- সাইয়েদ জামিল, কবি
মুক্তিযুদ্ধে রাজবাড়ী[সম্পাদনা]
মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ এ জেলায় একটি সংগ্রাম পরিষদ গঠন করা হয়। ২১ ও ২২ এপ্রিল পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে পর্যায়ক্রমে ২ জন এবং ৪ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। পাকবাহিনী পাংশা উপজেলার রামকোল ও মাথুরাপুর গ্রামের ১০ জন লোককে হত্যা করে এবং ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়। নভেম্বর মাসে বালিয়াকান্দি উপজেলায় পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে বেশকিছু অস্ত্রশস্ত্র মুক্তিযোদ্ধাদের হস্তগত হয়। এছাড়াও নভেম্বর মাসে রাজবাড়ী সদর উপজেলার আলহাদীপুর গ্রামে পাকবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে ৯ জন পাকসেনা নিহত হয়। জেলার ৫টি স্থানে গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেছেঃ
(১) গোয়ালন্দ
(২) খানখানাপুর
(৩) পাংশার হাবাসপুরের চর এলাকা
(৪) কালুখালি রেল ষ্টেশন সংলগ্ন (প্লাটফরমের পূর্বপ্রান্তে - দক্ষিণ পার্শে)
(৫) বালিয়াকান্দি)
আরও দেখুন[সম্পাদনা]
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- ↑ বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন, ২০১৪)। "এক নজরে রাজবাড়ী"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ১২ নভেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুন ২০১৪। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - ↑ বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (ফেব্রুয়ারি, ২০১৫)। "রাজবাড়ী জেলার উপজেলাসমূহের ইউনিয়নগুলোর তালিকা"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ১৬ নভেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - ↑ বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (ফেব্রুয়ারি, ২০১৫)। "রাজবাড়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যাড়য়ের লাল ভবনের ঐতিহ্য"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - ↑ বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (ফেব্রুয়ারি ২০১৫)। "প্রখ্যাত ব্যক্তিত্ব"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ http://cricketarchive.com/Archive/Players/425/425398/425398.html
বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]
এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |