ভঁরালী নামঘর
বিশ্বকোষীয় পর্যায়ে যেতে এই নিবন্ধে আরো বেশি অন্য নিবন্ধের সাথে সংযোগ করা প্রয়োজন। |
ঐতিহ্যমণ্ডিত ভঁরালী নামঘর ভরালী গাওঁতে অবস্থিত। হাটবর থেকে ২ কিলোমিটার দূরে আছে ভরালী গাওঁ। নগাওঁ জেলার কলিয়াবর মহকুমার পূর্ব প্রান্তের প্রাচীন ঐতিহ্যে ভরপূর, আসাম ইতিহাসের উল্লেখযোগ্য স্থান ভরালী গাওঁ। গাওঁটির অধিকাংশ মানুষই কৃষিজীবী এবং একশরনীয় ধর্মে দীক্ষিত। চিরসবুজ প্রাকৃতিক পরিবেশ, ছোট ছোট জান-জূরি, সবুজ পথার, ছোট-বড়ো রাজাদিনীয়া পূকুরগুলি, বন্য পক্ষীদের আনন্দের কলরব, ভোরের চিকনি চিয়াং পাহাড়ের ফাঁকে ফাঁকে সূর্যোদয়ের মনোরম দৃশ্য এবং পশ্চিম আকাশে ডুব যাওয়া সূর্যের আভার দৃশ্য অপরূপ। ভোর থেকে গোধূলি পর্যন্ত গ্রাম্য পরিবেশ সজীব করে রাখা গ্রাম এক আনন্দর পরিবেশ- শ শ মানূহ নামঘর পর্যন্ত এসেছে এবং নামঘরের ভাগবত পাঠে উৎসবমূখর করে তূলিছে নামঘরের চৌপাশ, ভক্তপ্রাণ যাত্রীদের হৃদয়।
ইতিহাস[সম্পাদনা]
ভঁরালী নামঘরটি আগে ভঁরালী গাঁওয়ের পূর্ব-দক্ষিণের বামগাঁওয়ে (দৌল পূখূরী) ছিল। নামঘরে ভাগবত প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বাপূরামদেউ। একটি সময় ব্রহ্মপুত্রের বাড়তি জল চটাই আলির কাছের স্থানগুলি ডুবিয়ে ফেলায় উঁচু স্থানে গ্রাম করেছিল। মান সেনা বামগাঁওয়ের নামঘর পূরি ফেলায় তাঁরা ভঁরালী রাজআধিকারিকের কাছে গ্রাম করে নামঘর প্রতিষ্ঠা করেন। ভঁরালী রাজআধিকারিকদের নাম অনুসারে নামঘরটির নাম হয় ভঁরালী নামঘর। নতুনভাবে নামঘর প্রতিষ্ঠার করা প্রায় ২০০ বছর হয়েছে। এখন পর্যন্ত উক্ত স্থানে নামঘরটি চারবার পুনরায় মেরামতি করা হয়েছে। নামঘরের বৈশিষ্টপূর্ণ সম্পদটি হচ্ছে তুলসী খূঁটিটি। খূঁটিটির মধ্যের অংশ উই পোকায় নষ্ট করলেও গাঁওয়ের ভক্ত-প্রাণ নাগরিকরা অবশিষ্ট অংশটি অতি ভক্তিভাবে সিংহাসনের কাছে সংরক্ষণ করে রেখেছেন। আসামের সকল স্থান থেকে ভক্তরা এসে ধুপ, বাতি দিয়ে মনের কামনা পূর্ণ করে সার্থকতা লাভ করেছেন। এটি ঠিক যে, নামঘরের চৌহদ্দিতে ঢুকলে কতটা সময় সেখানে অতিবাহিত করেন তা বলতে পারা যায় না। শান্তিতে সেখানে সময় অতিবাহিত করতে পারেন। গাঁওয়ের আগেকার বয়োজেষ্ঠরা বলে গিয়েছিলেন – নামঘরটি বুঢ়াবড়োদের বিশ্রাম স্থল। কখনবা রাতে বগা সাজপারে বগা ঘোড়ায় ওঠে পরিভ্রমণ করে নামঘরে বিশ্রাম নেন। ঘোড়ার খট্ খট্ শব্দের প্রমাণ পান। এটিও ঠিক আজকার এই বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তির দ্রুত সম্প্রসারণে এই তথ্য অলৌকিক বা অসত্য বলে গণ্য করলেও নামঘরে ভগবানের ঐশ্বরিক শক্তির প্রমাণ পাওয়াটি সত্য বলে মনে করা হয়।
সাংস্কৃতিক উৎসব[সম্পাদনা]
প্রতিবছর ভঁরালী নামঘরে মকর সংক্রান্তি বা মাঘী পূর্ণিমা তিথি দুইদিনের কার্যসূচীতে উদ্যাপন করে আসছে। আবার ব’হাগের বা জৈষ্ঠের পূর্ণিমায় গাঁওয়ের নাগরিকরা ভাওনা অনুষ্ঠিত করেন। মাঘী পূর্ণিমার সামরণী অনুষ্ঠান এক গাম্ভীর্যপূর্ণ অনুষ্ঠানে পরিবর্তন হয়। ভঁরালী নামঘরে গুরু দুজনার তিথিতে ভাওনা-সবাহ করাটি একটি বড়ো পরম্পরা। ভাদ্র মাসে নামঘরে দশম স্কন্ধ ভাগবত পাঠ করা হয়। গাঁওয়ের আইদেরও ভাদ্র মাসে হরিনাম-কীর্তন করা ঐতিহ্য পুরানো।
ছবি গ্যালারী[সম্পাদনা]
-
Entrance Gate of Bharali Naamghar
-
Naamghar Monikut
-
Artist applying makeup for Bhaona
বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]
১. তথ্যচিত্র Maghi Purnima Utsav at Bharali Namghar
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- ভঁরালী নামঘর এবং বুরজ্ঞী গরকা কলিয়াবর - গজেন্দ্র মোহন হাজারিকা