ব্রিজটাউন

স্থানাঙ্ক: ১৩°০৫′৫১″ উত্তর ৫৯°৩৭′০০″ পশ্চিম / ১৩.০৯৭৫০° উত্তর ৫৯.৬১৬৬৭° পশ্চিম / 13.09750; -59.61667
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ব্রিজটাউন শহর
ব্রিজটাউন
রাজধানী শহর
উপরে: কার্লাইল উপসাগরথেকে ব্রিজটাউনের দৃশ্য; মাঝখানে: ব্রিজটাউন নগরকেন্দ্র, সংসদ ভবন; জাতীয় বীর চত্বর, সেন্ট মাইকেল ও অল এঞ্জেলস মহাগির্জা
ব্রিজটাউন শহরের অফিসিয়াল সীলমোহর
সীলমোহর
ব্রিজটাউন-এর অবস্থান (লাল রঙে চিহ্নিত)
ব্রিজটাউন-এর অবস্থান (লাল রঙে চিহ্নিত)
ব্রিজটাউন শহর বার্বাডোস-এ অবস্থিত
ব্রিজটাউন শহর
ব্রিজটাউন শহর
বার্বাডোস প্যারিশের মানচিত্রে অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ১৩°০৫′৫১″ উত্তর ৫৯°৩৭′০০″ পশ্চিম / ১৩.০৯৭৫০° উত্তর ৫৯.৬১৬৬৭° পশ্চিম / 13.09750; -59.61667
দেশবার্বাডোস
প্যারিশসেন্ট মাইকেল
প্রতিষ্ঠিত১৬২৮
শহর হিসেবে স্বীকৃত১৮২৪
আয়তন
 • মোট১৫ বর্গমাইল (৪০ বর্গকিমি)
উচ্চতা[১]৩ ফুট (১ মিটার)
জনসংখ্যা (২০১৪)
 • মোট১,১০,০০০
 • জনঘনত্ব৭,৩০০/বর্গমাইল (২,৮০০/বর্গকিমি)
সময় অঞ্চলআমাস (ইউটিসি−৪:০০)
এলাকা কোড+১ ২৪৬
প্রাতিষ্ঠানিক নামঐতিহাসিক ব্রিজটাউন এবং এর গ্যারিসন
ধরনসাংস্কৃতিক
মানক২য়, ৩য়, ৪র্থ
অন্তর্ভুক্তির তারিখ২০১১
রেফারেন্স নং১৩৭৬
অঞ্চলআমেরিকা

ব্রিজটাউন ক্যারিবীয় সাগরের দ্বীপরাষ্ট্র বার্বাডোসের রাজধানী ও বৃহত্তম শহর। অতীতে "দ্য টাউন অভ সেন্ট মাইকেল" নামেও পরিচিত শহরটি বার্বাডোস দ্বীপের দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্তে কার্লাইল উপসাগরের প্রশস্ত বাঁকে অবস্থিত। গভীর জলের পোতাশ্রয়বিশিষ্ট (১৩°০৬′২২″ উত্তর ৫৯°৩৭′৫৫″ পশ্চিম / ১৩.১০৬° উত্তর ৫৯.৬৩২° পশ্চিম / 13.106; -59.632 (Bridgetown port)) এই শহরটি দুই দিকে একাধিক কিলোমিটার দীর্ঘ একটি সংকীর্ণ উপকূলীয় নির্মিত এলাকা নিয়ে গঠিত। ব্রিজটাউন দেশটির একমাত্র বৃহৎ পৌর এলাকা, তাই দেশটির প্রায় অর্ধেক লোক এই ব্রিজটাউন এলাকাতে বাস করে। বৃহত্তর ব্রিজটাউন পৌর এলাকাটি বার্বাডোসের সেন্ট মাইকেল প্যারিশের ভেতরে অবস্থিত। স্থানীয়রা কদাচিৎ এটিকে "দ্য সিটি" বা আরও সরলভাবে কেবল "টাউন" নামে ডেকে থাকে। ২০১৪ সালের হিসাব অনুযায়ী বৃহত্তর ব্রিজটাউন মহানগর এলাকাতে প্রায় ১ লক্ষ ১০ হাজার অধিবাসীর বাস ছিল।

ব্রিজটাউনে বার্বাডোসের একমাত্র সমুদ্র বন্দরটি অবস্থিত। গভীর জলের পোতাশ্রয়টিতে মালবাহী জাহাজ ও প্রমোদতরী (ক্রুজ লাইনার) ভেড়ার "বার্থ" আছে, এছাড়াও এখান থেকে পাইকারি হারে চিনি জাহাজযোগে প্রেরণের সুবন্দোবস্ত আছে ও যাত্রীদের জন্য একটি বৃহৎ "টার্মিনাল" আছে। বন্দর থেকে জাহাজযোগে মাল প্রেরণ, "অফশোর" ব্যাংকিং ও অন্যান্য আর্থিক সেবা এবং বর্ধনশীল পর্যটন ব্রিজটাউনের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। শহরের কারখানাতে চিনি শোধন ও রাম নামক মদ উৎপাদন করা হয়। শহর থেকে চিনি, বস্ত্র ও বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম রপ্তানি করা হয়। উল্টোদিকে ভারী যন্ত্রপাতি ও পরিবহন সরঞ্জাম আমদানি করা হয়। বার্বাডোসের প্রশাসনিক কেন্দ্র বলে ব্রিজটাউনে দেশের সিংহভাগ সরকারি দপ্তর ও মন্ত্রণালয়গুলি অবস্থিত। এছাড়া শহরটি দেশটির পাইকারি ও খুচরা ব্যবসা-বাণিজ্যের কেন্দ্র।

বার্বাডোস একটি ব্রিটিশ উপনিবেশ ছিল। ১৬২৮ সালে ৬৪ জন ব্রিটিশ অভিভাসী "ইন্ডিয়ান ব্রিজ" নামে এই লোকালয়টি প্রতিষ্ঠা করে; তাদের নেতা ছিলেন চার্লস উলভারস্টোন। সেসময় এটি একটি পুঁতিগন্ধময় জলাভূমির পাশে অবস্থিত একটি অপরিকল্পিত শহর ছিল বলে দর্শনার্থীরা এর অনেক সমালোচনা করতে। ১৬৬০ সাল নাগাদ শহরটি সেন্ট মাইকেলস টাউন নামে পরিচিতি লাভ করে এবং ১৯শ শতক পর্যন্ত ঐ নামেই পরিচিত ছিল। শহরটি অগ্নিকাণ্ডে একাধিকবার ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। ১৮২৪ সালে বার্বাডোস ইঙ্গমণ্ডলীয় ধর্মপ্রদেশ "বার্বাডোস ও লিওয়ার্ড দ্বীপপুঞ্জের" আসনে পরিণত হয় এবং একটি নগরীর মর্যাদা লাভ করে। ১৮৫৪ সালে এখানে কলেরা রোগে প্রায় ২০ হাজার লোকের মৃত্যু হয়। ১৯৬৬ সালে বার্বাডোস স্বাধীনতা লাভ করলে ব্রিজটাউন সেটির রাজধানীতে পরিণত হয়। ২০১১ সালে ইউনেস্কো ব্রিজটাউনের ঐতিহাসিক এলাকাটিকে একটি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে ঘোষণা করে।

বর্তমান ঘনজনবসতিপূর্ণ ব্রিজটাউন শহরটি ছবির মতো সুন্দর পুরাতন আর নতুনের মিশ্রণ। ১৭৮০ সালের হারিকেন ঘূর্ণিঝড়ে বিধ্বস্ত একটি ভবনকে প্রতিস্থাপন করতে যে ভাগ্যের খেলা বা লটারির আয়োজন করা হয়, সেখান থেকে অর্জিত অর্থ দিয়ে প্রবাল শিলা দিয়ে সাধু মাইকেলের ইঙ্গমণ্ডলীয় (অ্যাংলিকান) মহাগির্জাটি (ক্যাথেড্রাল) নির্মাণ করা হয়। মহাগির্জার উত্তর-পূর্ব দিকে কুইনস পার্ক উদ্যানে অবস্থিত ১৮শ শতকের শুরুর দিকে নির্মিত জেনারেলস হাউজ নামক ভবনটিকে বর্তমানে একটি নাট্যশালা ও শিল্পকলা প্রদর্শনীঘর হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। আধুনিক বৃহৎ সরকারি মন্ত্রণালয় ভবনগুলি কার্লাইল বে উপসাগরের তীরে অবস্থিত। বে স্ট্রিট সড়ক থেকে স্বাধীনতা খিলানের (ইনডিপেন্ডেন্স আর্চ) মধ্য দিয়ে ন্যাশনাল হিরোস স্কয়ার (প্রাক্তন ট্রাফালগার স্কয়ার) নাম চত্বরের একটি দৃশ্য দেখতে পাওয়া যায়। চত্বরে ব্রিটিশ অ্যাডমিরাল লর্ড নেলসনের একটি মূর্তি আছে। চত্বরের এক পাশে ১৯শ শতকের সরকারি ভবনগুলি অবস্থিত, যেখানে সংসদের অধিবেশন বসে। অন্যান্য উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থানের মধ্যে গ্যারিসন সাভানা, যেটি একদা ব্রিজটাউনে নিযুক্ত ব্রিটিশ সৈন্যদের কুচকাওয়াজের মাঠ ছিল, তবে বর্তমানে এটিকে ঘোড়দৌড় ও অন্যান্য ক্রীড়া অনুষ্ঠানের জন্য ব্যবহার করা হয়। কেনসিংটন ওভাল একটি ঐতিহাসিক ক্রিকেট খেলার মাঠ যেখানে ১৮৯৫ সাল থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার আয়োজন করা হয়ে আসছে; ২০০৭ সালের আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপটির শিরোপা নির্ধারণী খেলাটিও এখানে আয়োজিত হয়েছিল। ব্রিজটাউনে ১৬৫৪ সালে নির্মিত নিধে নামের একটি ইহুদি মন্দির আছে, যা দুই আমেরিকার মহাদেশের মধ্যে প্রাচীনতম ইহুদি মন্দিরগুলির একটি। একটি হারিকেন ঘূর্ণিঝড়ে ধ্বংস হয়ে যাবার পরে এটিকে ১৮৩৩ সালে পুনর্নির্মাণ করা হয়। এখানে পশ্চিম ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইউনিভার্সিটি অভ ওয়েস্ট ইন্ডিজ) ১৯৬৩ সালে প্রতিষ্ঠতি কেভ হিল শিক্ষাঙ্গন (ক্যাম্পাস) অবস্থিত। আরেকটি দর্শনীয় স্থান হল "ক্যারিনেজ" নামক জাহাজ মেরামতির ঐতিহাসিক আঙ্গিনা।

বার্বাডোসের গ্র্যান্টলি অ্যাডামস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি ব্রিজটাউন নগরকেন্দ্র থেকে ১৬ কিলোমিটার (১০ মা) দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত। এখান থেকে যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলের প্রধান শহরগুলির বিমানপথে প্রাত্যহিক উড়াল (ফ্লাইট) বিদ্যমান।

বার্বাডোসে অবস্থিত কূটনৈতিক মিশন[সম্পাদনা]

যমজ শহর - বোন শহর[সম্পাদনা]

ব্রিজটাউন হ'ল যমজ এর সাথে:

উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি[সম্পাদনা]

স্টিডি বোনেটের পতাকা এর ঐতিহ্যবাহী চিত্র।

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Population of Bridgetown, Barbados"। Population.mongabay.com। ২০১২-০১-১৮। ৯ জুন ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৭-২৪ 
  2. Miller, Dame Billie (২০০৪-০৭-০৯)। "Remarks by Senior Minister Dame Billie Miller at the Signing Ceremony on the Occasion of the Twinning of Bridgetown, Nova Scotia and Bridgetown, Barbados" (পিডিএফ)Foreign.gov.bbMinistry of Foreign Affairs, Foreign Trade and International Business (Barbados)। Bridgetown, N.S., Canada। ২০০৭-০৯-২৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০১-১৯ 
  3. "Twinning | Hackney Council"hackney.gov.uk। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-০২ 
  4. "Wilmington's Sister Cities"Sister Cities Association of Wilmington। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১২-০৩ 
  5. Fox, Scarlett (২২ অক্টোবর ২০১২)। "Newsome Coach Orlando Greene: From Caribbean To Olympian"। সংগ্রহের তারিখ ২৪ মার্চ ২০১৬ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]