বাংলাদেশের শিল্পীদের চিত্র ও অঙ্কন প্রদর্শনী - ১৯৭১
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলা কালে এদেশের চিত্র শিল্পীরা ভারতে বাংলাদেশের শিল্পীদের চিত্র ও অঙ্কন প্রদর্শনী - ১৯৭১ শিরোনামে একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করেন যার মাধ্যমে তহবিল গঠনের পাশাপাশি বিশ্ব বিবেকের কাছে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ভয়াবহতা তুলে ধরা হয় এবং বহি:বিশ্বের নিকট সাহায্য ও সহযোগীতা কামনা করা হয়।[১]
ইতিহাস[সম্পাদনা]
বাংলাদেশের চিত্রশিল্পীদের একটি বড় অংশ স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে ভারতে আশ্রয় নেন এবং সেখানে থেকে এদেশের মুক্তিকামী মানুষের জন্য কিছু করার চেষ্টা করেন। সেসময় তাঁদের সহায়তা করার জন্য কলকাতা কেন্দ্রিক সাহিত্যিক, শিল্পী, বুদ্বিজীবীদের নিয়ে গড়ে ওঠে “বাংলাদেশ সহায়ক শিল্পী-সাহিত্যিক-বুদ্ধিজীবী সমিতি”। এই সমিতি বাংলাদেশের এইসব চিত্রশিল্পীদের নিয়ে একটি চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করেন; যার দ্বারা এদেশের শিল্পীরা তাঁদের চিত্রকলার মাধ্যমে স্বদেশ-বন্দনা ও যুদ্ধে পাক-হানাদার বাহিনী ও তাদের সহযোগীদের নির্মম অত্যাচার, গণহত্যা, ধর্ষণ এবং এগুলোর বিরুদ্ধে এদেশের মুক্তিকামী জনতার প্রতিরোধের চিত্র ফুটিয়ে তোলেন।।
অংশগ্রহণকারী শিল্পী ও তাঁদের শিল্পকর্ম[সম্পাদনা]
এই প্রদর্শনীতে বাংলাদেশের ১৭ জন শিল্পীর ৬৬ টি চিত্রকর্ম স্থান লাভ করে:
- অঞ্জন বনিক – রক্তাক্ত বাংলাদেশ
- আবুল বারাক আলভী – মা ও শিশু
- কাজী গিয়াস উদ্দিন – শরনার্থী-১, শরনার্থী-২, শরনার্থী-৩, শরনার্থী-৪, শরনার্থী-৫, দুর্যোগ
- কামরুল হাসান – কম্পোজিশন-১, কম্পোজিশন-২, বাংলাদেশ- গনহত্যার আগে, বাংলাদেশ- গনহত্যার পরে, এপ্রিলের পূর্ণ চাঁদ
- গোলাম মোহাম্মদ- সূর্য বিলোপ
- চন্দ্র শেখর দে – নিষ্পাপ শিকার, চঞ্চল পাখি, স্কেচ-১, স্কেচ- ২
- দেবদাস চক্রবর্তী – ক্রুশবিদ্ধ মানবতা, স্বাধীনতার সৈনিক
- নাসির বিশ্বাস – ধর্ষন
- নিতুন কুণ্ডু- বাংলাদেশ’৭১, সাহায্যের জন্য কান্না
- প্রাণেশ মন্ডল – শরনার্থী, সবুজ সোনালী জমিতে এলোপাতাড়ি গুলি, স্কেচ-১, স্কেচ- ২
- বরুন মজুমদার – বাংলাদেশ
- বিজয় সেন- জেনোসাইড, স্কেচ-১, স্কেচ- ২
- বীরেন সোম – কান্না, দুঃস্বপ্ন, স্কেচ-১, স্কেচ- ২
- মুস্তফা মনোয়ার – একী ভবন, গর্বিতা মা, নারী এবং পশু, বাংলাদেশ-১, বাংলাদেশ-২, বাংলাদেশ-৩, স্মৃতি, ভূমি
- রঞ্জিত নিয়োগী – ভয় এবং মৃত্যু, কালো দিগন্ত, মানবতার অবমাননা, উদিত সূর্য আমাদের, স্বাধীনতার জন্য
- স্বপন চৌধুরী - বাংলাদেশ- ১, বাংলাদেশ- ২, বাংলাদেশ-৩, স্কেচ-১, স্কেচ- ২, স্কেচ-৩, স্কেচ- ৪, স্কেচ-৫, স্কেচ- ৬, স্কেচ-৭, স্কেচ- ৮, স্কেচ-৯, স্কেচ- ১০
- হাসি চক্রবর্তী – বাংলাদেশ-১, বাংলাদেশ-২, বাংলাদেশ-৩, বাংলাদেশ-৪, বাংলাদেশ-৫
প্রদর্শনীর স্থান ও তারিখ[সম্পাদনা]
ঐতিহাসিক এই প্রদর্শনীটি প্রথমে কলকাতায় এবং পরে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত হয়। কলকাতায় এই প্রদর্শনীটি বিড়লা একাডেমীতে অনুষ্ঠিত হয়।[১] এটি সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে শুরু হয়ে ১৩ তারিখ পর্যন্ত চলে।