বাঁকুড়া দামোদর রেলওয়ে

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

বাঁকুড়া দামোদর রেলওয়ে (সংক্ষেপে বিডিআর) বা বাঁকুড়া দামোদর নদী উপত্যকা রেলওয়ে ছিল ম্যাকলেওড’স লাইট রেলওয়েজ কোম্পানি দ্বারা পরিচালিত একটি ন্যারো গেজ রেল লাইন। এই লাইন বর্তমান পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়াবর্ধমান জেলাদুটির মধ্যে সংযোগ রক্ষা করত।

১৯১৪ সালের ৩০ মার্চ বাঁকুড়া-দামোদর রিভার রেলওয়ে কোম্পানি নথিভুক্ত হয়। এই বছরই ১ মে লাইন নির্মাণের কাজ শুরু হয়। ১৯১৬-১৭ আর্থিক বছরে এই ৭৬০ মিমি (৩০ ইঞ্চি) ন্যারো গেজ লাইনটি নির্মিত হয়।[১] ১৯১৬ সালের ১৫ ডিসেম্বর বাঁকুড়া থেকে রায়না পর্যন্ত ৯৬ কিলোমিটার (৬০ মাইল) দীর্ঘ লাইনটি চালু হয়।[২]

বিডিআর-এর স্ট্যান্ডার্ড লোকোমোটিভ ছিল একটি শক্তিশালী ০-৬-৪টি ডিজাইন। কিন্তু প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় বেগনালের স্ট্যাফোর্ড কোম্পানি থেকে কয়েকটি ২-৬-২টি ইঞ্জিনও আনা হয়। ঠিক এই ধরনের ইঞ্জিনই ইজিপ্সিয়ান ডেল্টা লাইট রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে দেওয়া হয়েছিল। এই কারণে এই শ্রেণীর ইঞ্জিনের নাম হয় ডেল্টা ক্লাস। ১৯৫৩ সালেও এই ধরনের ইঞ্জিনই আনা হয়। দুটি সেন্টিনেল লোকোমোটিভও ছিল। এর একটি (৮ নং) নতুন দিল্লির জাতীয় রেল সংগ্রহালয়ে রক্ষিত আছে। ন্যারো গেজ লাইনটির স্টিম লোকো শেডটি বাঁকুড়ায় ছিল।[১]

১৯৬৭ সালের জুলাই মাসে দক্ষিণ পূর্ব রেল বিডিআর অধিগ্রহণ করে নেয়।[১] দীর্ঘকাল লোকসানে চলার পর ১৯৯৫ সালে এই রেল উঠিয়ে দেওয়া হয়।[৩]

এনডিএ শাসনকালে তদনীন্তন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিডিআরকে পুনরুজ্জীবিত করে তোলার সিদ্ধান্ত নেন। পুরনো লাইনটিকে ব্রড গেজে রূপান্তরিত করে মশাগ্রামে এটিকে হাওড়া-বর্ধমান কর্ড লাইনের সঙ্গে যুক্ত করার পরিকল্পনা গৃহীত হয়। এই কাজ তিনটি পর্যায়ে হওয়ার কথা ছিল: বাঁকুড়া-সোনামুখী, সোনামুখী-রায়নগর ও রায়নগর-মশাগ্রাম।[৪]

২০০৫ সালে ৪১ কিলোমিটার (২৫ মাইল) দীর্ঘ বাঁকুড়া-সোনামুখী লাইনটি চালু হয়।[৫] ২০০৮ সালে ৫৫ কিলোমিটার (৩৪ মাইল) দীর্ঘ সোনামুখী-রায়নগর ব্রড গেজ অংশটি চালু হয়।[৩] রায়নগর-মশাগ্রামের মধ্যে ২০ কিলোমিটার (১২ মাইল) দীর্ঘ লাইনটির কাজ শেষ হলেই হাওড়া থেকে বাঁকুড়ার দূরত্ব ২৩১ কিলোমিটার (১৪৪ মাইল) (ভায়া খড়্গপুর) থেকে কমে দাঁড়াবে ১৮৫ কিলোমিটার (১১৫ মাইল)। শেষ অংশের লাইন নির্মাণের অঙ্গ হিসেবে দামোদরের উপর একটি সেতুও নির্মিত হচ্ছে।[৩][৬]

বাঁকুড়া-ছাতনা-মুকুটমণিপুরের মধ্যে একটি ৪৮.২৫ কিলোমিটার (২৯.৯৮ মাইল) দীর্ঘ ব্রড গেজ লাইন নির্মাণের কাজও শুরু হয়েছে।[৭]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Bankura-Damodar Railway (BDR)"। SE Railway। ২০০৫-০৮-২৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৮-২২  উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; আলাদা বিষয়বস্তুর সঙ্গে "BDR1" নামটি একাধিক বার সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে
  2. "Bankura-Damodar Railway"। ২০১১-০৭-২৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৮-২২ 
  3. "BDR resumes service after 13 yrs"The Statesman, 23 January 2008। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৮-২২ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  4. "Bankura Damodar Rail to roll again from 14th Jan"। ২০০৮-০৫-১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৮-২২ 
  5. "S-E Rly opens new line"The Hindu Business Line, 21 September 2005। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৮-২২ 
  6. "Train to Bankura"The Telegraph, 12 September 2005। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৮-২২ 
  7. "Opening of Eklakhi – Balurghat new line"। Press Information Bureau। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৮-২২