ইহুদিদের প্রতি মুহাম্মাদের দৃষ্টিভঙ্গি

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

ইসলামের নবী মুহাম্মাদ মদিনা এবং এর আশেপাশে বসবাসরত ইহুদি গোত্রগুলোর সাথে সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যমে ইহুদি সম্প্রদায় সম্পর্কে তার দৃষ্টিভঙ্গি গঠন করেন। ইহুদিদের সম্পর্কে তার ধারণার মধ্যে রয়েছে:  ইসলাম ধর্মে তাদেরকে আহলে কিতাব (গ্রন্থের লোক) হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া, তাদেরকে ইব্রাহিমীয় ধর্মগ্রন্থের পূর্ববর্তী গ্রহীতা হিসেবে বর্ণনা করা; এবং মুসলিম ও ইহুদি সম্প্রদায়ের মধ্যে ব্যর্থ রাজনৈতিক জোটের কথা বলা।

মুসলিমদের পবিত্র গ্রন্থে বর্ণিত আছে যে, মক্কা থেকে মদিনায় হিজরতের পর, তিনি মদিনার প্রধান গোষ্ঠীগুলোর সাথে একটি চুক্তি প্রতিষ্ঠা করেন। এই চুক্তিটি "মদিনার সনদ" নামে পরিচিত। ইহুদি গোত্র বনু কায়নুকা, বনু নাদির এবং বনু কুরাইজা এই চুক্তির অন্তর্ভুক্ত ছিল। যতক্ষণ ইহুদিরা রাজনৈতিকভাবে সহযোগিতা করতো, এই চুক্তি ইহুদি ও মুসলিম উভয়ের জন্য সমান অধিকার নিশ্চিত করেছিল।[১]

মুহাম্মদ এবং মদিনার ইহুদি গোত্রসমূহ[সম্পাদনা]

মক্কায় ধর্মপ্রচারের সময়, মুহাম্মাদ খ্রিস্টান এবং ইহুদিদেরকে—যাদের তিনি "আহলে কিতাব" (ধর্মগ্রন্থের অনুসারী) হিসেবে অভিহিত করতেন —স্বাভাবিক মিত্র হিসেবে দেখতেন। তিনি মনে করতেন, তার শিক্ষার সাথে তাদের মূলনীতির মিল রয়েছে এবং তারা তাকে গ্রহণ ও সমর্থন করবে। ইহুদিদের মতো, মুসলিমরাও সেসময় জেরুজালেমের দিকে মুখ করে নামাজ আদায় করতো। মক্কায় মুসলিমদের উপর চরম নির্যাতনের সময়, বহুজাতিক জনগোষ্ঠীর শহর মদিনায় মুহাম্মদকে একজন সালিশকারীর পদ দেওয়া হয়েছিল। সেখানে একটি বৃহৎ ইহুদি সম্প্রদায় বসবাস করতো।[২]

মুহাম্মদের মদিনায় হিজরতের আগে এবং পরে অনেক মদিনাবাসী মক্কান অভিবাসীদের ধর্মে দীক্ষিত হয়েছিল, তবে ইহুদি সম্প্রদায়ের মাত্র কয়েকজন তার দাবি মেনে নিয়েছিল। কারণ, বেশিরভাগ ইহুদি মুহাম্মদের নবী হিসেবে মর্যাদাকে প্রত্যাখ্যান করে। এই প্রত্যাখ্যান সম্ভবত "রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় উভয় কারণেই ঘটেছিল।" ওয়াটের মতে, "ইহুদিরা সাধারণত একজন অ-ইহুদিকে নবী হিসেবে স্বীকার করতে অনিচ্ছুক ছিল।" মার্ক কোহেন যোগ করেন যে, মুহাম্মদ যে বার্তা নিয়ে এসেছিলেন তা "বাইবেলে ভবিষ্যদ্বাণীর শতাব্দী পরে" এসেছে এবং "ইহুদিধর্মের বিন্যাস এবং বাগ্মিতা উভয় দিক থেকেই তা ছিল অপরিচিত।"[৩]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Ahmad, B. (1979). Muhammad and the Jews: A Re-examination. India: Vikas., pp. 46–47
  2. Encyclopedia of Religion, Second Edition, Lindsay Jones, Muhammad article, আইএসবিএন ০-০২-৮৬৫৭৪২-X
  3. Mark R. Cohen, Under Crescent and Cross: The Jews in the Middle Ages, p. 23, Princeton University Press