আল-নাফস আল-জাকিয়াহ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

আল-নাফস আল-জাকিয়াহ (আরবি: النفس الزكية, অনুবাদ'বিশুদ্ধ আত্মা', ফার্সি: نفس زکیه, প্রতিবর্ণীকৃত: নফস-এ-জাকিয়াহ), হলেন শিয়া ইসলামি পরকালবিদ্যায় ভবিষ্যতকালীন চরিত্রগুলোর একজন। বলা হয় তাকে শিয়াদের শেষ ইমাম ও মশীহ মাহদী নিজের পুনঃআবির্ভাবের পূর্বে মক্কায় নিজের দূত হিসেবে পাঠাবেন যার ফলে মূখ্য গুপ্তভাবের সমাপ্তি ঘটবে। মক্কায় মাহদীর বার্তা পেশ করার পর তাকে সেখানে হত্যা করা হবে এবং তার মৃত্যু হবে শিয়া ইসলামে মাহদীর আবির্ভাবের লক্ষণ

পরিচিতি[সম্পাদনা]

নফস-এ-জাকিয়াহ হল মুহাম্মাদ ইবন আল-হাসান নামক এক ব্যক্তির উপাধি।[২] তিনি হবেন হোসাইন ইবনে আলীর বংশধর।[২][৩] তার নাম নফস-এ-জাকিয়াহ রাখা হয়েছে কেননা তিনি হবেন অত্যন্ত ধার্মিক এবং ধর্মপ্রাণ ব্যক্তি[৩] এবং তার এই ডাকনামের আরেকটি কারণ হল কোন পাপ ও অপরাধ ব্যতীত তাকে হত্যা করা হবে।[৪]

নফস-এ-জাকিয়াহের দায়িত্ব[সম্পাদনা]

নফস-এ-জাকিয়াহের দায়িত্ব সম্পর্কে আবু-বশির বর্ণিত মুহম্মদ আল-বাকিরের হাদিসে পাওয়া যায়। হাদিস অনুসারে যখন মুহাম্মদ আল-মাহদী বুঝতে পারবেন যে মক্কার মানুষেরা তার পুনঃআবির্ভাগ মেনে নিবেনা তখন তিনি দূত হিসেবে মক্কার লোকদের কাছে নিজের বার্তা পাঠাতে নফস-এ-জাকিয়াহকে পাঠাবেন।[৫][৬]

পুনঃআবির্ভাবের নিশ্চিত লক্ষণ[সম্পাদনা]

হাদিস অনুসারে আল-নফস আল-জাকিয়াহ হত্যা হবে মুহাম্মদ আল-মাহদীর পুনঃআবির্ভাবের একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষণ।[২] জাফর আস-সাদিকের হাদিসে সেসব লক্ষণের ব্যাপারে উল্লেখ রয়েছে: "এগুলো হল আমাদের জুহুরের (দ্বাদশ ইমামের পুনঃআবির্ভাব) পাঁচটি লক্ষণ, সুফিয়ানিইয়ামানির আগমন, আকাশ থেকে আসা কণ্ঠস্বর, নফস-এ-জাকিয়াহের শহিদ হওয়া,[২] এবং বাইদায় ভূমির গিলে ফেলা (একদল মানুষকে)।"[৭]

হত্যা করার স্থান ও সময়[সম্পাদনা]

নফস-এ-জাকিয়াহ মক্কার মানুষের নিকট ইমামের বার্তা জানানোদ পর তারা তাকে কাবার নিকটে হত্যা করবে।[৮] ইবনে বাবাওয়ী নিজের লেখা বইতে জাফর আল-সাদিকের একটি হাদিস বর্ণনা করেছেন যে নফস-এ-জাকিয়াহ খুন হওয়ার পনেরো দিন পরে মুহাম্মদ আল-মাহদীর পুনঃআবির্ভাব হবে।[৯]

শিয়াদের বিশ্বাস অনুযায়ী, নফস-এ-জাকিয়া একটি লক্ষণ যা মুহাম্মদ আল-মাহদীর পুনঃআবির্ভাবের পূর্বে আসবেন, যাকে রুকন ও মোকামে ইব্রাহিমের মধ্যবর্তী স্থানে কাবার নিকটে হত্যা করা হবে।[১০] আল-ইরশাদে চতুর্দশ অভ্রান্তদের জীবনী রয়েছে এবং উল্লেখ রয়েছে যে মুহাম্মদ আল-মাহদীর পুনঃআবির্ভাব এই ঘটনার ১৫ দিন পর ঘটবে।[১১]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Badruddīn, Amir al-Hussein bin (20th Dhul Hijjah 1429 AH)। The Precious Necklace Regarding Gnosis of the Lord of the Worlds। Imam Rassi Society।  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  2. Allama MajlisiBihar al-Anwar52Beirut: Alvafa Institute। পৃষ্ঠা 220–224। 
  3. Al-AyyashiTafsir Ayyashi1। পৃষ্ঠা 64। 
  4. Musavi al-Isfahani, Muhammad Taqi। Mikyalul Makarim fee Fawaaid al-Duaa lil Qa'im। পৃষ্ঠা v2। 
  5. Qasemi, Mohammad Ali (২০০৮)। "Nafs-e-Zakiyyah"Eastern promised (4): 14। 
  6. Majlisi, Muhammad Baqir। Bihar al-Anwar52। পৃষ্ঠা 307। 
  7. Nu'mani, Muhammad ibn Ibrahim ibn Ja'far। "Chapter 14"। Ghaybah of Nu'mani। পৃষ্ঠা 252। 
  8. Hashemi Shahidi, Seyyed Asadullah। Introduce of promised personJamkaran Mosque Publication। পৃষ্ঠা 524। 
  9. Shaykh SaduqIkmal al-Din wa Itmam al-Ni'mah2। পৃষ্ঠা 649। 
  10. Shaykh Saduq। Ikmal al-Din wa Itmam al-Ni'mah1। পৃষ্ঠা 331। 
  11. Sayyid Saeed Akhtar Rizvi। Your Questions Answered volume VII। Bilal Muslim Mission of Tanzania। পৃষ্ঠা 20–। আইএসবিএন 978-9987-620-07-4