অ্যানাটিডি একটি জীববৈজ্ঞানিক গোত্র যার মধ্যে হাঁস, রাজহাঁস ও মরাল, এই তিন ধরনের পাখি অন্তর্ভুক্ত। এই গোত্রের সদস্যদেরকে পৃথিবীর প্রায় সব অঞ্চলেই দেখতে পাওয়া যায়। তবে অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশ, নির্দিষ্ট কিছু মরু অঞ্চল এবং বেশিরভাগ দ্বীপ ও দ্বীপপুঞ্জে এদের দেখা যায় না। বহু বছরের বিবর্তনের ফলে এসব পাখি পানিতে সাবলীলভাবে সাঁতরাতে, ভেসে থাকতে ও প্রয়োজনবোধে অগভীর পানিতে ডুব দিতে সক্ষম। এরা মাঝারি থেকে বড় আকারের গোলগাল জলার পাখি; পা খাটো ও চ্যাপ্টা; ঠোঁট ছোট, শক্তিশালী; প্রজনন ঋতুর শেষে ওড়ার পালক খসে পড়ে ও কয়েক সপ্তাহ উড়তে পারে না। এই গোত্রে মোট ৪৩টি গণে ১৪৮টি এবং বাংলাদেশে ১৩ গণে ২৯ প্রজাতির পাখি অন্তর্ভুক্ত।[১] এরা মূলত তৃণভোজী ও প্রজননের দিক থেকে একগামী। সদস্যদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ সাংবাৎসরিক পরিযায়ী, অর্থাৎ বছরের নির্দিষ্ট সময়ে এরা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে চলে যায়। অল্প কিছু প্রজাতিকে গৃহপালিত পাখি হিসেবে মানুষ পুষে থাকে। এদের মাংস ও ডিম বিশ্বব্যাপী পুষ্টির বিশাল চাহিদার কিছু অংশ পূরণ করে। মাংস ও বিনোদন, এই দুই কারণে এদের ব্যাপকভাবে শিকার করা হয়। যার ফলশ্রুতিতে সপ্তদশ শতাব্দী থেকে অ্যানাটিডি গোত্রের অন্তর্ভুক্ত পাঁচটি প্রজাতি পৃথিবী থেকে সম্পূর্ণ বিলুপ্ত হয়ে গেছে আর বেশ কিছু প্রজাতি বর্তমানে বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে।
উপশ্রেণী: থ্যালাসোর্নিনি (একটি গণ; আফ্রিকায় পাওয়া যায়, উপশ্রেণী ডেন্ড্রোসিগণিনির সাথে বেশ ওতপ্রোতভাবে সম্পর্কিত, অবশ্য দেখতে ওজাইউরিনি উপশ্রেণীর অংশ বলে মনে হয়)
উপশ্রেণী: আন্সেরিনি, রাজহাঁস ও মরাল (তিন থেকে সাতটি গণে ২৫-৩০টি জীবিত প্রজাতি; প্রধানত শীতল নাতিশীতোষ্ণ উত্তর গোলার্ধে অবস্থান, গুটিকয়েক প্রজাতির আবাস দক্ষিণ গোলার্ধে, মরালের গণ একটি (কখনও দু'টি) ও রাজহাঁসের গণ দু'টি (কখনও তিনটি)। বেশ কয়েকটি প্রজাতির অবস্থান বিতর্কিত (বিতর্কিত অংশটি দেখুন)
সিগণাস, প্রকৃত মরাল (৬টি প্রজাতি, ৪টিকে Olor (ওলোর) গণের অন্তর্ভুক্ত বলে মনে করা হয়)
উপশ্রেণী: স্ট্রিক্টোনেটিনি (একটি গণ; অস্ট্রেলিয়ায় আবাস, পূর্বে ওজাইউরিনি উপশ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত, পরবর্তীতে অঙ্গসংস্থান অনুসরণ করে আন্সেরিনি-এর সাথে অধিক সম্পৃক্ততা লক্ষ্য করা যায়)