গুই সাপ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

গোসাপ
একটি বাংলাদেশী গোসাপ
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: Animalia
পর্ব: কর্ডাটা
শ্রেণী: Sauropsida
বর্গ: Squamata
উপবর্গ: Scleroglossa
অধোবর্গ: Anguimorpha
মহাপরিবার: Varanoidea
পরিবার: Varanidae
গণ: Varanus
Merrem, 1820
প্রজাতি

লেখা দেখুন

গুই সাপ বা গোসাপ ( ইংরেজি: Monitor Lizard ) আদতে কোন সাপ নয়; এটি বড়সড় টিকটিকির মতো দেখতে কিন্তু সাপের মতো দ্বিখণ্ডিত জিভসম্পন্ন প্রাণী। এটি ভ্যারানিডি (Varanidae) গোত্রের সরীসৃপ প্রাণী। "গুই"/"গো" নামটি এসেছে "গোধিকা" থেকে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ১৪ আগস্ট World Lizard Day হিসেবে পালিত হয়।[১]

বড় গুই সাপ দেখতে গাঢ় বাদামি বা কালচে। এদের সারা শরীরে চামড়ার ওপরের ত্বকে হলুদ রঙের রিং বিদ্যমান। পা ও নখ লম্বাটে। লেজ চ্যাপ্টা ও শিরযুক্ত। এরা দ্রুত গাছে উঠতে এবং সাঁতরে খাল-বিল-পুকুর সহজেই পাড়ি দিতে পারে। ইন্দোনেশিয়ার কোমোডো ড্রাগন হল বৃহত্তম গুই সাপ। সম্প্রতি প্রমাণিত হয়েছে কোমোডো ড্রাগনেরও বিষ আছে।[২]

প্রজাতি[সম্পাদনা]

গোসাপ বিভিন্ন প্রকার হয়:

  • জলগোধিকা (water monitor)
  • স্থলগোধিকা (land monitor)
  • স্বর্ণগোধিকা (yellow monitor)

গঠন[সম্পাদনা]

এই প্রাণী গিরগিটি প্রজাতির । লম্বায় সর্বাধিক ১০ ফুট পর্যন্ত হয়ে থাকলেও বেশিরভাগ দেখা মেলে ২-৪ ফুট এবং প্রস্থে ১১ ইঞ্চির মত হয়। এরা স্থলে বা জলে বাস করে এবং এদের সাতার কাটা ও গাছে চড়তেও দেখা যায়। বড় গুইসাপ দেখতে গাঢ় বাদামি বা কালচে হয়। এদের সারা শরীরে চামড়ার ওপরের ত্বকে হলুদ রঙের রিং বিদ্যমান। পা ও নখ লম্বাটে হয়। লেজ চ্যাপ্টা ও শিরযুক্ত।

প্রাপ্তিস্থান[সম্পাদনা]

দেশের সর্বত্র গৃহস্থের বাড়ির আঙিনায়, কৃষি ক্ষেতে, বনে–জঙ্গল ও জলাভূমিতে বিচরণ করতে দেখা যেতো পরিচিত প্রাণী গুই সাপ। বাংলাদেশে তিন প্রজাতির গুইসাপ দেখা যায়। এগুলো হলো সোনা গুই, কালো গুই এবং রামগাদি বা বড় গুই।

খাবার[সম্পাদনা]

কাঁকড়া, শামুক, ইঁদুর, হাঁস-মুরগির ডিম, পচা-গলা প্রাণীদেহ ,বড়রা মাছ, সাপ, ব্যাঙ ছোট কুমির, কুমিরের ডিম ও কচ্ছপসহ নানান পশু-পাখি ও উচ্ছিষ্ট খেয়ে এরা জীবন ধারন করে থাকে।

উপকারী[সম্পাদনা]

প্রকৃতি, পরিবেশের ও কৃষকের বন্ধু এই গুইসাপ ফসলের ক্ষেতের পোকাপতঙ্গ ও ধেনো ইঁদুর খেয়ে উপকার সাধিত করে।

বিলুপ্তির কারন[সম্পাদনা]

ক্রমশ: নগরায়নের বিস্তার, অন্য দিকে চোরাশিকার, দু’পায়ের দাপটে এই প্রাণীটি বিপন্ন হয়ে পড়েছে। প্রাণী সংরক্ষণ আইন উপেক্ষা করে অবাধে এদের হত্যা করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ ইউনিয়ন (আইইউসিএন)[৩] ২০০০ সালে প্রাণীটিকে বিলুপ্তির ঝুঁকিতে থাকা প্রাণী হিসেবে তালিকাভুক্ত করে। বাংলাদেশ এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরোর তথ্য মতে, ১৯৭৮-১৯৭৯ সালে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৫১ লাখ ৪৩ হাজার টাকার চামড়া রপ্তানি হয়। গুই সাপের চামড়া রপ্তানির কারণে পরিবেশের ওপর ক্ষতিকর প্রভাবের বিবেচনায় ১৯৯০ সালে সরকারের পক্ষ থেকে এদের হত্যায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।

চিত্রশালা[সম্পাদনা]

গ্রামাঞ্চলে এদের এখনও দেখা মেলে । মানুষের রোষানলে বেঘোরে প্রাণ হারায় । কারো ক্ষতি সাধণের দৃষ্টান্ত না করলেও সমাজে এদেরকে ক্ষতিকারক ভাবা হয়। বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২ অনুযায়ী গুইসাপ সংরক্ষিত।[১]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. নিউজ, সময়। "হারিয়ে যাচ্ছে কৃষকের বন্ধু গুইসাপ, উদ্বিগ্ন বিশেষজ্ঞরা | বাংলাদেশ"Somoy News। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৮-০১ 
  2. "গুইসাপ"www.kalerkantho.com। 2023-01। সংগ্রহের তারিখ 2023-08-01  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  3. নিউজ, সময়। "হারিয়ে যাচ্ছে কৃষকের বন্ধু গুইসাপ, উদ্বিগ্ন বিশেষজ্ঞরা | বাংলাদেশ"Somoy News। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৮-০১