বিষয়বস্তুতে চলুন

কিটোন-উৎপাদক খাদ্যাভ্যাস: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
NirjharRuth (আলোচনা | অবদান)
"Ketogenic diet" পাতাটি অনুবাদ করে তৈরি করা হয়েছে
(কোনও পার্থক্য নেই)

০৬:৪৪, ২১ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

A test strip is compared with a colour chart that indicates the degree of ketonuria.
প্রস্রাবে কিটোন যৌগ আছে কিনা সেটার পরীক্ষা

কিটোজেনিক ডায়েট হল এক প্রকার বিশেষায়িত ডায়েট বা পথ্য ব্যবস্থা, যেখানে উচ্চমাত্রার চর্বি, পর্যাপ্ত পরিমাণে আমিষ এবং অল্প পরিমাণে শর্করা থাকে। এই পথ্য শিশুদের মৃগীরোগ নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। এই খাদ্য ব্যবস্থা শর্করার বদলে চর্বি পোড়ানোর মাধ্যমে দেহে শক্তি সরবরাহ করে। সাধারণ অবস্থায়, খাবারে উপস্থিত শর্করা ভেঙে গ্লুকোজে পরিণত হয় এবং পুরো দেহে শক্তির যোগান দেয়। এই গ্লুকোজ মস্তিষ্কের প্রধান শক্তি উৎস। কিন্তু খাবারে যদি যথেষ্ট পরিমাণে শর্করা না থাকে, তাহলে যকৃত চর্বিকে ফ্যাটি এসিড আর কিটোন যৌগে পরিণত করে। এই কিটোন মস্তিষ্কে প্রবেশ করে আর মস্তিষ্কের শক্তি উৎস হিসেবে গ্লুকোজকে প্রতিস্থাপিত করে। দেহে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি মাত্রায় কিটোন উপস্থিত থাকলে সে অবস্থাকে কিটোসিস বলে, যা মৃগীরোগের কারণে ঘটা খিঁচুনির প্রবণতাকে কমায় [১]। দেখা গেছে, এই পথ্য ব্যবহার করার ফলে মৃগীরোগে ভোগা প্রায় অর্ধেক সংখ্যক শিশু আর তরুণের মধ্যে খিঁচুনির প্রবণতা অর্ধেকে নেমে এসেছে। এমনকি পথ্য ব্যবহার করা বন্ধ করার পরও এই প্রভাব বজায় ছিল [২]। কিছু গবেষণা থেকে দেখা গেছে, কিটোজেনিক ডায়েটের অন্যতম সংস্করণ অ্যাটকিন্স ডায়েট অনুসরণ করলেও প্রাপ্তবয়স্করা কিটোজেনিক ডায়েটের মত ফলাফল পেতে পারেন [১]। তবে এ ধরনের পথ্যের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার মধ্যে আছে কোষ্ঠকাঠিন্য, উচ্চ কোলেস্টেরল, বর্ধন ধীরগতিতে হওয়া, অ্যাসিডোসিস, এবং কিডনিতে পাথর[৩] হওয়া।

শিশুদের মৃগীরোগের জন্য যে প্রচলিত পথ্য ব্যবস্থা আছে, সেটায় পর্যাপ্ত পরিমাণে আমিষ থাকে দেহের বর্ধন ঘটা আর ক্ষতিপূরণের জন্য, সাথে পর্যাপ্ত ক্যালোরি থাকে বয়স আর উচ্চতা অনুযায়ী সঠিক ওজন বজায় রাখার জন্য। ১৯২০-এর দশকে শিশুদের মৃগীরোগের চিকিৎসা হিসেবে কিটোজেনিক ডায়েটের প্রচলন ঘটে, কিন্তু মৃগীরোগের ওষুধ বের হয়ে যাওয়ার কারণে এই পথ্য ব্যবস্থা জনপ্রিয়তা হারাতে শুরু করে। ঐতিহ্যবাহী কিটোজেনিক ডায়েটে চর্বির ওজন আর শর্করা-আমিষের যৌথ ওজনের অনুপাত রাখা হয় ৪ঃ১। এই অনুপাত অর্জনের জন্য উচ্চ শর্করা সমৃদ্ধ খাবার, যেমন শ্বেতসার যুক্ত ফল আর সবজি, রুটি, পাস্তা, খাদ্যশস্য, চিনি, ইত্যাদি খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়; যোগ করা হয় উচ্চ চর্বি সমৃদ্ধ খাবার, যেমন বাদাম, মাখন, দুধের সর। খাওয়ার যোগ্য চর্বির বেশিরভাগই দীর্ঘ-শিকল বিশিষ্ট ট্রাইগ্লিসেরাইড (LCTs) নামক অণু দিয়ে গঠিত। কিন্তু মধ্য-শিকল বিশিষ্ট ট্রাইগ্লিসেরাইডসমূহ (MCTs, এসব অণু লম্বা-শিকল বিশিষ্ট ট্রাইগ্লিসেরাইড অণুর চেয়ে আকারে ছোট) বেশি কিটোজেনিক বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন হয়ে থাকে। নারিকেল তেল হল মধ্য-শিকল বিশিষ্ট ট্রাইগ্লিসেরাইড সমৃদ্ধ খাবার। তাই কিটোজেনিক ডায়েটের আরেকটি সংস্করণ, MCT কিটোজেনিক ডায়েট, নারিকেল তেলের মাধ্যমেই রোগীর ক্যালোরি চাহিদার অর্ধেক পূরণ করে থাকে। এই ধরনের পথ্যে যত কম পরিমাণে চর্বির দরকার হয়, ততই আমিষ আর শর্করা জাতীয় খাবার খাওয়ার সুযোগ বাড়ে, ফলে খাবারে বৈচিত্র্য আনা সম্ভব হয়[৪][৫]

কিটোজেনিক ডায়েট আর কোনো স্নায়বিক রোগের চিকিৎসার জন্য উপযোগী কিনা, সেটা সম্পর্কে বেশ কিছু গবেষণা করা হয়েছে। এসব রোগের মধ্যে আছে: আলঝেইমার'স ডিজিজ, অ্যামায়োট্রফিক ল্যাটেরাল স্ক্লেরোসিস, মাথা ব্যথা, নিউরোট্রমা, ব্যথা, পার্কিন্সন'স ডিজিজ, এবং ঘুম সংক্রান্ত রোগ।[৬]

ইতিহাস

কিটোজেনিক ডায়েট একটি মূলধারার পথ্য চিকিৎসা পদ্ধতি যা চালু হয়েছিল মৃগীরোগ সারানোর জন্য উপবাসের যে ব্যবহার প্রচলিত ছিল, সেটার সীমাবদ্ধতাগুলো দূর করার জন্য[Note ১]। ১৯২০ এবং '৩০-এর দশকে জনপ্রিয় হলেও মৃগীরোগের ওষুধ বের হওয়ার পর এই ডায়েটের ব্যবহারে ধ্বস নামে [১]। মৃগীরোগে আক্রান্ত বেশিরভাগ ব্যক্তিই ওষুধের সাহায্যে তাদের খিঁচুনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। কিন্তু ২০-৩০% রোগী বিভিন্ন ওষুধ ব্যবহারের পরও নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হন [৭]। এদের জন্য, এবং নির্দিষ্ট করে বললে বাচ্চাদের মৃগীরোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য, কিটোজেনিক ডায়েট আবারও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে [১] [৮]

  1. Freeman, J. M.; Kossoff, E. H.; Hartman, A. L. (২০০৭-০৩-০১)। "The Ketogenic Diet: One Decade Later"PEDIATRICS (ইংরেজি ভাষায়)। 119 (3): 535–543। আইএসএসএন 0031-4005ডিওআই:10.1542/peds.2006-2447 
  2. Martin-McGill, Kirsty J; Jackson, Cerian F; Bresnahan, Rebecca; Levy, Robert G; Cooper, Paul N (২০১৮-১১-০৭)। Cochrane Epilepsy Group, সম্পাদক। "Ketogenic diets for drug-resistant epilepsy"Cochrane Database of Systematic Reviews (ইংরেজি ভাষায়)। ডিওআই:10.1002/14651858.CD001903.pub4পিএমআইডি 30403286পিএমসি 6517043অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  3. Kossoff, EricH; Wang, Huei-Shyong (২০১৩)। "Dietary Therapies for Epilepsy" (পিডিএফ)Biomedical Journal (ইংরেজি ভাষায়)। 36 (1): 2। আইএসএসএন 2319-4170ডিওআই:10.4103/2319-4170.107152 
  4. Liu, Yeou-mei Christiana (2008-11)। "Medium-chain triglyceride (MCT) ketogenic therapy"Epilepsia (ইংরেজি ভাষায়)। 49: 33–36। ডিওআই:10.1111/j.1528-1167.2008.01830.x  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  5. Zupec-Kania, Beth A.; Spellman, Emily (2008-12)। "An Overview of the Ketogenic Diet for Pediatric Epilepsy"Nutrition in Clinical Practice (ইংরেজি ভাষায়)। 23 (6): 589–596। আইএসএসএন 0884-5336ডিওআই:10.1177/0884533608326138  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  6. Gano LB, Patel M, Rho JM. Ketogenic diets, mitochondria, and neurological diseases. J Lipid Res. 2014 Nov;55(11):2211-28. doi:10.1194/jlr.R048975. PMID 24847102.
  7. Kossoff, Eric H.; Zupec-Kania, Beth A.; Amark, Per E.; Ballaban-Gil, Karen R.; Christina Bergqvist, A. G.; Blackford, Robyn; Buchhalter, Jeffrey R.; Caraballo, Roberto H.; Helen Cross, J. (২০০৯-০১-২৭)। "Optimal clinical management of children receiving the ketogenic diet: Recommendations of the International Ketogenic Diet Study Group: Consensus Statement for the Ketogenic Diet"Epilepsia (ইংরেজি ভাষায়)। 50 (2): 304–317। ডিওআই:10.1111/j.1528-1167.2008.01765.x 
  8. Wheless JW. History and origin of the ketogenic diet (PDF). In: Stafstrom CE, Rho JM, editors. Epilepsy and the ketogenic diet. Totowa: Humana Press; 2004. ISBN 1-58829-295-9.


উদ্ধৃতি ত্রুটি: "Note" নামক গ্রুপের জন্য <ref> ট্যাগ রয়েছে, কিন্তু এর জন্য কোন সঙ্গতিপূর্ণ <references group="Note"/> ট্যাগ পাওয়া যায়নি