হিলডে ডোমিন

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
হিলডে ডোমিন
জন্ম
হিলডে ল্যোভেনষ্টাইন

(১৯১২-০৭-২৭)২৭ জুলাই ১৯১২
মৃত্যু২২ ফেব্রুয়ারি ২০০৬(2006-02-22) (বয়স ৯৩)
জাতীয়তাজার্মান
অন্যান্য নামহিলডে পাল্ম
পেশাকবি
দাম্পত্য সঙ্গীএরভিন ভাল্টার পাল্ম (বি. ১৯৩৬; মৃ. ১৯৮৮)

হিলডে ডোমিন (জার্মান: Hilde Domin) (২৭শে জুলাই ১৯১২-২২শে ফেব্রুয়ারি ২০০৬) বিংশ শতাব্দীতে জার্মান ভাষার অন্যতম গীতিকার কবি, লেখক, অনুবাদক। [১] তিনি ১৯০৯ সালে জার্মানির কোলন শহরে জন্মগ্রহণ করেন এবং ২০০৬ সালে হাইডেলবের্গ শহরে মৃত্যুবরণ করেন। ১৯৩২ থেকে ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত তিনি জার্মানির বাইরে ছিলেন। বেশির ভাগ সময় কাটিয়েছেন ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রে, যেখানে থাকা অবস্থায় তিনি তার শেষনাম "পাল্‌ম" থেকে বদলে "ডোমিন" রাখেন। তার সাহিত্যকর্ম ২১টিরও বেশি ভাষায় অনূদিত হয়েছে। তিনি জার্মান সাহিত্যের বহু পুরস্কার জিতেছেন।

ডোমিন ১৯০৯ সালে জার্মানির কোলন শহরে একটি স্বচ্ছল ইহুদি জার্মান পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা অয়গেন ল্যোভেনষ্টাইন ছিলেন ইহুদী-বংশোদ্ভূত জার্মান উকিল। তিনি ১৯২৯ থেকে ১৯৩২ সালের মধ্যে হাইডেলবের্গ বিশ্ববিদ্যালয়, কোলন বিশ্ববিদ্যালয়, বন বিশ্ববিদ্যালয় ও বার্লিনের হুমবোল্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষালাভ করেন। বিখ্যাত জার্মান সমাজবিজ্ঞানী কার্ল ইয়াসপের্স ও কার্ল মানহাইম তাঁর দুই শিক্ষক ছিলেন।[২]

জার্মানিতে নাৎসিশাসনের আগমন ও ফলে উগ্র ইহুদিবিদ্বেষের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে তিনি ১৯৩২ সালে বন্ধু ও হবু স্বামী ভাষাতাত্ত্বিক এরভিন ভাল্টার পাল্মের সাথে ইতালিতে অভিবাসন করেন। ১৯৩৫ সালে ফ্লোরেন্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রনেসঁস যুগের রাজনীতি বিষয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ডক্টরেট উপাধি লাভ করেন। ১৯৩৫ থেকে ১৯৩৯ সাল পর্যন্ত রোমে ভাষা শিক্ষক হিসেবে কাজ করেন। ১৯৩৬ সালে পাল্মের সাথে বিবাহ করেন। রোমে হিটলারের আগমন ও বেনিতো মুসোলিনির শাসনাধীন ফাশিবাদী ইতালির শত্রুভাবাপন্ন পরিবেশের কারণে ডোমিন-পাল্ম দম্পতি আবারও দেশত্যাগ করেন। ১৯৩৯ সালে ডোমিন ইংল্যান্ডে যান ও সেখানে সেন্ট অ্যালডিনস কলেজে ভাষা শিক্ষক হিসেবে কাজ করেন। ইহুদিবিদ্বেষের শিকার হওয়া এড়াতে তাঁরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো, আর্জেন্টিনাতে আশ্রয় চেয়ে ব্যর্থ হন। একমাত্র ক্যারিবীয় রাষ্ট্র ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্র তাঁদেরকে বিনা শর্তে স্বাগত জানালে ১৯৪০ সালে সেখানে অভিবাসী হন।[২]

সান্তো দোমিংগোতে তাঁরা ১৪ বছর বাস করেন। হিলডে সান্তো দোমিংগো বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুবাদক ও প্রভাষক হিসেবে এবং পাশাপাশি স্থাপত্য আলোকচিত্রগ্রাহক হিসেবে কাজ করেন। হিলডের বিশদ খুঁটিনাটিসমৃদ্ধ আলোকচিত্রগুলি সান্তো দোমিংগোর সিউদাদ কোলোনিয়াল তথা পুরাতন ঔপনিবেশিক শহরের একেকটি প্রামাণ্য দলিল। সান্তো দোমিংগো হল দুই আমেরিকা মহাদেশের মধ্যে সবচেয়ে প্রাচীন ইউরোপীয় শহর। এই চিত্রগুলি তাঁর স্বামীর লেখা সান্তো দোমিংগোর শিল্পকলা ও স্থাপত্যের বইটিতে স্থান পায়। তাঁদের এই বইয়ের উপর ভিত্তি করেই দোমিনিকান সরকার ১৯৮৯ সালে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে সান্তো দোমিংগোর পুরাতন শহরটিকে মনোনীত করে এবং নির্বাচিত হতে সফল হয়।[৩]

১৯৫১ সালে হিলডে রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও সমাজবিজ্ঞান বিষয়ক গবেষণায় যতি দিয়ে লেখালিখি আরম্ভ করেন এবং তাঁকে আশ্রয় প্রদানকারী শহর সান্তো দোমিংগোর প্রতি কৃতজ্ঞতাবশত নিজের ছদ্মনাম রাখেন হিলডে ডোমিন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বেশ পরে ১৯৫৪ সালে তিনি জার্মানিতে ফেরত আসেন। ১৯৬১ সাল থেকে মৃত্যু অবধি তিনি হাইডেলবের্গ শহরে একজন লেখিকা হিসেবে কাটিয়ে দেন। ১৯৬০-এর দশকে তাঁর সাথে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী নেলি জাখসের সাথে তাঁর সখ্যতা গড়ে ওঠে।

ডোমিন রিলকে পুরস্কার, নেলি জাখস পুরস্কার ও হ্যোল্ডারলিন পুরস্কার প্রায় সব বড় বড় জার্মান সাহিত্যিক ও সাংস্কৃতিক পুরস্কার জয় করেন। ২০০৬ সালে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কবিতাপাঠ চালিয়ে যান। ঐ বছর ২২শে ফেব্রুয়ারিতে তিনি হাইডেলবের্গ শহরে ৯৬ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।[২]

সাহিত্যকর্ম[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Hilde Domin"www.fembio.org (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০১-১৪ 
  2. Ben Hutchison (১৬ মার্চ ২০০৬)। "Hilde Domin"The Guardian। সংগ্রহের তারিখ ১৬ মার্চ ২০২৩ 
  3. "Colonial City of Santo Domingo"UNESCO World Heritage Centre