স্লেয়ার

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
স্লেয়ার
২০০৭ সালে ফিল্ড অব রকে স্লেয়ার
২০০৭ সালে ফিল্ড অব রকে স্লেয়ার
প্রাথমিক তথ্য
উদ্ভবহান্টিংটন পার্ক, ক্যালিফোর্নিয়া
ধরনথ্রাশ মেটাল
স্পীড মেটাল
কার্যকাল১৯৮১-বর্তমান
লেবেলমেটাল ব্লেড রেকর্ডস, আমেরিকান রেকর্ডিংস, কল্মবিয়া রেকর্ডস, সনি মিউজিক
সদস্যকেরি কিং
টম আরায়া
পল বুস্ট্রাপ
গেরি হোল্ট
প্রাক্তন
সদস্য
জেফ হ্যানিম্যান
ডেভ লম্বারডো
ওয়েবসাইটwww.slayer.net

স্লেয়ার একটি আমেরিকান থ্রাশ মেটাল ব্যান্ড যা ১৯৮১ সালে ক্যালিফোর্নিয়াতে গঠিত হয়। ব্যান্ডটি প্রতিষ্ঠিত হয় গিটারিস্ট জেফ হ্যানিম্যানকেরি কিং-এর মাধ্যমে।[১] ১৯৮৬ সালে প্রকাশিত রেন ইন ব্ল্যাড অ্যালবামের মাধ্যমে স্লেয়ার বিখ্যাত হয়ে ওঠে। ব্যান্ডটিকে প্রথম ৪টি বড় থ্রাশ মেটাল ব্যান্ডের মধ্যে (মেটালিকা, মেগাডেথঅ্যানথ্রাক্স ব্যান্ড) অন্যতম ধরা হয়ে থাকে। তাদের অ্যালবামের প্রচ্ছদে স্যাটানিজম, যুদ্ধ-বিগ্রহ, সিরিয়াল-কিলার ও ধর্মের উপস্থিতি তাদের অ্যালবামকে নিষিদ্ধ, আইনের বাধ্যবাধকতা ও কঠোর সমালোচনার সম্মুখীন করে।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

১৯৮৩ সালের প্রথম অ্যালবামের পর থেকে স্লেয়ার ২টি লাইভ অ্যালবাম, ১টি বক্স সেট, ৬টি ভিডিও, ২টি ইপি এবং ১১টি স্টুডিও অ্যালবাম প্রকাশ করে। ব্যান্ডটি ৪ টি গ্রামি এডোয়ার্ড মনোনয়ন পায় ও ২০০৭ সালে ১টি গ্রামি জিতে নেয় আইস অব দ্যা ইনসেন গানটির জন্য। ২০০৮ সালে আরেকটি গ্রামি জিতে তারা ফাইনাল সিক্স গানটির জন্য। তারা সারা বিশ্বের সঙ্গীত উৎসবে গান পরিবেশন করছে, যেমন আনহলি এ্যালায়েন্স, ডাউনলোড ও অযযফেস্ট। ব্যান্ডটি আয়রন মেইডেনজুডাস প্রিস্ট ব্যান্ডের গান কাভার করত দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার বিভিন্ন ক্লাবে। তাদের প্রথম দিকের গানের অনুষ্ঠানে তারা পঞ্চভুজ, মেকাপ, উলটো ক্রুশ চিহ্ন ব্যবহার করত। গুজব আছে যে তাদের প্রথম নাম ছিল ড্রাগনস্লেয়ার, পরে একটা সিনেমার নাম একই হওয়ায় তারা তা পরিবর্তন করে। ব্যান্ডটি আয়রন মেইডেন ব্যান্ডের ফ্যান্টম অব অপেরা গানটি কাভার করার সময় ব্রায়ান স্লাগেল নামক সঙ্গীত সাংবাদিক ও পরে মেটাল ব্লেড রেকর্ডের প্রতিষ্ঠাতার নজরে পড়েন। তিনি তাদের এ্যাগ্রেসিভ পারফেক্টর নামক মূল গান গাইতে বলেন তার মেটাল ম্যাসাকার ৩ প্রজেক্টের জন্য।গানটি আন্ডারগ্রাউন্ডে খুব জনপ্রিয় হয় এবং স্লেয়ার মেটাল ব্লেড রেকর্ডের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়।

অ্যালবাম প্রকাশ[সম্পাদনা]

গান পরিবেশন করছেন টম আরায়া

তাদের প্রথম অ্যালবামের রেকর্ডিং-এর সময় তারা টাকা ধার করে কিং-এর বাবার থেকে ও আরায়ার জমানো অর্থ থেকে। ১৯৮৩ সালের ডিসেম্বর মাসে তাদের প্রথম অ্যালবাম শো নো মার্সি প্রকাশিত হয় এবং ২০,০০০ কপি শুধু আমেরিকাতে ও ২০,০০০ কপি সারা বিশ্বে বিক্রি হয়। ১৯৮৪ সালে স্লেয়ার তিনটি গানের একটি ইপি প্রকাশ করে হন্টিং দ্যা চ্যাপেল নামে। এতে তারা আরো গভীর থ্রাশ ধাঁচের গান প্রকাশ করে ও তাদের ভবিষ্যতের পথ নির্দেশনা দেখা যায়। বেলজিয়ামে হেভি সাউন্ড ফেস্টিভ্যালে তারা তাদের প্রথম লাইভ ইউরোপিয়ান সফর করে। এই সফরের পর কিং ডেভ মাস্টেইনের ব্যান্ড মেগাডেথ-এ যোগ দেয়। হ্যানিম্যান কিং-এর সিদ্ধান্তে চিন্তিত হয়র পড়েন ও একটা সাক্ষাৎকারে বলেন,

ডেভ মাস্টেইন চাচ্ছিলেন কিং স্থায়ীভাবে থেকে যাক, কিন্তু পাঁচটা শো-এর পরেই কিং সিদ্ধান্ত নেন ব্যান্ডটি ত্যাগ করার। কারণ ব্যান্ডটি তার খুব বেশি সময় নিয়ে নিচ্ছিল। এই ভাংগন মেগাডেথ ও স্লেয়ারের মধ্যে দীর্ঘ বিবাদের সৃষ্টি করে। ডাইয়াবোলাস ইন মুজিকা নামের অ্যালবামটি ১৯৯৮ সালে প্রকাশ হয় এবং বিলবোর্ডে ৩১ নাম্বারে চলে আসে ৪৬০০০ বেশি কপি বিক্রি হয়ে। তাদের ক্রাইস্ট ইল্যুশন অ্যালবামটি বিলবোর্ডে ৫ নাম্বারে অভিষিক্ত হয় ও ১ম সপ্তাহে ৬২০০০ কপি বিক্রি হয়।এমটিভির মতে তাদের গান ডেথ মেটাল গানের উত্থানের জন্য সরাসরি দায়ী এবং তারা ৬ষ্ঠ সর্বকালের সেরা গ্রেট মেটাল ব্যান্ড।

বিতর্ক[সম্পাদনা]

১৯৯৬ সালে ব্যান্ডটির বিরুদ্ধে মামলা হয় এলিস মেরি পাহলার নামক একটি খুন হওয়া মেয়ের বাবা-মার মাধ্যমে। তাদের মেয়েকে ধর্ষণ করে, ড্রাগ দিয়ে ও ছুরি মেরে তিনজন ড্রাগ আসক্ত স্লেয়ার ভক্ত শয়তানের প্রতি তাদের ত্যাগ স্বীকার করে। স্লেয়ার ব্যান্ডের গানের কথা তাদের এই কাজে উৎসাহ জাগিয়েছিল বলে মেয়েটির বাবা-মার মনে করতেন। ২০০১ সালে মামলাটি বাতিল হয়ে যায়। স্লেয়ার ব্যান্ডটিকে নাৎসীবাদের সমর্থক হিসেবে ধারণা করা হয় তাদের ঈগলের চিহ্ন ধারণ এবং এ্যাঞ্জেল অব ডেথ গানের কথার জন্য। জোসেফ ম্যানগেলি নামক ডাক্তারের কর্মকাণ্ড গানটির অনুপ্রেরণা যিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মানুষের উপর নানা পরীক্ষা করতেন খেলার ছলে কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে। স্লেয়ার ব্যান্ডটি বর্ণবাদের প্রকাশ ঘটে এমন গান গিলটি অব বিয়িং হোয়াইট কাভার করতে দেখা যায়। ব্যান্ডের সদস্যরা স্যাটানিজমের ভক্ত এমন অভিযোগ আরায়া অস্বীকার করেন এবং বলেন বিষয়টি কৌতূহল উদ্দীপক। আমরা এই বিশ্বের সবাই শিখতে ও অভিজ্ঞতা নিতে এসেছি, এমন কথাও বলেন আরায়া।

গ্রামি এডওয়ার্ডস[সম্পাদনা]

বছর মনোনয়ন / কাজ পুরস্কার ফলাফল
২০০২ "ডিসিপ্লিন" বেস্ট মেটাল পারফরমান্স মনোনীত
২০০৭ " আইস অব দ্যা ইনসেন " বেস্ট মেটাল পারফরমান্স বিজয়ী
২০০৮ " ফাইনাল সিক্স " বেস্ট মেটাল পারফরমান্স বিজয়ী
২০১০ "হেট ওয়ার্ল্ড ওয়াইড" বেস্ট মেটাল পারফরমান্স মনোনীত
২০১১ "ওয়ার্ল্ড পেইন্টেড ব্লাড" বেস্ট মেটাল পারফরমান্স মনোনীত

বর্তমান সদস্য[সম্পাদনা]

  • টম আরায়া - ভোকাল, বেইজ গিটার (১৯৮১-বর্তমান পর্যন্ত)
  • কেরি কিং - গিটার (১৯৮১-বর্তমান পর্যন্ত)
  • পল বোস্টাফ - ড্রামস (১৯৯২-১৯৯৬, ১৯৯৭-২০০১, ২০১৩-বর্তমান পর্যন্ত)
  • গ্যারি হোল্ট - গিটার (২০১১-বর্তমান পর্যন্ত)

প্রাক্তন সদস্য[সম্পাদনা]

  • জেফ হ্যানিম্যান - গিটার (১৯৮১-২০১৩; মৃত্যু: ২০১৩)
  • ডেভ লম্বারডো - ড্রামস (১৯৮১-১৯৮৬, ১৯৮৭-১৯৯২, ২০০১-২০১৩)

ডিস্কোগ্রাফি[সম্পাদনা]

  • শো নো মার্সি (১৯৮৩)
  • হেল এওয়েটস (১৯৮৫)
  • রেইন ইন ব্লাড (১৯৮৬)
  • সাউথ অব হ্যাভেন (১৯৮৮)
  • সিজনস ইন দি অ্যাবিস (১৯৯০)
  • ডিভাইন ইন্টারভেনশন (১৯৯৪)
  • আনডিসপিউটেড এটিটিউড (১৯৯৬)
  • ডায়্যাবলাস ইন মিউজিকা (১৯৯৮)
  • গড হেটস আস অল (২০০১)
  • ক্রাইস্ট ইল্যুশন (২০০৬)
  • ওয়ার্ল্ড পেইন্টেড ব্লাড (২০০৯)
  • রিপেন্টলেস (২০১৫)

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "An exclusive oral history of Slayer". Decibel Magazine. Archived from the original on 28 December 2007. Retrieved 3 December 2006.

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]