স্বামী প্রভবানন্দ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
স্বামী প্রভবানন্দ
জন্ম(১৮৯৩-১২-২৬)২৬ ডিসেম্বর ১৮৯৩
মৃত্যু৪ জুলাই ১৯৭৬(1976-07-04) (বয়স ৮২)
বেদান্ত মন্দির, বেদান্ত প্লেস, হলিউড
পেশাসন্ন্যাসী, লেখক, ধর্মগুরু

স্বামী প্রভবানন্দ (২৬ ডিসেম্বর, ১৮৯৩ – ৪ জুলাই, ১৯৭৬) ছিলেন একজন ভারতীয় দার্শনিক, রামকৃষ্ণ সংঘের সন্ন্যাসী এবং ধর্মগুরু।

জীবনী[সম্পাদনা]

স্বামী প্রভবানন্দ ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির বাঁকুড়া জেলার সুর্মানগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯১৪ সালে স্নাতক হওয়ার পর তিনি রামকৃষ্ণ সংঘে যোগ দেন। তার দীক্ষাগুরু ছিলেন স্বামী ব্রহ্মানন্দ[১]

হলিউডের বেদান্ত সোসাইটির মন্দির

১৯২৩ সালে তাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হয়। প্রথমে তিনি বেদান্ত সোসাইটি অফ সান ফ্রান্সিসকোর একজন অ্যাসিস্ট্যান্ট মিনিস্টার ছিলে। দু-বছর পরে তিনি বেদান্ত সোসাইটি অফ পোর্টল্যান্ড স্থাপন করেন। ১৯২৯ সালের ডিসেম্বর মাসে তিনি লস এঞ্জেলসে আসেন এবং ১৯৩০ সালে স্থাপন করেন বেদান্ত সোসাইটি, দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়া

তার পরিচালনায় বেদান্ত সোসাইটি অফ সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া পাশ্চাত্যের বৃহত্তম বেদান্ত সোসাইটিতে পরিণত হয়। হলিউডট্র্যাবুকো ক্যানিয়নে এই সোসাইটির দুটি মঠ এবং হলিউড ও সান্টা বারবারায় দুটি কনভেন্ট ছিল।[২]

প্রভবানন্দ ছিলেন একজন বিশিষ্ট গবেষক। তিনি বেদান্ত ও ভারতীয় ধর্মগ্রন্থগুলির উপর অনেকগুলি বই ও টীকা লিখেছিলেন। একাধিক গ্রন্থ রচনার কাজে তাকে সহায়তা করেন ক্রিস্টোফার ইশারউড ও ফ্রেডেরিক ম্যানচেস্টার। দর্শন সম্পর্কে তার জ্ঞান অলডাস হাক্সলেগেরাল্ড হার্ড প্রমুখ শিষ্যকে আকৃষ্ট করেছিল।

১৯৭৬ সালের ৪ জুলাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ২০০তম স্বাধীনতা দিবস তথা স্বামী বিবেকানন্দের ৭৪তম মহাসমাধি দিবসে প্রভবানন্দ প্রয়াত হন।[১]

প্রভাব[সম্পাদনা]

ক্রিস্টোফার ইশারউড মাই গুরু অ্যান্ড হিজ ডিসাইপল নামে একটি বই লিখেছিলেন।[৩] তার তিন দশকেরও বেশি (১৯৩৯-৭৬) সময়কাল প্রভবানন্দের শিষ্যত্বের বিবরণ তিনি এই বইতে লিপিবদ্ধ করেন। (কপলের ঐতিহাসিক রচনাটিও দেখুন)।[৪]

শিক্ষাবিষয়ক পত্রিকা ফিলোজফি-তে প্রভবানন্দের স্পিরিচুয়াল হেরিটেজ অফ ইন্ডিয়া বইটির সমালোচনা প্রকাশিত হয়। এই সমালোচনায় লেখা হয়েছিল, “স্বামী প্রভবানন্দ ভারতের আধ্যাত্মিক ঐতিহ্য সম্পর্কে একটি মনোহর ও প্রামাণ্য বই লিখেছেন। বৈদিক প্রথার সঙ্গে এই ঐতিহ্যের সামঞ্জস্য এবং বেদান্তে এর সিদ্ধান্তের বর্ণনা তিনি দিয়েছেন এই বইতে।” (পৃ. ৩৭৬)[৫] সমালোচক লিখেছেন, “বইটিতে আগাগোড়া সারল্য ও দৃঢ়নিশ্চয়তার পরিবেশ লক্ষিত হয়েছে... বিজ্ঞান, জড়বাদ, প্রকৃতিবাদ বা অন্যান্য এই ধরনের আধ্যাত্মিক ‘পরিপূর্ণতার’ বিরুদ্ধে আঘাতের অনুপস্থিতির জন্য বইটি আমার বিশেষ ভাল লেগেছে। (পৃ. ৩৭৬-৭৭)[৫]

প্রভবানন্দ ও ক্রিস্টোফার ইশারউডের ভগবদ্গীতা অনুবাদটির সমালোচনা ১৯৪৫ সালে টাইম ম্যাগাজিন-এ প্রকাশিত হয়।[৬] এই পত্রিকায় অনুবাদটিকে “একটি বিশিষ্ট সাহিত্যকর্ম” হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়। বলা হয়, “এটি অন্যান্য ইংরেজি অনুবাদগুলির চেয়ে (আগের বছর গীতার তিনটি ইংরেজি অনুবাদ প্রকাশিত হয়েছিল) সরলতর এবং অধিকতর স্বচ্ছন্দ অনুবাদ... এটি যুক্তরাষ্ট্রের পাঠকদের শুধুমাত্র গীতাই নয়, বরং আমেরিকান বিদ্বজ্জন সমাজে এর প্রভাবটিও গীতার অন্যতম শ্রেষ্ঠ যুক্তরাষ্ট্রীয় অনুরাগী র্যা লফ ওয়াল্ডো এমারসনের মাধ্যমে অনুধাবন করাতে সাহায্য করবে। (পৃ. ৯৮, ১০০)।[৬]

রোমের পন্টিফিক্যাল গ্রেগরিয়ান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৭৯ সালে প্রকাশিত সিরিয়াক মুপ্পাথিলেরে একটি বইয়ের বিষয় ছিল প্রভবানন্দের রচনা। এই বইটিতে ধ্যান বিষয়ে প্রভবানন্দের (এবং হিন্দুধর্মের) ধারণা কীভাবে খ্রিস্টীয় ধ্যানপদ্ধতিকে আলোকিত করেছে তা বিশ্লেষণ করে দেখা হয়।[৭] প্রভবানন্দের চিন্তাভাবনার সমীক্ষা করে মুপ্পাথিল তাঁর ধ্যান-ধারণার “দোষ ও গুণ” বিচার করেন। “হিন্দু ধ্যানে একটি খ্রিস্টীয় মিশ্রণের নীতিগুলি” সমীক্ষা করে তিনি সিদ্ধান্তে আসেন এই ধ্যান “হিন্দু-খ্রিস্টীয় সংলাপের একটি মিলনকেন্দ্র।” (পৃ. ৫)[৭]

রচিত গ্রন্থাবলি[সম্পাদনা]

মৌলিক গ্রন্থাবলি[সম্পাদনা]

অনুবাদ[সম্পাদনা]

অডিও ও ভিডিও[সম্পাদনা]

পাদটীকা[সম্পাদনা]

  1. "About Prabhavananda"। ১৪ ডিসেম্বর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ জুন ২০১৫ 
  2. "List of VSSC centers"। ১২ ডিসেম্বর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ জুন ২০১৫ 
  3. Christopher Isherwood (1980/2001). My guru and his disciple. University of Minnesota Press. আইএসবিএন ০-৮১৬৬-৩৮৬৪-০
  4. Antony R. H. Copley (2006). A spiritual Bloomsbury: Hinduism and homosexuality in the lives and writings of Edward Carpenter, E.M. Forster, and Christopher Isherwood. Lanham, MD: Lexington Books. আইএসবিএন ৯৭৮-০-৭৩৯১-১৪৬৪-৩
  5. Dale Riepe (1963). [Untitled - review of Prabhavananda's The Spiritual Heritage of India]. Philosophy, v38 n146, pp376-377. ISSN 00318191 DOI S0031819100058411
  6. Anonymous (1945, Feb. 12)। "Books: Universal cult [review of Prabhavananda and Isherwood's Bhagavad Gita translation]"। Time45 (7): 94, 96, 98, 100।  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  7. Cyriac Muppathyil (1979). Meditation as a path to God-realization: A study in the spiritual teachings of Prabhavananda and his assessment of Christian spirituality. Roma: Editrice Pontificia Università Gregoriana. আইএসবিএন ৮৮-৭৬৫২-৪৮০-০
  8. Robert J. Ray (1963). [review of Prabhavananda's The Spiritual Heritage of India]. Books Abroad [continued by World Literature Today], v37 n1, p. 101.
  9. William Gerber (1964). [Untitled - review of Prabhavananda's The Spiritual Heritage of India]. Philosophy East and West, v13 n3, pp. 261-262.
  10. David G. Bradley (1964). [Untitled - review of Prabhavananda's The Spiritual Heritage of India]. Journal of Bible and Religion [predecessor of Journal of the American Academy of Religion], v32 n2, pp. 186-187.
  11. Review on Allmusic.com
  12. Released through mondayMEDIA on the GemsTone Label
  13. Two lectures released through mondayMEDIA on the GemsTone Label

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]