সেবু প্যাসিফিক

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
লোগো

সেবু এয়ার ইনকর্পোরেট যা সেবু প্যাসিফিক নামে পরিচিত, হল ফিলিপাইনের মেট্রো ম্যানিলার পাসাই সিটির নিনয় অ্যাকুইনো ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট হতে পরিচালিত একটি কম খরচে যাত্রী বহনের এয়ারলাইন৷ বিমানসংস্থাটি দেশের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক উভয়স্থানেই যাত্রী ও মালামাল পরিবহন করে থাকে৷ নিনয় অ্যাকুইনো ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট ছাড়াও অন্যান্য যে সকল এয়ারপোর্টে এয়ারলাইনটির হাব রয়েছে, সেগুলো হল- ম্যাকটান-সেবু ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট, ক্লার্ক ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট, কালিবো ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট, ফ্রান্সিসকো ব্যাঙ্গয় ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট এবং লইলো ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট৷

পটভূমি[সম্পাদনা]

এয়ারলাইনটি ১৯৮৮ সালের ২৬ আগস্ট প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯৯৬ সালের ৮ মার্চ এটি তার বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনা শুরু করে৷ একটি দূর্ঘটনার কারণে ফিলিপাইন সরকার স্থগিতাদেশ ঘোষণা করলে বিমানসংস্থাটি ১৯৯৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে কিছু দিনের জন্য তাদের বিমান চলাচল স্থগিত করে৷ তবে, স্থগিতাদেশ তুলে নেয়ার প্রেক্ষিতে পরবর্তী মাসে সেবু প্যাসিফিক পুনরায় তাদের কার্যক্রম শুরু করে৷ প্রাথমিকভাবে বিমান সংস্থাটি মেট্রো ম্যানিলা, মেট্রো সেবু এবং মেট্রো ডাভাও এর অভ্যন্তরীণ গন্তব্যস্থলে ২৪টি ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করে৷ ২০০১ সালের শেষের দিকে এর পরিচালিত ফ্লাইট সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ৮০ টিতে উন্নীত হয়৷

২০০০ সালের দিকে সেবু প্যাসিফিক আন্তর্জাতিক গন্তব্যস্থলে বিমান পরিচালনার অনুমতি লাভ করে৷ প্রাথমিক পর্যায়ে বিমান সংস্থাটি যে সকল স্থানে বিমান পরিচালনা শুরু করে, সেগুলো হলো মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, হংকং, গোয়াম ইত্যাদি৷ আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা শুরু হয় ২০০১ সালের ২২ নভেম্বর৷ ২০০২ সালের ১ মার্চ এয়ারলাইনটি সিউলে সপ্তাহে তিনটি করে ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করে৷ অন্যান্য ফ্লাইটগুলোর মধ্যে ২০০২ সালে সিঙ্গাপুরে ফ্লাইট পরিচালনা করা শুরু হয়৷ তবে এস এ আর এস করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত মহামারীর কারণে বেশ কিছু রুটে ফ্লাইট সাময়িকভাব বাতিল করা হয়৷

পরবর্তীতে ২০০৬ সালের ৩১ আগস্ট এয়ারলাইনটি পুনরায় ম্যানিলা হতে সিঙ্গাপুরে এবং ২০০৬ সালের ২৩ অক্টোবর সেবু হতে সরাসরি সিঙ্গাপুরে তার ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করে৷ এটি ছিলো সেবু-সিঙ্গাপুর-সেবু রুটে পরিচালিত প্রথম কম খরচে যাত্রী পরিবহনের বিমান সেবা৷

২০০৬ সালের ডিসেম্বরে দুই কিংবা এক মাস সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনার পর সেবু প্যাসিফিক ঘোষণা দেয় যে তারা সেবু থেকে হংকং এর ফ্লাইট সংখ্যা চার থেকে বৃদ্ধি করে পাঁচে নিয়ে যাবে এবং একই সঙ্গে সেবু হতে সিঙ্গাপুর এর ফ্লাইট সংখ্যা চার থেকে বৃদ্ধি করে ছয়ে নিয়ে যাবে, যা ২০০৭ সালের ২৫ জানুয়ারির মধ্যে কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়৷

গন্তব্যস্থলসমূহ[সম্পাদনা]

বর্তমানে সেবু প্যাসিফিক ৩৮ টি অভ্যন্তরীণ গন্তব্যস্থলে এবং ২০ টি দেশের ৩০ টি আন্তর্জাতিক গন্তব্যস্থলে এর বিমানসমূহ পরিচালনা করে থাকে৷ ফিলিপাইনের অভ্যন্তরে এয়ারলাইনটির নেটওয়ার্ক অন্যান্য যে কোনো বিমানসংস্থা হতে বিস্তৃত৷[১]

পরিচালিত বিমানসমূহ[সম্পাদনা]

২০১৭ সালের মে মাস অনুসারে সেবু প্যাসিফিক এয়ারলাইনের বিমানবহরে নিন্মের বিমানগুলো রয়েছে:[২]
এয়ারবাস এ৩১৯-১০০, এয়ারবাস এ৩২০-২০০, এয়ারবাস এ৩২১নিও, এয়ারবাস এ৩৩০-৩০০৷ পূর্বের ব্যবহৃত বিমানগুলোর মধ্যে রয়েছ ম্যাকডোনেল ডগলাস ও বোয়িং৷

ঘটনা ও দূর্ঘটনা[সম্পাদনা]

১৯৯৮ সালের ২ ফেব্রুয়ারি সেবু প্যাসিফিক ফ্লাইট ৩৮৭ তে ম্যানিলা হতে প্রস্থানকারী একটি ডিসি-৯-৩২ বিমান দূর্ঘটনায় কবলিত হয়৷ বিমানটি মিসামিস ওরিয়েন্টাল এর সুমাগায়া পাহাড়ের ঢালে বিধস্ত হয়৷ দুঃখজনক দূর্ঘটনায় ১০৪ যাত্রী প্রাণ হারায়৷ বিমানটি লুম্বিয়া এয়ারপোর্টের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছিলো৷[৩]
২০১৩ সালের ২ জুন ম্যানিলা হতে সেবু প্যাসিফিক ফ্লাইট ৯৭১ তে ১৬৫ জন যাত্রী বহনকারী একটি এয়ারবাস এ৩২০-২০০ ফ্রান্সিসকো ব্যাঙ্গয় ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টের রানওয়েতে দূর্ঘটনায় কবলিত হয়৷ এতে কোনও যাত্রী মারা না গেলেও বিমানটি প্রচুর ক্ষতিগ্রস্ত হয়৷ বিশেষজ্ঞরা দূর্ঘটনার কারণ হিসাবে মনুষ্য সৃষ্টির কারণ উল্লেখ করেন৷ মেরামত করার পর ২০১৪ সালে বিমানটিকে পুনরায় যাত্রী পরিবহনের কাজে নিয়োজিত করা হয়৷[৪]

উল্লেখ[সম্পাদনা]

  1. "ফিলিপাইনের সবচেয়ে বড় এয়ারলাইন এখন সেবু প্যাসিফিক"। atwonline.com। সংগ্রহের তারিখ ৮ জুন ২০১৭ 
  2. "CEBU প্যাসিফিক এয়ার ফ্লিট বিবরণ এবং ইতিহাস"। সংগ্রহের তারিখ ৮ জুন ২০১৭ 
  3. "দাবাও বিমানবন্দর রানওয়েকে সিবু প্যাসিফিক প্লেনে অবতরণ করে"। সংগ্রহের তারিখ ৮ জুন ২০১৭ 
  4. "সেবু প্যাসিফিক"। cleartrip.com। সংগ্রহের তারিখ ৮ জুন ২০১৭