সাইদ পাশা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
সাইদ পাশা
মিশরসুদানের ওয়ালি
রাজত্ব১৮৫৪ - ১৮৬৩
পূর্বসূরিপ্রথম আব্বাস
উত্তরসূরিইসমাইল পাশা
জন্ম১৮ মার্চ ১৮২২
কায়রো, মিশর
মৃত্যু১৮ জানুয়ারি ১৮৬৩ (৪০ বছর)
কায়রো, মিশর
দাম্পত্য সঙ্গীইনজি হানিমেফেন্দি
মেলেকবের হানিমেফেন্দি
রাজবংশমুহাম্মদ আলি রাজবংশ
পিতামুহাম্মদ আলি পাশা

মুহাম্মদ সাইদ পাশা (আরবি: محمد سعيد باشا, তুর্কি: Mehmed Said Paşa, ১৭ মার্চ ১৮২২ – ১৮ জানুয়ারি ১৮৬৩) ছিলেন মিশর ও সুদানের ওয়ালি। ১৮৫৪ থেকে ১৮৬৩ সাল পর্যন্ত তিনি এই দায়িত্বে ছিলেন। আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি উসমানীয় সুলতানের অধীনস্থ হলেও তিনি কার্যত স্বাধীনভাবে শাসন পরিচালনা করেছেন। সাইদ পাশা ছিলেন মুহাম্মদ আলি পাশার চতুর্থ পুত্র। তিনি প্যারিসে পড়াশোনা করেছেন।

সাইদের অধীনে আইন, ভূমি ও কর ক্ষেত্রে বেশ কিছু সংস্কার করা হয়। পশ্চিমা ঋণ নিয়ে এসময় মিশর ও সুদানে কিছু অবকাঠামোগত আধুনিকায়ন করা হয়। ১৮৫৪ সালে সুয়েজ খালের জন্য জমি প্রদানের আইন অনুমোদিত হয়। খাল খননের দায়িত্ব ফরাসি নাগরিক ফার্ডি‌নেন্ড দ্য লেসেপ্সকে প্রদান করা হয়েছিল। ব্রিটিশরা ফরাসিদের হাতে খাল খননের বিরোধিতা করে এবং উসমানীয় সাম্রাজ্যের তরফ থেকে যাতে এই কাজে অনুমতি দেয়া না হয় সেজন্য দুই বছর পর্যন্ত তৎপরতা চালায়।

১৮২১ সালে তার বাবা সুদান অধিকার করে একে মিশরের সাথে যুক্ত করেছিলেন। মূলত দাস সংগ্রহের জন্য এই পদক্ষেপ নেয়া হয়। সুদানে দাস সংগ্রহের অভিযান বন্ধের জন্য ইউরোপীয় চাপের কারণে সাইদ অভিযান নিষিদ্ধের আদেশ জারি করেন। তবে স্বাধীন দাস ব্যবসায়ীরা এই আদেশ মানেনি।

যুক্তরাষ্ট্রের গৃহযুদ্ধের সময় সাইদের শাসনামলে মিশর ইউরোপীয় কারখানার জন্য তুলার প্রধান সরবরাহকারী হয়ে উঠে। ১৮৬৩ সালে তৃতীয় নেপোলিয়নের আহ্বানে সাড়া দিয়ে দ্বিতীয় মেক্সিকান সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ দমনের জন্য সুদানি ব্যাটেলিয়নের কিছু অংশ প্রেরণ করে সহায়তা করেছিলেন।

সাইদের শাসনামলে শেখদের প্রভাব হ্রাস করা হয়। অনেক বেদুইন এসময় যাযাবর অভিযানে ফিরে যায়।

১৮৫৪ সালে তিনি মিশর ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেন। একই বছরে মিশরের প্রথম স্ট্যান্ডার্ড গেজ রেলপথ চালু হয়। কাফর এল-জায়াত থেকে আলেক্সান্দ্রিয়া পর্যন্ত এই রেলপথ চালু ছিল। [১]

সাইদের সম্ভাব্য উত্তরসুরি আহমেদ রিফাত পাশা ১৮৫৮ সালে ট্রেন ভ্রমণকালে নীলনদ অতিক্রমের সময় তার ট্রেনটিকে একটি বার্জ‌ বহন করছিল। ট্রেনটি এসময় নীলনদে পড়ে যাওয়ায় রিফাত পাশা মারা যান।[২] এর ফলে ১৮৬৩ সালে সাইদের মৃত্যুর পর তার ভাইপো ইসমাইল পাশা শাসনভার লাভ করেন।

ভূমধ্যসাগরের বন্দর পোর্ট সাইদ তার নামে নামকরণ করা হয়েছে।

সাইদ পাশা দুইবার বিয়ে করেছেন। তার প্রথম স্ত্রী ইনজি হানিমেফেন্দি। এই দম্পতির কোনো সন্তান ছিল না। তার দ্বিতীয় স্ত্রী মেলেকবের হানিমেফেন্দি। এই দম্পতির দুই পুত্র ছিল। তারা হলেন মুহাম্মদ তুসুন পাশা ও মাহমুদ পাশা।

সম্মাননা[সম্পাদনা]

  • অর্ডার অফ গ্লোরি, উসমানীয় সাম্রাজ্য
  • অর্ডার অফ দ্য উসমান্স, উসমানীয় সাম্রাজ্য
  • অর্ডার অফ নোটেবিলিটি, বিশেষ শ্রেণী, উসমানীয় সাম্রাজ্য, ১৮৫৩
  • গ্র্যান্ড ক্রস অফ দ্য অর্ডার অফ সেইন্ট জোসেফ অফ গ্র্যান্ড ডাচি অফ টুসকানি - ১৮৫৬
  • গ্র্যান্ড ক্রস অফ দ্য অর্ডার অফ নেদারল্যান্ডস লায়ন - ১৮৫৬
  • গ্র্যান্ড ক্রস অফ দ্য লিজিওন দা অনার, ফ্রান্স - ১৮৬৩

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Hughes, Hugh (১৯৮১)। Middle East Railways। Continental Railway Circle। পৃষ্ঠা 13। আইএসবিএন 0-9503469-7-7 
  2. Hughes, 1981, page 17
সাইদ পাশা
জন্ম: ১৮২২ মৃত্যু: ১৮৬৩
পূর্বসূরী
প্রথম আব্বাস
মিশরসুদানের ওয়ালি
১৮৫৪–১৮৬৩
উত্তরসূরী
ইসমাইল পাশা