লাটিম

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
লাটিম
প্রাচীন রোমে বাচ্চাদের লাটিম খেলার চিত্র

লাটিম বা লাট্টু বাংলাদেশসহ[১] ভারতীয় উপ-মহাদেশগুলিতে প্রচলিত এক প্রকার খেলনা। এটি অন্যতম একটি গ্রামীণ খেলাও বটে। প্রাচীন রোমে লাটিমের ব্যবহার সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে। লাটিম অতিতে জুয়া খেলা ও ভবিষ্যদ্বাণী করতেও ব্যবহৃত হত বলে জানা যায়।

উপকরণ[সম্পাদনা]

আগে সুতার মিস্ত্রিরাই গ্রামের কিশোরদেরকে লাটিম বানিয়ে দিতো। তারা সাধারণত পেয়ারা ও গাব গাছের ডাল দিয়ে এই লাটিম তৈরি করতো। নির্বাচিত পাট থেকে লাটিমের জন্য লতি বা ফিতা বানানো হতো। বর্তমানে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে তুলাজাতীয় নরম কাঠ দিয়ে লাটিম এবং গেঞ্জির কাপড় দিয়ে লাটিমের ফিতা বানানো হয়। সাধারণত একটি মেশিনের সাহায্যে লাটিম তৈরি করা হয় যা ঘুরতে থাকে। ধারালো ছাঁচ দেওয়ার মতো যন্ত্র দিয়ে লাটিমের শেপ বা আকার নির্ধারণ করা হয়।

লাটিম খেলা[সম্পাদনা]

কৌশল[সম্পাদনা]

কোলকাতার একটি শিল্পকলা প্রদর্শনীতে লাটিম বা লাট্টু, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত।

লৌহশলাকাকে অক্ষ বানিয়ে কাঠের বানানো গোলকটিকে খেলোয়াড় ২-৩ হাত দীর্ঘ এক টুকরো দড়ি বা সূতলি দিয়ে অক্ষশীর্ষ থেকে ক্রমশ গোলকটির নিম্নার্ধ সুষমভাবে পেঁচিয়ে হাতের প্রধানত তর্জনী ও বৃদ্ধঙ্গুল ব্যবহার ক'রে উঁচু থেকে ছুঁড়ে মাটি বা কিছুর তলে ঘুরায়।

ধরণ[সম্পাদনা]

সাধারণত তিন ধরনের লাটিম খেলা হয়। ১। বেল্লাপার ২। ঘরকোপ ৩। ঘুরতি কোপ

বেল্লাপার[সম্পাদনা]

বেল্লাপারে একটি দাগ কেটে সীমানা চিহ্নিত করা হয়। প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় নির্ধারণী খেলায় যে লাটিম পরাজিত হয় তাকে ঘর থেকে নিজেদের লাটিম দিয়ে আঘাত করে করে প্রতিযোগীরা সীমানা পার করে দেয়। ঘুর্ণায়মান লাটিম হাতে নিয়েও প্রতিযোগী লাটিমকে আঘাত করা যায়। মাটিতে রাখা লাটিমকে আঘাত করতে ব্যর্থ হলে ঐ লাটিমের স্থানে ব্যর্থ লাটিমকে রাখা হয় এবং তাকে বেল্লা পার করা হয়। শর্ত অনুযায়ী সীমানা পার করা লাটিমকে নিজের লাটিম বা দা দিয়ে কোপ দেওয়া হয়।

ঘরকোপ[সম্পাদনা]

লাটিমের ফিতা ও লাটিম দিয়ে একটি বৃত্ত আঁকার পর বৃত্তের ভিতর বন্দী লাটিমগুলোকে রাখা হয়। বৃত্তের ভিতরের লাটিমগুলিকে বাইরের মুক্ত প্রতিযোগীদের লাটিম দিয়ে আঘাত বা কোপ মেরে ক্ষত করাই এই লাটিম খেলার উদ্দেশ্য।

ঘুরতি কোপ[সম্পাদনা]

প্রতিযোগীদের মধ্যে একজন লাটিম ঘুরিয়ে দেয় আর অন্যরা তাদের লাটিম ঘুরিয়ে ওটাকে আঘাত করার চেষ্টা করে।এভাবে সবাই একবার করে ঘোরায়।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. বাংলাদেশের খেলাধুলা, রশীদ হায়দার, বাংলা একাডেমী