ম্যাক্স ওয়াকার

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ম্যাক্স ওয়াকার
২০১১ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে ম্যাক্স ওয়াকার
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামম্যাক্সওয়েল হেনরি নরম্যান ওয়াকার
জন্ম(১৯৪৮-০৯-১২)১২ সেপ্টেম্বর ১৯৪৮
রয়্যাল হোবার্ট হাসপাতাল, তাসমানিয়া, অস্ট্রেলিয়া[১]
মৃত্যু২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬(2016-09-28) (বয়স ৬৮)
মেলবোর্ন, ভিক্টোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া
ডাকনামট্যাঙ্গলস[২]
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম
ভূমিকাবোলার
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ২৬৩)
২৯ ডিসেম্বর ১৯৭৩ বনাম পাকিস্তান
শেষ টেস্ট২৫ আগস্ট ১৯৭৭ বনাম ইংল্যান্ড
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ২৩)
৩০ মার্চ ১৯৭৪ বনাম নিউজিল্যান্ড
শেষ ওডিআই১ ফেব্রুয়ারি ১৯৮১ বনাম নিউজিল্যান্ড
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৬৮/৬৯ - ১৯৮১/৮২ভিক্টোরিয়া বুশর‌্যাঞ্জার্স
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই এফসি এলএ
ম্যাচ সংখ্যা ৩৪ ১৭ ১৩৫ ৪১
রানের সংখ্যা ৫৮৬ ৭৯ ২০১৪ ২৬১
ব্যাটিং গড় ১৯.৫৩ ৯.৮৭ ১৫.৪৯ ১৫.৩৫
১০০/৫০ –/১ –/– –/৩ –/–
সর্বোচ্চ রান ৭৮* ২০ ৭৮* ৩১
বল করেছে ১০০৯৪ ১০০৬ ৩১৬৪৭ ২৪২৫
উইকেট ১৩৮ ২০ ৪৯৯ ৫২
বোলিং গড় ২৭.৪৭ ২৭.৩০ ২৬.৪৭ ২৫.২৮
ইনিংসে ৫ উইকেট ২১
ম্যাচে ১০ উইকেট - -
সেরা বোলিং ৮/১৪৩ ৪/১৯ ৮/১৪৩ ৪/১৯
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১২/– ৬/– ৪৯/– ৯/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২৪ নভেম্বর ২০১৭

ম্যাক্সওয়েল হেনরি নরম্যান ম্যাক্স ওয়াকার, (ইংরেজি: Max Walker; জন্ম: ১২ সেপ্টেম্বর, ১৯৪৮ - মৃত্যু: ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৬) তাসমানিয়ার হোবার্টে জন্মগ্রহণকারী অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন।[৩] অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। এছাড়াও তিনি অস্ট্রেলীয় রুলস ফুটবলার হিসেবেও খেলেছেন।

‘ট্যাঙ্গেলস’ ডাকনামে পরিচিত ম্যাক্স ওয়াকার মূলতঃ বোলার ছিলেন।[৩] ডানহাতে ফাস্ট মিডিয়াম বোলিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে ব্যাটিং করতেন তিনি। ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ভিক্টোরিয়ার প্রতিনিধিত্ব করেছেন।

প্রারম্ভিক জীবন[সম্পাদনা]

হাই স্কুলে অধ্যয়নকালে তাসমানিয়ার উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলেন। একটি খেলায় সেঞ্চুরিও করেন তিনি।[৪] ১৯৬৭ সালে হোবার্ট হাই স্কুল থেকে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন। মেলবোর্নে ফুটবল খেলেন ও রয়্যাল মেলবোর্ন ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে[৫][৬] ১৯৭৩ সালে ফেলোশীপ ডিপ্লোমাসহ স্নাতকধারী হন।[৩]

ছয় বছর যাবৎ গ্রীষ্মে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট, শীতকালে পেশাদারী ফুটবল ও স্থাপত্যকলায় স্নাতক ডিগ্রীতে অধ্যয়ন করেছেন।

খেলোয়াড়ী জীবন[সম্পাদনা]

১৯৭২ সালে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলে খেলার সুযোগ লাভ করেন। ২৯ ডিসেম্বর, ১৯৭২ তারিখে পাকিস্তানের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় টেস্টে তার অভিষেক হয়। খেলায় তিনি পাঁচ-উইকেট লাভ করেন। এরফলে পরের খেলায়ও তাকে রাখা হয়। ঐ টেস্টের চূড়ান্ত ইনিংসে ৬/১৫ নিলে পাকিস্তান জয়লাভ থেকে ছিটকে পড়ে। ঐ সিরিজেই তাকে ফেব্রুয়ারি-এপ্রিল, ১৯৭৩ সালে অনুষ্ঠিত ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের জন্য অস্ট্রেলিয়া দলের সদস্যরূপে রাখা হয়।[৬] ১৯৮১ সালে আঘাতপ্রাপ্তির পূর্ব-পর্যন্ত দলের প্রতিনিধিত্ব করেন।

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ৩৪ টেস্টে অংশ নিয়ে ১৩৮ উইকেট পান। ১৯৭৪ থেকে ১৯৮১ পর্যন্ত ১৭টি ওডিআইয়ে অংশ নেন। এছাড়াও ১৯৭৭ থেকে ১৯৭৯ পর্যন্ত অনুমোদনবিহীন বিশ্ব সিরিজ ক্রিকেটেও অংশ নিয়েছিলেন তিনি। ১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৮১ তারিখে অনাকাঙ্খিত ও কুখ্যাত আন্ডারআর্ম খেলায় নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অংশ নেন।[৫] কিন্তু, আঘাতের কারণে জোরপূর্বক ক্রিকেট থেকে অবসর নিতে বাধ্য হন তিনি।[৭]

অবসর[সম্পাদনা]

১৯৮১ সালে প্রতিযোগিতাধর্মী ক্রিকেট থেকে অবসর নেয়ার পর দশ বছর স্থাপত্যকলায় নিজেকে সম্পৃক্ত করেন।[৫] এছাড়াও রেডিও ও টেলিভিশনের ধারাভাষ্যকর্মে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখেন। ত্রিশ বছর ধরে ১৪টি গ্রন্থ প্রকাশ করেন ও সুপরিচিত বক্তা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। আনঅর্থোডক্স ক্রিকেট বোলিংয়ের ভঙ্গীমা প্রদর্শনের কারণে ডাকনাম ‘ট্যাঙ্গেলস’ নামে পরিচিত হন।

১৯৮১ সাল থেকে অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং করপোরেশন (এবিসি)তে ড্রিউ মরফেট ও অ্যালান ম্যাকগিলভ্রে’র সাথে চার বছর কাজ করেন।[৭] এছাড়াও, টুইউই ও থ্রিএকে বাণিজ্যিক রেডিও ক্রিকেটে ধারাভাষ্য পরিচালনা করেন।

১৩ জুন, ২০১১ তারিখে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের ক্রিকেটে খেলোয়াড়, ধারাভাষ্যকার ও যুব এবং সামাজিক কল্যাণ সংগঠনে অনবদ্য ভূমিকার স্বীকৃতিস্বরূপ অর্ডার অব অস্ট্রেলিয়ার সদস্য মনোনীত করা হয়।[৮]

এক মিলিয়নেরও অধিক সংখ্যার বই বিক্রি হয়। তার প্রথম আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ ‘ট্যাঙ্গেলস নিল’ ফিলিপসনের সাথে যৌথভাবে ১৯৭৬ সালে প্রকাশ করেন। ২০০৬ সালে সর্বশেষ ‘ক্যাপস, হ্যাটস ও হেলমেটস’ শীর্ষক গ্রন্থটি প্রকাশিত হয়েছিল।[৭][৯]

দেহাবসান[সম্পাদনা]

২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ তারিখে মজ্জাকোষার্বুদ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে দেহাবসান ঘটে তার।[১০] এর দুই বছর পূর্ব থেকেই আগস্ট, ২০১৩ সালে এ রোগের চিকিৎসা করতে থাকেন তিনি।[১০]

ব্যক্তিগত জীবনে দুইবার বিবাহ-বন্ধনে আবদ্ধ হন। প্রথম সংসারে তিন পুত্র ও দ্বিতীয় সংসারে কেরি’র গর্ভে দুই কন্যা জন্মগ্রহণ করে।[৫] তিনি ঝর্ণা কলম সংগ্রাহক ছিলেন ও এবিসি’র টেলিভিশন সিরিজ কালেক্টরের একটি পর্বে তা প্রচারিত হয়।[৭][১১]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Family Notices"The Mercury। CLXVIII, (24,263)। Tasmania, Australia। ১৪ সেপ্টেম্বর ১৯৪৮। পৃষ্ঠা 8। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ – National Library of Australia-এর মাধ্যমে। 
  2. "Max Walker | Australian Cricket | Cricket Players and Officials | ESPN Cricinfo"। cricinfo.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৭-১২ 
  3. "Max Walker: former Australian cricketer dies aged 68"The Guardian। ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ 
  4. Pierik, Jon (২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬)। "Max Walker dead at 68"Sydney Morning Herald। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ 
  5. Wilmoth, Peter (৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫)। "Meeting Australian cricket legend Max Walker"The Weekly Review। ১ অক্টোবর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ 
  6. Cavalier, Rodney। "Max Walker passes away, aged 68"cricket.com.au। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ 
  7. McGarry, Andrew (২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬)। "Max Walker: Larrikin, sportsman, raconteur and broadcaster dies aged 68"Australian Broadcasting Corporation। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ 
  8. "Max Walker AM"। Australian Honours Database। ৪ অক্টোবর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ জুন ২০১১ 
  9. "Caps, hats & helmets : cricket's a funny game! / Max Walker"। National Library of Australia। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ 
  10. "Max Walker died of a blood cancer called myeloma, not melanoma"ABC News। ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ 
  11. "The Collectors"। Australian Broadcasting Corporation। ১ অক্টোবর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ 

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]