মারে বিসেট

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
স্যার মারে বিসেট
ব্যক্তিগত তথ্য
জন্ম১৪ এপ্রিল, ১৮৭৬
পোর্ট এলিজাবেথ, কেপ উপনিবেশ
মৃত্যু২৪ অক্টোবর, ১৯৩১ (৫৫ বছর)
সল্‌স্‌বারি, দক্ষিণ রোডেশিয়া
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনস্লো লেফট আর্ম অর্থোডক্স
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৪০
রানের সংখ্যা ১০৩ ১৪৩৬
ব্যাটিং গড় ২৫.৭৫ ২৩.৫৪
১০০/৫০ ০/০ ২/৪
সর্বোচ্চ রান ৩৫ ১৮৪
বল করেছে ১৯২
উইকেট
বোলিং গড় ২৪.৩৯
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ২/২০
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ২/১ ৫১/১৩
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮

স্যার মারে বিসেট (ইংরেজি: Murray Bisset; জন্ম: ১৪ এপ্রিল, ১৮৭৬ - মৃত্যু: ২৪ অক্টোবর, ১৯৩১) কেপ উপনিবেশের পোর্ট এলিজাবেথে জন্মগ্রহণকারী প্রথিতযশা দক্ষিণ আফ্রিকান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ও অধিনায়ক ছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৮৯৯ থেকে ১৯১০ সময়কালে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন। ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে ওয়েস্টার্ন প্রভিন্সের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। দলে তিনি মূলতঃ উইকেট-রক্ষক হিসেবে খেলতেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স বোলিংয়ে পারদর্শীতা দেখিয়েছেন মারে বিসেট

দক্ষিণ রোডেশিয়ার চলে যাবার পূর্বে দক্ষিণ আফ্রিকা দলের অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। সেখানে তিনি দক্ষিণ রোডেশিয়ার প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করেন ও সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য দক্ষিণ রোডেশিয়ার গভর্নর ছিলেন।

শৈশবকাল[সম্পাদনা]

পোর্ট এলিজাবেথে জন্মগ্রহণকারী মারে বিসেট প্রকৌশলী ও ওয়েনবার্গের সাবেক মেয়র জেমস বিসেট এবং কেপটাউনের সাবেক মেয়র হারকিউলিস জার্ভিস, এমএলসি, এমএলএ ’র কন্য এমিলি দম্পতির পঞ্চম পুত্র ছিলেন।[১]

রন্ডেবোশের ডিওসেসান কলেজে পড়াশোনা করেছেন মারে বিসেট। এ সময়েই ব্যাটসম্যান ও দ্রুতগতিসম্পন্ন বোলারদের বলগুলো উইকেটের পিছনে দণ্ডায়মান থেকে মোকাবেলা করার জন্যে সুখ্যাতি অর্জন করেন।[২]

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট[সম্পাদনা]

১৮ এপ্রিল, ১৮৯৫ তারিখে ওয়েস্টার্ন প্রভিন্সের সদস্যরূপে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ডারবানে প্রতিপক্ষ ট্রান্সভালের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত ঐ খেলায় তিনি ০ ও অপরাজিত পাঁচ রান তুলতে পেরেছিলেন। দূর্বল ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন স্বত্ত্বেও মারে বিসেট ওয়েস্টার্ন প্রভিন্স দলের নিয়মিত সদস্যের মর্যাদা পেয়েছিলেন। ১৮৯৭ সালে একই দলের বিপক্ষে অপরাজিত ১২৪ রান তুলেছিলেন। ঐ বছরের কারি কাপের চূড়ান্ত খেলায় ওয়েস্টার্ন প্রভিন্স দলের অধিনায়ক হিসেবে মনোনীত করা হয় তাকে। খেলায় তিনি ৫ ও অপরাজিত ৬৩ রান তুলেন।

সর্বমোট ৪০টি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়ে দুই সেঞ্চুরি সহযোগে ২৩.৬২ গড়ে ১৪৪১ রান তুলেছিলেন। ২৪.৪০ গড়ে পাঁচ উইকেট লাভ করেন। এছাড়াও, ৫১ ক্যাচ ও ১৩ স্ট্যাম্পিংয়ে সহযোগিতা করেছেন মারে বিসেট।

টেস্ট ক্রিকেট[সম্পাদনা]

ফলশ্রুতিতে সফরকারী ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকা দলের অধিনায়ক হিসেবে খেলা নিশ্চিত করেন। ১৪ ফেব্রুয়ারি, ১৮৯৯ তারিখে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে মারে বিসেটের। এ সময় তার বয়স ছিল মাত্র ২২ বছর। ১৯৫৭ সালে অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক ইয়ান ক্রেগের দায়িত্ব লাভের পূর্ব-পর্যন্ত টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসের সর্বকনিষ্ঠ অধিনায়কের মর্যাদা পেয়েছিলেন।[৩]

উইকেট-রক্ষক ও ব্যাটসম্যানের যৌথ দায়িত্বে থেকে মারে বিসেট ৩৫ ও অপরাজিত ২১ রান তুলেছিলেন। এছাড়াও, একটি ক্যাচ ও একটি স্ট্যাম্পিং করেছিলেন তিনি। সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টেও অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। তবে, নতুন শতকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে দূরে সরে আসলে পরবর্তী ১১ বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। নিজস্ব তৃতীয় টেস্টটিই তার সর্বশেষ টেস্ট ছিল।

আইন বিষয়ে অধ্যয়ন করেছেন মারে বিসেট। স্নাতক ডিগ্রী লাভের পর ১৮৯৯ সালে কেপ বারে অন্তর্ভুক্ত হন ও দক্ষিণ আফ্রিকান যুদ্ধে অংশগ্রহণের পূর্বে কেপে আইন চর্চা করেন।[৪] যুদ্ধকালীন সেবায় অংশগ্রহণের পর ১৯০১ সালে ইংল্যান্ড সফরে দক্ষিণ আফ্রিকা দলকে নেতৃত্ব দেন। তবে, যুদ্ধকালীন এ সফরকে ঘিরে তুমুল সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয়েছে তাকে।[২] এ সফরের মধ্যমণি ছিলেন তিনি। এতে কোন টেস্ট খেলা অন্তর্ভুক্ত ছিল না। তবে, ডার্বিশায়ারের বিপক্ষে তিনি ১৮৪ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এটিই তার প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত সংগ্রহ ছিল।

দক্ষিণ আফ্রিকায় ফিরে বার থেকে অনুমোদন পেয়ে মারে বিসেট ক্রিকেট খেলা চালিয়ে যান। কেপ টাউনে সফরকারী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের পঞ্চম টেস্ট খেলার জন্য পুনরায় তাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ঐ টেস্টে উইকেট-রক্ষণের দায়িত্বে ছিলেন ও মাঝারিসারিতে ব্যাটিংয়ে নামেন তিনি। এ খেলার পর অবসর গ্রহণ করেন ও আইন চর্চায় মনোনিবেশ ঘটান।

রাজনৈতিক জীবন[সম্পাদনা]

১৯১৪ সালে সাউথ আফ্রিকান পার্টি’র সদস্যরূপে সাউথ পেনিনসুলা এলাকা থেকে প্রতিনিধি সভায় যোগ দেন। ১৯২৪ সালে রাজনীতি থেকে অবসর নেয়ার পূর্ব-পর্যন্ত এ আসনটি তার অধীনে ছিল।[৫] সংসদে অবস্থানকালে ১৯২১ সালে প্রাইভেট মেম্বার্স বিল উত্থাপন করেছিলেন। ব্যর্থ হয়ে যাওয়া এ বিলে একজন বিধবাকে আইনের মাধ্যমে মৃত স্বামীর ভাইকে বিয়ে করার কথা উল্লেখ ছিল।[১]

রাজনীতি থেকে অবসর নেয়ার পর মারে বিসেট দক্ষিণ রোডেশিয়ায় চলে যান। সেখানে ১৯২৫ সালে জ্যেষ্ঠ বিচারকের আসনে উপনীত হন। ১৯২৭ থেকে আমৃত্যু দক্ষিণ রোডেশিয়ার প্রধান বিচারকের আসনে বসেন। ১৯২৮ সালে নাইটসপ্রাপ্ত হন। একই সালে দক্ষিণ রোডেশিয়ার ভারপ্রাপ্ত গভর্নরের দায়িত্ব পালন করেন। গভর্নর সেসিল হান্টার-রডওয়েল ইংল্যান্ডে অবস্থানকালে আবারও এ দায়িত্ব পান।[৫]

ব্যক্তিগত জীবন[সম্পাদনা]

২৪ অক্টোবর, ১৯৩১ তারিখে ৫৫ বছর বয়সে দক্ষিণ রোডেশিয়ার সল্‌স্‌বারিতে মারে বিসেটের দেহাবসান ঘটে। ১৯০৫ সালে গ্ল্যাডিস নাম্নী এক রমণীর পাণিগ্রহণ করেন। মৃত্যুকালে স্ত্রী ও এক পুত্র সন্তান রেখে যান।[১]

মারে বিসেটের ভাই - এডগার বিসেট ও আর্থার বিসেট এবং শ্যালক আর্চিবল্ড ডিফোর্ড দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলেছেন।[৬]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Beyes, C.J. (1981) The Dictionary of South African Biography, vol. 4, Butterworth & Co., Durban.
  2. Martin-Jenkins, C. (1996) World Cricketers: A Biographical Dictionary, Oxford: Oxford University Press. আইএসবিএন ০-১৯-২১০০০৫-X.
  3. CricInfo Records / Test matches / Individual records (captains, players, umpires) / Youngest captains.
  4. Rosenthal, E. (1978) Encyclopaedia of Southern Africa, Juta & Company Ltd: Cape Town. আইএসবিএন ০-৭০২১-০৯৭১-১
  5. The Times "Obituary – Sir Murray Bisset", The Times, 26 October 1931, p 19.
  6. Cricket Archive Murray Bisset.

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]

পূর্বসূরী
জন রবার্ট চ্যান্সেলর
দক্ষিণ রোডেশিয়ার গভর্নর
১৯২৮
উত্তরসূরী
সেসিল হান্টার-রডওয়েল