রাহু

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
রাহু
উত্তর লুনার নোড
Rahu
Rahu: Head of Demon Snake
দেবনাগরীराहु
অন্তর্ভুক্তিগ্রহ, অসুর
আবাসপাতাললোক
মন্ত্রওঁ রাহবে নমঃ
ॐ कया नश्चित्र आभुवदूती सदावृधस्सखा। कया शचिचष्ठया वृता॥ om kayā naścitra ābhuvadūtī sadāvṛdhassakhā kayā śacicaṣṭhayā vṛtā
ওঁ কয়া নশ্চিত্র আভূবদতী সদাবৃধস্ সখা। কয়া শচিচষ্টয়া বৃতা॥গায়ত্রী মন্ত্র : ওঁ শিরোরূপায় বিদ্মহে অমৃতেশায় ধীমহি তন্নোঃ রাহু প্রচোদয়াৎ।
প্রণাম মন্ত্র : অর্দ্ধকায়ং মহাঘোরং চন্দ্রাদিত্যবিমর্দকম্। সিংহিকায়াঃ সূতং রৌদ্রং ত্বং রাহুং প্রণাম্যহম্।।
অঞ্চলঅন্ধ্রপ্রদেশ, ভারত; দক্ষিণপূর্ব

রাহু (প্রতীক: ), হিন্দু জ্যোতিষশাস্ত্র অনুসারে স্বরভানু নামক এক অসুরের কর্তিত মুন্ড, যে গ্রহণের সময় সূর্য বা চন্দ্রকে গ্রাস করে। একে আটটি শ্যামবর্ণ ঘোড়ায় টানা রথে আরূঢ় স্কন্ধহীন সর্পরূপে চিত্রিত করা হয়। বৈদিক জ্যোতিষশাস্ত্রে, একে নবগ্রহের মধ্যে একটি স্থান দেওয়া হয়েছে। দিবাভাগে রাহুকাল নামক মুহূর্তকে (২৪ মিনিট) অশুভ বলে গণ্য করা হয়।[১]

Rahu: Head of Demon Snake, Konarak Idol, British Museum

পৌরাণিক তথ্য[সম্পাদনা]

হিন্দু পুরাণ[সম্পাদনা]

পুরাণ অনুসারে, সমুদ্র মন্থনের সময় রাহু (স্বরভানু) নামক এক অসুর লুকিয়ে দিব্য অমৃতের কয়েক ফোঁটা পান করে। সূর্য্য ও চন্দ্রদেব তাকে চিনতে পেরে মোহিনী অবতাররূপী ভগবান বিষ্ণুকে জানায়। তৎক্ষণাৎ,অমৃত গলাধঃকরণের পূর্বেই বিষ্ণু আপন সুদর্শন চক্রের মাধ্যমে রাহুর ধড় থেকে মুন্ড ছিন্ন করে দেন। অমৃত পানের জন্য মুন্ডটি অমরত্ব লাভ করে এবং এভাবেই রাহু গ্রহটির উৎপত্তি হয়; বাকী মুন্ডহীন দেহটির নাম হয় কেতু। সূর্য্য ও চন্দ্রের প্রতি বিদ্বেষের কারণে বছরের নির্দিষ্ট সময় অন্তর রাহু এদেরকে গ্রাস (গ্রহণ) করে ফেলে। কিন্তু এই গ্রহণের পর সূর্য্য ও চন্দ্র রাহুর কাটা গ্রীবা থেকে আবার বেরিয়ে আসে।

বৌদ্ধ পুরাণ[সম্পাদনা]

বৌদ্ধ সুত্র পিটকের সংযুক্ত নিকায়ের, (দেবপুত্র সংযুক্ত নিকায়) সূর্য সুত্র এবং চন্দ্র সুত্র অনুসারে, রাহু সূর্য্য ও চন্দ্রকে গ্রাস (গ্রহণ) করলে সূর্য্য ও চন্দ্র বুদ্ধের স্তোত্র পাঠ করে রাহুর কবল থেকে আবার বেরিয়ে আসে।[২][৩] এরপর রাহুর প্রতি জিজ্ঞাসিত হলে কেন সে সূর্য এবং চন্দ্রকে ছেড়ে দেয়, রাহু উত্তর দেয় চন্দ্র এবং সূর্য বুদ্ধের প্রতি মুক্তি লাভের জন্য প্রার্থনা করে, এবং যদি রাহু চন্দ্র এবং সূর্যকে ছেড়ে না দিত তাহলে বুদ্ধের শীল তেজের প্রভাবে রাহুর মস্তক সাতটি টুকরাতে বিভাজিত হয়ে যেত।[৩] এজন্য এই স্তোত্রকে বৌদ্ধ সাহিত্যে সুরক্ষা স্তোত্রের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে।[৪]

জ্যোতির্বিদ্যায় রাহুর স্থিতি[সম্পাদনা]

ভারতীয় জ্যোতিষ অনুসারে, রাহু ও কেতু সূর্য এবং চন্দ্রের পরিক্রমণ পথে ঘুরতে থাকা দুটি বিন্দু যারা পৃথিবীর সাপেক্ষে একে অপরের বিপরীত দিকে (১৮০ ডিগ্রী) অবস্থিত। এই গ্রহদুটি যেহেতু কোন মহাজাগতিক বস্তু নয়, তাই এদেরকে ছায়া গ্রহ বলা হয়। মহাকাশে সূর্য ও চন্দ্রের পরিক্রমণ পথ অনুযায়ী রাহু ও কেতুর স্থিতিও পরিবর্তিত হয়। পূর্ণিমার সময়ে চাঁদ যদি রাহু (অথবা কেতু) বিন্দুতে থাকে, তবে পৃথিবীর ছায়া পড়ায় চন্দ্রগ্রহণ ঘটে; কেননা পূর্ণিমার সময় চাঁদ ও সূর্য পরস্পরের বিপরীতে অবস্থান করে। পাশ্চাত্য বিজ্ঞানে, রাহু ও কেতুকে যথাক্রমে উত্তর ও দক্ষিণ লুনারনোড বলা হয়ে থাকে।

চিত্রাবলী[সম্পাদনা]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Gopal, Madan (১৯৯০)। K.S. Gautam, সম্পাদক। India through the ages। Publication Division, Ministry of Information and Broadcasting, Government of India। পৃষ্ঠা 77 
  2. Candima Sutta
  3. "Suriya Sutta: The Sun Deity's Prayer for Protection"www.accesstoinsight.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৬-০২ 
  4. Access to Insight; see the summary in the Devaputta-samyutta section