মুকুন্দরাম চক্রবর্তী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
কবিঙ্করণ

মুকুন্দরাম চক্রবর্তী
জন্মআনু. ১৫৪০ খ্রিস্টাব্দ
দামুন্যা, বর্ধমান (বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ, ভারত)
মৃত্যুআনু. ১৬০০ খ্রিস্টাব্দ
পেশাসভাকবি, গৃহ শিক্ষক
ভাষামধ্যযুগীয় বাংলা
সময়কালমধ্যযুগ
ধরনকাব্য
বিষয়মঙ্গলকাব্য (চণ্ডীমঙ্গল)
সাহিত্য আন্দোলনগৌড়ীয় বৈষ্ণববাদ
উল্লেখযোগ্য রচনাঅভয়ামঙ্গল, অম্বিকামঙ্গল
আত্মীয়হৃদয় মিশ্র (পিতা)
দৈবকী (মাতা)

মুকুন্দরাম চক্রবর্তী (আনু. ১৫০০–১৫৫১ খ্রিষ্টাব্দ) একজন মধ্যযুগীয় বাঙালি কবি।

আনুমানিক ১৫৭৫ সালে বর্ধমান রাজের ডিহিদার মামুদ শরিফের অত্যাচারের কারণে মুকুন্দরাম তাঁর পৈতৃক নিবাস ত্যাগ করতে বাধ্য হন এবং ব্রাহ্মণ শাসক বীর বাঁকুড়া রায়ের আশ্রয় ও পৃষ্ঠপোষকতা পান, যিনি মেদিনীপুরের ব্রাহ্মণভূম এলাকায় শাসন করতেন এবং দেবী চণ্ডীর ভক্ত ছিলেন।[১] বাঁকুড়া রায় মুকুন্দরামকে তাঁর পুত্রের গৃহশিক্ষক নিযুক্ত করেন। পরবর্তীতে আড়রার জমিদার রঘুনাথ রায়ের সভাকবিরূপে চণ্ডীমঙ্গল কাব্য রচনা করেন, যার জন্য তিনি 'কবিকঙ্কণ' উপাধিতে ভূষিত হন।[২] কবিকঙ্কণ অর্থ যে কবি হাতে অথবা পায়ে ঘুঙুর পরে গান করতেন, অর্থাৎ মঙ্গলকাব্যের পেশাদার গায়ক।[৩]

তাঁর সবচেয়ে বিখ্যাত রচনা চণ্ডীমঙ্গল মধ্যযুগীয় বাংলার সামাজিক-রাজনৈতিক পটভূমির একটি ভাষ্য। সেখানে তিনি একজন দরিদ্র শিকারী কল্লাকেতু ও একজন ধনী বণিক ধনপতি এবং তাঁদের স্ত্রীদের কাহিনির আশ্রয়ে নিজের জীবনের ভ্রমণ ও কষ্টগুলোকে বর্ণনা করেছেন, যাঁদের উভয়েই বিপদে আটকা পড়ে এবং পরবর্তীকালে দেবী অভয়া বা চণ্ডী উদ্ধার তাঁদের উদ্ধার করেন, তাঁরা উভয়ই লোকদেবদেবী। চণ্ডীমঙ্গল মধ্যযুগীয় বাংলায় বিদ্যমান জটিল সামাজিক কাঠামোর একটি সমৃদ্ধ ও বিশদ বিবরণ প্রদান করে।[৪]

তিনি তার কাব্যে উপন্যাসের বীজ বপন করেছেন। আধুনিক যুগের সাহিত্য সমালোচকগণ[কে?] তার সম্পর্কে বলেছেন - ' মুকুন্দরাম চক্রবর্তী মধ্যযুগে জন্মগ্রহণ না করে আধুনিক যুগে জন্মগ্রহণ করলে কাব্য না লিখে উপন্যাস লিখতেন'। যদি এমন কোন গ্রন্থের নাম করতে হয় যাতে আধুনিক কালের, উপন্যাসের,রস কিছু পরিমাণে মেলে যেমন- নিপুণ পর্যবেক্ষণ, সহৃদয়তা, জীবনে আস্থা, ব্যাপক অভিজ্ঞতা সবই যথোচিত পরিমাণে বর্তমান।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. O’malley, L. S. S. (১৯৯৫)। Bengal District Gazetteers – Midnapore 
  2. সাহিত্যপাঠ। একাদশ-দ্বাদশ ও আলিম শ্রেণি। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড, ঢাকা, বাংলাদেশ। ২০২২। পৃষ্ঠা ২২১। 
  3. বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস, প্রথম খন্ড, সুকুমার সেন, আনন্দ পাবলিশার্স।
  4. Chakrabarti, Kunal; Chakrabarti, Shubhra (২০১৩-০৮-২২)। Historical Dictionary of the Bengalis (ইংরেজি ভাষায়)। Scarecrow Press। পৃষ্ঠা 120–121। আইএসবিএন 978-0-8108-8024-5