বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা

স্থানাঙ্ক: ২৬°৬′০″ উত্তর ৮৮°১৬′৩০″ পূর্ব / ২৬.১০০০০° উত্তর ৮৮.২৭৫০০° পূর্ব / 26.10000; 88.27500
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বালিয়াডাঙ্গী
উপজেলা
মানচিত্রে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা
মানচিত্রে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা
স্থানাঙ্ক: ২৬°৬′০″ উত্তর ৮৮°১৬′৩০″ পূর্ব / ২৬.১০০০০° উত্তর ৮৮.২৭৫০০° পূর্ব / 26.10000; 88.27500 উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
দেশবাংলাদেশ
বিভাগরংপুর বিভাগ
জেলাঠাকুরগাঁও জেলা
আয়তন
 • মোট২৮৪ বর্গকিমি (১১০ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (২০১১)
 • মোট২,০৩,৭৭৬জন[১]
সাক্ষরতার হার
 • মোট৪৮%
সময় অঞ্চলবিএসটি (ইউটিসি+৬)
প্রশাসনিক
বিভাগের কোড
৫৫ ৯৪ ০৮
ওয়েবসাইটদাপ্তরিক ওয়েবসাইট উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন

বালিয়াডাঙ্গী বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা

অবস্থান ও আয়তন[সম্পাদনা]

রংপুর বিভাগের অন্তর্গত ঠাকুরগাঁও জেলার উপজেলা বালিয়াডাঙ্গীর উত্তরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গপঞ্চগড় জেলার আটোয়ারী উপজেলা, দক্ষিণে রানীশংকাইল উপজেলা, পূর্বে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা, পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ। এই উপজেলা ২৫°৫৯' উত্তর অক্ষাংশ হতে ২৬°১২' উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°১০' পূর্ব দ্রাঘিমাংশ হতে ৮৮°২২' পূর্ব দ্রাঘিমাংশ পর্যন্ত বিস্তৃত। মোট আয়তন- ৭০১৯০ একর।

প্রশাসনিক এলাকা[সম্পাদনা]

এই উপজেলা ৮টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। সেগুলো হচ্ছে ১. পাড়িয়া, ২. চাড়োল, ৩. ধনতলা, ৪. বড়পলাশ বাড়ী, ৫. দুওসুও, ৬. ভানোর, ৭. আমজানখোর ও ৮. বড়বাড়ি ইউনিয়ন

ইতিহাস[সম্পাদনা]

তীরনই নদীর বুক চিরে গড়ে উঠে এই উপজেলা । নদীর পশ্চিম তীরে ছিল জমিদারগণের আবাস। অনেকের মতে জমিদারগণ তাদের নিরাপত্তার জন্য ১৯০৮ সালে বর্তমান পাইলট স্কুলের উত্তর পার্শ্বে নদীর ধারে একটি পুলিশ ফাঁড়ির ব্যবস্থা করেন। এই পুলিশ ফাঁড়ী কালক্রমে বর্তমান স্থানান্তরিত হয়ে একটি স্বতন্ত্র থানা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৮৩ সালে এই থানা উপজেলায় রুপান্তরিত হয়।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] ১৯৪০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে লাহিড়ীহাটে জমিদারদের স্বেচ্ছাচারমূলক তোলা আদায়ের বিরুদ্ধে কৃষকগণ সংগঠিত হন, যা রাজনৈতিক ইতিহাসে "তোলাবাটি" আন্দোলন নামে খ্যাত হয়। এই আন্দোলনে নেতৃত্বদানের দায়ে গ্রেফতারবরন করেন এবং তিনমাস বন্দী জীবন কাটান কৃষক নেতা কম্পরাম সিং। তোলাবটি আন্দোলন শেষ না হতেই সমগ্র উত্তরবঙ্গের সাথে বালিয়াডাঙ্গী বর্গা চাষীদের তেভাগা আন্দোলন সংগঠিত হয় এবং কম্পরাম সিং সেই আন্দোলনে নেতৃত্ব প্রদান করেন।[২]

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় কোথাও কোথাও দো-আঁশ মাটি পাওয়া গেলেও অধিকাংশ মাটিই বেলে মাটি। এ মাটিতে তেমন ভাল ফসল হতো না। কেবল কচু, বেগুন, আখ ইত্যাদি উৎপন্ন হতো ।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] বালিয়াডাঙ্গী মৌজায় থানা ও বর্তমান উপজেলা প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় থানার নামও হয়েছে বালিয়াডাঙ্গী।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ[সম্পাদনা]

হরিণমারীর ঐতিহ্যবাহী সূর্যপুরী আমগাছ

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা প্রাচীন নিদর্শন ও ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ; উল্লেখযোগ্য নিদর্শনের মধ্যে রয়েছেঃ

  • হরিণমারীর ঐতিহ্যবাহী সূর্যপুরী আমগাছ;
  • সনগাঁও তিনগম্বুজ শাহী মসজিদ;
  • ফতেহপুর তিনগম্বুজ মসজিদ;
  • হরিণমারী হাট শিবমন্দির;
  • ইমামবাড়া;
  • সর্বমঙ্গলা জামে মসজিদের শিলালিপি;
  • গড়খাঁড়ি দুর্গ;
  • সনগাঁও দুর্গ;
  • উদয়পুর মোহনাশ্রম;
  • চাড়োল তিন গম্বুজ মসজিদ;
  • ভবানী বাবুর জমিদার বাড়ি;
  • রূপগঞ্জের জমিদার বাড়ির;
  • আধারদিঘি ও আধারদিঘির মেলা;
  • বামুনিয়া পীর সাহেবের মাজার।

জনসংখ্যার উপাত্ত[সম্পাদনা]

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার মোট জনসংখ্যা ২,০৩,৭৭৬। এই উপজেলার প্রচুর মানুষ জীবিকার তাগিদে দেশে ও বিদেশের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে আছে,যা ঠাকুরগাঁও জেলার উপজেলাগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ।

শিক্ষা[সম্পাদনা]

বালিয়াডাঙ্গি উপজেলার মোট প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৩১ টি, মোট মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩৫টি এবং কলেজ রয়েছে ৩টি, কারিগরি কলেজ ৩টি, ফাজিল মাদ্রাসা ২টি এবং দাখিল মাদ্রাসা আছে ১৭টি। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুসারে শিক্ষার হার শতকরা ৪৮ ভাগ।[১]

অর্থনীতি[সম্পাদনা]

কৃষি মূলত এই অঞ্চলের মানুষের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি। ৯৫% ভাগ মানুষ কৃষিতে নির্ভরশীল।

নদীসমূহ[সম্পাদনা]

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় চারটি নদী রয়েছে। সেগুলো হচ্ছে নাগর নদী, কুলিক নদী, নোনা নদী, তীরনই নদীআমনদামন নদী[৩][৪]

ভাষা ও সংস্কৃতি[সম্পাদনা]

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ভাষা বাংলাদেশের অন্য যেকোন অঞ্চলের তুলনায় ভিন্ন। এই ভাষা স্বাতন্ত্র্য ও নিজস্ব বৈশিষ্ট্যমন্ডিত। বিশেষজ্ঞদের মতে, ঠাকুরগাঁও জেলার টাঙ্গন নদী হচ্ছে ভাষাগত সীমানা। পূর্বদিকের ভাষা রাজবংশী ভাষার সঙ্গে মিল আর পশ্চিমে হিন্দি-উর্দু ভাষা প্রভাবিত। সাঁওতাল, ওরাও আদিবাসী এবং রাজবংশী, পলিয়া উপজাতি জনগোষ্ঠীর প্রাত্যহিক জীবনাচরণের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সংমিশ্রণ ভাষাগত পরিবেশকে করেছে বৈচিত্র্যময়। এছাড়া রয়েছে অত্র অঞ্চলের পশ্চিমাঞ্চলীর কয়েকটি উপজেলার সঙ্গে ভারতের মালদহ, পূর্ণিয়া ও বিহার অঞ্চলের নিকটবর্তী প্রভাব।

এই অঞ্চলের আঞ্চলিক ভাষা কে "ঢেঁকি" ভাষা বলা হয়ে থাকে। উপজেলার উল্লেখযোগ্য সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানগূলোর মধ্যে রয়েছে ক্লাব ৩৪, নাট্যদল ৩, যাত্রাদল ১, সিনেমা হল ২, খেলার মাঠ ৩২।

উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব[সম্পাদনা]

বিবিধ[সম্পাদনা]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "এক নজরে বালিয়াডাঙী ঊপজেলা"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। সংগ্রহের তারিখ ২০ জুন ২০১৫ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  2. হোসেন, সেলিনা; ইসলাম, নুরুল, সম্পাদকগণ (ফেব্রুয়ারি ১৯৯৭)। "কম্পরাম সিং" (ছাপা)বাংলা একাডেমী চরিতাভিধান (পরিমার্জিত ও পরিবর্ধিত বিতীয় সংস্করণ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলা একাডেমী। পৃষ্ঠা ১০৮। 
  3. ড. অশোক বিশ্বাস, বাংলাদেশের নদীকোষ, গতিধারা, ঢাকা, ফেব্রুয়ারি ২০১১, পৃষ্ঠা ৪০৫, আইএসবিএন ৯৭৮-৯৮৪-৮৯৪৫-১৭-৯
  4. মানিক মোহাম্মদ রাজ্জাক, বাংলাদেশের নদনদী: বর্তমান গতিপ্রকৃতি, কথাপ্রকাশ, ঢাকা, ফেব্রুয়ারি, ২০১৫, পৃষ্ঠা ১৩১, ৬১৭, ISBN 984-70120-0436-4.

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]