বঙ্কিম মুখার্জী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বঙ্কিম মুখার্জী
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম(১৮৯৭-০৬-০৫)৫ জুন ১৮৯৭
মৃত্যু১৫ নভেম্বর ১৯৬১(1961-11-15) (বয়স ৬৪)
রাজনৈতিক দলভারতের কমিউনিস্ট পার্টি

বঙ্কিম মুখার্জী (৫ জুন, ১৮৯৭ - ১৫ নভেম্বর, ১৯৬১) একজন বাঙালী, ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের কর্মী ও ভারতের সাম্যবাদী, শ্রমিক কৃষক আন্দোলনের অন্যতম প্রধান নেতা ছিলেন। সারা ভারত ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেসের সহ সম্পাদিকা শান্তা ভেলেরাও তার স্ত্রী।

প্রারম্ভিক জীবন[সম্পাদনা]

বঙ্কিম মুখার্জী হাওড়া জেলাবেলুড়ে জন্মগ্রহণ করেন। পিতার নাম ছিল যোগেন্দ্রনাথ মুখার্জী। কলকাতার হিন্দু স্কুল ও প্রেসিডেন্সী কলেজে শিক্ষালাভ করেন তিনি। এম এস সি পড়ার সময় উত্তরপ্রদেশে শিক্ষকতার কাজ নেন। এসময় তার বন্ধু, স্বাধীনতা সংগ্রামী রাধারমণ মিত্র তার সাথে যান উভয়ে ১৯২১ সালে অসহযোগ আন্দোলনে যোগদান করেন। এই আন্দোলনে যোগ দিয়ে উত্তরপ্রদেশের জেলে বন্দী থাকেন কিছুদিন। মুক্তি পেয়ে মতিলাল নেহেরুর নির্দেশে বাঙলায় ফিরে নবগঠিত কংগ্রেস স্বরাজ্য পার্টির বক্তা হিসেবে কাজ করতে থাকেন।[১]

সাম্যবাদী আন্দোলন[সম্পাদনা]

বিপ্লবী ড. ভূপেন্দ্রনাথ দত্তর সংস্পর্শে এসে তিনি সাম্যবাদে আকৃষ্ট হন। শ্রমিক ও কৃষক আন্দোলনের সাথে জড়িত হয়ে পড়েন। ১৯২৭ সালের ঐতিহাসিক চেঙ্গাইল জুট শ্রমিকদের বৃহৎ ধর্মঘট পরিচালনা করেছিলেন। আবদুল মোমিনের সাথে ১৯২৮-২৯ সালের গাড়োয়ান ধর্মঘট ও ১৯৩০ সালের আইন অমান্য আন্দোলনে অংশগ্রহণ করায় তাকে কারাবরন করতে হয়। কমিউনিস্ট নেতা আবদুল হালিম, আবদুর রেজ্জাক খানের সাথে মেটিয়াবুরুজ - ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে ব্যাপক শ্রমিক আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন তিনি। ১৯৩৬ সালে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগ দেন বঙ্কিম মুখার্জী। তিনি ছিলেন সর্বভারতীয় কিষান সভার প্রতিষ্ঠাতা ও সারা ভারত ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেসের নেতা। ১৯৩৬ সালে আসানসোল লেবার কনস্টিটুয়েন্সি থেকে তিনি বঙ্গীয় বিধান পরিষদের সভ্য নির্বাচিত হন। তিনিই ভারতের প্রথম নির্বাচিত কমিউনিস্ট সদস্য।[১] তিনি ক্যালকাটা ট্রামওয়েজ ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাথেও যুক্ত ছিলেন।[২]

সংসদীয় রাজনীতি[সম্পাদনা]

স্বাধীনতার পরে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (অবিভক্ত) নিষিদ্ধ হলে তাকে আত্মগোপন করতে হয়। ১৯৪৮-৪৯ পর্যন্ত আত্মগোপন করে থাকার পর ১৯৫২ সালে বজবজ বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী হন এবং কংগ্রেস প্রার্থীকে পরাজিত করেন। ১৯৫৭ সালের বিধানসভা ভোটে পূনরায় তিনি জয়ী হয়েছিলেন। ১৯৫৯ সালের খাদ্য আন্দোলনে যোগ দিয়ে বৃদ্ধ বয়েসেও কারাবাস করেন বঙ্কিম মুখার্জী। পরিষদীয় বক্তা রুপে তিনি ছিলেন সর্বজন শ্রদ্ধেয় রাজনীতিবিদ।[১]

মৃত্যু[সম্পাদনা]

১৫ নভেম্বর, ১৯৬১ সালে মারা যান বঙ্কিম মুখার্জী।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. প্রথম খণ্ড, সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত (২০০২)। সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান। কলকাতা: সাহিত্য সংসদ। পৃষ্ঠা ৩২৬। 
  2. "কলকাতা ট্রামওয়ে"। বাংলাপিডিয়া। সংগ্রহের তারিখ ১১ জুন ২০১৭