ফেই শিন

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

ফেই শিন (চীনা: 费信; প্রায় ১৩৮৫ - ১৪৩৬ পরবর্তী) মিং রাজবংশের নৌসেনাপতি ঝং হ-র বহরের সামরিক কর্মীদের একজন সদস্য ছিলেন। তিনি চীনা জাহাজ যে সকল দেশগুলোতে পৌঁছেছিল সেই দেশগুলি সম্পর্কে একটি বইয়ের লেখক হিসাবে পরিচিত।

জীবনচরিত[সম্পাদনা]

ফেই শিনের জীবন সম্পর্কে বেশি কিছু জানা যায়নি।[১] তাঁর পরিবার এসেছিল আজকের চিয়াংসু প্রদেশের খুনশান থেকে। তাঁর লেখায় উল্লিখিত বিভিন্ন তারিখ বিবেচনার ভিত্তিতে মনে করা হয়, সম্ভবত তিনি হংউ যুগের (১৩৮৫ খ্রিস্টাব্দ) ১৭তম বছরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন, যদিও কিছু কিছু লেখকের হিসাবে মনে হয় যে তাঁর জন্ম হয়েছিল ১৩৮৮-এ।[২][৩] তিনি নিজে থেকে আরবি ভাষা রপ্ত করেছিলেন।

ফেই শিন তার বইয়ের মুখবন্ধে যা বলেছেন, সে অনুযায়ী মনে হয় তার পরিবার দরিদ্র ছিল। তার বড় ভাইকে নিকটস্থ থাইসাং গ্যারিসনে কাজ করার জন্য ডেকে নেয়া হয়েছিল, তবে শীঘ্রই তিনি মারা যান। ১৩৯৮ সালে বা তার পরে বালক ফেই শিন তার জায়গায় যোগ দেন।[২][৪] জে.জে.এল ডুয়েভেন্দক মনে করেন যে ফেই ভাইয়েরা তাদের বাবা বা দাদার পূর্বতন কোনও রাজনৈতিক বা অন্য অপরাধের শাস্তি হিসাবেই ওই কাজে যোগ দিতে বাধ্য হন। এই ধারণার পক্ষে প্রকৃত কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে ফেই শিনের পরবর্তী জীবনী রচয়িতা, রডরিচ পটাক মনে করেন এটি অসম্ভব নয়।[২]

সৈনিক থাকাকালীন ফেই শিন পড়াশোনার জন্য সময় বের করে নিয়েছিলেন।[২] থাইসাং যেহেতু ঝং হ-র নৌবহরের পক্ষ থেকে ইয়াংজি নদীর উজানের দায়িত্বে ছিল, ফেই শিন চারবার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং ভারত মহাসাগরে নৌবহরের সাথে যাত্রা করেছিলেন।[৪]

ফেই শিন মূলত "শিংচা শংলান" [৩] (তারকাময় ভেলার বর্ণনা; মুখবন্ধের তারিখ অনুযায়ী ১৪৩৬ সালের উপস্থাপনা) গ্রন্থটির লেখক হিসাবে পরিচিত, যেখানে তিনি দক্ষিণ সমুদ্রে চারটি ভ্রমণে যা যা দেখেছিলেন তা লিপিবদ্ধ করেছিলেন।[২][৪] ১৪৩৬ সালের পরবর্তী সময়ে তার ক্রিয়াকলাপের কোনও উল্লেখ পাওয়া যায়নি এবং তার মৃত্যুর প্রকৃত তারিখ সম্পর্কেও কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।[২]

পটকের মতে, ফেই শিনের ধর্ম সম্পর্কে কোনও নির্ভরযোগ্য তথ্য নেই। তবে পটাক বিশ্বাস করেন যে, ফেই শিন নিজেও মা হুয়ান বা ঝং হ-এর মতো মুসলিম ছিলেন। ফেই শিনও মক্কার বর্ণনা দিয়েই তার বই শেষ করেছিলেন, তবে এটি মা হুয়ান এর বইয়ের বিন্যাসের অনুকরণও হতে পারে।[৫]

ফেই শিনের বইটি বিভিন্ন মিং-যুগের ভিন্ন সংস্করণে বিদ্যমান।[৬] অনেক চীনা এবং বিদেশী ঐতিহাসিক এই বইটি নিয়ে গবেষণা করেছেন। তার বইয়ের প্রথম ইংরেজী অনুবাদ করেছিলেন উইলিয়াম উডভিল রকহিল, এবং ১৯১৪-১৯১৫ সালে "থং পাও" এ তা প্রকাশিত হয়।[৭][৮] এই বইয়ের সবচেয়ে সাম্প্রতিক অনুবাদটি জে.ভি.জি. মিলস-এর একটি খসড়ার উপর ভিত্তি করে রডরিচ পটাক (১৯৯৬) সম্পাদনা ও টীকায়িত করেছেন।[৯]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Fei 1996, পৃ. 18।
  2. Fei 1996, পৃ. 19।
  3. "ফেই সিন"বাংলাপিডিয়া। সংগ্রহের তারিখ ৪ মে ২০১৪ 
  4. Pelliot 1933, পৃ. 264-268।
  5. Fei 1996, পৃ. 16-17।
  6. Fei 1996, পৃ. 9-11।
  7. Fei 1996, পৃ. 20।
  8. Rockhill's work, covering also numerous other sources, appeared in several installments. One of them is this: W. W. Rockhill, Notes on the Relations and Trade of China with the Eastern Archipelago and the Coast of the Indian Ocean during the Fourteenth Century. Part II. T'oung Pao, Second Series, Vol. 16, No. 1 (Mar., 1915), pp. 61-159
  9. Fei 1996

উৎস[সম্পাদনা]

  • Pelliot, Paul (১৯৩৩), "Les grands voyages maritimes chinois au début du XVème siècle", T'oung Pao, 30 (3/5): 237–452, জেস্টোর 4527050 
  • Fei, Xin (১৯৯৬), Ptak, Roderich, সম্পাদক, Hsing-chʻa-sheng-lan: the overall survey of the star raft, Volume 4 of South China and maritime Asia, J. V. G. Mills; Roderich Ptak কর্তৃক অনূদিত, Otto Harrassowitz Verlag, আইএসবিএন 3-447-03798-9  (Partial view on Google Books)