কীটনাশক

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
জমিতে কীটনাশক দেয়া হচ্ছে

কীটনাশক এক ধরনের বিষাক্ত পদার্থ যা কীটপতঙ্গকে মেরে ফেলতে সহায়তা করে। রাসায়নিক পদার্থের সাহায্যে প্রস্তুতকৃত কীটনাশক মূলতঃ পোকা-মাকড় নির্মূলের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। এর প্রয়োগে পোকামাকড়ের ডিম, লার্ভাও বিনাশ ঘটে থাকে। কৃষিক্ষেত্রসহ চিকিৎসা, শিল্প-প্রতিষ্ঠান ও গৃহস্থালী কর্মকাণ্ডে প্রয়োগ করা হয়। বিংশ শতাব্দীতে কৃষির উৎপাদন বৃদ্ধিতে প্রধান নিয়ামক হিসেবে কীটনাশকের ব্যবহারকে উপজীব্য করে বিস্তৃতি ঘটেছে বলে মনে করা হয়।[১] শাকসবজির সাথে কীটনাশক মিশ্রিত খাবার খেয়ে অনেক সময় তা মানুষের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। পাশাপাশি ব্যবহৃত প্রায় সকল ধরনের কীটনাশকই পরবর্তীতে জীববৈচিত্র্যে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে বলে ধারণা করা হয়। অনেক ধরনের কীটনাশক মানুষের জন্যেও ক্ষতিকর। কিছু কিছু কীটনাশক খাদ্য শৃঙ্খলেও প্রভাববিস্তার করেছে।

নিকোটিন, নিমের নির্যাশকৃত প্রাকৃতিকভাবে উৎপন্ন কীটনাশক পোকামাকড়ের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হয়। নিকোটিনভিত্তিক কীটনাশক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডাসহ বৈশ্বিকভাবে অদ্যাবধি ব্যবহৃত হচ্ছে। কিন্তু ইউরোপীয় ইউনিয়নভূক্ত দেশসমূহে এ ধরনের কীটনাশকের ব্যবহার নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।[২] ভেষজবিহীন কীটনাশক ধাতব পদার্থ এবং আর্সেনেট, কপার ও ফ্লুরিন যৌগের সমন্বয়ে তৈরী করা হয় যাতে সালফারের ব্যবহার প্রায়শঃই হয়ে থাকে।

কীটনাশক এর শ্রেনীবিভাগ[সম্পাদনা]

উৎপত্তি অনুসারে[সম্পাদনা]

উৎপত্তি অনুসারে কীটনাশক মূলত ২ প্রকারের।[৩] যথা-

  1. অজৈব কীটনাশক - আর্সেনিক, লেড, সালফার, ক্লোরিন ইত্যাদি ঘটিত বিভিন যৌগ।
  2. জৈব কীটনাশক - জৈব কীটনাশক আবার দুই ধরনের[৩]
    1. উদ্ভিজ্জ বা উদ্ভিদ থেকে প্রাপ্ত কীটনাশক যেমন - রোটেনন, নিকোটিন, পাইথ্রিন
    2. কৃত্রিম রাসায়নিক - কৃত্রিম রাসায়নিক কীটনাশক ৩ ধরনের হয়[৩] যথা -
      1. জৈব ক্লোরিন - ডিডিটি, গ্যামাক্সিন
      2. জৈব ফসফেট - ম্যালানিয়ন, প্যারাথিন
      3. কার্বামেট - সেভিন, ডায়াজিনন

বিষক্রিয়ার ধরন অনুসারে[সম্পাদনা]

বিষক্রিয়ার ধরন অনুসারে কীটনাশক মূলত ৮ ধরনের[৩] -

  1. পাকস্থলি বিষ
  2. স্পর্শ বিষ
  3. প্রবাহ বিষ
  4. ধুমায়িত বিষ
  5. রাসায়নিক বন্ধ্যাকারক
  6. আকর্ষক
  7. বিকর্ষক
  8. খাদ্যে অনীহাকারক

কার্যকারিতার স্থান অনুসারে[সম্পাদনা]

কার্যকারিতার স্থান অনুসারে কীটনাশক মূলত ৫ ধরনের[৩] -

  1. দেহ বিষ
  2. প্রোটোপ্লাজমিক বিষ
  3. শ্বাসতন্ত্র বিষ
  4. স্নায়ু বিষ
  5. পাকস্থলি বিষ

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. van Emden HF, Pealall DB (1996) Beyond Silent Spring, Chapman & Hall, London, 322pp.
  2. "nicotine Proposed Revocation of Tolerances 12/01". Pmep.cce.cornell.edu. Retrieved 2011-01-05.
  3. দাস, বিবেকানন্দ। "টক্সিকোলজি"। আধুনিক কীটতত্ব। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলা একাডেমী। পৃষ্ঠা 102। 

আরও দেখুন[সম্পাদনা]