উসমান ইবনে মাজউন

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
উসমান ইবনে মাজউন
মুহাম্মাদের সাহাবা
জন্মমক্কা, সৌদি আরব
মৃত্যু৬২৪ খ্রিষ্টাব্দ
বদর যুদ্ধে আহতের পরে
শ্রদ্ধাজ্ঞাপনজান্নাতুল বাকী গোরস্তান
যার দ্বারা প্রভাবিতমুহাম্মাদ
ব্যক্তিগত তথ্য
সন্তানসায়িব ইবন উসমান
পিতামাতা
  • মাজউন (পিতা)
  • সুখাইলা বিনতু উনাইস (মাতা)
যে জন্য পরিচিতনির্যাতিত সাহাবা
আত্মীয়দুই ভাই: কুদামা ইবন মাজউন এবং আবদুল্লাহ ইবন মাজউন

উসমান ইবনে মাজউন (মৃত্যু ২ হিজরী/৬২৪ খ্রিস্টাব্দ) ছিলেন মুহাম্মাদের একজন প্রখ্যাত সাহাবা । উসমান ইবনে মাজউন ছিলেন ভদ্র ও শান্ত প্রকৃতির । তিনি ১৪ তম ব্যক্তি হিসেবে ইসলাম গ্রহণ করেন ।

নাম ও বংশ পরিচয়[সম্পাদনা]

তার ডাকনাম ছিলো আবু সায়িব এবং পিতার নাম ছিলো মাজউন । এবং মাতার ছিলো সুখাইলা বিনতু উনাইস । উসমান ইবনে মাজউন এর দুই ভাই ছিলেন -কুদামা ইবন মাজউন এবং আবদুল্লাহ ইবন মাজউন এবং তার পুত্রের নাম সায়িব ইবন উসমান ।

হাবশায় হিজরত[সম্পাদনা]

নবুওয়াতের ৫ম পঞ্চম বছরে কুরাইশদের অত্যাচারের প্রেক্ষিতে রাসুল এর নির্দেশনায় সর্বপ্রথম মুসলমানদের একটি কাফেলা হাবশায় হিজরত করেন উসমান ইবন মাজউন কিছুদিন অবস্থান করলে তিনি শুনতে পান মক্কার প্রভাবশালী সকল গোত্র ইসলাম গ্রহণ করেছেন । তিনি এই সংবাদ শুনে খুশি মনে মক্কার দিকে রওনা হন কিন্তু মক্কার কাছাকাছি এসে শুনতে পান কথাটি মিথ্যা । এমন সময় হাবশা অতি দূর বলে সেখানে ফেরত যাওয়া কষ্টকর ভেবে সবাই নিজ আত্মীয়দের সহযোগিতায় মক্কায় প্রবেশ করেন । [১]

মক্কায় নির্যাতিত[সম্পাদনা]

উসমান ইবনে মাজউন প্রভাবশালী সাহিত্যিক ওয়ালিদ ইবন মুগীরার নিরাপত্তায় মক্কায় প্রবেশ করেন ফলে তিনি কুরাইশদের অত্যাচার থেকে রেহাই পান । অপরদিকে মক্কার অনন্য মুসলিমরা তখন নির্যাতনের মধ্য দিয়ে দিন অতিবাহিত করছে । এমনটা তিনি পছন্দ করলেন না ইসলাম ও রাসুল এর ভালোবাসার ফলে তিনি ওয়ালিদ ইবন মুগিরার নিরাপত্তা থেকে বের হয়ে যান এবং পরবর্তীতে অত্যাচারের স্বীকার হন । [২] উসমান ইবন মাজউন আরবের বিখ্যাত কবি লাবীদ ইবন রাবীয়ার সাথে কুরাইশদের একটি কবিতার মজলিসে গেলেন । লাবীদ একটি কবিতা বলল,"ওহে, আল্লাহ ছাড়া সবকিছুই বাতিল-আসর" তখন উসমান এই বাক্যের সত্যতা দিলেন । কিন্তু লাবীদ যখন দ্বিতীয় বাক্যটি পাঠ করলেন, "এবং সকল সম্পদই (ধারণা) নিশ্চিত ধ্বংস হবে – তখন উসমান ইবন মাজউন এর প্রতিবাদ করলে নির্যাতনের স্বীকার হন । এরপরে ওয়ালিদ ইবন মুগীরা তাকে পুনরায় নিরাপত্তায় নিতে চাইলে উসমান অস্বীকার করেন । [৩]

মদিনায় হিজরত[সম্পাদনা]

এরপর নবী যখন মুসলমানদের মদিনায় হিজরতের অনুমতি দিলেন তখন উসমান ইবন মাজউন তার পরিবারের সকল সদস্য নিয়ে মদিনায় হিজরত করেন এবং আবদুল্লাহ ইবন সালামা আজলানীর আথিত্য গ্রহণ করেন । তারা রাসুল এর দান করা এক খণ্ড ভূমিতে বসবাস শুরু করেন । তিনি শরিক বদরের যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন । বদর যুদ্ধ শেষ করে ফিরতি পথে উসমান ইবন মাজউন অসুস্থ হয়ে পরেন । [৪]

মৃত্যু[সম্পাদনা]

বদর যুদ্ধের ফরতি পথে ঐ অসুস্থতার জের ধরেই ২য় হিজরিতে তিনি মৃত্যুবরণ করেন । তিনি মদীনায় স্বাভাবিক মৃত্যুবরণকারী প্রথম মুহাজির এবং মদীনার বাকী গোরস্তানে দাফনকৃত প্রথম মুসলমান। [৫]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. সিরাতে রাসুল সঃ। পৃষ্ঠা ৩২১,৩২২। 
  2. "অন্যের দুঃখে দুঃখী না হলে মুসলমান হওয়া যায় না | বাংলাদেশ প্রতিদিন"Bangladesh Pratidin (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৯-১৮ 
  3. হায়াতুস সাহাবা, ( ১ম খন্ড) 
  4. সিরাতে রাসুল সঃ। পৃষ্ঠা ৩২৪,৩২৫। 
  5. মুসতাদরাকে হাকিম - (১১/১৯৩)