আসাদ্দর আলী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
আসাদ্দর আলী ꠀꠍꠖ꠆ꠖꠞ ꠀꠟꠤ
জন্ম১৯২৯
মৃত্যু১২ এপ্রিল ২০০৫
জাতীয়তাবাংলাদেশী
নাগরিকত্ব বাংলাদেশ
পরিচিতির কারণলেখক, গবেষক

মুহম্মদ আসাদ্দর আলী (জন্ম:১৯২৯ - মৃত্যু:১২ এপ্রিল ২০০৫)। বেশি পরিচিত অধ্যাপক আসাদ্দর আলী নামে । তিনি একজন বাংলাদেশী লেখক, শিকড় সন্ধানী গবেষক এবং ঐতিহাসিক। যিনি বাংলাদেশের সিলেটের ইতিহাস বিষয়ে গবেষণা করেছেন। তার গবেষণা ও লিখালেখীর জন্য ২০০৪ সালে তিনি পেয়েছেন বাংলা একাডেমী পুরস্কার [১]। মুহম্মদ আসাদ্দর আলী তার গবেষণায় লোক সাহিত্য, মরমী সাহিত্যের অজানা ইতিহাস সহ ঊনিশটি গ্রন্থ লিখেছেন [২]

জন্ম ও ব্যক্তিজীবন[সম্পাদনা]

মুহম্মদ আসাদ্দর আলী ১৯২৯ সালে সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলায় লুদরপুর গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মৌলভী মোহাম্মদ ওসমান উল্লাহ[২][৩]

শিক্ষাজীবন[সম্পাদনা]

মুহম্মদ আসাদ্দর আলী তার পাশের গ্রাম সৈয়দপুর পাঠশালা থেকে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় দিত্বীয় স্থান লাভ করেন । প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে তিনি সুনামগঞ্জ গভর্ণমেন্ট জুবিলী হাইস্কুলে মেট্রিকুলেশন লাভ করেন। এরপর সিলেট এম সি কলেজে আই এ ও বি এ শেষ করেন । মুহম্মদ আসাদ্দর আলী সিলেট এম সি কলেজে লেখা-পড়া শেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে এম এ এবং ঢাকা রিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে টেলেন্ট স্কলারশীপ হোল্ডার হিসেবে প্রথম বিভাগে বি এড ডিগ্রী লাভ করেন[৩]

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রী অর্জনের পর তিনি কিছু দিন সিলেট মদনমোহন কলেজে শিক্ষকতা করেন । পরে শিক্ষকতা ছেড়ে দিয়ে জীবিকার জন্যে ব্যবসা ও নেশা হিসেবে গবেষণায় আত্মনিয়োগ করেন। গবেষণার প্রয়োজনে তিনি বিভিন্ন স্থানে যাতায়ত করে হাজার হাজার লোকের সাথে সাক্ষাত করেছেন, প্রাচীন বই-পুস্তক ও পান্ডুলিপি পাঠে ঐতিহাসিক তথ্য উদগাঠন করে তৈরি করেছেন বিভিন ঐতিহাসিক গ্রন্থ।[৪] মুহম্মদ আসাদ্দর আলী গবেষণা কর্ম ছাড়া শিক্ষা ও সমাজকর্মের সাথে জড়িত ছিলেন। সিলেটের ঐতিহ্য সৃষ্টিকারী সাহিত্য সংগঠন সংলাপ সাহিত্য-সংস্কৃতি ফ্রন্টের তিনি প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ছিলেন এবং দীর্ঘ এক যুগ এ দায়িত্ব পালন করেন। সিলেটের সাহিত্য-সাংস্কৃতিক আন্দোলনে সংলাপ এক সময় ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছে। তিনি ছিলেন বাংলা একাডেমীর আজীবন সদস্য । সিলেটের কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের দীর্ঘকাল যাবত সহ সভাপতির দায়ীত্ব পালন করেন। তার ছাত্র জীবন থেকে বিভিন্ন সাহিত্য লাইব্রেরি ও পাঠাগার প্রতিষ্টার উল্লেখ জীবনী গ্রন্থে পাওয়া যায়। বাংলা সাহিত্যে আলোচিত বিখ্যাত ময়মনসিংহ গীতিকারভাষা বিশ্লেষণ ও স্থানাদির উপর আলোচনা করে তিনি ময়মনসিংহ গীতিকা হতে নয়টি গীতিকাকে সিলেট অষ্ণলের গীতিকা হিসেবে প্রমাণ দেখিয়েছেন।[৫] মধ্যযুগের কবি সৈয়দ সুলতানকে চট্রগ্রামের অধিবাসী হিসেবে দাবি করে ড. আহমদ শরীফ তার পি এইচ ডি থিসিস তৈরি করেন। গবেষণার মাধ্যমে মহাকবি সৈয়দ সুলতানশেখ চান্দ সিলেটের সন্তান উল্লেখ করে ডঃ আহমদ শরীফের লিখা পি এইচ ডি থিসিসে ভুল ধরিয়েছেন।[২]

গবেষণা ও প্রকাশনা[সম্পাদনা]

অধ্যাপক মুহম্মদ আসাদ্দর আলী গ্রন্থের সংখ্যা ঊনিশটি । তার মধ্যে বিশেষ কয়েকটি হচ্ছেঃ-

  • মৈমনসিংহ গীতিকা বনাম সিলেট গীতিকা
  • মহাকবি সৈয়দ সুলতান
  • চর্যাপদে সিলেটি ভাষা
  • লোকসাহিত্যে জালালাবাদ
  • সিলেটি নাগরী হরফে সিলেট বিভাগের মুসলমানদের সাহিত্য সংস্কৃতি চর্চা
  • সিলেটের মহাকবি শেখ চান্দ
  • সিলেট বিভাগ সম্পর্কে কিছু কথা
  • সিলেটি ভাষা
  • সিলেটি প্রবাদ প্রবচন

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. [১] ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৪ জানুয়ারি ২০১২ তারিখে বাংলা একাডেমী সাহিত্য পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখক (ফেলো)2004
  2. সিলেট বিভাগের ভৌগোলিক ঐতিহাসিক রুপরেখা সৈয়দ মোস্তফা কামাল; প্রকাশক: শেখ ফারুক আহমদ, পলাশ সেবা ট্রাস্ট, সিলেট। প্রকাশকাল: ফেব্রুয়ারি ২০১১।
  3. বিভাগের ইতিবৃত্ত: ডঃ মোহাম্মদ মুমিনুল হক, প্রকাশক - সাওদা মুমিন, সেন্টার ফর বাংলাদেশ রিসার্চ ইউ কে,২০০১
  4. [২] ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০১৬-০৩-০৬ তারিখে অধ্যাপক আসাদ্দর আলীর কাছে আমাদের ঋণ।
  5. 'সৈয়দ মোস্তফা কামালের ইতিহাস-ঐতিহ্য, সাহিত্য-সংকৃতি চিন্তা', বই লিখেছেন - ডঃ মোহাম্মদ মুমিনুল হক, প্রকাশক - নাবিল মুমিন, সেন্টার ফর বাংলাদেশ রিসার্চ ইউ কে, জুলাই ২০০৫।