চিন্ময় লাহিড়ী: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
সম্পাদনা সারাংশ নেই
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
AishikBot (আলোচনা | অবদান)
বানান সংশোধন (ARR)
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:

{{Infobox musical artist <!-- See Wikipedia:WikiProject_Musicians -->
{{Infobox musical artist <!-- See Wikipedia:WikiProject_Musicians -->
| honorific_prefix = আচার্য
| honorific_prefix = আচার্য
৬ নং লাইন: ৫ নং লাইন:
| image_size = 200px
| image_size = 200px
| caption = আচার্য চিন্ময় লাহিড়ী
| caption = আচার্য চিন্ময় লাহিড়ী
| birth_date = {{Birth date |df=y|১৯২০|০৩|২০|}}
| birth_date = {{জন্ম তারিখ |df=y|১৯২০|০৩|২০|}}
| birth_place = তাঁতিবন্ধ, [[পাবনা]], [[বৃটিশ ভারত]]
| birth_place = তাঁতিবন্ধ, [[পাবনা]], [[বৃটিশ ভারত]]
| death_date = {{Death date and age|df=y|১৯৮৪|৮|১৭|১৯২০|০৩|২০}}
| death_date = {{মৃত্যু তারিখ বয়স|df=y|১৯৮৪|৮|১৭|১৯২০|০৩|২০}}
| death_place = [[কলকাতা]], [[পশ্চিমবঙ্গ]],[[ভারত]]
| death_place = [[কলকাতা]], [[পশ্চিমবঙ্গ]],[[ভারত]]
| background = solo_singer
| background = solo_singer
১৫ নং লাইন: ১৪ নং লাইন:
}}
}}


আচার্য '''চিন্ময় লাহিড়ী''' ({{lang-en|Acharya Chinmoy Lahiri }}) ([[মার্চ ২০|২০ মার্চ]], [[১৯২০]] — [[আগস্ট ১৭|১৭ আগস্ট,]] [[ ১৯৮৪]]) একজন স্বনামধন্য বাঙালি ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতশিল্পী। তিনি বংশপরম্পরায় সঙ্গীতশিল্পী না হয়ে, রেওয়াজের শ্রমে আর তালিমের গুণে যেমন একাধারে বাংলা তথা ভারতের খ্যাতনামা সঙ্গীতশিল্পী হয়েছিলেন, তেমনি বিভিন্ন রাগে ঠুমরি, দাদরা, হোলি, ত্রিবট, চতুরঙ্গ, গীত, ভজন, গজল সহ বাংলা রাগপ্রধান সঙ্গীতের স্রষ্টা ছিলেন।<ref name = "সংসদ"> সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, ''সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান'', প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, আগস্ট ২০১৬ পৃষ্ঠা ২২৫,ঞ {{আইএসবিএন|978-81-7955-135-6}}</ref>
আচার্য '''চিন্ময় লাহিড়ী''' ({{lang-en|Acharya Chinmoy Lahiri }}) ([[মার্চ ২০|২০ মার্চ]], [[১৯২০]] — [[আগস্ট ১৭|১৭ আগস্ট,]] [[১৯৮৪]]) একজন স্বনামধন্য বাঙালি ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতশিল্পী। তিনি বংশপরম্পরায় সঙ্গীতশিল্পী না হয়ে, রেওয়াজের শ্রমে আর তালিমের গুণে যেমন একাধারে বাংলা তথা ভারতের খ্যাতনামা সঙ্গীতশিল্পী হয়েছিলেন, তেমনি বিভিন্ন রাগে ঠুমরি, দাদরা, হোলি, ত্রিবট, চতুরঙ্গ, গীত, ভজন, গজল সহ বাংলা রাগপ্রধান সঙ্গীতের স্রষ্টা ছিলেন।<ref name = "সংসদ">সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, ''সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান'', প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, আগস্ট ২০১৬ পৃষ্ঠা ২২৫,ঞ {{আইএসবিএন|978-81-7955-135-6}}</ref>


==জন্ম ও প্রারম্ভিক জীবন==
==জন্ম ও প্রারম্ভিক জীবন==
চিন্ময় লাহিড়ীর জন্ম ১৯২০ খ্রিস্টাব্দের ২০ শে মার্চ[[ বৃটিশ ভারত| বৃটিশ ভারতের]] অধুনা[[বাংলাদেশ| বাংলাদেশের]] পাবনা জেলার [[সুজানগর উপজেলা|সুজানগর উপজেলার]] [[তাঁতীবন্দ জমিদার বাড়ি|তাঁতিবন্ধের জমিদার]] পরিবারে। পিতা জীবচন্দ্র লাহিড়ী পেশায় ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার এবং কর্মসূত্রে থাকতেন[[ লখনউ| লক্ষৌতে]]। মাতা সরোজবাসিনী দেবী। পড়াশোনা লক্ষৌয়ের বয়েজ অ্যাংলো ইণ্ডিয়ান স্কুলে। শৈশবে চিন্ময়ের আগ্রহ ছিল শরীরচর্চায় ও সঙ্গীতসাধনায়। মায়ের অনুপ্রেরণায় তিনি তাঁর তেরো বৎসর বয়সে সঙ্গীতচর্চাই শুরু করেন। ভাইয়ের মনোবাসনা পূরণ করতে তাঁর দাদা নিয়ে গেলেন বিখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞ ও সেতার শিল্পী ধ্রুবতারা জোশীর কাছে। তিনি আবার নিয়ে যান ১৯২৬ খ্রিস্টাব্দে স্থাপিত মরিস কলেজ অব মিউজিক এর (বর্তমানে ভাতখণ্ডে মিউজিক ইনস্টিটিউট ডিমড ইউনিভার্সিটি) তৎকালীন অধ্যক্ষ পণ্ডিত শ্রীকৃষ্ণ রতন ঝংকারজির কাছে। তিনি জেদি ও আত্মবিশ্বাসী চিন্ময়ের আগ্রহ দেখে শিষ্য হিসাবে গ্রহণ করেন এবং চিন্ময়ও নিজের শ্রমে ও যথাযথ তালিমের গুণে অচিরেই পারদর্শী হয়ে ওঠেন।<ref name ="ABP">{{ওয়েব উদ্ধৃতি |শিরোনাম = "ভাঙা গলাতেই পণ্ডিতজিকে গেয়ে শোনালেন পাল্টা"|ইউআরএল =https://www.anandabazar.com/supplementary/rabibashoriyo/the-legacy-of-acharya-chinmoy-lahiri-1.1187396| সংগ্রহের-তারিখ = ১৭ আগস্ট ২০২০}}</ref >
চিন্ময় লাহিড়ীর জন্ম ১৯২০ খ্রিস্টাব্দের ২০ শে মার্চ [[বৃটিশ ভারত| বৃটিশ ভারতের]] অধুনা[[বাংলাদেশ| বাংলাদেশের]] পাবনা জেলার [[সুজানগর উপজেলা|সুজানগর উপজেলার]] [[তাঁতীবন্দ জমিদার বাড়ি|তাঁতিবন্ধের জমিদার]] পরিবারে। পিতা জীবচন্দ্র লাহিড়ী পেশায় ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার এবং কর্মসূত্রে থাকতেন [[লখনউ|লক্ষৌতে]]। মাতা সরোজবাসিনী দেবী। পড়াশোনা লক্ষৌয়ের বয়েজ অ্যাংলো ইণ্ডিয়ান স্কুলে। শৈশবে চিন্ময়ের আগ্রহ ছিল শরীরচর্চায় ও সঙ্গীতসাধনায়। মায়ের অনুপ্রেরণায় তিনি তার তেরো বৎসর বয়সে সঙ্গীতচর্চাই শুরু করেন। ভাইয়ের মনোবাসনা পূরণ করতে তার দাদা নিয়ে গেলেন বিখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞ ও সেতার শিল্পী ধ্রুবতারা জোশীর কাছে। তিনি আবার নিয়ে যান ১৯২৬ খ্রিস্টাব্দে স্থাপিত মরিস কলেজ অব মিউজিক এর (বর্তমানে ভাতখণ্ডে মিউজিক ইনস্টিটিউট ডিমড ইউনিভার্সিটি) তৎকালীন অধ্যক্ষ পণ্ডিত শ্রীকৃষ্ণ রতন ঝংকারজির কাছে। তিনি জেদি ও আত্মবিশ্বাসী চিন্ময়ের আগ্রহ দেখে শিষ্য হিসাবে গ্রহণ করেন এবং চিন্ময়ও নিজের শ্রমে ও যথাযথ তালিমের গুণে অচিরেই পারদর্শী হয়ে ওঠেন।<ref name ="ABP">{{ওয়েব উদ্ধৃতি |শিরোনাম = "ভাঙা গলাতেই পণ্ডিতজিকে গেয়ে শোনালেন পাল্টা"|ইউআরএল =https://www.anandabazar.com/supplementary/rabibashoriyo/the-legacy-of-acharya-chinmoy-lahiri-1.1187396| সংগ্রহের-তারিখ = ১৭ আগস্ট ২০২০}}</ref>


==সংগীত জীবন ==
==সংগীত জীবন ==
বিখ্যাত ওস্তাদের কাছে সংগীতের তালিম নিলেও নানা পরীক্ষানিরীক্ষার মধ্য দিয়ে তিনি নিজস্ব ঘরণার অজস্র রাগ-রাগিনী সৃষ্টি করে গিয়েছেন। তাঁর গানে শাস্ত্রীয় আঙ্গিকের সঙ্গে মধুর রস ও আত্মনিবেদনের সংমিশ্রণ ঘটে ছিল। তাঁর রাগ-রাগিনীর মধ্যে কয়েকটি হল শ্যামকোষ, যোগমায়া, প্রভাতী টোড়ি, সন্ত ভৈঁরো, কুসুম কল্যাণ ইত্যাদি। তাঁর অসামান্য সৃষ্টি "নন্দকোষ" ভারতের সংগীতবিদগ্ধ সমাজে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। এক সঙ্গীত সম্মেলনে "নন্দকোষ" পরিবেশনের সময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ওস্তাদ[[ আলাউদ্দিন খাঁ ]] সাহেব ও উস্তাদ [[হাফিজ আলি খাঁ]] অভিভূত হয়ে পড়েন এবং দুজনেই অনুষ্ঠান শেষে তাঁর কাছ থেকে রাগের বন্দিশ সংগ্রহ করেন। ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দে তিনি [[অল ইন্ডিয়া রেডিও]] বর্তমানে [[আকাশবাণী]] কেন্দ্রের সঙ্গীতশিল্পী হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেন। তারপর ঢাকা বেতার কেন্দ্রে যুক্ত ছিলেন। ১৯৪৪ খ্রিস্টাব্দে এইচ.এম.ভি. থেকে 'না মানে মানা' ও 'দুয়ারে এলো কে' - এই দুটি খেয়াল গানের রেকর্ড প্রকাশিত হয়। চিন্ময় লাহিড়ী "মগন" ছদ্মনামে বিভিন্ন রাগের বন্দিশ রচনা করেছেন। লক্ষৌতে থাকার ফলে ওঁর [[হিন্দি ভাষা|হিন্দি]] ও উর্দু ভাষার উপর বিশেষ দখল ছিল। এছাড়া তিনি বিভিন্ন রাগে ঠুমরি, দাদরা, হোলি, ত্রিবট, চতুরঙ্গ, গীত, ভজন, গজল, বাংলা রাগপ্রধান সৃষ্টি করে গিয়েছেন এবং স্বরলিপির আকারে উপস্থাপন করে গেছেন। তাঁর তৈরি অসংখ্য রাগরাগিণী বন্দিশ, তান ও বিস্তার, মগনগীত ও তানমঞ্জরী- এই সঙ্গীত গ্রন্থে র চারটি খণ্ডে নিবন্ধ আছে। চিন্ময় লাহিড়ী চলচ্চিত্রে প্রথম প্লেব্যাকের কাজ করেন 'মানদণ্ড' ছায়াছবিতে। কয়েকটি ছবিতে সঙ্গীত পরিচালনা ও কণ্ঠদান করেছেন। ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দে "শাপমোচন" ছবিতে [[প্রতিমা বন্দ্যোপাধ্যায়| প্রতিমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের]] 'পটদীপ' রাগে দ্বৈতকণ্ঠে গাইলেন "ত্রিবেণী তীর্থপথে কে গাহিল গান" বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য। দীর্ঘদিন তিনি [[আকাশবাণী| আকাশবাণীর]] সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। [[রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়|রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে]] অধ্যাপনা করেছেন। সংগীত শিক্ষক হিসাবে তাঁর যথেষ্ট খ্যাতি ছিল। যার মধ্যে একটু প্রতিভা বা সম্ভাবনা দেখেছেন, তাকে উৎসাহিত করেছেন এবং প্রাণ ভরে শিখিয়েছেন। ফলস্বরূপ বাংলার সঙ্গীত জগত পেয়েছে মীরা বন্দ্যোপাধ্যায়,[[ সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়| গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়]],[[পারভিন সুলতানা | বেগম পারভিন সুলতানা]], [[শিপ্রা বসু]],[[অখিলবন্ধু ঘোষ]] প্রমুখ স্বনামধন্য শিল্পীদের। তাঁর স্মৃতি রক্ষার্থে তাঁর পুত্র শ্যামল লাহিড়ী ও পুত্রবধূ মন্দিরা লাহিড়ী কলকাতায় তাঁর ছদ্মনাম 'মগন' নিয়ে ২০১৬ খ্রিস্টাব্দে গঠন করেছেন এক সাংস্কৃতিক সংস্থা 'মগন মন্দির '। <ref name ="ABP"> {{ওয়েব উদ্ধৃতি |শিরোনাম = "ভাঙা গলাতেই পণ্ডিতজিকে গেয়ে শোনালেন পাল্টা"|ইউআরএল =https://www.anandabazar.com/supplementary/rabibashoriyo/the-legacy-of-acharya-chinmoy-lahiri-1.1187396| সংগ্রহের-তারিখ = ১৭ আগস্ট ২০২০}}</ref >
বিখ্যাত ওস্তাদের কাছে সংগীতের তালিম নিলেও নানা পরীক্ষানিরীক্ষার মধ্য দিয়ে তিনি নিজস্ব ঘরণার অজস্র রাগ-রাগিনী সৃষ্টি করে গিয়েছেন। তার গানে শাস্ত্রীয় আঙ্গিকের সঙ্গে মধুর রস ও আত্মনিবেদনের সংমিশ্রণ ঘটে ছিল। তার রাগ-রাগিনীর মধ্যে কয়েকটি হল শ্যামকোষ, যোগমায়া, প্রভাতী টোড়ি, সন্ত ভৈঁরো, কুসুম কল্যাণ ইত্যাদি। তার অসামান্য সৃষ্টি "নন্দকোষ" ভারতের সংগীতবিদগ্ধ সমাজে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। এক সঙ্গীত সম্মেলনে "নন্দকোষ" পরিবেশনের সময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ওস্তাদ [[আলাউদ্দিন খাঁ]] সাহেব ও উস্তাদ [[হাফিজ আলি খাঁ]] অভিভূত হয়ে পড়েন এবং দুজনেই অনুষ্ঠান শেষে তার কাছ থেকে রাগের বন্দিশ সংগ্রহ করেন। ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দে তিনি [[অল ইন্ডিয়া রেডিও]] বর্তমানে [[আকাশবাণী]] কেন্দ্রের সঙ্গীতশিল্পী হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেন। তারপর ঢাকা বেতার কেন্দ্রে যুক্ত ছিলেন। ১৯৪৪ খ্রিস্টাব্দে এইচ.এম.ভি. থেকে 'না মানে মানা' ও 'দুয়ারে এলো কে' - এই দুটি খেয়াল গানের রেকর্ড প্রকাশিত হয়। চিন্ময় লাহিড়ী "মগন" ছদ্মনামে বিভিন্ন রাগের বন্দিশ রচনা করেছেন। লক্ষৌতে থাকার ফলে ওঁর [[হিন্দি ভাষা|হিন্দি]] ও উর্দু ভাষার উপর বিশেষ দখল ছিল। এছাড়া তিনি বিভিন্ন রাগে ঠুমরি, দাদরা, হোলি, ত্রিবট, চতুরঙ্গ, গীত, ভজন, গজল, বাংলা রাগপ্রধান সৃষ্টি করে গিয়েছেন এবং স্বরলিপির আকারে উপস্থাপন করে গেছেন। তার তৈরি অসংখ্য রাগরাগিণী বন্দিশ, তান ও বিস্তার, মগনগীত ও তানমঞ্জরী- এই সঙ্গীত গ্রন্থে র চারটি খণ্ডে নিবন্ধ আছে। চিন্ময় লাহিড়ী চলচ্চিত্রে প্রথম প্লেব্যাকের কাজ করেন 'মানদণ্ড' ছায়াছবিতে। কয়েকটি ছবিতে সঙ্গীত পরিচালনা ও কণ্ঠদান করেছেন। ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দে "শাপমোচন" ছবিতে [[প্রতিমা বন্দ্যোপাধ্যায়| প্রতিমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের]] 'পটদীপ' রাগে দ্বৈতকণ্ঠে গাইলেন "ত্রিবেণী তীর্থপথে কে গাহিল গান" বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য। দীর্ঘদিন তিনি [[আকাশবাণী| আকাশবাণীর]] সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। [[রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়|রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে]] অধ্যাপনা করেছেন। সংগীত শিক্ষক হিসাবে তার যথেষ্ট খ্যাতি ছিল। যার মধ্যে একটু প্রতিভা বা সম্ভাবনা দেখেছেন, তাকে উৎসাহিত করেছেন এবং প্রাণ ভরে শিখিয়েছেন। ফলস্বরূপ বাংলার সঙ্গীত জগত পেয়েছে মীরা বন্দ্যোপাধ্যায়,[[সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়|গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়]],[[পারভিন সুলতানা|বেগম পারভিন সুলতানা]], [[শিপ্রা বসু]],[[অখিলবন্ধু ঘোষ]] প্রমুখ স্বনামধন্য শিল্পীদের। তার স্মৃতি রক্ষার্থে তার পুত্র শ্যামল লাহিড়ী ও পুত্রবধূ মন্দিরা লাহিড়ী কলকাতায় তার ছদ্মনাম 'মগন' নিয়ে ২০১৬ খ্রিস্টাব্দে গঠন করেছেন এক সাংস্কৃতিক সংস্থা 'মগন মন্দির '। <ref name="ABP"/>


==জীবনাবসান==
==জীবনাবসান==
২৭ নং লাইন: ২৬ নং লাইন:


==সম্মাননা==
==সম্মাননা==
[[লখনউ|লক্ষৌয়ের]] মরিস কলেজ অব মিউজিক তাঁকে "সঙ্গীতবিশারদ" উপাধিতে ভূষিত করে। <ref name = "সংসদ"> সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, ''সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান'', প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, আগস্ট ২০১৬ পৃষ্ঠা ২২৫,ঞ {{আইএসবিএন|978-81-7955-135-6}}</ref> ২০০৭ খ্রিস্টাব্দে পুর কর্তৃপক্ষ তাঁর বসতবাড়ি সংলগ্ন রাস্তাটির নাম পণ্ডিত চিন্ময় লাহিড়ী সরণী রেখেছেন।
[[লখনউ|লক্ষৌয়ের]] মরিস কলেজ অব মিউজিক তাঁকে "সঙ্গীতবিশারদ" উপাধিতে ভূষিত করে। <ref name="সংসদ"/> ২০০৭ খ্রিস্টাব্দে পুর কর্তৃপক্ষ তার বসতবাড়ি সংলগ্ন রাস্তাটির নাম পণ্ডিত চিন্ময় লাহিড়ী সরণী রেখেছেন।


==তথ্যসূত্র==
==তথ্যসূত্র==
৩৩ নং লাইন: ৩২ নং লাইন:


[[বিষয়শ্রেণী:১৯২০-এ জন্ম]]
[[বিষয়শ্রেণী:১৯২০-এ জন্ম]]
[[বিষয়শ্রেণী: ১৯৮৪-এ মৃত্যু]]
[[বিষয়শ্রেণী:১৯৮৪-এ মৃত্যু]]
[[বিষয়শ্রেণী:পাবনা জেলার ব্যক্তি]]
[[বিষয়শ্রেণী:পাবনা জেলার ব্যক্তি]]
[[বিষয়শ্রেণী: ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শিল্পী]]
[[বিষয়শ্রেণী:ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শিল্পী]]
[[বিষয়শ্রেণী:বাঙালি সঙ্গীতশিল্পী]]
[[বিষয়শ্রেণী:বাঙালি সঙ্গীতশিল্পী]]
[[বিষয়শ্রেণী:ভারতীয় সঙ্গীতজ্ঞ]]
[[বিষয়শ্রেণী:ভারতীয় সঙ্গীতজ্ঞ]]

১৪:৩৬, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২১ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

আচার্য
চিন্ময় লাহিড়ী
আচার্য চিন্ময় লাহিড়ী
আচার্য চিন্ময় লাহিড়ী
প্রাথমিক তথ্য
জন্ম(১৯২০-০৩-২০)২০ মার্চ ১৯২০
তাঁতিবন্ধ, পাবনা, বৃটিশ ভারত
মৃত্যু১৭ আগস্ট ১৯৮৪(1984-08-17) (বয়স ৬৪)
কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ,ভারত
পেশাভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতশিল্পী
কার্যকাল১৯৩৫–১৯৮৪

আচার্য চিন্ময় লাহিড়ী (ইংরেজি: Acharya Chinmoy Lahiri) (২০ মার্চ, ১৯২০১৭ আগস্ট, ১৯৮৪) একজন স্বনামধন্য বাঙালি ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতশিল্পী। তিনি বংশপরম্পরায় সঙ্গীতশিল্পী না হয়ে, রেওয়াজের শ্রমে আর তালিমের গুণে যেমন একাধারে বাংলা তথা ভারতের খ্যাতনামা সঙ্গীতশিল্পী হয়েছিলেন, তেমনি বিভিন্ন রাগে ঠুমরি, দাদরা, হোলি, ত্রিবট, চতুরঙ্গ, গীত, ভজন, গজল সহ বাংলা রাগপ্রধান সঙ্গীতের স্রষ্টা ছিলেন।[১]

জন্ম ও প্রারম্ভিক জীবন

চিন্ময় লাহিড়ীর জন্ম ১৯২০ খ্রিস্টাব্দের ২০ শে মার্চ বৃটিশ ভারতের অধুনা বাংলাদেশের পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার তাঁতিবন্ধের জমিদার পরিবারে। পিতা জীবচন্দ্র লাহিড়ী পেশায় ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার এবং কর্মসূত্রে থাকতেন লক্ষৌতে। মাতা সরোজবাসিনী দেবী। পড়াশোনা লক্ষৌয়ের বয়েজ অ্যাংলো ইণ্ডিয়ান স্কুলে। শৈশবে চিন্ময়ের আগ্রহ ছিল শরীরচর্চায় ও সঙ্গীতসাধনায়। মায়ের অনুপ্রেরণায় তিনি তার তেরো বৎসর বয়সে সঙ্গীতচর্চাই শুরু করেন। ভাইয়ের মনোবাসনা পূরণ করতে তার দাদা নিয়ে গেলেন বিখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞ ও সেতার শিল্পী ধ্রুবতারা জোশীর কাছে। তিনি আবার নিয়ে যান ১৯২৬ খ্রিস্টাব্দে স্থাপিত মরিস কলেজ অব মিউজিক এর (বর্তমানে ভাতখণ্ডে মিউজিক ইনস্টিটিউট ডিমড ইউনিভার্সিটি) তৎকালীন অধ্যক্ষ পণ্ডিত শ্রীকৃষ্ণ রতন ঝংকারজির কাছে। তিনি জেদি ও আত্মবিশ্বাসী চিন্ময়ের আগ্রহ দেখে শিষ্য হিসাবে গ্রহণ করেন এবং চিন্ময়ও নিজের শ্রমে ও যথাযথ তালিমের গুণে অচিরেই পারদর্শী হয়ে ওঠেন।[২]

সংগীত জীবন

বিখ্যাত ওস্তাদের কাছে সংগীতের তালিম নিলেও নানা পরীক্ষানিরীক্ষার মধ্য দিয়ে তিনি নিজস্ব ঘরণার অজস্র রাগ-রাগিনী সৃষ্টি করে গিয়েছেন। তার গানে শাস্ত্রীয় আঙ্গিকের সঙ্গে মধুর রস ও আত্মনিবেদনের সংমিশ্রণ ঘটে ছিল। তার রাগ-রাগিনীর মধ্যে কয়েকটি হল শ্যামকোষ, যোগমায়া, প্রভাতী টোড়ি, সন্ত ভৈঁরো, কুসুম কল্যাণ ইত্যাদি। তার অসামান্য সৃষ্টি "নন্দকোষ" ভারতের সংগীতবিদগ্ধ সমাজে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। এক সঙ্গীত সম্মেলনে "নন্দকোষ" পরিবেশনের সময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ সাহেব ও উস্তাদ হাফিজ আলি খাঁ অভিভূত হয়ে পড়েন এবং দুজনেই অনুষ্ঠান শেষে তার কাছ থেকে রাগের বন্দিশ সংগ্রহ করেন। ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দে তিনি অল ইন্ডিয়া রেডিও বর্তমানে আকাশবাণী কেন্দ্রের সঙ্গীতশিল্পী হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেন। তারপর ঢাকা বেতার কেন্দ্রে যুক্ত ছিলেন। ১৯৪৪ খ্রিস্টাব্দে এইচ.এম.ভি. থেকে 'না মানে মানা' ও 'দুয়ারে এলো কে' - এই দুটি খেয়াল গানের রেকর্ড প্রকাশিত হয়। চিন্ময় লাহিড়ী "মগন" ছদ্মনামে বিভিন্ন রাগের বন্দিশ রচনা করেছেন। লক্ষৌতে থাকার ফলে ওঁর হিন্দি ও উর্দু ভাষার উপর বিশেষ দখল ছিল। এছাড়া তিনি বিভিন্ন রাগে ঠুমরি, দাদরা, হোলি, ত্রিবট, চতুরঙ্গ, গীত, ভজন, গজল, বাংলা রাগপ্রধান সৃষ্টি করে গিয়েছেন এবং স্বরলিপির আকারে উপস্থাপন করে গেছেন। তার তৈরি অসংখ্য রাগরাগিণী বন্দিশ, তান ও বিস্তার, মগনগীত ও তানমঞ্জরী- এই সঙ্গীত গ্রন্থে র চারটি খণ্ডে নিবন্ধ আছে। চিন্ময় লাহিড়ী চলচ্চিত্রে প্রথম প্লেব্যাকের কাজ করেন 'মানদণ্ড' ছায়াছবিতে। কয়েকটি ছবিতে সঙ্গীত পরিচালনা ও কণ্ঠদান করেছেন। ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দে "শাপমোচন" ছবিতে প্রতিমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'পটদীপ' রাগে দ্বৈতকণ্ঠে গাইলেন "ত্রিবেণী তীর্থপথে কে গাহিল গান" বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য। দীর্ঘদিন তিনি আকাশবাণীর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেছেন। সংগীত শিক্ষক হিসাবে তার যথেষ্ট খ্যাতি ছিল। যার মধ্যে একটু প্রতিভা বা সম্ভাবনা দেখেছেন, তাকে উৎসাহিত করেছেন এবং প্রাণ ভরে শিখিয়েছেন। ফলস্বরূপ বাংলার সঙ্গীত জগত পেয়েছে মীরা বন্দ্যোপাধ্যায়,গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়,বেগম পারভিন সুলতানা, শিপ্রা বসু,অখিলবন্ধু ঘোষ প্রমুখ স্বনামধন্য শিল্পীদের। তার স্মৃতি রক্ষার্থে তার পুত্র শ্যামল লাহিড়ী ও পুত্রবধূ মন্দিরা লাহিড়ী কলকাতায় তার ছদ্মনাম 'মগন' নিয়ে ২০১৬ খ্রিস্টাব্দে গঠন করেছেন এক সাংস্কৃতিক সংস্থা 'মগন মন্দির '। [২]

জীবনাবসান

আচার্য চিন্ময় লাহিড়ী ১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দের ১৭ই আগস্ট কলকাতায় প্রয়াত হন।

সম্মাননা

লক্ষৌয়ের মরিস কলেজ অব মিউজিক তাঁকে "সঙ্গীতবিশারদ" উপাধিতে ভূষিত করে। [১] ২০০৭ খ্রিস্টাব্দে পুর কর্তৃপক্ষ তার বসতবাড়ি সংলগ্ন রাস্তাটির নাম পণ্ডিত চিন্ময় লাহিড়ী সরণী রেখেছেন।

তথ্যসূত্র

  1. সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, আগস্ট ২০১৬ পৃষ্ঠা ২২৫,ঞ আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-১৩৫-৬
  2. ""ভাঙা গলাতেই পণ্ডিতজিকে গেয়ে শোনালেন পাল্টা""। সংগ্রহের তারিখ ১৭ আগস্ট ২০২০