সাত রং চা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
AishikBot (আলোচনা | অবদান)
সম্পাদনা সারাংশ নেই
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা উচ্চতর মোবাইল সম্পাদনা
Sufe (আলোচনা | অবদান)
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল অ্যাপ সম্পাদনা অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ সম্পাদনা
৫৬ নং লাইন: ৫৬ নং লাইন:
==চিত্রশালা==
==চিত্রশালা==
<gallery>
<gallery>
File:7 Color Layer Tea.jpg|thumb|তিন গ্লাস সাত স্তর রঙের চা
File:7 color tea, Sylhet .jpg|এক গ্লাস সাত রং চা, রেড কণ্ঠ রূপসী টি কেবিন,সুরমা গেট,সিলেট তামাবিল সড়ক, সিলেট।
File:7 color tea, Sylhet .jpg|এক গ্লাস সাত রং চা, রেড কণ্ঠ রূপসী টি কেবিন,সুরমা গেট,সিলেট তামাবিল সড়ক, সিলেট।
</gallery>
</gallery>

১৭:০৮, ২৪ আগস্ট ২০২১ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

সাত রং চা
ꠡꠣꠔ ꠞꠋ ꠍꠣ
১০ স্তর চায়ের রাতের দৃশ্য, নীলকণ্ঠ, শ্রীমঙ্গল
অন্যান্য নামসাত তালা চা, সাত স্তর চা
প্রকারপানীয়
উৎপত্তিস্থল বাংলাদেশ
অঞ্চল বা রাজ্যশ্রীমঙ্গল, সিলেট
প্রধান উপকরণচা পাতা, ঘনীভূত দুধ, দারুচিনি, লবঙ্গ এবং লেবু
ভিন্নতা২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭ বা ১০ স্তরের/রং চা

সাত রং চা (সিলেটি: ꠡꠣꠔ ꠞꠋ ꠍꠣ) হচ্ছে বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় উষ্ণ পানীয়।[১] চায়ের এই স্বাদ নিতে চা প্রেমীরা বিভিন্ন জায়গা থেকে ছুটে আসেন।[২] শরবত-মিষ্টি স্বাদ থেকে শুরু করে ঝাঁঝালো লবঙ্গ সহ প্রতিটা স্তরের আলাদা আলাদা স্বাদ রয়েছে এবং বর্ণের দিক থেকে রংধনুর মতো বর্ণীল।[৩] সাত রং চা নীলকণ্ঠ টি কেবিনে পাওয়া যায়, একটি বিখ্যাত চায়ের দোকান, যা শ্রীমঙ্গল, সিলেটে অবস্থিত।[৪] রমেশ রাম গৌড় হচ্ছেন এই সাত রং চায়ের উদ্ভাবক।[২][৫]

ইতিহাস

অর্থনৈতিক মূল্য

রমেশ রাম গৌড়ের চায়ের দোকান সমূহ থেকে বাংলাদেশ সরকার প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ রাজস্ব পেয়ে থাকে।[৬] ঢাকায় নিযুক্ত কাতারের রাষ্ট্রদূত, আহমেদ বিন মোহাম্মেদ আল-দিহাইমি, শ্রীমঙ্গল ভ্রমণ কালে সাত রং চায়ের স্বাদ নেন।[৭] সাত রং চায়ের উদ্ভাবক রমেশ রাম গৌড়[২][৫] তার কাছ থেকে এক কাপ সাত রং চায়ের জন্য সাত হাজার টাকা উপহার পান।[৭]

প্রস্তুতকরণ

যদিও বর্তমানে অন্যান্য চা প্রস্তুতকারক এবং দোকান সমূহ বহুস্তর চা প্রস্তুত করছে, রমেশ রাম গৌড় একসময় ভাবতেন যে ‘চায়ের গোপন প্রস্তুতপ্রণালী’ কেউ নকল করতে পারবে না।[৫] তিনি কখনো পূর্ণাঙ্গভাবে গোপন প্রক্রিয়াটি কাউকে বলেন নি, তবে তিনি এই প্রক্রিয়া সংক্ষেপে এবং প্রধান উপাদান সমূহের কথা বলেছেন।

উপাদান

  1. তিন ধরনের কালো চা (শ্রীমঙ্গলে উৎপন্ন)
  2. সবুজ চা (শ্রীমঙ্গলে উৎপন্ন)
  3. মশলা (দারুচিনি, লবঙ্গ)
  4. লেবু
  5. ঘনীভূত দুধ

প্রক্রিয়া

বিক্রয়স্থান

নীলকণ্ঠ টি কেবিন

আদি নীলকণ্ঠ টি কেবিন, শ্রীমঙ্গল

নীলকণ্ঠ টি কেবিনই হচ্ছে সেই জায়গা যেখানে সাত রং চা পরিবেশন করা হয়। এই চায়ের দোকানে বৈচিত্র্যময় চায়ের বাহার রয়েছে। স্বতন্ত্র পাঁচ রঙের চা ছাড়াও,[৮] ১ থেকে ৭ রঙের চা সাশ্রয়ী মূল্যে পাওয়া যায়। রমেশ রাম গৌড় তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় একই কাপে/গ্লাসে আট রং চা প্রস্তুতির কৌশল উদ্ভাবন করেছেন।[৮]

বর্তমানে, নীলকণ্ঠ টি কেবিনের স্বত্বাধিকারী, রমেশ রাম গৌড়ের দুটি দোকান রয়েছে।[৬] একটি শ্রীমঙ্গলের রামনগর মনিপুরী পাড়ায় অবস্থিত (যা নীলকণ্ঠ-১ নামে পরিচিত), এটি সর্বপ্রথম এবং পুরাতন শাখা;[৯] যখন অন্যটা ১৪ রাইফেল ব্যাটালিয়ন সেন্টার, কালীঘাট, শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত; এটা সাধারণত নীলকণ্ঠ-২ নামে পরিচিত।[১০] এটি হচ্ছে নতুন শাখা।[৯] নীলকণ্ঠের এই দোকান সমূহ সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়ে প্রতিদিন রাত ৮টা পর্যন্ত সেবা দিয়ে যায়।[৯]

বাংলাদেশ উৎসব আমেজের দেশ। সুতরাং কোন ধর্মীয় উৎসব বা ছুটি উপলক্ষে ৭-রং চায়ের নাম এবং খ্যাতির জন্য বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকেরা এসে ভিড় জমায়। নীলকণ্ঠে এখনো ক্রেডিট কার্ড সেবা চালু হয়নি, ফলে দর্শনার্থীদের নগদ টাকা সঙ্গে রাখতে হবে।

অন্যান্য স্থান

লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান-এ ৭ রং টি কেবিন

চা শিল্প

বর্তমানে, ব্যবসায়িকভাবে বাংলাদেশ ১৭২টি টি এস্টেটের মালিক, যেগুলোর মধ্যে কয়েকটি হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে কর্মশীল চা বাগান।[১১][১২] এগুলোর মধ্যে, শুধু সিলেটেই রয়েছে ১৫০টিরও অধিক চা বাগান, যার মধ্যে আকার এবং উৎপাদনের ভিত্তিতে তিনটিই হচ্ছে পৃথিবীর সবথেকে বড় চা বাগান। ঐতিহাসিকভাবে সিলেট অঞ্চল হচ্ছে দেশের একটি চা উৎপাদনকারী এলাকা। সিলেট বিভাগের চারটি জেলার মধ্যে তিনটি (মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ এবং সিলেট) জেলাই হচ্ছে চা উৎপাদনকারী জেলা।[১৩]

শ্রীমঙ্গল, সিলেটের একটি শহর, পাহাড়ি ঢালুতে মাইলের পর মাইল জুড়ে চা বাগানের জন্য বিখ্যাত, এবং এজন্যে একে বাংলাদেশের চা রাজধানী বলা হয়। পাহাড় এবং ঘন জঙ্গল থাকায়, শ্রীমঙ্গলে বাংলাদেশের সবথেকে বেশি বৃষ্টিপাত এবং শীত পড়ে; চা উৎপাদনের উপযোগী হওয়ায়, এখানে ৩৮টি চা বাগান রয়েছে।[১৪] বিভিন্ন জাতের চা পাতা এবং এর সহজলভ্যতার জন্য বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিটিআরআই) এখানে গড়ে তোলা হয়েছে, যা বাংলাদেশ চা বোর্ডের অধীনে একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান।।[১৫][১৬][১৭] সাত রং চায়ের জন্য নীলকণ্ঠ টি কেবিন চার ধরনের গাছ থেকে (কালো তিন ধরনের এবং সবুজ এক ধরনের) বিভিন্ন জাতের স্থানীয় উৎপন্ন পাতা সংগ্রহ করে থাকে।

জনপ্রিয়তা এবং পানীয়

চা বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় পানীয়। চা পানে বাংলাদেশিরা বিশ্বে ১০ম স্থানে আছে।[১৮] দি ইকোনমিস্টের মতে, ২০১৫ সালে বাংলাদেশিরা ৭৮,০০০ টন চা পান করেছে।[১৮]

সাত রং চায়ের ভিন্ন ভিন্ন বর্ণ এবং স্বাদ রয়েছে। রংধনুর সাতটি আলাদা আলাদা রং দিতে রমেশ রাম গৌড় এক স্তরের উপর আরেক স্তর ঢেলে দেন। সাত রং চায়ের উপরের স্তরটি দারুচিনি স্বাদের হয়ে থাকে; যেখানে এর নিচের স্তরটি লেবু স্বাদ প্রদান করে। চতুর্থ স্তরে ঘনীভূত দুধের সাথে কালো চা থাকে, যখন নিচের স্তরগুলোতে মিষ্টি, লবঙ্গ সহ শরবত সবুজ চা, দারুচিনি এবং গোপন মশলা থাকে।

এটা খুব কমই শুনা যায় যে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে বেড়াতে গিয়ে কেউ সাত রং চা পান না করে এসেছেন। এমনকি শ্রীমঙ্গলে গিয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও তার কর্মকর্তাদের নিয়ে রমেশ রাম গৌড়ের বিখ্যাত চা পান করে এসেছেন।[১৯]

আরো দেখুন

চিত্রশালা

তথ্যসূত্র

  1. "সিলেটের সাতরঙা চা এর রহস্য ভেদ, জানুন তৈরির নিয়ম"। প্রথম আলো। ৪ মে ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ নভেম্বর ৪, ২০১৭ 
  2. "Making rainbows in a glass – seven-layer tea in Bangladesh"The Guardian। সংগ্রহের তারিখ নভেম্বর ২, ২০১৭ 
  3. "সিলেটের সাত রঙের চা এখন ঢাকায়"। যুগান্তর। সংগ্রহের তারিখ নভেম্বর ৯, ২০১৭ 
  4. "নীলকণ্ঠ টি কেবিন, শ্রীমঙ্গল, সিলেট in Moulvi Bazar"। Placedigger। সংগ্রহের তারিখ নভেম্বর ৭, ২০১৭ 
  5. "One Glass, Seven Layers of Tea - Scene Asia"। Wall Street Journal Blog। সংগ্রহের তারিখ নভেম্বর ৭, ২০১৭ 
  6. http://banglanews24.com/banglanewsprint/49283
  7. "Qatar ambassador to Bangladesh pays Tk 7000 for a cup of seven-layer tea"। bdnews24। সংগ্রহের তারিখ নভেম্বর ১৭, ২০১৭ 
  8. "দর্শনীয় স্থান"। সরকারি সাইট। ডিসেম্বর ১, ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ নভেম্বর ১৩, ২০১৭ 
  9. "রঙ-বেরঙের চা"। দৈনিক যুগান্তর। সংগ্রহের তারিখ নভেম্বর ১৩, ২০১৭ 
  10. "7 Layer Tea-cabin (Sreemangal) -"। Green Leaf Eco Tourism। সংগ্রহের তারিখ নভেম্বর ৭, ২০১৭ 
  11. Dr. Kazi Muzafar Ahammed। "Investment for Sustainable Development of Bangladesh Tea Industry – An Empirical Study" (পিডিএফ)। Bangladesh Economic Association। ৬ আগস্ট ২০১৫ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ নভেম্বর ২০১৭ 
  12. "Tea Gardens in Bangladesh"bangladesh.com। সংগ্রহের তারিখ ১৫ নভেম্বর ২০১৭ 
  13. "Bangladesh Tea Board"। Teaboard.gov.bd। সংগ্রহের তারিখ ১৩ নভেম্বর ২০১৭ 
  14. "প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে চা শিল্প"। The Daily News-Bangla। ডিসেম্বর ১, ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ নভেম্বর ৯, ২০১৭ 
  15. Minuddin Ahmed; AFM Badrul Alam (জানুয়ারি ২০০৩)। "Bangladesh Tea Research Institute"। Sirajul IslamBanglapediaDhaka: Asiatic Society of Bangladeshআইএসবিএন 984-32-0576-6। সংগ্রহের তারিখ ১২ মে ২০১৬ 
  16. "Brain drain dims achievements"The Daily Star। ১ নভেম্বর ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ১৮ নভেম্বর ২০১৬ 
  17. "Bangladesh tea trade gets new brew"BBC News। সংগ্রহের তারিখ ১৮ নভেম্বর ২০১৭ 
  18. "চা পানে বিশ্বে দশম স্থানে বাংলাদেশিরা"। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ নভেম্বর ১৮, ২০১৭ 
  19. "PM tastes Sylhet's famous colour tea"। bdnews24। সংগ্রহের তারিখ নভেম্বর ১২, ২০১৭ 

বহিঃসংযোগ