নূর মোহাম্মদ নিজামপুরী: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Sufia Nuria (আলোচনা | অবদান)
সম্পাদনা সারাংশ নেই
ট্যাগ: পুনর্বহালকৃত দৃশ্যমান সম্পাদনা মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
Sufia Nuria-এর সম্পাদিত সংস্করণ হতে Owais Al Qarni-এর সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণে ফেরত
ট্যাগ: পুনর্বহাল মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা উচ্চতর মোবাইল সম্পাদনা
৩৪ নং লাইন: ৩৪ নং লাইন:
নিজামপুরী ছিলেন এই জিহাদের অন্যতম সিপাহশালার। তিনি জুমার খুতবায় ভারতীয় মুসলিমদের ইংরেজ বিরোধী জিহাদে উদুদ্ধ করেন। [[বালাকোট যুদ্ধ|বালাকোট যুদ্ধে]] তিনি স্বশরীরে অংশগ্রহণ করেন। বালাকোটের ঘটনার পর তিনি কিছুকাল আত্মগোপনে চলে যান। এরপর থেকে তিনি '''‘গাজীয়ে বালাকোট’''' হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। নিজামপুরীর জীবনের শেষসময় গুলো কাটে উত্তর চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার নিজামপুর পরাগনার ১০ নং মিঠানালা ইউনিয়নের মলিহাইশ গ্রামে। এই অঞ্চলের দিকে নিছবত করেই নূর মুহাম্মদকে '''নিজামপুরী''' বলা হয়।
নিজামপুরী ছিলেন এই জিহাদের অন্যতম সিপাহশালার। তিনি জুমার খুতবায় ভারতীয় মুসলিমদের ইংরেজ বিরোধী জিহাদে উদুদ্ধ করেন। [[বালাকোট যুদ্ধ|বালাকোট যুদ্ধে]] তিনি স্বশরীরে অংশগ্রহণ করেন। বালাকোটের ঘটনার পর তিনি কিছুকাল আত্মগোপনে চলে যান। এরপর থেকে তিনি '''‘গাজীয়ে বালাকোট’''' হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। নিজামপুরীর জীবনের শেষসময় গুলো কাটে উত্তর চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার নিজামপুর পরাগনার ১০ নং মিঠানালা ইউনিয়নের মলিহাইশ গ্রামে। এই অঞ্চলের দিকে নিছবত করেই নূর মুহাম্মদকে '''নিজামপুরী''' বলা হয়।


== মৃত্যু ==
== ইন্তেকাল ==


১৮৫৮ সালের ১ নভেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন। ঢাকা-চট্টগ্রাম ট্রাং রোডের সুফিয়া রোডে থেকে তিন মাইল পশ্চিমে মিঠানালা ইউনিয়নের মলিহাইশ গ্রামে তার মাজার অবস্থিত।
১৮৫৮ সালের ১ নভেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন। ঢাকা-চট্টগ্রাম ট্রাং রোডের সুফিয়া রোডে থেকে তিন মাইল পশ্চিমে মিঠানালা ইউনিয়নের মলিহাইশ গ্রামে তার মাজার অবস্থিত।


তার নামেই প্রতিষ্ঠিত হয় উত্তর চট্টগ্রামের দ্বীনি বিদ্যাপীঠ [[সুফিয়া নূরিয়া ফাজিল মাদ্রাসা]]। মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করেন ফুরফুরা শরীফের বিশিষ্ট খলীফা মুফতীয়ে আযম শাহ্ সুফী আল্লামা আবদুল গনী (রহ:)।
তার নামেই প্রতিষ্ঠিত হয় উত্তর চট্টগ্রামের দ্বীনি বিদ্যাপীঠ [[সুফিয়া নূরিয়া ফাজিল মাদ্রাসা]]। মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করেন আব্দুল গণি।


== মূল্যায়ন ==
== মূল্যায়ন ==

০২:৫১, ১৮ আগস্ট ২০২১ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

নুর মোহাম্মদ নিজামপুরী
চিত্র:Nur1.jpg
নূর মোহাম্মদ নিজামপুরীর মাজার
জন্মআনু. ১৭৭৫-১৭৮৫ সালের মধ্যবর্তী সময়।
নোয়াখালী
মৃত্যুনভেম্বর ১, ১৮৫৮ ইং, কার্তিক ১৩, ১২৬৬ বঙ্গাব্দ।
মিঠানালা, মীরসরাই, চট্টগ্রাম
জাতীয়তাব্রিটিশ ভারতীয়
যুগউনবিংশ শতাব্দী
পেশাশিক্ষকতা
সম্প্রদায়সুন্নি
মাজহাবহানাফি
যাদের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছেন
যাদেরকে প্রভাবিত করেছেন
  • ফতেহ আলী ওয়াইসী

নূর মুহাম্মদ নিজামপুরী উনবিংশ শতাব্দীর একজন আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তার পূর্বপুরুষগণ ছিলেন গজনীর অধিবাসী। তিনি সৈয়দ আহমদ বেরলভির তিনজন গাজীর অন্যতম। কথিত আছে নিজামপুরী গজনীর সুলতান পুত্র যুবরাজ বখতিয়ার কুতুজ এর ৭ম পুরুষের বংশধর।[১] উলামা মাশায়েখের কাছে তিনি ‘নিজামপুরী রহ.’ নামে পরিচিত। স্থানীয় জনসাধারণ তাকে ‘সুইসা’ (সূফী সাহেব> সুইসা) বলে সম্বোধন করেন।[২][৩][৪][৫][৬]

পূর্বপুরুষদের ভারতে আগমন

নিজামপুরীর পূর্বপুরুষ বখতিয়ার কুতুজ আলম পরিবারসহ দিল্লিতে আসেন। অবার কেউ কেউ বলেন তারা গজনী থেকে নোয়াখালী হিজরত করেন। নিজামপুরীর পিতার নাম মোহাম্মদ ফানাহ্। তিনি নোয়াখালীর অধিবাসী ছিলেন। এখানেই নিজামপুরীর জন্ম হয়।[৭]

জন্ম, শৈশব ও শিক্ষাজীবন

নিজামপুরীর জন্ম সাল সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানা যায় নি। ধারণা করা হয়, তিনি ১৭৭৫-১৭৮৫ সালের মাঝামাঝি সময়ে জন্মগ্রহণ করেন। ১৭৯০ সালে পিতার নিকট তার শিক্ষাজীবনের সূচনা হয়। [৮]প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্তির পর উচ্চশিক্ষার জন্য তিনি কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসায় ভর্তি হন। এই মাদ্রাসা থেকেই তিনি তাফসীর ও হাদীস বিষয়ে উচ্চশিক্ষা লাভ করেন। উচ্চাশিক্ষা সমাপ্ত হওয়ার পর তিনি এখানেই শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন।

বিপ্লবী জীবন

সৈয়দ আহমদ বেরলভি ছিলেন নিজামপুরীর মুর্শিদ। ১৮২২ সালে কলকাতায় তিনি মুর্শিদের নিকট বায়াতবদ্ধ হন। জীবনের দীর্ঘসময় তিনি ব্রেলভীর সান্নিধ্যে অবস্থান করেন। ১৮২৬ সালে উপমহাদেশের মুসলিমদের ব্রিটিশদের গোলামি থেকে মুক্ত করার জন্য ব্রেলভী সীমান্তবর্তী অঞ্চল-পেশোয়ার,পাঞ্জাব অভিযান শুরু করেন। নিজামপুরী এসব অভিযানে অংশগ্রহণ করেন। ১৮৩১ সালে সাইয়েদ আহমদ ব্রেলভী ব্রিটিশ বিরোধী জিহাদের ডাক দেন।

নিজামপুরী ছিলেন এই জিহাদের অন্যতম সিপাহশালার। তিনি জুমার খুতবায় ভারতীয় মুসলিমদের ইংরেজ বিরোধী জিহাদে উদুদ্ধ করেন। বালাকোট যুদ্ধে তিনি স্বশরীরে অংশগ্রহণ করেন। বালাকোটের ঘটনার পর তিনি কিছুকাল আত্মগোপনে চলে যান। এরপর থেকে তিনি ‘গাজীয়ে বালাকোট’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। নিজামপুরীর জীবনের শেষসময় গুলো কাটে উত্তর চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার নিজামপুর পরাগনার ১০ নং মিঠানালা ইউনিয়নের মলিহাইশ গ্রামে। এই অঞ্চলের দিকে নিছবত করেই নূর মুহাম্মদকে নিজামপুরী বলা হয়।

মৃত্যু

১৮৫৮ সালের ১ নভেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন। ঢাকা-চট্টগ্রাম ট্রাং রোডের সুফিয়া রোডে থেকে তিন মাইল পশ্চিমে মিঠানালা ইউনিয়নের মলিহাইশ গ্রামে তার মাজার অবস্থিত।

তার নামেই প্রতিষ্ঠিত হয় উত্তর চট্টগ্রামের দ্বীনি বিদ্যাপীঠ সুফিয়া নূরিয়া ফাজিল মাদ্রাসা। মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করেন আব্দুল গণি।

মূল্যায়ন

উপমহাদেশে সাইয়েদ আহমদ শহীদের জিহাদ আন্দোলন নিয়ে প্রায় ২০ বছর গবেষণা করে তিন খন্ডের গ্রন্থ রচনা করেছেন মরহুম মাওলানা গোলাম রসুল মেহের। গত শতাব্দীর ষাটের দশকে লাহোর থেকে প্রকাশিত তার সে গ্রন্থের তৃতীয় খন্ডে ‘সুফী নূর মুহাম্মদ  বাঙ্গালী’ শিরোনামে তিনি তিন লাইনের একটি মূল্যায়ন তুলে ধরেছেন। লিখেছেন-

অত্যন্ত নিষ্ঠাবান, রিয়ামুক্ত দ্বীনদার ও পরহেযগার বুযুর্গ ছিলেন। বাইআত হওয়ার সময় তাঁর সঙ্গে যা কিছু ছিল তিনি তাঁর সর্বস্ব সাইয়েদ আহমদ শহীদ রাহ.-এর হাতে উপহার হিসেবে তুলে দেন। সেখান থেকে খরচের জন্য তাঁকে কিছু ফেরত দেওয়া হলে তিনি গ্রহণ করেন। বাকি সবটুকু কোষাগারে জমা করে দেওয়া হয়।’[৯]

লাখনৌ থেকে প্রকাশিত বিশ্ববিখ্যাত ইসলামী পণ্ডিত সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভী রাহ. রচিত তারীখে দাওয়াত ওয়া আযীমত গ্রন্থে বলা হয়েছে-

‘তিনি ছিলেন বাংলা অঞ্চলে সাইয়েদ সাহেবের প্রধান খলিফাদের একজন। জিহাদে সাইয়েদ সাহেবের সঙ্গে তাশরীফ নিয়েছেন। রণাঙ্গনে তিনি আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন। এরপর আবারো দেশে ফিরে এসে দ্বীনের প্রচার ও হেদায়াতের কাজ করেছেন।’[১০]

তথ্যসূত্র

  1. "নিজামপুরী (রহঃ) জীবনী"www.sufifatehaliwaisi.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৬-২৬ 
  2. হাবিবুর রহমান, মুহাম্মদ (২০০৯)। আমরা যাদের উত্তরসূরী (শতাধিক পীর-মাশায়েখ ও উলামায়ে কেরাম এর জীবন ও কর্ম)। ঢাকা, বাংলাদেশ: আর কাউসার প্রকাশনী। পৃষ্ঠা ২২–২৯। 
  3. জাফর, আবু (২০১৭)। ভারতীয় উপমহাদেশের সুফি-সাধক ও ওলামা মাশায়েখ। বাংলাবাজার, ঢাকা: মীনা বুক হাউস। পৃষ্ঠা ৫৯–৬৩। আইএসবিএন 9789849115465 
  4. নিজামপুরী, আশরাফ আলী (২০১৩)। দ্যা হান্ড্রেড (বাংলা মায়ের একশ কৃতিসন্তান) (১ম সংস্করণ)। হাটহাজারী, চট্টগ্রাম: সালমান প্রকাশনী। পৃষ্ঠা ১৩–১৬। আইএসবিএন 112009250-7 
  5. বিজনুরি, আজিজুর রহমান (১৯৬৭)। তাজকিরায়ে মাশায়েখে দেওবন্দ [দীপ্তিময় মনীষীগণের জীবনকথা]। ছফিউল্লাহ, মুহাম্মদ কর্তৃক অনূদিত। বিজনুর, ভারত; বাংলাবাজার, ঢাকা: ইদারায়ে মাদানি দারুত তালিফ; মাকতাবায়ে ত্বহা। পৃষ্ঠা ২২–৩৬। ওসিএলসি 19927541 
  6. হাফেজ আহমদুল্লাহ, মুফতি; হাসান, আহমদ (মে ২০১৬)। মাশায়েখে চাটগাম — ১ম খণ্ড (৩য় সংস্করণ)। ১১/১, ইসলামী টাওয়ার, বাংলাবাজার, ঢাকা ১১০০: আহমদ প্রকাশন। পৃষ্ঠা ২৩২–২৪১। আইএসবিএন 978-984-92106-4-1 
  7. সিরাজী, সাইফুল হক, মীরসরাই এর ওলামা ও আকাবির। সুফিয়া ইসলামিক রিসার্চ একাডেমী। 
  8. "নিজামপুরী (রহঃ) জীবনী"www.sufifatehaliwaisi.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৬-২৬ 
  9. https://www.alkawsar.com/bn/article/889/
  10. "শরীফ মুহাম্মদ, অমর বালাকোট-সংগ্রামী মিঠানালার সুফী নূর মুহাম্মদ নিজামপুরী রাহ."। ৫ম সংখ্যা, মে ২০১৩, মাসিক আল কাউসার