সৌর কোষ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
WikiSabih (আলোচনা | অবদান)
সম্পাদনা সারাংশ নেই
WikiSabih (আলোচনা | অবদান)
সম্পাদনা সারাংশ নেই
৫ নং লাইন: ৫ নং লাইন:
যদিও সৌর কোষ আধুনিক [[পদার্থবিজ্ঞান|পদার্থবিজ্ঞানের]] গবেষণার অন্যতম বিষয়, এর ইতিহাস বেশ পুরনো। ১৮৩৯ সালে ফরাসী পদার্থবিজ্ঞানী [[বেকরেল]] সর্বপ্রথম আলোক-বিভব ক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করেন। একে ব্যবহার করে ১৮৮৩ সালে [[সোনা]]র প্রলেপ দেওয়া [[সেমিকন্ডাকটর|অর্ধপরিবাহি]] সেলেনিয়াম থেকে প্রথম সৌর কোষ তৈরি করেন চার্লস ফ্রিটস। এর কর্মক্ষমতা (Efficiency) ছিল মাত্র ১%। প্রথম সেমিকন্ডাকটর-জাংশন সৌর কোষ তৈরি হয় ১৯৪৬ সালে, যার উদ্ভাবক ছিলেন রাসেল ওল <ref>Light sensitive device" U.S. Patent 2,402,662</ref>। তবে আধুনিক সৌর কোষ প্রযুক্তির জন্ম ১৯৫৬ সালে, আমেরিকার বেল ল্যাবরেটরিতে। ড্যারিল চ্যাপলিন, কেল্ভিন ফুলার ও জেরাল্ড পিইয়ারসন উদ্ভাবিত এই কষের কর্মক্ষমতা ছিল ৬% এর কাছাকাছি <ref>D. M. Chapin, C. S. Fuller, and G. L. Pearson; J. Appl. Phys. 25, 676 (1954)</ref>। ১৯৫৮ সালে উৎক্ষেপিত ভ্যানগার্ড-১ ছিল প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ যাতে সৌর কোষ ব্যবহৃত হয়।
যদিও সৌর কোষ আধুনিক [[পদার্থবিজ্ঞান|পদার্থবিজ্ঞানের]] গবেষণার অন্যতম বিষয়, এর ইতিহাস বেশ পুরনো। ১৮৩৯ সালে ফরাসী পদার্থবিজ্ঞানী [[বেকরেল]] সর্বপ্রথম আলোক-বিভব ক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করেন। একে ব্যবহার করে ১৮৮৩ সালে [[সোনা]]র প্রলেপ দেওয়া [[সেমিকন্ডাকটর|অর্ধপরিবাহি]] সেলেনিয়াম থেকে প্রথম সৌর কোষ তৈরি করেন চার্লস ফ্রিটস। এর কর্মক্ষমতা (Efficiency) ছিল মাত্র ১%। প্রথম সেমিকন্ডাকটর-জাংশন সৌর কোষ তৈরি হয় ১৯৪৬ সালে, যার উদ্ভাবক ছিলেন রাসেল ওল <ref>Light sensitive device" U.S. Patent 2,402,662</ref>। তবে আধুনিক সৌর কোষ প্রযুক্তির জন্ম ১৯৫৬ সালে, আমেরিকার বেল ল্যাবরেটরিতে। ড্যারিল চ্যাপলিন, কেল্ভিন ফুলার ও জেরাল্ড পিইয়ারসন উদ্ভাবিত এই কষের কর্মক্ষমতা ছিল ৬% এর কাছাকাছি <ref>D. M. Chapin, C. S. Fuller, and G. L. Pearson; J. Appl. Phys. 25, 676 (1954)</ref>। ১৯৫৮ সালে উৎক্ষেপিত ভ্যানগার্ড-১ ছিল প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ যাতে সৌর কোষ ব্যবহৃত হয়।


১৯৭০ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের জরেস আলফারভ ও তার সহকর্মীরা তৈরি করেন উচ্চ কার্যক্ষম হেটেরো-স্ট্রাকচার সৌর কোষ। ১৯৮৮ সালে আমেরিকার এপ্লাইড সোলার এনার্জি করপোরেশন (ASEC) তৈরি করে গ্যালিয়াম-আর্সেনাইডের দ্বৈত জাংশন কোষ যার কার্যক্ষমতা ছিল প্রায় ১৭%। পরবর্তী এক দশকে ASEC তাদের কোষের কার্যক্ষমতা উন্নীত করে ২০%-এ। এই কোষগুলো আমেরিকান মহাকাশযাঙ্গুলোতে ব্যপকভাবে ব্যবহৃত হয়। ২০০৭ সাল নাগাদ এই প্রযুক্তি ত্রি-জাংশন পর্যায়ে উন্নীত হয় ও প্রায় ৩০% কার্যক্ষমতা লাভ করে।
১৯৭০ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের জরেস আলফারভ ও তার সহকর্মীরা তৈরি করেন উচ্চ কার্যক্ষম হেটেরো-স্ট্রাকচার সৌর কোষ। ১৯৮৮ সালে আমেরিকার এপ্লাইড সোলার এনার্জি করপোরেশন (ASEC) তৈরি করে গ্যালিয়াম-আর্সেনাইডের দ্বৈত জাংশন কোষ যার কার্যক্ষমতা ছিল প্রায় ১৭%। পরবর্তী এক দশকে ASEC তাদের কোষের কার্যক্ষমতা উন্নীত করে ২০%-এ। এই কোষগুলো আমেরিকান মহাকাশযানগুলোতে ব্যপকভাবে ব্যবহৃত হয়। ২০০৭ সাল নাগাদ এই প্রযুক্তি ত্রি-জাংশন পর্যায়ে উন্নীত হয় ও প্রায় ৩০% কার্যক্ষমতা লাভ করে।


২০০০ দশকে সৌর কোষ প্রযুক্তির ব্যপক উন্নয়ন ঘটে এবং কোষের মৌলিক গঠনে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সূচিত হয়। প্রচলিত সৌর কোষেগুলোর গঠন ও উপাদানের ভিন্নতা বিবেচনায় এদের তিনটি প্রজন্মে ভাগ করা যায়।

===প্রথম প্রজন্ম===
প্রথম প্রজন্মের সৌর কোষগুলো অতি উচ্চমানের সেমিন্ডাকটর জাংশনের তৈরী, আকারে বড়, কিন্তু উচচ কার্যক্ষম। তাত্ত্বিক হিসেবে দেখা যায় এর সর্বোচ্চ কার্যক্ষমতা ৩১%<ref>Green, Martin A (April 2002). "Third generation photovoltaics: solar cells for 2020 and beyond". Physica E: Low-dimensional Systems and Nanostructures 14 (1-2): 65–70. doi:10.1016/S1386-9477(02)00361-2</ref> এবং এ ধরণের আধুনিক কোষগুলোর কার্যক্ষমতা এ মানের কাছাকাছি।

===দ্বিতীয় প্রজন্ম===
এ প্রজন্মের সৌর কোষগুলো সস্তা, কিন্তু নিম্ন কর্মক্ষমতাসম্পন্ন (১২-২০%)। এরা পাতলা সর (থিন ফিল্ম) প্রযুক্তিতে তৈরী। বহুল প্রচলিত উপাদাঙ্গুলোর মধ্যে আছে ক্যাডমিয়াম টেলুরাইড (CdTe), দানাদার সিলিকন ও কপার-ইন্ডিয়াম-গ্যালিয়াম-সেলেনাইড (CIGS).

===তৃতীয় প্রজন্ম===
তৃতীয় প্রজন্মের কোষ মূলত দ্বিতীয় প্রজন্মের কোষগুলোর উন্নত সংস্করণ। এদের মধ্যে আছে ডাই-সংবেদী কোষ, ন্যানোসিলিকন কোষ ইত্যাদি।

==তথ্যসূত্র==
{{reflist}}
{{reflist}}



০৯:০৯, ১১ নভেম্বর ২০০৯ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

সৌর কোষ (বা সোলার সেল, Solar Cell) এক ধরণের সরঞ্জাম যা সূ্র্য্যের আলোক শক্তিকে আলোক-বিভব ক্রিয়ার (Photovoltaic Effect) মাধ্যমে বিদ্যুত শক্তিতে রূপান্তরিত করতে পারে। অনুরূপ যেসব কোষ সূর্য্য ছাড়া অন্য উৎস থেকে আলোক শক্তি সংগ্রহ করে তাদের ক্ষেত্রে 'আলোক-বিভব কোষ' পদটি ব্যবহার করা হয়।

সিলিকনের তৈরি সৌর কোষ

ইতিহাস

যদিও সৌর কোষ আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের গবেষণার অন্যতম বিষয়, এর ইতিহাস বেশ পুরনো। ১৮৩৯ সালে ফরাসী পদার্থবিজ্ঞানী বেকরেল সর্বপ্রথম আলোক-বিভব ক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করেন। একে ব্যবহার করে ১৮৮৩ সালে সোনার প্রলেপ দেওয়া অর্ধপরিবাহি সেলেনিয়াম থেকে প্রথম সৌর কোষ তৈরি করেন চার্লস ফ্রিটস। এর কর্মক্ষমতা (Efficiency) ছিল মাত্র ১%। প্রথম সেমিকন্ডাকটর-জাংশন সৌর কোষ তৈরি হয় ১৯৪৬ সালে, যার উদ্ভাবক ছিলেন রাসেল ওল [১]। তবে আধুনিক সৌর কোষ প্রযুক্তির জন্ম ১৯৫৬ সালে, আমেরিকার বেল ল্যাবরেটরিতে। ড্যারিল চ্যাপলিন, কেল্ভিন ফুলার ও জেরাল্ড পিইয়ারসন উদ্ভাবিত এই কষের কর্মক্ষমতা ছিল ৬% এর কাছাকাছি [২]। ১৯৫৮ সালে উৎক্ষেপিত ভ্যানগার্ড-১ ছিল প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ যাতে সৌর কোষ ব্যবহৃত হয়।

১৯৭০ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের জরেস আলফারভ ও তার সহকর্মীরা তৈরি করেন উচ্চ কার্যক্ষম হেটেরো-স্ট্রাকচার সৌর কোষ। ১৯৮৮ সালে আমেরিকার এপ্লাইড সোলার এনার্জি করপোরেশন (ASEC) তৈরি করে গ্যালিয়াম-আর্সেনাইডের দ্বৈত জাংশন কোষ যার কার্যক্ষমতা ছিল প্রায় ১৭%। পরবর্তী এক দশকে ASEC তাদের কোষের কার্যক্ষমতা উন্নীত করে ২০%-এ। এই কোষগুলো আমেরিকান মহাকাশযানগুলোতে ব্যপকভাবে ব্যবহৃত হয়। ২০০৭ সাল নাগাদ এই প্রযুক্তি ত্রি-জাংশন পর্যায়ে উন্নীত হয় ও প্রায় ৩০% কার্যক্ষমতা লাভ করে।

২০০০ দশকে সৌর কোষ প্রযুক্তির ব্যপক উন্নয়ন ঘটে এবং কোষের মৌলিক গঠনে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সূচিত হয়। প্রচলিত সৌর কোষেগুলোর গঠন ও উপাদানের ভিন্নতা বিবেচনায় এদের তিনটি প্রজন্মে ভাগ করা যায়।

প্রথম প্রজন্ম

প্রথম প্রজন্মের সৌর কোষগুলো অতি উচ্চমানের সেমিন্ডাকটর জাংশনের তৈরী, আকারে বড়, কিন্তু উচচ কার্যক্ষম। তাত্ত্বিক হিসেবে দেখা যায় এর সর্বোচ্চ কার্যক্ষমতা ৩১%[৩] এবং এ ধরণের আধুনিক কোষগুলোর কার্যক্ষমতা এ মানের কাছাকাছি।

দ্বিতীয় প্রজন্ম

এ প্রজন্মের সৌর কোষগুলো সস্তা, কিন্তু নিম্ন কর্মক্ষমতাসম্পন্ন (১২-২০%)। এরা পাতলা সর (থিন ফিল্ম) প্রযুক্তিতে তৈরী। বহুল প্রচলিত উপাদাঙ্গুলোর মধ্যে আছে ক্যাডমিয়াম টেলুরাইড (CdTe), দানাদার সিলিকন ও কপার-ইন্ডিয়াম-গ্যালিয়াম-সেলেনাইড (CIGS).

তৃতীয় প্রজন্ম

তৃতীয় প্রজন্মের কোষ মূলত দ্বিতীয় প্রজন্মের কোষগুলোর উন্নত সংস্করণ। এদের মধ্যে আছে ডাই-সংবেদী কোষ, ন্যানোসিলিকন কোষ ইত্যাদি।

তথ্যসূত্র

  1. Light sensitive device" U.S. Patent 2,402,662
  2. D. M. Chapin, C. S. Fuller, and G. L. Pearson; J. Appl. Phys. 25, 676 (1954)
  3. Green, Martin A (April 2002). "Third generation photovoltaics: solar cells for 2020 and beyond". Physica E: Low-dimensional Systems and Nanostructures 14 (1-2): 65–70. doi:10.1016/S1386-9477(02)00361-2