তিমির বরণ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান)
বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে। কোন সমস্যায় এর পরিচালককে জানান।
৬ নং লাইন: ৬ নং লাইন:
| birth_name =
| birth_name =
| birth_date = {{জন্ম তারিখ|1901|01|10}}
| birth_date = {{জন্ম তারিখ|1901|01|10}}
| birth_place = কলকাতা [[ বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি]] বর্তমানের [[পশ্চিমবঙ্গ]], ভারত
| birth_place = কলকাতা [[বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি]] বর্তমানের [[পশ্চিমবঙ্গ]], ভারত
| death_date = {{মৃত্যু তারিখ ও বয়স|df=yes|1987|03|29|1901|01|10}}
| death_date = {{মৃত্যু তারিখ ও বয়স|df=yes|1987|03|29|1901|01|10}}
| death_place = [[কলকাতা ]], [[পশ্চিমবঙ্গ]] ভারত
| death_place = [[কলকাতা ]], [[পশ্চিমবঙ্গ]] ভারত
৩১ নং লাইন: ৩১ নং লাইন:
| portaldisp =
| portaldisp =
}}
}}
'''তিমির বরণ ভট্টাচার্য '''({{lang-en|Timir Baran Bhattacharya }}) ([[জানুয়ারি ১০|১০ জানুয়ারি,]] [[১৯০১]] -[[মার্চ ২৯|২৯ মার্চ,]] [[১৯৮৭]] ) ছিলেন বিখ্যাত বাঙালি সরোদশিল্পী ও ভারতীয় বৃন্দবাদনের অন্যতম পথিকৃৎ। <ref name = "সংসদ"> অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, ''সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান'', দ্বিতীয় খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, জানুয়ারি ২০১৯ পৃষ্ঠা ১৫৫,১৫৬ {{আইএসবিএন|978-81-7955-292-6}}</ref>
'''তিমির বরণ ভট্টাচার্য '''({{lang-en|Timir Baran Bhattacharya }}) ([[জানুয়ারি ১০|১০ জানুয়ারি,]] ১৯০১ -[[মার্চ ২৯|২৯ মার্চ,]] ১৯৮৭ ) ছিলেন বিখ্যাত বাঙালি সরোদশিল্পী ও ভারতীয় বৃন্দবাদনের অন্যতম পথিকৃৎ। <ref name = "সংসদ">অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, ''সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান'', দ্বিতীয় খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, জানুয়ারি ২০১৯ পৃষ্ঠা ১৫৫,১৫৬ {{আইএসবিএন|978-81-7955-292-6}}</ref>


==জন্ম ও প্রারম্ভিক জীবন ==
==জন্ম ও প্রারম্ভিক জীবন ==
৪০ নং লাইন: ৪০ নং লাইন:
==সঙ্গীত জীবন==
==সঙ্গীত জীবন==


১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় ফিরে 'মাইহার ব্যান্ড'-এর অনুপ্রেরণায় তিনি অগ্রজ ও বাড়ির ছেলেমেয়েদের নিয়ে একটি 'ফ্যামিলি অর্কেস্ট্রা'র দল গড়ে তোলেন। আর ওই বছরেই তিনি [[ উদয়শঙ্কর | উদয়শঙ্কর নাট্যসম্প্রদায়ের]] সঙ্গীত পরিচালক হিসাবে যোগ দিয়ে দলের সঙ্গে জার্মানি, জাপান, কানাডা ও ইউরোপ ভ্রমণ করেন। দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে ইউরোপের নানা দেশে অনুষ্ঠান করলেন।<ref name="সংসদ"> </ref> বিশ্ব জুড়ে অভিনন্দিত হলেন [[উদয়শঙ্কর]] আর তিমির বরণ।
১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় ফিরে 'মাইহার ব্যান্ড'-এর অনুপ্রেরণায় তিনি অগ্রজ ও বাড়ির ছেলেমেয়েদের নিয়ে একটি 'ফ্যামিলি অর্কেস্ট্রা'র দল গড়ে তোলেন। আর ওই বছরেই তিনি [[উদয়শঙ্কর | উদয়শঙ্কর নাট্যসম্প্রদায়ের]] সঙ্গীত পরিচালক হিসাবে যোগ দিয়ে দলের সঙ্গে জার্মানি, জাপান, কানাডা ও ইউরোপ ভ্রমণ করেন। দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে ইউরোপের নানা দেশে অনুষ্ঠান করলেন।<ref name="সংসদ" /> বিশ্ব জুড়ে অভিনন্দিত হলেন [[উদয়শঙ্কর]] আর তিমির বরণ।
কিন্তু ইউরোপ বেশি দিন ভাল লাগল না তিমির বরণের। ১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দে উদয়শঙ্করের দল ছেড়ে ফিরলেন কলকাতায়। যোগ দিলেন [[বীরেন্দ্রনাথ সরকার | বীরেন্দ্রনাথ সরকারের]] [[ নিউ থিয়েটার্স |নিউ থিয়েটার্সে]]। অর্কেস্ট্রায়-এ বার ভারতীয় বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গে ব্যাঞ্জো, ভিওলা, চেল্লো-সহ বিভিন্ন ভিনদেশি যন্ত্রানুষঙ্গে সংযোজন করলেন পশ্চিমি সুরের। [[রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের]] সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা ছিল। ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে বেতারে যন্ত্রসঙ্গীতের মাধ্যমে তিনি রবীন্দ্রনাথের ''ক্ষুধিত পাষাণ'' পরিবেশন করেন। প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য এই যে, রবীন্দ্রনাথকে তিমির বরণ ‘পুরিয়া ধানেশ্রী’ রাগে সরোদ শুনিয়েছিলেন এবং তাতে কবি মুগ্ধ হয়ে বলেছিলেন-
কিন্তু ইউরোপ বেশি দিন ভাল লাগল না তিমির বরণের। ১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দে উদয়শঙ্করের দল ছেড়ে ফিরলেন কলকাতায়। যোগ দিলেন [[বীরেন্দ্রনাথ সরকার | বীরেন্দ্রনাথ সরকারের]] [[নিউ থিয়েটার্স |নিউ থিয়েটার্সে]]। অর্কেস্ট্রায়-এ বার ভারতীয় বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গে ব্যাঞ্জো, ভিওলা, চেল্লো-সহ বিভিন্ন ভিনদেশি যন্ত্রানুষঙ্গে সংযোজন করলেন পশ্চিমি সুরের। [[রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের]] সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা ছিল। ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে বেতারে যন্ত্রসঙ্গীতের মাধ্যমে তিনি রবীন্দ্রনাথের ''ক্ষুধিত পাষাণ'' পরিবেশন করেন। প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য এই যে, রবীন্দ্রনাথকে তিমির বরণ ‘পুরিয়া ধানেশ্রী’ রাগে সরোদ শুনিয়েছিলেন এবং তাতে কবি মুগ্ধ হয়ে বলেছিলেন-
{{উক্তি | ‘মাইহার থেকে ফিরে শান্তিনিকেতনে যোগ দিও। তোমার মতো লোক আমার দরকার।’
{{উক্তি | ‘মাইহার থেকে ফিরে শান্তিনিকেতনে যোগ দিও। তোমার মতো লোক আমার দরকার।’
}}
}}
সঙ্গীতের সেই আসরে রবীন্দ্রনাথের সাথে [[গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর |গগনেন্দ্রনাথ]], [[অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর|অবনীন্দ্রনাথ]], [[দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর| দিনেন্দ্রনাথ]] প্রমুখেরা উপস্থিত ছিলেন। <ref name =ABP></ref> ঐকতান সৃষ্টির ক্ষেত্রে তাঁর অবদান বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। [[নিউ থিয়েটার্স | নিউ থিয়েটার্সে]] তিনি ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দে মুক্তিপ্রাপ্ত হিন্দি চলচ্চিত্র ''দেবদাস''-এ অর্কেস্ট্রার সার্থক ব্যবহার করেন। <ref name =ABP></ref>বেশ কিছুদিন এখানে কাজ করার পর [[মধু বসু]] ও বিখ্যাত অভিনেত্রী ও নৃত্যশিল্পী [[ সাধনা বসু| সাধনা বসুর]] আহ্বানে তাদের নাট্যসংস্থা '' ক্যালকাটা আর্ট প্লেয়ার্স'' যোগ দেন। সেখানে ওমরের স্বপ্নকথা’, ‘বিদ্যুৎপর্ণা’ প্রভৃতি ছবিতে সঙ্গীত ও নৃত্যের সুর সং‌যোজন করলেন তিনি।
সঙ্গীতের সেই আসরে রবীন্দ্রনাথের সাথে [[গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর|গগনেন্দ্রনাথ]], [[অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর|অবনীন্দ্রনাথ]], [[দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর|দিনেন্দ্রনাথ]] প্রমুখেরা উপস্থিত ছিলেন। <ref name =ABP /> ঐকতান সৃষ্টির ক্ষেত্রে তাঁর অবদান বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। [[নিউ থিয়েটার্স | নিউ থিয়েটার্সে]] তিনি ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দে মুক্তিপ্রাপ্ত হিন্দি চলচ্চিত্র ''দেবদাস''-এ অর্কেস্ট্রার সার্থক ব্যবহার করেন। <ref name =ABP /> বেশ কিছুদিন এখানে কাজ করার পর [[মধু বসু]] ও বিখ্যাত অভিনেত্রী ও নৃত্যশিল্পী [[সাধনা বসু| সাধনা বসুর]] আহ্বানে তাদের নাট্যসংস্থা '' ক্যালকাটা আর্ট প্লেয়ার্স'' যোগ দেন। সেখানে ওমরের স্বপ্নকথা’, ‘বিদ্যুৎপর্ণা’ প্রভৃতি ছবিতে সঙ্গীত ও নৃত্যের সুর সং‌যোজন করলেন তিনি।
পরে মঞ্চ ও চলচ্চিত্র জগতের সঙ্গীত পরিচালক হয়ে বোম্বাই ও পাকিস্তানে গিয়েছেন। ষাটের দশকে [[রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় |রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের]] সঙ্গীত বিভাগে যোগ দেন। তাঁর শেষ কর্মক্ষেত্র ছিল মামুলি পেশাদার মঞ্চ [[স্টার থিয়েটার]]। তাঁর রচিত গ্রন্থ হল - ''উদয়ের পথে সহযাত্রী''।
পরে মঞ্চ ও চলচ্চিত্র জগতের সঙ্গীত পরিচালক হয়ে বোম্বাই ও পাকিস্তানে গিয়েছেন। ষাটের দশকে [[রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় |রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের]] সঙ্গীত বিভাগে যোগ দেন। তাঁর শেষ কর্মক্ষেত্র ছিল মামুলি পেশাদার মঞ্চ [[স্টার থিয়েটার]]। তাঁর রচিত গ্রন্থ হল - ''উদয়ের পথে সহযাত্রী''।


==সম্মাননা ও পুরস্কার==
==সম্মাননা ও পুরস্কার==


তিমির বরণ ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে ভারত সরকারের [[সংগীত নাটক অকাদেমি ]] পুরস্কার লাভ করেন। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের '''দেশিকোত্তম ''' উপাধি পান। এছাড়াও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আলাউদ্দিন পুরস্কারসহ দেশ বিদেশের বহু পুরস্কারে সম্মানিত হন।
তিমির বরণ ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে ভারত সরকারের [[সংগীত নাটক অকাদেমি]] পুরস্কার লাভ করেন। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের '''দেশিকোত্তম ''' উপাধি পান। এছাড়াও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আলাউদ্দিন পুরস্কারসহ দেশ বিদেশের বহু পুরস্কারে সম্মানিত হন।


==জীবনাবসান==
==জীবনাবসান==


তিমির বরণের জীবনের শেষদিনগুলি কলকাতার নেতাজীনগরে কেটেছে অসম্ভব শরীর খারাপের মধ্য দিয়ে। শেষে ১৯৮৭ খ্রিস্টাব্দের ২৭ শে মার্চ ৮৬ বৎসর বয়সে পরলোক গমন করেন।
তিমির বরণের জীবনের শেষদিনগুলি কলকাতার নেতাজীনগরে কেটেছে অসম্ভব শরীর খারাপের মধ্য দিয়ে। শেষে ১৯৮৭ খ্রিস্টাব্দের ২৭ শে মার্চ ৮৬ বৎসর বয়সে পরলোক গমন করেন।



==তথ্যসূত্র==
==তথ্যসূত্র==

[[বিষয়শ্রেণী:১৯০১-এ জন্ম]]
[[বিষয়শ্রেণী:১৯০১-এ জন্ম]]
[[বিষয়শ্রেণী:১৯৮৭-এ মৃত্যু]]
[[বিষয়শ্রেণী:১৯৮৭-এ মৃত্যু]]
[[বিষয়শ্রেণী: কলকাতা জেলার ব্যক্তি]]
[[বিষয়শ্রেণী:কলকাতা জেলার ব্যক্তি]]
[[বিষয়শ্রেণী: বাঙালি সঙ্গীতশিল্পী]]
[[বিষয়শ্রেণী:বাঙালি সঙ্গীতশিল্পী]]

০৭:১১, ২ জুন ২০২১ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

তিমির বরণ
জন্ম(১৯০১-০১-১০)১০ জানুয়ারি ১৯০১
কলকাতা বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি বর্তমানের পশ্চিমবঙ্গ, ভারত
মৃত্যু২৯ মার্চ ১৯৮৭(1987-03-29) (বয়স ৮৬)
কলকাতা , পশ্চিমবঙ্গ ভারত
ধরনসরোদ শিল্পী
পেশাসঙ্গীত পরিচালক
দাম্পত্য সঙ্গীমণিকা দেবী
সন্তানইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য (পুত্র)
পিতা-মাতাজ্ঞানেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য (পিতা)

তিমির বরণ ভট্টাচার্য (ইংরেজি: Timir Baran Bhattacharya) (১০ জানুয়ারি, ১৯০১ -২৯ মার্চ, ১৯৮৭ ) ছিলেন বিখ্যাত বাঙালি সরোদশিল্পী ও ভারতীয় বৃন্দবাদনের অন্যতম পথিকৃৎ। [১]

জন্ম ও প্রারম্ভিক জীবন

তিমির বরণের জন্ম অবিভক্ত বাংলার অধুনা পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা শহরের বড়বাজারের শিব ঠাকুর লেনের তন্ত্রসাধক ভট্টাচার্য পরিবারে। পিতা জ্ঞানেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য ছিলেন সঙ্গীত বিশারদ। তিমির বরণরা ছিলেন তিন ভাই। জ্যেষ্ঠ ছিলেন মিহিরকিরণ এবং কনিষ্ঠ শিশিরশোভন। স্কুলের পড়াশোনা ওরিয়েন্টাল সিভিল স্কুল ও সিটি ট্রেনিং স্কুলে হলে। কিন্তু বাড়ির সাঙ্গীতিক পরিবেশ তাঁকে সঙ্গীতজগতে নিয়ে আসে। অল্প বয়সে পিতামাতাকে হারিয়ে বড়দাদা মিহিরকিরণের দায়িত্বেই বড় হন। প্রথম দিকে পিতার কাছে বহু সঙ্গীতজ্ঞের আনাগোনার সূত্রে তিমির বরণ তালিম নেন খ্যাতনামা খেয়ালশিল্পী রাধিকাপ্রসাদ গোস্বামীর কাছে। পরে ১৪ বৎসর বয়সে হ্যারিসন রোডের বাসিন্দা, ক্ল্যারিওনেট শিল্পী রাজেন্দ্রলাল চট্টোপাধ্যায়ের কাছে হিন্দুস্থানী ধ্রুপদী সঙ্গীতের শিক্ষার সাথে ক্ল্যারিওনেট বাজনা শেখেন। পরবর্তীতে আকৃষ্ট হন সরোদ বাদনে। তাঁর সরোদের শিক্ষাগুরু ছিলেন আমির খাঁআলাউদ্দিন খাঁ। কলকাতায় পাঁচ বছর আমির খাঁয়ের কাছে শিখে, ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি মাইহারে আলাউদ্দিন খাঁর কাছে সরোদবাদনে তালিম নেন। [২]

সঙ্গীত জীবন

১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় ফিরে 'মাইহার ব্যান্ড'-এর অনুপ্রেরণায় তিনি অগ্রজ ও বাড়ির ছেলেমেয়েদের নিয়ে একটি 'ফ্যামিলি অর্কেস্ট্রা'র দল গড়ে তোলেন। আর ওই বছরেই তিনি উদয়শঙ্কর নাট্যসম্প্রদায়ের সঙ্গীত পরিচালক হিসাবে যোগ দিয়ে দলের সঙ্গে জার্মানি, জাপান, কানাডা ও ইউরোপ ভ্রমণ করেন। দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে ইউরোপের নানা দেশে অনুষ্ঠান করলেন।[১] বিশ্ব জুড়ে অভিনন্দিত হলেন উদয়শঙ্কর আর তিমির বরণ। কিন্তু ইউরোপ বেশি দিন ভাল লাগল না তিমির বরণের। ১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দে উদয়শঙ্করের দল ছেড়ে ফিরলেন কলকাতায়। যোগ দিলেন বীরেন্দ্রনাথ সরকারের নিউ থিয়েটার্সে। অর্কেস্ট্রায়-এ বার ভারতীয় বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গে ব্যাঞ্জো, ভিওলা, চেল্লো-সহ বিভিন্ন ভিনদেশি যন্ত্রানুষঙ্গে সংযোজন করলেন পশ্চিমি সুরের। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা ছিল। ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে বেতারে যন্ত্রসঙ্গীতের মাধ্যমে তিনি রবীন্দ্রনাথের ক্ষুধিত পাষাণ পরিবেশন করেন। প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য এই যে, রবীন্দ্রনাথকে তিমির বরণ ‘পুরিয়া ধানেশ্রী’ রাগে সরোদ শুনিয়েছিলেন এবং তাতে কবি মুগ্ধ হয়ে বলেছিলেন-

‘মাইহার থেকে ফিরে শান্তিনিকেতনে যোগ দিও। তোমার মতো লোক আমার দরকার।’

সঙ্গীতের সেই আসরে রবীন্দ্রনাথের সাথে গগনেন্দ্রনাথ, অবনীন্দ্রনাথ, দিনেন্দ্রনাথ প্রমুখেরা উপস্থিত ছিলেন। [২] ঐকতান সৃষ্টির ক্ষেত্রে তাঁর অবদান বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। নিউ থিয়েটার্সে তিনি ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দে মুক্তিপ্রাপ্ত হিন্দি চলচ্চিত্র দেবদাস-এ অর্কেস্ট্রার সার্থক ব্যবহার করেন। [২] বেশ কিছুদিন এখানে কাজ করার পর মধু বসু ও বিখ্যাত অভিনেত্রী ও নৃত্যশিল্পী সাধনা বসুর আহ্বানে তাদের নাট্যসংস্থা ক্যালকাটা আর্ট প্লেয়ার্স যোগ দেন। সেখানে ওমরের স্বপ্নকথা’, ‘বিদ্যুৎপর্ণা’ প্রভৃতি ছবিতে সঙ্গীত ও নৃত্যের সুর সং‌যোজন করলেন তিনি। পরে মঞ্চ ও চলচ্চিত্র জগতের সঙ্গীত পরিচালক হয়ে বোম্বাই ও পাকিস্তানে গিয়েছেন। ষাটের দশকে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগে যোগ দেন। তাঁর শেষ কর্মক্ষেত্র ছিল মামুলি পেশাদার মঞ্চ স্টার থিয়েটার। তাঁর রচিত গ্রন্থ হল - উদয়ের পথে সহযাত্রী

সম্মাননা ও পুরস্কার

তিমির বরণ ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে ভারত সরকারের সংগীত নাটক অকাদেমি পুরস্কার লাভ করেন। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশিকোত্তম উপাধি পান। এছাড়াও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আলাউদ্দিন পুরস্কারসহ দেশ বিদেশের বহু পুরস্কারে সম্মানিত হন।

জীবনাবসান

তিমির বরণের জীবনের শেষদিনগুলি কলকাতার নেতাজীনগরে কেটেছে অসম্ভব শরীর খারাপের মধ্য দিয়ে। শেষে ১৯৮৭ খ্রিস্টাব্দের ২৭ শে মার্চ ৮৬ বৎসর বয়সে পরলোক গমন করেন।

তথ্যসূত্র

  1. অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, দ্বিতীয় খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, জানুয়ারি ২০১৯ পৃষ্ঠা ১৫৫,১৫৬ আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-২৯২-৬
  2. ওয়েব উদ্ধৃতি | শিরোনাম = সুর-সাম্রাজ্যের তিমির বরণ| ইউআরএল = https://www.anandabazar.com/patrika/some-unknown-facts-about-sarod-maestro-timir-baran-1.671619%7C সংগ্রহের-তারিখ = ২০২১-০৫-০৩}}