শালবন বৌদ্ধ বিহার: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
RagibBot (আলোচনা | অবদান)
clean up using AWB
তথ্যসংযোজন
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[চিত্র:Shalbon budha bihar.jpg|right|thumb|শালবন বৌদ্ধ বিহার, কুমিল্লা]]
[[চিত্র:Shalbon budha bihar.jpg|right|thumb|শালবন বৌদ্ধ বিহার, কুমিল্লা]]
'''শালবন বৌদ্ধ বিহার''' [[বাংলাদেশ|বাংলাদেশের]] প্রাচীন নিদর্শন গুলোর মধ্যে অন্যতম। [[কুমিল্লা জেলা|কুমিল্লা জেলার]] [[লালমাই]]-[[ময়নামতি]] প্রত্নস্থলের অসংখ্য প্রাচীন স্থাপনা গুলোর একটি শালবন বিহার । ধারনা করা হয় দেব বংশীয় রাজা শ্রীভবদেব খ্রিস্টীয় ৮ম শতকে এই বিহার নির্মাণ করেন।
'''শালবন বৌদ্ধ বিহার''' [[বাংলাদেশ|বাংলাদেশের]] প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শন গুলোর মধ্যে অন্যতম। [[কুমিল্লা জেলা|কুমিল্লা জেলার]] [[লালমাই]]-[[ময়নামতি]] প্রত্নস্থলের অসংখ্য প্রাচীন স্থাপনা গুলোর একটি শালবন বিহার । ধারণা করা হয় দেব বংশীয় রাজা শ্রীভবদেব খ্রিস্টীয় ৮ম শতকে এই [[বৌদ্ধ বিহার|বিহার]] নির্মাণ করেন।

==অবস্থান==
কুমিল্লার ময়নামতিতে খননকৃত সব প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের মধ্যে শালবন বিহার অন্যতম প্রধান। কোটবাড়িতে [[বালাদেশ রুরাল ডিভালেপমেন্ট বোর্ড|বার্ডের]]কাছে [[লালমাই পাহাড়|লালমাই পাহাড়ের]] মাঝামাঝি এলাকায় এ বিহারটির অবস্থান। বিহারটির আশপাশে এক সময় ঘন শাল-গজারির বন ছিল বলে এ বিহারের নাম হয়েছিল শালবন বিহার। পাশের গ্রামটির নাম শালবনপুর। এখনো কিছু গাছের ছোট একটি বন আছে সেখানে। [[পাহাড়পুর]] বৌদ্ধ বিহারের মতোই এ বিহারটি। তবে পাহাড়পুর বিহারের চেয়ে ছোট।
==বর্ণনা==
আকারে এটি চৌকো। শালবন বিহারের প্রতিটি বাহু ১৬৭.৭ মিটার দীর্ঘ। বিহারের চার দিকের দেয়াল পাঁচ মিটার পুরু। কক্ষগুলো বিহারের চার দিকের বেষ্টনী দেয়াল পিঠ করে নির্মিত। বিহারে ঢোকা বা বের হওয়ার মাত্র একটাই পথ ছিল। এ পথ বা দরজাটি উত্তর ব্লকের ঠিক মাঝামাঝি স্খানে রয়েছে। প্রতিটি কক্ষের মাঝে ১.৫ মিটার চওড়া দেয়াল রয়েছে। বিহারে সর্বমোট ১৫৫টি কক্ষ আছে। এই কক্ষগুলো ছিল [[বৌদ্ধ ভিক্ষু|বৌদ্ধ ভিক্ষুরা ]] থাকতেন। সেখানে বিদ্যাশিক্ষা ও ধর্মচর্চ্চা করতেন। প্রতিটি কক্ষের দেয়ালে তিনটি করে কুলুঙ্গি রয়েছে। কুলুঙ্গিতে দেবদেবী, তেলের প্রদীপ ইত্যাদি রাখা হতো। কক্ষের সামনে ৮.৫ ফুট চওড়া টানা বারান্দা ও তার শেষ প্রান্তে অনুচ্চ দেয়াল। বিহার অঙ্গনের ঠিক মাঝখানে কেন্দ্রীয় মন্দির। বিহারের প্রবেশপথের পাশে বাইরে দক্ষিণ-পূর্ব কোণে একটি হলঘর রয়েছে। চার দিকের দেয়াল ও সামনে চারটি বিশাল গোলাকার স্তম্ভের ওপর নির্মিত সে হলঘরটি ভিক্ষুদের খাবার ঘর ছিল বলে ধারণা করা হয়। হলঘরের মাপ ১০ মিটার বাই ২০ মিটার। হলঘরের চার দিকে ইটের চওড়া রাস্তা আছে।
শালবন বিহারে ছয়টি নির্মাণ ও পুনর্নির্মাণ যুগের কথা জানা যায়। ধারণা করা হয়, খ্রিষ্টীয় সপ্তম শতাব্দীর শেষ থেকে অষ্টম শতাব্দীর প্রথম ভাগে দেববংশের চতুর্থ রাজা ভবদেব এটি নির্মাণ করেন। খ্রিষ্টীয় অষ্টম শতাব্দীর মধ্যে তৃতীয় পর্যায়ে কেন্দ্রীয় মন্দিরটি নির্মিত ও বিহারটির সংস্কার হয় বলে অনুমান করা হয়। পরে নবম-দশম শতাব্দীতে শেষ হয় চতুর্থ ও পঞ্চম পর্যায়ের নির্মাণকাজ। ব্যাপক প্রত্নতাত্ত্বিক খননের ফলে বিহারটি থেকে আটটি তাম্রলিপি, প্রায় ৪০০টি স্বর্ণ ও রৌপ্য মুদ্রা, অসংখ্য পোড়া মাটির ফলক বা টেরাকোটা, সিলমোহর, ব্রোঞ্জ ও মাটির মূর্তি পাওয়া গেছে। এগুলো আমাদের প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক ঐতিহ্যের স্বাক্ষর।



[[চিত্র:Shalbon budha bihar2.jpg|right|thumb|শালবন বৌদ্ধ বিহার]]
[[চিত্র:Shalbon budha bihar2.jpg|right|thumb|শালবন বৌদ্ধ বিহার]]

০৮:৪৬, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০০৯ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

শালবন বৌদ্ধ বিহার, কুমিল্লা

শালবন বৌদ্ধ বিহার বাংলাদেশের প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শন গুলোর মধ্যে অন্যতম। কুমিল্লা জেলার লালমাই-ময়নামতি প্রত্নস্থলের অসংখ্য প্রাচীন স্থাপনা গুলোর একটি শালবন বিহার । ধারণা করা হয় দেব বংশীয় রাজা শ্রীভবদেব খ্রিস্টীয় ৮ম শতকে এই বিহার নির্মাণ করেন।

অবস্থান

কুমিল্লার ময়নামতিতে খননকৃত সব প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের মধ্যে শালবন বিহার অন্যতম প্রধান। কোটবাড়িতে বার্ডেরকাছে লালমাই পাহাড়ের মাঝামাঝি এলাকায় এ বিহারটির অবস্থান। বিহারটির আশপাশে এক সময় ঘন শাল-গজারির বন ছিল বলে এ বিহারের নাম হয়েছিল শালবন বিহার। পাশের গ্রামটির নাম শালবনপুর। এখনো কিছু গাছের ছোট একটি বন আছে সেখানে। পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারের মতোই এ বিহারটি। তবে পাহাড়পুর বিহারের চেয়ে ছোট।

বর্ণনা

আকারে এটি চৌকো। শালবন বিহারের প্রতিটি বাহু ১৬৭.৭ মিটার দীর্ঘ। বিহারের চার দিকের দেয়াল পাঁচ মিটার পুরু। কক্ষগুলো বিহারের চার দিকের বেষ্টনী দেয়াল পিঠ করে নির্মিত। বিহারে ঢোকা বা বের হওয়ার মাত্র একটাই পথ ছিল। এ পথ বা দরজাটি উত্তর ব্লকের ঠিক মাঝামাঝি স্খানে রয়েছে। প্রতিটি কক্ষের মাঝে ১.৫ মিটার চওড়া দেয়াল রয়েছে। বিহারে সর্বমোট ১৫৫টি কক্ষ আছে। এই কক্ষগুলো ছিল বৌদ্ধ ভিক্ষুরা থাকতেন। সেখানে বিদ্যাশিক্ষা ও ধর্মচর্চ্চা করতেন। প্রতিটি কক্ষের দেয়ালে তিনটি করে কুলুঙ্গি রয়েছে। কুলুঙ্গিতে দেবদেবী, তেলের প্রদীপ ইত্যাদি রাখা হতো। কক্ষের সামনে ৮.৫ ফুট চওড়া টানা বারান্দা ও তার শেষ প্রান্তে অনুচ্চ দেয়াল। বিহার অঙ্গনের ঠিক মাঝখানে কেন্দ্রীয় মন্দির। বিহারের প্রবেশপথের পাশে বাইরে দক্ষিণ-পূর্ব কোণে একটি হলঘর রয়েছে। চার দিকের দেয়াল ও সামনে চারটি বিশাল গোলাকার স্তম্ভের ওপর নির্মিত সে হলঘরটি ভিক্ষুদের খাবার ঘর ছিল বলে ধারণা করা হয়। হলঘরের মাপ ১০ মিটার বাই ২০ মিটার। হলঘরের চার দিকে ইটের চওড়া রাস্তা আছে। শালবন বিহারে ছয়টি নির্মাণ ও পুনর্নির্মাণ যুগের কথা জানা যায়। ধারণা করা হয়, খ্রিষ্টীয় সপ্তম শতাব্দীর শেষ থেকে অষ্টম শতাব্দীর প্রথম ভাগে দেববংশের চতুর্থ রাজা ভবদেব এটি নির্মাণ করেন। খ্রিষ্টীয় অষ্টম শতাব্দীর মধ্যে তৃতীয় পর্যায়ে কেন্দ্রীয় মন্দিরটি নির্মিত ও বিহারটির সংস্কার হয় বলে অনুমান করা হয়। পরে নবম-দশম শতাব্দীতে শেষ হয় চতুর্থ ও পঞ্চম পর্যায়ের নির্মাণকাজ। ব্যাপক প্রত্নতাত্ত্বিক খননের ফলে বিহারটি থেকে আটটি তাম্রলিপি, প্রায় ৪০০টি স্বর্ণ ও রৌপ্য মুদ্রা, অসংখ্য পোড়া মাটির ফলক বা টেরাকোটা, সিলমোহর, ব্রোঞ্জ ও মাটির মূর্তি পাওয়া গেছে। এগুলো আমাদের প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক ঐতিহ্যের স্বাক্ষর।


শালবন বৌদ্ধ বিহার