কবরী: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
সম্পাদনা সারাংশ নেই
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা উচ্চতর মোবাইল সম্পাদনা
সম্পাদনা সারাংশ নেই
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা উচ্চতর মোবাইল সম্পাদনা
১৬ নং লাইন: ১৬ নং লাইন:
| occupation = অভিনেত্রী, রাজনীতিবিদ
| occupation = অভিনেত্রী, রাজনীতিবিদ
| parents = শ্রীকৃষ্ণদাস পাল <br> লাবণ্য প্রভা পাল
| parents = শ্রীকৃষ্ণদাস পাল <br> লাবণ্য প্রভা পাল
| spouse = চিত্ত চৌধুরী<br> {{marriage|সফিউদ্দিন সরোয়ার|১৯৭৮|২০০৮|end=div.}}
| spouse = চিত্ত চৌধুরী<br> {{marriage|সফিউদ্দীন সারোয়ার|১৯৭৮|২০০৮|end=div.}}
| children = ৫
| children = ৫
| awards =
| awards =

০৯:৩৪, ১৭ এপ্রিল ২০২১ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

কবরী
চিত্র:A scene in Sutorang (cropped).jpg
১৯৬৪ সালে সুতরাং চলচ্চিত্রে কবরী
জন্ম
মিনা পাল

(১৯৫০-০৭-১৯)১৯ জুলাই ১৯৫০
বোয়ালখালী, চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ
মৃত্যু১৭ এপ্রিল ২০২১(2021-04-17) (বয়স ৭০)
ঢাকা, বাংলাদেশ
মৃত্যুর কারণকোভিড-১৯
জাতীয়তাবাংলাদেশী
অন্যান্য নামসারাহ বেগম কবরী, কবরী সারোয়ার
পেশাঅভিনেত্রী, রাজনীতিবিদ
কর্মজীবন১৯৬৪–২০২১
দাম্পত্য সঙ্গীচিত্ত চৌধুরী
সফিউদ্দীন সারোয়ার (বি. ১৯৭৮; বিচ্ছেদ. ২০০৮)
সন্তান
পিতা-মাতাশ্রীকৃষ্ণদাস পাল
লাবণ্য প্রভা পাল

সারাহ বেগম কবরী[১] (জন্ম: মিনা পাল; ১৯ জুলাই ১৯৫০―১৭ এপ্রিল ২০২১)[২] একজন বাংলাদেশী অভিনেত্রী, চলচ্চিত্র পরিচালক ও রাজনীতিবিদ ছিলেন। তিনি বিংশ শতাব্দীর ষাট ও সত্তরের দশকের বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় চলচ্চিত্রের নায়িকা ছিলেন।[৩] তিনি একটি অভিনয় ও আজীবন সম্মাননাসহ দুটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, ছয়টি বাচসাস পুরস্কার এবং মেরিল-প্রথম আলো আজীবন সম্মাননা পুরস্কার অর্জন করেছেন।

কবরীর চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে নাট্যধর্মী সুতরাং (১৯৬৪) চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে। এরপর উর্দু ভাষার বাহানাসোয়ে নদীয়া জাগে পানি এবং লোককাহিনি নির্ভর সাত ভাই চম্পা (১৯৬৮) দিয়ে সফলতা অর্জন করেন। আবির্ভাব (১৯৬৮) চলচ্চিত্র দিয়ে রাজ্জাকের সাথে তার জুটি গড়ে ওঠে। এই জুটির জনপ্রিয় ও সফল চলচ্চিত্রগুলো হল ময়না মতি (১৯৬৯), নীল আকাশের নীচে (১৯৬৯), ক খ গ ঘ ঙ (১৯৭০), দর্প চূর্ণ (১৯৭০), কাঁচ কাটা হীরে (১৯৭০), দীপ নেভে নাই (১৯৭০), স্মৃতিটুকু থাক (১৯৭১), রংবাজ (১৯৭৩)।

তিনি লালন ফকির (১৯৭২) চলচ্চিত্রে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে বাচসাস পুরস্কার অর্জন করেন। সাহিত্যনির্ভর তিতাস একটি নদীর নাম (১৯৭৩)-এর রাজার ঝি এবং সারেং বৌ (১৯৭৮)-এর নবিতুন তার অন্যতম সমাদৃত দুটি কাজ। দ্বিতীয়োক্ত কাজের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও বাচসাস পুরস্কার অর্জন করেন। এছাড়া তিনি সুজন সখী (১৯৭৫) ও দুই জীবন (১৯৮৮) চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য আরও দুটি বাচসাস পুরস্কার অর্জন করেন।

চলচ্চিত্রে অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি রাজনীতিতেও সক্রিয় ছিলেন। তিনি ২০০৮ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতিবিদ হিসেবে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং ২০১৪ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৭ সালে অমর একুশে গ্রন্থমেলায় তার আত্মজীবনীমূলক বই স্মৃতিটুকু থাক প্রকাশিত হয়।

প্রারম্ভিক জীবন

কবরী ১৯৫০ সালের ১৯শে জুলাই চট্টগ্রাম জেলার বোয়ালখালী উপজেলাতে জন্মগ্রহণ করেন।[৪] জন্মস্থান বোয়ালখালী হলেও শৈশব ও কৈশোর বেড়ে ওঠা চট্টগ্রাম নগরীতে। তার আসল নাম মিনা পাল। পিতা শ্রীকৃষ্ণ দাস পাল এবং মা শ্রীমতি লাবণ্য প্রভা পাল। ১৯৬৩ সালে মাত্র ১৩ বছর বয়সে তিনি নৃত্যশিল্পী হিসেবে মঞ্চে কাজ শুরু করেন।[৫]

কর্মজীবন

সুতরাং চলচ্চিত্রে সুভাষ দত্তের সাথে কবরী (১৯৬৪)

কবরীর চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে ১৯৬৪ সালে সুভাষ দত্তের পরিচালনায় সুতরাং চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে।[৬] তিনি জরিনা চরিত্রে অভিনয় করেন। সুরকার সত্য সাহা সুভাষ দত্তকে তার খোঁজ দেন। কবরীর ছবি দেখে দত্ত তাকে পছন্দ করেন এবং তাকে অডিশনের জন্য চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় ডেকে পাঠান। কণ্ঠ ও সংলাপ পরীক্ষার পর দত্ত তাকে জরিনা চরিত্রের জন্য নির্বাচন করেন। এরপর দত্তের পরামর্শে চলচ্চিত্রটির লেখক সৈয়দ শামসুল হক তার নাম পরিবর্তন করে "কবরী" রাখেন।[৭] এরপর তিনি উর্দু ভাষায় জহির রায়হানের বাহানা (১৯৬৫) এবং খান আতাউর রহমানের সোয়ে নদীয়া জাগে পানি (১৯৬৮) চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন।

তার সঙ্গীতধর্মী লোককাহিনি নির্ভর সাত ভাই চম্পা (১৯৬৮) ব্যবসাসফল হয়। এটি ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউট-এর সেরা দশ বাংলাদেশী চলচ্চিত্র তালিকায় দশম স্থান লাভ করে।[৮] এই বছর আবির্ভাব (১৯৬৮) চলচ্চিত্রের রাজ্জাকের সাথে তার জুটি গড়ে ওঠে। এই জুটির জনপ্রিয়তা নিয়ে তিনি বলেন, "আমরা এমন আবেগ ঢেলে অভিনয় করতাম, ছবির প্রণয় দৃশ্যগুলো হয়তো খুবই স্বাভাবিক এবং জীবন্ত হয়ে উঠতো।"[৩] এই বছর তার অভিনীত অন্যান্য চলচ্চিত্র হল বাঁশরী, অরুণ বরুণ কিরণমালা, শীত বসন্তচোরাবালি। ১৯৬৯ সালে তার মুক্তিপ্রাপ্ত প্রথম চলচ্চিত্র পারুলের সংসার। এই বছর রাজ্জাকের বিপরীতে কাজী জহিরের ময়না মতিনারায়ণ ঘোষ মিতার নীল আকাশের নীচে জনপ্রিয়তা অর্জন করে। এই সাফল্যের ধারাবাহিকতায় পরের বছর তারা ক খ গ ঘ ঙ, দর্প চূর্ণ, কাঁচ কাটা হীরে, ও দীপ নেভে নাই চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। ১৯৭০ সালে তিনি কাজী জহিরের পরিচালনায় মীনা নামে একটি উর্দু চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেন।

তিনি লালন ফকির (১৯৭২) চলচ্চিত্রে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে বাচসাস পুরস্কার অর্জন করেন।[৯] ঋত্বিক ঘটকের পরিচালনায় তিতাস একটি নদীর নাম (১৯৭৩)-এর রাজার ঝি চরিত্রটি তার অন্যতম সমাদৃত কাজ।[৩] এটি ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউট-এর সেরা দশ বাংলাদেশী চলচ্চিত্র তালিকায় শীর্ষ স্থান লাভ করে।[৮] ১৯৭৫ সালে তার মুক্তিপ্রাপ্ত প্রথম চলচ্চিত্র সুজন সখী। এই চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে তার দ্বিতীয় বাচসাস পুরস্কার অর্জন করেন।[১০] ১৯৭৮ সালে তিনি কথাসাহিত্যিক শহীদুল্লা কায়সারের সারেং বউ উপন্যাস অবলম্বনে আবদুল্লাহ আল মামুনের নির্মিত একই নামের (১৯৭৮) চলচ্চিত্রে নবিতুন চরিত্রে অভিনয় করে সমাদৃত হন এবং এই কাজের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও বাচসাস পুরস্কার অর্জন করেন।[১১] ১৯৭৮ সালে তিনি আবদুল্লাহ আল মামুনের দুই জীবন (১৯৮৮) চলচ্চিত্রে অভিনয়ের আরেকটি বাচসাস পুরস্কার অর্জন করেন।[১২]

রাজনৈতিক জীবন

তিনি ২০০৮ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতিবিদ হিসেবে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন[৫] এবং ২০১৪ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।

ব্যক্তিগত জীবন

কবরী প্রথমে চিত্ত চৌধুরীকে বিয়ে করেন। সম্পর্ক বিচ্ছেদের পর ১৯৭৮ সালে তিনি সফিউদ্দীন সরোয়ারকে বিয়ে করেন। ২০০৮ সালে তাঁদেরও বিচ্ছেদ হয়ে যায়। কবরী পাঁচ সন্তানের মা ছিলেন।[২] ২০১৭ সালে অমর একুশে গ্রন্থমেলায় তার আত্মজীবনীমূলক বই ‘স্মৃতিটুকু থাক’ প্রকাশিত হয়।

মৃত্যু

কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ১৩ দিনের মাথায়, ২০২১ সালের ১৭ এপ্রিল রাত ১২টা ২০ মিনিটে ঢাকার শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।[২]

চলচ্চিত্র তালিকা

পুরস্কার

বছর পুরস্কার বিভাগ চলচ্চিত্র ফলাফল
১৯৭৩ বাচসাস পুরস্কার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী লালন ফকির বিজয়ী
১৯৭৫ বাচসাস পুরস্কার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী সুজন সখী বিজয়ী
১৯৭৮ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী সারেং বৌ বিজয়ী
বাচসাস পুরস্কার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী সারেং বৌ বিজয়ী
১৯৮৮ বাচসাস পুরস্কার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী দুই জীবন বিজয়ী
২০০৮ বাচসাস পুরস্কার সম্মাননা পুরস্কার বিজয়ী
২০০৯ বাচসাস পুরস্কার আজীবন সম্মাননা বিজয়ী
২০১৩ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার আজীবন সম্মাননা বিজয়ী

তথ্যসূত্র

  1. "সারাহ বেগম কবরী | মতামত"বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। ২৩ জুন ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ১৬ এপ্রিল ২০২১ 
  2. প্রতিবেদক, বিনোদন। "সিনেমার 'মিষ্টি মেয়ে' কবরী মারা গেছেন"দৈনিক প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-১৬ 
  3. অতন্দ্রিলা, অর্চি (১৯ অক্টোবর ২০১১)। "এ সপ্তাহের সাক্ষাতকার"বিবিসি বাংলা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ এপ্রিল ২০২১ 
  4. "চিত্রনায়িকা কবরীর জন্মদিন আজ"একুশে টিভি ডট কম। ১৯ জুলাই ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ১৭ এপ্রিল ২০২১ 
  5. আব্দুল হাই, হোসাইন (২৩ নভেম্বর ২০১১)। "বিশ্ববাসীর কাছে মুক্তিযুদ্ধের চিত্র তুলে ধরেছিলেন কবরী"ডয়চে ভেলে। সংগ্রহের তারিখ ১৭ এপ্রিল ২০২১ 
  6. "অভিনেত্রী কবরীর ৫০ বছর"দৈনিক প্রথম আলো। জুন ৪, ২০১৪। 
  7. "মীনা পাল থেকে যেভাবে কবরী"দৈনিক প্রথম আলো। ১৭ এপ্রিল ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ১৭ এপ্রিল ২০২১ 
  8. "Top 10 Bangladeshi Films"ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউট। ১৭ জুলাই ২০০৭। ২৭ মে ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ এপ্রিল ২০২১ 
  9. জোয়াদ ২০১০, পৃ. ৪৭৩।
  10. জোয়াদ ২০১০, পৃ. ৪৭৩-৪৭৪।
  11. জোয়াদ ২০১০, পৃ. ৪৭৪-৪৭৫।
  12. জোয়াদ ২০১০

গ্রন্থপঞ্জি

  • জোয়াদ, আবদুল্লাহ (২০১০)। বাংলাদেশের চলচ্চিত্র: পাঁচ দশকের ইতিহাস। ঢাকা: জ্যোতিপ্রকাশ। আইএসবিএন 984-70194-0045-9 |আইএসবিএন= এর মান পরীক্ষা করুন: invalid prefix (সাহায্য) 

বহিঃসংযোগ