আবুল হোসেন (লালমনিরহাটের রাজনীতিবিদ): সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Nabil আবুল হোসেন (রাজনীতিবিদ) পাতাটিকে আবুল হোসেন (লালমনিরহাটের রাজনীতিবিদ) শিরোনামে কোনো পুনর্নির্দেশনা ছাড়াই স্থানান্তর করেছেন: দ্ব্যর্থ‌তা নিরসন
সম্প্রসারণ
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{একই নামের|আবুল হোসেন (দ্ব্যর্থ‌তা নিরসন)}}{{তথ্যছক পদস্থ কর্মকর্তা
{{একই নামের|আবুল হোসেন (দ্ব্যর্থ‌তা নিরসন)}}{{তথ্যছক পদস্থ কর্মকর্তা
| name = আবুল হোসেন
| name = আবুল হোসেন
| constituency_MP = রংপুর-১৪
| constituency_MP = [[রংপুর-১৪]]
| term_start = ১৯৭৩
| term_start = ১৯৭৩
| term_end = ১৯৭৫
| term_end = ১৯৭৫
| predecessor = ''আসন প্রতিষ্ঠিত''
| predecessor = ''আসন প্রতিষ্ঠিত''
| successor = [[তাজুল ইসলাম চৌধুরী]]
| successor = [[তাজুল ইসলাম চৌধুরী]]
| constituency_MP1 = [[লালমনিরহাট-৩]]
| constituency_MP1 = [[লালমনিরহাট-৩]]
| term_start1 = ১৯৮৬
| term_start1 = ১৯৮৬
| term_end1 = ১৯৮৮
| term_end1 = ১৯৮৮
| predecessor1 = ''আসন প্রতিষ্ঠিত''
| predecessor1 = ''আসন প্রতিষ্ঠিত''
| successor1 = রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ
| successor1 = রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ
| birth_date = {{circa|১৯৩৫}}
| birth_date = {{circa|১৯৩৫}}
| death_date = ১৬ ডিসেম্বর ২০১৬ (বয়স ৮১)
| death_date = ১৬ ডিসেম্বর ২০১৬ (বয়স ৮১)
| party = [[বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ]]
| party = [[বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ]]
}}
}}

০৯:৩০, ২৮ জানুয়ারি ২০২১ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

আবুল হোসেন
রংপুর-১৪ আসনের
সংসদ সদস্য
কাজের মেয়াদ
১৯৭৩ – ১৯৭৫
পূর্বসূরীআসন প্রতিষ্ঠিত
উত্তরসূরীতাজুল ইসলাম চৌধুরী
লালমনিরহাট-৩ আসনের
সংসদ সদস্য
কাজের মেয়াদ
১৯৮৬ – ১৯৮৮
পূর্বসূরীআসন প্রতিষ্ঠিত
উত্তরসূরীরিয়াজ উদ্দিন আহমেদ
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্মআনু. ১৯৩৫
মৃত্যু১৬ ডিসেম্বর ২০১৬ (বয়স ৮১)
রাজনৈতিক দলবাংলাদেশ আওয়ামী লীগ

আবুল হোসেন (আনু. ১৯৩৫ – ১৬ ডিসেম্বর ২০১৬) বাংলাদেশের লালমনিরহাট জেলার একজন মুক্তিযোদ্ধা ও রাজনীতিবিদ ছিলেন। তিনি একজন সাংসদ ছিলেন।

জীবনী

পতাকা হাতে আবুল হোসেন

আবুল হোসেন মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ছিলেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একজন একনিষ্ঠ অনুসারি হিসেবে তিনি আজীবন অসাম্প্রদায়িক চেতনার প্রতি বিশ্বস্ত থেকে গণমানুষের মুক্তির লড়াইয়ে সাহসিকতার সাথে উত্তরাঞ্চলের সকল আন্দোলন ও সংগ্রামে নেতৃত্ব প্রদান করেছেন। তিনি ১৯৭০ সনে পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে ৬নং সেক্টরে সাহসিকতার সাথে মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে গঠিত বাংলাদেশ সরকারের নির্দেশনা, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ, যুদ্ধ পরিচালনা ও মুক্তাঞ্চলে প্রশাসন পরিচালনায় অবিস্মরণীয় অবদান রেখেছিলেন। তিনি ৬ দফা আন্দোলন, ভাষা আন্দোলনবাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণসহ তৎকালীন সকল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। ১৯৭০ সালে পাকিস্তান গণপরিষদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন।[১] তিনি ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন।[২] দেশ স্বাধীনের পর তিনি ১৯৭৩ সালে রংপুর-১৪ আসনের সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত হন।[৩] এরপর, ১৯৮৬ সালে তিনি লালমনিরহাট-৩ আসনের সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন।[৪]

তিনি লালমনিরহাট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং পর পর তিনবার চেম্বারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। তিনি দু’বার এফবিসিসিআই এর পরিচালনা পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির সর্বোচ্চ পদ ভাইস চেয়ারম্যান হিসাবে নেতৃত্ব প্রদান করেন।

আবুুল হোসেন ১৯৩৫ সালের ৪ এপ্রিল লালমনিরহাট শহর সংলগ্ন নামাটারি গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা আলহাজ্জ্ব কছিম উদ্দিন এবং মাতা মোছাঃ আছমা খাতুন।

১৯৫৩ সালে তিনি লালমনিরহাট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (মডেল হাই স্কুল) থেকে প্রবেশিকা, জগন্নাথ কলেজে, ঢাকা থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং লালমনিরহাট কলেজ থেকে বি.এ. পাশ করেন।

তার রয়েছে সুদীর্ঘ বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন। একজন সৎ, নিষ্ঠাবান ও ত্যাগী রাজনৈতিক নেতা হিসেবে তিনি সকল মহলে স্বীকৃত। আবুল হোসেন ঢাকায় জগন্নাথ কলেজে ছাত্রাবস্থায় ষাটের দশকের সূচনালগ্নে আইয়ুব খানের সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় কর্মী হিসেবে তাঁর প্রত্যক্ষ সংগ্রামী জীবনের সূচনা করেছিলেন। এর ফলে অন্যান্য ছাত্র নেতাদের সাথে তাঁর নামেও হুলিয়া জারি করলে তিনি লালমনিরহাট ফিরে গিয়ে লালমনিরহাট কলেজে ভর্তি হন এবং কলেজ ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ভিপি নির্বাচিত হন। পরবর্তিকালে জাতীয় পর্যায়ে ষাটের দশকের সামরিক স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন, শিক্ষার দাবি ও অধিকার অর্জন এবং অসাম্প্রদায়িক চেতনা, গণতন্ত্র ও জাতীয় অধিকার প্রতিষ্ঠার সকল আন্দোলনসহ ৬ দফা, ১১ দফা, ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান ও মহান মুক্তিযুদ্ধসহ সকল আন্দোলন সংগ্রামে লালমনিরহাট-কুড়িগ্রাম অঞ্চলে নেতৃত্ব দেন। এসময় তিনি কড়িগ্রাম মহকুমা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। অতঃপর বঙ্গবন্ধুর আদেশে সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক হিসেবে তিনি সাহসিকতারসাথে জনগণকে মুক্তিযুদ্ধের জন্য সংগঠিত করেন। লালমনিরহাটের ছাত্র আন্দোলনের একজন নিষ্ঠাবান কর্মী হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং অন্যান্য জাতীয় নের্তৃবৃন্দের ঘনিষ্ঠতা ও বিশেষ স্নেহ লাভের সৌভাগ্য হয়েছিল তাঁর।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি একজন মুক্তিযুুদ্ধের সক্রিয় সংগঠক হিসেবে লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রাম জেলার মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতে আশ্রয় নিয়ে প্রবাসী মুজিবনগর সরকারের অধীনে তাঁর নির্বাচনী এলাকাসহ কুড়িগ্রাম মহকুমার বিভিন্ন এলাকার মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্বুদ্ধকরণ, নিয়োগ দান, ট্রেনিং-এর ব্যবস্থা, অর্থ ও অস্ত্র সংগ্রহ করেন এবং শরনার্থীদের ক্যাম্পে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা  করেন। কুচবিহার জেলার দিনহাটা মহকুমার ১৯টি ক্যাম্প থেকে কয়েক  হাজার যুবককে সংগ্রহ করে উচ্চতর ট্রেনিং এর জন্য ভারতের বিভিন্ন ক্যাম্পে প্রেরণ করেন। তার তদারকীতে ও প্রত্যয়নে গিতালদহ, ওকড়াবাড়ি ও দিনহাটার করোলা অঞ্চলে একটি ও সাহেবগঞ্জে একটি ইয়থ ক্যাম্প সুষ্ঠভাবে পরিচালনা করে বিপুল সংখ্যক তরুণকেমুক্তিযুদ্ধে সম্পৃক্ত করেন।

১৯৭০ সালের ১৭ ডিসেম্বর প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে রংপুর-১৪ আসন (লালমনিরহাট) আবুল হোসেন প্রাদেশিক পরিষদ-এর সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুর-১৪ আসনে (লালমনিরহাট) আবুল হোসেন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৮৬ সালের ৭ মে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রার্থী হিসেবে লালমনিরহাট-৩ আসনে (লালমনিরহাট সদর) তৎকালীন জাতীয় পার্টির ডেপুটি স্পীকার রেয়াজউদ্দীন আহম্মদ (ভোলামিয়া) কে পরাজিত করে আবুল হোসেন তৃতীয়বারের মত সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

আবুল হোসেন বঙ্গবন্ধুর একজন পরিক্ষিত আদর্শের সৈনিক হিসেবে দেশ মাতৃকার ডাকে সাড়াদিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের সফল সংগঠক হিসেবে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্বুদ্ধকরণ, নিয়োগ দান, ট্রেনিং-এর ব্যবস্থা, অর্থ ও অস্ত্র সংগ্রহ করেন এবং শরনার্থীদের ক্যাম্পে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা  করেন। এত কিছুর পরেও কুড়িগ্রাম ট্রেজারি ভেঙ্গে সাতান্ন বস্তা টাকা, ও ঊনত্রিশ বাক্স সোনা সংগ্রহ করে ভারত সরকারের মাধ্যমে মুজিবনগর সরকারের হাতে তুলে দিয়ে যুদ্ধ পরিচালনার জন্য তিনি যে অবদান রাখেন তা অবিস্মরণীয়। ঘটনাটি ঘটে ১৯৭১ সালের ১৮ এপ্রিল।

বিবরণ:

১৮ এপ্রিল, ১৯৭১। তখন চারদিকে সশস্ত্র যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। হাজার হাজার নিরপরাধ বাঙালির তাজা রক্তে বাংলাদেশ হাবুডুবু খাচ্ছে। মাত্র ১ দিন আগে অর্থাৎ ১৭ এপ্রিল মেহেরপুরের আম্রকাননে গঠিত হয়েছে বিপ্লবী মুজিব নগর সরকার। পাকবাহিনী দেশজুড়ে একের পর এক শহর-বন্দর জনপদ দখল করে নিচ্ছে আর আধুনিক অস্ত্রে প্রশিক্ষিত বিশ্বের সেরা পাকিস্তানী সেনারা নৃশংসভাবে বাঙ্গালীদের উপর হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে। এ সময় কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের তরুণ সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন এমপিএ মুক্তিযুদ্ধের সশস্ত্র প্রস্তুতিসহ কার্যকর প্রতিরোধ গড়তে একখানা পয়েন্ট টু টু বোর রাইফেল ঘাড়ে ঝুলিয়ে ৯০ সিসি হোন্ডা মোটর সাইকেলে ছুঁটে বেরুচ্ছেন ভুরুঙ্গামারি থেকে লালমনিরহাট পর্যন্ত। তখনও কুড়িগ্রামে পাক বাহিনী ঢুকতে পারেনি। সে সময় কুড়িগ্রামের সাথে লালমনিরহাট ও রংপুরের একমাত্র যোগাযোগের মাধ্যম ছিল রেলপথ। আবুল হোসেনের নেতৃত্বে রাজারহাট স্টেশনে রেললাইনের উপরে মালবাহী ট্রেন উল্টে লাইন উপরে দিয়ে একমাত্র যোগাযোগটি বিচ্ছিন্ন করা হয়।

পরদিন সকালে টু টু বোর রাইফেল আর গাদা বন্দুক হাতে আবুল হোসেন অন্যান্য নেতৃবৃন্দ ও বাছাই করা কিছু ছাত্র জনতাকে সাথে নিয়ে জমায়েত হলেন নিউ কুড়িগ্রাম ট্রেজারির সামনে। পাহারাদারদের বন্দুকের মুখে বন্দী করে হাতুড়, গাইতি আর শাবল দিয়ে ট্রেজারির শক্তিশালী লকার ভেঙ্গে ফেলেন। এমনি সময় খবর এলো পাকবাহিনী সেনারা রেললাইন মেরামত করে আজই কুড়িগ্রামে ঢুকছে। দেশ-মাতৃকার মুক্তির শপথে উজ্জীবিত ‘বাঙালি সন্তানরা আরও দ্রুততার সাথে’ জয় বাংলা শ্লোগানে চারদিকে প্রকম্পিত করে ট্রেজারি ভেঙ্গে টাকার স্তুপগুলো সাতান্নটি গমের বস্তায় ভরলেন। সেফ ভল্ট থেকে সোনাদানা ও কয়েন জাতীয় দ্রব্যাদি ঊনত্রিশটি কাঠের বাক্সে ভরে পেরেক দিয়ে মুখ বন্ধ করে ফেলেন। এরপর ১৭ খানা গরুর গাড়ি ভাড়া করে সমস্ত মালামাল পনেরটি গাড়িতে তোলেন। সামনের ছই দিয়ে ঢাকা গাড়িতে টু টু বোর রাইফেল হাতে আবুল হোসেন এবং পেছনের গাড়িতে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের যুবক দ্বারা নিরাপত্তা বেষ্টনীর মাধ্যমে ধরলা নদী পার হয়ে নাগেশ্বরী হয়ে ভূরঙ্গামারী সীমান্ত দিয়ে ভারতে চলে যান।

ভারতের কংগ্রেস ও কমিউনিস্ট নেতৃবৃন্দের সহায়তায় দু’খানা ট্রাক ভাড়া করেন এবং সমস্ত মাল বোঝাই করে কুচবিহার ডিসি অফিসে গিয়ে ডিসি সাহেবের নিকট রিপোর্ট করেন। তাৎক্ষণিকভাবে ডিসি মহোদয় কলকাতা ও দিল্লিতে যোগাযোগ করেন এবং স্থানীয় এমপি বিনয় কৃষ্ণদাস চৌধুরীকে সম্পৃক্ত করে সেভ কাস্টডি কুচবিহার ট্রেজারিতে মালামাল সংরক্ষণ করেন। মালামাল আনলোড করে ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট ও এমপি বিনয় চৌধুরীর উপস্থিতিতে টাকা ও সোনা হিসাব করে দেখা গেল সেখানে মোট টাকার পরিমান ১.৪০ কোটি এবং স্বর্ণের পরিমাণ প্রায় ১৫ কেজি। সমস্ত বস্তা ও সোনার বাক্স সরকারি বিধান মতে বিনয়কৃষ্ণ দাস চৌধুরী এমএলএ ও আবুল এমপিএ-এর যৌথ স্বাক্ষরে মাজহার হোসেন চৌধুরী এমএনএ, আবদুল হাকিম এমপিএ এবং শামসুল হুদা চৌধুরী এমপিএ-এর উপস্থিতিতে সিলগালা করে পরদিন ২০ এপ্রিল ১৯৭১ তারিখে কুচবিহার ট্রেজারিতে জমা দেয়া হয়।

আবুল হোসেন কুড়িগ্রামের এমএনএ এবং এমপিএদের সাথে গোপনে পরামর্শ করে মে মাসের প্রথম দিকে কালকাতার ৮ থিয়েটার রোডে প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমেদের সাথে দেখা করে তাঁকে সব ঘটনা অবহিত করে ট্রেজারিতে অর্থ সম্পদ জমা দেয়ার ডকুমেন্টস হস্তান্তর করেন। প্রধানমন্ত্রী এ অভাবনীয় সাফল্যে উল্লসিত ও আবেগ আপ্লুত হয়ে আবুল হোসেনকে জড়িয়ে ধরে মুক্তিযুদ্ধের তহবিল সংগ্রহের জন্য এরূপ একটি প্রশংসনীয় কাজের জন্য আবুল হোসেন তথা লড়াকু এ যোদ্ধাদের অভিনন্দিত করেন। তিনি ঐ মুহূর্তের প্রচন্ড অর্থকষ্টের কথা উল্লেখ করে জানালেন, যে মুহূর্তে বিপ্লবী সরকারের কাগজ কেনার পয়সার সংকট সে মুহূর্তে এ অনন্য নগদ অর্থের সংস্থান মুক্তিযুদ্ধকে গতিশীল করবে। তিনি জানালেন যে, যত দ্রæত সম্ভব তিনি ভারত সরকারের সাথে বিষয়টি দ্রুত যোগাযোগ করে অর্থের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করবেন।

ভারতের কুচবিহারের ট্রেজারিতে রাখা উক্ত টাকা ও সোনা বিপ্লবী সরকারের কাছে হস্তান্তর প্রক্রিয়াটি ছিল বেশ জটিল এবং তা ফেরত আনার ক্ষেত্রে আবুল হোসেনের ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ।

বাংলাদেশ সরকারের ট্রেড বোর্ডের প্রেসিডেন্ট মতিউর রহমান, মুক্তিযুদ্ধের নর্দান জোনের জোনাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটর ফয়েজুদ্দিন আহাম্মদকে  জানালেন যে, ট্রেজারিতে জমাকৃত অর্থ সম্পদগুলো হস্তান্তরের বিষয়ে বিপ্লবী সরকারের সাথে ভারত সরকারের আলোচনা হয়েছে। যেহেতু জমাকৃত অর্থ সম্পদগুলো বিনয়কৃষ্ণ দাস চৌধুরী এমএলএ ও আবুল এমপিএ-এর যৌথ স্বাক্ষরে রাখা হয়েছে তাই টাকা উত্তোলনের জন্য ভারতের লোকসভা সদস্য বিনয় কৃষ্ণ চৌধুরীর লেটার অব অথরিটির প্রয়োজন যা অন্য স্বাক্ষরদাতা আবুল হোসেনের সত্যায়িত হতে হবে।

যেহেতু আবুল হোসেন এমপিএ ছাড়া অর্থ সম্পদগুলো হস্তান্তর করা সম্ভব নয় তাই ট্রেড বোর্ডের প্রেসিডেন্ট মতিউর রহমান নর্দান জোনের অ্যাডমিনিস্ট্রেটর ফয়েজুদ্দিন আহাম্মদকে  যাতায়াতের খরচসহ আবুল হোসেন এমপিএকে দ্রæত কোলকাতা পাঠানোর নির্দেশ দেন। ফয়েজুদ্দিন আহাম্মদ জরুরি ম্যাসেজ দিয়ে আবুল হোসেনকে কুচবিহারে এনে একটি পত্র যার স্মারক নং ১৩৩ (৩) তাং- ২৬/৭/৭১ ও ১৫০ ভারতীয় টাকা পথখরচসহ কোলকাতা পাঠান। আবুল হোসেন কালক্ষেপণ না করে কলকাতা গিয়ে মতিউর রহমান সাহেবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলে তিনি আবুল হোসেন এমপিএ-কে পথখরচ দিয়ে দিল্লী পাঠান।


২ আগস্ট ২৯৭১ তারিখে তিনি দিল্লী পৌঁছে ১০০/= ভাড়ায় লোধি হোটেলের ৫৯ নম্বর কক্ষে উঠেন। তখন লোক সভার জরুরি অধিবেশন চলছিল। আবুল হোসেন পার্লামেন্ট ভবনে গিয়ে সাংসদ বিনয় কৃষ্ণ দাস চৌধুরীর সাথে দেখা করে কুচবিহার ট্রেজারি থেকে অর্থ-সম্পদ উত্তোলনের লেটার অব অথরিটি নিয়ে ৮ আগস্ট ১৯৭১ কলকাতা ফিরে আসেন এবং প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহম্মদের নিকট হস্তান্তর করেন। প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহম্মদ তাৎক্ষনিকভাবে অর্থসচিব কেএ জামানকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ প্রদান করলে তিনি প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে স্মারক নং ঋওঘ/১৫(১),  তারিখ: ০৯ আগস্ট, ১৯৭১ মোতাবেক একটি পত্র  আবুল হোসেনের মাধ্যমে নর্দান প্রশাসক ও কুচবিহারের জেলা প্রশাসকের নিকট প্রেরণ করেন। আবুল হোসেন উক্ত পত্র নিয়ে নর্দান প্রশাসক ও কুচবিহারের জেলা প্রশাসকের সাথে সাক্ষাৎ করলে পরবর্তী কয়েক দিনের মধ্যেই ট্রেজারি থেকে টাকার বস্তা আর সোনার বাক্সগুলো উত্তোলন করে চার্টার প্লেনে করে বিপ্লবী সরকারের নিকট হস্তান্তর করা হয়। উক্ত অর্থ সম্পদগুলো বাংলাদেশ সরকাররের মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছিল বলে নির্দ্বিধায় বলা যায়।

৭১-এ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়কে সমৃদ্ধশালী করতে তথা মুক্তিযুদ্ধের তহবিল গঠনে আবুল হোসেন জীবনের ঝুকি নিয়ে যে বীরত্বপূর্ণ কাজ করেছিলেন তা বাঙ্গালী জাতি চিরদিন শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে।

১৯৭০- ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত তিনি কুড়িগ্রাম মহকুমা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮০-২০০৭ সাল পর্যন্ত তিনি লালমনিহাট আওয়ামী লীগের জেলা কমিটির সভাপতি হিসেবে দুঃসাহসীকতার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। এ সময় তিনি জিয়া সরকার ও এরশাদ সরকারের বিরেুদ্ধে দূর্বার গণআন্দোলন গড়ে তোলেন। জনগণকে সংগঠিত করে জাতির জনক হত্যাকান্ডেরর বিচারে গণজাগরণ সৃস্টি করেন।

তাঁর নেতৃত্বে লালমনিরহাট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি প্রতিষ্ঠিত হয়। তিনি এ প্রতিষ্ঠানে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৭২-১৯৭৪ সাল পর্যন্ত রেডক্রিসেন্ট, কুড়িগ্রাম ইউনিটের সভাপতি এবং ২০০৮ সালে বাংলাদেশ জাতীয় রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির ভাইস চেয়ারম্যন পদে আসিন ছিলেন। এছাড়া তিনি ১৯৮০-১৯৮২ পর্যন্ত এফবিসিসিআই এর স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

আবুল হোসেন ২০১৬ সালের ১৬ ডিসেম্বর ৮১ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।[৫][৬][৭]

Abul Hossain, also known as ‘MP Abul’, ‘MP Shaheb’ and/or ‘Abul Vai’, has been a significant name in the history of Bangladesh politics. Being an ardent follower of Bangabandhu Sheikh Mujibar Rahman, Bengali nationalism, one of the organizers of our liberation war, a versatile political figure, and a law maker,


Leading an altruistic life, possessing patience, courage and above all strong patriotic sense have featured Abul Hossain a distinguished person across Bangladesh. His excellence as a former Member of Parliament for three terms of both East Pakistan and Bangaldesh Jatiya Shangshad (National Parliament) is such a “noble man” who undoubtedly comparable with a genuine great leader both in theoretical and practical aspects. Indeed, he was born to serve others, rather to be served, to sacrifice whole life for the “have-nots and unprivileged-marginalized people”. He disliked in leading an extreme bourgeois relaxed life and his demand was purely for the peace of masses ignoring materialistic gain for him. Such simplistic way of and attitude towards life has made him still respected and retained in the hearts of the general people. He will be adored and remembered forever-even after his departure (natural law) owing to his values and principles which he fostered lifelong since his toddler. Indeed, he is a symbol of our pride, our national inspiration and socio-political pathfinder to lead a prosperous state. Hence, it is important to know more about Abul Hossain and his role in our liberation war.

Mr.Abul Hossain (former Law Maker) was an incredible and legendary fighter in our glorious liberation war of 1971. In retrospect, since his schooling, he was actively involved in Chatra League (Student League) politics under the charismatic leadership of our great leader and Father of the Nation, Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman. He was an elected Vice-President (VP) of Lalmonirhat College Student Union in the academic session of 1965 – 1966 under the panel of “Abul-Shahidullah-Monowara Pasha”. Afterwards, he left for Jagannath College in Dhaka for higher studies where he strongly involved in politics of Chatra League. During his involvement in Chatra League, Mr. Hossain was a very close associate of ASM Abdur Rob, Shajahan Siraj, Abdul Quddus Makhon and Tofael Ahmed who were known four veterans Caliph of that period in Chatra League politics. Mr. Abul Hossain actively participated in different political agitations in Dhaka against General Ayub Khan regime under the leadership of Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman. Consequently, the Pakistani military ruler accused him along with other students’ political leaders. He was thrown into the Dhaka Central Jail. After getting release from the jail, he was bound to return to his own town (Lalmonirhat). Upon completing his Intermediate Education from Jagannath College, he took admission in  Lalmonirhat College for graduation.

Mr. Abul Hossain concentrated his full energies to strengthen the Awami League (AL) in Lalmonirhat and its nrighbouring areas. His involvement in AL politics was influenced by his father, Alhaz Kasimuddin Ahmed, who, himself was also a pioneeer organiser of East Pakistan AL. He circulated the basic political ideologies and policies of Sheikh Mujibur Rahman among the masses. He actively got involved in local politics to spark out the AL’s policies.  He was a successful organiser and veteran motivator as well as his charismatic leadership convinced the general people within a short span of time to be united under the banner of AL. The Chatra League and the AL of Kurigram and Lalmonirhat districts became ever stronger and united due to his tireless efforts. After the declaration of “Six Points” movement on 6th February 1966 at Lahore with a view to ascertain our political right by Bangabandhu, Mr. Hossain vividly spread out this programmes like “Magna Carta[1]” within the nearest districts for our survival.

He vigorously protested against the “Agortala Conspiracy Case” which was filed against Sheikh Mujib and his closest veteran Associates of the AL. After the election of 1970, the West-Pakistani military dictators were absolutely unwilling to handover state-power to the AL Mr. Abul Hossain was one of the veteran winning candidates among them from the constituency of Rangpur – 14 (Kurigram - Lalmonirhat). After being failed in so called negotiations with the Pakistani dictators, Sheikh Mujibur Rahman gave a historic speech on 7th March 1971 at the Ramna Race Course Maidan in Dhaka the Bangali people were inspired to prepare for a potential war of independence, amid widespread reports of armed mobilization by West Pakistan. Bangabandhu Sheikh MujiburRahman’s historic speech of 7th March, 1971 has effectively been selected as one of the most stimulating and inspirational wartime speeches in an international book written by Jacob F. Field (2013). Bangabandhu’s speech has been placed on page 201 under the title of “The Struggle This Time Is the Struggle for Independence”. He also announced the civil disobedience movement in the province, calling for “every house to turn into a fortress”.


Afterwards, Mr. Hossain was fully frustrated but not politically demoralized because of the absence of our great leader Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman. The liberation war has already been started all around the country; the Bangalis were brutally killed in everywhere. In such a catastrophic situation, Mr.Hossain took an adventurous decision to collect a huge amount of currency and  gold from Kurigram Treasury in order to hand over those to the then Bangladesh government. During this time, he went off to India and met the central leaders of the AL and Indian political figures such as Fozle Haque (MLA) and Rajen Chatterji (MLA) at Cooch Behar. He also met with the District Commissioner (DC) of Cooch Behar and the Sub-Divisional Officer (SDO) of Dinhata on 6th April. He discussed with them regarding issues of shelter of Bangali refugees, their foods, medical treatment as well as training for the newly recruited Bangali young freedom fighters.


7.     Reference:

Ary, D., Jacobs, L. C., Irvine, C. K. S., & Walker, D. (2013). Introduction to research in education. Cengage Learning.

Atkinson, P., & Coffey, A. (2004). Analysing documentary realities. In Silverman. D. (Ed.), Qualitative research (pp. 78-92). London: SAGE.

থাম্ব Gay, L. R., & Airasian, P. (2003). Educational research: Competencies for analysis and applications (7th ed.). New Jersey: Merrill-Prentice Hall.

Kvale, S. (1996). Interviews. An introduction to qualitative research writing. Thousand Oaks: SAGE.

Ledger, S., Vidovich, L., & O'Donoghue, T. A. (2014). Global to local curriculum policy processes: The enactment of the International Baccalaureate in remote international schools. Heidelberg: Springer.

Marilyn, L. (2006). Qualitative Research in education: A user’s guide. Los Angeles; London; New Delhi; Singapore; Washington DC: SAGE.

Merriam, S. B. (1988). Case study research in education: A qualitative approach. Jossey-Bass.

Patton, M. Q. (2015). Qualitative research & research methods (4th ed.). Thousand Oaks: SAGE.

Yin, R. K. (2003). Case study research: Design and methods (3rd ed.). Los Angeles: SAGE.


তথ্যসূত্র

  1. "মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক সাবেক এমপি আবুল হোসেন-এর ইন্তেকাল রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন"লালমনিরহাট বার্তা। ১৭ ডিসেম্বর ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২ জানুয়ারি ২০২০ 
  2. "সাবেক এমপি আবুল হোসেনের মৃত্যুতে ডেপুটি স্পিকারের শোক"বাংলানিউজ২৪.কম। ১৬ ডিসেম্বর ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২ জানুয়ারি ২০২০ 
  3. "১ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)জাতীয় সংসদবাংলাদেশ সরকার। ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  4. "৩য় জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)জাতীয় সংসদবাংলাদেশ সরকার। ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  5. "লালমনিরহাট জেলা আ.লীগের সাবেক সভাপতি আবুল হোসেনের ইন্তেকাল"ইনকিলাব। ১৭ ডিসেম্বর ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২ জানুয়ারি ২০২০ 
  6. "সাবেক সংসদ সদস্য আবুল হোসেন আর নেই"বাংলা ট্রিবিউন। ১৭ ডিসেম্বর ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২ জানুয়ারি ২০২০ 
  7. "সাংসদ আবুল হোসেনকে স্মরণ"প্রথম আলো। ২২ জানুয়ারি ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ২ জানুয়ারি ২০২০