সুলতান সুলাইমান: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
→‎প্রথম সুলাইমান: বানান ঠিক করা হয়েছে
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল অ্যাপ সম্পাদনা অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ সম্পাদনা
Imonreza (আলোচনা | অবদান)
সম্পাদনা সারাংশ নেই
১৫২ নং লাইন: ১৫২ নং লাইন:


=== হুররেম সুলতানের সঙ্গে সম্পর্ক ===
=== হুররেম সুলতানের সঙ্গে সম্পর্ক ===
[[হুররেম সুলতান]] ( '''রোক্সেলানা''' হিসেবেও পরিচিত ) ছিলেন রুথেনিয় বংশোদ্ভূত উসমানীয় সম্রাট প্রথম সুলাইমানের প্রিয়তম প্রমোদ দাসী (উপপত্নী) ও পরবর্তীকালে তার বৈধ স্ত্রী এবং সম্রাটের সন্তান [[শাহজাদা মুহাম্মদ]], [[মিরহিমাহ সুলতান]], [[শাহজাদা আবদুল্লাহ]], [[দ্বিতীয় সেলিম|সুলতান দ্বিতীয় সেলিম]], [[শাহজাদা বায়েজিদ]] এবং [[শাহজাদা চিহাঙ্গির|শাহজাদা জাহাঙ্গীরের]] মাতা।<ref>[https://web.archive.org/web/20060615093437/http://www.4dw.net/royalark/Turkey/turkey4.htm The Imperial House of Osman] GENEALOGY</ref> হুররেম সম্ভবত কোন ইউক্রেনীয় অর্থোডক্স ধর্মযাজক পিতার ঘরে জন্ম নিয়েছিলেন।<ref name=speech>''The Speech of Ibrahim at the Coronation of Maximilian II'', Thomas Conley, ''Rhetorica: A Journal of the History of Rhetoric'', Vol. 20, No. 3 (Summer 2002), 266.</ref><ref>Kemal H. Karpat, ''Studies on Ottoman Social and Political History: Selected Articles and Essays'', (Brill, 2002), 756.</ref><ref name=Abbot>Elizabeth Abbott, ''Mistresses: A History of the Other Woman'', (Overlook Press, 2010), [http://books.google.com/books?id=_BXNakNnZ7AC&pg=PT39&dq=Mistresses:+A+History+of+the+Other+Woman+Roxelana+Orthodox+priest&hl=en&sa=X&ei=nX7gULnrFcy_2QXIu4D4CA&ved=0CDoQ6AEwAA].</ref> তিনি পোল্যান্ড রাজ্যের রুথেনীয় ভয়ভডেশিপের প্রধান শহর [[ল্বও]]-এর ৬৮ কিলোমিটার দক্ষিণপূর্বের রুহাটাইন নগরীতে জন্মগ্রহণ করেন (বর্তমান পশ্চিম [[ইউক্রেন]])।<ref name=Abbot/> ১৫২০-এর দশকে [[ক্রিমিয়ার তাতার]]রা ওই এলাকার একটি তড়িৎ অভিযানের সময় তাকে বন্দী করে একজন দাসী হিসেবে নিয়ে আসে (সম্ভবত প্রথমে ক্রিমিয়ার নগরী [[ফিওদসিয়া|কাফফায়]], যা দাস ব্যবসার একটি প্রধান কেন্দ্র, এরপর কনস্টান্টিনোপলে) এবং তাকে প্রথম সুলাইমানের হারেমের জন্য বাছাই করে।<ref name=speech/><ref name=Abbot/> তিনিই সুলতানের সর্বাধিক সংখ্যক সন্তানের জন্ম দেন, এবং আশ্চর্যজনকভাবে চিরায়ত প্রথা ভঙ্গ করে - তিনি দাসত্ব হতেও মুক্তি লাভ করেন। দুইশত বছরের অটোম্যান ঐতিহ্যকে ভঙ্গ করে,<ref name="Kinross236">Kinross, Patrick (1979). The Ottoman centuries: The Rise and Fall of the Turkish Empire. New York: Morrow. {{আইএসবিএন|978-0-688-08093-8}}. p, 236.</ref> একজন প্রাক্তন উপপত্নী এভাবে অবশেষে সুলতানের বৈধ পত্নী হয়ে ওঠে, যা প্রাসাদ ও নগরীর প্রত্যক্ষদর্শীদের জন্য অত্যন্ত হতবাককারী একটি বিষয় ছিল।<ref>Mansel, Phillip (1998). Constantinople : City of the World's Desire, 1453–1924. New York: St. Martin's Griffin. {{আইএসবিএন|978-0-312-18708-8}}. p, 86.</ref> এই ঘটনা সুলাইমানকে [[ওরহান গাজি]]র (১৩২৬- ১৩৬২) পর প্রথম দাসী বিবাহকারী সুলতানের পরিচয় এনে দেয় এবং প্রাসাদে হুররামের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করে, যার ফলশ্রুতিতে তার অন্যতম পুত্র [[দ্বিতীয় সেলিম]] ১৫৬৬ সালে সাম্রাজ্যের উত্তরাধিকার লাভ করেন।
[[হুররেম সুলতান]] ( '''রোক্সেলানা''' হিসেবেও পরিচিত ) ছিলেন রুথেনিয় বংশোদ্ভূত উসমানীয় সম্রাট প্রথম সুলাইমানের প্রিয়তম প্রমোদ দাসী (উপপত্নী) ও পরবর্তীকালে তার বৈধ স্ত্রী এবং সম্রাটের সন্তান [[শাহজাদা মেহমেদ]], [[মিহরিমাহ সুলতান]], [[শাহজাদা আবদুল্লাহ]], [[দ্বিতীয় সেলিম|সুলতান দ্বিতীয় সেলিম]], [[শাহজাদা বায়েজিদ]] এবং [[শাহজাদা চিহাঙ্গির|শাহজাদা জাহাঙ্গীরের]] মাতা।<ref>[https://web.archive.org/web/20060615093437/http://www.4dw.net/royalark/Turkey/turkey4.htm The Imperial House of Osman] GENEALOGY</ref> হুররেম সম্ভবত কোন ইউক্রেনীয় অর্থোডক্স ধর্মযাজক পিতার ঘরে জন্ম নিয়েছিলেন।<ref name=speech>''The Speech of Ibrahim at the Coronation of Maximilian II'', Thomas Conley, ''Rhetorica: A Journal of the History of Rhetoric'', Vol. 20, No. 3 (Summer 2002), 266.</ref><ref>Kemal H. Karpat, ''Studies on Ottoman Social and Political History: Selected Articles and Essays'', (Brill, 2002), 756.</ref><ref name=Abbot>Elizabeth Abbott, ''Mistresses: A History of the Other Woman'', (Overlook Press, 2010), [http://books.google.com/books?id=_BXNakNnZ7AC&pg=PT39&dq=Mistresses:+A+History+of+the+Other+Woman+Roxelana+Orthodox+priest&hl=en&sa=X&ei=nX7gULnrFcy_2QXIu4D4CA&ved=0CDoQ6AEwAA].</ref> তিনি পোল্যান্ড রাজ্যের রুথেনীয় ভয়ভডেশিপের প্রধান শহর [[ল্বও]]-এর ৬৮ কিলোমিটার দক্ষিণপূর্বের রুহাটাইন নগরীতে জন্মগ্রহণ করেন (বর্তমান পশ্চিম [[ইউক্রেন]])।<ref name=Abbot/> ১৫২০-এর দশকে [[ক্রিমিয়ার তাতার]]রা ওই এলাকার একটি তড়িৎ অভিযানের সময় তাকে বন্দী করে একজন দাসী হিসেবে নিয়ে আসে (সম্ভবত প্রথমে ক্রিমিয়ার নগরী [[ফিওদসিয়া|কাফফায়]], যা দাস ব্যবসার একটি প্রধান কেন্দ্র, এরপর কনস্টান্টিনোপলে) এবং তাকে প্রথম সুলাইমানের হারেমের জন্য বাছাই করে।<ref name=speech/><ref name=Abbot/> তিনিই সুলতানের সর্বাধিক সংখ্যক সন্তানের জন্ম দেন, এবং আশ্চর্যজনকভাবে চিরায়ত প্রথা ভঙ্গ করে - তিনি দাসত্ব হতেও মুক্তি লাভ করেন। দুইশত বছরের অটোম্যান ঐতিহ্যকে ভঙ্গ করে,<ref name="Kinross236">Kinross, Patrick (1979). The Ottoman centuries: The Rise and Fall of the Turkish Empire. New York: Morrow. {{আইএসবিএন|978-0-688-08093-8}}. p, 236.</ref> একজন প্রাক্তন উপপত্নী এভাবে অবশেষে সুলতানের বৈধ পত্নী হয়ে ওঠে, যা প্রাসাদ ও নগরীর প্রত্যক্ষদর্শীদের জন্য অত্যন্ত হতবাককারী একটি বিষয় ছিল।<ref>Mansel, Phillip (1998). Constantinople : City of the World's Desire, 1453–1924. New York: St. Martin's Griffin. {{আইএসবিএন|978-0-312-18708-8}}. p, 86.</ref> এই ঘটনা সুলাইমানকে [[ওরহান গাজি]]র (১৩২৬- ১৩৬২) পর প্রথম দাসী বিবাহকারী সুলতানের পরিচয় এনে দেয় এবং প্রাসাদে হুররামের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করে, যার ফলশ্রুতিতে তার অন্যতম পুত্র [[দ্বিতীয় সেলিম]] ১৫৬৬ সালে সাম্রাজ্যের উত্তরাধিকার লাভ করেন।
সুলায়মান বাকি জীবনে রাজসভাতেও হুররেমকে তার সাথে থাকতে দেন, যার ফলে আরেকটি প্রথা ভঙ্গ হয়, আর তা হল, যখন সাম্রাজ্যের উত্তরাধিকারীগণ উপযুক্ত বয়সে পৌঁছুবে, তাদেরকে তাদের রাজ উপপত্নীসহ (উত্তরাদিকারিদেরকে তাদের মাতাসহ) নিকটস্থ প্রদেশে শাসনের জন্য পাঠিয়ে দেয়া হবে, উক্ত উপপত্নীদের সন্তান ক্ষমতায় বসার আগ পর্যন্ত তারা ফিরে আসতে পারবে না।<ref>Imber, Colin (2002). The Ottoman Empire, 1300–1650 : The Structure of Power. New York: Palgrave Macmillan. {{আইএসবিএন|978-0-333-61386-3}}. p, 90.</ref> সুলতানের রাষ্ট্রীয় কার্যক্রম বিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবেও হুররেম ভূমিকা পালন করেছেন, এবং প্রতীয়মান হয় যে তিনি বৈদেশিক নীতি ও আন্তর্জাতিক রাজনীতিতেও প্রভাব রেখেছিলেন।<ref name=Ayse>{{ওয়েব উদ্ধৃতি |শিরোনাম=Ayşe Özakbaş, Hürrem Sultan, Tarih Dergisi, Sayı 36, 2000 |ইউআরএল=http://www.iudergi.com/tr/index.php/tarih/article/download/3733/3385 |সংগ্রহের-তারিখ=৯ ডিসেম্বর ২০১৫ |আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20120113000232/http://www.iudergi.com/tr/index.php/tarih/article/download/3733/3385 |আর্কাইভের-তারিখ=১৩ জানুয়ারি ২০১২ |অকার্যকর-ইউআরএল=হ্যাঁ }}</ref>
সুলায়মান বাকি জীবনে রাজসভাতেও হুররেমকে তার সাথে থাকতে দেন, যার ফলে আরেকটি প্রথা ভঙ্গ হয়, আর তা হল, যখন সাম্রাজ্যের উত্তরাধিকারীগণ উপযুক্ত বয়সে পৌঁছুবে, তাদেরকে তাদের রাজ উপপত্নীসহ (উত্তরাদিকারিদেরকে তাদের মাতাসহ) নিকটস্থ প্রদেশে শাসনের জন্য পাঠিয়ে দেয়া হবে, উক্ত উপপত্নীদের সন্তান ক্ষমতায় বসার আগ পর্যন্ত তারা ফিরে আসতে পারবে না।<ref>Imber, Colin (2002). The Ottoman Empire, 1300–1650 : The Structure of Power. New York: Palgrave Macmillan. {{আইএসবিএন|978-0-333-61386-3}}. p, 90.</ref> সুলতানের রাষ্ট্রীয় কার্যক্রম বিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবেও হুররেম ভূমিকা পালন করেছেন, এবং প্রতীয়মান হয় যে তিনি বৈদেশিক নীতি ও আন্তর্জাতিক রাজনীতিতেও প্রভাব রেখেছিলেন।<ref name=Ayse>{{ওয়েব উদ্ধৃতি |শিরোনাম=Ayşe Özakbaş, Hürrem Sultan, Tarih Dergisi, Sayı 36, 2000 |ইউআরএল=http://www.iudergi.com/tr/index.php/tarih/article/download/3733/3385 |সংগ্রহের-তারিখ=৯ ডিসেম্বর ২০১৫ |আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20120113000232/http://www.iudergi.com/tr/index.php/tarih/article/download/3733/3385 |আর্কাইভের-তারিখ=১৩ জানুয়ারি ২০১২ |অকার্যকর-ইউআরএল=হ্যাঁ }}</ref>



০৫:১৭, ২৮ নভেম্বর ২০২০ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

প্রথম সুলাইমান
উসমানীয় খলিফা
আমিরুল মুমিনিন
উসমানীয় সাম্রাজ্যের সুলতান
কায়সার ই রোম
আলকানুনি (বিধানকর্তা)
ম্যাগনিফিসেন্ট (মহৎ)
খাদেমুল হারামাইন শরিফাইন
টিটিয়ান কর্তৃক অঙ্কিত একটি আবক্ষ চিত্রে সুলাইমান, আনুমানিক ১৫৩০
ইসলামের খলিফা
১০ম উসমানীয় সুলতান
রাজত্ব২২শে সেপ্টেম্বর ১৫২০ – ৫ই/৬ই সেপ্টেম্বর ১৫৬৬
রাজ্যাভিষেক৩০শে সেপ্টেম্বর ১৫২০
পূর্বসূরিপ্রথম সেলিম
উত্তরসূরিদ্বিতীয় সেলিম
সমাধি
সঙ্গিনীহুররাম সুলতান (রোক্সেলানা)(বৈধ স্ত্রী)
মাহিদেভ্রান সুলতান
গুলফাম হাতুন
ফেলানি হাতুন
বংশধরশাহজাদা মাহমুদ
শাহজাদা মুস্তাফা
শাহজাদা মুরাদ
শাহজাদা মেহমেদ
মিহরিমাহ সুলতান
শাহজাদা আবদুল্লাহ
রাজিয়া সুলতান
দ্বিতীয় সেলিম
শাহজাদা বায়েজিদ
শাহজাদা জাহাঙ্গীর
ফাতমা নূর সুলতান
প্রাসাদউসমানীয় রাজবংশ
পিতাপ্রথম সেলিম
মাতাহাফসা সুলতান
ধর্মসুন্নি ইসলাম
তুগরাসুলতান সুলাইমান স্বাক্ষর

প্রথম সুলাইমান (উসমানীয় তুর্কি ভাষায়: سليمان اوّل-(সুলাইমান-ই-আউওয়াল) ("সুলায়মান দ্য ম্যাগ্নিফিসেন্ট", তুর্কি ভাষায় মুহতেশিম সুলাইমান বা মহৎ সুলায়মান নামে পশ্চিমা বিশ্বে পরিচিত, তুরস্কে সুলতান সুলাইমান আল কানুনি নামে পরিচিত) ছিলেন উসমানীয় সাম্রাজ্যের দশম এবং সবচেয়ে দীর্ঘকালব্যাপী শাসনরত সুলতান, যিনি ১৫২০ সাল থেকে ১৫৬৬ সালে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত উসমানীয় সাম্রাজ্য শাসন করেন।[৩]

পাশ্চাত্যে তিনি মহৎ সুলাইমান হিসেবেও পরিচিত। তিনি পুর্নবারের জন্য সম্পূর্ণভাবে উসমানীয় সাম্রাজ্যের নীতিমালাগুলো তৈরি করেছিলেন বলে প্রাচ্যে তাকে বলা হয় কানুনি সুলাইমান (আরবি: سليمان القانوني)। প্রথম সুলাইমান ষোড়শ শতাব্দীর ইউরোপে একজন বিশিষ্ট রাজা হিসেবে স্থান লাভ করেন, যার শাসনামলে উসমানীয় সাম্রাজ্যের সামরিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক শক্তির বিস্তার ঘটে। সুলতান সুলাইমানের সেনাবাহিনী রোমান সাম্রাজ্য এবং হাঙ্গেরির পতন ঘটায়।সুলতান সুলাইমান পারস্যের সাফাভি রাজবংশের সাফাভিদ শাহ প্রথম তাহমাসবের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনা করেন এবং মধ্য প্রাচ্যের বেশির ভাগ অঞ্চল দখল করে নেন। তিনি উত্তর আফ্রিকায় আলজেরিয়া সহ বড় বড় অঞ্চলগুলো রোমান সাম্রাজ্যের হাত থেকে দখল করে নেয়। তার শাসনামলে নৌসেনাপতি হাইরেদ্দীন বারবারোসা স্পেনের অ্যাডমিরাল আন্দ্রে ডুরিয়ার নেতৃত্বে সম্মিলিত খ্রিস্টান বাহিনীর বিরুদ্ধে ১৫৩৮ সালে প্রিভিজার যুদ্ধে বারবারোসা বিজয় লাভ করে।এই উসমানীয় নৌবাহিনী ভূমধ্যসাগর থেকে লোহিত সাগর ও পারস্য উপসাগর পর্যন্ত তাদের আধিপত্য বজায় রাখে।[৪] এছাড়াও তার নৌ বাহিনী তৎকালীন স্পেনের হত্যাযজ্ঞ থেকে বেঁচে যাওয়া পলায়নরত নির্বাসিত মুসলিম ও ইহুদিদের উদ্ধারকার্য পরিচালনা করেন। সুলতান সুলায়মান ছিলেন উসমানীয় সাম্রাজ্যের সবেচেয়ে শক্তিশালী ও ক্ষমতাবান সুলতান।

উসমানীয় সাম্রাজ্যের বিস্তারকালে, সুলতান সুলাইমান ব্যক্তিগতভাবে তার সাম্রাজ্যের সমাজ ব্যবস্থা, শিক্ষা ব্যবস্থা, খাজনা ব্যবস্থা ও অপরাধের শাস্তি ব্যবস্থার বিষয়গুলোতে আইনপ্রণয়নসংক্রান্ত পরিবর্তন আনার আদেশ দেন। তিনি যেসব কানুনগুলো স্থাপন করে গেছেন, সেসব কানুনগুলো উসমানীয় সাম্রাজ্যে অনেক শতাব্দী ধরে প্রচলিত ছিল।[৫] সুলতান সুলাইমান যে শুধু একজন মহান রাজা ছিলেন তা নয়, তিনি একজন মহান কবিও ছিলেন। "মুহিব্বি" (অর্থ:প্রেমিক) নামক ছদ্ম উপনামে তিনি তুর্কি ও ফারসি ভাষায় বহু কালজয়ী কবিতা লিখেছেন। তার শাসনামলে উসমানীয় সংস্কৃতির অনেক উন্নতি হয়। সুলতান সুলাইমান উসমানীয় তুর্কি ভাষা সহ আরো পাঁচটি ভিন্ন ভাষায় কথা বলতে পারতেন: আরবী ভাষা, সার্বীয় ভাষা, ফার্সি ভাষা, উর্দু ভাষা এবং চাগাতাই ভাষা (একটি বিলুপ্ত তুর্কি ভাষা)।

জানা যায় যে, সুলতান সুলাইমান উসমানীয় সাম্রাজ্যের দু'শ বছরের সংসকৃতির নিয়ম ভঙ্গ করে তার হারেমের একজন কানিজ, রোক্সেলানার সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। রোক্সেলানার নাম পরবর্তীকালে হুরেম সুলতান রাখা হয়। তিনি সুলতান সুলাইমানের পুত্র, সেলিমের গর্ভধারণী হন, যেই শাহজাদা সুলতান সুলাইমানের মৃত্যুর পর দ্বিতীয় সেলিম হিসেবে উসমানীয় সাম্রাজ্যের সুলতান হন।

সুলতান সুলেমান তৎকালীন ফ্রান্সের রাজা প্রথম ফ্রান্সিসকে লেখা তার একটি চিঠি:

“আমি যিনি সুলতানদের সুলতান, রাজার রাজা, বিশ্বের বুকে সমস্ত রাজাদের মুকুটদাতা, পৃথিবীতে আল্লাহর ছায়া, শ্বেতসাগর এবং কৃষ্ণসাগর, রুমেলিয়া(বলকান অঞ্চল), আনাতোলিয়া, কারামানিয়া, রুম ভূখন্ড, জুলকাদ্রিয়া, দিয়ারবেকির, কুর্দিস্তান, আজেরবাইজান, পারস্য, দামাস্কাস, আলেপ্পো, কায়রো,মাগরিব (উত্তর আফ্রিকা), মক্কা, মদিনা, জেরুজালেম, সারা আরব, ইয়ামান, এবং অন্যান্য দেশ যা আমার পূর্বপুরুষদের (আল্লাহ তাদের কবরকে আলোকিত করুন) বাহুবলে জয় করা ভূখন্ড এবং আমার বীরত্বের পরস্কার তাদের মহিমময় আল্লাহর দান করা ভূখন্ডের সর্বময় কর্তা, আমি সুলতান সুলাইমান খান, সুলতান সেলিম খানের পুত্র, সুলতান বায়েজিদ খানের পৌত্র, তোমার উদ্দেশ্যে, ফ্রান্সের রাজা ফ্রান্সিস”।

বিকল্প নাম ও উপাধিসমূহ

মহৎ সুলাইমান (محتشم سليمان মুহতেশিমrম সুলাইমান) নামে তিনি পশ্চিমা বিশ্বে পরিচিত ছিলেন, এবং পাশাপাশি তাকে প্রথম সুলাইমান (سلطان سليمان أول সুলতান সুলাইমান-ই আওয়াল), এবং অটোম্যান আইনি প্রক্রিয়াকে আবারও সম্পূর্ণরূপে ঢালাওভাবে সাজানোর কারণে তাকে আইনপ্রণয়নকারী সুলাইমান (قانونی سلطان سليمان কানুনি সুলতান সুলাইমান) নামেও ডাকা হতো।

প্রাথমিক জীবন

শিক্ষা

আনাতোলিয়ার ভাইসরয়

উত্তরাধিকার লাভ

সামরিক অভিযান

ইউরোপে বিজয়সমূহ

ভারত মহাসাগরে অভিযানসমূহ

ভূমধ্যসাগরীয় ও উত্তর আফ্রিকা

প্রশাসনিক সংস্কার

সাংস্কৃতিক অর্জনসমূহ

ব্যক্তিগত জীবন

সঙ্গিনীগণ ও সন্তানাদি

সুলায়মানের তিনজন সুপরিচিত সঙ্গী ছিলেন:

সুলায়মানের তিন সঙ্গীর মোট আট সন্তান ছিল:

হুররেম সুলতানের সঙ্গে সম্পর্ক

হুররেম সুলতান ( রোক্সেলানা হিসেবেও পরিচিত ) ছিলেন রুথেনিয় বংশোদ্ভূত উসমানীয় সম্রাট প্রথম সুলাইমানের প্রিয়তম প্রমোদ দাসী (উপপত্নী) ও পরবর্তীকালে তার বৈধ স্ত্রী এবং সম্রাটের সন্তান শাহজাদা মেহমেদ, মিহরিমাহ সুলতান, শাহজাদা আবদুল্লাহ, সুলতান দ্বিতীয় সেলিম, শাহজাদা বায়েজিদ এবং শাহজাদা জাহাঙ্গীরের মাতা।[৭] হুররেম সম্ভবত কোন ইউক্রেনীয় অর্থোডক্স ধর্মযাজক পিতার ঘরে জন্ম নিয়েছিলেন।[৮][৯][১০] তিনি পোল্যান্ড রাজ্যের রুথেনীয় ভয়ভডেশিপের প্রধান শহর ল্বও-এর ৬৮ কিলোমিটার দক্ষিণপূর্বের রুহাটাইন নগরীতে জন্মগ্রহণ করেন (বর্তমান পশ্চিম ইউক্রেন)।[১০] ১৫২০-এর দশকে ক্রিমিয়ার তাতাররা ওই এলাকার একটি তড়িৎ অভিযানের সময় তাকে বন্দী করে একজন দাসী হিসেবে নিয়ে আসে (সম্ভবত প্রথমে ক্রিমিয়ার নগরী কাফফায়, যা দাস ব্যবসার একটি প্রধান কেন্দ্র, এরপর কনস্টান্টিনোপলে) এবং তাকে প্রথম সুলাইমানের হারেমের জন্য বাছাই করে।[৮][১০] তিনিই সুলতানের সর্বাধিক সংখ্যক সন্তানের জন্ম দেন, এবং আশ্চর্যজনকভাবে চিরায়ত প্রথা ভঙ্গ করে - তিনি দাসত্ব হতেও মুক্তি লাভ করেন। দুইশত বছরের অটোম্যান ঐতিহ্যকে ভঙ্গ করে,[১১] একজন প্রাক্তন উপপত্নী এভাবে অবশেষে সুলতানের বৈধ পত্নী হয়ে ওঠে, যা প্রাসাদ ও নগরীর প্রত্যক্ষদর্শীদের জন্য অত্যন্ত হতবাককারী একটি বিষয় ছিল।[১২] এই ঘটনা সুলাইমানকে ওরহান গাজির (১৩২৬- ১৩৬২) পর প্রথম দাসী বিবাহকারী সুলতানের পরিচয় এনে দেয় এবং প্রাসাদে হুররামের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করে, যার ফলশ্রুতিতে তার অন্যতম পুত্র দ্বিতীয় সেলিম ১৫৬৬ সালে সাম্রাজ্যের উত্তরাধিকার লাভ করেন। সুলায়মান বাকি জীবনে রাজসভাতেও হুররেমকে তার সাথে থাকতে দেন, যার ফলে আরেকটি প্রথা ভঙ্গ হয়, আর তা হল, যখন সাম্রাজ্যের উত্তরাধিকারীগণ উপযুক্ত বয়সে পৌঁছুবে, তাদেরকে তাদের রাজ উপপত্নীসহ (উত্তরাদিকারিদেরকে তাদের মাতাসহ) নিকটস্থ প্রদেশে শাসনের জন্য পাঠিয়ে দেয়া হবে, উক্ত উপপত্নীদের সন্তান ক্ষমতায় বসার আগ পর্যন্ত তারা ফিরে আসতে পারবে না।[১৩] সুলতানের রাষ্ট্রীয় কার্যক্রম বিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবেও হুররেম ভূমিকা পালন করেছেন, এবং প্রতীয়মান হয় যে তিনি বৈদেশিক নীতি ও আন্তর্জাতিক রাজনীতিতেও প্রভাব রেখেছিলেন।[১৪]

সুলতান সুলেইমান তার "মুহিব্বি" নামক ছদ্মনাম ব্যবহার করে হুররেম সুলতানের জন্য নিম্নোক্ত কবিতাটি লিখেছিলেন:

"আমার নির্জনতার সিংহাসন, আমার সম্পত্তি, আমার প্রেম, আমার পূর্ণিমা।
আমার শ্রেষ্ঠ বন্ধু, আমার সখী, আমার চিরন্তন অস্তিত্ব, আমার সুলতান, আমার একমাত্র ভালোবাসা।
সুন্দরীদের মাঝে সবচেয়ে সুন্দরীতমা...
আমার বসন্তকাল, আমার সদা প্রফুল্ল মুখী ভালোবাসা, আমার দিবস, আমার প্রাণের প্রিয়া, আমার হাস্যোজ্জল পত্র...
আমার গুল্ম, আমার মিষ্টি, আমার গোলাপ, এ জগতে একমাত্র সেই আমাকে কোন দুঃখ দেয় নি...
আমার ইস্তাম্বুল, আমার কারামান, আমার আনাতোলিয়ার পৃথিবী
আমার বাদাকশান, আমার বাগদাদ আর খোরাসান
আমার সুকেশী রমণী, আমার হেলানো ভুরুর প্রণয়, আমার দুষ্টুমিভরা চোখের প্রেম...
আমি সর্বদা তোমার গুণ গাইবো
আমি, এই ভগ্ন হৃদয়ের প্রেমিক, অশ্রুভরা চোখের মুহিব্বি (প্রেমিক), আমিই তো সুখী।"[১৫]

প্রধান উজির পারগালি ইব্রাহীম পাশা

উসমানীয় সুলতান প্রথম সুলাইমান, তার প্রধান উজির পারগালি ইব্রাহিম পাশার জন্য বুদায় অপেক্ষা করছেন, সময়কাল ১৫২৯ খ্রিস্টাব্দ।

শাসনের ধারাবাহিকতা

মৃত্যু

১৫৬৬ সালের ৫ই সেপ্টেম্বর,[১৬] সুলাইমান, তিনি তখন হাঙ্গেরি অভিযানের নেতৃত্ব দেয়ার উদ্দেশ্যে কনস্টান্টিনোপল হতে রওয়ানা হয়েছিলেন, তিনি হাঙ্গেরিতে যিগেটভারের যুদ্ধে অটোম্যান বিজয়ের পূর্বেই মারা যান[১৭] এবং প্রধান উজির ফিরে যাবার সময় দ্বিতীয় সেলিমের অভিষেকের সুবিধার্থে তার মৃত্যুর খবর গোপন রাখেন।

উত্তরাধিকার

  1. The Encyclopædia Britannica, Vol.7, Edited by Hugh Chisholm, (1911), 3; Constantinople, the capital of the Turkish Empire...
  2. Britannica, Istanbul:When the Republic of Turkey was founded in 1923, the capital was moved to Ankara, and Constantinople was officially renamed Istanbul in 1930.
  3. Merriman.
  4. Mansel, 61.
  5. Atıl, 24.
  6. Dr Galina I Yermolenko (২০১৩)। Roxolana in European Literature, History and Culturea। Ashgate Publishing, Ltd.। পৃষ্ঠা 275। আইএসবিএন 978-1-4094-7611-5 
  7. The Imperial House of Osman GENEALOGY
  8. The Speech of Ibrahim at the Coronation of Maximilian II, Thomas Conley, Rhetorica: A Journal of the History of Rhetoric, Vol. 20, No. 3 (Summer 2002), 266.
  9. Kemal H. Karpat, Studies on Ottoman Social and Political History: Selected Articles and Essays, (Brill, 2002), 756.
  10. Elizabeth Abbott, Mistresses: A History of the Other Woman, (Overlook Press, 2010), [১].
  11. Kinross, Patrick (1979). The Ottoman centuries: The Rise and Fall of the Turkish Empire. New York: Morrow. আইএসবিএন ৯৭৮-০-৬৮৮-০৮০৯৩-৮. p, 236.
  12. Mansel, Phillip (1998). Constantinople : City of the World's Desire, 1453–1924. New York: St. Martin's Griffin. আইএসবিএন ৯৭৮-০-৩১২-১৮৭০৮-৮. p, 86.
  13. Imber, Colin (2002). The Ottoman Empire, 1300–1650 : The Structure of Power. New York: Palgrave Macmillan. আইএসবিএন ৯৭৮-০-৩৩৩-৬১৩৮৬-৩. p, 90.
  14. "Ayşe Özakbaş, Hürrem Sultan, Tarih Dergisi, Sayı 36, 2000"। ১৩ জানুয়ারি ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ ডিসেম্বর ২০১৫ 
  15. A 400 Year Old Love Poem
  16. Sakaoğlu, Necdet; p. 13
  17. Imber, 60.