নবদ্বীপ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

স্থানাঙ্ক: ২৩°২৫′ উত্তর ৮৮°২২′ পূর্ব / ২৩.৪২° উত্তর ৮৮.৩৭° পূর্ব / 23.42; 88.37
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
তথ্যসূত্র উন্নতি, সংশোধন
ট্যাগ: ২০১৭ উৎস সম্পাদনা
G C Dey (আলোচনা | অবদান)
সম্পাদনা সারাংশ নেই
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{Infobox settlement
{{Infobox settlement
| name = নবদ্বীপ
| name = নবদ্বীপ
| nickname = চৈতন্যের জন্মস্থান
| nickname = চৈতন্যের জন্মস্থান
| other_name = প্রাচ্যের অক্সফোর্ড
| other_name = প্রাচ্যের অক্সফোর্ড
| settlement_type = শহর
| settlement_type = শহর
| image_skyline = {{Photomontage
| image_skyline = {{Photomontage
| photo1a = Chaitanya Mahaprabhu, Nabadwip Sribas Angon.jpg
| photo1a = Chaitanya Mahaprabhu, Nabadwip Sribas Angon.jpg
| photo2a = Buro Shib of Nabadwip.jpg
| photo2a = Buro Shib of Nabadwip.jpg
১৪ নং লাইন: ১৪ নং লাইন:
| size = 266
| size = 266
| foot_montage =
| foot_montage =
}}
}}
| image_alt =
| image_alt =
| image_caption = উপর থেকে ঘড়ির কাঁটার ক্রমে: [[চৈতন্য মহাপ্রভু]], [[ডুমুরেশ্বরী মাতা]], পীরারীতির প্রাচীন মহাপ্রভু মন্দির, গঙ্গায় নৌ-চলাচল, [[পোড়ামা কালীমন্দির, নবদ্বীপ|মা পোড়ামা]], [[বুড়োশিব মন্দির, নবদ্বীপ|বুড়োশিব]]
| image_caption = উপর থেকে ঘড়ির কাঁটার ক্রমে: [[চৈতন্য মহাপ্রভু]], [[ডুমুরেশ্বরী মাতা]], পীরারীতির প্রাচীন মহাপ্রভু মন্দির, গঙ্গায় নৌ-চলাচল, [[পোড়ামা কালীমন্দির, নবদ্বীপ|মা পোড়ামা]], [[বুড়োশিব মন্দির, নবদ্বীপ|বুড়োশিব]]
| pushpin_map = India West Bengal
| pushpin_map = India West Bengal
| pushpin_label_position =
| pushpin_label_position =
| pushpin_map_alt =
| pushpin_map_alt =
| pushpin_map_caption = ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে নবদ্বীপের অবস্থান
| pushpin_map_caption = ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে নবদ্বীপের অবস্থান
| latd = 23.42
| latd = 23.42
| latm =
| latm =
| lats =
| lats =
| latNS = N
| latNS = N
| longd = 88.37
| longd = 88.37
| longm =
| longm =
| longs =
| longs =
| longEW = E
| longEW = E
| coordinates_display = inline,title
| coordinates_display = inline,title
| subdivision_type = দেশ
| subdivision_type = দেশ
| subdivision_name = {{পতাকা|ভারত}}
| subdivision_name = {{পতাকা|ভারত}}
| subdivision_type1 = রাজ্য
| subdivision_type1 = রাজ্য
| subdivision_name1 = [[পশ্চিমবঙ্গ]]
| subdivision_name1 = [[পশ্চিমবঙ্গ]]
| subdivision_type2 = [[জেলা]]
| subdivision_type2 = [[জেলা]]
| subdivision_name2 = [[নদিয়া জেলা|নদিয়া]]
| subdivision_name2 = [[নদিয়া জেলা|নদিয়া]]
| established_title = প্রতিষ্ঠিত
| established_title = প্রতিষ্ঠিত
| established_date = ১০৬৩ (খ্রিস্টাব্দ)
| established_date = ১০৬৩ (খ্রিস্টাব্দ)
| founder =
| founder =
| named_for =
| named_for =
| government_type = পৌরসভা
| government_type = পৌরসভা
| governing_body = [[নবদ্বীপ পৌরসভা]]
| governing_body = [[নবদ্বীপ পৌরসভা]]
| unit_pref = Metric
| unit_pref = Metric
| area_footnotes =
| area_footnotes =
| area_rank =
| area_rank =
| area_total_km2 = 98.01
| area_total_km2 = 98.01
| elevation_footnotes =
| elevation_footnotes =
| elevation_m = 14
| elevation_m = 14
| population_total = 175474
| population_total = 175474
| population_as_of = ২০১১
| population_as_of = ২০১১
| population_rank =
| population_rank =
| population_density_km2 = auto
| population_density_km2 = auto
| population_demonym =
| population_demonym =
| population_footnotes =
| population_footnotes =
| demographics_type1 = ভাষা
| demographics_type1 = ভাষা
| demographics1_title1 = সরকারী
| demographics1_title1 = সরকারী
| demographics1_info1 = [[বাংলা ভাষা|বাংলা]], [[ইংরেজি ভাষা|ইংরেজি]]
| demographics1_info1 = [[বাংলা ভাষা|বাংলা]], [[ইংরেজি ভাষা|ইংরেজি]]
| timezone1 = [[ভারতীয় প্রমাণ সময়|আইএসটি]]
| timezone1 = [[ভারতীয় প্রমাণ সময়|আইএসটি]]
| utc_offset1 = +৫:৩০
| utc_offset1 = +৫:৩০
| postal_code_type = পিন
| postal_code_type = পিন
| postal_code = ৭৪১৩০২
| postal_code = ৭৪১৩০২
| area_code_type = টেলিফোন ডোক| area_code = ০৩৪৭২
| area_code_type = টেলিফোন ডোক
| area_code = ০৩৪৭২
| registration_plate = ডব্লুবি ৫২ (WB 52)
| registration_plate = ডব্লুবি ৫২ (WB 52)
| blank1_name_sec1 = [[লোকসভা]] কেন্দ্র
| blank1_name_sec1 = [[লোকসভা]] কেন্দ্র
| blank1_info_sec1 = [[রাণাঘাট]]
| blank1_info_sec1 = [[রানাঘাট]]
| blank2_name_sec1 = [[বিধানসভা]] কেন্দ্র
| blank2_name_sec1 = [[বিধানসভা]] কেন্দ্র
| blank2_info_sec1 = [[নবদ্বীপ বিধানসভা কেন্দ্র|নবদ্বীপ]]
| blank2_info_sec1 = [[নবদ্বীপ বিধানসভা কেন্দ্র|নবদ্বীপ]]
| official_name =
}}
}}


'''নবদ্বীপ''' [[ভারত|ভারতের]] [[পশ্চিমবঙ্গ]] রাজ্যের [[নদিয়া জেলা|নদিয়া জেলার]] একটি সুপ্রাচীন শহর ও পৌরসভা এলাকা। নবদ্বীপ [[চৈতন্য মহাপ্রভু|চৈতন্য মহাপ্রভুর]] জন্মস্থান ও লীলাক্ষেত্রর জন্য বিখ্যাত। [[নবদ্বীপ পৌরসভা]] ১৮৬৯ সালে স্থাপিত। বাংলায় [[সেন রাজবংশ|সেন রাজাদের]] আমলে (১১৫৯ - ১২০৬) নবদ্বীপ ছিল রাজধানী। ১২০২ সালে রাজা লক্ষ্মণ সেনের সময় [[ইখতিয়ার উদ্দিন মুহাম্মাদ বিন বখতিয়ার খলজী|বখতিয়ার খলজি]] নবদ্বীপ জয় করেন<ref>{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://books.google.co.in/books?id=sxhAtCflwOMC&pg=PA53&lpg=PA53&dq=bakhtiyar+khilji+attack+nadia+in+1202&source=bl&ots=UJQUWZFhoB&sig=ACfU3U2LcafC2x1Ym7wrRikCBqehvIdaUg&hl=en&sa=X&ved=2ahUKEwiR35Oftf_pAhX26nMBHQXhAj0Q6AEwAnoECAkQAQ#v=onepage&q=bakhtiyar%20khilji%20attack%20nadia%20in%201202&f=false|শিরোনাম=A Comprehensive History of Medieval India: From Twelfth to the Mid-Eighteenth Century|শেষাংশ=Ahmed|প্রথমাংশ=Farooqui Salma|তারিখ=2011|page=৫৩||প্রকাশক=Pearson Education India|ভাষা=en|আইএসবিএন=978-81-317-3202-1}}</ref> যা বাংলায় মুসলিম সাম্রাজ্যের সূচনা করে। চৈতন্যের সময়ে [[বাসুদেব সার্বভৌম]], রঘুনাথ শিরোমণি, [[রঘুনন্দন ভট্টাচার্য্য|স্মার্ত রঘুনন্দন]] প্রমুখ এবং পরবর্তীতে [[কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশ]], বুনোরামনাথ প্রমুখের পাণ্ডিত্যে তৎকালীন সময় থেকে নবদ্বীপ সংস্কৃতচর্চা ও বিদ্যালাভের পীঠস্থান হয়ে ওঠে। নবদ্বীপ ছিল সেই সময়ে বিদ্যালাভের পীঠস্থান ও একে বলা হত ''বাংলার অক্সফোর্ড''।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://books.google.co.in/books/about/Calcutta_Old_and_New.html?id=a3scAAAAMAAJ&redir_esc=y|শিরোনাম=Calcutta, Old and New: A Historical and Descriptive Handbook to the City|শেষাংশ=Cotton|প্রথমাংশ=Sir Evan|তারিখ=1980|প্রকাশক=General Printers & Publishers|ভাষা=en|page=১}}</ref>
'''নবদ্বীপ''' [[ভারত|ভারতের]] [[পশ্চিমবঙ্গ]] রাজ্যের [[নদিয়া জেলা|নদিয়া জেলার]] একটি সুপ্রাচীন শহর ও পৌরসভা এলাকা। নবদ্বীপ [[চৈতন্য মহাপ্রভু|চৈতন্য মহাপ্রভুর]] জন্মস্থান ও লীলাক্ষেত্রর জন্য বিখ্যাত। [[নবদ্বীপ পৌরসভা]] ১৮৬৯ সালে স্থাপিত। বাংলায় [[সেন রাজবংশ|সেন রাজাদের]] আমলে (১১৫৯ - ১২০৬) নবদ্বীপ ছিল রাজধানী। ১২০২ সালে রাজা লক্ষ্মণ সেনের সময় [[ইখতিয়ার উদ্দিন মুহাম্মাদ বিন বখতিয়ার খলজী|বখতিয়ার খলজি]] নবদ্বীপ জয় করেন<ref>{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://books.google.co.in/books?id=sxhAtCflwOMC&pg=PA53&lpg=PA53&dq=bakhtiyar+khilji+attack+nadia+in+1202&source=bl&ots=UJQUWZFhoB&sig=ACfU3U2LcafC2x1Ym7wrRikCBqehvIdaUg&hl=en&sa=X&ved=2ahUKEwiR35Oftf_pAhX26nMBHQXhAj0Q6AEwAnoECAkQAQ#v=onepage&q=bakhtiyar%20khilji%20attack%20nadia%20in%201202&f=false|শিরোনাম=A Comprehensive History of Medieval India: From Twelfth to the Mid-Eighteenth Century|শেষাংশ=Ahmed|প্রথমাংশ=Farooqui Salma|তারিখ=2011|page=৫৩||প্রকাশক=Pearson Education India|ভাষা=en|আইএসবিএন=978-81-317-3202-1}}</ref> যা বাংলায় মুসলিম সাম্রাজ্যের সূচনা করে। চৈতন্যের সময়ে [[বাসুদেব সার্বভৌম]], রঘুনাথ শিরোমণি, [[রঘুনন্দন ভট্টাচার্য্য|স্মার্ত রঘুনন্দন]] প্রমুখ এবং পরবর্তীতে [[কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশ]], বুনোরামনাথ প্রমুখের পাণ্ডিত্যে তৎকালীন সময় থেকে নবদ্বীপ সংস্কৃতচর্চা ও বিদ্যালাভের পীঠস্থান হয়ে ওঠে। নবদ্বীপ ছিল সেই সময়ে বিদ্যালাভের পীঠস্থান ও একে বলা হত ''বাংলার অক্সফোর্ড''।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://books.google.co.in/books/about/Calcutta_Old_and_New.html?id=a3scAAAAMAAJ&redir_esc=y|শিরোনাম=Calcutta, Old and New: A Historical and Descriptive Handbook to the City|শেষাংশ=Cotton|প্রথমাংশ=Sir Evan|তারিখ=1980|প্রকাশক=General Printers & Publishers|ভাষা=en|page=১}}</ref>

চৈতন্য জীবনীকার বৃন্দাবন দাস লিখেছেন —

{{Cquote|quote=নানা দেশ হৈতে লোক নবদ্বীপে যায় ।
নবদ্বীপে পড়িলে সে বিদ্যারস পায় ।।}}


==নামকরণ==
==নামকরণ==
৮৭ নং লাইন: ৯৪ নং লাইন:
[[চৈতন্য মহাপ্রভু|চৈতন্য মহাপ্রভুর]] জন্ম পঞ্চদশ শতাব্দীর একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। চৈতন্য মহাপ্রভুর আবির্ভাবে নবদ্বীপে বৈষ্ণব সংস্কৃতি সুপ্রতিষ্ঠিত হয়। তবে মহাপ্রভুর জন্মের পূর্ব থেকেই জালালুদ্দীন ফতেহ্ শাহের(১৪৮১-৮৭) রাজত্বকালে নবদ্বীপে রাজভয় উপস্থিত হয়েছিল। শাসক সমাজ ও ব্রাহ্মণ সমাজ নবদ্বীপে বৈষ্ণব সংস্কৃতির প্রসারে বাধা সৃষ্টি করে।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://www.worldcat.org/title/jayanandas-caitanya-mangala-jayananda-biracita-caitanyamangala/oclc/499557268|শিরোনাম=Jayānandaʼs Caitanya-maṅgala = Jaẏānanda biracita Caitanyamaṅgala|শেষাংশ=Jaẏānanda|শেষাংশ২=Majumdar|প্রথমাংশ২=Bimanbehari|শেষাংশ৩=Mukhopadhyay|প্রথমাংশ৩=Sukhamay|তারিখ=1971|প্রকাশক=The Asiatic Society|অবস্থান=Calcutta|oclc=499557268}}</ref> রাজ-অত্যাচারের কারণে তৎকালীন সময়ে বহু ব্রাহ্মণ-পন্ডিত ও সাধারণ মানুষকে নবদ্বীপ ত্যাগ করতে হয়। তবে তৎকালীন নবদ্বীপের শাসক চাঁদ কাজী বৈষ্ণব সমাজকে নাম-সংকীর্তন বন্ধের আদেশ জারি করলে মহাপ্রভু তাঁর পার্ষদদের সঙ্গে কাজী বাড়ি গিয়ে কাজী দলন বা উদ্ধার করেন, যা ভারতের ইতিহাসে সত্যের প্রতিষ্ঠায় প্রথম আইন অমান্য আন্দোলনের দৃষ্টান্ত।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://www.anandabazar.com/editorial/incarnation-of-chaitanya-mahaprabhu-is-a-path-breaking-chapter-in-the-history-of-bengal-1.968387|শিরোনাম=ধর্মের বেড়াজাল ভেঙে সাম্যের ধারণার প্রতিষ্ঠা|ওয়েবসাইট=anandabazar.com|ভাষা=bn|সংগ্রহের-তারিখ=2020-06-13}}</ref>
[[চৈতন্য মহাপ্রভু|চৈতন্য মহাপ্রভুর]] জন্ম পঞ্চদশ শতাব্দীর একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। চৈতন্য মহাপ্রভুর আবির্ভাবে নবদ্বীপে বৈষ্ণব সংস্কৃতি সুপ্রতিষ্ঠিত হয়। তবে মহাপ্রভুর জন্মের পূর্ব থেকেই জালালুদ্দীন ফতেহ্ শাহের(১৪৮১-৮৭) রাজত্বকালে নবদ্বীপে রাজভয় উপস্থিত হয়েছিল। শাসক সমাজ ও ব্রাহ্মণ সমাজ নবদ্বীপে বৈষ্ণব সংস্কৃতির প্রসারে বাধা সৃষ্টি করে।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://www.worldcat.org/title/jayanandas-caitanya-mangala-jayananda-biracita-caitanyamangala/oclc/499557268|শিরোনাম=Jayānandaʼs Caitanya-maṅgala = Jaẏānanda biracita Caitanyamaṅgala|শেষাংশ=Jaẏānanda|শেষাংশ২=Majumdar|প্রথমাংশ২=Bimanbehari|শেষাংশ৩=Mukhopadhyay|প্রথমাংশ৩=Sukhamay|তারিখ=1971|প্রকাশক=The Asiatic Society|অবস্থান=Calcutta|oclc=499557268}}</ref> রাজ-অত্যাচারের কারণে তৎকালীন সময়ে বহু ব্রাহ্মণ-পন্ডিত ও সাধারণ মানুষকে নবদ্বীপ ত্যাগ করতে হয়। তবে তৎকালীন নবদ্বীপের শাসক চাঁদ কাজী বৈষ্ণব সমাজকে নাম-সংকীর্তন বন্ধের আদেশ জারি করলে মহাপ্রভু তাঁর পার্ষদদের সঙ্গে কাজী বাড়ি গিয়ে কাজী দলন বা উদ্ধার করেন, যা ভারতের ইতিহাসে সত্যের প্রতিষ্ঠায় প্রথম আইন অমান্য আন্দোলনের দৃষ্টান্ত।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://www.anandabazar.com/editorial/incarnation-of-chaitanya-mahaprabhu-is-a-path-breaking-chapter-in-the-history-of-bengal-1.968387|শিরোনাম=ধর্মের বেড়াজাল ভেঙে সাম্যের ধারণার প্রতিষ্ঠা|ওয়েবসাইট=anandabazar.com|ভাষা=bn|সংগ্রহের-তারিখ=2020-06-13}}</ref>
চৈতন্য ও তৎপরবর্তী সময়ে নবদ্বীপে বিভিন্ন পণ্ডিত-সাধক-বিদ্যালঙ্কার এবং সংস্কৃত পণ্ডিতেরা জন্মগ্রহণ করেন। চৈতন্যের সময়ে [[বাসুদেব সার্বভৌম]], রঘুনাথ শিরোমণি, [[রঘুনন্দন ভট্টাচার্য্য|স্মার্ত রঘুনন্দন]] প্রমুখ এবং পরবর্তীতে [[কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশ]], বুনোরামনাথ প্রমুখের পাণ্ডিত্যে তৎকালীন সময় থেকে নবদ্বীপ সংস্কৃতচর্চা ও বিদ্যালাভের পীঠস্থান হয়ে ওঠে। [[নদিয়া রাজপরিবার|নদিয়ারাজ]] রুদ্র রায়ের সময় নবদ্বীপে চার হাজার ছাত্র এবং ছয়শো অধ্যাপক অধ্যাপনা করতেন।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://books.google.co.in/books/about/Ancient_Indian_Education.html?id=mjFfqpq7HhkC|শিরোনাম=Ancient Indian Education: Brahmanical and Buddhist|শেষাংশ=Mookerji|প্রথমাংশ=Radhakumud|তারিখ=1989|প্রকাশক=Motilal Banarsidass Publ.|ভাষা=en|আইএসবিএন=978-81-208-0423-4}}</ref>
চৈতন্য ও তৎপরবর্তী সময়ে নবদ্বীপে বিভিন্ন পণ্ডিত-সাধক-বিদ্যালঙ্কার এবং সংস্কৃত পণ্ডিতেরা জন্মগ্রহণ করেন। চৈতন্যের সময়ে [[বাসুদেব সার্বভৌম]], রঘুনাথ শিরোমণি, [[রঘুনন্দন ভট্টাচার্য্য|স্মার্ত রঘুনন্দন]] প্রমুখ এবং পরবর্তীতে [[কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশ]], বুনোরামনাথ প্রমুখের পাণ্ডিত্যে তৎকালীন সময় থেকে নবদ্বীপ সংস্কৃতচর্চা ও বিদ্যালাভের পীঠস্থান হয়ে ওঠে। [[নদিয়া রাজপরিবার|নদিয়ারাজ]] রুদ্র রায়ের সময় নবদ্বীপে চার হাজার ছাত্র এবং ছয়শো অধ্যাপক অধ্যাপনা করতেন।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://books.google.co.in/books/about/Ancient_Indian_Education.html?id=mjFfqpq7HhkC|শিরোনাম=Ancient Indian Education: Brahmanical and Buddhist|শেষাংশ=Mookerji|প্রথমাংশ=Radhakumud|তারিখ=1989|প্রকাশক=Motilal Banarsidass Publ.|ভাষা=en|আইএসবিএন=978-81-208-0423-4}}</ref>

চৈতন্য জীবনীকাব্যে পাওয়া যায় —

{{Cquote|quote=নবদ্বীপ হেন গ্রাম ত্রিভুবনে নাই ।
যঁহি অবতীর্ণ হৈলা চৈতন্য গোঁসাঞি ।।}}

===পরবর্তী শতক===
===পরবর্তী শতক===
বুনো রামনাথ, শঙ্কর তর্কবাগীশ প্রমুখ নৈয়ায়িক অষ্টাদশ শতকে ন্যায়চর্চায় নবদ্বীপের নাম উজ্জ্বল করেছিলেন। নদিয়া রাজপরিবারের মহারাজ [[কৃষ্ণচন্দ্র রায়|রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের]] সময়ে নবদ্বীপে শক্তি পূজার প্রসার ঘটে। রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায় এবং পরবর্তীতে রাজা গিরীশচন্দ্রের সময়ে নবদ্বীপে শাক্তরাসযাত্রার জনপ্রিয়তা ও জৌলুস বৃদ্ধি পায়। এই সময়ে নবদ্বীপে বিভিন্ন মন্দির-প্রতিমা প্রতিষ্ঠিত হয়।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://archive.org/details/in.ernet.dli.2015.265018|শিরোনাম=Sekaler Darogar Kahini Ed. 2nd|শেষাংশ=Roy|প্রথমাংশ=Alok Ed|তারিখ=1958}}</ref>
বুনো রামনাথ, শঙ্কর তর্কবাগীশ প্রমুখ নৈয়ায়িক অষ্টাদশ শতকে ন্যায়চর্চায় নবদ্বীপের নাম উজ্জ্বল করেছিলেন। নদিয়া রাজপরিবারের মহারাজ [[কৃষ্ণচন্দ্র রায়|রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের]] সময়ে নবদ্বীপে শক্তি পূজার প্রসার ঘটে। রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায় এবং পরবর্তীতে রাজা গিরীশচন্দ্রের সময়ে নবদ্বীপে শাক্তরাসযাত্রার জনপ্রিয়তা ও জৌলুস বৃদ্ধি পায়। এই সময়ে নবদ্বীপে বিভিন্ন মন্দির-প্রতিমা প্রতিষ্ঠিত হয়।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://archive.org/details/in.ernet.dli.2015.265018|শিরোনাম=Sekaler Darogar Kahini Ed. 2nd|শেষাংশ=Roy|প্রথমাংশ=Alok Ed|তারিখ=1958}}</ref>
২১৫ নং লাইন: ২২৮ নং লাইন:


==সংস্কৃতি==
==সংস্কৃতি==
===ধর্মকেন্দ্রিকতা===
===ধর্মকেন্দ্রীক===
নবদ্বীপের সাংস্কৃতিক আভিজাত্যে মিশ্র প্রভাব লক্ষ করা যায়। বৈষ্ণব-শাক্ত-শৈব সংস্কৃতির সংমিশ্রণে নবদ্বীপের প্রাচীনত্ব বিরাজমান। নবদ্বীপের শৈব সংস্কৃতিতে বৌদ্ধ প্রভাব লক্ষ করা যায়, যা প্রধানত পালযুগের বৌদ্ধধর্মাবলম্বীদের কারণে। নবদ্বীপের শক্তি উপাসনায় তন্ত্রের উপস্থিতিও বৌদ্ধ প্রভাবের কারণে ঘটেছে। চৈতন্যদেবের মাধ্যমে নবদ্বীপে যে [[গৌড়ীয় বৈষ্ণবধর্ম|গৌড়ীয় বৈষ্ণবধর্মের]] উৎপত্তি ঘটে, তা সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র ভাবধারা।
নবদ্বীপের সাংস্কৃতিক আভিজাত্যে মিশ্র প্রভাব লক্ষ করা যায়। বৈষ্ণব-শাক্ত-শৈব সংস্কৃতির সংমিশ্রণে নবদ্বীপের প্রাচীনত্ব বিরাজমান। নবদ্বীপের শৈব সংস্কৃতিতে বৌদ্ধ প্রভাব লক্ষ করা যায়, যা প্রধানত পালযুগের বৌদ্ধধর্মাবলম্বীদের কারণে। নবদ্বীপের শক্তি উপাসনায় তন্ত্রের উপস্থিতিও বৌদ্ধ প্রভাবের কারণে ঘটেছে। চৈতন্যদেবের মাধ্যমে নবদ্বীপে যে [[গৌড়ীয় বৈষ্ণবধর্ম|গৌড়ীয় বৈষ্ণবধর্মের]] উৎপত্তি ঘটে, তা সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র ভাবধারা।
====শাক্ত সংস্কৃতি====
====শাক্ত সংস্কৃতি====
দ্বাদশ-ত্রয়োদশ শতক থেকে নবদ্বীপে শক্তি সাধনার প্রসার ঘটতে থাকে। নবদ্বীপের তন্ত্রসাধক [[কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশ]] দক্ষিণাকালীর রুপ বর্ণনা করে বাংলায় কালী পূজার প্রসার ঘটান।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://www.anandabazar.com/supplementary/rabibashoriyo/maa-kali-came-to-bengali-household-with-the-help-of-krishnananda-agamavagisha-1.689891|শিরোনাম=কৃষ্ণানন্দের হাত ধরে বাংলার ঘরে এলেন কালী|শেষাংশ=ভট্টাচার্য|প্রথমাংশ=বিভূতিসুন্দর|ওয়েবসাইট=anandabazar.com|ভাষা=bn|সংগ্রহের-তারিখ=2020-06-13}}</ref> নবদ্বীপের শাক্তদেবীর মধ্যে অন্যতম পোড়ামাতলার [[পোড়ামা কালীমন্দির, নবদ্বীপ|মা পোড়ামা]]। এছাড়া [[কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশ]] পূজিত [[আগমেশ্বরী মাতা]], এল্যানেকালী মাতা, ওলাদেবী, সিদ্ধেশ্বরী মাতা উল্লেখযোগ্য।রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের পৃষ্ঠপোষকতায় [[নবদ্বীপের শাক্তরাস|নবদ্বীপে শাক্তরাসের]] জনপ্রিয়তা ও জৌলুস বৃদ্ধি পেতে থাকে। পরবর্তীতে রাজা গিরীশচন্দ্রের সময়ে এটি নবদ্বীপের অন্যতম প্রধান উৎসবে পরিণত হয়। শাক্তদেবীদের বিশাল মৃন্ময়ী প্রতিমা নির্মাণ করে শক্তি আরাধনা নবদ্বীপের রাসের প্রধান বৈশিষ্ট্য।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://archive.org/details/in.ernet.dli.2015.265018|শিরোনাম=Sekaler Darogar Kahini Ed. 2nd|শেষাংশ=Roy|প্রথমাংশ=Alok Ed|তারিখ=1958|page=৩৪-৩৫}}</ref> [[শিবের মুখোশ]] এখানকার শৈব সংস্কৃতির একটি উল্লেখযোগ্য উদাহরণ।
দ্বাদশ-ত্রয়োদশ শতক থেকে নবদ্বীপে শক্তি সাধনার প্রসার ঘটতে থাকে। নবদ্বীপের তন্ত্রসাধক [[কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশ]] দক্ষিণাকালীর রুপ বর্ণনা করে বাংলায় কালী পূজার প্রসার ঘটান।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://www.anandabazar.com/supplementary/rabibashoriyo/maa-kali-came-to-bengali-household-with-the-help-of-krishnananda-agamavagisha-1.689891|শিরোনাম=কৃষ্ণানন্দের হাত ধরে বাংলার ঘরে এলেন কালী|শেষাংশ=ভট্টাচার্য|প্রথমাংশ=বিভূতিসুন্দর|ওয়েবসাইট=anandabazar.com|ভাষা=bn|সংগ্রহের-তারিখ=2020-06-13}}</ref> নবদ্বীপের শাক্তদেবীর মধ্যে অন্যতম পোড়ামাতলার [[পোড়ামা কালীমন্দির, নবদ্বীপ|মা পোড়ামা]]। এছাড়া [[কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশ]] পূজিত [[আগমেশ্বরী মাতা]], এলানিয়াকালী মাতা, ওলাদেবী, সিদ্ধেশ্বরী মাতা উল্লেখযোগ্য। রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের পৃষ্ঠপোষকতায় [[নবদ্বীপের শাক্তরাস|নবদ্বীপে শাক্তরাসের]] জনপ্রিয়তা ও জৌলুস বৃদ্ধি পেতে থাকে। পরবর্তীতে রাজা গিরীশচন্দ্রের সময়ে এটি নবদ্বীপের অন্যতম প্রধান উৎসবে পরিণত হয়। শাক্তদেবীদের বিশাল মৃন্ময়ী প্রতিমা নির্মাণ করে শক্তি আরাধনা নবদ্বীপের রাসের প্রধান বৈশিষ্ট্য।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://archive.org/details/in.ernet.dli.2015.265018|শিরোনাম=Sekaler Darogar Kahini Ed. 2nd|শেষাংশ=Roy|প্রথমাংশ=Alok Ed|তারিখ=1958|page=৩৪-৩৫}}</ref> [[শিবের মুখোশ]] এখানকার শৈব সংস্কৃতির একটি উল্লেখযোগ্য উদাহরণ।
====বৈষ্ণব সংস্কৃতি====
====বৈষ্ণব সংস্কৃতি====
নবদ্বীপের মহাপুরুষ [[চৈতন্য মহাপ্রভু]]র আবির্ভাবে নবদ্বীপে বৈষ্ণব ধর্মাবলম্বীর প্রসার ঘটতে থাকে। চৈতন্য জীবনীকে কেন্দ্র করে বৈষ্ণবসাহিত্যের যে অপার সম্ভার সৃষ্টি হয়, তাতে নবদ্বীপের তৎকালীন ভৌগোলিক অবস্থান ও খ্যাতি সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়। তৎকালীন সময়ে বাংলা তথা নবদ্বীপে জাতপাত সম্পর্কে যে বিদ্বেষী মনোভাব মানুষের মধ্যে ছিল, চৈতন্য মহাপ্রভু নামকীর্তনের মাধ্যমে সেই ভাবধারাকে চূর্ণ করতে পেরেছিলেন। [[কার্ল মার্ক্স|কার্ল মার্কসের]] জাতিতাত্তিক লেখায় চৈতন্যদেবের এই গণআন্দোলন ও সমাজসংস্কারের উল্লেখ পাওয়া যায়।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://books.google.co.in/books/about/The_Ethnological_Notebooks_of_Karl_Marx.html?id=Qi-0AAAAIAAJ&redir_esc=y|শিরোনাম=The Ethnological Notebooks of Karl Marx: (Studies of Morgan, Phear, Maine, Lubbock)|শেষাংশ=Marx|প্রথমাংশ=Karl|তারিখ=1972|প্রকাশক=Van Gorcum|ভাষা=en|page=২৫০-২৫১|আইএসবিএন=978-90-232-0924-9}}</ref> ভারতে বৈষ্ণবধর্মের যে চারটি সম্প্রদায় ছিল, তার মধ্যে চৈতন্যদেবের ধর্মমত ছিল সম্পূর্ণ মৌলিক, তাঁর ধর্মমতে অন্য কোনো সম্প্রদায়ের প্রভাব ছিল না।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://archive.org/details/in.ernet.dli.2015.68279|শিরোনাম=Early History Of The Vaisnava Faith And Movement In Bengal|শেষাংশ=De|প্রথমাংশ=sushil Kumar|তারিখ=1942|page=13}}</ref>
নবদ্বীপের মহাপুরুষ [[চৈতন্য মহাপ্রভু]]র আবির্ভাবে নবদ্বীপে বৈষ্ণব ধর্মাবলম্বীর প্রসার ঘটতে থাকে। চৈতন্য জীবনীকে কেন্দ্র করে বৈষ্ণবসাহিত্যের যে অপার সম্ভার সৃষ্টি হয়, তাতে নবদ্বীপের তৎকালীন ভৌগোলিক অবস্থান ও খ্যাতি সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়। তৎকালীন সময়ে বাংলা তথা নবদ্বীপে জাতপাত সম্পর্কে যে বিদ্বেষী মনোভাব মানুষের মধ্যে ছিল, চৈতন্য মহাপ্রভু নামকীর্তনের মাধ্যমে সেই ভাবধারাকে চূর্ণ করতে পেরেছিলেন। [[কার্ল মার্ক্স|কার্ল মার্কসের]] জাতিতাত্তিক লেখায় চৈতন্যদেবের এই গণআন্দোলন ও সমাজসংস্কারের উল্লেখ পাওয়া যায়।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://books.google.co.in/books/about/The_Ethnological_Notebooks_of_Karl_Marx.html?id=Qi-0AAAAIAAJ&redir_esc=y|শিরোনাম=The Ethnological Notebooks of Karl Marx: (Studies of Morgan, Phear, Maine, Lubbock)|শেষাংশ=Marx|প্রথমাংশ=Karl|তারিখ=1972|প্রকাশক=Van Gorcum|ভাষা=en|page=২৫০-২৫১|আইএসবিএন=978-90-232-0924-9}}</ref> ভারতে বৈষ্ণবধর্মের যে চারটি সম্প্রদায় ছিল, তার মধ্যে চৈতন্যদেবের ধর্মমত ছিল সম্পূর্ণ মৌলিক, তাঁর ধর্মমতে অন্য কোনো সম্প্রদায়ের প্রভাব ছিল না।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://archive.org/details/in.ernet.dli.2015.68279|শিরোনাম=Early History Of The Vaisnava Faith And Movement In Bengal|শেষাংশ=De|প্রথমাংশ=sushil Kumar|তারিখ=1942|page=13}}</ref>
২৫৭ নং লাইন: ২৭০ নং লাইন:
পূর্ব রেলের [[ব্যান্ডেল–কাটোয়া লাইন|ব্যান্ডেল-কাটোয়া]]-আজিমগঞ্জ বিভাগে নবদ্বীপ শিয়ালদহ থেকে ১১২ কিমি দূরে অবস্থিত। উত্তরবঙ্গ, আসাম, বিহার, ওড়িশা এবং কলকাতার সাথে নবদ্বীপের রেল যোগাযোগ খুবই ভাল।
পূর্ব রেলের [[ব্যান্ডেল–কাটোয়া লাইন|ব্যান্ডেল-কাটোয়া]]-আজিমগঞ্জ বিভাগে নবদ্বীপ শিয়ালদহ থেকে ১১২ কিমি দূরে অবস্থিত। উত্তরবঙ্গ, আসাম, বিহার, ওড়িশা এবং কলকাতার সাথে নবদ্বীপের রেল যোগাযোগ খুবই ভাল।
===সড়ক পরিবহণ===
===সড়ক পরিবহণ===
নবদ্বীপের বাস পরিষেবা বিভিন্ন স্থানের সঙ্গে সংযোগ রক্ষা করেছে। নবদ্বীপ বাসস্ট্যান্ড থেকে এটি [[কৃষ্ণনগর]], [[শান্তিপুর]], [[ফুলিয়া]], [[রাণাঘাট]], [[চাকদহ]], নদনঘাট, কুসুমগ্রাম, [[বর্ধমান]], [[করিমপুর]], [[সমুদ্রগড়]], [[মেমারী|মেমারি]], [[কাটোয়া]], [[তারাপীঠ]] ইত্যাদি স্থানে সংযোগ স্থাপন করে। [[দুর্গাপুর]], [[আসানসোল]], [[শিলিগুড়ি]], [[দিনহাটা]], [[বহরমপুর]], [[মালদহ জেলা|মালদহ]], [[কোচবিহার]], [[বোলপুর]], [[পুরুলিয়া]], [[বাঁকুড়া]], [[সিউড়ি]], [[গঙ্গারামপুর]] ইত্যাদির মতো দীর্ঘ-দূরত্বে বাস পরিষেবাও এখানে বর্তমান। নবদ্বীপ গৌরাঙ্গ সেতুর মাধ্যমে [[কৃষ্ণনগর|কৃষ্ণনগরের]] সঙ্গে সড়কপথে নবদ্বীপের যোগাযোগ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া [[সাইকেল রিকশা]] ও বৈদ্যুতিক রিকশার মাধ্যমে শহরতলীর মধ্যে যোগাযোগ সম্পন্ন হয়।
নবদ্বীপের বাস পরিষেবা বিভিন্ন স্থানের সঙ্গে সংযোগ রক্ষা করেছে। নবদ্বীপ বাসস্ট্যান্ড থেকে এটি [[কৃষ্ণনগর]], [[শান্তিপুর]], [[ফুলিয়া]], [[রাণাঘাট|রানাঘাট]], [[চাকদহ]], নাদনঘাট, কুসুমগ্রাম, [[বর্ধমান]], [[করিমপুর]], [[সমুদ্রগড়]], [[মেমারী|মেমারি]], [[কাটোয়া]], [[তারাপীঠ]] ইত্যাদি স্থানে সংযোগ স্থাপন করে। [[দুর্গাপুর]], [[আসানসোল]], [[শিলিগুড়ি]], [[দিনহাটা]], [[বহরমপুর]], [[মালদহ জেলা|মালদহ]], [[কোচবিহার]], [[বোলপুর]], [[পুরুলিয়া]], [[বাঁকুড়া]], [[সিউড়ি]], [[গঙ্গারামপুর]] ইত্যাদির মতো দীর্ঘ-দূরত্বে বাস পরিষেবাও এখানে বর্তমান। নবদ্বীপ গৌরাঙ্গ সেতুর মাধ্যমে [[কৃষ্ণনগর|কৃষ্ণনগরের]] সঙ্গে সড়কপথে নবদ্বীপের যোগাযোগ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া [[সাইকেল রিকশা]] ও বৈদ্যুতিক রিকশার (টোটোগাড়ি) মাধ্যমে শহরতলির মধ্যে যোগাযোগ সম্পন্ন হয়।


== সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ==
== সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ==

১৬:২৬, ১৮ জুলাই ২০২০ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

নবদ্বীপ
প্রাচ্যের অক্সফোর্ড
শহর
উপর থেকে ঘড়ির কাঁটার ক্রমে: চৈতন্য মহাপ্রভু, ডুমুরেশ্বরী মাতা, পীরারীতির প্রাচীন মহাপ্রভু মন্দির, গঙ্গায় নৌ-চলাচল, মা পোড়ামা, বুড়োশিব
ডাকনাম: চৈতন্যের জন্মস্থান
নবদ্বীপ পশ্চিমবঙ্গ-এ অবস্থিত
নবদ্বীপ
নবদ্বীপ
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে নবদ্বীপের অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ২৩°২৫′ উত্তর ৮৮°২২′ পূর্ব / ২৩.৪২° উত্তর ৮৮.৩৭° পূর্ব / 23.42; 88.37
দেশ ভারত
রাজ্যপশ্চিমবঙ্গ
জেলানদিয়া
প্রতিষ্ঠিত১০৬৩ (খ্রিস্টাব্দ)
সরকার
 • ধরনপৌরসভা
 • শাসকনবদ্বীপ পৌরসভা
আয়তন
 • মোট৯৮.০১ বর্গকিমি (৩৭.৮৪ বর্গমাইল)
উচ্চতা১৪ মিটার (৪৬ ফুট)
জনসংখ্যা (২০১১)
 • মোট১,৭৫,৪৭৪
 • জনঘনত্ব১,৮০০/বর্গকিমি (৪,৬০০/বর্গমাইল)
ভাষা
 • সরকারীবাংলা, ইংরেজি
সময় অঞ্চলআইএসটি (ইউটিসি+৫:৩০)
পিন৭৪১৩০২
টেলিফোন ডোক০৩৪৭২
যানবাহন নিবন্ধনডব্লুবি ৫২ (WB 52)
লোকসভা কেন্দ্ররানাঘাট
বিধানসভা কেন্দ্রনবদ্বীপ

নবদ্বীপ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের নদিয়া জেলার একটি সুপ্রাচীন শহর ও পৌরসভা এলাকা। নবদ্বীপ চৈতন্য মহাপ্রভুর জন্মস্থান ও লীলাক্ষেত্রর জন্য বিখ্যাত। নবদ্বীপ পৌরসভা ১৮৬৯ সালে স্থাপিত। বাংলায় সেন রাজাদের আমলে (১১৫৯ - ১২০৬) নবদ্বীপ ছিল রাজধানী। ১২০২ সালে রাজা লক্ষ্মণ সেনের সময় বখতিয়ার খলজি নবদ্বীপ জয় করেন[১] যা বাংলায় মুসলিম সাম্রাজ্যের সূচনা করে। চৈতন্যের সময়ে বাসুদেব সার্বভৌম, রঘুনাথ শিরোমণি, স্মার্ত রঘুনন্দন প্রমুখ এবং পরবর্তীতে কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশ, বুনোরামনাথ প্রমুখের পাণ্ডিত্যে তৎকালীন সময় থেকে নবদ্বীপ সংস্কৃতচর্চা ও বিদ্যালাভের পীঠস্থান হয়ে ওঠে। নবদ্বীপ ছিল সেই সময়ে বিদ্যালাভের পীঠস্থান ও একে বলা হত বাংলার অক্সফোর্ড[২]

চৈতন্য জীবনীকার বৃন্দাবন দাস লিখেছেন —

নামকরণ

নবদ্বীপ নামের উৎস সম্বন্ধে নানা ধারনা প্রচলিত আছে। নবদ্বীপ ও নদিয়া এই দুটি নামই এই জনপদে প্রচলিত। এই শহর বহু বার বৈদেশিক আক্রমণের শিকার হয়েছে, যার ফলে উচ্চারণের বিকৃতির মাধ্যমে নদিয়া ও নবদ্বীপ সম্পর্কযুক্ত হতে পারত, যদিও তা হয় নি। নবদ্বীপ, 'নূদীয়া' 'নওদিয়া'বা 'নদীয়াহ' হয়েছে ভাষান্তরের জন্য। রজনীকান্ত চক্রবর্তী স্পষ্ট জানিয়েছেন, "মিনহাজউদ্দিন সিরাজির গ্রন্থে নবদ্বীপকে নওদিয়ার বলা হইয়াছে। নওদিয়ার শব্দে নূতন দেশ।" [৩] নূতন দেশ বলতে এখানে গঙ্গাবিধৌত পলিসঞ্জাত নুতন দ্বীপকেই বোঝান হয়েছে।

কবি কর্ণপুর তাঁর চৈতন্য চরিতামৃতাম্ মহা কাব্যে নবদ্বীপকে নবীন দ্বীপং বলে উল্লেখ করেছেন।[৪] ষোড়শ শতাব্দীতে নুলো পঞ্চানন বলেছেন, কহেন রাজা কাহার কথা অভিলাশ। নব নব দ্বীপপুঞ্জ নবদ্বীপে প্রকাশ।[৫] লক্ষ্মণ সেনের সমসাময়িক এডু মিশ্র নবদ্বীপ সম্বন্ধ্যে বলেছেন, গঙ্গাগর্ভোস্থিত দ্বীপ দ্বীপপূঞ্জৈবর্হিধৃত। প্রতিচ্যাং যস্য দেশস্য গঙ্গাভাতি নিরন্তরম।

নবদ্বীপ নামটির প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায় কৃত্তিবাস ওঝার রামায়াণে।[৬] তিনি অবশ্য নদিয়া এবং নবদ্বীপ দুটি নামই উল্লেখ করেছেন- গঙ্গারে লইয়া জান আনন্দিত হইয়া আসিয়া মিলিল গঙ্গা তীর্থ যে নদীয়া। সপ্তদ্বীপ মধ্যে সার নবদ্বীপ গ্রাম। একঅরাত্রি গঙ্গা তথা করিল বিশ্রাম।। মৃত্যুঞ্জয় মণ্ডলের মতে গঙ্গা গর্ভোত্থিত নতুন দ্বীপটি সংস্কৃতজ্ঞ পণ্ডিতদের সুসংবদ্ধ উচ্চারণে হয়ে ছিল ‘নবদ্বীপ’। পরে ত্রয়োদশ শতাব্দীর প্রারম্ভে বখতিয়ার খলজি নবদ্বীপ জয় করার পর ফার্সি-ভাষায় নবদ্বীপ অর্থে নতুন দ্বীপ কথাটির ভাষান্তর ঘটিয়ে ‘নদিয়া’ করেছেন মাত্র।[৩]
অষ্টাদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে নরহরি চক্রবর্তী (ঘনশ্যাম দাস) প্রচার করলেন নবদ্বীপ হচ্ছে নয়টি দ্বীপের সমষ্টি। তিনি বলেন-

নরহরি চক্রবর্তীর পূর্বে রচিত বিশাল বৈষ্ণব-সাহিত্যের কথাও নবদ্বীপকে নয়টি দ্বীপের সমষ্টি বলা হয়নি। তিনিই প্রথম নয়টি স্থানকে দ্বীপ হিসাবে চিহ্নিত করে প্রচার করেন।[৭]

নদিয়ার নামকরণ প্রসঙ্গে কান্তিচন্দ্র রাঢ়ী একটি কিংবদন্তির উল্লেখ করেছেন। তিনি লিখেছেন যে,

ইতিহাস

নবদ্বীপের ইতিহাসের উল্লেখযোগ্য দৃষ্টান্ত সেন যুগ থেকে পাওয়া গেলেও বিভিন্ন ঐতিহাসিক পাল যুগে এবং শূরবংশে নবদ্বীপের উল্লেখ করছেন। সমসাময়িক লেখমালা ও পুঁথিপত্রে আদিশূরের উল্লেখ পাওয়া না যাওয়ায় অনেক ইতিহাসবিদ আদিশূরকে ঐতিহাসিক চরিত্র হিসেবে না মানলেও ঐতিহাসিক ভিনসেন্ট আদিশূরের অস্তিত্ব স্বীকার করেছেন।[৯] ইংরেজ ঐতিহাসিক নবদ্বীপকে আদিশূরের রাজধানী বলে উল্লেখ করেছেন।[১০]

সেন যুগ

রাজশাহী জেলার দেওপাড়া প্রস্তর ফলক থেকে জানা যায়, কর্ণাটক নিবাসী রাজা সামন্ত সেন তার প্রজা ও জমিদারদের দ্বারা পরাভূত হলে শেষ বয়সে গঙ্গা-পুলিনে বাস করেন। বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর মতে সামন্ত সেন শেষ বয়সে ভাগীরথী তীরবর্তী নবদ্বীপে বাস করেন।[১১] গৌড়ের পূর্বে, লক্ষ্মণসেন ও বল্লালসেনের সময়ে নবদ্বীপ সেন রাজাদের রাজধানী ছিল। ১১৫৯ থেকে ১২০৬ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তারা বাংলায় রাজত্ব করেন। নবদ্বীপ সংলগ্ন বামনপুকুর অঞ্চলে সেন-স্মৃতি বিজড়িত বল্লাল ঢিপি ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ দ্বারা সংরক্ষিত করা হয়েছে।[১২] লক্ষ্মণসেনের রাজত্বকালে ১২০২ খ্রিস্টাব্দে বখতিয়ার খলজি নবদ্বীপ আক্রমণ ও লুটপাট করেন এবং লক্ষ্মণসেনকে পরাজিত করে বাংলায় মুসলিম শাসনের সূচনা করে। সেইসময় নবদ্বীপের সমৃদ্ধি বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মুসলিম শাসনকালে বাংলা তথা নবদ্বীপের বিভিন্ন মন্দির-সুবর্ণবিহার ও প্রতিমা ধংস করা হয়।[১৩]

চৈতন্য যুগ

চৈতন্য মহাপ্রভুর জন্ম পঞ্চদশ শতাব্দীর একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। চৈতন্য মহাপ্রভুর আবির্ভাবে নবদ্বীপে বৈষ্ণব সংস্কৃতি সুপ্রতিষ্ঠিত হয়। তবে মহাপ্রভুর জন্মের পূর্ব থেকেই জালালুদ্দীন ফতেহ্ শাহের(১৪৮১-৮৭) রাজত্বকালে নবদ্বীপে রাজভয় উপস্থিত হয়েছিল। শাসক সমাজ ও ব্রাহ্মণ সমাজ নবদ্বীপে বৈষ্ণব সংস্কৃতির প্রসারে বাধা সৃষ্টি করে।[১৪] রাজ-অত্যাচারের কারণে তৎকালীন সময়ে বহু ব্রাহ্মণ-পন্ডিত ও সাধারণ মানুষকে নবদ্বীপ ত্যাগ করতে হয়। তবে তৎকালীন নবদ্বীপের শাসক চাঁদ কাজী বৈষ্ণব সমাজকে নাম-সংকীর্তন বন্ধের আদেশ জারি করলে মহাপ্রভু তাঁর পার্ষদদের সঙ্গে কাজী বাড়ি গিয়ে কাজী দলন বা উদ্ধার করেন, যা ভারতের ইতিহাসে সত্যের প্রতিষ্ঠায় প্রথম আইন অমান্য আন্দোলনের দৃষ্টান্ত।[১৫] চৈতন্য ও তৎপরবর্তী সময়ে নবদ্বীপে বিভিন্ন পণ্ডিত-সাধক-বিদ্যালঙ্কার এবং সংস্কৃত পণ্ডিতেরা জন্মগ্রহণ করেন। চৈতন্যের সময়ে বাসুদেব সার্বভৌম, রঘুনাথ শিরোমণি, স্মার্ত রঘুনন্দন প্রমুখ এবং পরবর্তীতে কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশ, বুনোরামনাথ প্রমুখের পাণ্ডিত্যে তৎকালীন সময় থেকে নবদ্বীপ সংস্কৃতচর্চা ও বিদ্যালাভের পীঠস্থান হয়ে ওঠে। নদিয়ারাজ রুদ্র রায়ের সময় নবদ্বীপে চার হাজার ছাত্র এবং ছয়শো অধ্যাপক অধ্যাপনা করতেন।[১৬]

চৈতন্য জীবনীকাব্যে পাওয়া যায় —

পরবর্তী শতক

বুনো রামনাথ, শঙ্কর তর্কবাগীশ প্রমুখ নৈয়ায়িক অষ্টাদশ শতকে ন্যায়চর্চায় নবদ্বীপের নাম উজ্জ্বল করেছিলেন। নদিয়া রাজপরিবারের মহারাজ রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের সময়ে নবদ্বীপে শক্তি পূজার প্রসার ঘটে। রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায় এবং পরবর্তীতে রাজা গিরীশচন্দ্রের সময়ে নবদ্বীপে শাক্তরাসযাত্রার জনপ্রিয়তা ও জৌলুস বৃদ্ধি পায়। এই সময়ে নবদ্বীপে বিভিন্ন মন্দির-প্রতিমা প্রতিষ্ঠিত হয়।[১৭]

ভৌগলিক অবস্থান

নবদ্বীপের অক্ষাংশ ২৩.৪২° উত্তর এবং দ্রাঘিমা ৮৮.৩৭° পূর্ব।[১৮] সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে গড় উচ্চতা ১৪ মিঃ(৪৬ ফুট)। ভাগীরথীজলঙ্গী নদীর উদ্ভেদে এবং ভাগীরথীর পশ্চিম পাড়ে[১৯] এর অবস্থান।

জনসংখ্যার উপাত্ত

নবদ্বীপের ধর্মবিশ্বাস (২০১১)[২০]

  হিন্দুধর্ম (৯৮.৯৭%)
  ইসলাম (০.৭৯%)
  শিখধর্ম (০.০১%)
  জৈন ধর্ম (০.০০%)
  অন্যান্য (০.০১%)
  বিবৃতি নেই (০.১৮%)

ভারতের ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুসারে নবদ্বীপ শহরের জনসংখ্যা হল ১,৭৫,৪৭৪ জন।[২১] এর মধ্যে পুরুষ ৫১.৭৫% এবং নারী ৪৮.২৫%। এই শহরের জনসংখ্যার ৭.৪৪% হল ৬ বছর বা তার কম বয়সী। সাক্ষরতার হার ৮৭.৫৭%।

২০০১ সালের আদমশুমারি অনুসারে নবদ্বীপ শহরের জনসংখ্যা ছিল ১,১৫,০৩৬ জন। পুরুষদের মধ্যে সাক্ষরতার হার ৮০% এবং নারীদের মধ্যে এই হার ৭০%। সারা ভারতের সাক্ষরতার হার ৫৯.৫%, তার চাইতে নবদ্বীপের সাক্ষরতার হার বেশি।

ধর্মবিশ্বাস

নবদ্বীপের সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্মীয় সম্প্রদায় হল হিন্দু (মোট জনসংখ্যার ৯৮.৯৭%)। নবদ্বীপে বসবাসকারী ইসলাম ধর্মে, ০.৭৯ %, খ্রিস্ট ধর্মে ০.০৪ %, শিখধর্মে ০.০১ % মানুষ বিশ্বাসী। এছাড়া অন্যান্য ধর্মে বিশ্বাসী ০.০১ % এবং বিবৃতি নেই এমন মানুষ ০.১৮ %।

জলবায়ু

নবদ্বীপের জলবায়ু "ক্রান্তীয় সাভানা" প্রকৃতির ("কোপেন জলবায়ু শ্রেণিবিভাগ" অনুসারে Aw) হয়। গ্রীষ্মকাল, অর্থাৎ এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত আবহাওয়া উষ্ম থাকে এবং তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে সর্বনিম্ন ২৬ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড হয়। গ্রীষ্মকালে আর্দ্রতার স্তর বৃদ্ধি পায়। জুন থেকে শুরু করে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে বর্ষাকাল বিরাজ করে। নবদ্বীপে প্রতিবছর গড়ে ১২৫ দিন বৃষ্টিপাত হয় এবং বার্ষিক ১,৪৬৯ মিমি (৫৭.৮ ইঞ্চি) বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে। শীতকালে তাপমাত্রা গড়ে সর্বোচ্চ ২৬° থেকে সর্বনিম্ন ১২° হয়ে থাকে। গড় আপেক্ষিক আর্দ্রতা ৫২%, যার মধ্যে মার্চ মাসে সর্বনিম্ন আদ্রতা থাকে। আবহাওয়া মনোরম প্রকৃতির হলেও, গ্রীষ্ম এবং শীতকালে জলবায়ুর তীব্রতা ঘটে। গ্রীষ্মের শুরুতে প্রায়শই ঝড় ও বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে। এই ধরনের ঝড়বৃষ্টি প্রকৃতিগতভাবে ঘটে, যার স্থানীয় নাম কালবৈশাখী। অত্যাধিক বৃষ্টির প্রভাবে এবং ভাগীরথী নদীর জলস্তর বৃদ্ধির কারণে এখানে প্রায়শই বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।[২২]

নবদ্বীপ-এর আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য
মাস জানু ফেব্রু মার্চ এপ্রিল মে জুন জুলাই আগস্ট সেপ্টে অক্টো নভে ডিসে বছর
সর্বোচ্চ গড় °সে (°ফা) ২৬
(৭৯)
২৯
(৮৪)
৩৪
(৯৩)
৩৭
(৯৯)
৩৭
(৯৯)
৩৫
(৯৫)
৩৩
(৯১)
৩৩
(৯১)
৩৩
(৯১)
৩৩
(৯১)
৩১
(৮৮)
২৭
(৮১)
৩২
(৯০)
সর্বনিম্ন গড় °সে (°ফা) ১২
(৫৪)
১৫
(৫৯)
২০
(৬৮)
২৪
(৭৫)
২৫
(৭৭)
২৬
(৭৯)
২৫
(৭৭)
২৫
(৭৭)
২৫
(৭৭)
২৩
(৭৩)
১৮
(৬৪)
১৩
(৫৫)
২১
(৭০)
বৃষ্টিপাতের গড় মিমি (ইঞ্চি)
(০.০)

(০.১)

(০.১)

(০.২)
১০৭
(৪.২)
২৪৩
(৯.৬)
৩৭৭
(১৪.৮)
৩২১
(১২.৬)
২৮০
(১১.০)
১২৯
(৫.১)

(০.০)

(০.০)
১,৪৬৯
(৫৭.৭)
বৃষ্টিবহুল দিনগুলির গড় ১২ ১৮ ২৩ ২২ ১৮ ১১ ১২৫
আপেক্ষিক আদ্রতার গড় (%) ৬৩ ৫৫ ৫২ ৫৮ ৬৫ ৭৫ ৮৩ ৮৩ ৮১ ৭৪ ৬৬ ৬৫ ৬৮
দৈনিক সূর্যালোক ঘণ্টার গড় ৬.৬ ৭.১ ৭.৩ ৭.৮ ৭.৩ ৪.১ ৩.০ ৩.৪ ৩.৯ ৫.৯ ৬.৪ ৬.৬ ৫.৮
উৎস: [১]

শিক্ষা

নবদ্বীপ বকুলতলা উচ্চ বিদ্যালয়

নবদ্বীপে মোট ১৮টি উচ্চ বিদ্যালয় আছে; এদের মধ্যে নবদ্বীপ বকুলতলা উচ্চ বিদ্যালয়, নবদ্বীপ হিন্দু স্কুল, নবদ্বীপ শিক্ষা মন্দির, আর. সি. বি. সারস্বত মন্দির, জাতীয় বিদ্যালয়, তারাসুন্দরী বালিকা (উচ্চ) বিদ্যালয়, নবদ্বীপ বালিকা বিদ্যালয় উল্লেখযোগ্য। এখানে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে নবদ্বীপ বিদ্যাসাগর মহাবিদ্যালয় নামে একটি মহাবিদ্যালয়ও আছে।

সংস্কৃতি

ধর্মকেন্দ্রিকতা

নবদ্বীপের সাংস্কৃতিক আভিজাত্যে মিশ্র প্রভাব লক্ষ করা যায়। বৈষ্ণব-শাক্ত-শৈব সংস্কৃতির সংমিশ্রণে নবদ্বীপের প্রাচীনত্ব বিরাজমান। নবদ্বীপের শৈব সংস্কৃতিতে বৌদ্ধ প্রভাব লক্ষ করা যায়, যা প্রধানত পালযুগের বৌদ্ধধর্মাবলম্বীদের কারণে। নবদ্বীপের শক্তি উপাসনায় তন্ত্রের উপস্থিতিও বৌদ্ধ প্রভাবের কারণে ঘটেছে। চৈতন্যদেবের মাধ্যমে নবদ্বীপে যে গৌড়ীয় বৈষ্ণবধর্মের উৎপত্তি ঘটে, তা সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র ভাবধারা।

শাক্ত সংস্কৃতি

দ্বাদশ-ত্রয়োদশ শতক থেকে নবদ্বীপে শক্তি সাধনার প্রসার ঘটতে থাকে। নবদ্বীপের তন্ত্রসাধক কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশ দক্ষিণাকালীর রুপ বর্ণনা করে বাংলায় কালী পূজার প্রসার ঘটান।[২৩] নবদ্বীপের শাক্তদেবীর মধ্যে অন্যতম পোড়ামাতলার মা পোড়ামা। এছাড়া কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশ পূজিত আগমেশ্বরী মাতা, এলানিয়াকালী মাতা, ওলাদেবী, সিদ্ধেশ্বরী মাতা উল্লেখযোগ্য। রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের পৃষ্ঠপোষকতায় নবদ্বীপে শাক্তরাসের জনপ্রিয়তা ও জৌলুস বৃদ্ধি পেতে থাকে। পরবর্তীতে রাজা গিরীশচন্দ্রের সময়ে এটি নবদ্বীপের অন্যতম প্রধান উৎসবে পরিণত হয়। শাক্তদেবীদের বিশাল মৃন্ময়ী প্রতিমা নির্মাণ করে শক্তি আরাধনা নবদ্বীপের রাসের প্রধান বৈশিষ্ট্য।[২৪] শিবের মুখোশ এখানকার শৈব সংস্কৃতির একটি উল্লেখযোগ্য উদাহরণ।

বৈষ্ণব সংস্কৃতি

নবদ্বীপের মহাপুরুষ চৈতন্য মহাপ্রভুর আবির্ভাবে নবদ্বীপে বৈষ্ণব ধর্মাবলম্বীর প্রসার ঘটতে থাকে। চৈতন্য জীবনীকে কেন্দ্র করে বৈষ্ণবসাহিত্যের যে অপার সম্ভার সৃষ্টি হয়, তাতে নবদ্বীপের তৎকালীন ভৌগোলিক অবস্থান ও খ্যাতি সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়। তৎকালীন সময়ে বাংলা তথা নবদ্বীপে জাতপাত সম্পর্কে যে বিদ্বেষী মনোভাব মানুষের মধ্যে ছিল, চৈতন্য মহাপ্রভু নামকীর্তনের মাধ্যমে সেই ভাবধারাকে চূর্ণ করতে পেরেছিলেন। কার্ল মার্কসের জাতিতাত্তিক লেখায় চৈতন্যদেবের এই গণআন্দোলন ও সমাজসংস্কারের উল্লেখ পাওয়া যায়।[২৫] ভারতে বৈষ্ণবধর্মের যে চারটি সম্প্রদায় ছিল, তার মধ্যে চৈতন্যদেবের ধর্মমত ছিল সম্পূর্ণ মৌলিক, তাঁর ধর্মমতে অন্য কোনো সম্প্রদায়ের প্রভাব ছিল না।[২৬]

শৈব সংস্কৃতি

নবদ্বীপের সাংস্কৃতিক আভিজাত্যে শৈবসংস্কৃতির প্রভাব বিশেষভাবে লক্ষণীয়। পাল যুগে নবদ্বীপ বৌদ্ধ ধর্মের পীঠস্থান হওয়ায় নবদ্বীপের শিবলিঙ্গগুলোর বেশিরভাগই বৌদ্ধ প্রভাবিত। নবদ্বীপের পশ্চিমমে ‘পারডাঙা’র ঢিপির ( বর্তমানে ‘পাড়পুর’) ধ্বংসাবশেষ থেকে বৌদ্ধ-প্রভাবিত অনেকগুলি শিবমূর্তিগুলি পাওয়া যায়। নবদ্বীপের বুড়োশিব, যোগনাথ, বানেশ্বর, হংসবাহন, পারডাঙার শিব প্রভৃতি বৌদ্ধ প্রভাবিত শিবলিঙ্গ বর্তমান।[২৭] এঁদের কোন গৌরীপট্ট নেই। নবদ্বীপের বুড়োশিব, যোগনাথ, বানেশ্বর, দণ্ডপাণি, হংসবাহন, অলকনাথ, বালকনাথ, ভবতারণ, পোলোশ্বর শিব মূর্তিগুলোর মধ্যে ভবতারণ ও অলোকনাথ ব্রাহ্মণ্য সংস্কৃতির চিহ্ন যুক্ত প্রতিষ্ঠিত শিব। নদিয়ার রাজারা এই দুই শিবের প্রতিষ্ঠাতা। অলকনাথ প্রতিষ্ঠা করেন মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র আর ভবতারণ প্রতিষ্ঠা করেন মহারাজ গিরিশচন্দ্র রায় (১৮২৫ খ্রি)। ভবতারণ শিবের গাজন হয় না। বালকনাথ শিব কুড়িয়ে পেয়ে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন শ্যামাচরণ দাস। পোলো দিয়ে মাছ ধরতে গিয়ে যে মূর্তি পাওয়া যাওয়ায় তার নাম পোলোশ্বর শিব। হংসবাহন শিব সারাবছর হংসদার বিলে নিমজ্জিত থাকেন, গাজনের কদিন মন্দিরে অধিস্থান করেন। পূর্বে এটা ছিল বৌদ্ধ মূর্তি ছিল, হংসের উপর স্থাপিত প্রস্তর নির্মিত পঞ্জর চিহ্নযুক্ত শিলাটি বর্তমানে শিব রূপে পূজিত হয়। গাজনের পাঁচ দিন নবদ্বীপের আপামর জনগণ উৎসবে মেতে ওঠেন।[২৮]

উৎসব

বামদিকে: ২০১৪ সালে নবদ্বীপের রাসযাত্রায় গৌরাঙ্গিনী মাতা; ডানদিকে: নবদ্বীপের রাস্তায় কীর্তনরত চৈতন্য মহাপ্রভু এবং নিত্যানন্দ

নবদ্বীপে বছরজুড়ে অনেক উৎসব পালিত হয়। এখানকার উৎসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল- নববর্ষ, শাক্তরাস, চন্দনযাত্রা, গাজন উৎসব, রথযাত্রা, দুর্গা পূজা, শিবের বিয়ে, দোল পূর্ণিমা, ঝুলন পূর্ণিমা, ধুলোট, গৌর-পূর্ণিমা, গঙ্গা পূজা, সরস্বতী পূজা, গুরু পূর্ণিমা প্রভৃতি। এদের মধ্যে রাসযাত্রা এবং দোলযাত্রারথযাত্রা মহাসমারহে পালিত হয়। নবদ্বীপের বিলুপ্তপ্রায় একটি উৎসব হল ধুলোট। এটি মাঘ মাসে হওয়া কীর্তনিয়াদের একটি সাধারণ সম্মেলন। সাধারণত সমগ্র বাংলার খ্যাতিমান কীর্তনীয়গণ নবদ্বীপে একত্রিত হয়ে তেরো দিন ব্যাপী নাম-সংকীর্তন করতেন।[২৯]

শাক্তরাস

শাক্তরাস নবদ্বীপের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং প্রাচীন উৎসব, যা শারদীয় দুর্গা পূজা উদযাপনের পঁয়ত্রিশ দিন পরে বা কার্তিক পূর্ণিমাতে কালী পূজার পনের দিন পরে উদযাপিত হয়। বিভিন্ন দেব-দেবীর বিশাল মৃন্ময়ী প্রতিমা গড়ে শক্তির উপাসনা করা এই উৎসবের মূল বৈশিষ্ট্য। রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায় এবং পরবর্তীতে প্রধানত রাজা গিরিশচন্দ্র পৃষ্ঠপোষকতার নবদ্বীপ শাক্তরাস জনপ্রিয় ও গৌরবময় হয়ে ওঠে।

রথযাত্রা

বামদিকে: নটকনা ফল, বিশেষত নবদ্বীপে রথযাত্রার সময় পাওয়া যায়; ডানদিকে: নবদ্বীপে রথ-যাত্রায় হাত-সহ জগন্নাথের অপূর্ব বিগ্রহ

রথযাত্রা ওড়িশার প্রধান উৎসব হলেও চৈতন্য মহাপ্রভুর জন্য নবদ্বীপের রথযাত্রার গর্ব রয়েছে। প্রায় ২০-২৫ টি রথ এই উপলক্ষে বের হয়। এখানে ভগবান জগন্নাথের সম্পূর্ণ হাতযুক্ত বিগ্রহের ব্যতিক্রমী উদাহরণ পরিলক্ষিত হয়। এখানে রথযাত্রার আরেকটি বিশেষত্ব হ'ল "নটকনা" নামক একটি ফল, যা বিশেষত এই সময়ে পাওয়া যায়।[৩০]

নবদ্বীপ থানা

নবদ্বীপ থানার এখতিয়ারভুক্ত অঞ্চল হল নবদ্বীপ পৌরসভা এবং নবদ্বীপ কমিউনিটি উন্নয়ন ব্লক।[৩১][৩২] নবদ্বীপ থানার আওতাভুক্ত অঞ্চল ১০২.৯৪ বর্গকিলোমিটার এবং জনসংখ্যা ২৬০,৮৪৩ (২০০১ অনুযায়ী)।[৩৩]

পরিবহন

রেলপথ

নবদ্বীপ ধাম রেলওয়ে স্টেশন হল নবদ্বীপের প্রধান রেল স্টেশন। রেলপথটি ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে চালু করা হয়। এটি হাওড়া থেকে ব্যান্ডেল-কাটোয়া শাখা লাইনের ১০৫ কিমি এবং কাটোয়া থেকে ৪০ কিমি দূরে অবস্থিত। নবদ্বীপ ধাম রেলওয়ে স্টেশন ভারতের সপ্তমতম দীর্ঘতম রেলওয়ে স্টেশন (২৩৬২ ফুট)। বিষ্ণুপ্রিয়া রেলওয়ে স্টেশন নবদ্বীপের আরেকটি হাল্ট স্টেশন, যা হাওড়া জংশন থেকে ১০৭ কিলোমিটার এবং কাটোয়া জংশন থেকে ৩৮ কিমি দূরে অবস্থিত। পূর্ব রেলের ব্যান্ডেল-কাটোয়া-আজিমগঞ্জ বিভাগে নবদ্বীপ শিয়ালদহ থেকে ১১২ কিমি দূরে অবস্থিত। উত্তরবঙ্গ, আসাম, বিহার, ওড়িশা এবং কলকাতার সাথে নবদ্বীপের রেল যোগাযোগ খুবই ভাল।

সড়ক পরিবহণ

নবদ্বীপের বাস পরিষেবা বিভিন্ন স্থানের সঙ্গে সংযোগ রক্ষা করেছে। নবদ্বীপ বাসস্ট্যান্ড থেকে এটি কৃষ্ণনগর, শান্তিপুর, ফুলিয়া, রানাঘাট, চাকদহ, নাদনঘাট, কুসুমগ্রাম, বর্ধমান, করিমপুর, সমুদ্রগড়, মেমারি, কাটোয়া, তারাপীঠ ইত্যাদি স্থানে সংযোগ স্থাপন করে। দুর্গাপুর, আসানসোল, শিলিগুড়ি, দিনহাটা, বহরমপুর, মালদহ, কোচবিহার, বোলপুর, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, সিউড়ি, গঙ্গারামপুর ইত্যাদির মতো দীর্ঘ-দূরত্বে বাস পরিষেবাও এখানে বর্তমান। নবদ্বীপ গৌরাঙ্গ সেতুর মাধ্যমে কৃষ্ণনগরের সঙ্গে সড়কপথে নবদ্বীপের যোগাযোগ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া সাইকেল রিকশা ও বৈদ্যুতিক রিকশার (টোটোগাড়ি) মাধ্যমে শহরতলির মধ্যে যোগাযোগ সম্পন্ন হয়।

সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন

নবদ্বীপ সাধারণ গ্রন্থাগার (পাবলিক লাইব্রেরী)

নবদ্বীপে বিভিন্ন ধরনের সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন রয়েছে। এর মধ্যে চিকিৎসক সংগঠন হিসাবে আছে নবদ্বীপ হোমিও স্টাডি সার্কেল, ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশান, লায়ন্স ক্লাব ইত্যাদি; ক্লাবগুলোর মধ্যে নদিয়া ক্লাব, টাউন ক্লাব, নির্ভীক সমিতি, স্পোর্টিং ক্লাব, বিদ্যাসাগর ক্লাব, আথেলেটিক ক্লাব, বিদ্যার্থী মণিমেলা, প্রগতি পরিষদ, উত্তরপ্রবেশ, পুরাতত্ত্ব পরিষদ ইত্যাদি; গ্রন্থাগারের মধ্যে নবদ্বীপ সাধারণ গ্রন্থাগার, আদর্শ পাঠাগার, প্রগতি পরিষদ পাঠাগার, বঙ্গবাণী এরিয়া লাইব্রেরি উল্লেখযোগ্য।

বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব

তথ্যসূত্র

  1. Ahmed, Farooqui Salma (২০১১)। A Comprehensive History of Medieval India: From Twelfth to the Mid-Eighteenth Century (ইংরেজি ভাষায়)। Pearson Education India। পৃষ্ঠা ৫৩। আইএসবিএন 978-81-317-3202-1 
  2. Cotton, Sir Evan (১৯৮০)। Calcutta, Old and New: A Historical and Descriptive Handbook to the City (ইংরেজি ভাষায়)। General Printers & Publishers। পৃষ্ঠা ১। 
  3. মন্ডল, মৃত্যঞ্জয়। নবদ্বীপের ইতিবৃত্ত। পৃষ্ঠা ৫৯। 
  4. Kabikarnapur (১৯৫৮)। Shree Krishna Chaitanya Charitamrita Mahakavyam। পৃষ্ঠা ১৬৮। 
  5. Sharma, lalmohan (১৯০৮)। Sambandha Nirnay Ed. 3rd। পৃষ্ঠা ৭১৪। 
  6. Sen, Sattyendranath (১৯৫৯)। Krittibas-birachita Ramayan। পৃষ্ঠা ২১। 
  7. Srila Narahari Chakravarti Thakura। Bhakti Ratnakar। পৃষ্ঠা ৫০-৫২। 
  8. Dutta, phanibhushan Ed (১৯৩৭)। Nabadwip-mahima Ed. 2 Vol. 1 And 2। পৃষ্ঠা ১৪। 
  9. Smith, vincent A. (১৯২৩)। The Oxford History Of India,ed.2। পৃষ্ঠা ১৮৪-১৮৫। 
  10. Marshman, John Clark (১৮৫৩)। Marshman's History of Bengal, in Bengali (ইংরেজি ভাষায়)। 
  11. Sastri Haraprasad (১৮৯৬)। A School History Of India। পৃষ্ঠা ৩৪। 
  12. Rāṛhī, Kānticandra (২০০৪)। Nabadvīpa-mahimā। Nabadvīpa Purātattva Parishada। পৃষ্ঠা ৫৫। 
  13. Jūzjānī, Minhāj Sirāj (১৮৮১)। Tabaḳāt-i-Nāṣirī: A General History of the Muhammadan Dynasties of Asia, Including Hindūstān, from A.H. 194 [810 A.D.], to A.H. 658 [1260 A.D.], and the Irruption of the Infidel Mug̲h̲als Into Islam (ইংরেজি ভাষায়)। Asiatic Society of Bengal। পৃষ্ঠা ৫৫৯। 
  14. Jaẏānanda; Majumdar, Bimanbehari; Mukhopadhyay, Sukhamay (১৯৭১)। Jayānandaʼs Caitanya-maṅgala = Jaẏānanda biracita Caitanyamaṅgala। Calcutta: The Asiatic Society। ওসিএলসি 499557268 
  15. "ধর্মের বেড়াজাল ভেঙে সাম্যের ধারণার প্রতিষ্ঠা"anandabazar.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-১৩ 
  16. Mookerji, Radhakumud (১৯৮৯)। Ancient Indian Education: Brahmanical and Buddhist (ইংরেজি ভাষায়)। Motilal Banarsidass Publ.। আইএসবিএন 978-81-208-0423-4 
  17. Roy, Alok Ed (১৯৫৮)। Sekaler Darogar Kahini Ed. 2nd 
  18. Falling Rain Genomics, Inc - Nabadwip
  19. "Rail India"। ২ মে ২০০১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ এপ্রিল ২০১৫ 
  20. "Nabadwip Religion 2011"। সংগ্রহের তারিখ ২২ মার্চ ২০১৭ 
  21. "Urban Agglomerations/Cities having population 1 lakh and above" (পিডিএফ)Provisional Population Totals, Census of India 2011। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-১০-২১ 
  22. d.o.o, Yu Media Group। "Nabadwip, India - Detailed climate information and monthly weather forecast"Weather Atlas (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-১৩ 
  23. ভট্টাচার্য, বিভূতিসুন্দর। "কৃষ্ণানন্দের হাত ধরে বাংলার ঘরে এলেন কালী"anandabazar.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-১৩ 
  24. Roy, Alok Ed (১৯৫৮)। Sekaler Darogar Kahini Ed. 2nd। পৃষ্ঠা ৩৪-৩৫। 
  25. Marx, Karl (১৯৭২)। The Ethnological Notebooks of Karl Marx: (Studies of Morgan, Phear, Maine, Lubbock) (ইংরেজি ভাষায়)। Van Gorcum। পৃষ্ঠা ২৫০-২৫১। আইএসবিএন 978-90-232-0924-9 
  26. De, sushil Kumar (১৯৪২)। Early History Of The Vaisnava Faith And Movement In Bengal। পৃষ্ঠা 13। 
  27. Srila Narahari Chakravarti Thakura। Bhakti Ratnakar। পৃষ্ঠা ৫৫-৫৬। 
  28. "অতীত, ঐতিহ্য আর ভবিষ্যতের নগরী নবদ্বীপ - Bengali Amader Bharat"Dailyhunt (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-১৩ 
  29. Bhatia, Varuni (২০১৭)। Unforgetting Chaitanya: Vaishnavism and Cultures of Devotion in Colonial Bengal (ইংরেজি ভাষায়)। Oxford University Press। পৃষ্ঠা ৮০। আইএসবিএন 978-0-19-068624-6 
  30. বন্দ্যোপাধ্যায়, দেবাশিস। "আজ উল্টোরথ, নবদ্বীপে বিরলদৃষ্ট জগন্নাথ থাকেন নিভৃতেই"anandabazar.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-১৩ 
  31. "District Statistical Handbook 2014 Nadia"Table 2.1। Department of Statistics and Programme Implementation, Government of West Bengal। ২৯ জুলাই ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ মে ২০১৭ 
  32. "Nadia District Police"Police Unit। West Bengal Police। সংগ্রহের তারিখ ১৭ মে ২০১৭ 
  33. "Nabadwip Police Station Details"। Nadia Police। ২৯ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ মে ২০১৭ 

বহিঃসংযোগ