রাজ ধনেশ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
Galib Tufan (আলোচনা | অবদান) →বর্তমান অবস্থা: রচনাশৈলী |
Galib Tufan (আলোচনা | অবদান) →চিত্রশালা: চিত্র |
||
৪৫ নং লাইন: | ৪৫ নং লাইন: | ||
পাখি নিধন আইনত নিষেধ। কিন্তু চোর না শোনে ধর্মের কাহিনী। অসাধু কিছু চক্র ধনেশ পাখি শিকার করে ‘ধনেশের তেল’ বিক্রি করে। এছাড়া পাহাড়িরা [[মাংস]] হিসেবে ধনেশ ধরে খায়। এমনকি প্রজনন কালে স্ত্রী-ধনেশ যে ডিমে তা দেয়, পাখি বিশেষজ্ঞ [[শরীফ খান]] জানান, ‘কুঠির ভেঙে ওই ডিমও পাহাড়িরা খায়।’ ফলে অস্তিত্বের সঙ্কটে পড়েছে ধনেশরা। সারা দেশে তাদের সংখ্যা খুবই কম। যে কটা টিকে আছে, তা তাদের ‘নিজেদের যোগ্যতা’ বলেই। শরীফ খান বলেন, ‘আমরা তো তাদের বাঁচানোর জন্য কোনও উদ্যোগ নিচ্ছি না।’ |
পাখি নিধন আইনত নিষেধ। কিন্তু চোর না শোনে ধর্মের কাহিনী। অসাধু কিছু চক্র ধনেশ পাখি শিকার করে ‘ধনেশের তেল’ বিক্রি করে। এছাড়া পাহাড়িরা [[মাংস]] হিসেবে ধনেশ ধরে খায়। এমনকি প্রজনন কালে স্ত্রী-ধনেশ যে ডিমে তা দেয়, পাখি বিশেষজ্ঞ [[শরীফ খান]] জানান, ‘কুঠির ভেঙে ওই ডিমও পাহাড়িরা খায়।’ ফলে অস্তিত্বের সঙ্কটে পড়েছে ধনেশরা। সারা দেশে তাদের সংখ্যা খুবই কম। যে কটা টিকে আছে, তা তাদের ‘নিজেদের যোগ্যতা’ বলেই। শরীফ খান বলেন, ‘আমরা তো তাদের বাঁচানোর জন্য কোনও উদ্যোগ নিচ্ছি না।’ |
||
==চিত্রশালা== |
==চিত্রশালা== |
||
<gallery> |
|||
Imagem:Buceros bicornis -Cotswold Wildlife Park, Oxfordshire, England -upper body-8a (1).jpg|''Buceros bicornis'' no Parque Cotswold, [[Oxfordshire]], [[Inglaterra]] |
|||
Imagem:Buceros bicornis -Singapore-8.jpg |
|||
Imagem:קלאו בכיר על עץ.jpg |
|||
Imagem:Great hornbill flying.jpg |
|||
</gallery> |
|||
== তথ্যসূত্র == |
== তথ্যসূত্র == |
০৪:০০, ৩ জুন ২০২০ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
রাজ ধনেশ Buceros bicornis | |
---|---|
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | Animalia |
পর্ব: | কর্ডাটা |
শ্রেণী: | পক্ষী |
বর্গ: | Coraciiformes |
পরিবার: | Bucerotidae |
উপপরিবার: | Bucerotinae |
গণ: | Buceros |
প্রজাতি: | B. bicornis |
দ্বিপদী নাম | |
Buceros bicornis Linnaeus, 1758 | |
প্রতিশব্দ | |
Buceros homrai[২] |
রাজ ধনেশ (ইংরেজিঃ Great Hornbill, Great Indian Hornbill বা Great Pied Hornbill ("Buceros bicornis")। রাজ ধনেশ প্রকৃতির এক অপরূপ শোভা। সৌন্দর্যের প্রতীক। এদের সবচেয়ে আকর্ষণীয় অঙ্গ হচ্ছে লম্বা ঠোঁট। সারা দেহে সাদা-কালো ও হলুদ রংয়ের নয়নাভিরাম ছোপ। মানুষের মতোই এদের চোখের পাতার নিচে চুল রয়েছে।
অবস্থান
বাংলাদেশে এটি বিরল অথবা বিলীন হয়েছে; একসময় সম্ভবত সব মিশ্র চিরসবুজ বনেই রাজ ধনেশ বাস করতো। এখন চট্টগ্রাম এবং সিলেট বন বিভাগের গহিন বনে কোথাও দু' একজোড়া চোখে পরে কালেভদ্রে। বাংলাদেশ ছাড়ারাও নেপাল, ভারত, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়ায় রাজ ধনেশ পাওয়া যায়।
বর্ণনা
এটি বাংলাদেশের বৃহত্তম পাখিদের একটি। এর ঠোঁটের মাথা থেকে লেজের শেষ পর্যন্ত দৈর্ঘ্য ৯৫ থেকে ১০৫ সেন্টিমিটার, অর্থাৎ এরা আকৃতিতে শকুনের চেয়েও অনেক বড়। ওজন প্রায় ৩ - ৬ কিলোগ্রাম। এদের প্রকাণ্ড ঠোঁটটি নিচের দিকে বাঁকানো আর ঠোঁটের ওপরে আছে শিংয়ের মতো গঠন। আপাতদৃষ্টিতে এদের ঠোঁট অনেক ভারি মনে হলেও আসলে বেশ হালকা, কারণ ঠোঁট আর শিংয়ের ভেতর আছে অনেক ফাঁপা প্রকোষ্ঠ। এদের গায়ের পালক কালো, সাদা আর হলদে। কারো ডানার মাঝ বরাবর আছে লম্বা সাদা দাগ। আর সাদা লেজের শেষের দিকে আছে মোটা কালো ব্যান্ড, যা দেখে অন্যান্য ধনেশ প্রজাতি থেকে এদের সহজেই আলাদা করা যায়। বিশাল বড় এই পাখির মাথা, গলা, ঘাড় এবং বুকের উপরের অংশ হলুদ যেমন হলুদ মস্ত বড়, নিচের দিকে বাঁকানো ঠোঁট; উপরের ঠোঁট লালচে; ঠোঁটের বর্ম বড়, চ্যাপ্টা, প্রশস্ত এবং কপাল ঢেকে থাকে ও সামনে-পিছে দুটি করে দাগ; ঠোঁটের গোঁড়া, কপালের পাশ থেকে গলার ও থুতনি কালো; কালো ডানার কিনারা এবং মাঝ বরাবর আলাদা মোটা পট্টি; সাদা লেজের উপ-ডগায় বড় কালো বলয়; বর্মে আগে-পিছে কালো; বুক কালো; পেট, পা অবসারণী/চারপাশে এবং লেজের নিচের ঢাকনা পালক সাদা; চোখের তারা লাল; চোখের চারপাশের চামড়ার বলয় কালো; স্ত্রী পাখির বর্মে কালো রঙ নেই বললেই চলে; চোখের তারা সাদা এবং চারপাশের চামড়া লাল; আমাদের বনে উড়ে বেড়ানো এমন দ্বিতীয় প্রজাতি নেই।
বাসা
রাজ ধনেশের বসবাস গহিন বনে। ধনেশ দারুণ ভাবে স্থান কালের উপর নির্ভর করে । একটি জোড়া একই এলাকায় আজীবন থাকে। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও মানুষ সৃষ্ট দুর্যোগের কারণে অনেক সময় বাধ্য হয়ে বাসা বদল করে। এরা খুবই শব্দ সৃষ্টির মাঝে বসবাস করে। খুব জোরে খক-খক-খক শব্দ করে ডাকে এবং ওড়ার সময় ডানা ঝাপটানোর শব্দও বেশ জোরে হয়।
খাবার
সাধারণত বিভিন্ন প্রজাতির ফল। তবে ছোট জীব জানোয়ারও খেতে দেখা যায়।
সংসার
অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইয়ে প্রতিটি জীবের প্রজনন হয়। ধনেশেরও তাই। বছরের যে কোনও সময় বাচ্চা জন্ম দেয় মা-ধনেশ। তবে বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে বংশ বাড়ানোয় ব্রত হয় ধনেশ দম্পতিরা। ধনেশ পাখি সাধারণত গাছের ওপর বাসা বাঁধে। কিন্তু প্রজনন-কালে বড় গাছের কোটরে কুঠির বোনে। এরপর ওই কুটিরের ভেতর ঢুকে পড়ে স্ত্রী-ধনেশ। নিজের বিষ্ঠা দিয়ে বন্ধ করে দেয় কুঠরির প্রবেশ পথ। তবে একটা সরু ছিদ্র ঠিকই রেখে দেয় কৌশলে। না, এটা তাদের জীবনের তাগিদেই। বাঁচতে হলে তো খেতে হবে। তাই বাইরে থেকে খাবার নেওয়ার জন্য ওই ছিদ্র রাখে স্ত্রী-ধনেশ। আর পুরুষ ধনেশ? বড্ড ‘ভালোবাসে বউ’কে। তাই সময়মত খাবার নিয়ে হাজির হয়। এরপর ‘প্রেমিকা’ ধনেশ ওই ছিদ্র দিয়ে ঠোঁট বের করে দেয়। আর ‘বর’ ধনেশ নিজের দায়িত্ব পালন করে ‘বউ’ ধনেশের ওই ঠোঁটে খাবার তুলে দিয়ে। খাবার নিয়ে ঠোঁটটা আবার ভেতরে টেনে নেয় স্ত্রী-ধনেশ। খাওয়া ছাড়া কুটিরের ভেতরে তার একটাই কাজ। ডিমে তা দেওয়া। এরপর শিশু-ধনেশ জন্ম নেয়। তখন ‘আনন্দে’ বাবা-ধনেশ ওই কুঠির ভেঙে দেয়। পৃথিবীর আলো দেখে সদ্যোজাত ধনেশ।
রাজাধিরাজ রাজ ধনেশ
রাজ ধনেশের কি এমন গুরুত্ব যে তাদের নিয়ে ভাবতে হবে? সৌন্দর্যগুণ ছাড়া আর বেশি কিছু? হ্যাঁ, তার চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্ব রাজ ধনেশের। কেমন? ব্যাখ্যা করলেন শরীফ খান, ‘পাহাড়ি ফল খেয়ে বাঁচে ধনেশ। ফল খাওয়ার পর বীজগুলো অন্যত্র ফেলে দেয় তারা। এভাবে নতুন করে জন্ম নেয় পাহাড়ি ফল গাছ। সেই সব গাছের ফল পাহাড়িরাও খেয়ে থাকে। এভাবে বনায়নে তারা ভূমিকা রাখছে। এছাড়া বাকলের পোকা খেয়ে গাছের স্বাস্থ্য ভালো রাখে রাজ ধনেশ।’
বর্তমান অবস্থা
পাখি নিধন আইনত নিষেধ। কিন্তু চোর না শোনে ধর্মের কাহিনী। অসাধু কিছু চক্র ধনেশ পাখি শিকার করে ‘ধনেশের তেল’ বিক্রি করে। এছাড়া পাহাড়িরা মাংস হিসেবে ধনেশ ধরে খায়। এমনকি প্রজনন কালে স্ত্রী-ধনেশ যে ডিমে তা দেয়, পাখি বিশেষজ্ঞ শরীফ খান জানান, ‘কুঠির ভেঙে ওই ডিমও পাহাড়িরা খায়।’ ফলে অস্তিত্বের সঙ্কটে পড়েছে ধনেশরা। সারা দেশে তাদের সংখ্যা খুবই কম। যে কটা টিকে আছে, তা তাদের ‘নিজেদের যোগ্যতা’ বলেই। শরীফ খান বলেন, ‘আমরা তো তাদের বাঁচানোর জন্য কোনও উদ্যোগ নিচ্ছি না।’
চিত্রশালা
-
Buceros bicornis no Parque Cotswold, Oxfordshire, Inglaterra
তথ্যসূত্র
- ↑ BirdLife International (২০১২)। "Buceros bicornis"। বিপদগ্রস্ত প্রজাতির আইইউসিএন লাল তালিকা। সংস্করণ 2012.1। প্রকৃতি সংরক্ষণের জন্য আন্তর্জাতিক ইউনিয়ন। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জুলাই ২০১২।
- ↑ Hodgson,BH (১৮৩৩)। "Description of the Buceros Homrai of the Himalaya"। Asiat. Res.। 18 (2): 169–188।
- বাংলাদেশের পাখি- ড. রেজা খান, বাংলা একাডেমী, ঢাকা।
- বাংলাদেশের পাখি ২য় খণ্ড- শরীফ খান, বাংলাদেশ শিশু একাডেমী, ঢাকা।
- Flora & Fauna of Bangladesh 28th part, Asiatic Society of Bangladesh.
- http://www.shokalerkhabor.com/online/details_news.php?id=47010&&%20page_id=%2078
- http://www.iucnredlist.org/apps/redlist/details/100600952/0