কোভিড-১৯ এর বৈশ্বিক মহামারী: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
→‎আরও দেখুন: সংশ্লিষ্ট নিবন্ধ যোগ।
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা উচ্চতর মোবাইল সম্পাদনা
Salekin.sami36 (আলোচনা | অবদান)
সম্পাদনা সারাংশ নেই
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা উচ্চতর মোবাইল সম্পাদনা
৪৫ নং লাইন: ৪৫ নং লাইন:
| arrival_date =
| arrival_date =
| origin = [[উহান]] নগরী, [[হুপেই]] প্রদেশ, [[চীন]]<ref name="20200130cdc2">{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://www.cdc.gov/coronavirus/2019-ncov/summary.html|শিরোনাম=2019 Novel Coronavirus (2019-nCoV) Situation Summary|তারিখ=30 January 2020|ওয়েবসাইট=[[Centers for Disease Control and Prevention]]|ইউআরএল-অবস্থা=live|আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20200126210549/https://www.cdc.gov/coronavirus/2019-nCoV/summary.html|আর্কাইভের-তারিখ=26 January 2020|সংগ্রহের-তারিখ=30 January 2020}}</ref>
| origin = [[উহান]] নগরী, [[হুপেই]] প্রদেশ, [[চীন]]<ref name="20200130cdc2">{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://www.cdc.gov/coronavirus/2019-ncov/summary.html|শিরোনাম=2019 Novel Coronavirus (2019-nCoV) Situation Summary|তারিখ=30 January 2020|ওয়েবসাইট=[[Centers for Disease Control and Prevention]]|ইউআরএল-অবস্থা=live|আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20200126210549/https://www.cdc.gov/coronavirus/2019-nCoV/summary.html|আর্কাইভের-তারিখ=26 January 2020|সংগ্রহের-তারিখ=30 January 2020}}</ref>
| confirmed_cases = ২৪৬,০০০+<!--১০০০ নিকটতম রাউন্ড ডাউন--><ref name="WOM">{{ওয়েব উদ্ধৃতি |ইউআরএল= https://www.worldometers.info/coronavirus/|শিরোনাম=Coronavirus Update (Live) |কর্ম=Worldometer |বছর=2020 |সংগ্রহের-তারিখ=16 March 2020}}</ref>
| confirmed_cases = ২৭৫,০০০+<!--১০০০ নিকটতম রাউন্ড ডাউন--><ref name="WOM">{{ওয়েব উদ্ধৃতি |ইউআরএল= https://www.worldometers.info/coronavirus/|শিরোনাম=Coronavirus Update (Live) |কর্ম=Worldometer |বছর=2020 |সংগ্রহের-তারিখ=16 March 2020}}</ref>
| active_cases = ২৬৫,০০০+<!--১০০০ নিকটতম রাউন্ড ডাউন--><ref name="WOM" />
| active_cases = ২৬৫,০০০+<!--১০০০ নিকটতম রাউন্ড ডাউন--><ref name="WOM" />
| recovery_cases = ৯০,০০০+<!--১০০০ নিকটতম রাউন্ড ডাউন--><ref name="WOM" />
| recovery_cases = ৯০,০০০+<!--১০০০ নিকটতম রাউন্ড ডাউন--><ref name="WOM" />
| deaths = ১১,১০০+<!--১০০ নিকটতম রাউন্ড ডাউন --><ref name="WOM" />
| deaths = ১১,৩০০+<!--১০০ নিকটতম রাউন্ড ডাউন --><ref name="WOM" />
| territories = ১৮০+<!--১০ নিকটতম রাউন্ড ডাউন--><ref name="WOM" />
| territories = ১৮০+<!--১০ নিকটতম রাউন্ড ডাউন--><ref name="WOM" />
| suspected_cases =
| suspected_cases =

০৪:৪৫, ২১ মার্চ ২০২০ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

২০১৯–২০ করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক মহামারী
নিশ্চিতভাবে মৃত্যুর সংখ্যার বৈশ্বিক মানচিত্র (১৭ মার্চ ২০২০ অনুযায়ী):
  ন্যূনতম ১ জনের মৃত্যু
  এখনও কোনো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায় নি
নিশ্চিতভাবে আক্রান্তের বৈশ্বিক মানচিত্র (১৭ মার্চ ২০২০ অনুযায়ী):
  ১০,০০০+ নিশ্চিতভাবে আক্রান্ত
  ১,০০০-৯৯৯৯ নিশ্চিতভাবে আক্রান্ত
  ১০০-৯৯৯ নিশ্চিতভাবে আক্রান্ত
  ১০-৯৯ নিশ্চিতভাবে আক্রান্ত
  ১-১৫ নিশ্চিতভাবে আক্রান্ত
(উপরে থেকে ঘড়ির কাঁটার দিকে)
  • ইরানের তেহরান হাসপাতালে ভর্তি রোগীরা
  • তাইওয়ানের তাইপেই-এ জীবাণু প্রতিরোধী যানবাহন
  • আতঙ্ক সৃষ্টিতে অত্যাধিক কেনাকাটার কারণে অস্ট্রেলীয় একটি সুপারমার্কেটে খালি তাকগুলি
  • ইতালির মিলানে লিনেট বিমানবন্দর-এ স্বাস্থ্য পরীক্ষা
  • ইতালীয় সরকারের গঠিত প্রাদুর্ভাব কালীন কার্যনির্বাহী দল
রোগ২০১৯ সালের করোনাভাইরাসঘটিত ব্যাধি (COVID-19)
ভাইরাসের প্রজাতিগুরুতর তীব্র শ্বাসকষ্টমূলক উপসর্গসমষ্টি-সংশ্লিষ্ট করোনাভাইরাস ২ (SARS-CoV-2)
প্রথম সংক্রমণের ঘটনা১লা ডিসেম্বর ২০১৯[১][২](৪ বছর, ৪ মাস ও ৩ সপ্তাহ)
উৎপত্তিউহান নগরী, হুপেই প্রদেশ, চীন[৩]
নিশ্চিত আক্রান্ত২৭৫,০০০+[৪]
সক্রিয় আক্রান্ত২৬৫,০০০+[৪]
সুস্থ৯০,০০০+[৪]
মৃত্যু
১১,৩০০+[৪]
অঞ্চল
১৮০+[৪]

২০১৯–২০ করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক মহামারী বলতে ২০১৯ সালের করোনাভাইরাসঘটিত ব্যাধির (COVID-19) উদ্ভব এবং এর দ্রুত ও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার চলমান ঘটনাটিকে নির্দেশ করা হয়েছে। ব্যাধিটি একটি ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট হয়, যাকে ভাইরাসবিজ্ঞানীরা গুরুতর তীব্র শ্বাসকষ্টমূলক উপসর্গসমষ্টি-সংশ্লিষ্ট করোনাভাইরাস ২ বা সংক্ষেপে ২ নং সার্স করোনাভাইরাস (SARS-CoV-2) নামকরণ করেছেন। ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে মধ্য চীনের হুপেই প্রদেশের প্রাদেশিক রাজধানী (ও তৎকালীন চীনের ৭ম বৃহত্তম নগরী) উহান নগরীর কর্তৃপক্ষ এই নতুন ধরনের করোনাভাইরাসটি শনাক্ত করেন। সেসময় এই ভাইরাসে আক্রান্ত প্রায় ৪১ জন চীনা ব্যক্তির গুরুতর ফুসফুস প্রদাহ (নিউমোনিয়া) রোগ হয়েছিল এবং প্রথমদিকে তাদের রোগের কোনও পরিষ্কার কারণ বের করা যায়নি কিংবা প্রচলিত ভাইরাস নিরোধক চিকিৎসা দিয়ে তাদের সারিয়ে তোলা যায়নি।[৫] উহান নগরীর হুয়ানান সামুদ্রিক খাদ্যের পাইকারি বাজারে বিক্রিত কোনও প্রাণী থেকে বিবর্তনের মাধ্যমে বাজারের দোকানদার ও ক্রেতাদের মধ্যে প্রথম ভাইরাসটির সংক্রমণ ঘটে বলে ধারণা করা হয়। পরবর্তীতে চীনা বিজ্ঞানীরা এই নতুন প্রকারের করোনাভাইরাসটি পরীক্ষাগারে আলাদা করে শনাক্ত করতে সক্ষম হন।

২ নং সার্স করোনাভাইরাস প্রথমে প্রাণী থেকে মানুষে সংক্রমিত হলেও বর্তমানে এটি বিবর্তিত হয়ে মানুষ থেকে মানুষে ছড়াতে সক্ষম।[৬] ইতিমধ্যে বিশ্বের অনেকগুলি দেশে মানুষ থেকে মানুষে ভাইরাসটির সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। ভাইরাসটি দেহে সংক্রমিত হবার পরে ২ থেকে ১৪ দিন সুপ্তাবস্থায় থাকতে পারে এবং এ সময় বাহকের অগোচরে এটি অপর কোনও ব্যক্তির দেহে সংক্রমিত হতে পারে। ভাইরাসটির সংক্রমণের ফলে যে ব্যাধিটি হয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তার নাম দিয়েছে ২০১৯ সালের করোনাভাইরাসঘটিত ব্যাধি। এই ব্যাধির উপসর্গগুলির মধ্যে আছে জ্বর, শুকনো কাশি, শ্বাসকষ্ট, পেশীতে ব্যথা ও অবসাদগ্রস্ততা। সঠিক সময়ে সেবা-শুশ্রুষা না পেলে ব্যাধিটি জটিল আকার ধারণ করে, যার ফলে ফুসফুস প্রদাহ (নিউমোনিয়া), তীব্র শ্বাসকষ্টজনিত উপসর্গসমষ্টি, রক্তে জীবাণুদূষণরোধী তীব্র অনাক্রম্য প্রতিক্রিয়া (সেপসিস) ও জীবাণুদূষণজনিত অভ্যাঘাত (সেপটিক শক) হতে পারে এবং পরিশেষে মৃত্যুও হতে পারে। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ২০১৯ সালের করোনাভাইরাসঘটিত ব্যাধির কোনও প্রতিরোধক টিকা কিংবা কার্যকরী প্রতিষেধক চিকিৎসা ছিল না। হাসপাতালে মূলত রোগীদের উপসর্গ উপশম করার চেষ্টা করা হয়।

প্রথম দিকে ভাইরাসটির বিস্তারের হার কম হলেও ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসের মধ্যভাগে এসে এটির সংক্রমণের হার উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাওয়া শুরু করে।[৭] ১৩ই মার্চ ২০২০ তারিখ পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ১ লক্ষ ৩৫ হাজারেরও অধিক ব্যক্তি ভাইরাসটিতে আক্রান্ত বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। চীনের সবগুলি প্রদেশে বা প্রাদেশিক-স্তরের প্রশাসনিক বিভাগে ভাইরাসটির উপস্থিতি নিশ্চিত হয়েছে। তবে দাপ্তরিকভাবে প্রকাশিত সংখ্যার বাইরেও আরও বহু লোকের দেহে ভাইরাসটির সংক্রমণ হয়ে থাকতে পারে, যাদেরকে এখনও শনাক্ত করা হয়নি। চীনের বাইরে ১২১টি রাষ্ট্র ও প্রশাসনিক অঞ্চলে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত ব্যক্তির উপস্থিতি নিশ্চিত হয়েছে। ২০২০ সালের ৯ই জানুয়ারি ভাইরাসটির কারণে প্রথম ব্যক্তিটির মৃত্যু হয় এবং তার পরে ১৩ই মার্চ ২০২০ তারিখ পর্যন্ত সর্বমোট ৪৯৯০ জন ব্যক্তির মৃত্যু ঘটেছে। এছাড়া ৭০,৩৯৫ জন ব্যক্তি আরোগ্যলাভ করেছে। ১০ই ফেব্রুয়ারি ২০২০ তারিখে সার্স করোনাভাইরাস-২-এর কারণে মৃতের সংখ্যা ২০০৩ সালের প্রথম সার্স ভাইরাসের কারণে মৃতের সংখ্যাকে ছাড়িয়ে যায়। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এসে সামগ্রিকভাবে মৃত্যুর হার ছিল ২.২%, তবে হাসপাতালে ভর্তিকৃত রোগীদের মধ্যে মৃত্যুর হার আরও বেশি।

চীনে ও বিশ্বজুড়ে সার্স করোনাভাইরাস-২-এর বিস্তার রোধের জন্য জনস্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষসমূহ প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে। চীনা সরকার অভ্যন্তরীণ আন্তঃনগরী ও আন্তর্জাতিক ভ্রমণের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, ঘরের বাইরে বের হওয়ার উপরে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে এবং সঙ্গনিরোধের ব্যবস্থা (কুয়ারেন্টিন) করেছে। এতে চীনের প্রায় ১৭ কোটি নাগরিকের দৈনন্দিন জীবন ব্যাহত হয়েছে। বিশ্বের বেশ কিছু দেশ উহান নগরী, হুপেই প্রদেশ এমনকি চীনদেশে ভ্রমণের ব্যাপারে সতর্কতামূলক বার্তা প্রকাশ করেছে। যেসব পর্যটক সম্প্রতি চীনের মূল ভূখণ্ড পরিদর্শন করেছে, তাদেরকে দেশে ফেরত আসার পরে কমপক্ষে দুই সপ্তাহ স্বাস্থ্যের উপরে নজরদারি করতে বলা হয়েছে। যদি কোনও ব্যক্তির সন্দেহ হয় যে সে করোনাভাইরাস বহন করছে, তাহলে তাকে বিশেষ চিকিৎসা-মুখোশ পরিধান করতে ও নিকটস্থ চিকিৎসকের সাথে টেলিফোনে যোগাযোগ করতে উপদেশ দেওয়া হয়েছে এবং স্বশরীরে কোনও হাসপাতাল বা ক্লিনিকে (বহির্বিভাগীয় চিকিৎসাকেন্দ্র) যেতে মানা করা হয়েছে। চীনসহ আরও বেশ কিছু দেশের বিমানবন্দর ও রেলস্টেশনগুলিতে দেহের তাপমাত্রা পরীক্ষার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, স্বাস্থ্যবিষয়ক সতর্কবাণী স্পিকারে সম্প্রচার করা হচ্ছে ও সতর্কতামূলক তথ্য প্রদানকারী নির্দেশফলক (সাইনবোর্ড) স্থাপন করা হয়েছে।

৩০শে জানুয়ারি ২০২০ তারিখে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ২০১৯ সালের করোনাভাইরাসঘটিত ব্যাধির প্রাদুর্ভাব ও তৎপরবর্তীকালে এর মহাবিস্তারকে জনস্বাস্থ্যের জন্য আন্তর্জাতিক গুরুত্ববিশিষ্ট জরুরী অবস্থা (Public Health Emergency of International Concern; PHEIC) হিসেবে ঘোষণা দেয়। যেসব দেশে স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা অপেক্ষাকৃত দুর্বল, সেসব দেশে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়লে সম্ভাব্য ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি বা মহামারীর কথা চিন্তা করে এই ঘোষণাটি দেওয়া হয়। এছাড়া আন্তর্জাল বা ইন্টারনেটে সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক গণমাধ্যমগুলির সুবাদে সার্স করোনাভাইরাস-২ সংক্রান্ত উপকারী তথ্যের পাশাপাশি বিভিন্ন ভুল ও মিথ্যা তথ্য এমনকি আতঙ্ক-সৃষ্টিকারী গুজবের অতিদ্রুত বিস্তার ঘটেছে, যাকে “তথ্য মহাবিস্তার” (ইনফোডেমিক) নামে ডাকা হয়েছে।[৮] এর একটি নেতিবাচক ফল হিসেবে সামাজিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতা, খেলাধুলা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের স্থগিতকরণ বা বাতিলকরণ,ব্যক্তিগতভাবে ধর্মীয় সেবা স্থগিতকরণ, বিশ্বের বেশ কিছু দেশে বিদেশীভীতি ও বিশেষত চীনাদের বিরুদ্ধে জাতিবিদ্বেষ, ভাইরাস সম্পর্কে ভুল তথ্য এবং ষড়যন্ত্র তত্ত্বের অনলাইনে বিস্তার স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।[৯][১০][১১] [১১]

করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে করণীয়

করোনাভাইরাস ব্যাধি ২০১৯ (কোভিড-১৯) তথা করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে করণীয় বিষয়গুলি নিচে তুলে ধরা হল। করোনাভাইরাস মানুষ-থেকে-মানুষে প্রধানত দুই প্রক্রিয়াতে ছড়াতে পারে। সংক্রমণের প্রথম প্রক্রিয়াটি দুই ধাপে ঘটে। প্রথম ধাপ: করোনাভাইরাস-সংক্রমিত ব্যক্তি ঘরের বাইরে গিয়ে মুখ না ঢেকে হাঁচি-কাশি দিলে করোনাভাইরাস তার আশেপাশের (১-২ মিটার পরিধির মধ্যে) বাতাসে কয়েক ঘণ্টা ভাসমান থাকতে পারে। দ্বিতীয় ধাপ: সেই করোনাভাইরাস কণাযুক্ত বাতাসে শ্বাস-প্রশ্বাস গ্রহণ করলে অন্য ব্যক্তিদের ফুসফুসেও শ্বাসনালী দিয়ে করোনাভাইরাস প্রবেশ করতে পারে। করোনাভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় প্রক্রিয়াটিও কয়েক ধাপে ঘটে। প্রথম ধাপ: করোনাভাইরাস-সংক্রমিত ব্যক্তি যদি কাশি শিষ্টাচার না মানেন, তাহলে তার হাতে বা ব্যবহৃত বস্তুতে করোনাভাইরাস লেগে থাকবে। দ্বিতীয় ধাপ: এখন যদি উক্ত ব্যক্তি তার পরিবেশের কোথাও যেকোনও বস্তুর পৃষ্ঠতলে সেই করোনাভাইরাসযুক্ত হাত দিয়ে স্পর্শ করেন, তাহলে সেই পৃষ্ঠতলে করোনাভাইরাস পরবর্তী একাধিক দিন লেগে থাকতে পারে। তৃতীয় ধাপ: এখন যদি অন্য কোনও ব্যক্তি সেই করোনাভাইরাসযুক্ত পৃষ্ঠ হাত দিয়ে স্পর্শ করে, তাহলে ঐ নতুন ব্যক্তির হাতে করোনাভাইরাস লেগে যাবে। চতুর্থ ধাপ : হাতে লাগলেই করোনাভাইরাস দেহের ভেতরে বা ফুসফুসে সংক্রমিত হতে পারে না, তাই এখন নতুন ব্যক্তিটি যদি তার সদ্য-করোনাভাইরাসযুক্ত হাতটি দিয়ে নাকে, মুখে বা চোখে স্পর্শ, কেবল তখনই করোনাভাইরাস ঐসব এলাকার উন্মুক্ত শ্লেষ্মাঝিল্লী দিয়ে দেহের ভিতরে প্রবেশ করবে ও প্রথমে গলায় ও পরে ফুসফুসে বংশবিস্তার করা শুরু করবে। এজন্য উপরে লিখিত করোনাভাইরাস ছড়ানোর দুইটি প্রক্রিয়ার শুরুতেই এবং কিংবা ছড়ানোর প্রতিটি অন্তর্বতী ধাপেই যদি করোনাভাইরাসকে প্রতিহত করা যায়, তাহলে সফলভাবে এই ভাইরাস ও রোগের সংক্রমণ প্রতিরোধ করা সম্ভব। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে নিচের করণীয় পরামর্শগুলি মেনে চলার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়।

সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা

করোনাভাইরাস কোনও লক্ষণ-উপসর্গ ছাড়াই দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে যেকোনও ব্যক্তির দেহে তার অজান্তেই বিদ্যমান থাকতে পারে। এরকম করোনাভাইরাস বহনকারী ব্যক্তি যদি কোনও কারণে হাঁচি বা কাশি দেন, তাহলে তার আশেপাশের বাতাসে ৩ থেকে ৬ ফুট দূরত্বের মধ্যে করোনাভাইরাসবাহী জলীয় কণা বাতাসে ভাসতে শুরু করে এবং ঐ পরিধির মধ্যে অবস্থিত অন্য যেকোনও ব্যক্তির দেহে স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে ভাইরাস প্রবেশ করতে পারে। এ কারণে জনসমাগম বেশি আছে, এরকম এলাকা অতি-আবশ্যক প্রয়োজন না হলে যথাসম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে যাতে বাতাসে ভাসমান সম্ভাব্য করোনাভাইরাস কণা শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে দেহে প্রবেশ না করতে পারে।

হাত ধুয়ে জীবাণুমুক্তকরণ

পরিবেশে অবস্থিত বিভিন্ন বস্তুতে করোনাভাইরাস লেগে থাকতে পারে, তাই এগুলি কেউ হাত দিয়ে স্পর্শ করলে তার হাতেও করোনাভাইরাস লেগে যেতে পারে। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে করোনাভাইরাস কাঠ, প্লাস্টিক বা ধাতুর তৈরী বস্তুর পৃষ্ঠে গড়ে চার থেকে পাঁচ দিন লেগে থাকতে পারে। মানুষকে জীবনযাপনের প্রয়োজনে এগুলিকে প্রতিনিয়তই হাত দিয়ে স্পর্শ করতে হয়। তাই এগুলি স্পর্শ করার পরে হাত ভাল করে ধুয়ে জীবাণুমুক্ত করা অত্যন্ত জরুরী। নিম্নলিখিত হাত স্পর্শ করার ঝুঁকিপূর্ণ ক্ষেত্রগুলির ব্যাপারে বিশেষ নজর দিতে হবে।

  • অন্য কোনও ব্যক্তির ব্যক্তিগত বস্তু যা হাত দিয়ে ঘনঘন স্পর্শ করা হয়, যেমন মোবাইল ফোন (মুঠোফোন), ল্যাপটপ, ইত্যাদি নিজ হাত দিয়ে স্পর্শ করা।
  • বহুসংখ্যক ব্যক্তি স্পর্শ করে এমন যন্ত্র, যেমন এটিএম যন্ত্র (নগদ টাকা প্রদানকারী যন্ত্র) ও অন্য কোনও যন্ত্রের (যেমন দোকানের বা অন্য কোনও স্থানের ল্যাপটপ, কম্পিউটারের মনিটর) বোতাম, চাবি, কিবোর্ড ও হাতল হাত দিয়ে স্পর্শ করা।
  • নিজ বাসগৃহের বাইরের যেকোনও আসবাবপত্র (চেয়ার, টেবিল, ইত্যাদি) হাত দিয়ে স্পর্শ করা।
  • নিজ বাসগৃহের বাইরের যেকোনও কামরা বা যানবাহনের দরজার হাতল হাত দিয়ে স্পর্শ করা।
  • কাগজের টাকা, ব্যাংকের ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড, ইত্যাদি এবং এগুলি যেখানে রাখা হয়, যেমন ওয়ালেট বা পার্স ইত্যাদির অভ্যন্তরভাগ হাত দিয়ে স্পর্শ করা।
  • রেস্তোরাঁ বা অন্য যেকোনও খাবার বিক্রয়কারী দোকানের থালা-বাসন-বাটি-পাত্র বা বোতল-গেলাস হাত দিয়ে স্পর্শ করা। এইসব তৈজসপত্র বহু ব্যক্তি স্পর্শ করেন এবং এগুলিকে সবসময় সঠিকভাবে জীবাণুমুক্ত করা হয়েছে কি না, তা সম্পূর্ণ নিশ্চিত হওয়া সম্ভব নয়।
  • ঘরের বাইরে যেকোনও স্থানের হাত মোছার তোয়ালে বা রুমাল যা একাধিক ব্যক্তি স্পর্শ করে, সেগুলিকে হাত দিয়ে স্পর্শ করা।
  • ঘরের বাইরে রাস্তায় বা অন্যত্র কারও সাথে করমর্দন করা (হাত মেলানো) বা কোলাকুলি করা বা ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা।

উপরোক্ত ক্ষেত্রগুলিতে হাত দিয়ে স্পর্শের পরে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে এবং যত ঘনঘন সম্ভব হাত ধুয়ে জীবাণুমুক্ত করতে হবে। নিম্নলিখিত হাত ধোয়ার পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে:

  • প্রথমে হাত পরিষ্কার পানিতে ভাল করে ভিজিয়ে নিতে হবে।
  • এর পর হাতে বিশেষ জীবাণুমুক্তকারক সাবান (সম্ভব না হলে সাধারণ সাবান) প্রয়োগ করতে হবে ও ফেনা তুলে পুরো হাত ঘষতে হবে।
  • হাতের প্রতিটি আঙুলে যেন সাবান লাগে, তা নিশ্চিত করতে হবে, এজন্য এক হাতের আঙুলের ফাঁকে আরেক হাতের আঙুল ঢুকিয়ে ঘষে কচলাতে হবে।
  • দুই হাতের বুড়ো আঙুল সাবান দিয়ে ঘষা নিশ্চিত করতে হবে।
  • এক হাতের তালুর সাথে আরেক হাতুর তালু ঘষতে হবে এবং এক হাতের তালু দিয়ে আরেক হাতের পিঠও সম্পূর্ণ ঘষতে হবে।
  • প্রতিটি নখের নিচেও ভালো করে পরিষ্কার করতে হবে।
  • ঘড়ি, আংটি বা অন্য যেকোন হাতে পরিধেয় বস্তু খুলে সেগুলির নিচে অবস্থিত পৃষ্ঠও পরিষ্কার করতে হবে।
  • কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড ধরে ফেনা তুলে ভাল করে হাত ঘষতে হবে।
  • পাত্রে রাখা স্থির পানিতে নয়, বরং পড়ন্ত পরিষ্কার পানির ধারাতে হাত রেখে ভাল করে হাত ধুয়ে সম্পূর্ণ সাবানমুক্ত করতে হবে।
  • হাত ধোয়ার পরে তোয়ালে কিংবা রুমাল নয়, বরং একবার ব্যবহার্য কাগজের রুমাল দিয়ে সম্পূর্ণরূপে হাত শুকিয়ে নিতে হবে, কেননা গবেষণায় দেখা গেছে যে ভেজা হাতে ভাইরাস ১০০ গুণ বেশী বংশবিস্তার করে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] একাধিক ব্যক্তির ব্যবহৃত তোয়ালে দিয়ে হাত শুকানো যাবে না, এবং একই তোয়ালে দিয়ে বারবার হাত শুকানো যাবে না, তাই একবার-ব্যবহার্য কাগজের রুমাল ব্যতীত অন্য যেকোনও ধরনের তোয়ালে বা রুমাল ব্যবহার করা উচিত নয়।
  • হাত শুকানোর কাগজের রুমালটি দিয়ে ধরেই পানির কল বন্ধ করতে হবে এবং শৌচাগারের দরজার হাতল খুলতে হবে। পানির কল ও শৌচাগারের দরজার হাতলে ভাইরাস লেগে থাকতে পারে।এরপর কাগজের রুমালটি ঢাকনাযুক্ত বর্জ্যপাত্রে ফেলে দিতে হবে।
  • যেহেতু দিনে বহুবার হাত ধুতে হবে, তাই ত্বকের জন্য কোমল সাবান ব্যবহার করা শ্রেয়।
  • সাবান-পানির ব্যবস্থা না থাকলে কমপক্ষে ৬০% অ্যালকোহলযুক্ত বিশেষ হাত জীবাণুমুক্তকারক দ্রবণ (হ্যান্ড স্যানিটাইজার) দিয়ে হাত কচলে ধুতে হবে। তবে সুযোগ পেলেই নোংরা হাত সাবান-পানি দিয়ে ধুয়ে নেওয়া সবচেয়ে বেশী উত্তম।

কখন হাত ধুতে হবে, তা জানার জন্য নিচের নির্দেশনাগুলি মনে রাখা জরুরি:

  • নাক ঝাড়ার পরে, কাশি বা হাঁচি দেবার পরে হাত ধোবেন।
  • যেকোনও জনসমাগমস্থল যার মধ্যে গণপরিবহন, বাজার কিংবা উপাসনাকেন্দ্র অন্তর্ভুক্ত, সেগুলিতে পরিদর্শন করার পরেই হাত ধোবেন।
  • বাসা থেকে কর্মস্থলে পৌঁছাবার পর হাত ধোবেন।
  • কর্মস্থল থেকে বাসায় পৌঁছাবার পর হাত ধোবেন।
  • ঘরের বাইরের যেকোনও বস্তুর পৃষ্ঠতল হাত দিয়ে স্পর্শ করার পরে হাত ধোবেন। (উপরে হাত স্পর্শ করার ঝুঁকিপূর্ণ ক্ষেত্রগুলি দেখুন)
  • যেকোনও রোগীর সেবা করার আগে, সেবা করার সময়ে বা তার পরে হাত ধোবেন।
  • খাবার আগে ও পরে হাত ধোবেন।
  • শৌচকার্য করার পরে হাত ধোবেন।
  • বর্জ্যপদার্থ ধরার পরে হাত ধোবেন।
  • পোষা প্রাণী বা অন্য যে কোনও প্রাণীকে স্পর্শ করার পরে হাত ধোবেন।
  • বাচ্চাদের ডায়পার (বিশেষ জাঙ্গিয়া) ধরার পরে বা বাচ্চাদের শৌচকার্যে সাহায্য করার পরে হাত ধোবেন।
  • হাত যদি দেখতে নোংরা মনে হয়, তাহলে সাথে সাথে হাত ধোবেন।
  • হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যেন এক রোগী থেকে আরেক রোগী বা অন্য যেকোনও ব্যক্তির দেহে যেন করোনাভাইরাস সংক্রমিত হতে না পারে, সেজন্য সেখানে কর্মরত সমস্ত স্বাস্থ্যকর্মীকে নিম্নের ৫টি মুহূর্তে অবশ্যই হাত ধুয়ে জীবাণুমুক্ত করতে হবে : রোগীকে স্পর্শ করার আগে, পরিষ্কারকরণ বা জীবাণুমুক্তকরণ পদ্ধতি প্রয়োগের আগে, রোগীর দেহজ রস বা তরল গায়ে লাগার সম্ভাবনা থাকলে ঠিক তার পরপর, রোগীকে স্পর্শ করার পর এবং রোগীর আশেপাশের পরিবেশ স্পর্শ করার পর।
  • হাত ধুয়ে জীবাণুমুক্ত করার সুব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ:
    • রেস্তোরাঁ, চা ও কফিঘর, দোকানপাট, বাজার, বিপণিবিতান, শপিং মল, ইত্যাদি সমস্ত স্থানে হাঁচি-কাশিতে মুখ ঢাকার জন্য ও ভেজা হাত শুকানোর জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে কাগজের রুমাল বা টিস্যু পেপারের ব্যবস্থা করতে হবে। হাত জীবাণুমুক্তকারক দ্রবণ (হ্যান্ড স্যানিটাইজারের) এবং/কিংবা সাবান-পানিতে হাত ধোবার ব্যবস্থা করতে হবে। ব্যবহারের পর কাগজের রুমাল ফেলে দেবার জন্য (খোলা নয়, বরং) ঢাকনাযুক্ত বর্জ্যপাত্র বা বিনের ব্যবস্থা করতে হবে।
    • সম্ভব হলে ঘরের বাইরে যাতায়াত বা ভ্রমণের সময় সর্বদা হাত জীবাণুমুক্তকারকের বোতল ও কাগজের রুমাল (টিস্যু পেপার) সঙ্গে নিয়ে ঘুরতে হবে।
  • নাক, মুখ ও চোখ হাত দিয়ে স্পর্শ না করা: করোনাভাইরাস কেবলমাত্র নাক, মুখ, চোখের উন্মুক্ত শ্লেষ্মাঝিল্লী দিয়ে দেহে প্রবেশ করতে পারে। পরিবেশে উপস্থিত করোনাভাইরাস স্পর্শের মাধ্যমে হাতে লেগে থাকতে পারে। তাই আধোয়া জীবাণুযুক্ত হাতে কখনোই নাক, মুখ, চোখ স্পর্শ করা যাবে না। যদি একান্তই নাকে মুখে চোখে হাত দিতে হয়, তাহলে অবশ্যই হাত ধুয়ে জীবাণুমুক্ত করে তা করতে হবে, কিংবা কাগজের রুমাল ব্যবহার করে নাক, মুখ ও চোখ স্পর্শ করতে হবে। এজন্য সবসময় হাতের কাছে সাবান-পানি বা অ্যালোকোহলভিত্তিক হস্ত জীবাণুমুক্তকারক কিংবা কাগজের রুমালের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। এই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নিয়মটি মেনে চলা অনেকের জন্য কঠিন হতে পারে। নাক, মুখ ও চোখে হাত দেওয়া খুবই সাধারণ ও স্বাভাবিক একটি ঘটনা এবং বহুদিনের অভ্যাসের বশে প্রায় সবাই কারণে-অকারণে এ কাজটি করে থাকে। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে মানুষ ঘণ্টায় ২০ বারেরও বেশি মুখের বিভিন্ন অংশে হাত দিয়ে স্পর্শ করে। কিন্তু নিজদেহে করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে হলে এই অভ্যাসের ব্যাপারে অনেক বেশী সচেতন হতে হবে। অনেকে মানসিক চাপের কারণে, গভীর চিন্তা করার সময়, অন্য কোনও অজ্ঞাত মানসিক কারণে কিংবা চুলকানির জন্য নাকে, মুখে, চোখে হাত দিয়ে থাকেন। তাই প্রথমে প্রতিটি ব্যক্তিকে নিজেকে বেশ কিছু সময় ধরে নিয়মিত আত্ম-পর্যবেক্ষণ করে দেখতে হবে কোন্‌ কোন্‌ সময়ে বা কারণে সে নিজের নাক, চোখ বা মুখে হাত দিচ্ছে। কারণগুলি চিহ্নিত করার পর এবং এগুলি সম্বন্ধে সচেতন হবার পরে একে একে এগুলিকে দূর করার চেষ্টা করতে হবে এবং নাকে,মুখে, চোখে হাত দেয়ার মাত্রা যথাসর্বোচ্চ সম্ভব কমিয়ে আনতে হবে।

পরিবেশ পরিষ্কার করে করোনাভাইরাস মুক্তকরণ

    • গৃহ ও কার্যালয়ে যেসব বস্তু অনেক বহিরাগত মানুষ হাত দিয়ে স্পর্শ করে, যেমন দরজার হাতল, কম্পিউটারের কিবোর্ড ও মনিটরের পর্দা, ল্যাপটপ কম্পিউটার, মোবাইল ফোন, বা অন্য কোনও বহুল ব্যবহৃত আসবাব, ইত্যাদি নিয়মিতভাবে কিছু সময় পরপর জীবাণুনিরোধক স্প্রে বা দ্রবণ দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে।
    • বাইরে থেকে আসার পর পরিধেয় পোষাক ও অন্যান্য বহুল ব্যবহৃত কাপড় যেমন-বিছানার চাদর, ইত্যাদি নিয়মিত ধুতে হবে।
  • করোনাভাইরাস-বহনকারী সম্ভাব্য ব্যক্তিদের সম্পর্কে করণীয়
    • যে ব্যক্তির জ্বর, সর্দি, কাশি ও হাঁচি হচ্ছে, তার থেকে ন্যূনতম ৩ থেকে ৬ ফুট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে, যাতে বাতাসে ভাসমান ভাইরাস কণা শ্বাসগ্রহণের মাধ্যমে দেহে প্রবেশ না করে।
    • রাস্তায় ও যত্রতত্র থুতু ফেলা যাবে না, কেননা থুতু থেকে ভাইরাস ছড়াতে পারে।
    • হাঁচি-কাশি দেওয়া ব্যক্তিকে অবশ্যই কাশি বা হাঁচি দেওয়ার সময় অস্থায়ী কাগজের রুমাল বা টিস্যুপেপার দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে রাখতে হবে এবং সেই কাগজের রুমাল সাথে সাথে বর্জ্যে ফেলে দিতে হবে। খালি হাত দিয়ে কাশি-হাঁচি ঢাকা যাবে না, কেন না এর ফলে হাতে জীবাণু লেগে যায় (হাত দিয়ে হাঁচি-কাশি ঢাকলে সাথে সাথে হাত ধুয়ে ফেলতে হবে)। কাগজের রুমাল না থাকলে কনুইয়ের ভাঁজে বা কাপড়ের হাতার উপরের অংশে মুখ ঢেকে হাঁচি-কাশি দিতে হবে।
    • পরিচিত কারও করোনাভাইরাসের লক্ষণ-উপসর্গ দেখা গেলে সাথে সাথে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বা জরুরী ফোনে যোগাযোগ করতে হবে যাতে তাকে দ্রুত পরীক্ষা করা যায় এবং প্রয়োজনে সঙ্গনিরোধ (কোয়ারেন্টাইন) করে রাখা যায়।

বিবিধ

    • রাস্তায় বা অন্যত্র অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে প্রস্তুতকৃত ও পরিবেশনকৃত খাবার খাওয়া পরিহার করতে হবে, কারণে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে প্রস্তুতকৃত ও অস্বাস্থ্যকর থালা-বাসন-বাটি-পাত্র বা গেলাসে পরিবেশনকৃত খাবার ও পানীয়ের মাধ্যমেও ভাইরাস ছড়াতে পারে।
    • রাস্তায় চলাফেরার পথের ধারে উপস্থিত উন্মুক্ত বর্জ্য কিংবা হাসপাতাল ও অন্যত্র উপস্থিত চিকিৎসা বর্জ্যের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে হবে।
    • হাসপাতালে ও অন্য স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কর্মরত স্বাস্থ্যকর্মীদেরকে অবশ্যই বিশেষ চিকিৎসা মুখোশ ও হাতমোজা পরিধান করতে হবে, যাতে ভাইরাস এক রোগী থেকে আরেক রোগীতে না ছড়ায়।

উদ্ভব ও ইতিহাস

লগারিদমিক স্কেলে বিভিন্ন দেশে আক্রান্তের সংখ্যা

২০১৯ সালের শেষের দিকে উহান নগরীর হুয়ানান সামুদ্রিক খাদ্যের পাইকারি বাজারের দোকানদারদের মধ্যে প্রথম ভাইরাসটির সংক্রমণ ঘটে বলে ধারণা করা হয়।[১২][১৩] বাজারটিতে সামুদ্রিক খাদ্যদ্রব্যের পাশাপাশি জীবন্ত বাদুড়, সাপ ও অন্যান্য বন্যপ্রাণী ও তাদের সদ্য জবাইকৃত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিক্রি হত। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয় যে হয়ত কোনও প্রাণীদেহ হতে করোনাভাইরাসটি বিবর্তিত হয়ে আরেকটি মধ্যবর্তী পোষক প্রাণীর মাধ্যমে মানবদেহে সংক্রমিত হয়েছে। চীনা সরকারি নথির বরাতে পাওয়া অন্য এক সূত্রমতে প্রথম আক্রান্ত ব্যক্তি ছিলেন ৫৫ বছর বয়স্ক ব্যক্তি যিনি ১৭ নভেম্বর, ২০১৯ সালে আক্রান্ত হন।[১৪] পরের মাসের মধ্যে হুবেইয়ে করোনাভাইরাস আক্রান্তর সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে যায়। ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বরে উহানে অজানা কারণে আক্রান্ত নিউমোনিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেলে[১৫] পরের মাসের শুরুতেই এ সংক্রান্ত তদন্ত শুরু হয়।[১৬] চীনা বিজ্ঞানীরা ২০২০ সালের ৭ই জানুয়ারি তারিখে এটিকে একটি নতুন ধরনের করোনাভাইরাস হিসেবে ঘোষণা দেন এবং এর বংশাণুসমগ্র বা জিনোমের তথ্যগুলি বিশ্বব্যাপী বিজ্ঞানীদের কাছে ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষদের কাছে বিতরণ করেন।

প্রথমদিকে আক্রান্তের সংখ্যা প্রতি সাড়ে সাতদিনে দ্বিগুণ হতে যেত।[১৭] জানুয়ারি, ২০২০ এর শুরু এবং মাঝামাঝি দিকে ভাইরাস অন্যান্য চীনা প্রদেশেও পৌঁছে যায়। চীনা নববর্ষের কারণে এবং উহান চলাচলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্থান হওয়ায় চীনের গুরুত্বপূর্ণ সকল স্থানে এ ভাইরাস পৌঁছে যায়।[১৮] ২০ জানুয়ারি একদিনে চীন ১৪০ নতুন আক্রান্তের ঘটনা রেকর্ড করে। এর মধ্যে একজন বেইজিংয়ের এবং অপরজন শেনঝেন প্রদেশের।[১৯] ২০ জানুয়ারির মধ্যে প্রায় ৬,১৭৪ জন নতুন আক্রান্তের ঘটনা রেকর্ড হয় বলে জানা যায়।[২০]

৩০ জানুয়ারি ডব্লিউএইচও এই প্রাদুর্ভাবকে আন্তর্জাতিক জনস্বাস্থ্য উদ্বেগজনক জরুরী অবস্থা ঘোষণা করে।[২১] ২৪ ফেব্রুয়ারি এর পরিচালক টেড্রোস আধানম সতর্ক করেন এই বলে, এই ভাইরাস চীনের বাইরে আশঙ্কাজনকভাবে ক্রমবৃদ্ধিমান সংখ্যার কারণে বৈশ্বিক মহামারিতে পরিণত হতে পারে।[২২]

১১ মার্চ ডব্লিউএইচও এই প্রাদুর্ভাব বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সম্প্রদায়ে সঞ্চালন ঘটায় বৈশ্বিক মহামারি হিসেবে ঘোষণা করে।[২৩] ১৩ মার্চ ডব্লিউএইচও ইউরোপকে এই ভাইরাসের নতুন কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করে। কারণ ইউরোপে চীন বাদে বিশ্বের অন্যান্য স্থানের চেয়ে অনেক বেশি আশঙ্কাজনক হারে এই রোগ ছড়ায়।[২৪] ১৬ মার্চ ২০২০ তারিখে চীনের মূল ভূখণ্ড বাদে সারা বিশ্বে আক্রান্তর সংখ্যা চীনকে ছাড়িয়ে যায়।[২৫] ১৯ মার্চ ২০২০ (2020-03-19)-এর হিসাব অনুযায়ী, ২৪১,০০০ জন আক্রান্তের ঘটনা বিশ্বজুড়ে নথিবদ্ধ হয়েছে।; ৯,৯০০০ এরও বেশি মানুষ মৃত্যুবরণ করেছে; এবং ৮৮,০০০ জন সুস্থ হয়েছে।[২৬]

করোনাভাইরাস একই ধরনের অনেকগুলি ভাইরাসের একটি বৃহৎ পরিবার যা প্রাণী ও মানুষে সংক্রমিত হতে পারে। ২১শ শতকের আগ পর্যন্ত করোনাভাইরাসগুলি মানুষের দেহে সাধারণ সর্দি-কাশি ব্যতীত অন্য কোনও উপসর্গ বা রোগব্যাধি সৃষ্টি করত না। কিন্তু ২১শ শতকে এসে এ পর্যন্ত ৩টি নতুন ধরনের করোনাভাইরাসের উদ্ভব হয়েছে (সার্স, মার্স ও উহান করোনাভাইরাস) যেগুলি মানব সম্প্রদায়ে ব্যাপক অঞ্চল জুড়ে প্রাণঘাতী আকার ধারণ করার ঝুঁকি বহন করে।[২৭]

উহান করোনাভাইরাসটির বংশাণুসমগ্রের অনুক্রম (জিনোম সিকোয়েন্স) ও সার্স করোনাভাইরাসের বংশাণুসমগ্রের অনুক্রমের মধ্যে প্রায় ৭০% মিল পাওয়া গেছে। এর আগে ২০০২ সালেও চীনদেশেই একই ধরনের জীবন্ত প্রাণী বিক্রির বাজার থেকে ("গুরুতর তীব্র শ্বাসকষ্টজনিত উপসর্গসমষ্টি-সংশ্লিষ্ট করোনাভাইরাস"; "Severe Acute Respiratory Syndrome-related Coronavirus", সংক্ষেপে SARS‐CoV) সার্স করোনাভাইরাসের সংক্রমণ, প্রাদুর্ভাব ও বিশ্বব্যাপী বিস্তার ঘটেছিল। বিশ্বের ৩০টি দেশে সার্স ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ে, এতে ৮৪৩৭ জন ব্যক্তি নিশ্চিতভাবে আক্রান্ত হয় এবং ৮১৩ জনের মৃত্যু হয়।[২৮] এর ১০ বছর পরে ২০১২ সালে মধ্যপ্রাচ্যের সৌদি আরব থেকে মার্স (মধ্যপ্রাচ্যীয় শ্বাসকষ্টজনিত উপসর্গসমষ্টি-সংশ্লিষ্ট করোনাভাইরাস; "Middle Eastern Respiratory Syndrome-related Coronavirus", সংক্ষেপে MERS‐CoV) নামের আরেকটি বিপজ্জনক প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস উট থেকে মানুষের দেহে সংক্রমিত হয়েছিল। ভাইরাসটি ২৭টি দেশে ছড়িয়ে পড়ে, এতে ২৪৯৪ জন নিশ্চিতভাবে আক্রান্ত হয় এবং এদের মধ্যে ৮৫৮ জনের মৃত্যু হয়।[২৮]

অবস্থান অনুযায়ী কোভিড-১৯ মহামারী[২৯][৩০]
অবস্থান মামলা মৃত্যু
বিশ্ব ২৫৩,৩৯১,৩২৪ ৫,১০৮,০০৮
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ৪৭,৮৩৪,৮১০ ৭৮২,৯৩৩
ইউরোপীয় ইউনিয়ন ৩৯,২৬৯,১৮৫ ৭৮৭,৭৭২
ভারত ৩৪,৪২৬,০৩৬ ৪৬৩,২৪৫
ব্রাজিল ২১,৯৪০,৯৫০ ৬১০,৯৩৫
যুক্তরাজ্য ৯,৪৮৭,৩০২ ১৪২,৬৭৮
রাশিয়া ৯,০৩১,৮৫১ ২৫৪,১৬৭
তুরস্ক ৮,৩৬৩,৯৫৯ ৭৩,১২৭
ফ্রান্স
ইরান
আর্জেন্টিনা
স্পেন
কলম্বিয়া
ইতালি ৪,৮৪৩,৯৫৭ ১৩২,৬৮৬
জার্মানি
ইন্দোনেশিয়া
মেক্সিকো
পোল্যান্ড
দক্ষিণ আফ্রিকা
ইউক্রেন
ফিলিপাইন
মালয়েশিয়া
পেরু
নেদারল্যান্ডস
ইরাক
থাইল্যান্ড
চেক প্রজাতন্ত্র
জাপান
কানাডা
চিলি
বাংলাদেশ ১,৫৭২,১২৭ ২৭,৯১২
রোমানিয়া
ইসরায়েল
বেলজিয়াম
পাকিস্তান ১,২৭৯,৩৭৩ ২৮,৫৯৫
সুইডেন
পর্তুগাল
সার্বিয়া
কাজাখস্তান
মরক্কো
কিউবা
ভিয়েতনাম
সুইজারল্যান্ড
জর্ডান
হাঙ্গেরি
নেপাল
অস্ট্রিয়া
সংযুক্ত আরব আমিরাত
তিউনিসিয়া
গ্রিস
জর্জিয়া (দ্ব্যর্থতা নিরসন)
লেবানন
গুয়াতেমালা
বেলারুশ
বুলগেরিয়া
কোস্টা রিকা
সৌদি আরব
শ্রীলঙ্কা
ইকুয়েডর
আজারবাইজান
বলিভিয়া
মিয়ানমার
পানামা
প্যারাগুয়ে
ফিলিস্তিন
শ্লোভাকিয়া
ক্রোয়েশিয়া
প্রজাতন্ত্রী আয়ারল্যান্ড
কুয়েত
ভেনিজুয়েলা
উরুগুয়ে
লিথুয়ানিয়া
ডেনমার্ক
ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্র
হন্ডুরাস
ইথিওপিয়া
লিবিয়া
দক্ষিণ কোরিয়া
মঙ্গোলিয়া
মলদোভা
মিশর
শ্লোভেনিয়া
ওমান
আর্মেনিয়া
বাহরিন
কেনিয়া
বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা
কাতার
নাইজেরিয়া
জাম্বিয়া
আলজেরিয়া
নরওয়ে
উত্তর ম্যাসেডোনিয়া
ল্যাটভিয়া
বতসোয়ানা
উজবেকিস্তান
কিরঘিজস্তান
আলবানিয়া
এস্তোনিয়া
সিঙ্গাপুর
কসোভো
আফগানিস্তান
অস্ট্রেলিয়া
ফিনল্যান্ড
মোজাম্বিক
মন্টেনিগ্রো
জিম্বাবোয়ে
ঘানা
নামিবিয়া
উগান্ডা
সাইপ্রাসের
কম্বোডিয়া
এল সালভাদর
ক্যামেরুন
রুয়ান্ডা
চীন
জামাইকা
মালদ্বীপ
লুক্সেমবুর্গ
সেনেগাল
অ্যাঙ্গোলা
মালাউই
আইভরি কোস্ট
কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র
ত্রিনিদাদ ও টোবাগো
ফিজি
সুরিনাম
ইস্তেনী
মাদাগাস্কার
সিরিয়া
সুদান
কেপ ভার্দে
মাল্টা
মৌরিতানিয়া
গায়ানা
গ্যাবন
লাওস
গিনি
পাপুয়া নিউ গিনি
তানজানিয়া
টোগো
বেলিজ
বেরিন
হাইতি
বাহামা
সেশেলস
লেসোথো
সোমালিয়া
বুরুন্ডি
পূর্ব তিমুর
তাজিকিস্তান
মরিশাস
কঙ্গো প্রজাতন্ত্র
তাইওয়ান
নিকারাগুয়া
মালি
অ্যান্ডোরা
বুরকিনা ফাসো
বার্বাডোস
জিবুতি
নিরক্ষীয় গিনি
আইসল্যান্ড
সেন্ট লুসিয়া
হংকং
দক্ষিণ সুদান
ব্রুনেই
মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র
গাম্বিয়া
ইয়েমেন
ইরিত্রিয়া
সিয়েরা লিওন
নাইজার
গিনি-বিসাউ
লাইবেরিয়া
গ্রেনাডা
নিউজিল্যান্ড
সান মারিনো
চাদ
সেন্ট ভিনসেন্ট এবং গ্রেনাডাইনস
ডোমিনিকা
কোমোরোস
অ্যান্টিগুয়া এবং বারবুডা
সাও টোম এবং প্রিন্সিপ
লিচেনস্টাইন
মোনাকো
সেন্ট কিটস এবং নেভিস
ভুটান
ভ্যাটিকান সিটি
সলোমন দ্বীপপুঞ্জ
প্যালেস
ভানুয়াটু
মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ
সামোয়া
কিরিবাটি
মাইক্রোনেসিয়ার ফেডারেটেড স্টেটস

শনাক্তকরণ, উপসর্গ ও নিরাময়

পলিমারেজ শৃঙ্খল বিক্রিয়া পরীক্ষার (পিসিআর টেস্ট) মাধ্যমে উপরোক্ত বাজারের সাথে সরাসরি জড়িত অনেক ব্যক্তির দেহে এবং বাজারের সাথে জড়িত নয়, এমন ব্যক্তিদের দেহেও ভাইরাসটির সংক্রমণ হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। ভাইরাসটি মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমণ হতে পারে, এমন প্রমাণও পাওয়া গেছে।[৩১] তবে এই নতুন ভাইরাসটি সার্স ভাইরাসের সমপর্যায়ের মারাত্মক কি না, তা এখনও পরিষ্কার নয়।[৩২][৩৩][৩৪][৩৫]

এই ভাইরাসের সংক্রমণে জ্বর, অবসাদ, পেশীতে ব্যথা, শুকনো কাশি, শ্বাসকষ্ট ও শ্বাসনালীর রোগ (যেমন- ক্লোমনালীর প্রদাহ তথা ব্রঙ্কাইটিস এবং নিউমোনিয়া) হয়। কদাচিৎ মাথাব্যথা বা কফসহ কাশি হতে পারে। রোগীদের রক্ত পরীক্ষা করে দেখা গেছে এই ভাইরাসের কারণে তাদের শ্বেত রক্তকণিকার সংখ্যা হ্রাস পায়। এছাড়া যকৃৎ ও বৃক্কের (কিডনি) ক্ষতি হয়। সাধারণত এক সপ্তাহের আগ পর্যন্ত উপসর্গগুলি ডাক্তার দেখানোর মত জটিল রূপ ধারণ করে না। কিন্তু ২য় সপ্তাহে এসে ব্যক্তিভেদে অবস্থার দ্রুত ও গুরুতর অবনতি ঘটতে পারে। যেমন ফুসফুসের ক্ষতিবৃদ্ধির সাথে সাথে ধমনীর রক্তে অক্সিজেনের স্বল্পতা (হাইপক্সেমিয়া) দেখা দেয় এবং রোগীকে অক্সিজেন চিকিৎসা দিতে হয়। এছাড়া সংকটাপন্ন তীব্র শ্বাসকষ্টমূলক সিনড্রোম বা অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ডিসট্রেস সিনড্রোম পরিলক্ষিত হয়। ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ রোগীকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (intensive care unit বা ICU) রেখে যান্ত্রিকভাবে শ্বাসগ্রহণ করাতে হয় এবং কখনও কখনও কৃত্রিম ফুসফুসের ভেতরে রক্ত পরিচালনার মাধ্যমে রক্তে অক্সিজেন যোগ করতে হয়। এছাড়া ফুসফুসের ব্যাপক ক্ষতি হবার কারণে ব্যাকটেরিয়াঘটিত ২য় একটি নিউমোনিয়া হবার বড় সম্ভাবনা থাকে এবং নিবিড় পরিচর্যাধীন রোগীদের ১০% ক্ষেত্রে এটি হয়।[২৭]

ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের আক্রমণের মত উপসর্গ হলেও ফ্লুয়ের ঔষধে কোনও কাজ হয় না। এ পর্যন্ত রোগটির জন্য কোনও ঔষধ বা টিকা উদ্ভাবিত হয়নি। হাসপাতালে নিবিড় চিকিৎসা ছাড়া রোগ থেকে সেরে ওঠার উপায় নেই। যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আগে থেকেই কম, তাদের নিউমোনিয়া হয়ে মারা যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। সাধারণত বৃদ্ধদের মধ্যে ভাইরাসটির ক্ষতিকর প্রভাব বেশি দেখা গেছে। তবে এ পর্যন্ত ইনফ্লুয়েঞ্জার চেয়ে বেশি মারাত্মক হবার কোনও সম্ভাবনা দেখা যায়নি। উল্লেখ্য যে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের কারণে প্রতি বছর ৪ লক্ষ লোকের মৃত্যু ঘটে।[৩৬]


বিস্তারের উপায়

উহান করোনাভাইরাসটি অপেক্ষাকৃত বড় আকারের; এর আকার প্রায় ১২৫ ন্যানোমিটার (অর্থাৎ ১ মিটারের প্রায় ১ কোটি ভাগের এক ভাগ)। আকারে বড় বলে এটি বাতাসে কয়েক ঘণ্টার বেশি ভাসন্ত অবস্থায় থাকতে পারে না এবং কয়েক ফুটের বেশী দূরত্বে গমন করতে পারে না। ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের মতো এটিও প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সংস্পর্শের মাধ্যমে এক ব্যক্তি থেকে আরেক ব্যক্তিতে ছড়াতে পারে। বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শের সময় মুখের হাঁচি, কাশি, লালা বা থুতু থেকে সরাসরি ভাইরাসটি এক ব্যক্তি থেকে আরেক ব্যক্তিতে সংক্রামিত হতে পারে। অন্যদিকে জনসাধারণ্য স্থানে কোনও আক্রান্ত ব্যক্তি হাঁচি-কাশি দিলে বা ভাইরাসযুক্ত হাত দিয়ে ধরলে কাছাকাছি পৃষ্ঠতলে যেমন দরজার হাতলে, খাটের খুঁটিতে বা মুঠোফোনে ভাইরাস লেগে থাকতে পারে এবং সেখান থেকে পরোক্ষভাবে আরেকজন ব্যক্তির কাছে সেটি ছড়াতে পারে।[২৭]

এছাড়া উহান করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসার সময়ে যেমন ক্লোমনালীবীক্ষণ বা শ্বাসনালীর চিকিৎসার সময়ে বাতাসে দেহ থেকে নিঃসৃত ভাইরাসবাহী তরলের বাতাসে ভাসমান কণাগুলি একাধিক চিকিৎসাকর্মীকে সংক্রামিত করতে পারে এবং সাবধানতা অবলম্বন না করলে হাসপাতালের সবার মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে। হাত পরিষ্কার রাখলে এবং বিশেষ পোষাক বা গাউন, হাতমোজা, মুখোশ ও চশমা পরিধান করলে বাতাসে ভাইরাসবাহী ভাসমান কণার বিস্তার কমানো সম্ভব। ভাইরাসটির সংক্রমণ ও লক্ষণ প্রকাশের অন্তর্বর্তী কাল (ইনকিউবেশন পিরিয়ড) এখনও নিশ্চিতভাবে জানা না গেলেও সংক্রমণের মোটামুটি ১ থেকে ১৪ দিনের মধ্যেই রোগের উপসর্গ দেখা যাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।[২৭]

ঝুঁকি

২০২০ সালের ২৩শে জানুয়ারি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা উহান করোনাভাইরাসের বিস্তারকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জনস্বাস্থ্যের জন্য একটি জরুরী অবস্থা হিসেবে ঘোষণা দেবার বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নেয়।[৩৭][৩৮] তবে তারা বলে যে তাদের জরুরী অবস্থা সমিতি প্রয়োজন হলে এই সিদ্ধান্ত ভবিষ্যতে পুনরায় খতিয়ে দেখতে পারে। এর আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ভাইরাসটির ব্যাপক বিস্তারের সম্ভাবনার ব্যাপারে সতর্ক করেছিল। সে সময় চীনা নববর্ষ উপলক্ষে চীনের পর্যটকদের গমনাগমনের শীর্ষ মৌসুমের কারণে ভাইরাসটির ছড়িয়ে পড়ার ব্যাপারে দুশ্চিন্তা ছিল।

প্রতিক্রিয়া

২০১৯ সালের ৩১শে ডিসেম্বর তারিখে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে প্রথম ভাইরাসটির সংক্রমণের কথা অবহিত করা হয়। ২৭শে জানুয়ারি ২০২০ তারিখ পর্যন্ত চীনে প্রায় ৪৫১৫ ব্যক্তির দেহে ভাইরাসটির উপস্থিতি শনাক্ত করা হয়েছে, যাদের মধ্যে ৯৭৬ জনের অবস্থা গুরুতর।[৩৯] ভাইরাসের কারণে ২০২০ সালের ৯ই জানুয়ারি প্রথম ব্যক্তিটি মারা যায়। ২৭শে জানুয়ারি ২০২০ তারিখ পর্যন্ত ভাইরাসটির কারণে চীনে ১০১ জন ব্যক্তি মারা যায়।

ভাইরাসের বিস্তার রোধের উদ্দেশ্যে চীনের বহু শহরে নববর্ষ উৎসব বাতিল করে দেওয়া হয়, উৎসব-উদ্দীপনামূলক জনসমাগম নিষিদ্ধ করা হয় এবং পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় বেড়াবার স্থানগুলিও জনসাধারণের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়। চীনা সরকারের নির্দেশে উহান শহরে ও হুপেই প্রদেশের আরও ১৭টি শহরে অন্তর্গামী ও বহির্গামী সমস্ত গণপরিবহন সেবা স্থগিত করা হয়েছে। ফলে প্রায় ৫ কোটি চীনা অধিবাসী (উহান শহরের ১ কোটি ১০ লক্ষ অধিবাসীসহ) নিজ শহরে প্রায় অবরুদ্ধ জীবনযাপন করছে। উহানে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য বিশেষ হাসপাতাল নির্মাণ করা হচ্ছে।

দেশ অনুযায়ী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. 柳叶刀披露首例新冠肺炎患者发病日期,较官方通报早7天। ২৭ জানুয়ারি ২০২০। ৩০ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জানুয়ারি ২০২০ 
  2. 《柳叶刀》刊文详解武汉肺炎 最初41案例即有人传人迹象। ২৬ জানুয়ারি ২০২০। ৩০ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জানুয়ারি ২০২০ 
  3. "2019 Novel Coronavirus (2019-nCoV) Situation Summary"Centers for Disease Control and Prevention। ৩০ জানুয়ারি ২০২০। ২৬ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জানুয়ারি ২০২০ 
  4. "Coronavirus Update (Live)"Worldometer। ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ১৬ মার্চ ২০২০ 
  5. "Is the World Ready for the Coronavirus?"। Editorial। The New York Times। ২৯ জানুয়ারি ২০২০। ৩০ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জানুয়ারি ২০২০ 
  6. "China virus death toll rises to 41, more than 1,300 infected worldwide"CNBC। ২৪ জানুয়ারি ২০২০। ২৬ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জানুয়ারি ২০২০ 
  7. Shih, Gerry; Lynch, David J.; Denyer, Simon। "Fifth coronavirus case confirmed in U.S., 1,000 more cases expected in China"The Washington Post। ২৭ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জানুয়ারি ২০২০ 
  8. https://www.technologyreview.com/s/615184/the-coronavirus-is-the-first-true-social-media-infodemic/
  9. Iqbal, Nosheen (১ ফেব্রুয়ারি ২০২০)। "Coronavirus fears fuel racism and hostility, say British-Chinese"The Observerআইএসএসএন 0029-7712। ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ 
  10. "Coronavirus fears trigger anti-China sentiment across the globe"Global News। ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ 
  11. Yeung, Jessie। "As the coronavirus spreads, fear is fueling racism and xenophobia"। CNN। ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ 
  12. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; characteristicsZH নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  13. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; AutoDW-67 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  14. Ma, Josephina (১৩ মার্চ ২০২০)। "Coronavirus: China's first confirmed Covid-19 case traced back to November 17"South China Morning Post। Hong Kong। 
  15. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; AutoDW-69 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  16. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; bbc50984025 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  17. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; Qun29Jan2020 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  18. WHO–China Joint Mission (১৬–২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০)। "Report of the WHO-China Joint Mission on Coronavirus Disease 2019 (COVID-19)" (পিডিএফ)World Health Organization। সংগ্রহের তারিখ ৮ মার্চ ২০২০ 
  19. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; france2420200120 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  20. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; Epidemiology17Feb2020 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  21. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; WHO_PHEIC_decl2 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  22. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; AutoDW-66 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  23. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; WHOpandemic2 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  24. "Europe 'now epicentre of coronavirus pandemic'"BBC News Online। ১৩ মার্চ ২০২০। 
  25. Regan, Helen। "More coronavirus cases outside mainland China than inside as pandemic accelerates"CNN 
  26. "Coronavirus Update (Live): 244,740 Cases and 10,024 Deaths from COVID-19 Virus Outbreak - Worldometer" 
  27. Anni Sparrow। "How China's Coronavirus Is Spreading—and How to Stop It"www.foreignpolicy.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০১-২৮ 
  28. "China battles coronavirus outbreak: All the latest updates"www.aljazeera.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০১-২৮ 
  29. Ritchie, Hannah; Mathieu, Edouard; Rodés-Guirao, Lucas; Appel, Cameron; Giattino, Charlie; Ortiz-Ospina, Esteban; Hasell, Joe; Macdonald, Bobbie; Beltekian, Diana (২০২০-০৩-০৫)। "Coronavirus Pandemic (COVID-19)"Our World in Data 
  30. বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯- এর সর্বশেষ তথ্য, হাল-নাগাদ সময় : Nov 13, 2021 06:53:56 PM
  31. Lisa Schnirring: WHO decision on nCoV emergency delayed as cases spike 23 January 2020 CIDRAP News, accessed 23 January 2020
  32. Hui, David S.; Azhar, Esam EI; Madani, Tariq A.; Ntoumi, Francine; Kock, Richard; Dar, Osman; Ippolito, Giuseppe; Mchugh, Timothy D.; Memish, Ziad A.; Drosten, Christian; Zumla, Alimuddin (১৪ জানুয়ারি ২০২০)। "The continuing epidemic threat of novel coronaviruses to global health – the latest novel coronavirus outbreak in Wuhan, China"International Journal of Infectious Diseases91: 264–266। আইএসএসএন 1201-9712ডিওআই:10.1016/j.ijid.2020.01.009 
  33. "Undiagnosed pneumonia – China (HU) (01): wildlife sales, market closed, RFI Archive Number: 20200102.6866757"Pro-MED-mail। International Society for Infectious Diseases। ২২ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ জানুয়ারি ২০২০ 
  34. Cohen, Jon; Normile, Dennis (১৭ জানুয়ারি ২০২০)। "New SARS-like virus in China triggers alarm"Science367 (6475): 234–235। আইএসএসএন 0036-8075ডিওআই:10.1126/science.367.6475.234পিএমআইডি 31949058। ১৭ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে মূলঅর্থের বিনিময়ে সদস্যতা প্রয়োজন থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জানুয়ারি ২০২০ 
  35. Parry, Jane (২০ জানুয়ারি ২০২০)। "China coronavirus: cases surge as official admits human to human transmission"অর্থের বিনিময়ে সদস্যতা প্রয়োজনBritish Medical Journal368আইএসএসএন 1756-1833ডিওআই:10.1136/bmj.m236 
  36. Boseley, Sarah; Devlin, Hannah; Belam, Martin (২০২০-০১-২৮)। "What is coronavirus and how worried should we be?"The Guardian (ইংরেজি ভাষায়)। আইএসএসএন 0261-3077। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০১-২৮ 
  37. Schnirring, Lisa; 2020 (২৩ জানুয়ারি ২০২০)। "WHO holds off on nCoV emergency declaration as cases soar"CIDRAP। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জানুয়ারি ২০২০ 
  38. "Statement on the meeting of the International Health Regulations (2005) Emergency Committee regarding the outbreak of novel coronavirus 2019 (n-CoV) on 23 January 2020"www.who.int। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জানুয়ারি ২০২০ 
  39. https://globalnews.ca/news/6470807/china-coronavirus-death-toll-raises/

বহিঃসংযোগ

সরকারি স্বাস্থ্য সংস্থা

উপাত্ত ও মানচিত্র