প্রফুল্ল চন্দ্র রায়: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান)
বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে। কোন সমস্যায় এর পরিচালককে জানান।
NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান)
বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে। কোন সমস্যায় এর পরিচালককে জানান।
২৪ নং লাইন: ২৪ নং লাইন:
}}
}}


'''আচার্য স্যার প্রফুল্ল চন্দ্র রায়''' [[Order of the Indian Empire|CIE]], [[Indian National Science Academy|FNI]], [[The Asiatic Society|FRASB]], [[Indian Association for the Cultivation of Science|FIAS]], [[Chemical Society|FCS]] (''Praphulla Chandra Rāy'', যিনি '''পি সি রায়''' নামেও পরিচিত; [[আগস্ট ২]], [[১৮৬১]] - [[জুন ১৬]], [[১৯৪৪]]<ref name="JICS_Ray_Obit">{{সাময়িকী উদ্ধৃতি | শেষাংশ১ = | প্রথমাংশ১ = | ইউআরএল = | শিরোনাম = Obituary: Sir Prafulla Chandra Ray| সাময়িকী = Journal of the Indian Chemical Society| খণ্ড = XXI | পাতাসমূহ = 253–260 | বছর = 1944 | pmid = | pmc = | অকার্যকর-ইউআরএল = | df = }}</ref>) ছিলেন একজন প্রখ্যাত [[বাঙালি]] রসায়নবিদ, শিক্ষক, দার্শনিক ও কবি। তিনি [[বেঙ্গল কেমিক্যালস এণ্ড ফার্মাসিউটিক্যালস|বেঙ্গল কেমিক্যালসের]] প্রতিষ্ঠাতা এবং [[মার্কারি (I) নাইট্রেট|মার্কারি (I) নাইট্রেটের]] আবিষ্কারক। দেশি শিল্পায়ন উদ্যোক্তাও ছিলেন তিনি। তার জন্ম অবিভক্ত বাংলার [[যশোর জেলা]]য় (বর্তমানে বাংলাদেশের অন্তর্গত)। তিনি [[জগদীশ চন্দ্র বসু|বৈজ্ঞানিক জগদীশ চন্দ্র বসুর]] সহকর্মী ছিলেন।
'''আচার্য স্যার প্রফুল্ল চন্দ্র রায়''' [[Order of the Indian Empire|CIE]], [[Indian National Science Academy|FNI]], [[The Asiatic Society|FRASB]], [[Indian Association for the Cultivation of Science|FIAS]], [[Chemical Society|FCS]] (''Praphulla Chandra Rāy'', যিনি '''পি সি রায়''' নামেও পরিচিত; [[আগস্ট ২]], [[১৮৬১]] - [[জুন ১৬]], ১৯৪৪<ref name="JICS_Ray_Obit">{{সাময়িকী উদ্ধৃতি | শেষাংশ১ = | প্রথমাংশ১ = | ইউআরএল = | শিরোনাম = Obituary: Sir Prafulla Chandra Ray| সাময়িকী = Journal of the Indian Chemical Society| খণ্ড = XXI | পাতাসমূহ = 253–260 | বছর = 1944 | pmid = | pmc = | অকার্যকর-ইউআরএল = | df = }}</ref>) ছিলেন একজন প্রখ্যাত [[বাঙালি]] রসায়নবিদ, শিক্ষক, দার্শনিক ও কবি। তিনি [[বেঙ্গল কেমিক্যালস এণ্ড ফার্মাসিউটিক্যালস|বেঙ্গল কেমিক্যালসের]] প্রতিষ্ঠাতা এবং [[মার্কারি (I) নাইট্রেট|মার্কারি (I) নাইট্রেটের]] আবিষ্কারক। দেশি শিল্পায়ন উদ্যোক্তাও ছিলেন তিনি। তার জন্ম অবিভক্ত বাংলার [[যশোর জেলা]]য় (বর্তমানে বাংলাদেশের অন্তর্গত)। তিনি [[জগদীশ চন্দ্র বসু|বৈজ্ঞানিক জগদীশ চন্দ্র বসুর]] সহকর্মী ছিলেন।


== জন্ম ও বাল্যকাল ==
== জন্ম ও বাল্যকাল ==
৩৮ নং লাইন: ৩৮ নং লাইন:


== কর্মজীবন ==
== কর্মজীবন ==
ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ঘুরে [[১৮৮৮]] খ্রিষ্টাব্দে প্রফুল্লচন্দ্র রায় স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করেন। দেশে ফিরে প্রেসিডেন্সী কলেজের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগদানের মাধ্যমে তিনি কর্মজীবন শুরু করেন। প্রায় ২৪ বছর তিনি এই কলেজে অধ্যাপনা করেছিলেন। অধ্যাপনাকালে তার প্রিয় বিষয় [[রসায়ন]] নিয়ে তিনি নিত্য নতুন অনেক গবেষণাও চালিয়ে যান। তার উদ্যোগে তার নিজস্ব গবেষণাগার থেকেই [[বেঙ্গল কেমিক্যালস এণ্ড ফার্মাসিউটিক্যালস|বেঙ্গল কেমিক্যাল কারখানা]] সৃষ্টি হয় এবং পরবর্তীকালে [[১৯০১]] খ্রিষ্টাব্দে তা কলকাতার মানিকতলায় ৪৫ একর জমিতে স্থানান্তরিত করা হয়। তখন এর নতুন নাম রাখা হয় [[বেঙ্গল কেমিক্যালস এণ্ড ফার্মাসিউটিক্যালস|বেঙ্গল কেমিক্যাল এন্ড ফার্মাসিউটিক্যাল ওয়ার্কস লিমিটেড]]।
ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ঘুরে [[১৮৮৮]] খ্রিষ্টাব্দে প্রফুল্লচন্দ্র রায় স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করেন। দেশে ফিরে প্রেসিডেন্সী কলেজের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগদানের মাধ্যমে তিনি কর্মজীবন শুরু করেন। প্রায় ২৪ বছর তিনি এই কলেজে অধ্যাপনা করেছিলেন। অধ্যাপনাকালে তার প্রিয় বিষয় [[রসায়ন]] নিয়ে তিনি নিত্য নতুন অনেক গবেষণাও চালিয়ে যান। তার উদ্যোগে তার নিজস্ব গবেষণাগার থেকেই [[বেঙ্গল কেমিক্যালস এণ্ড ফার্মাসিউটিক্যালস|বেঙ্গল কেমিক্যাল কারখানা]] সৃষ্টি হয় এবং পরবর্তীকালে ১৯০১ খ্রিষ্টাব্দে তা কলকাতার মানিকতলায় ৪৫ একর জমিতে স্থানান্তরিত করা হয়। তখন এর নতুন নাম রাখা হয় [[বেঙ্গল কেমিক্যালস এণ্ড ফার্মাসিউটিক্যালস|বেঙ্গল কেমিক্যাল এন্ড ফার্মাসিউটিক্যাল ওয়ার্কস লিমিটেড]]।


== অবদান ==
== অবদান ==
৪৮ নং লাইন: ৪৮ নং লাইন:
== সম্মাননা ==
== সম্মাননা ==
* শিক্ষকতার জন্য তিনি সাধারণ্যে ‘‘আচার্য’’ হিসেবে আখ্যায়িত।
* শিক্ষকতার জন্য তিনি সাধারণ্যে ‘‘আচার্য’’ হিসেবে আখ্যায়িত।
* '''সি আই ই:''' [[১৯১১]] খ্রিষ্টাব্দে [[কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়|কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের]] সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবে তৃতীয়বারের মত তিনি [[ইংল্যান্ড]] যান এবং সেখান থেকেই সি আই ই লাভ করেন।
* '''সি আই ই:''' ১৯১১ খ্রিষ্টাব্দে [[কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়|কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের]] সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবে তৃতীয়বারের মত তিনি [[ইংল্যান্ড]] যান এবং সেখান থেকেই সি আই ই লাভ করেন।
* '''সম্মানসূচক ডক্টরেট:''' [[১৯১১]] খ্রিষ্টাব্দে [[ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়]] তাকে এই ডিগ্রী দেয়। এছাড়া [[১৯৩৬]] খ্রিষ্টাব্দে [[ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়]] এবং পরবর্তীকালে [[মহীশুর বিশ্ববিদ্যালয়|মহীশুর]] ও [[বেনারস বিশ্ববিদ্যালয়]] থেকেও তিনি ডক্টরেট পান।
* '''সম্মানসূচক ডক্টরেট:''' ১৯১১ খ্রিষ্টাব্দে [[ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়]] তাকে এই ডিগ্রী দেয়। এছাড়া ১৯৩৬ খ্রিষ্টাব্দে [[ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়]] এবং পরবর্তীকালে [[মহীশুর বিশ্ববিদ্যালয়|মহীশুর]] ও [[বেনারস বিশ্ববিদ্যালয়]] থেকেও তিনি ডক্টরেট পান।
* '''নাইট:''' [[১৯১৯]] খ্রিষ্টাব্দে তিনি ব্রিটিশ সরকার প্রদত্ব [[নাইট উপাধি]] লাভ করেন ।
* '''নাইট:''' ১৯১৯ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ব্রিটিশ সরকার প্রদত্ব [[নাইট উপাধি]] লাভ করেন ।


== ব্যক্তি হিসেবে আচার্য ==
== ব্যক্তি হিসেবে আচার্য ==
৫৭ নং লাইন: ৫৭ নং লাইন:


=== অসাম্প্রদায়িকতা ===
=== অসাম্প্রদায়িকতা ===
কিছু সূত্র মতে, তিনি অসাম্প্রদায়িকই শুধু ছিলেন না বরং সাম্প্রদায়িক চিন্তাধারার মূলোৎপাটনের জন্যও চেষ্টা করেছেন সবসময়। [[১৯২৫]] খ্রিষ্টাব্দে ড. [[মুহম্মদ কুদরাত-এ-খুদা|কুদরত-এ-খুদাকে]] প্রেসিডেন্সী কলেজে থেকে রসায়নে প্রথম বিভাগ দেয়া হয়। অনেকের বিরোধিতা সত্ত্বেও প্রফুল্লচন্দ্র নিজের সিদ্ধান্ত মোতাবেক কুদরত-এ-খুদাকে প্রথম বিভাগ দেন। এরকম ব্যাপার শোনা যায় [[আবুল কাশেম ফজলুল হক|শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুক হকের]] জীবনী থেকেও।
কিছু সূত্র মতে, তিনি অসাম্প্রদায়িকই শুধু ছিলেন না বরং সাম্প্রদায়িক চিন্তাধারার মূলোৎপাটনের জন্যও চেষ্টা করেছেন সবসময়। ১৯২৫ খ্রিষ্টাব্দে ড. [[মুহম্মদ কুদরাত-এ-খুদা|কুদরত-এ-খুদাকে]] প্রেসিডেন্সী কলেজে থেকে রসায়নে প্রথম বিভাগ দেয়া হয়। অনেকের বিরোধিতা সত্ত্বেও প্রফুল্লচন্দ্র নিজের সিদ্ধান্ত মোতাবেক কুদরত-এ-খুদাকে প্রথম বিভাগ দেন। এরকম ব্যাপার শোনা যায় [[আবুল কাশেম ফজলুল হক|শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুক হকের]] জীবনী থেকেও।


== গ্রন্থাবলী ==
== গ্রন্থাবলী ==

১৪:১৪, ২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ


প্রফুল্ল চন্দ্র রায়

জন্ম
প্রফুল্ল চন্দ্র রায়

২ আগস্ট, ১৮৬১ খ্রিষ্টাব্দ
মৃত্যু১৬ জুন ১৯৪৪(1944-06-16) (বয়স ৮২)
জাতীয়তাভারতীয়
মাতৃশিক্ষায়তনবিদ্যাসাগর কলেজ
প্রেসিডেন্সি কলেজ
কলকাতা
এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়
পরিচিতির কারণভারতীয় রসায়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠাতা; ভারতীয় রাসায়নিক শিল্প প্রতিষ্ঠাতা
পুরস্কার
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন
কর্মক্ষেত্র
প্রতিষ্ঠানসমূহ
অভিসন্দর্ভের শিরোনামConjugated Sulphates of the Copper-Magnesium Group: A Study of Isomorphous Mixtures and Molecular Combinations (১৮৮৭)
ডক্টরাল উপদেষ্টাআলেকজান্ডার ক্রুম ব্রাউন
উল্লেখযোগ্য শিক্ষার্থীসত্যেন্দ্রনাথ বসু
মেঘনাদ সাহা
জ্ঞানেন্দ্রনাথ মুখার্জী
জ্ঞানেন্দ্র চন্দ্র ঘোষ
স্বাক্ষর

আচার্য স্যার প্রফুল্ল চন্দ্র রায় CIE, FNI, FRASB, FIAS, FCS (Praphulla Chandra Rāy, যিনি পি সি রায় নামেও পরিচিত; আগস্ট ২, ১৮৬১ - জুন ১৬, ১৯৪৪[২]) ছিলেন একজন প্রখ্যাত বাঙালি রসায়নবিদ, শিক্ষক, দার্শনিক ও কবি। তিনি বেঙ্গল কেমিক্যালসের প্রতিষ্ঠাতা এবং মার্কারি (I) নাইট্রেটের আবিষ্কারক। দেশি শিল্পায়ন উদ্যোক্তাও ছিলেন তিনি। তার জন্ম অবিভক্ত বাংলার যশোর জেলায় (বর্তমানে বাংলাদেশের অন্তর্গত)। তিনি বৈজ্ঞানিক জগদীশ চন্দ্র বসুর সহকর্মী ছিলেন।

জন্ম ও বাল্যকাল

পি সি রায় বাংলাদেশের খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলার রাডুলি গ্রামে ১৮৬১ সালের ২ আগস্ট জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন ভুবনমোহিনী দেবী এবং হরিশচন্দ্র রায়ের পুত্র। হরিশচন্দ্র রায় স্থানীয় জমিদার ছিলেন।[৩] বনেদি পরিবারের সন্তান প্রফুল্লচন্দ্র ছেলেবেলা থেকেই সব বিষয়ে অত্যন্ত তুখোড় এবং প্রত্যুৎপন্নমতি ছিলেন।

তার পড়াশোনা শুরু হয় বাবার প্রতিষ্ঠিত এম ই স্কুলে। ১৮৭২ খ্রিষ্টাব্দে তিনি কলকাতার হেয়ার স্কুলে ভর্তি হন, কিন্তু রক্ত আমাশায় রোগের কারণে তার পড়ালেখায় ব্যাপক বিঘ্নের সৃষ্টি হয়। বাধ্য হয়ে তিনি নিজ গ্রামে ফিরে যান। গ্রামে থাকার এই সময়টা তার জীবনে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনে সাহায্য করেছে। বাবার গ্রন্থাগারে প্রচুর বই পান তিনি এবং বইপাঠ তার জ্ঞানমানসের বিকাশসাধনে প্রভূত সহযোগিতা করে।

শিক্ষাজীবন

১৮৭৪ খ্রিষ্টাব্দে প্রফুল্লচন্দ্র কলকাতায় back করে অ্যালবার্ট স্কুলে ভর্তি হন। এই স্কুল থেকেই ১৮৭৮ খ্রিষ্টাব্দে তিনি সকুল ফাইনার তথা প্রবেশিকা পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। এরপর তিনি ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত মেট্রোপলিটন কলেজে (বর্তমান বিদ্যাসাগর কলেজ) ভর্তি হন। ১৮৮১ খ্রিষ্টাব্দে সেখান থেকে কলেজ ফাইনাল তথা এফ এ পরীক্ষায় (ইন্টারমিডিয়েট বা এইচএসসি) দ্বিতীয় বিভাগে পাশ করে তিনি প্রেসিডেন্সী কলেজে বি এ ক্লাসে ভর্তি হন। প্রেসিডেন্সী থেকে গিলক্রিস্ট বৃত্তি নিয়ে তিনি স্কটল্যান্ডের এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে যান। এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি বি এসসি পাশ করেন

যুবক প্রফুল্ল চন্দ্র রায়

পরবর্তীকালে এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়েই ডি এসসি ডিগ্রী লাভের জন্য গবেষণা শুরু করেন। তার সেই গবেষণার বিষয় ছিল কপার ম্যাগনেসিয়াম শ্রেণীর সম্মিলিত সংযুক্তি পর্যবেক্ষণ (Conjugated Sulphates of Copper Magnesium Group: A Study of Isomorphous Mixtures and Molecular Combination)। দুই বছরের কঠোর সাধনায় তিনি এই গবেষণা সমাপ্ত করেন এবং পিএইচ ডি ও ডি এসসি ডিগ্রী লাভ করেন। এমনকি তার এই গবেষণাপত্রটি শ্রেষ্ঠ মনোনীত হওয়ায় তাকে হোপ প্রাইজে ভূষিত করা হয়। এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালেই ১৮৮৫ খ্রিষ্টাব্দে সিপাহী বিদ্রোহের আগে ও পরে (India Before and After the Sepoy Mutiny) এবং ভারতবিষয়ক বিভিন্ন নিবন্ধ লিখে ভারতবর্ষ এবং ইংল্যান্ড ও এউ এস এ ফেরে দেন।

কর্মজীবন

ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ঘুরে ১৮৮৮ খ্রিষ্টাব্দে প্রফুল্লচন্দ্র রায় স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করেন। দেশে ফিরে প্রেসিডেন্সী কলেজের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগদানের মাধ্যমে তিনি কর্মজীবন শুরু করেন। প্রায় ২৪ বছর তিনি এই কলেজে অধ্যাপনা করেছিলেন। অধ্যাপনাকালে তার প্রিয় বিষয় রসায়ন নিয়ে তিনি নিত্য নতুন অনেক গবেষণাও চালিয়ে যান। তার উদ্যোগে তার নিজস্ব গবেষণাগার থেকেই বেঙ্গল কেমিক্যাল কারখানা সৃষ্টি হয় এবং পরবর্তীকালে ১৯০১ খ্রিষ্টাব্দে তা কলকাতার মানিকতলায় ৪৫ একর জমিতে স্থানান্তরিত করা হয়। তখন এর নতুন নাম রাখা হয় বেঙ্গল কেমিক্যাল এন্ড ফার্মাসিউটিক্যাল ওয়ার্কস লিমিটেড

অবদান

  • নিজের বাসভবনে দেশীয় ভেষজ নিয়ে গবেষণার মাধ্যমে তিনি তার গবেষণাকর্ম আরম্ভ করেন। তার এই গবেষণাস্থল থেকেই পরবর্তীকালে বেঙ্গল কেমিক্যাল কারখানার সৃষ্টি হয় যা ভারতবর্ষের শিল্পায়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে। তাই বলা যায় বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে ভারতীয় উপমহাদেশের শিল্পায়নে তার ভূমিকা অনস্বীকার্য।
  • ১৮৯৫ খ্রিষ্টাব্দে তিনি মারকিউরাস নাইট্রাইট (HgNO2) আবিষ্কার করেন যা বিশ্বব্যাপী আলোড়নের সৃষ্টি করে। এটি তার অন্যতম প্রধান আবিষ্কার। তিনি তার সমগ্র জীবনে মোট ১২টি যৌগিক লবণ এবং ৫টি থায়োএস্টার আবিষ্কার করেন।
  • সমবায়ের পুরোধা স্যার পিসি রায় ১৯০৯ খ্রিষ্টাব্দে নিজ জন্মভূমিতে একটি কো-অপারেটিভ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯০৩ খ্রিষ্টাব্দে বিজ্ঞানী পিসি রায় পিতার নামে আরকেবিকে হরিশ্চন্দ্র স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন।
  • বাগেরহাট জেলায় ১৯১৮ সালে তিনি পি, সি কলেজ নামে একটি কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। যা আজ বাংলাদেশের শিক্ষা বিস্তারে বিশাল ভূমিকা রাখছে।

সম্মাননা

ব্যক্তি হিসেবে আচার্য

দেশপ্রেম

আচার্য দেবের দেশপ্রেম তাকে ইউরোপে থেকে ফিরিয়ে এনেছিল। দেশে এসেও তিনি তার সেই স্বদেশপ্রীতির পরিচয় দিয়েছেন। তিনি ক্লাসে বাংলায় লেকচার দিতেন। বাংলা ভাষা তার অস্তিত্বের সাথে মিশে ছিল। তার বাচনভঙ্গী ছিল অসাধারণ যার দ্বারা তিনি ছাত্রদের মন জয় করে নিতেন খুব সহজেই। তিনি সকল ক্ষেত্রেই ছিলেন উদারপন্থী। আমর সোনর বাঙলা আমি তোমায় ভালোবাসি।

অসাম্প্রদায়িকতা

কিছু সূত্র মতে, তিনি অসাম্প্রদায়িকই শুধু ছিলেন না বরং সাম্প্রদায়িক চিন্তাধারার মূলোৎপাটনের জন্যও চেষ্টা করেছেন সবসময়। ১৯২৫ খ্রিষ্টাব্দে ড. কুদরত-এ-খুদাকে প্রেসিডেন্সী কলেজে থেকে রসায়নে প্রথম বিভাগ দেয়া হয়। অনেকের বিরোধিতা সত্ত্বেও প্রফুল্লচন্দ্র নিজের সিদ্ধান্ত মোতাবেক কুদরত-এ-খুদাকে প্রথম বিভাগ দেন। এরকম ব্যাপার শোনা যায় শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুক হকের জীবনী থেকেও।

গ্রন্থাবলী

  • India Before and After the Sepoy Mutiny (ভারত : সিপাহী বিদ্রোহের আগে ও পরে)
  • সরল প্রাণিবিজ্ঞান, বাঙ্গালী মস্তিষ্ক ও তার অপব্যবহার
  • হিন্দু রসায়নী বিদ্যা
  • মোট গবেষণাপত্রের সংখ্যা ১৪৫ টি

আরও দেখুন

সহায়ক গ্রন্থপঞ্জি

  • আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় জীবন ও সাধনা: অধ্যাপক এম কে আলী।
  • জীবনস্মৃতি আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়: জয়ন্ত কুমার ঘোষ।
  • আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়: শেখ শাহাদাত হোসেন বাচ্চু।
  • টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয় (জনকণ্ঠের সাপ্তাহিক প্রতিবেদন - ০৫ মে, ২০০২): অমল সাহা।
  • আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় উপমহাদেশে রসায়নশাস্ত্রের পথিকৃৎ (মাসিক সায়েন্স ওয়ার্ল্ড এর নিবন্ধ) - সুব্রত দাশ সোনা; বর্ষ ৫, সংখ্যা ৫৬, আগস্ট ২০০৬।

পাদটীকা

  1. Prior to 1970, the Indian National Science Academy was named the "National Institute of Sciences of India", and its fellows bore the post-nominal "FNI". The post-nominal became "FNA" in 1970 when the association adopted its present name.

তথ্যসূত্র

  1. "Proceedings of the Chemical Society"। Proceedings of the Chemical Society। 18.254: 160। ১৯০২। 
  2. "Obituary: Sir Prafulla Chandra Ray"। Journal of the Indian Chemical SocietyXXI: 253–260। ১৯৪৪। 
  3. "রায়, প্রফুল্লচন্দ্র"