আলতাফ মাহমুদ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
অ ক্যাট-এ-লট: বিষয়শ্রেণী:বাংলাদেশী সঙ্গীতজ্ঞ থেকে বিষয়শ্রেণী:বাংলাদেশী পুরুষ সঙ্গীতজ্ঞ-এ স্থানান্তরিত |
|||
১৫ নং লাইন: | ১৫ নং লাইন: | ||
}} |
}} |
||
'''আলতাফ মাহমুদ''' (জন্ম: ২৩ ডিসেম্বর, ১৯৩৩ - অন্তর্ধান: ১৯৭১) একজন [[বাংলাদেশ|বাংলাদেশি]] সুরকার, সংস্কৃতিকর্মী ও [[বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ|স্বাধীনতা যুদ্ধে]] শহিদ মুক্তিযোদ্ধা। তিনি একজন ভাষাসৈনিক ছিলেন এবং [[শহীদ দিবস|শহিদ দিবস]] নিয়ে রচিত [[আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো]] গানটির বর্তমান সুরটিও |
'''আলতাফ মাহমুদ''' (জন্ম: ২৩ ডিসেম্বর, ১৯৩৩ - অন্তর্ধান: ১৯৭১) একজন [[বাংলাদেশ|বাংলাদেশি]] সুরকার, সংস্কৃতিকর্মী ও [[বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ|স্বাধীনতা যুদ্ধে]] শহিদ মুক্তিযোদ্ধা। তিনি একজন ভাষাসৈনিক ছিলেন এবং [[শহীদ দিবস|শহিদ দিবস]] নিয়ে রচিত [[আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো]] গানটির বর্তমান সুরটিও তারই করা। এই গানের সুরকার হিসেবেই তিনি সমধিক পরিচিত। |
||
== ব্যক্তিজীবন == |
== ব্যক্তিজীবন == |
||
১৯৩৩ সালের ২৩ ডিসেম্বর [[বরিশাল জেলা|বরিশাল]] জেলার [[মুলাদী উপজেলা|মুলাদী উপজেলার]] পাতারচর গ্রামে আলতাফ মাহমুদ জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪৮ সালে [[বরিশাল জিলা স্কুল]] থেকে তিনি মেট্রিকুলেশন পরীক্ষা পাশ করে [[বিএম কলেজ|বিএম কলেজে]] ভর্তি হন। পরে তিনি চিত্রকলা শিখতে ক্যালকাটা আর্টস স্কুলে গমন করেন। বিদ্যালয়ে থাকা অবস্থাতেই মাহমুদ গান গাইতে শুরু করেন। তিনি প্রথমে প্রসিদ্ধ ভায়োলিনবাদক সুরেন রায়ের কাছে সঙ্গীতে তালিম নেন। এছাড়া তিনি [[গণসঙ্গীত]] গাইতে শিখেছিলেন যা সেই সময় |
১৯৩৩ সালের ২৩ ডিসেম্বর [[বরিশাল জেলা|বরিশাল]] জেলার [[মুলাদী উপজেলা|মুলাদী উপজেলার]] পাতারচর গ্রামে আলতাফ মাহমুদ জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪৮ সালে [[বরিশাল জিলা স্কুল]] থেকে তিনি মেট্রিকুলেশন পরীক্ষা পাশ করে [[বিএম কলেজ|বিএম কলেজে]] ভর্তি হন। পরে তিনি চিত্রকলা শিখতে ক্যালকাটা আর্টস স্কুলে গমন করেন। বিদ্যালয়ে থাকা অবস্থাতেই মাহমুদ গান গাইতে শুরু করেন। তিনি প্রথমে প্রসিদ্ধ ভায়োলিনবাদক সুরেন রায়ের কাছে সঙ্গীতে তালিম নেন। এছাড়া তিনি [[গণসঙ্গীত]] গাইতে শিখেছিলেন যা সেই সময় তাকে অসম্ভব জনপ্রিয়তা ও বিপুল খ্যাতি এনে দেয়। |
||
তার বিয়ে হয় সারা আরা মাহমুদের সাথে। তাঁদের মেয়ের নাম শাওন মাহমুদ।<ref name=pa>দৈনিক প্রথম আলো, মুদ্রিত সংস্করণ, সারা দেশ, পৃষ্ঠা ১৬, ৩১ আগস্ট, ২০১২, সংস্কৃতি সংবাদ - শহীদ আলতাফ মাহমুদ স্মরণ ও পদক প্রদান</ref> |
|||
১৯৭১ সালের ৩০ আগস্ট [[বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ|বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের]] সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আলতাফ মাহমুদকে [[ঢাকা|ঢাকার]] আউটার সার্কুলার রোডের বাসা থেকে চোখ বাঁধা অবস্থায় কোথাও নিয়ে যায়। পরবর্তীতে |
১৯৭১ সালের ৩০ আগস্ট [[বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ|বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের]] সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আলতাফ মাহমুদকে [[ঢাকা|ঢাকার]] আউটার সার্কুলার রোডের বাসা থেকে চোখ বাঁধা অবস্থায় কোথাও নিয়ে যায়। পরবর্তীতে তার আর কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি।<ref name=pa/><ref>[http://shahidaltafmahmud.com/biography-2 শহীদ আলতাফ মাহমুদ ডট কম]</ref> |
||
== কর্মজীবন == |
== কর্মজীবন == |
||
১৯৫০ সালে আলতাফ মাহমুদ ঢাকায় আসেন এবং ''ধুমকেতু শিল্পী সংঘে'' যোগ দেন। পরবর্তীকালে তিনি এই সংস্থাটির 'সঙ্গীত পরিচালক' পদে আসীন হন। ১৯৫৪ সালে "ভিয়েনা শান্তি সম্মেলনে" মাহমুদ আমন্ত্রিত হন, কিন্তু [[করাচি|করাচিতে]] পাকিস্তানি সরকার |
১৯৫০ সালে আলতাফ মাহমুদ ঢাকায় আসেন এবং ''ধুমকেতু শিল্পী সংঘে'' যোগ দেন। পরবর্তীকালে তিনি এই সংস্থাটির 'সঙ্গীত পরিচালক' পদে আসীন হন। ১৯৫৪ সালে "ভিয়েনা শান্তি সম্মেলনে" মাহমুদ আমন্ত্রিত হন, কিন্তু [[করাচি|করাচিতে]] পাকিস্তানি সরকার তার পাসপোর্ট আটকে দেয়ায় তিনি এখানে যোগ দিতে পারেননি। তিনি ১৯৬৩ সাল পর্যন্ত করাচিতে ছিলেন এবং ওস্তাদ আব্দুল কাদের খাঁ'র কাছে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত বিষয়ক তালিম নিয়েছিলেন। এছাড়া তিনি নৃত্যপরিচালক ঘনশ্যাম এবং সঙ্গীতপরিচালক [[দেবু ভট্টাচার্য|দেবু ভট্টাচার্যের]] সহকারী হিসেবেও কাজ করেছেন। করাচি থেকে ঢাকা ফেরার পর মাহমুদ ১৯টি বিভিন্ন [[চলচ্চিত্র|চলচ্চিত্রে]] কাজ করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে বিখ্যাত চলচ্চিত্র [[জীবন থেকে নেয়া]], ক্যায়সে কাহু, কার বউ, তানহা, বেহুলা, আগুন নিয়ে খেলা, দুই ভাই, সংসার, আঁকাবাঁকা, আদর্শ ছাপাখানা, নয়নতারা, শপথ নিলাম, প্রতিশোধ, কখগঘঙ, কুচবরণ কন্যা, সুযোরাণী দুয়োরাণী, আপন দুলাল, সপ্তডিঙ্গা প্রভৃতি। এছাড়া তিনি [[রাজনীতি]] এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংস্থার সাথেও জড়িত ছিলেন। সঙ্গীতে [[প্রতিভা|প্রতিভার]] পাশাপাশি মাহমুদ ছবিও আঁকতে পারতেন। |
||
=== বেতারে পেশাজীবন === |
=== বেতারে পেশাজীবন === |
||
৩১ নং লাইন: | ৩১ নং লাইন: | ||
== আন্দোলনে অংশগ্রহণ == |
== আন্দোলনে অংশগ্রহণ == |
||
১৯৫০ সালের দিকে তিনি [[বাংলা ভাষা আন্দোলন|ভাষা আন্দোলনের]] পক্ষে সমর্থন আদায়ের জন্য বিভিন্ন জায়গায় গণসঙ্গীত গাইতেন। গান গাওয়ার মাধ্যমে মাহমুদ এই আন্দোলনকে সর্বদাই সমর্থন যুগিয়েছেন। ২৩ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫২ সালে [[আবদুল গাফফার চৌধুরী]] রচিত ''আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো'' শিরোনামের আলোড়ন সৃষ্টিকারী গানটিতে সুর সংযোজন করে খ্যাতির শীর্ষে আরোহণ করেন।<ref name="ReferenceA">[[সেলিনা হোসেন]] ও নুরুল ইসলাম সম্পাদিত; ''[[বাংলা একাডেমী চরিতাভিধান]]''; দ্বিতীয় সংস্করণ: ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৭; পৃষ্ঠা: ৬৯, {{আইএসবিএন|984-07-4354-6}}</ref> গানটির প্রথম সুরকার [[আব্দুল লতিফ]] হলেও পরবর্তীতে আলতাফ মাহমুদের সুরটিই গৃহীত হয়। এই সুরটি ১৯৬৯ সালে [[জহির রায়হান]] |
১৯৫০ সালের দিকে তিনি [[বাংলা ভাষা আন্দোলন|ভাষা আন্দোলনের]] পক্ষে সমর্থন আদায়ের জন্য বিভিন্ন জায়গায় গণসঙ্গীত গাইতেন। গান গাওয়ার মাধ্যমে মাহমুদ এই আন্দোলনকে সর্বদাই সমর্থন যুগিয়েছেন। ২৩ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫২ সালে [[আবদুল গাফফার চৌধুরী]] রচিত ''আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো'' শিরোনামের আলোড়ন সৃষ্টিকারী গানটিতে সুর সংযোজন করে খ্যাতির শীর্ষে আরোহণ করেন।<ref name="ReferenceA">[[সেলিনা হোসেন]] ও নুরুল ইসলাম সম্পাদিত; ''[[বাংলা একাডেমী চরিতাভিধান]]''; দ্বিতীয় সংস্করণ: ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৭; পৃষ্ঠা: ৬৯, {{আইএসবিএন|984-07-4354-6}}</ref> গানটির প্রথম সুরকার [[আব্দুল লতিফ]] হলেও পরবর্তীতে আলতাফ মাহমুদের সুরটিই গৃহীত হয়। এই সুরটি ১৯৬৯ সালে [[জহির রায়হান]] তার চলচ্চিত্র ''[[জীবন থেকে নেয়া]]''-তে ব্যবহার করেন। |
||
১৯৭১ সালে আলতাফ মাহমুদ স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে |
১৯৭১ সালে আলতাফ মাহমুদ স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে তার বাসায় গোপন ক্যাম্প স্থাপন করেন। কিন্তু ক্যাম্পের কথা ফাঁস হয়ে গেলে ১৯৭১ সালের ৩০ আগস্ট পাকিস্তানি বাহিনী তাকে আটক করে। তার ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালানো হয়। তার বাসা থেকে আরো অনেক [[গেরিলা]] যোদ্ধা আটক হয়।<ref>জাহানারা ইমাম, “একাত্তরের দিনগুলি’’, সন্ধানী প্রকাশনী, pp. 187-189 {{আইএসবিএন|984-480-000-5}}</ref> এদের অনেকের সাথে তিনিও চিরতরে হারিয়ে গেছেন।<ref>আহমেদ, মনোয়ার, ভাষা আন্দোলনের প্রামাণ্য দলিল, আগামী প্রকাশনী, pp.111</ref> পরবর্তীকালে [[স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র]] থেকে তার দেশাত্মবোধক গান প্রচারিত হতে থাকে যা অগণিত মুক্তিযোদ্ধাকে অণুপ্রারিত করেছিল। |
||
== সম্মাননা == |
== সম্মাননা == |
||
* ১৯৭৭ সালে আলতাফ মাহমুদকে [[একুশে পদক]] প্রদান করা হয়। বাংলা সংস্কৃতি ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অবদান রাখার কারণে |
* ১৯৭৭ সালে আলতাফ মাহমুদকে [[একুশে পদক]] প্রদান করা হয়। বাংলা সংস্কৃতি ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অবদান রাখার কারণে তাকে এ [[পুরস্কার]] প্রদান করা হয়। |
||
* সংস্কৃতিক্ষেত্রে অসামান্য আবদান রাখায় শহিদ আলতাফ মাহমুদকে ২০০৪ সালে [[স্বাধীনতা পুরস্কার]] (মরণোত্তর) প্রদান করা হয়। |
* সংস্কৃতিক্ষেত্রে অসামান্য আবদান রাখায় শহিদ আলতাফ মাহমুদকে ২০০৪ সালে [[স্বাধীনতা পুরস্কার]] (মরণোত্তর) প্রদান করা হয়। |
||
* |
* তাকে স্মরণ রাখতে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে ''শহিদ আলতাফ মাহমুদ ফাউন্ডেশন''।<ref name=pa/> |
||
== তথ্যসূত্র == |
== তথ্যসূত্র == |
১৯:০১, ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
আলতাফ মাহমুদ | |
---|---|
জন্ম | |
জাতীয়তা | বাংলাদেশি |
দাম্পত্য সঙ্গী | সারা আরা মাহমুদ |
সন্তান | শাওন মাহমুদ |
পুরস্কার | একুশে পদক, স্বাধীনতা পদক পুরস্কার |
আলতাফ মাহমুদ (জন্ম: ২৩ ডিসেম্বর, ১৯৩৩ - অন্তর্ধান: ১৯৭১) একজন বাংলাদেশি সুরকার, সংস্কৃতিকর্মী ও স্বাধীনতা যুদ্ধে শহিদ মুক্তিযোদ্ধা। তিনি একজন ভাষাসৈনিক ছিলেন এবং শহিদ দিবস নিয়ে রচিত আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো গানটির বর্তমান সুরটিও তারই করা। এই গানের সুরকার হিসেবেই তিনি সমধিক পরিচিত।
ব্যক্তিজীবন
১৯৩৩ সালের ২৩ ডিসেম্বর বরিশাল জেলার মুলাদী উপজেলার পাতারচর গ্রামে আলতাফ মাহমুদ জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪৮ সালে বরিশাল জিলা স্কুল থেকে তিনি মেট্রিকুলেশন পরীক্ষা পাশ করে বিএম কলেজে ভর্তি হন। পরে তিনি চিত্রকলা শিখতে ক্যালকাটা আর্টস স্কুলে গমন করেন। বিদ্যালয়ে থাকা অবস্থাতেই মাহমুদ গান গাইতে শুরু করেন। তিনি প্রথমে প্রসিদ্ধ ভায়োলিনবাদক সুরেন রায়ের কাছে সঙ্গীতে তালিম নেন। এছাড়া তিনি গণসঙ্গীত গাইতে শিখেছিলেন যা সেই সময় তাকে অসম্ভব জনপ্রিয়তা ও বিপুল খ্যাতি এনে দেয়।
তার বিয়ে হয় সারা আরা মাহমুদের সাথে। তাঁদের মেয়ের নাম শাওন মাহমুদ।[১]
১৯৭১ সালের ৩০ আগস্ট বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আলতাফ মাহমুদকে ঢাকার আউটার সার্কুলার রোডের বাসা থেকে চোখ বাঁধা অবস্থায় কোথাও নিয়ে যায়। পরবর্তীতে তার আর কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি।[১][২]
কর্মজীবন
১৯৫০ সালে আলতাফ মাহমুদ ঢাকায় আসেন এবং ধুমকেতু শিল্পী সংঘে যোগ দেন। পরবর্তীকালে তিনি এই সংস্থাটির 'সঙ্গীত পরিচালক' পদে আসীন হন। ১৯৫৪ সালে "ভিয়েনা শান্তি সম্মেলনে" মাহমুদ আমন্ত্রিত হন, কিন্তু করাচিতে পাকিস্তানি সরকার তার পাসপোর্ট আটকে দেয়ায় তিনি এখানে যোগ দিতে পারেননি। তিনি ১৯৬৩ সাল পর্যন্ত করাচিতে ছিলেন এবং ওস্তাদ আব্দুল কাদের খাঁ'র কাছে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত বিষয়ক তালিম নিয়েছিলেন। এছাড়া তিনি নৃত্যপরিচালক ঘনশ্যাম এবং সঙ্গীতপরিচালক দেবু ভট্টাচার্যের সহকারী হিসেবেও কাজ করেছেন। করাচি থেকে ঢাকা ফেরার পর মাহমুদ ১৯টি বিভিন্ন চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে বিখ্যাত চলচ্চিত্র জীবন থেকে নেয়া, ক্যায়সে কাহু, কার বউ, তানহা, বেহুলা, আগুন নিয়ে খেলা, দুই ভাই, সংসার, আঁকাবাঁকা, আদর্শ ছাপাখানা, নয়নতারা, শপথ নিলাম, প্রতিশোধ, কখগঘঙ, কুচবরণ কন্যা, সুযোরাণী দুয়োরাণী, আপন দুলাল, সপ্তডিঙ্গা প্রভৃতি। এছাড়া তিনি রাজনীতি এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংস্থার সাথেও জড়িত ছিলেন। সঙ্গীতে প্রতিভার পাশাপাশি মাহমুদ ছবিও আঁকতে পারতেন।
বেতারে পেশাজীবন
১৯৫৬ সালে আলতাফ মাহমুদ করাচি বেতারে প্রথম সঙ্গীত পরিবেশন করেন। তিনি 'ইত্তেহাদে ম্যুসিকি' নামে দশ মিনিটের একটি অনুষ্ঠান প্রযোজনা ও পরিচালনা করতেন।
আন্দোলনে অংশগ্রহণ
১৯৫০ সালের দিকে তিনি ভাষা আন্দোলনের পক্ষে সমর্থন আদায়ের জন্য বিভিন্ন জায়গায় গণসঙ্গীত গাইতেন। গান গাওয়ার মাধ্যমে মাহমুদ এই আন্দোলনকে সর্বদাই সমর্থন যুগিয়েছেন। ২৩ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫২ সালে আবদুল গাফফার চৌধুরী রচিত আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো শিরোনামের আলোড়ন সৃষ্টিকারী গানটিতে সুর সংযোজন করে খ্যাতির শীর্ষে আরোহণ করেন।[৩] গানটির প্রথম সুরকার আব্দুল লতিফ হলেও পরবর্তীতে আলতাফ মাহমুদের সুরটিই গৃহীত হয়। এই সুরটি ১৯৬৯ সালে জহির রায়হান তার চলচ্চিত্র জীবন থেকে নেয়া-তে ব্যবহার করেন।
১৯৭১ সালে আলতাফ মাহমুদ স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে তার বাসায় গোপন ক্যাম্প স্থাপন করেন। কিন্তু ক্যাম্পের কথা ফাঁস হয়ে গেলে ১৯৭১ সালের ৩০ আগস্ট পাকিস্তানি বাহিনী তাকে আটক করে। তার ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালানো হয়। তার বাসা থেকে আরো অনেক গেরিলা যোদ্ধা আটক হয়।[৪] এদের অনেকের সাথে তিনিও চিরতরে হারিয়ে গেছেন।[৫] পরবর্তীকালে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে তার দেশাত্মবোধক গান প্রচারিত হতে থাকে যা অগণিত মুক্তিযোদ্ধাকে অণুপ্রারিত করেছিল।
সম্মাননা
- ১৯৭৭ সালে আলতাফ মাহমুদকে একুশে পদক প্রদান করা হয়। বাংলা সংস্কৃতি ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অবদান রাখার কারণে তাকে এ পুরস্কার প্রদান করা হয়।
- সংস্কৃতিক্ষেত্রে অসামান্য আবদান রাখায় শহিদ আলতাফ মাহমুদকে ২০০৪ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার (মরণোত্তর) প্রদান করা হয়।
- তাকে স্মরণ রাখতে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে শহিদ আলতাফ মাহমুদ ফাউন্ডেশন।[১]
তথ্যসূত্র
- ↑ ক খ গ দৈনিক প্রথম আলো, মুদ্রিত সংস্করণ, সারা দেশ, পৃষ্ঠা ১৬, ৩১ আগস্ট, ২০১২, সংস্কৃতি সংবাদ - শহীদ আলতাফ মাহমুদ স্মরণ ও পদক প্রদান
- ↑ শহীদ আলতাফ মাহমুদ ডট কম
- ↑ সেলিনা হোসেন ও নুরুল ইসলাম সম্পাদিত; বাংলা একাডেমী চরিতাভিধান; দ্বিতীয় সংস্করণ: ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৭; পৃষ্ঠা: ৬৯, আইএসবিএন ৯৮৪-০৭-৪৩৫৪-৬
- ↑ জাহানারা ইমাম, “একাত্তরের দিনগুলি’’, সন্ধানী প্রকাশনী, pp. 187-189 আইএসবিএন ৯৮৪-৪৮০-০০০-৫
- ↑ আহমেদ, মনোয়ার, ভাষা আন্দোলনের প্রামাণ্য দলিল, আগামী প্রকাশনী, pp.111
বহিঃসংযোগ
- Pages using infobox artist with unknown parameters
- বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধা
- ১৯৩৩-এ জন্ম
- ১৯৭১-এ মৃত্যু
- বাংলাদেশী সুরকার
- বাংলাদেশী সঙ্গীতশিল্পী
- বাংলাদেশী পুরুষ সঙ্গীতজ্ঞ
- ১৯৭১-এ শহীদ বুদ্ধিজীবী
- একুশে পদক বিজয়ী
- স্বাধীনতা পুরস্কার বিজয়ী
- বাংলাদেশী গায়ক
- বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে নিহত ব্যক্তি
- বরিশালের ব্যক্তি
- বরিশাল জিলা স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
- ব্রজমোহন কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী