নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Chiranjit singha (আলোচনা | অবদান)
তথ্যসূত্র
Chiranjit singha (আলোচনা | অবদান)
সংশোধন, সংশোধন
৪৪ নং লাইন: ৪৪ নং লাইন:


==মৃত্যু==
==মৃত্যু==
নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী আর বেঁচে নেই। বাংলা সাহিত্যের অন্যতম ধ্রুবতারা নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী তার সৃষ্ট ‘অমলকান্তি’র মতোই যেন রোদ্দুর হয়ে গেলেন। দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগে ৯৪ বছর বয়সে চিরপ্রস্থান ঘটলো এই কিংবদন্তীর। ২০১৮ সালের ২৫ ডিসেম্বর তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। অমল কান্তি রোদ্দুর হতে চেয়েছিল, পারেনি। আমাদের সমস্তটুকু ঘিরে যে প্রলয়
নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী আর বেঁচে নেই। বাংলা সাহিত্যের অন্যতম ধ্রুবতারা নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী তার সৃষ্ট ‘অমলকান্তি’র মতোই যেন রোদ্দুর হয়ে গেলেন। দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগে ৯৪ বছর বয়সে চিরপ্রস্থান ঘটলো এই কিংবদন্তীর। ২০১৮ সালের ২৫ ডিসেম্বর তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। অমল কান্তি রোদ্দুর হতে চেয়েছিল, পারেনি। আমাদের সমস্তটুকু ঘিরে যে প্রলয় অন্ধকার ঘনিয়ে আসছে, প্রিয় কবি, আপনি অন্তত আমাদের মাথার উপরে, আকাশের নীল নির্জনে রোদ্দুর হয়ে থাকুন।     

অন্ধকার ঘনিয়ে আসছে, প্রিয় কবি, আপনি অন্তত আমাদের মাথার উপরে, আকাশের নীল নির্জনে রোদ্দুর হয়ে থাকুন।     


==তথ্যসূত্র==
==তথ্যসূত্র==

০৪:৩৮, ১ মে ২০১৯ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী
জন্ম(১৯২৪-১০-১৯)১৯ অক্টোবর ১৯২৪
চন্দ্রগ্রাম ভাঙ্গা ফরিদপুর, ব্রিটিশ ভারত (বর্তমানে বাংলাদেশ)
পেশাকবি, গল্পকার

নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী (১৯ অক্টোবর ১৯২৪-২৫ ডিসেম্বর ২০১৮) ছিলেন একজন ভারতীয় বাঙ্গালি কবি। [১] বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধে আবির্ভুত আধুনিক বাংলা কবিদের অন্যতম। উলঙ্গ রাজা তাঁর অন্যতম বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ। এই কাব্যগ্রন্থ লেখার জন্য তিনি ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দে সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার লাভ করেন। কবি পশ্চিমবঙ্গে বাংলা আকাদেমির সাথে দীর্ঘকাল যুক্ত।[২]

শৈশব ও কৈশোর

তাঁর শৈশবের পুরোটাই কেটেছে পূর্ববঙ্গে যা বর্তমান বাংলাদেশ, ঠাকুরদা আর ঠাকুমার কাছে। কবির ঠাকুরদা কর্মজীবন কাটিয়েছেন কলকাতায়। কর্মজীবন শেষে ৫০ বছর বয়সে কলকাতার পাঠ চুকিয়ে বাংলাদেশের ফরিদপুর বাড়ি চান্দ্রা গ্রামে চলে আসেন। তার বাবা কলকাতাতেই ছিলেন। কলকাতার একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাইস প্রিন্সিপাল হিসেবে কাজ করতেন। দুই বছর বয়সে কবির মা বাবার কর্মস্থল কলকাতায় চলে যান। কবি থেকে যান তাঁর ঠাকুরদা লোকনাথ চক্রবর্তীর কাছে। গ্রামে কাটিয়েছেন মহা স্বাধীনতা—ইচ্ছেমতো দৌড়ঝাঁপ করে। কখনো গাছে উঠছেন; কখনো আপন মনে ঘুরেছে গ্রামের এই প্রাপ্ত থেকে অন্যপ্রাপ্তে। চার বছর বয়সে কবির কাকিমা বলছিলেন, ‌'তুই তো দেখছি কবিদের মতোন কথা বলছিস!' সেই সময়েই মুখস্থ করেছিলেন কবিগান,রামায়ণ গান। গ্রামের দিনগুলো খুব সুন্দর কেটেছেন তাই তিনি এ গ্রামের বাড়ি ছেড়ে কলকাতায় যেতে চাইতেন না।

প্রাথমিক লেখাপড়া ফরিদপুরে পাঠশালায়। পরে ঠাকুরদার মৃত্যুর পর গ্রাম ছেড়ে ১৯৩০ সালে কলকাতায় চলে এসেছিলেন

সাহিত্য জীবন

১৯৫১ সালে যোগ দিয়েছিলেন ‘আনন্দবাজার’ পত্রিকায়। দীর্ঘ সময় তিনি ‘আনন্দমেলা’ পত্রিকা সম্পাদনা করেছেন। নীরেন্দ্রনাথের প্রথম কবিতার বই ‘নীল নির্জন’, প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৫৪ সালে। এরপর প্রকাশিত হয়েছে তাঁর লেখা ‘অন্ধকার বারান্দা’, ‘নিরক্ত করবী’, ‘নক্ষত্র জয়ের জন্য’, ‘আজ সকালে’সহ অসংখ্য কবিতার বই। সাহিত্য অ্যাকাদেমি পুরস্কারসহ বহু পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাঁকে বঙ্গবিভূষণ সম্মান দিয়ে সম্মানিত করেছিল।

তার লেখা ‘উলঙ্গ রাজা’ কবিতায় সমান্ততান্ত্রিক জমিদার জোতদার সমাজ ব্যবস্থাকে তীব্র কটাক্ষের বাণে বিদ্ধ করেছিলেন নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। কবিতার শেষ লাইনে লেখা ‘রাজা তোর কাপড় কোথায়’ লাইনটি আজও মানুষের মুখেমুখে।

কবিতা


অমলকান্তি আমার বন্ধু,
ইস্কুলে আমরা একসঙ্গে পড়তাম।
রোজ দেরি করে ক্লাসে আসত, পড়া পারত না,
শব্দরূপ জিজ্ঞেস করলে
এমন অবাক হয়ে জানলার দিকে তাকিয়ে থাকতো যে,
দেখে ভারী কষ্ট হত আমাদের।
আমরা কেউ মাষ্টার হতে চেয়েছিলাম, কেউ ডাক্তার, কেউ উকিল।
অমলকান্তি সে সব কিছু হতে চায়নি।
সে রোদ্দুর হতে চেয়েছিল !
ক্ষান্তবর্ষণ কাক-ডাকা বিকেলের সেই লাজুক রোদ্দুর,
জাম আর জামরূলের পাতায়
যা নাকি অল্প-একটু হাসির মতন লেগে থাকে।

কলকাতার যীশু, অমলকান্তি রোদ্দুর হতে চেয়েছিল, উলঙ্গ রাজার মতো কবিতার স্রষ্টা নীরেন্দ্রনাথ।

ছোটগল্প ও উপন্যাস

নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী একাধিক গল্প ও উপন্যাস লিখেছেন। প্রাপ্তবয়স্কদের জন্যে তার সৃষ্ট গোয়েন্দা চরিত্রের নাম ভাদুড়ী মশাই

পুরস্কার ও সম্মাননা

উলঙ্গ রাজা’ এই কাব্যগ্রন্থের জন্য ১৯৭৮ সালে ‘সাহিত্য অকাদেমি’ পুরস্কার পান কবি নীরেন্দ্রনাথ। তা ছাড়াও একগুচ্ছ পুরস্কার রয়েছে তাঁর ঝুলিতে। ১৯৫৮ সালে ‘উল্টোরথ পুরস্কার’, ১৯৭০ সালে ‘তারাশঙ্কর স্মৃতি’ ও ১৯৭৬ সালে ‘আনন্দ শিরমণি’ পুরস্কার পান কবি। ২০০৭ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে সাম্মানিক ডি. লিট প্রদান করে। পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাঁকে বঙ্গবিভূষণ সম্মান দিয়ে সম্মানিত করেছিল।

মৃত্যু

নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী আর বেঁচে নেই। বাংলা সাহিত্যের অন্যতম ধ্রুবতারা নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী তার সৃষ্ট ‘অমলকান্তি’র মতোই যেন রোদ্দুর হয়ে গেলেন। দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগে ৯৪ বছর বয়সে চিরপ্রস্থান ঘটলো এই কিংবদন্তীর। ২০১৮ সালের ২৫ ডিসেম্বর তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। অমল কান্তি রোদ্দুর হতে চেয়েছিল, পারেনি। আমাদের সমস্তটুকু ঘিরে যে প্রলয় অন্ধকার ঘনিয়ে আসছে, প্রিয় কবি, আপনি অন্তত আমাদের মাথার উপরে, আকাশের নীল নির্জনে রোদ্দুর হয়ে থাকুন।     

তথ্যসূত্র

  1. Bose, Amalendu। Contemporary Bengali Literature। Academic Publishers। পৃষ্ঠা 12। সংগ্রহের তারিখ ২২ আগস্ট ২০১০ 
  2. "Annual Convocation"University of Calcutta। ২৮ মে ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ এপ্রিল ২০১৪ 

বহিঃসংযোগ