চট্টগ্রাম: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
অ 113.249.60.199-এর সম্পাদিত সংস্করণ হতে Sujan7278-এর সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণে ফেরত ট্যাগ: পুনর্বহাল |
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল অ্যাপ সম্পাদনা অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ সম্পাদনা |
||
৪২২ নং লাইন: | ৪২২ নং লাইন: | ||
* চন্দ্রনাথ পাহাড় (সীতাকুন্ড), |
* চন্দ্রনাথ পাহাড় (সীতাকুন্ড), |
||
* বাঁশখালী ইকোপার্ক, |
* বাঁশখালী ইকোপার্ক, |
||
* বাঁশখালী |
* বাঁশখালী খানখানাবা সমুদ্রসৈকত, |
||
* বাঁশখালী চা বাগান, |
* বাঁশখালী চা বাগান, |
||
* পারকি সমুদ্র সৈকত (আনোয়ারা), |
* পারকি সমুদ্র সৈকত (আনোয়ারা), |
||
৪২৯ নং লাইন: | ৪২৯ নং লাইন: | ||
* খৈইয়াছরা ঝরনা (মিরসরাই), |
* খৈইয়াছরা ঝরনা (মিরসরাই), |
||
* বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত, |
* বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত, |
||
* গুলিয়াখালী সমুদ্র |
* গুলিয়াখালী সমুদ্র (সীতাকুণ্ড)। |
||
<gallery> |
<gallery> |
০৯:৩৯, ৬ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
চট্টগ্রাম | |
---|---|
মহানগরী | |
ডাকনাম: জ্বালনধারা, চাটিগাঁও, চাটগাঁ, ইসলামাবাদ, চট্টলা[১] বাংলাদেশের প্রবেশদ্বার[২] বাংলাদেশের বাণিজ্যিক রাজধানী | |
বাংলাদেশে চট্টগ্রামের অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক: ২২°২২′০″ উত্তর ৯১°৪৮′০″ পূর্ব / ২২.৩৬৬৬৭° উত্তর ৯১.৮০০০০° পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | চট্টগ্রাম বিভাগ |
জেলা | চট্টগ্রাম জেলা |
প্রতিষ্ঠা | ১৩৪০[৩] |
শহরের মর্যাদা প্রাপ্তি | ১৮৬৩[৪] |
সরকার | |
• ধরন | মেয়র-কাউন্সিল |
• শাসক | চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন |
• নগর মেয়র | আ জ ম নাছির উদ্দিন |
আয়তন[৫] | |
• মহানগরী | ১৬৮.০৭ বর্গকিমি (৬৪.৮৯ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১)[৬] | |
• মহানগরী | ২৫,৮১,৬৪৩ |
• জনঘনত্ব | ১৫,৩৪৫/বর্গকিমি (৩৯,৭৪০/বর্গমাইল) |
• মহানগর | ৪০,০৯,৪২৩ |
• Demonym | Chittagongians |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
ডাক কোড | ৪০০০ |
জিডিপি (২০০৫) | ১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার |
কলিং কোড | ৩১ |
ওয়েবসাইট | চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন |
চট্টগ্রাম(/tʃɪtəɡɒŋ/ Chôṭṭôgram) ঐতিহাসিক নাম সমূহ: পোর্টো গ্র্যান্ডে এবং ইসলামাবাদ) বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। বন্দরনগরী নামে পরিচিত শহর, দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের চট্টগ্রাম জেলায় অবস্থিত। বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে পরিচিত পাহাড়, সমুদ্রে এবং উপত্যকায় ঘেরা চট্টগ্রাম শহর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্যে প্রাচ্যের রাণী হিসেবে বিখ্যাত। এখানে দেশের সর্ববৃহৎ বন্দর ছাড়াও বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এটি এশিয়ায় ৭ম এবং বিশ্বের ১০ম দ্রুততম ক্রমবর্ধমান শহর।[৭]
ব্যুৎপত্তি
চট্টগ্রামের ব্যুৎপত্তি অনিশ্চিত।[৮] একটি ব্যাখ্যার কৃতিত্ব প্রথম আরব ব্যবসায়ীদের শাত (ব-দ্বীপ) ও গঙ্গা (গঙ্গা) আরবি শব্দসমূহের সমন্বয়ের জন্য।[৮][৯][১০]
ইতিহাস
সীতাকুণ্ড এলাকায় পাওয়া প্রস্তরীভূত অস্ত্র এবং বিভিন্ন মানবসৃষ্ট প্রস্তর খণ্ড থেকে ধারণা করা হয় যে, এ অঞ্চলে নব্যপ্রস্তর যুগে অস্ট্রো-এশিয়াটিক জনগোষ্ঠীর বসবাস ছিল। তবে, অচিরে মঙ্গোলদের দ্বারা তারা বিতাড়িত হয়।[১১] লিখিত ইতিহাসে সম্ভবত প্রথম উল্লেখ গ্রিক ভৌগোলিক প্লিনির লিখিত পেরিপ্লাস। সেখানে ক্রিস নামে যে স্থানের বর্ণনা রয়েছে ঐতিহাসিক নলিনীকান্ত ভট্টশালীর মতে সেটি বর্তমানের সন্দ্বীপ। ঐতিহাসিক ল্যাসেনের ধারণা সেখানে উল্লিখিত পেন্টাপোলিশ আসলে চট্টগ্রামেরই আদিনাম। মৌর্য সাম্রাজ্যের সঙ্গে যোগাযোগের বিষয়টি নিশ্চিত নয় তবে পূর্ব নোয়াখালির শিলুয়াতে মৌর্য যুগের ব্রাহ্মী লিপিতে একটি মূর্তির পাদলিপি পাওয়া গেছে।
তিব্বতের বৌদ্ধ ঐতিহাসিক লামা তারানাথের একটি গ্রন্থে চন্দ্রবংশের শাসনামলের কথা দেখা যায় যার রাজধানী ছিল চট্টগ্রাম। এর উল্লেখ আরাকানের সিথাং মন্দিরের শিলালিপিতেও আছে। তারানাথের গ্রন্থে দশম শতকে গোপীনাথ চন্দ্র নামের রাজার কথা রয়েছে।[১২]। সে সময় আরব বণিকদের চট্টগ্রামে আগমন ঘটে। আরব ভূগোলবিদদের বর্ণনার ‘সমুন্দর’ নামের বন্দরটি যে আসলে চট্টগ্রাম বন্দর তা নিয়ে এখন ঐতিহাসিকরা মোটামুটি নিশ্চিত।[১১] সে সময় পালবংশের রাজা ছিলেন ধর্মপাল। পাল বংশের পর এ অঞ্চলে একাধিক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজ্যের সৃষ্টি হয়।
৯৫৩ সালে আরাকানের চন্দ্রবংশীয় রাজা সু-লা-তাইং-সন্দয়া চট্টগ্রাম অভিযানে আসলেও কোন এক অজ্ঞাত কারণে তিনি বেশি দূর অগ্রসর না হয়ে একটি স্তম্ভ তৈরি করেন। এটির গায়ে লেখা হয় ‘চেৎ-ত-গৌঙ্গ’ যার অর্থ ‘যুদ্ধ করা অনুচিৎ’। সে থেকে এ এলাকাটি চৈত্তগৌং হয়ে যায় বলে লেখা হয়েছে আরাকানি পুঁথি ‘রাজাওয়াং’-এ। এ চৈত্তগৌং থেকে কালক্রমে চাটিগ্রাম, চাটগাঁ, চট্টগ্রাম, চিটাগাং ইত্যাদি বানানের চল হয়েছে।[১১]
চন্দ্রবংশের পর লালবংশ এবং এরপর কয়েকজন রাজার কথা কিছু ঐতিহাসিক উল্লেখ করলেও ঐতিহাসিক শিহাবুদ্দিন তালিশের মতে ১৩৩৮ সালে সুলতান ফখরুদ্দিন মোবারক শাহের চট্টগ্রাম বিজয়ের আগ পর্যন্ত ইতিহাস অস্পষ্ট। এ বিজয়ের ফলে চট্টগ্রাম স্বাধীন সোনারগাঁও রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়। সে সময়ে প্রায় ১৩৪৬ খ্রিস্টাব্দে চট্টগ্রাম আসেন বিখ্যাত মুর পরিব্রাজক ইবনে বতুতা। তিনি লিখেছেন - “বাংলাদেশের যে শহরে আমরা প্রবেশ করলাম তা হল সোদকাওয়াঙ (চট্টগ্রাম)। এটি মহাসমূদ্রের তীরে অবস্থিত একটি বিরাট শহর, এরই কাছে গঙ্গা নদী- যেখানে হিন্দুরা তীর্থ করেন এবং যমুনা নদী একসঙ্গে মিলেছে এবং সেখান থেকে প্রবাহিত হয়ে তারা সমুদ্রে পড়েছে। গঙ্গা নদীর তীরে অসংখ্য জাহাজ ছিল, সেইগুলি দিয়ে তারা লখনৌতির লোকেদের সঙ্গে যুদ্ধ করে। ...আমি সোদওয়াঙ ত্যাগ করে কামরু (কামরূপ) পর্বতমালার দিকে রওনা হলাম।”
১৩৫২-১৩৫৩ সালে ফখরুদ্দিন মোবারক শাহের পুত্র ইখতিয়ার উদ্দিন গাজী শাহকে হত্যা করে বাংলার প্রথম স্বাধীন সুলতান শামসউদ্দিন ইলিয়াস শাহ বাংলার মসনদ দখল করলে চট্টগ্রামও তাঁর করতলগত হয়। তাঁর সময়ে চট্টগ্রাম বাংলার প্রধান বন্দর হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়। এর পর হিন্দুরাজা গণেশ ও তাঁর বংশধররা চট্টগ্রাম শাসন করেন। এরপরে বাংলায় হাবশি বংশের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৪৯২ সালে আলাউদ্দিন হোসেন শাহ বাংলার সুলতান হন। চট্টগ্রামের দখল নিয়ে তাঁকে ১৪১৩-১৪১৭ সাল পর্যন্ত ত্রিপুরার রাজা ধনমানিক্যের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত থাকতে হয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত রাজা ধনমানিক্যের মৃত্যুর পর হোসেন শাহের রাজত্ব উত্তর আরাকান পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। তাঁর সময়ে উত্তর চট্টগ্রামের নায়েব পরবগল খানের পুত্র ছুটি খানের পৃষ্ঠপোষকতায় শ্রীকর নন্দী মহাভারতের একটি পর্বের বঙ্গানুবাদ করেন।
পর্তুগিজদের আগমন ও বন্দরের কর্তৃত্ব লাভ
১৫১৭ সাল থেকে পর্তুগিজরা চট্টগ্রামে আসতে শুরু করে। বাণিজ্যের চেয়ে তাদের মধ্যে জলদস্যুতার বিষয়টি প্রবল ছিল। বাংলার সুলতান প্রবলভাবে তাদের দমনের চেষ্টা করেন। কিন্তু এ সময় আফগান শাসক শের শাহ বাংলা আক্রমণ করবেন শুনে ভীত হয়ে গিয়াসউদ্দিন মাহমুদ শাহ পর্তুগিজদের সহায়তা কামনা করেন। তখন সামরিক সহায়তার বিনিময়ে ১৫৩৭ সালে পর্তুগিজরা চট্টগ্রামে বাণিজ্য কুঠি নির্মাণ করে। একই সঙ্গে তাদেরকে বন্দর এলাকার শুল্ক আদায়ের অধিকার দেওয়া হয়। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি। ১৫৩৮ সালে শের শাহের সেনাপতি চট্টগ্রাম দখল করেন। তবে ১৫৮০ সাল পর্যন্ত আফগান শাসনামলে সবসময় ত্রিপুরা আর আরাকানিদের সঙ্গে যুদ্ধ চলেছে।
আরাকানি শাসন
১৫৮১ সাল থেকে ১৬৬৬ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম সম্পূর্ণভাবে আরাকানের রাজাদের অধীনে শাসিত হয়। তবে পর্তুগিজ জলদস্যুদের দৌরাত্ম্য এ সময় খুবই বৃদ্ধি পায়। বাধ্য হয়ে আরাকান রাজা ১৬০৩ ও ১৬০৭ সালে শক্ত হাতে পর্তুগিজদের দমন করেন। ১৬০৭ সালেই ফরাসি পরিব্রাজক ডি লাভাল চট্টগ্রাম সফর করেন। তবে সে সময় পর্তুগিজ জলদস্যু গঞ্জালেস সন্দ্বীপ দখল করে রেখেছিলেন। পর্তুগিজ মিশনারি পাদ্রি ম্যানরিক ১৬৩০-১৬৩৪ সময়কালে চট্টগ্রামে উপস্থিতকালে চট্টগ্রাম শাসক আলামেনের প্রশংসা করে যান। ১৬৬৬ সালে চট্টগ্রাম মুঘলদের হস্তগত হয়।
চট্টগ্রামে আরাকানি শাসন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চট্টগ্রাম আরাকানিদের কাছ থেকে অনেক কিছুই গ্রহণ করে। জমির পরিমাণে মঘী কানির ব্যবহার এখনো চট্টগ্রামে রয়েছে। মঘী সনের ব্যবহারও দীর্ঘদিন প্রচলিত ছিল। সে সময়ে আরাকানে মুসলিম জনবসতি বাড়ে। আরকান রাজসভায় মহাকবি আলাওল, দৌলত কাজী এবং কোরেশী মাগন ঠাকুর এর মতো বাংলা কবিদের সাধনা আর পৃষ্ঠপোষকতায় সেখানে বাংলা সাহিত্যের প্রভূত উন্নতি হয়। পদ্মাবতী আলাওলের অন্যতম কাব্য।
মুঘল শাসনামল
১৬৬৬ সালে মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেব বাংলার সুবেদার শায়েস্তা খানকে চট্টগ্রাম দখলের নির্দেশ দেন। সুবেদারের পুত্র উমেদ খানের নেতৃত্বে কর্ণফুলী নদীর মোহনায় আরাকানিদের পরাজিত করেন এবং আরাকানি দুর্গ দখল করেন। যথারীতি পর্তুগিজরা আরাকানিদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে মুঘলদের পক্ষ নেয়। মুঘল সেনাপতি উমেদ খান চট্টগ্রামের প্রথম ফৌজদারের দায়িত্ব পান। শুরু হয় চট্টগ্রামে মুঘল শাসন। তবে মুঘলদের শাসনামলের পুরোটা সময় আরাকানিরা চট্টগ্রাম অধিকারের চেষ্টা চালায়। টমাস প্রাট নামে এক ইংরেজ আরাকানিদের সঙ্গে যোগ দিয়ে মুঘলদের পরাজিত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। কোলকাতার গোড়াপত্তনকারী ইংরেজ জব চার্নকও ১৬৮৬ সালে চট্টগ্রাম বন্দর দখলের ব্যর্থ অভিযান চালান। ১৬৮৮ সালে ক্যাপ্টেন হিথেরও অনুরূপ অভিযান সফল হয় নি। ১৬৭০ ও ১৭১০ সালে আরাকানিরা চট্টগ্রামের সীমান্তে ব্যর্থ হয়।
নবাবি শাসনামল
১৭২৫ সালে প্রায় ৩০ হাজার মগ সৈন্য চট্টগ্রামে ঢুকে পড়ে চট্টগ্রামবাসীকে বিপদাপন্ন করে তোলে। তবে শেষ পর্যন্ত বাংলার নবাব তাদের তাড়িয়ে দিতে সক্ষম হন। এই সময় বাংলার নবাবদের কারণে ইংরেজরা চট্টগ্রাম বন্দর কোনভাবেই দখল করতে পারেনি। বাংলার নবাবরা পার্বত্য এলাকার অধিবাসীদের সঙ্গে, বিশেষ করে চাকমা সম্প্রদায়ের সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে সদ্ভাব বজায় রাখেন।
পলাশীর যুদ্ধ ও ইংরেজদের কাছে চট্টগ্রাম হস্তান্তর
পলাশীর যুদ্ধে বাংলার নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের পর ইংরেজরা চট্টগ্রাম বন্দরের জন্য নবাব মীর জাফরের ওপর চাপ সৃষ্টি করে। তবে, মীর জাফর কোনভাবেই ইংরেজদের চট্টগ্রাম বন্দরের কর্তৃত্ব দিতে রাজি হন নি। ফলে, ইংরেজরা তাঁকে সরিয়ে মীর কাশিমকে বাংলার নবাব বানানোর ষড়যন্ত্র করে। ১৭৬১ সালে মীর জাফরকে অপসারণ করে মীর কাশিম বাংলার নবাব হয়ে ইংরেজদের বর্ধমান, মেদিনীপুর ও চট্টগ্রাম হস্তান্তরিত করেন। চট্টগ্রামের শেষ ফৌজদার রেজা খান সরকারিভাবে চট্টগ্রামের শাসন প্রথম ইংরেজ চিফ ভেরেলস্ট-এর হাতে সমর্পণ করেন। শুরু হয় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসন।
কোম্পানির শাসনামলে চট্টগ্রামবাসীর ওপর করারোপ দিনে দিনে বাড়তে থাকে। তবে ১৮৫৭ সালের আগে চাকমাদের বিদ্রোহ আর সন্দ্বীপের জমিদার আবু তোরাপের বিদ্রোহ ছাড়া ইংরেজ কোম্পানিকে তেমন একটা কঠিন সময় পার করতে হয়নি। সন্দ্বীপের জমিদার আবু তোরাপ কৃষকদের সংগঠিত করে ইংরেজদের প্রতিরোধ করেন। কিন্তু ১৭৭৬ সালে হরিষপুরের যুদ্ধে তিনি পরাজিত ও নিহত হলে সন্দ্বীপের প্রতিরোধ ভেঙ্গে পড়ে। অন্যদিকে ১৭৭৬ থেকে ১৭৮৯ সাল পর্যন্ত চাকমারা প্রবল প্রতিরোধ গড়ে তোলে। সম্মুখ সমরে চাকমাদের কাবু করতে না পেরে ইংরেজরা তাদের বিরুদ্ধে কঠিন অর্থনৈতিক অবরোধ দিয়ে শেষ পর্যন্ত চাকমাদের কাবু করে।
ইংরেজরা আন্দরকিল্লা জামে মসজিদকে গোলাবারুদের গুদামে পরিণত করলে চট্টগ্রামবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। মসজিদের জন্য নবাবি আমলে প্রদত্ত লাখেরাজ জমি ১৮৩৮ সালের জরিপের সময় বাজেয়াপ্ত করা হয়। পরে চট্টগ্রামের জমিদার খান বাহাদুর হামিদুল্লাহ খান কলিকাতায় গিয়ে গভর্নরের কাছে আবেদন করে এটি উদ্ধার করার ব্যবস্থা করেন।
ভূগোল
সীমারেখা
বাংলাদেশের দক্ষিণপূর্বে ২০°৩৫’ থেকে ২২°৫৯’ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°২৭’থেকে ৯২°২২’ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ বরাবর এর অবস্থান। চট্টগ্রামের উত্তরে সিলেট বিভাগ এবং ভারতের ত্রিপুরা ও মিজোরাম রাজ্য এবং মেঘনা নদী, দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর, পূর্বে ভারতের মিজোরাম রাজ্য, ত্রিপুরা ও মায়ানমার এবং পশ্চিমে মেঘনা নদী, ঢাকা ও বরিশাল বিভাগ। এছাড়াও চট্টগ্রামের পূর্বে পার্বত্য জেলাসমূহ এবং দক্ষিণে কক্সবাজার জেলা রয়েছে। চট্টগ্রাম শহর উত্তরে ফৌজদারহাট, দক্ষিণে কালুরঘাট এবং পূর্বে হাটহাজারী পর্যন্ত বিস্তৃত।
আবহাওয়া এবং জলবায়ু
দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মত চট্টগ্রামেও ছয় ঋতু দেখা যায়। জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি এ অঞ্চলে শীতকাল, মার্চ, এপ্রিল, মে-তে গ্রীষ্মকাল দেখা যায়। জুন, জুলাই, আগস্ পর্যন্ত বর্ষাকাল। তবে ইদানিং আবহাওয়ার কিছুটা পরিবর্তন দেখা যায়।[১৩]
কোপেন জলবায়ু শ্রেণীবিভাগ অনুযায়ী চট্টগ্রামে ক্রান্তীয় মৌসুমি জলবায়ু (অ্যাম) বিদ্যমান।[১৪]
১৯৯১ প্রানঘাতী ঘূর্ণিঝড়ে চট্টগ্রামের ১৩৮০০০ জন নিহত এবং ১০ মিলিয়নের বেশি গৃহহীন অবস্থার সম্মুখীন হয়েছে।[১৫]
টেমপ্লেট:আবহাওয়া বাক্স/চট্টগ্রাম
প্রশাসনিক বিভাগ
চট্টগ্রাম শহর এলাকা ১৬টি থানার অধীনঃ চান্দগাঁও, বায়জীদ বোস্তামী, বন্দর, ডবলমুরিং, পতেঙ্গা, কোতোয়ালী, পাহাড়তলী, পাঁচলাইশ, বাকলিয়া, কর্ণফুলী, হালিশহর, খুলশী থানা এবং নবগঠিত চকবাজার, আকবরশাহ, সদরঘাট ও ইপিজেড ।[১৬]
চট্টগ্রাম শহরে রয়েছে ৪১টি ওয়ার্ড এবং ২৩৬টি মহল্লা। শহরের মোট এলাকা হলো ১৬৮.০৭ বর্গ কিলোমিটার। [১৭]
নগর প্রশাসন
১৮৬৩ সালের ২২শে জুন চট্টগ্রাম মিউনিসিপ্যালিটি'র যাত্রা শুরু। তবে এর প্রশাসন ও কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ১৮ জন কমিশনার সমন্বয়ে পরিষদ গঠন করা হয় ১৮৬৪ সালে। ঐসময়ে চট্টগ্রাম শহরের সাড়ে চার বর্গমাইল এলাকা মিউনিসিপ্যালিটির আওতাধীন ছিল। প্রথমে ৪টি ওয়ার্ড থাকলেও ১৯১১ সালে ৫টি ওয়ার্ড সৃষ্টি করা হয়। চট্টগ্রাম মিউনিসিপ্যালিটি ১৯৮২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর সিটি কর্পোরেশনে রুপান্তরিত হয়। বর্তমানে ওয়ার্ড সংখ্যা ৪১টি। চট্টগ্রাম শহর এলাকা চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন-এর অধীনস্থ। শহরবাসীদের সরাসরি ভোটে সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এবং ওয়ার্ড কমিশনারগণ নির্বাচিত হন। বর্তমানে এই শহরের মেয়র আ.জ.ম নাছির। শহরের আইন-শৃংখলা বজায় রাখার জন্য নিযুক্ত রয়েছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ। এর সদর দপ্তর দামপাড়ায় অবস্থিত। চট্টগ্রামের প্রধান আদালতের স্থান লালদীঘি ও কোতোয়ালী এলাকায় ঐতিহাসিক কোর্ট বিল্ডিং এ।
খাদ্য
চট্টগ্রামের মানুষ ভোজন রসিক হিসেবে পরিচিত। তারা যেমন নিজেরা খেতে পছন্দ করেন, তেমনি অতিথি আপ্যায়নেও সেরা। চট্টগ্রামের মেজবান হচ্ছে তার বড় উদাহরন। শুঁটকি মাছ, মধুভাত, বেলা বিস্কিট, বাকরখানি, লক্ষিশাক, কালো গরুর গোস্ত ভুনা, পেলন ডাল, মেজবানি মাংস, আফলাতুন হালুয়া, তাল পিঠা, নোনা ইলিশ চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহি খাদ্য।[১৮]
সাহিত্য এবং সংস্কৃতি
সাহিত্য
চট্টগ্রামে বাংলা সাহিত্যের বিকাশ শুরু হয় ষোড়শ শতকে। সে সময়কার চট্টগ্রামের শাসক পরাগল খাঁ এবং তার পুত্র ছুটি খাঁর সভা কবি ছিলেন কবীন্দ্র পরমেশ্বর ও শ্রীকর নন্দী।[১৬] কবীন্দ্র পরমেশ্বর মহাভারতের অশ্বমেধ পর্বের একটি সংক্ষিপ্ত বাংলা অনুবাদ করেন। আর শ্রীকর নন্দী জৈমিনি সংহিতা অবলম্বনে অশ্বমেধ পর্বের বিস্তারিত অনুবাদ করেন।
চট্টগ্রামের মধ্যযুগের কবি
- কবি শাহ মোহাম্মদ ছগির
- রহিমুন্নিসা
- আলী রজা
- মুহম্মদ মুকিম
- কবি মুজাম্মিল
- কবি আফজাল আলী
- সাবিরিদ খান
- কবীন্দ্র পরমেশ্বর
- শ্রীকর নন্দী
- দৌলত উজির বাহরাম খান
- হাজী মুহম্মদ কবির
- কবি শ্রীধর
- সৈয়দ সুলতান
- শেখ পরান
- মোহাম্মদ নসরুল্লা খাঁ
- মুহাম্মদ খা
- নওয়াজিশ খান
- করম আলী
- কবি কাজি হাসমত আলী।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
আরাকানের রাজসভায় চট্টগ্রামের কবি
- দৌলত কাজী
- মহাকবি আলাওল
- কোরেশী মাগন ঠাকুর
- কবি মরদন এবং
- আব্দুল করিম খোন্দকার। [১৯]
অষ্টম শতক থেকে পরবর্তীকালের উল্লেখযোগ্য কবি ও সাহিত্যিক
- কবি আবদুল হাকিম
- রামজীবন বিদ্যাভূষণ
- ভবানী শঙ্কর দাস
- নিধিরাম আচার্য
- মুক্তারাম সেন
- কবি চুহর
- হামিদুল্লা খান
- আসকর আলী পন্ডিত
- রঞ্জিত রাম দাস
- রামতনু আচার্য
- ভৈরব আইচ
- নবীন চন্দ্রদাস
- নবীনচন্দ্র সেন
- শশাঙ্ক মোহন সেনগুপ্ত
- আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ
- মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী
- বেন্দ্রকুমার দত্ত
- হেমেন্দ্র বালা দত্ত
- পূর্ণচন্দ্র চৌধুরী
- আশুতোষ চৌধুরী
- রমেশ শীল
- সতীশচন্দ্র বিদ্যাভূষণ।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
আধুনিক যুগের কবি-সাহিত্যিক
- মাহাবুব উল আলম
- আবুল ফজল (সাহিত্যিক)
- সৈয়দ ওয়ালিউল্লাহ
- ওহীদুল আলম
- ডক্টর আবদুল করিম
- আহমদ শরীফ
- আইনুন নাহার
- নুরুন নাহার
- সুচরিত চৌধুরী
- আবদুল হক চৌধুরী
- কবি-কথাসাহিত্যিক আহমদ ছফা
- ড. মোহাম্মদ আমীন (১৯৬৪-)
- কবি সর্বানন্দ বড়ুয়া
- কবি নবীন দাশ
- ছড়াকার সুকুমার বড়ুয়া
- কবি কাফি কামাল
- চৌধুরী জহুরুল হক
- কবি আব্দুল হাকিম[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
সংস্কৃতি
চট্টগ্রামের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সুপ্রাচীন। জানা ইতিহাসের শুরু থেকে চট্টগ্রামে আরাকানী মঘীদের প্রভাব লক্ষনীয়। ফলে গ্রামীণ সংস্কৃতিতেও এর যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। সে সময় এখানকার রাজারা বৌদ্ধধর্মাবলম্বী হওয়ায় তার প্রভাবও যথেষ্ট। সুলতানি, আফগান এবং মোগল আমলেও আরাকানীদের সঙ্গে যুদ্ধবিগ্রহ লেগেই ছিল। ফলে শেষ পর্যন্ত মঘীদের প্রভাব বিলুপ্ত হয়নি। এছাড়া চট্টগ্রামের মানুষ আতিথেয়তার জন্য দেশ বিখ্যাত।
চট্টগ্রামের বর্তমান সংস্কৃতির উন্মেষ হয় ১৭৯৩ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কর্তৃক চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রবর্তনের পর। এর ফলে ভারতীয় উপমহাদেশে সামাজিক ধানোৎপাদন ও বন্টনে পদ্ধতিগত আমূল পরিবর্তন হয়। অন্যান্য স্থানের মতো চট্টগ্রামেও একটি নতুন মধ্যবিত্ত সম্প্রদায়ের উদ্ভব হয়। নতুন এরই ফাঁকে ইংরেজরা প্রচলনা করে ইংরেজি শিক্ষা। মধ্যবিত্ত সম্প্রদায় ইংরেজি শিক্ষার মাধ্যমে পাশ্চাত্যের সঙ্গে পরিচিত হতে শুরু করে।
চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গানের ইতিহাস সমৃদ্ধ। শেফালী ঘোষ এবং শ্যাম সুন্দর বৈষ্ণবকে বলা হয় চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গানের সম্রাট ও সম্রাজ্ঞি। মাইজভান্ডারী গান ও কবিয়াল গান চট্টগ্রামের অন্যতম ঐতিহ্য। কবিয়াল রমেশ শীল একজন বিখ্যাত কিংবদন্তি শিল্পী। জনপ্রিয় ব্যান্ড সোলস, এল আর বি, রেঁনেসা, নগরবাউল এর জন্ম চট্টগ্রাম থেকেই। আইয়ুব বাচ্চু, কুমার বিশ্বজিৎ, রবি চৌধুরী, নাকিব খান, পার্থ বডুয়া, সন্দিপন, নাসিম আলি খান, মিলা ইসলাম চট্টগ্রামের সন্তান। নৃত্যে চট্টগ্রামের ইতিহাস মনে রখার মত। রুনু বিশ্বাস জাতীয় পর্যায়ে বিখ্যাত নৃত্যগুরু। চট্টগ্রামের বিখ্যাত সাংস্কৃতিক সংগঠন হল দৃষ্টি চট্টগ্রাম, বোধন আবৃত্তি পরিষদ, প্রমা, "অঙ্গন" চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, আলাউদ্দিন ললিতকলা একাডেমি, প্রাপন একাডেমি, উদিচি, আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদ, ফু্লকি, রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সংস্থা, রক্তকরবী, আর্য সঙ্গীত, সঙ্গীত পরিষদ। মডেল তারকা নোবেল, মৌটুসি, পূর্ণিমা,শ্রাবস্তীর চট্টগ্রামে জন্ম । সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড পরিচালিত হয় জেলা শিল্পকলা একাডেমি, মুসলিম হল, থিয়েটার ইন্সটিটিউটে।[১৮]
অর্থনীতি এবং উন্নয়ন
বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলের মতো চট্টগ্রামের অর্থনীতিও কৃষি ও বাণিজ্য নির্ভর।দারিদ্রতার হার ৪০ শতাংশ। চট্টগ্রাম বাংলাদেশের বাণিজ্যিক রাজধানী। ১৯৮৩ সালে বাংলাদেশের প্রথম রপ্তানী প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চল বা EPZ চট্টগ্রামে স্থাপিত হয়।[১৭]
কৃষি
চট্টগ্রামের কৃষির প্রধান শস্য ধান। এছাড়া শীত ও গ্রীষ্ম মৌসুমে ব্যপক শাকসবজির চাষ হয়। উল্লেখযোগ্য শাকসবজির মধ্যে রয়েছে- বেগুন, মিষ্টি কুমড়া, চালকুমড়া, সাদা কুমড়া, লাউ, ঢেড়শ, ঝিংগা, চিচিংগা, শশা, বরবটি, সীম, মটরশুঁটি, টমেটো, মুলা, বীট, গাজর, শালগম, ফুলকপি, বাধাকপি, পটল করলা, বিভিন্ন রকমের শাক ইত্যাদি। ফলমূলের ক্ষেত্রে নারিকেলই মুখ্য। তবে, আম, কলা ও কাঁঠালের উৎপাদনও হয়ে থাকে।
তামাক
১৯৬০ এর দশকে শংখ ও মাতামুহুর নদীর তীরবর্তী এলাকায় তামাক চাষ শুরু হয়।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] বাংলাদেশ টোব্যাকো কোম্পানি (এখন ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানী) রাঙ্গুনিয়াতে তামাক চাষের ব্যবস্থা করে এবং পরে লাভজনক হওয়ায় চাষীরা তা অব্যাহত রাখে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] বর্তমানে চট্টগ্রাম জেলায় গড়ে ?? টন তামাক উৎপন্ন হয়।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
লবণ
সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকায় লবন চাষ লাভজনক। ইতিহাসে দেখা যায় ১৭৯৫ সালে চট্টগ্রাম ও নোয়াখালী অঞ্চলে গড়ে বার্ষিক ১৫ লাখ টন লবণ উৎপন্ন হতো। [তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
মৎস চাষ ও আহরণ
চট্টগ্রাম জেলায় মাছচাষের ঐতিহ্য সুপ্রাচীন। সমুদ্র এবং নদী-নালার প্রাচূর্য এর মূল কারণ। শহরের অদূরের হালদা নদীর উৎসমুখ থেকে মদুনাঘাট পর্ষন্ত মিঠা পানির প্রাকৃতিক প্রজনন ক্ষেত্র হিসাবে বেশ উর্বর। বৃহত্তর চট্টগ্রামে দিঘী, বিল ও হাওড়ের সংখ্যা ৫৬৮,[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] পুকুর ও ডোবার সংখ্যা ৯৫,৯৪১।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] মোট আয়তন ৮৫,৭০০ একর (বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো, ১৯৮১), কর্ণফুলী নদীর মোহনায় প্রায় ৬ লাখ ৪০ হাজার একর বিস্তৃত মাছ ধরার জায়গা হিসাবে চিহ্নিত।
রপ্তানির ক্ষেত্রে সামুদ্রিক মাছ হাঙ্গর, স্কেট, রে, হেরিং, শার্কফিন এবং চিংড়ি উল্লেখ্য।
শুঁটকি
চট্টগ্রামের মাছ চাষ ও আহরনের একটি উল্ল্যেখযোগ্য দিক হলে শুঁটকি (মাছ শুকিয়ে সংরক্ষণ করা)। সোনাদিয়া, সন্দ্বীপ প্রভৃতি দ্বীপাঞ্চল থেকে শুঁটকি মাছ চট্টগ্রামের বাণিজ্য কেন্দ্রগুলোতে পাঠানো হয়। ব্রিটিশ আমলে শুঁটকি রেঙ্গুনে রপ্তানি করা হতো।
শিল্প
বন্দর নগরী হিসাবে ব্রিটিশ-পূর্ব, ব্রিটিশ এবং পাকিস্তান পর্বে চট্টগ্রাম বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে এগিয়ে ছিল। বন্দরভিত্তিক কর্মকান্ড ছাড়াও ব্রিটিশ আমলে আসাম বেঙ্গল রেলওয়ের সদর দপ্তর চট্টগ্রামে স্থাপিত হয়। পাকিস্তান পর্বে চট্টগ্রামে ভারী শিল্প যেমন - ইস্পাত, মোটরগাড়ি, পাট, বস্ত্র, সুতা, তামাক, ম্যাচ ও ঔষধ শিল্পের কারখানা গড়ে ওঠে। তাছাড়া কিছু বহুজাতিক কোম্পানির সদর দপ্তরও চট্টগ্রামে গড়ে ওঠে।
শিক্ষা
চট্টগ্রামে ইংরেজ শাসন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগে ভারতের অন্যান্য স্থানের মতো ধর্ম ভিত্তিক তিন ধরনের শিক্ষা ব্যবস্থার প্রচলন ছিল। আরবি নির্ভর মুসলমানদের জন্য মক্তব-মাদ্রাসা, সংস্কৃত ভাষা নির্ভর হিন্দুদের জন্য টোল-পাঠশালা-চতুষ্পাঠী এবং বৌদ্ধদের জন্য কেয়াং বা বিহার। সে সময় রাষ্ট্রাচারের ভাষা ছিল ফার্সি। ফলে হিন্দুদের অনেকে ফার্সি ভাষা শিখতেন। আবার রাষ্ট্র পরিচালনা এবং জনসংযোগের জন্য মুসলিম আলেমদের সংস্কৃত জানাটা ছিল দরকারী। এ সকল প্রতিষ্ঠানে হাতে লেখা বই ব্যবহৃত হতো। ইংরেজদের নতুন শিক্ষা ব্যবস্থার আগ পর্যন্ত এই তিন ধারাই ছিল চট্টগ্রামের শিক্ষার মূল বৈশিষ্ট্য।
১৭৬০ সালে কোম্পানির শাসন প্রতিষ্ঠত হলেও ইংরেজি শিক্ষা বিস্তারের কোন উদ্যোগ দেখা যায় নি, সমগ্র ভারত বর্ষে। ১৭৮১ সালে প্রতিষ্ঠিত কলকাতা মাদ্রাসা ছাড়া শিক্ষা বিস্তারে কোম্পানির আর কোন উদ্যোগ ছিল না। ১৮১৩ সালে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট ভারতে শিক্ষা বিস্তারের জন্য আইন পাশ করে। এর পর ভারতের বিভিন্ন স্থানে মিশনারী স্কুলের সংখ্যা বাড়ে তবে ১৮৩৬ এর আগে চট্টগ্রামে সে মাপের কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠে নি। ১৮৩৬ সালে জেনারেল কমিটি অব পাবলিক ইনস্ট্রাকশন চট্টগ্রাম জেলা স্কুল নামে প্রথম ইংরেজি শিক্ষার প্রতিষ্ঠান চালু করে। এলাকার খ্রীস্টান মিশনারীরা ১৮৪১ সালে সেন্ট প্লাসিড্স হাই স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন।
১৮৪৪ সালে ভারতের বড়লাট লর্ড হার্ডিঞ্জ রাজকার্যে নিয়োগ পাওয়ার জন্য ইংরেজি জানা আবশ্যক ঘোষণা করলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বাড়ে। ১৮৫৬ ও ১৮৭১ সালে কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রামে প্রতিষ্ঠিত হলেও সেগুলো ছিল স্বল্পস্থায়ী। ১৮৬০ খ্রীস্টাব্দে মিউনিসিপ্যাল হাই স্কুল প্রতিষ্ঠত হয়। ১৮৮৫ সালে শেখ-ই-চাটগাম কাজেম আলী চিটাগাং ইংলিশ স্কুল নামে একটি মধ্য ইংরেজি স্কুল (অর্থাৎ ষষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত) প্রতিষ্ঠা করেন। ১৮৮৮ সালে এটি হাই স্কুলে উন্নীত হয়।
চট্টগ্রাম শহরের মাধ্যমিক পর্যায়ের বিদ্যালয় গুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলোঃ
- চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যলয়
- খাজা আজমেরী কে.জি এবং উচ্চ বিদ্যালয়,
- চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল এন্ড কলেজ,
- সরকারি মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়
- ইস্পাহানী পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ,
- চট্টগ্রাম সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়,
- বাকলিয়া সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়
- ডা. খাস্তগীর সরকারী বালিকা বিদ্যালয়,
- বাংলাদেশ মহিলা সমিতি উচ্চ বিদ্যালয়,
- সেন্ট প্লাসিড্স হাই স্কুল,
- সেন্ট স্কলাসটিকা,
- পি এইচ আমীন একাডেমী,
- নাসিরাবাদ সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়,
- চট্টগ্রাম সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়,
- চট্টগ্রাম সেনানিবাস উচ্চ বিদ্যালয়,
- হাটহাজারী পার্বতী উচ্চ বিদ্যালয়,
- চ.বি. স্কুল এন্ড কলেজ,
- অপর্ণাচরণ সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়,
- আগ্রাবাদ সরকারি কলোনি উচ্চ বিদ্যালয়,
- চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজ,
- মহসিন স্কুল,
- হাতে খড়ি উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ,
- কলকাকলি প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যালয়,
- গোসাইলডাঙ্গা কে.বি.দোভাষ সিটিকর্পোরেশন বালিকা বিদ্যালয়,
- বারিক মিয়া উচ্চ বিদ্যালয়,
- জে.আর.কে উচ্চ বিদ্যালয়,
- আগ্রাবাদ বালিকা বিদ্যালয়,
- কাট্টলী নুরুল হক চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়,
- উত্তর মাদার্শা উচ্চ বিদ্যালয়,
- অ্যামবিশন আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ ইত্যাদি।
উল্লেখযোগ্য কলেজের মধ্যে রয়েছে-
- চট্টগ্রাম কলেজ,
- সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ,
- সরকারি সিটি কলেজ, চট্টগ্রাম,
- সরকারি কমার্স কলেজ, চট্টগ্রাম,
- চট্টগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজ,
- ফতেপুর মঞ্জুরুল ইসলাম আলিম মাদ্রাসা,
- বাংলাদেশ নৌবাহিনী স্কুল ও কলেজ,
- ইসলামিয়া কলেজ, চট্টগ্রাম,
- ডাঃ ফজলুল-হাজেরা কলেজ,
- হাটহাজারী কলেজ এবং
- আগ্রাবাদ মহিলা কলেজ।
চট্টগ্রাম অঞ্চলের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়
- চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি), যা শহরের ২২ কিলোমিটার উত্তরে চট্টগ্রামের প্রাণকেন্দ্র হাটহাজারী থানায় অবস্থিত।
- চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) এ কারিগরি ও প্রকৌশলে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষা প্রদান করা হয়।
- চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (চিভাসু) দেশের একমাত্র ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর মধ্যে রয়েছে
- বিজিসি ট্রাস্ট বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ (বিজিসিটাব),
- ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি চট্টগ্রাম (ইউএসটিসি)
- আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম,
- প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়,
- চট্টগ্রাম ইনডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি (সিআইইউ)।
- সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ
- চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ এবং চট্টগ্রাম মা-ও-শিশু হাপাতাল মেডিক্যাল কলেজ শিক্ষার প্রধান কেন্দ্র।
এছাড়া শহরে বেসরকারী মেডিকেল কলেজ ইউএসটিসি, বিজিসি ট্রাস্ট মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, মা ও শিশু হাস্পাতাল মেডিকাল কলেজ, সাউদার্ন মেডিক্যাল কলেজ, চট্টগ্রাম ডেন্টাল কলেজ রয়েছে।
ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলোর মধ্যে আছে সানশাইন গ্রামার স্কু্ল, চিটাগাং গ্রামার স্কুল, বে ভিউ, লিটল জুয়েলস, সামাফিল্ডস স্কুল, রেডিয়্যান্ট স্কুল, সাউথ পয়েন্ট স্কুল, সাইডার ইন্টা্ন্যাশনাল স্কুল,মাস্টারমাইন্ড স্কুল,চাইল্ড হেভেন স্কুল, প্রেসিডেন্সি ইন্টারন্যাশনাল স্কুল। শহরের একমাত্র আমেরিকান কারিকুলাম ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান উইলিয়াম কেরি একাডেমি।
এছাড়াও বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সুন্নি আক্বিদা ভিত্তিক মাদ্রাসা জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া কামিল মাদ্রাসা চট্টগ্ৰামে অবস্থিত। আরেকটি উল্লেখযোগ্য মাদ্রাসা হলো বায়তুশ শরফ আদর্শ কামিল মাদ্রাসা |
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব
- ড: জামাল নজরুল ইসলাম
- প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার
- বিনোদবিহারী চৌধুরী
- ড. অনুপম সেন
- মুহাম্মদ ইউনূস
- সূর্য সেন
- একে খান
- খান বাহাদুর বদি আহমদ চৌধুরী
- ড.আব্দুল করিম
- ড.অছিয়র রহমান
- প্রফেসর জামিলুর রেজা চৌধুরী
- সৈয়দ আহমদুল্লাহ মাইজভান্ডারী
- মুহাম্মদ ইব্রাহিম (পদার্থবিজ্ঞানী)
- নুরুল ইসলাম
- ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেক
- আল্লামা এম. এ. মান্নান
- আ জ ম নাছির উদ্দিন
- এবিএম মহিউদ্দীন চৌধুরী
- আবদুল হক (বীর বিক্রম)
- আবদুল করিম (বীর বিক্রম)
- এম হারুন-অর-রশিদ (বীর প্রতীক)
- আবদুল গফুর হালী
- সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ
- আবুল ফজল (সাহিত্যিক)
- আহমদ ছফা
- আহমদ শরীফ
- মাহবুব উল আলম চৌধুরী (কবি)
- মাহাবুব উল আলম (সাহিত্যিক)
- শাবানা
- শাহ মুহম্মদ সগীর
- শেফালী ঘোষ
- শ্যামসুন্দর বৈষ্ণব
- আসকর আলী পন্ডিত
- রমেশ শীল
- সত্য সাহা
- কুমার বিশ্বজিৎ – শিল্পী
- আইয়ুব বাচ্চু – শিল্পী
- তামিম ইকবাল – ক্রিকেটার
- পার্থ বড়ুয়া – গায়ক,শিল্পী
- সুকুমার বড়ুয়া – লেখক
- সুব্রত বড়ুয়া – লেখক
- সুজন বড়ুয়া – লেখক
ক্রীড়া
বাংলাদেশের অন্যান্য স্থানের মতো চট্টগ্রামে বিভিন্ন জনপ্রিয় খেলা যেমন ফুটবল, ক্রিকেট, বিলিয়ার্ড, টেবিল টেনিস, এথলেটিক্স, সকার, দাবা ইত্যাদি প্রচলিত রয়েছে। চট্টগ্রামের ঐতিহাসিকগণ অবশ্য বেশ কিছু প্রাচীন খেলার কথা উল্লেখ করে থাকেন। এর মধ্যে রয়েছে বলীখেলা, গরুর লড়াই. তুম্বুরু, চুঁয়াখেলা, ঘাডুঘাডু, টুনি ভাইয়র টুনি, তৈইক্যা চুরি, হাতগুত্তি, কইল্যা, কড়ি, নাউট্টা চড়াই, ডাংগুলি, নৌকা বাইচ ইত্যাদি। এর মধ্যে জব্বারের বলীখেলার কারণে বলীখেলা, কুস্তি এবং নৌকা বাইচ এখনও চালু আছে। গ্রামাঞ্চলে বৈচি, ডাংগুলি এখনো দৃষ্টি আকর্ষন করে। তবে, অন্যগুলোর তেমন কোন প্রচলন দেখা যায় না।
জাতীয় পর্যায়ে চট্টগ্রামের খেলোয়াড়দের যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। দেশের বাইরে থেকে সুনাম আনার ক্ষেত্রেও চট্টগ্রামের ক্রীড়াবিদদের অবদান উল্লেখযোগ্য। আইসিসি ট্রফি জেতা বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের দলনেতা ছিলেন আকরাম খান। কমনওয়েলথ গেমস থেকে বাংলাদেশের পক্ষে প্রথম স্বর্ণপদক অর্জনকারী চট্টগ্রামের শুটার আতিকুর রহমান। [২০]
চট্টগ্রামের স্প্রিন্টার মোশাররফ হোসেন শামীম জাতীয় পর্যায়ে পরপর ৭ বার ১০০ মিটার স্প্রিন্টে চ্যাম্পিয়ন হোন। এ কারণে ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশ দল যখন প্রথম বিশ্ব অলিম্পিকে অংশ নেয় তখন মোশাররফ হোসেন শামীম বাংলাদেশের পক্ষে একমাত্র ক্রীড়াবিদ ছিলেন।
চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গণের মূল কেন্দ্র চট্টগ্রাম এম এ আজিজ স্টেডিয়াম । চট্টগ্রামের প্রধান ক্রীড়া সংগঠন চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া পরিষদের প্রধান কার্যালয় এই স্টেডিয়ামে।
স্থাপত্য
-
ওয়ার সিমেট্রী
-
কদম মোবারক মসজিদ
-
ঐতিহাসিক আন্দরকিল্লা জামে মসজিদ
দর্শনীয় স্থান
- পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত,
- ফয়’স লেক,
- চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা,
- হযরত শাহ আমানত (র:) এর মাজার,
- হযরত বায়েজীদ বোস্তামী (র:) এর দরগাহ,
- জাতিতাত্ত্বিক যাদুঘর,
- ওয়ার সিমেট্রি,
- ডিসি হিল,
- বাটালি হিল,
- কোর্ট বিল্ডিং (জেলা প্রশাসকের কার্যালয়),
- চন্দ্রনাথ পাহাড় (সীতাকুন্ড),
- বাঁশখালী ইকোপার্ক,
- বাঁশখালী খানখানাবা সমুদ্রসৈকত,
- বাঁশখালী চা বাগান,
- পারকি সমুদ্র সৈকত (আনোয়ারা),
- মহামায়া লেক,
- মহুরি প্রজেক্ট,
- খৈইয়াছরা ঝরনা (মিরসরাই),
- বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত,
- গুলিয়াখালী সমুদ্র (সীতাকুণ্ড)।
-
বাংলাদেশের প্রথম বাষ্পচালিত ইঞ্জিন।
-
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বার্মায় ক্যাম্পেইন চলাকালে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে বজ্রপাত।
যোগাযোগ এবং গণমাধ্যম
চট্টগ্রামের উল্লেখযোগ্য দৈনিক পত্রিকার মধ্যে রয়েছে দৈনিক আজাদী, দৈনিক পূর্বকোণ , দৈনিক সুপ্রভাত বাংলাদেশ এবং দৈনিক বীর চট্টগ্রাম মঞ্চ। এছাড়া জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোর চট্টগ্রাম সংস্করন বের হয়। সাপ্তাহিক পত্রিকা : সাপ্তাহিক চট্টগ্রাম দর্পণ।
বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রাম কেন্দ্রের মূল স্টুডিও আগ্রাবাদে অবস্থিত। এছাড়া কালুরঘাটে একটি বেতার সম্প্রচার কেন্দ্র রয়েছে। বাংলাদেশ টেলিভিশনএর চট্টগ্রাম কেন্দ্র পাহাড়তলীতে অবস্থিত। বেসরকারী এফএম রেডিও রেডিও ফুর্তি এবং রেডিও টুডের চট্টগ্রাম সম্প্রচার কেন্দ্র রয়েছে।
ভ্রমণব্যবস্থা
ঐতিহাসিক স্থানসমূহঃ
- লালদিঘী ও লালদিঘী ময়দান,
- বদর আউলিয়ার দরগাহ
- ((হযরত শাহ আমানত শাহ(রা:)এর দরগাহ))
- বায়েজিদ বোস্তামীর মাজার,
- চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন ভবন,
- আদালত ভবন,
- চেরাগী পাহাড়,
- জে এম সেন হল,
- প্রীতিলতার স্মৃতি স্মারক,পাহাড়তলী।
পার্ক , বিনোদন ও প্রাকৃতিক স্থানঃ
- ফয়েজ লেক,
- জাতি-তাত্ত্বিক জাদুঘর,
- মুসলিম হল,
- স্বাধীনতা পার্ক,
- ডিসি হিল,
- কর্ণফুলী শিশুপার্ক,
- পতেঙ্গা সমূদ্র সৈকত,
- পতেঙ্গা বাটারফ্লাই পার্ক,
- ফয়েজ লেক ওয়াটার ল্যান্ড,
- কাজির দেউরি জাদুঘর,
- বাংলাদেশ নেভাল একাডেমি,
- বোটানিক্যাল গার্ডেন ও ইকো-পার্ক, সীতাকুণ্ড,
- ভাটিয়ারী গল্ফ ক্লাব,
- চুনতি অভয়ারণ্য - জাতিসংঘ পুরষ্কার প্রাপ্ত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক লীলাভূমি,
- লোহাগাড়া,
- রাঙ্গামাটি,
- বান্দরবান,
- খাগড়াছড়ি,
- বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজার,
- সেন্ট মার্টিন্স দ্বীপ।
স্মৃতিসৌধ ও স্মারকঃ
ভগ্নী নগরী
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
- ↑ শরীফ, আহমদ (ফেব্রুয়ারি ২০১১)। চট্টগ্রামের ইতিহাস। আগামী প্রকাশনী। পৃষ্ঠা ৯। আইএসবিএন 978 984 401 637 8।
- ↑ [১]
- ↑ বাংলাদেশের শহরের তালিকা, সংগৃহীত হয়েছে ১৬ই জুন, ২০১৬
- ↑ "চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ইতিহাস"। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন। সংগ্রহের তারিখ ১৬ই জুন, ২০১৬। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|সংগ্রহের-তারিখ=
(সাহায্য) - ↑ "Area, Population and Literacy Rate by Paurashava –2001" (পিডিএফ)। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। ২০০৮-১২-১৭ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৯-১৮।
- ↑ "জনসংখ্যা ও হাউজিং জনগণনা-২০১১" (পিডিএফ)। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। পৃষ্ঠা ৩৯। ৮ ডিসেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ই জুন, ২০১৬। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|সংগ্রহের-তারিখ=
(সাহায্য) - ↑ "The world's fastest growing cities and urban areas from 2006 to 2020"। citymayors.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০৫-০৮।
- ↑ ক খ O'Malley, L.S.S. (1908)। চট্টগ্রাম। পূর্ববঙ্গের জেলা গেজেটিয়ার। ১১এ। Calcutta: দ্য বেঙ্গল সেক্রেটারিয়েট বুক ডিপো। পৃষ্ঠা ১। সংগ্রহের তারিখ ১৬ই জুন, ২০১৬। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|সংগ্রহের-তারিখ=
(সাহায্য) - ↑ Osmany, Shireen Hasan (২০১২)। "Chittagong City"। Islam, Sirajul; Jamal, Ahmed A.। Banglapedia: National Encyclopedia of Bangladesh (Second সংস্করণ)। Asiatic Society of Bangladesh।
- ↑ Bernoulli, Jean; Rennell, James; Anquetil-Duperron, M.; Tieffenthaller, Joseph (1786)। Description historique et géographique de l'Inde (ফরাসি ভাষায়)। 2। Berlin: C. S. Spener। পৃষ্ঠা 408। সংগ্রহের তারিখ ১৬ই জুন, ২০১৬। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|সংগ্রহের-তারিখ=
(সাহায্য) - ↑ ক খ গ হাজার বছরের চট্টগ্রাম। দৈনিক আজাদী। নভেম্বর ১৯৯৫। পৃষ্ঠা ২৩।
- ↑ বাংলাপিডিয়া, খন্ড ৩, পৃ.২৭৬।
- ↑ হাজার বছরের চট্টগ্রাম। দৈনিক আজাদী। নভেম্বর ১৯৯৫। পৃষ্ঠা ১৯।
- ↑ Peel, M. C. and Finlayson, B. L. and McMahon, T. A. (২০০৭)। "Updated world map of the Köppen–Geiger climate classification" (পিডিএফ)। Hydrol. Earth Syst. Sci.। 11 (5): 1633–1644। আইএসএসএন 1027-5606। ডিওআই:10.5194/hess-11-1633-2007।
- ↑ Unattributed (২০১২)। "NOAA's Top Global Weather, Water and Climate Events of the 20th Century" (পিডিএফ)। NOAA Backgrounder। সংগ্রহের তারিখ ৩০ এপ্রিল ২০১২।
- ↑ ক খ সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, সম্পাদনাঃ অঞ্জলি বসু, ৪র্থ সংস্করণ, ১ম খণ্ড, ২০০২, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা। পৃ. ৭৬
- ↑ ক খ Chittagong District ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৮ ডিসেম্বর ২০১১ তারিখে, বাংলাপিডিয়া থেকে।
- ↑ ক খ “হাজার বছরের চট্টগ্রাম” (দৈনিক আজাদী কর্তৃক প্রকাশিত গ্রন্থ)
- ↑ দৈনিক প্রথম আলো[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ এছাড়া ২০১০ এর উইজডেন বর্ষসেরা টেস্ট ক্রিকেটার তামিম ইকবাল ও চট্টগ্রামের ছেলে।
পাদটীকা
বহিঃসংযোগ
ভগ্নী নগরী | রাষ্ট্র |
---|---|
কুনমিং | চীন |
ভিয়েনতিয়েন | লাওস |
লাহোর | পাকিস্তান |
চেন্নাই | ভারত |
শিকোকু | জাপান |
জেদ্দা | সৌদি আরব |
দুবাই | সংযুক্ত আরব আমিরাত |
দোহা | কাতার |
মাসকট | ওমান |