তিতাস একটি নদীর নাম (চলচ্চিত্র): সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
|||
৬৪ নং লাইন: | ৬৪ নং লাইন: | ||
== প্রেক্ষাপট == |
== প্রেক্ষাপট == |
||
অদ্বৈত মল্লবর্মণের [[তিতাস একটি নদীর নাম (উপন্যাস)|তিতাস একটি নদীর নাম]] শীর্ষক উপন্যাসের কাহিনীকে উপজীব্য করে চলচ্চিত্রস্রষ্টা [[ঋত্বিক কুমার ঘটক]] ১৯৭৩ সালে তিতাস একটি নদীর নাম চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেন। এ চলচ্চিত্র নির্মাণে আগ্রহের কারণ হিসেবে ঋত্বিক কুমার ঘটক বলেন,<ref name="প্রথম আলো"/> |
অদ্বৈত মল্লবর্মণের [[তিতাস একটি নদীর নাম (উপন্যাস)|তিতাস একটি নদীর নাম]] শীর্ষক উপন্যাসের কাহিনীকে উপজীব্য করে চলচ্চিত্রস্রষ্টা [[ঋত্বিক কুমার ঘটক]] ১৯৭৩ সালে তিতাস একটি নদীর নাম চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেন। এ চলচ্চিত্র নির্মাণে আগ্রহের কারণ হিসেবে ঋত্বিক কুমার ঘটক বলেন,<ref name="প্রথম আলো"/> |
||
{{উক্তি|তিতাস পূর্ব বাংলার একটা খণ্ডজীবন, এটি একটি সৎ লেখা। ইদানীং সচরাচর বাংলাদেশে (দুই বাংলাতেই) এ রকম লেখার দেখা পাওয়া যায় না। এর মধ্যে আছে প্রচুর নাটকীয় উপাদান, আছে দর্শনধারী ঘটনাবলী, আছে শ্রোতব্য বহু প্রাচীন সঙ্গীতের টুকরো - সব মিলিয়ে একটা অনাবিল আনন্দ ও অভিজ্ঞতার সৃষ্টি করা যায়। ব্যাপারটা ছবিতে ধরা পড়ার জন্য জন্ম থেকেই কাঁদছিল। ... অদ্বৈতবাবু অনেক অতিকথন করেন। কিন্তু লেখাটা একেবারে প্রাণ থেকে, ভেতর থেকে লেখা। আমি নিজেও বাবুর চোখ দিয়ে না দেখে ওইভাবে ভেতর থেকে দেখার চেষ্টা করেছি। অদ্বৈতবাবু যে সময়ে তিতাস নদী দেখেছেন, তখন তিতাস ও তার তীরবর্তী গ্রামীণ সভ্যতা মরতে বসেছে। বইয়ে তিতাস একটি নদীর নাম। তিনি এর পরের পুণর্জীবনটা দেখতে যাননি। আমি দেখাতে চাই যে, মৃত্যুর পরেও এই পুণর্জীবন হচ্ছে। তিতাস এখন আবার |
{{উক্তি|তিতাস পূর্ব বাংলার একটা খণ্ডজীবন, এটি একটি সৎ লেখা। ইদানীং সচরাচর বাংলাদেশে (দুই বাংলাতেই) এ রকম লেখার দেখা পাওয়া যায় না। এর মধ্যে আছে প্রচুর নাটকীয় উপাদান, আছে দর্শনধারী ঘটনাবলী, আছে শ্রোতব্য বহু প্রাচীন সঙ্গীতের টুকরো - সব মিলিয়ে একটা অনাবিল আনন্দ ও অভিজ্ঞতার সৃষ্টি করা যায়। ব্যাপারটা ছবিতে ধরা পড়ার জন্য জন্ম থেকেই কাঁদছিল। ... অদ্বৈতবাবু অনেক অতিকথন করেন। কিন্তু লেখাটা একেবারে প্রাণ থেকে, ভেতর থেকে লেখা। আমি নিজেও বাবুর চোখ দিয়ে না দেখে ওইভাবে ভেতর থেকে দেখার চেষ্টা করেছি। অদ্বৈতবাবু যে সময়ে তিতাস নদী দেখেছেন, তখন তিতাস ও তার তীরবর্তী গ্রামীণ সভ্যতা মরতে বসেছে। বইয়ে তিতাস একটি নদীর নাম। তিনি এর পরের পুণর্জীবনটা দেখতে যাননি। আমি দেখাতে চাই যে, মৃত্যুর পরেও এই পুণর্জীবন হচ্ছে। তিতাস এখন আবার তারুণ্যে উজ্জীবিত। আমার ছবিতে গ্রাম নায়ক, তিতাস নায়িকা।<ref name="প্রথম আলো">দৈনিক প্রথম আলো, ছুটির দিনে, তিতাস একটি নদীর নাম, মুদ্রিত সংস্করণ, ৭ জানুয়ারি, ২০১২</ref>|sign=|source=}} |
||
== সম্মাননা == |
== সম্মাননা == |
১৭:৪৬, ৯ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
তিতাস একটি নদীর নাম | |
---|---|
পরিচালক | ঋত্বিক ঘটক |
প্রযোজক | হাবিবুর রহমান খান |
রচয়িতা | ঋত্বিক ঘটক (চিত্রনাট্য) অদ্বৈত মল্লবর্মণ(মূল কাহিনী) |
উৎস | অদ্বৈত মল্লবর্মণ কর্তৃক তিতাস একটি নদীর নাম |
শ্রেষ্ঠাংশে | |
সুরকার | উস্তাদ বাহাদুর খান |
চিত্রগ্রাহক | বেবী ইসলাম |
সম্পাদক | বাসীর হুসেন |
মুক্তি | ২৭ জুলাই ১৯৭৩ |
স্থিতিকাল | ১৫৯ মিনিট |
দেশ | বাংলাদেশ |
ভাষা | বাংলা |
তিতাস একটি নদীর নাম (১৯৭৩) ঋত্বিক ঘটক পরিচালিত একটি বাংলাদেশী চলচ্চিত্র। বাঙালি ঔপন্যাসিক ও সাংবাদিক অদ্বৈত মল্লবর্মণ রচিত বিখ্যাত উপন্যাস তিতাস একটি নদীর নাম অবলম্বনে চলচ্চিত্র উপযোগী করে নির্মিত হয়েছে।
কাহিনী সংক্ষেপ
কিশোরী বাসন্তী বিয়ের বয়স হতে থাকে। সে তিতাস পাড়ে অপেক্ষায় থাকে খেলার সাথী কিশোর চন্দ্র আর সুবলের জন্য। সময় কাটে, কিশোর আর সুবল যৌবনে পা দেয়, দূর নদীতে জাল বাইতে যায়। তিতাস পাড়ের গ্রামে মালোদের দোলের সময় এক ঝামেলায় সহযোগিতার জন্য ওরা মারামরিতে জড়িয়ে পড়ে। এতে মোড়লদের ঘরের এক মেয়ে রাজার ঝি (কবরী) অজ্ঞান হয়ে যায়। এক আক্রমণকারী রাজারঝিকে আক্রমণ করলে কিশোর তাকে রক্ষা করে। এতে মোড়ল খুশি হয়ে রাজারঝির সাথে সাহসী কিশোরের বিয়ে দেয়। যে দিন বউকে নিজ গাঁয়ে নিয়ে যাবে, রাতে ডাকাতেরা নতুন বউকে চুরির চেষ্টা করে। নতুন বউ পানিতে ঝাপ দিয়ে নিজেকে রক্ষা করে। কিন্তু কিশোর রাতের আঁধারে তা দেখতে পায় না। এই ঘটনায় কিশোর পাগল হয়ে যায়। আর নতুন বউ নদীতে ভেসে যায়। দুর্ভাগ্যবশত, নববধূ তার স্বামী সম্পর্কে কিছুই জানে না, সে এমনকি তার স্বামীর নামও জানে না। শুধুমাত্র কিশোরের গ্রামের নামটি জানে।
সদ্যবিবাহিত বউ হারিয়ে কিশোর (প্রবীর মিত্র) পাগল হয়ে যায়। সুবল বিয়ে করে বাসন্তীকে। কিন্তু বিয়ের পরপরই ঝড়ের রাতে নৌকায় কাজ করতে গিয়ে মারা যায় সুবল, বিধবা হয় সুবলের বৌ বাসন্তী (শামীমা আক্তার রোজী)। দশ বছর পর কিশোরের বউ ছেলে অনন্ত সহ তার গ্রামে ফিরে আসে। কিন্তু কিশোর তাকে চিনতে পারে না। রাজারঝি তার আপন পরিচয় গোপন করে, যাতে ডাকাতের হাত থেকে ফিরে আসা বঊকে কেউ ক্ষতির কারণ না মনে করে। কিশোরের গ্রামের কিছু বাসিন্দা তাঁদের খাবার দিতে অস্বীকার করে ও তার ছেলে ক্ষুধার জ্বালায় চুরি করে।
রাজারঝির অন্ন বস্ত্রাদির অভাবে পাশে এসে দাঁড়ায় বাসন্তি। সইয়ের ছেলেকে আপন করে বড় করতে থাকে। আর চোখের সামনে থাকা পাগল কিশোরের কর্ম দেখে রাজারঝি তাকে পিঠা বানিয়ে খাওয়ায়। পাগল তবুও তার নিজের বউকে চিনতে পারে না। একসময় পাগল তাকে চিনতে পারে। কিন্তু ঠিক তার পরেই তার স্ত্রী মারা যায়। ছেলে অনন্ত বনে বাদাড়ে ঘুরে বেড়ায়। মায়ের মুখ খুঁজে মালোপাড়ার প্রতিমায়।
অনন্ত আশ্রয় পায় বিধবা বাসন্তীর কাছে, কিন্তু বাসন্তীর নিজেদের সংসারই চলে না অভাবের কারণে। এক মাত্র উপার্জন ক্ষম বৃদ্ধ পিতা মাছ ধরে যা আয় করে তা দিয়ে দুই বুড়া বুড়ি আর বাসন্তীর পেট চলে না, তার উপরে অনন্তের ঝামেলা নিতে বুড়া বুড়ি রাজি না। কিছুদিন অনেক কষ্টে বাসন্তী অনন্তকে লালন করলেও শেষে আর পেরে না উঠে তাকে তাড়িয়ে দেয় বাড়ি থেকে।
আশ্রয়হীন বালক অনন্তের আশ্রয় হয় নিঃসন্তান উদয়তারার কাছে। সেখানেই অনন্ত ঝুঁকে পরে লেখা পড়ার দিকে। অনন্ত কাউকে কিছু না জানিয়ে চলে যায় দূরের শহরে আরো পড়বে বলে।
একের পর এক অনেক দিন মাস বছর কেটে যায়। হঠাত করেই তিতাসের বুক জুড়ে জেগে উঠে বিশাল চর। সেই চর দখল করতে যায় মালোরা আর জেলেরা, হয় মারামারি।
শ্রেষ্ঠাংশে
- ফকরুল হাসান বৈরাগী - নিবারণ
- নারায়ণ চক্রবর্তী - মোড়ল
- বনানী চৌধুরী - মোড়লের গিন্নী
- কবরী সারোয়ার - রাজার ঝি
- চেতনা দাস
- ঋত্বিক ঘটক - তিলকচাঁদ
- শফিকুল ইসলাম - অনন্ত
- সিরাজুল ইসলাম - মাগন সরদার
- রওশন জামিল - মা
- এম এ খায়ের - বাসন্তির বাবা
- প্রবীর মিত্র - কিশোর
- গোলাম মুস্তাফা - রামপ্রসাদ এবং কাদের মিয়া
- সুফিয়া রুস্তম - উদয়তারা
- রোজী সামাদ - বাসন্তী
- রানী সরকার - মুংলি
প্রেক্ষাপট
অদ্বৈত মল্লবর্মণের তিতাস একটি নদীর নাম শীর্ষক উপন্যাসের কাহিনীকে উপজীব্য করে চলচ্চিত্রস্রষ্টা ঋত্বিক কুমার ঘটক ১৯৭৩ সালে তিতাস একটি নদীর নাম চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেন। এ চলচ্চিত্র নির্মাণে আগ্রহের কারণ হিসেবে ঋত্বিক কুমার ঘটক বলেন,[১]
তিতাস পূর্ব বাংলার একটা খণ্ডজীবন, এটি একটি সৎ লেখা। ইদানীং সচরাচর বাংলাদেশে (দুই বাংলাতেই) এ রকম লেখার দেখা পাওয়া যায় না। এর মধ্যে আছে প্রচুর নাটকীয় উপাদান, আছে দর্শনধারী ঘটনাবলী, আছে শ্রোতব্য বহু প্রাচীন সঙ্গীতের টুকরো - সব মিলিয়ে একটা অনাবিল আনন্দ ও অভিজ্ঞতার সৃষ্টি করা যায়। ব্যাপারটা ছবিতে ধরা পড়ার জন্য জন্ম থেকেই কাঁদছিল। ... অদ্বৈতবাবু অনেক অতিকথন করেন। কিন্তু লেখাটা একেবারে প্রাণ থেকে, ভেতর থেকে লেখা। আমি নিজেও বাবুর চোখ দিয়ে না দেখে ওইভাবে ভেতর থেকে দেখার চেষ্টা করেছি। অদ্বৈতবাবু যে সময়ে তিতাস নদী দেখেছেন, তখন তিতাস ও তার তীরবর্তী গ্রামীণ সভ্যতা মরতে বসেছে। বইয়ে তিতাস একটি নদীর নাম। তিনি এর পরের পুণর্জীবনটা দেখতে যাননি। আমি দেখাতে চাই যে, মৃত্যুর পরেও এই পুণর্জীবন হচ্ছে। তিতাস এখন আবার তারুণ্যে উজ্জীবিত। আমার ছবিতে গ্রাম নায়ক, তিতাস নায়িকা।[১]
সম্মাননা
২০০৭ সালে ব্রিটিশ ফিল্ম ইন্সটিটিউটের এক জরীপে দর্শক, চলচ্চিত্র সমালোচকদের ভোটে এটি সবার সেরা ১০টি বাংলাদেশী চলচ্চিত্রের তালিকার মধ্যে শীর্ষস্থান লাভ করে।[১][২]
সংগীত
তিতাস একটি নদীর নাম ছবির সংগীত পরিচালনা করেন উস্তাদ বাহাদুর খান।
তথ্যসূত্র
- ↑ ক খ গ দৈনিক প্রথম আলো, ছুটির দিনে, তিতাস একটি নদীর নাম, মুদ্রিত সংস্করণ, ৭ জানুয়ারি, ২০১২
- ↑ Top 10 Bangladeshi Films ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৩ জুন ২০০৮ তারিখে, ব্রিটিশ ফিল্ম ইন্সটিটিউট।
আরও দেখুন
বহিঃসংযোগ
- বাংলা মুভি ডেটাবেজে তিতাস একটি নদীর নাম
- ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে তিতাস একটি নদীর নাম (ইংরেজি)