রফিকুন নবী: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Salim Khandoker (আলোচনা | অবদান)
→‎কার্টুন চরিত্র 'টোকাই': বানান ঠিক করা হয়েছে
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল অ্যাপ সম্পাদনা
NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান)
বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে। কোন সমস্যায় এর পরিচালককে জানান।
৩২ নং লাইন: ৩২ নং লাইন:


== শিক্ষাজীবন ==
== শিক্ষাজীবন ==
পুলিশ অফিসার বাবার বদলির চাকুরির সুবাদে রফিকুন নবীর শৈশব ও কৈশোরকাল কেটেছে দেশের বিভিন্ন এলাকায়৷ পঞ্চাশের দশকের মাঝামাঝিতে ঢাকায় স্থায়ী হন তাঁরা। [[পুরানো ঢাকা|পুরান ঢাকাতেই]] কৈশোর ও যৌবনের অনেকটা সময় কাটে রফিকুন নবীর৷ ১৯৫০-এর মাঝামাঝিতে স্কুলে ভর্তি হন তিনি৷ পুরান ঢাকার পোগোজ হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক এবং ১৯৫৯ সালে ঢাকার সরকারি আর্ট কলেজে ভর্তি হন তিনি৷ এখানে [[জয়নুল আবেদীন|শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন]], [[কামরুল হাসান|কামরুল হাসানসহ]] খ্যাতিমান দিকপালের সান্নিধ্যে থেকে পড়াশোনা করেন৷ আর্ট কলেজে প্রথম বর্ষে থাকতে নিজের আঁকা ছবি প্রথম বিক্রি করেন ১৫ টাকায়৷ স্থানীয় সংবাদপত্রে রেখাচিত্র এঁকে এবং বুক কভার ইলাস্ট্রেশন করে পরিচিতি লাভ করেন দ্বিতীয় বর্ষেই৷ ১৯৬২ সালে এশিয়া ফাউন্ডেশনের বৃত্তি লাভ করেন তিনি৷<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|url=http://www.swapnershiri.com/magazine/latest-news/rafiqun-nabi/|title=swapnershiri.com|work=swapnershiri.com}}</ref> '৬৪ সালে স্নাতক পাশ করেন৷
পুলিশ অফিসার বাবার বদলির চাকুরির সুবাদে রফিকুন নবীর শৈশব ও কৈশোরকাল কেটেছে দেশের বিভিন্ন এলাকায়৷ পঞ্চাশের দশকের মাঝামাঝিতে ঢাকায় স্থায়ী হন তাঁরা। [[পুরানো ঢাকা|পুরান ঢাকাতেই]] কৈশোর ও যৌবনের অনেকটা সময় কাটে রফিকুন নবীর৷ ১৯৫০-এর মাঝামাঝিতে স্কুলে ভর্তি হন তিনি৷ পুরান ঢাকার পোগোজ হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক এবং ১৯৫৯ সালে ঢাকার সরকারি আর্ট কলেজে ভর্তি হন তিনি৷ এখানে [[জয়নুল আবেদীন|শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন]], [[কামরুল হাসান|কামরুল হাসানসহ]] খ্যাতিমান দিকপালের সান্নিধ্যে থেকে পড়াশোনা করেন৷ আর্ট কলেজে প্রথম বর্ষে থাকতে নিজের আঁকা ছবি প্রথম বিক্রি করেন ১৫ টাকায়৷ স্থানীয় সংবাদপত্রে রেখাচিত্র এঁকে এবং বুক কভার ইলাস্ট্রেশন করে পরিচিতি লাভ করেন দ্বিতীয় বর্ষেই৷ ১৯৬২ সালে এশিয়া ফাউন্ডেশনের বৃত্তি লাভ করেন তিনি৷<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://www.swapnershiri.com/magazine/latest-news/rafiqun-nabi/|শিরোনাম=swapnershiri.com|কর্ম=swapnershiri.com}}</ref> '৬৪ সালে স্নাতক পাশ করেন৷


== কর্মজীবন ==
== কর্মজীবন ==
পড়াশোনা শেষ করে রফিকুন নবী সে সময়ে ঢাকার প্রথম সারির পত্রিকাগুলিতে নিয়মিত কাজ শুরু করেন। নিয়মিত কার্টুন আঁকতেন সাপ্তাহিক পূর্বদেশ পত্রিকায় কবি আবদুল গনি হাজারির কলাম কাল পেঁচার ডায়েরীতে৷১৯৬৪ সালের ৩ আগস্ট ঢাকা আর্ট কলেজের শিক্ষক হিসেবে জীবন শুরু করেন তিনি৷ আর্ট কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রদের নিয়ে তাঁর শিক্ষকতা জীবনের শুরু হয়৷ ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে ঢাকায় থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য অর্থ, কাপড় ও খাদ্য সংগ্রহ করেছিলেন তিনি। ১৯৭৩ সালে গ্রীক সরকারের পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন বৃত্তি নিয়ে তিনি ভর্তি হলেন গ্রীসের এথেন্স স্কুল অব ফাইন আর্ট-এ৷ পড়াশোনা করলেন প্রিন্ট মেকিং-এর ওপর৷ ১৯৭৬ সালে দেশে ফিরে আসেন তিনি৷ শিক্ষক থেকে ধীরে ধীরে প্রভাষক, সহকারী অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপকের পদে অধিষ্ঠিত হন৷ [[ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়|ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের]] ইন্সটিটিউট অফ ফাইন আর্টস-এর ড্রইঙ ও পেইন্টিং বিভাগে প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন ১৯৮৮ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত। ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত তিনি ছিলেন এই ইন্সটিটিউটের পরিচালক। বর্তমানে ফ্রিল্যান্স আর্টিস্ট হিসাবে কাজ করছেন। <ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|url=http://arts.bdnews24.com/?p=3307|title=arts.bdnews24.com » রফিকুন নবীর ড্রইং প্রদর্শনী ২০১০|work=bdnews24.com}}</ref>
পড়াশোনা শেষ করে রফিকুন নবী সে সময়ে ঢাকার প্রথম সারির পত্রিকাগুলিতে নিয়মিত কাজ শুরু করেন। নিয়মিত কার্টুন আঁকতেন সাপ্তাহিক পূর্বদেশ পত্রিকায় কবি আবদুল গনি হাজারির কলাম কাল পেঁচার ডায়েরীতে৷১৯৬৪ সালের ৩ আগস্ট ঢাকা আর্ট কলেজের শিক্ষক হিসেবে জীবন শুরু করেন তিনি৷ আর্ট কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রদের নিয়ে তাঁর শিক্ষকতা জীবনের শুরু হয়৷ ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে ঢাকায় থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য অর্থ, কাপড় ও খাদ্য সংগ্রহ করেছিলেন তিনি। ১৯৭৩ সালে গ্রীক সরকারের পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন বৃত্তি নিয়ে তিনি ভর্তি হলেন গ্রীসের এথেন্স স্কুল অব ফাইন আর্ট-এ৷ পড়াশোনা করলেন প্রিন্ট মেকিং-এর ওপর৷ ১৯৭৬ সালে দেশে ফিরে আসেন তিনি৷ শিক্ষক থেকে ধীরে ধীরে প্রভাষক, সহকারী অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপকের পদে অধিষ্ঠিত হন৷ [[ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়|ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের]] ইন্সটিটিউট অফ ফাইন আর্টস-এর ড্রইঙ ও পেইন্টিং বিভাগে প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন ১৯৮৮ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত। ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত তিনি ছিলেন এই ইন্সটিটিউটের পরিচালক। বর্তমানে ফ্রিল্যান্স আর্টিস্ট হিসাবে কাজ করছেন। <ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://arts.bdnews24.com/?p=3307|শিরোনাম=arts.bdnews24.com » রফিকুন নবীর ড্রইং প্রদর্শনী ২০১০|কর্ম=bdnews24.com}}</ref>


=== উল্লেখযোগ্য কাজ ===
=== উল্লেখযোগ্য কাজ ===


== কার্টুন চরিত্র 'টোকাই' ==
== কার্টুন চরিত্র 'টোকাই' ==
১৯৭৮ সালের ১৭ মে [[টোকাই (কার্টুন চরিত্র)|টোকাই]] শিরোনামে প্রথম স্ট্রিপ কার্টুনটি ছাপা হয় বিচিত্রার প্রারম্ভিক সংখ্যায়। প্রথম কার্টুনে [[টোকাই (কার্টুন চরিত্র)|টোকাই]] একজন বড় কর্মকর্তা৷ বসে আছে তার বানানো অফিসে৷ রাস্তার ইট দিয়ে তৈরি একটি টেবিলে৷ প্রথম কার্টুনেই বিপুল জনপ্রিয়তা পাওয়া [[টোকাই (কার্টুন চরিত্র)|টোকাই]] নিয়মিত বিচিত্রায় ছাপা হয়৷ ২০০০ সাল থেকে সাপ্তাহিক ২০০০-এ শুরু হয় আঁকা হলেও ২০০৪ সালের দিকে নিয়মিত [[টোকাই (কার্টুন চরিত্র)|টোকাই]] আঁকা বন্ধ করেন তিনি।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|url=http://www.samakal.net/details.php?news=150&view=archiev&y=2011&m=07&d=30&action=main&menu_type=&option=single&news_id=177468&pub_no=767&type=|title=Samakal Online English Version|first=Samakal Online|last=Version|publisher=}}</ref> টোকাইয়ের মাথায় টাক, কখনও গুটিকয়েক চুল, খাটো চেক লুঙ্গি মোটা পেটে বাঁধা৷ কখনো কাঁধে বস্তা৷ '৭৮-'৭৯-এ ভোটের সময় বিলি করা জামা পরেছিল [[টোকাই (কার্টুন চরিত্র)|টোকাই]], সেই জামাটি ছিল ওর থেকে অনেক বড় আকারের৷ থাকে রাস্তার ডাস্টবিনের পাশে, ফুটপাতে, ফেলে রাখা কংক্রিটের পাইপের ভেতর, পার্কের বেঞ্চিতে, ভাঙা দেয়ালের পাশে, কাঠের গুঁড়িতে, ঠেলা গাড়ির ওপরে, ইটের ওপর মাথা পেতে৷ তার পাশে থাকে কুকুর, কাক৷ কথা বলে কাক, গরু, ছাগল, মশার সাথে৷ কথা বলে মানুষের সাথেও৷ তার কথা বুদ্ধিদীপ্ত, বিচক্ষণতায় ভরা, আবার রসে সিক্ত৷ পেন অ্যান্ড ইঙ্কের পরে [[টোকাই (কার্টুন চরিত্র)|টোকাই]] হাজির হল জলরঙের উচ্ছলতায়৷ সেখানে সে কখনও মনের আনন্দে মার্বেল গুটি দিয়ে খেলে, নৌকা চালায়, বাঁশি বাজায়, বেহালা বাজায়, কখনও রাস্তার বুকে উবু হয়ে লিখতে শুরু করে, কখনও আনন্দে দেয় ছুট৷ কখনও একা বসে থাকে, আবার কখনও পাঁচিলের উপরে উঠে পাশের দেয়ালের অপর দিকে উঁকি দিয়ে দেখার চেষ্টা করে, রাজকীয় বাড়ির দরজায় হাজির হয় কাঁধে বস্তা নিয়ে৷ রনবীর টোকাই এভাবে সমাজ-সংসারকে প্রশ্নবিদ্ধ করে চলে প্রতিনিয়ত৷ মূলত [[টোকাই (কার্টুন চরিত্র)|টোকাই]] চরিত্রটি বাস্তবের এমন কিছু পথশিশুর প্রতিনিধিত্ব করে, যারা, মানুষের ফেলে দেয়া আবর্জনা, কুড়িয়ে নিয়ে যায বা টুকিয়ে নিয়ে যায়। বাস্তবের সেসব পথশিশুকে প্রতিনিধিত্ব করতে গিয়ে টোকাই’র বাসস্থান হলো আস্তাকুঁড়ে বা ডাস্টবিনের কাছাকাছি, ফুটপাত, কিংবা পতিত বড় পাইপ, যা তার বাস্তুহীনতাকে প্রতীকায়িত করে। তার পোশাক বলতে একমাত্র লুঙ্গি, যা তার দারিদ্রকে প্রতীকায়িত করে। অন্য অর্থে টোকাই প্রতীকতাবর্জিত একটি চরিত্র, যে প্রায় বাস্তবই তুলে ধরে। এঅর্থে টোকাই চরিত্রে প্রতীকতা খোঁজার অবকাশ নেই। <ref>[http://www.toonsmag.com/bangla/2011/05/30/%E0%A6%9F%E0%A7%8B%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%87/ টুনম্যাগাজিনে টোকাই]</ref>
১৯৭৮ সালের ১৭ মে [[টোকাই (কার্টুন চরিত্র)|টোকাই]] শিরোনামে প্রথম স্ট্রিপ কার্টুনটি ছাপা হয় বিচিত্রার প্রারম্ভিক সংখ্যায়। প্রথম কার্টুনে [[টোকাই (কার্টুন চরিত্র)|টোকাই]] একজন বড় কর্মকর্তা৷ বসে আছে তার বানানো অফিসে৷ রাস্তার ইট দিয়ে তৈরি একটি টেবিলে৷ প্রথম কার্টুনেই বিপুল জনপ্রিয়তা পাওয়া [[টোকাই (কার্টুন চরিত্র)|টোকাই]] নিয়মিত বিচিত্রায় ছাপা হয়৷ ২০০০ সাল থেকে সাপ্তাহিক ২০০০-এ শুরু হয় আঁকা হলেও ২০০৪ সালের দিকে নিয়মিত [[টোকাই (কার্টুন চরিত্র)|টোকাই]] আঁকা বন্ধ করেন তিনি।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://www.samakal.net/details.php?news=150&view=archiev&y=2011&m=07&d=30&action=main&menu_type=&option=single&news_id=177468&pub_no=767&type=|শিরোনাম=Samakal Online English Version|প্রথমাংশ=Samakal Online|শেষাংশ=Version|প্রকাশক=}}</ref> টোকাইয়ের মাথায় টাক, কখনও গুটিকয়েক চুল, খাটো চেক লুঙ্গি মোটা পেটে বাঁধা৷ কখনো কাঁধে বস্তা৷ '৭৮-'৭৯-এ ভোটের সময় বিলি করা জামা পরেছিল [[টোকাই (কার্টুন চরিত্র)|টোকাই]], সেই জামাটি ছিল ওর থেকে অনেক বড় আকারের৷ থাকে রাস্তার ডাস্টবিনের পাশে, ফুটপাতে, ফেলে রাখা কংক্রিটের পাইপের ভেতর, পার্কের বেঞ্চিতে, ভাঙা দেয়ালের পাশে, কাঠের গুঁড়িতে, ঠেলা গাড়ির ওপরে, ইটের ওপর মাথা পেতে৷ তার পাশে থাকে কুকুর, কাক৷ কথা বলে কাক, গরু, ছাগল, মশার সাথে৷ কথা বলে মানুষের সাথেও৷ তার কথা বুদ্ধিদীপ্ত, বিচক্ষণতায় ভরা, আবার রসে সিক্ত৷ পেন অ্যান্ড ইঙ্কের পরে [[টোকাই (কার্টুন চরিত্র)|টোকাই]] হাজির হল জলরঙের উচ্ছলতায়৷ সেখানে সে কখনও মনের আনন্দে মার্বেল গুটি দিয়ে খেলে, নৌকা চালায়, বাঁশি বাজায়, বেহালা বাজায়, কখনও রাস্তার বুকে উবু হয়ে লিখতে শুরু করে, কখনও আনন্দে দেয় ছুট৷ কখনও একা বসে থাকে, আবার কখনও পাঁচিলের উপরে উঠে পাশের দেয়ালের অপর দিকে উঁকি দিয়ে দেখার চেষ্টা করে, রাজকীয় বাড়ির দরজায় হাজির হয় কাঁধে বস্তা নিয়ে৷ রনবীর টোকাই এভাবে সমাজ-সংসারকে প্রশ্নবিদ্ধ করে চলে প্রতিনিয়ত৷ মূলত [[টোকাই (কার্টুন চরিত্র)|টোকাই]] চরিত্রটি বাস্তবের এমন কিছু পথশিশুর প্রতিনিধিত্ব করে, যারা, মানুষের ফেলে দেয়া আবর্জনা, কুড়িয়ে নিয়ে যায বা টুকিয়ে নিয়ে যায়। বাস্তবের সেসব পথশিশুকে প্রতিনিধিত্ব করতে গিয়ে টোকাই’র বাসস্থান হলো আস্তাকুঁড়ে বা ডাস্টবিনের কাছাকাছি, ফুটপাত, কিংবা পতিত বড় পাইপ, যা তার বাস্তুহীনতাকে প্রতীকায়িত করে। তার পোশাক বলতে একমাত্র লুঙ্গি, যা তার দারিদ্রকে প্রতীকায়িত করে। অন্য অর্থে টোকাই প্রতীকতাবর্জিত একটি চরিত্র, যে প্রায় বাস্তবই তুলে ধরে। এঅর্থে টোকাই চরিত্রে প্রতীকতা খোঁজার অবকাশ নেই। <ref>[http://www.toonsmag.com/bangla/2011/05/30/%E0%A6%9F%E0%A7%8B%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%87/ টুনম্যাগাজিনে টোকাই]</ref>


== পু্রস্কার ==
== পু্রস্কার ==
রফিকুন নবী শিল্পকলায় অবদানের জন্য ১৯৯৩ সালে [[একুশে পদক]] লাভ করেন। এছাড়া তিনি চারুকলায় জাতীয় সম্মাননা শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার, অগ্রণী ব্যাংক সাহিত্য পুরস্কার, বুক-কভার ডিজাইনের জন্য ১৩ বার ন্যাশনাল একাডেমি পুরস্কার লাভ করেছেন৷ ২০০৮ সালে তাঁর আঁকা খরা শীর্ষক ছবির জন্য ৮০টি দেশের ৩০০ জন চিত্রশিল্পীর মধ্যে 'এক্সিলেন্ট আর্টিস্টস অব দ্য ওয়ার্ল্ড' হিসেবে মনোনীত হন৷<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|url=http://www.gunijan.org.bd/GjProfDetails_action.php?GjProfId=139|title=:: Welcome to GUNIJAN :: The Eminent :: Largest electronic journal of bangladeshi eminents :.|work=gunijan.org.bd}}</ref> তিনি ২০১৫ সালের জন্য শেলটেক কর্তৃক প্রদত্ত "শেলটেক পদক" লাভ করেন।<ref>{{সংবাদ উদ্ধৃতি|title=সিরাজুল ইসলাম, রফিকুন নবী ও আইনুন নিশাত পেলেন শেলটেক পদক|url=http://www.ittefaq.com.bd/print-edition/city/2017/11/05/234184.html|accessdate=৯ ডিসেম্বর ২০১৭|work=[[দৈনিক ইত্তেফাক]]|date=৫ নভেম্বর ২০১৭}}</ref><ref>{{সংবাদ উদ্ধৃতি|title=শেলটেক পদকে ভূষিত তিন গুণী|url=http://www.kalerkantho.com/home/printnews/561767/2017-11-05|accessdate=৯ ডিসেম্বর ২০১৭|work=[[দৈনিক কালের কণ্ঠ]]|date=৫ নভেম্বর ২০১৭}}</ref>
রফিকুন নবী শিল্পকলায় অবদানের জন্য ১৯৯৩ সালে [[একুশে পদক]] লাভ করেন। এছাড়া তিনি চারুকলায় জাতীয় সম্মাননা শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার, অগ্রণী ব্যাংক সাহিত্য পুরস্কার, বুক-কভার ডিজাইনের জন্য ১৩ বার ন্যাশনাল একাডেমি পুরস্কার লাভ করেছেন৷ ২০০৮ সালে তাঁর আঁকা খরা শীর্ষক ছবির জন্য ৮০টি দেশের ৩০০ জন চিত্রশিল্পীর মধ্যে 'এক্সিলেন্ট আর্টিস্টস অব দ্য ওয়ার্ল্ড' হিসেবে মনোনীত হন৷<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://www.gunijan.org.bd/GjProfDetails_action.php?GjProfId=139|শিরোনাম=:: Welcome to GUNIJAN :: The Eminent :: Largest electronic journal of bangladeshi eminents :.|কর্ম=gunijan.org.bd}}</ref> তিনি ২০১৫ সালের জন্য শেলটেক কর্তৃক প্রদত্ত "শেলটেক পদক" লাভ করেন।<ref>{{সংবাদ উদ্ধৃতি|শিরোনাম=সিরাজুল ইসলাম, রফিকুন নবী ও আইনুন নিশাত পেলেন শেলটেক পদক|ইউআরএল=http://www.ittefaq.com.bd/print-edition/city/2017/11/05/234184.html|সংগ্রহের-তারিখ=৯ ডিসেম্বর ২০১৭|কর্ম=[[দৈনিক ইত্তেফাক]]|তারিখ=৫ নভেম্বর ২০১৭}}</ref><ref>{{সংবাদ উদ্ধৃতি|শিরোনাম=শেলটেক পদকে ভূষিত তিন গুণী|ইউআরএল=http://www.kalerkantho.com/home/printnews/561767/2017-11-05|সংগ্রহের-তারিখ=৯ ডিসেম্বর ২০১৭|কর্ম=[[দৈনিক কালের কণ্ঠ]]|তারিখ=৫ নভেম্বর ২০১৭}}</ref>


== আরো দেখুন ==
== আরো দেখুন ==

১২:১৬, ১৯ নভেম্বর ২০১৮ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

রফিকুন নবী
জন্ম
রফিকুন নবী

২৮ নভেম্বর, ১৯৪৩
জাতীয়তাবাংলাদেশী
পুরস্কারএকুশে পদক
স্বাক্ষর

রফিকুন নবী (উপনাম রনবী) (জন্ম: ২৮ নভেম্বর, ১৯৪৩ ) বাংলাদেশের খ্যাতনামা চিত্রকর, কার্টুনিস্ট। টোকাই নামক কার্টুন চরিত্রটি তার অনবদ্য সৃষ্টি। ১৯৭৮ খ্রিস্টাব্দ থেকে টোকাই কার্টুন স্ট্রিপ হিসেবে সাপ্তাহিক বিচিত্রা পত্রিকায় প্রকাশিত হয়ে আসছে। শিল্পকলায় তার অনন্য অবদানের জন্য তিনি ১৯৯৩ সালে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান একুশে পদকে ভূষিত হন।

জন্ম ও পারিবারিক জীবন

রফিকুন নবী ১৯৪৩ সালের ২৮ নভেম্বর রাজশাহী বিভাগের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় জন্মগ্রহন করেন। বাবা রশীদুন নবী ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা। মা আনোয়ারা বেগম ছিলেন জমিদার পরিবারের সন্তান। তাঁর স্ত্রীর নাম নাজমা বেগম।

শিক্ষাজীবন

পুলিশ অফিসার বাবার বদলির চাকুরির সুবাদে রফিকুন নবীর শৈশব ও কৈশোরকাল কেটেছে দেশের বিভিন্ন এলাকায়৷ পঞ্চাশের দশকের মাঝামাঝিতে ঢাকায় স্থায়ী হন তাঁরা। পুরান ঢাকাতেই কৈশোর ও যৌবনের অনেকটা সময় কাটে রফিকুন নবীর৷ ১৯৫০-এর মাঝামাঝিতে স্কুলে ভর্তি হন তিনি৷ পুরান ঢাকার পোগোজ হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক এবং ১৯৫৯ সালে ঢাকার সরকারি আর্ট কলেজে ভর্তি হন তিনি৷ এখানে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন, কামরুল হাসানসহ খ্যাতিমান দিকপালের সান্নিধ্যে থেকে পড়াশোনা করেন৷ আর্ট কলেজে প্রথম বর্ষে থাকতে নিজের আঁকা ছবি প্রথম বিক্রি করেন ১৫ টাকায়৷ স্থানীয় সংবাদপত্রে রেখাচিত্র এঁকে এবং বুক কভার ইলাস্ট্রেশন করে পরিচিতি লাভ করেন দ্বিতীয় বর্ষেই৷ ১৯৬২ সালে এশিয়া ফাউন্ডেশনের বৃত্তি লাভ করেন তিনি৷[১] '৬৪ সালে স্নাতক পাশ করেন৷

কর্মজীবন

পড়াশোনা শেষ করে রফিকুন নবী সে সময়ে ঢাকার প্রথম সারির পত্রিকাগুলিতে নিয়মিত কাজ শুরু করেন। নিয়মিত কার্টুন আঁকতেন সাপ্তাহিক পূর্বদেশ পত্রিকায় কবি আবদুল গনি হাজারির কলাম কাল পেঁচার ডায়েরীতে৷১৯৬৪ সালের ৩ আগস্ট ঢাকা আর্ট কলেজের শিক্ষক হিসেবে জীবন শুরু করেন তিনি৷ আর্ট কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রদের নিয়ে তাঁর শিক্ষকতা জীবনের শুরু হয়৷ ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে ঢাকায় থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য অর্থ, কাপড় ও খাদ্য সংগ্রহ করেছিলেন তিনি। ১৯৭৩ সালে গ্রীক সরকারের পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন বৃত্তি নিয়ে তিনি ভর্তি হলেন গ্রীসের এথেন্স স্কুল অব ফাইন আর্ট-এ৷ পড়াশোনা করলেন প্রিন্ট মেকিং-এর ওপর৷ ১৯৭৬ সালে দেশে ফিরে আসেন তিনি৷ শিক্ষক থেকে ধীরে ধীরে প্রভাষক, সহকারী অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপকের পদে অধিষ্ঠিত হন৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্সটিটিউট অফ ফাইন আর্টস-এর ড্রইঙ ও পেইন্টিং বিভাগে প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন ১৯৮৮ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত। ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত তিনি ছিলেন এই ইন্সটিটিউটের পরিচালক। বর্তমানে ফ্রিল্যান্স আর্টিস্ট হিসাবে কাজ করছেন। [২]

উল্লেখযোগ্য কাজ

কার্টুন চরিত্র 'টোকাই'

১৯৭৮ সালের ১৭ মে টোকাই শিরোনামে প্রথম স্ট্রিপ কার্টুনটি ছাপা হয় বিচিত্রার প্রারম্ভিক সংখ্যায়। প্রথম কার্টুনে টোকাই একজন বড় কর্মকর্তা৷ বসে আছে তার বানানো অফিসে৷ রাস্তার ইট দিয়ে তৈরি একটি টেবিলে৷ প্রথম কার্টুনেই বিপুল জনপ্রিয়তা পাওয়া টোকাই নিয়মিত বিচিত্রায় ছাপা হয়৷ ২০০০ সাল থেকে সাপ্তাহিক ২০০০-এ শুরু হয় আঁকা হলেও ২০০৪ সালের দিকে নিয়মিত টোকাই আঁকা বন্ধ করেন তিনি।[৩] টোকাইয়ের মাথায় টাক, কখনও গুটিকয়েক চুল, খাটো চেক লুঙ্গি মোটা পেটে বাঁধা৷ কখনো কাঁধে বস্তা৷ '৭৮-'৭৯-এ ভোটের সময় বিলি করা জামা পরেছিল টোকাই, সেই জামাটি ছিল ওর থেকে অনেক বড় আকারের৷ থাকে রাস্তার ডাস্টবিনের পাশে, ফুটপাতে, ফেলে রাখা কংক্রিটের পাইপের ভেতর, পার্কের বেঞ্চিতে, ভাঙা দেয়ালের পাশে, কাঠের গুঁড়িতে, ঠেলা গাড়ির ওপরে, ইটের ওপর মাথা পেতে৷ তার পাশে থাকে কুকুর, কাক৷ কথা বলে কাক, গরু, ছাগল, মশার সাথে৷ কথা বলে মানুষের সাথেও৷ তার কথা বুদ্ধিদীপ্ত, বিচক্ষণতায় ভরা, আবার রসে সিক্ত৷ পেন অ্যান্ড ইঙ্কের পরে টোকাই হাজির হল জলরঙের উচ্ছলতায়৷ সেখানে সে কখনও মনের আনন্দে মার্বেল গুটি দিয়ে খেলে, নৌকা চালায়, বাঁশি বাজায়, বেহালা বাজায়, কখনও রাস্তার বুকে উবু হয়ে লিখতে শুরু করে, কখনও আনন্দে দেয় ছুট৷ কখনও একা বসে থাকে, আবার কখনও পাঁচিলের উপরে উঠে পাশের দেয়ালের অপর দিকে উঁকি দিয়ে দেখার চেষ্টা করে, রাজকীয় বাড়ির দরজায় হাজির হয় কাঁধে বস্তা নিয়ে৷ রনবীর টোকাই এভাবে সমাজ-সংসারকে প্রশ্নবিদ্ধ করে চলে প্রতিনিয়ত৷ মূলত টোকাই চরিত্রটি বাস্তবের এমন কিছু পথশিশুর প্রতিনিধিত্ব করে, যারা, মানুষের ফেলে দেয়া আবর্জনা, কুড়িয়ে নিয়ে যায বা টুকিয়ে নিয়ে যায়। বাস্তবের সেসব পথশিশুকে প্রতিনিধিত্ব করতে গিয়ে টোকাই’র বাসস্থান হলো আস্তাকুঁড়ে বা ডাস্টবিনের কাছাকাছি, ফুটপাত, কিংবা পতিত বড় পাইপ, যা তার বাস্তুহীনতাকে প্রতীকায়িত করে। তার পোশাক বলতে একমাত্র লুঙ্গি, যা তার দারিদ্রকে প্রতীকায়িত করে। অন্য অর্থে টোকাই প্রতীকতাবর্জিত একটি চরিত্র, যে প্রায় বাস্তবই তুলে ধরে। এঅর্থে টোকাই চরিত্রে প্রতীকতা খোঁজার অবকাশ নেই। [৪]

পু্রস্কার

রফিকুন নবী শিল্পকলায় অবদানের জন্য ১৯৯৩ সালে একুশে পদক লাভ করেন। এছাড়া তিনি চারুকলায় জাতীয় সম্মাননা শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার, অগ্রণী ব্যাংক সাহিত্য পুরস্কার, বুক-কভার ডিজাইনের জন্য ১৩ বার ন্যাশনাল একাডেমি পুরস্কার লাভ করেছেন৷ ২০০৮ সালে তাঁর আঁকা খরা শীর্ষক ছবির জন্য ৮০টি দেশের ৩০০ জন চিত্রশিল্পীর মধ্যে 'এক্সিলেন্ট আর্টিস্টস অব দ্য ওয়ার্ল্ড' হিসেবে মনোনীত হন৷[৫] তিনি ২০১৫ সালের জন্য শেলটেক কর্তৃক প্রদত্ত "শেলটেক পদক" লাভ করেন।[৬][৭]

আরো দেখুন

তথ্যসূত্র

বহি:সংযোগ