আয়মান আল-জাওয়াহিরি: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
আ হ ম সাকিব (আলোচনা | অবদান)
→‎ব্যক্তিগত জীবন: বিষয়বস্তু যোগ
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
আ হ ম সাকিব (আলোচনা | অবদান)
→‎বিকল্প নাম এবং উপনাম: বিষয়বস্তু যোগ
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
৮৭ নং লাইন: ৮৭ নং লাইন:


[[সাইয়েদ কুতুব]] [[ইসলামি খেলাফত|খেলাফত]] পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং মুসলমানদেরকে মুক্ত করতে আহ্বান করে বলেছিলেন, একজন সত্যিকারের মুসলমান তার নিজের জন্য মূল আদর্শ নবিজি তার সাহাবায়ে কেরামকে যেভাবে উন্নত করেছেন, সেটাকে পথিকৃৎ হিসাবে গণ্য করতে হবে।<ref>Qutb, ''Milestones'', pp. 16, 20 (pp. 17–18).</ref>
[[সাইয়েদ কুতুব]] [[ইসলামি খেলাফত|খেলাফত]] পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং মুসলমানদেরকে মুক্ত করতে আহ্বান করে বলেছিলেন, একজন সত্যিকারের মুসলমান তার নিজের জন্য মূল আদর্শ নবিজি তার সাহাবায়ে কেরামকে যেভাবে উন্নত করেছেন, সেটাকে পথিকৃৎ হিসাবে গণ্য করতে হবে।<ref>Qutb, ''Milestones'', pp. 16, 20 (pp. 17–18).</ref>

====''মুসলিম ব্রাদারহুডে'' যোগদান====
{{আরো দেখুন|সাইয়েদ কুতুব}}

১৪ বছর বয়সে আল-জাওয়াহিরি [[মুসলিম ব্রাদারহুড|মুসলিম ব্রাদারহুডে]] যোগদান করেন। ঐ বছরই [[মিসর সরকার]] সাইয়েদ কুতুবকে [[চক্রান্ত (রাজনৈতিক)|চক্রান্ত করে]] ফাঁসি দেয়। এবং আল-জাওয়াহিরি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের চারজন ছাত্রের সাথে মিলে একটি গোপন দল তৈরি করেন। তাদের উদ্দেশ্য ছিল, সরকারকে উৎখাত এবং ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা। এটা ছিল আল-জাওয়াহিরির একদম কম বয়সে, যখন তিনি সাইয়েদ কুতুবের উদ্দেশ্যকে বাস্তবে রূপান্তর করতে একটি [[ধর্মপ্রচার|একটি মিশন]] আঞ্জাম দিচ্ছিলেন।<ref>Wright, p. 37.</ref> যাইহোক, সর্বশেষ তার দল [[মিসরীয় ইসলামি জিহাদ|মিসরীয় ইসলামি জিহাদের]] সাথে একীভূত হয়ে যায়।<ref name=wrightp42>Wright, p. 42.</ref>

=== বিবাহ এবং সন্তানাদি ===
আয়মান আল-জাওয়াহিরি কমপক্ষে চারটি বিয়ে করেছিলেন। স্ত্রীদের মধ্যে আযযা আহমাদ নোয়ারি এবং উমায়মা হাসান সম্পর্কেই কমবেশি জানা যায়।

১৯৭৮ সালে আল-জাওয়াহিরি আযযা আহমাদের সাথে প্রথম বিয়ে করেন। আযযা তখন কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়ের [[দর্শনশাস্ত্র|দর্শনের]] ছাত্রী ছিলেন।<ref name="monty"/> অপেরা স্কয়ারে একটি আন্তর্জাতিক মানের হোটেলে বিবাহানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। <ref name="monty"/> অনুষ্ঠানটি অত্যন্ত রক্ষণশীল পরিবেশে, পুরুষ-মহিলাদের পৃথক পৃথক স্থান, এবং কোন গানবাজনা বা ফটোগ্রাফি কিংবা আলোকসজ্জা ছাড়াই অনুষ্ঠিত হয়।<ref>Wright, pp. 43–44.</ref> অনেক বছর পরে, [[টুইনটাওয়ারে আক্রমণ|টুইনটাওয়ারে আক্রমণের]] কারণে যখন অক্টোবর ২০০১-এ যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান আক্রমণ করে, তখন পর্যন্তও আযযা ধারণাও করতে পারেননি, তার স্বামী আল-জাওয়াহিরি শেষ দশকে একজন [[জিহাদ|জিহাদি]] আমির হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন।<ref>Wright, p. 370.</ref> ২০১২ সালে উমায়মা হাসান (আল-জাওয়াহিরির স্ত্রীদের একজন) [[আরব বসন্তে নারী|আরব বসন্তে মুসলিম নারীদের]] অগ্রসর ভূমিকায় অভিনন্দন জানিয়ে ইন্টারনেটে বিবৃতি দেন।<ref>{{cite news|last=Henderson |first=Barney |url=https://www.telegraph.co.uk/news/worldnews/al-qaeda/9320323/Al-Qaeda-statement-by-Ayman-al-Zawahiris-wife-released.html |title=Al-Qaeda statement by Ayman al-Zawahiri's wife released |publisher=Telegraph |date= June 8, 2012|accessdate=2012-12-13 |location=London}}</ref>

আল-জাওয়াহিরি এবং তার স্ত্রী আযযার পাঁচ কন্যা এবং এক পুত্র জন্মগ্রহণ করে। ফাতিমা (জন্ম: ১৯৮১), উমায়মা (জন্ম: ১৯৮৩), নাবিলা (জন্ম: ১৯৮৬), খাদিজা ও মুহাম্মাদ (যমজ, জন্ম: ১৯৮৭), আয়িশা (জন্ম: ১৯৯৭)। আয়িশার [[ডাউন সিন্ড্রোম]] রোগ থাকার কথা জানা যায়। ২০০৪ সালে [[আবু যুবায়দা]]কে [[জল নিপীড়ন]] করলে তিনি জবানবন্দী দেন যে, [[আবু তুরাব আল-উরদুনি]] আয়মান আল-জাওয়াহিরির কোন এক কন্যাকে বিবাহ করেছেন।<ref>Intelligence report, interrogation of [[Abu Zubaydah]], 18 February 2004.</ref>

২০০৫ সালের প্রথমার্ধে আল-জাওয়াহিরির জীবিত তিন স্ত্রীর একজন "নাওওয়ার" নামীয় একটি কন্যাসন্তান জন্ম দেন। <ref name="berg">Bergen, Peter. "The Osama bin Laden I Know", 2006. p. 367</ref>

[[টুইনটাওয়ারে আক্রমণ|টুইনটাওয়ারে আক্রমণের]] পর, ডিসেম্বর ২০০১-এর শেষদিকে আয়মান আল-জাওয়াহিরির প্রথম স্ত্রী আযযা এবং তার দুই সন্তান মুহাম্মাদ এবং আয়িশা [[আফগানিস্তান|আফগানিস্তানে]] আমেরিকান সৈন্যবাহিনীর বিমানহামলায় নিহত হন।<ref>{{cite news|url=http://www.cbsnews.com/2100-202_162-20071562.html |title=For al-Zawahiri, anti-U.S. fight is personal |publisher=CBS News |date=2011-06-16 |accessdate=2012-12-13}}</ref><ref name="cnn: Jihadist websites"/>

আমেরিকান বোমা বিস্ফোরণের পর [[গারদেজ, আফগানিস্তান|গারদেজে]] তালিবান নিয়ন্ত্রিত দালানের ধ্বংসাবশেষে মেহমানখানার ছাদের নিচে আটকে পড়েছিলেন। তার শালীনতার জন্য আফসোস! তিনি "খনন করে তাকে বের করে আনতে" প্রত্যাখ্যান করেন। কারণ, কোন পুরুষ তাকে দেখে ফেলতে পারে। এবং তিনি তার সেদিনের আঘাতেই মারা যান। তার সন্তান মুহাম্মাদও একই আক্রমণে নিহত হয়। ডাউন সিন্ড্রোমে আক্রান্ত তার কন্যা আয়িশা বোমা হামলায় আঘাতপ্রাপ্ত না হলেও রাতের শৈত্যাধিক্যের কারণে মারা যায়। তখন আফগান উদ্ধারকর্মীরা তার মাতা আযযাকে বাঁচাতে ব্যস্ত ছিল।<ref>Wright, p. 371.</ref>


==তথ্যসূত্র==
==তথ্যসূত্র==

১৩:১২, ১৮ নভেম্বর ২০১৮ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

আয়মান আল-জাওয়াহিরি
أيمن محمد ربيع الظواهري
আয়মান আল-জাওয়াহিরি, নভেম্বর ২০০১
আল কায়েদার ২য় সর্বোচ্চ আমির
দায়িত্বাধীন
অধিকৃত কার্যালয়
১৬ই জুন, ২০১১[১]
পূর্বসূরীওসামা বিন লাদেন
আল কায়েদার সহকারী আমির
কাজের মেয়াদ
১৯৮৮ – ২০১১
পূর্বসূরীপদ তৈরি করেছেন
উত্তরসূরীআবু খায়র আল-মাসরি
আল কায়েদার সহপ্রতিষ্ঠাতা (আব্দুল্লাহ আযযাম এবং ওসামা বিন লাদেনের সাথে)
কাজের মেয়াদ
১৯৮৮ – ১৯৮৯
পূর্বসূরীপদ তৈরি করেছেন
উত্তরসূরীপদ বিলুপ্ত
মাকতাবুল খিদামাতের সহপ্রতিষ্ঠাতা
কাজের মেয়াদ
১৯৮৪ – ১৯৮৮
পূর্বসূরীপদ তৈরি করেছেন
উত্তরসূরীপদ বিলুপ্ত
মিসর ইসলামি জিহাদের আমির
কাজের মেয়াদ
১৯৯১ – ১৯৯৮
পূর্বসূরীমুহাম্মাদ আব্দুস সালাম ফারাগ
উত্তরসূরীআল কায়েদার সাথে সমন্বিত
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্মআয়মান মুহাম্মাদ রবি' আল-জাওয়াহিরি
(1951-06-19) জুন ১৯, ১৯৫১ (বয়স ৭২)
মাদি, কায়রো, মিসর
জাতীয়তামিসরীয়
দাম্পত্য সঙ্গীআযযা আহমাদ
(বি. ১৯৭৮–২০০১, মৃত্যু), উমাইমা হাসান
সন্তান
সবগুলো দেখুন (৭)
  • ফাতিমা
  • উমাইমা
  • নাবিলা
  • খাদিজা
  • মুহাম্মাদ
  • আয়িশা
  • নাওওয়ার
প্রাক্তন শিক্ষার্থীকায়রো বিশ্ববিদ্যালয়
পেশাসার্জন
সামরিক কর্মজীবন
আনুগত্য ইসলামি জিহাদ, মিসর (১৯৮০–১৯৯৮)[২]
আল কায়েদা
(১৯৮৮–বর্তমান)
কার্যকাল১৯৮০–বর্তমান
পদমর্যাদাআল কায়েদার সর্বোচ্চ আমির
যুদ্ধ/সংগ্রামআফগানিস্তান যুদ্ধ
উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তান যুদ্ধ

আয়মান মুহাম্মাদ রবি' আল-জাওয়াহিরি (আরবি: أيمن محمد ربيع الظواهري  ʾAyman Muḥammad Rabīʿ aẓ-Ẓawāhirī; জন্ম, ১৯শে জুন, ১৯৫১)[৩] হলেন বর্তমান আল কায়েদার প্রধান নেতা এবং বিভিন্ন ইসলামি সংগঠনের একজন বর্তমান[৪] অথবা সাবেক সদস্য এবং সিনিয়র কর্মকর্তা; যেসব সংগঠন উত্তর আমেরিকা, এশিয়া, আফ্রিকা, এবং মধ্যপ্রাচ্যে পরিচালিত হচ্ছে এবং এসব অবস্থানে সামরিক হামলা চালাচ্ছে। ২০১২ সালে তিনি মুসলমানদের আহ্বান করেন, যাতে তারা মুসলিম দেশসমূহে পাশ্চাত্যের পর্যটকদেরকে অপহরণ করেন।[৫]

১১ সেপ্টেম্বরের হামলার পর থেকে আমেরিকা প্রশাসন জাওয়াহিরির ব্যাপারে তথ্য দেয়া অথবা তাকে ধরার ব্যাপারে সামরিক বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দেবার বিনিময়ে ২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পুরষ্কার ঘোষণা করে আসছে।[৬] আল কায়েদার সদস্য হিসেবে আল কায়েদা অনুমোদন কমিটি দ্বারা তার উপর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা বলবৎ আছে।[৭]

বিকল্প নাম এবং উপনাম

আয়মান মুহাম্মাদ রবী আল-জাওয়াহিরি আরবি ভাষায় [ˈʔæjmæn mʊˈħæmːæd rɑˈbiːʕ azˤːɑˈwæːhɪriː] অথবা [aðˤːɑˈwæːhɪriː] উচ্চারিত হয়। জাওয়াহিরি সাধারণতঃ জাওয়াহরি উচ্চারিত হয় (তার স্থানীয় মিসরীয় আরবির উচ্চারণ অনুসারে)।


আল-জাওয়াহিরি নিম্নোক্ত নামগুলোও ব্যবহার করেন:[৮] আবু মুহাম্মাদ (أبو محمّد), আবু ফাতিমা (أبو فاطمة), মুহাম্মাদ ইবরাহীম (محمّد إبراهيم), আবু আব্দুল্লাহ (أبو عبدالله), আবুল মু'ইয (أبو المعز), দুকতুর (বাংলায়: ডাক্তার), শিক্ষক, নূর (نور), উস্তায (أستاذ), আবু মুহাম্মাদ নুরুদ্দীন (أبو محمّد نورالدين), আব্দুল মুয়ায / আব্দুল মু'ইয (عبدالمعز)।

ব্যক্তিগত জীবন

প্রাথমিক জীবন

আয়মান আল-জাওয়াহিরি ১৯৫১ সালে মিসরের কায়রো নগরীর মাদি অঞ্চলে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মুহাম্মাদ রবি' আল-জাওয়াহিরি এবং মাতা উমায়মা আযযাম।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

পরিবার

আল-জাওয়াহিরির পরিবার সম্ভ্রান্ত হিসেবে বিবেচিত হত, [৯] যখন তারা মাদিতে বসবাস করেছিলেন। আল-জাওয়াহিরির পিতামাতা উভয়েই উন্নতিশীল পরিবার থেকে এসেছিলেন। আল-জাওয়াহিরির পিতা মুহাম্মাদ রবি' আল-জাওয়াহিরি ডাক্তার এবং স্কলারদের একটি বড় পরিবার থেকে এসেছিলেন। মুহাম্মাদ রবি' নিজেও কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়ে সার্জন এবং ঔষধ বিশেষজ্ঞ ছিলেন।[৯] আয়মান আল-জাওয়াহিরির মাতা, উমায়মা আযযাম একটি বিত্তশালী এবং সক্রিয় রাজনীতিজ্ঞ পরিবার থেকে এসেছিলেন। আল-জাওয়াহিরি বলেছিলেন, তার মাতার জন্য তার গভীর মমতা রয়েছে। তার ভ্রাতা, মাহফুয আযযাম তার জন্য কিশোর বয়স থেকে পথিকৃৎ ছিলেন।[১০] এছাড়াও আয়মান আল-জাওয়াহিরির একজন কনিষ্ঠ ভ্রাতা মুহাম্মাদ আল-জাওয়াহিরি এবং হিবা মুহাম্মাদ আল-জাওয়াহিরি নামে একজন যমজ বোন রয়েছে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] আল-জাওয়াহিরির বোন হিবা মুহাম্মাদ আল-জাওয়াহিরি ন্যাশনাল ক্যান্সার ইন্সটিটিউট, কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাতন্ত্রের ক্যান্সারবিদ্যায় প্রফেসর ছিলেন। তিনি তার ভ্রাতা আয়মান সম্পর্কে বলেন, "চুপচাপ এবং লাজুক স্বভাবের।"[১১] আয়মান আল-জাওয়াহিরি তার কনিষ্ঠ ভ্রাতা মুহাম্মাদ আল-জাওয়াহিরিকে ১৯৯৩ সালে বলকানে রিপাবলিক অব বসনিয়া এবং হার্জগোভিনিয়া সেনাবাহিনীর ৩য় সৈন্যদলের কমান্ডার আলিজা ইজেটবেগোভিটসহ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা এবং ধর্মীয় নেতৃবৃন্দের সাথে সাক্ষাত করতে প্রেরণ করেছিলেন। আয়মান আল-জাওয়াহিরি বসনিয়া সেনাবাহিনীতে ইসলামিকরণ কতোটুকু হয়েছে যাচাই এবং মুজাহিদদের জন্য তহবিলপ্রাপ্তির জন্য তাকে প্রেরণ করেছিলেন।[১২][অনির্ভরযোগ্য উৎস?] মুহাম্মাদ যুদ্ধবিদ্যায় পারদর্শী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। এবং তাকে ইসলামি জিহাদের সামরিক কমান্ডার বলা হয়ে থাকে। মুহাম্মাদ বসনিয়া, ক্রোয়েশিয়া এবং আলবেনিয়ায় ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক রিলিফ অর্গানাইজেশন (আইআইআরও) এর কেন্দ্রীয় ছত্রছায়ায় কাজ করতেন।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] ২০০২ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতে আত্মগোপন করার সময় মুহাম্মাদ গ্রেফতার হন। তাকে মিসরের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সেখানে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] তাকে কায়রোর তোরা কারাগারে একজন রাজনৈতিক বন্দী হিসেবে ছিলেন। নিরাপত্তা কেন্দ্রের অভিযোগ, তিনি ইসলামি জিহাদের বিশেষ আক্রমণ কমিটির প্রধান ছিলেন; যা বিভিন্ন সন্ত্রাসী অভিযান পরিচালনা করে। যাই হোক, ২০১১ সালে মিসরে আরব বসন্তের পরে হওয়া বিদ্রোহের পর ২০১১ সালের মার্চের ১৭ তারিখ তিনি মিসরের অন্তর্বর্তী সরকার সশস্ত্র বাহিনীর সর্বোচ্চ পরিষদের মাধ্যমে কারামুক্তি লাভ করেন। তার আইনজীবী আদালতকে বলেন, তার ভাই আয়মান আল-জাওয়াহিরির তথ্য জানার জন্য তাকে কারারুদ্ধ করা হয়েছিল।[১৩] কিন্তু ২০১১ সালের মার্চের ২০ তারিখেই তিনি পুনরায় গ্রেফতার হন।[১৪] এরপর ১৭ আগস্ট ২০১৩তে মিসর সরকার মুহাম্মাদ আল-জাওয়াহিরিকে গিজায় তার ঘর থেকে গ্রেফতার করে।[১৫]

যৌবনকাল

আয়মান আল-জাওয়াহিরি অধিক অধ্যয়নকারী যুবক ছিলেন। আয়মান বিদ্যালয়ে প্রথম সারির ছাত্র ছিলেন, কবিতা ভালোবাসতেন এবং "হিংসাত্মক খেলাধুলাকে ঘৃণা করতেন" — যা তিনি "অমানবিক" বলে মনে করতেন। আল-জাওয়াহিরি কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশুনা করেছিলেন এবং ১৯৭৪ সালে জায়্যিদ জিদ্দানসহ স্নাতক করেন। এরপর তিনবছর তিনি মিসরীয় সেনাবাহিনীতে সার্জন হিসেবে সেবা করেন। পরে তিনি তার পিতামাতার নিকটবর্তী মাদিতে একটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করেন।[১৬] ১৯৭৮ সালে তিনি সার্জারিতে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন।[১৭] আয়মান আল-জাওয়াহিরির ইসলামি ধর্মতত্ত্ব এবং ইসলামের ইতিহাস সম্পর্কে ভিত্তিগত ধারণা ছিল।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] তিনি আরবি, ইংরেজি[১৮][১৯] এবং ফরাসি ভাষায় কথা বলতে পারেন।

আল-জাওয়াহিরি যৌবনে কেবল একজন ভালো ছাত্র হিসেবে নিজেকে প্রকাশ করেছিলেন। তিনি ধর্ম এবং রাজনীতি উভয়ের মধ্যে তার মামা মাহফুয আযযাম এবং অধ্যাপক মোস্তফা কামাল ওয়াসফির প্রভাবে আসেন।[২০]

সাইয়েদ কুতুব খেলাফত পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং মুসলমানদেরকে মুক্ত করতে আহ্বান করে বলেছিলেন, একজন সত্যিকারের মুসলমান তার নিজের জন্য মূল আদর্শ নবিজি তার সাহাবায়ে কেরামকে যেভাবে উন্নত করেছেন, সেটাকে পথিকৃৎ হিসাবে গণ্য করতে হবে।[২১]

মুসলিম ব্রাদারহুডে যোগদান

১৪ বছর বয়সে আল-জাওয়াহিরি মুসলিম ব্রাদারহুডে যোগদান করেন। ঐ বছরই মিসর সরকার সাইয়েদ কুতুবকে চক্রান্ত করে ফাঁসি দেয়। এবং আল-জাওয়াহিরি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের চারজন ছাত্রের সাথে মিলে একটি গোপন দল তৈরি করেন। তাদের উদ্দেশ্য ছিল, সরকারকে উৎখাত এবং ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা। এটা ছিল আল-জাওয়াহিরির একদম কম বয়সে, যখন তিনি সাইয়েদ কুতুবের উদ্দেশ্যকে বাস্তবে রূপান্তর করতে একটি একটি মিশন আঞ্জাম দিচ্ছিলেন।[২২] যাইহোক, সর্বশেষ তার দল মিসরীয় ইসলামি জিহাদের সাথে একীভূত হয়ে যায়।[১৬]

বিবাহ এবং সন্তানাদি

আয়মান আল-জাওয়াহিরি কমপক্ষে চারটি বিয়ে করেছিলেন। স্ত্রীদের মধ্যে আযযা আহমাদ নোয়ারি এবং উমায়মা হাসান সম্পর্কেই কমবেশি জানা যায়।

১৯৭৮ সালে আল-জাওয়াহিরি আযযা আহমাদের সাথে প্রথম বিয়ে করেন। আযযা তখন কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শনের ছাত্রী ছিলেন।[২০] অপেরা স্কয়ারে একটি আন্তর্জাতিক মানের হোটেলে বিবাহানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। [২০] অনুষ্ঠানটি অত্যন্ত রক্ষণশীল পরিবেশে, পুরুষ-মহিলাদের পৃথক পৃথক স্থান, এবং কোন গানবাজনা বা ফটোগ্রাফি কিংবা আলোকসজ্জা ছাড়াই অনুষ্ঠিত হয়।[২৩] অনেক বছর পরে, টুইনটাওয়ারে আক্রমণের কারণে যখন অক্টোবর ২০০১-এ যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান আক্রমণ করে, তখন পর্যন্তও আযযা ধারণাও করতে পারেননি, তার স্বামী আল-জাওয়াহিরি শেষ দশকে একজন জিহাদি আমির হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন।[২৪] ২০১২ সালে উমায়মা হাসান (আল-জাওয়াহিরির স্ত্রীদের একজন) আরব বসন্তে মুসলিম নারীদের অগ্রসর ভূমিকায় অভিনন্দন জানিয়ে ইন্টারনেটে বিবৃতি দেন।[২৫]

আল-জাওয়াহিরি এবং তার স্ত্রী আযযার পাঁচ কন্যা এবং এক পুত্র জন্মগ্রহণ করে। ফাতিমা (জন্ম: ১৯৮১), উমায়মা (জন্ম: ১৯৮৩), নাবিলা (জন্ম: ১৯৮৬), খাদিজা ও মুহাম্মাদ (যমজ, জন্ম: ১৯৮৭), আয়িশা (জন্ম: ১৯৯৭)। আয়িশার ডাউন সিন্ড্রোম রোগ থাকার কথা জানা যায়। ২০০৪ সালে আবু যুবায়দাকে জল নিপীড়ন করলে তিনি জবানবন্দী দেন যে, আবু তুরাব আল-উরদুনি আয়মান আল-জাওয়াহিরির কোন এক কন্যাকে বিবাহ করেছেন।[২৬]

২০০৫ সালের প্রথমার্ধে আল-জাওয়াহিরির জীবিত তিন স্ত্রীর একজন "নাওওয়ার" নামীয় একটি কন্যাসন্তান জন্ম দেন। [২৭]

টুইনটাওয়ারে আক্রমণের পর, ডিসেম্বর ২০০১-এর শেষদিকে আয়মান আল-জাওয়াহিরির প্রথম স্ত্রী আযযা এবং তার দুই সন্তান মুহাম্মাদ এবং আয়িশা আফগানিস্তানে আমেরিকান সৈন্যবাহিনীর বিমানহামলায় নিহত হন।[২৮][২৯]

আমেরিকান বোমা বিস্ফোরণের পর গারদেজে তালিবান নিয়ন্ত্রিত দালানের ধ্বংসাবশেষে মেহমানখানার ছাদের নিচে আটকে পড়েছিলেন। তার শালীনতার জন্য আফসোস! তিনি "খনন করে তাকে বের করে আনতে" প্রত্যাখ্যান করেন। কারণ, কোন পুরুষ তাকে দেখে ফেলতে পারে। এবং তিনি তার সেদিনের আঘাতেই মারা যান। তার সন্তান মুহাম্মাদও একই আক্রমণে নিহত হয়। ডাউন সিন্ড্রোমে আক্রান্ত তার কন্যা আয়িশা বোমা হামলায় আঘাতপ্রাপ্ত না হলেও রাতের শৈত্যাধিক্যের কারণে মারা যায়। তখন আফগান উদ্ধারকর্মীরা তার মাতা আযযাকে বাঁচাতে ব্যস্ত ছিল।[৩০]

তথ্যসূত্র

  1. "Al-Qaeda's remaining leaders"। BBC News। জুন ১৬, ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ২৮, ২০১৭ 
  2. "Ayman al Zawahiri"। সংগ্রহের তারিখ ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  3. "Ayman al-Zawahiri"FBI Most Wanted Terrorists 
  4. "Ayman al-Zawahiri appointed as Al-Qaeda leader"। জুন ১৬, ২০১১। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ২৮, ২০১৭ – www.bbc.co.uk-এর মাধ্যমে। 
  5. "Al Qaeda leader calls for kidnapping of Westerners - CNN.com"CNN। অক্টোবর ২৯, ২০১২। 
  6. "CNN Programs – People in the News"। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ২৮, ২০১৭ 
  7. UN list of affiliates of al-Qaeda and the Taliban ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত জুলাই ২৮, ২০০৬ তারিখে
  8. "Most Wanted Terrorists – Ayman Al-Zawahiri"Federal Bureau of Investigation, US Department of Justice। ডিসেম্বর ২৪, ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ডিসেম্বর ২৩, ২০০৭ 
  9. Ayman al-Zawahiri Fast Facts CNN June 7, 2016 Retrieved 2017-02-15
  10. Lawrence Wright (২০০৬)। The Looming Tower। Knopf। Chapter 2। আইএসবিএন 0-375-41486-X 
  11. Battistini, Francesco (১২ জুন ২০১১)। "La sorella del nuovo Osama: Mio fratello Al Zawahiri, così timido e silenzioso"। Corriere della Sera। ৫ নভেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  12. "Google Translate"। Translate.google.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-১২-১৩ 
  13. Egypt Releases Brother of Al Qaeda’s No. 2, Liam Stack, The New York Times, March 17, 2011
  14. Brother of Al-Qaeda's Zawahri re-arrested, Sherif Tarek, Ahram Online, 20 March 2011
  15. "Egypt arrests brother of Qaeda chief for 'backing Morsi'"। Middle East Online। সংগ্রহের তারিখ ১৭ আগস্ট ২০১৩ 
  16. Wright, p. 42.
  17. Bergen, Peter L. (২০০৬)। The Osama bin Laden I Know। Free Press। পৃষ্ঠা 66। আইএসবিএন 978-0-7432-7891-1 
  18. "Al-Qaeda Deputy Head Ayman Al-Zawahiri in Audio Recording: Musharraf Accepted Israel's Existence"। Memri। ১৩ আগস্ট ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১১ 
  19. Wilkinson, Isambard (১১ আগস্ট ২০০৮)। "Al-Qa'eda chief Ayman Zawahiri attacks Pakistan's Pervez Musharraf in video"The Daily Telegraph। London। সংগ্রহের তারিখ ২৬ এপ্রিল ২০১০ 
  20. El-Zayyat, Montasser, "Qaeda", 2004. tr. by Ahmed Fakry
  21. Qutb, Milestones, pp. 16, 20 (pp. 17–18).
  22. Wright, p. 37.
  23. Wright, pp. 43–44.
  24. Wright, p. 370.
  25. Henderson, Barney (জুন ৮, ২০১২)। "Al-Qaeda statement by Ayman al-Zawahiri's wife released"। London: Telegraph। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-১২-১৩ 
  26. Intelligence report, interrogation of Abu Zubaydah, 18 February 2004.
  27. Bergen, Peter. "The Osama bin Laden I Know", 2006. p. 367
  28. "For al-Zawahiri, anti-U.S. fight is personal"। CBS News। ২০১১-০৬-১৬। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-১২-১৩ 
  29. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; cnn: Jihadist websites নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  30. Wright, p. 371.